জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জাতীয় সরকারে কারা
‘জাতির সংকট নিরসনে জাতীয় সরকার’ শীর্ষক এক দীর্ঘ লেখা লিখেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এই লেখায় তিনি বাংলাদেশের দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাস নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে বর্ণনা করেছেন। এই লেখায় তিনি ‘জাতীয় সরকারের ফর্মুলা’ উপস্থাপন করেছেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর লেখাটি রবিবার (১৫ মে) মধ্য রাতের পর সংবাদ মাধ্যমের কাছে পাঠানো হয়। লেখাটি পাঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রস্তাবিত সর্বদলীয় ও বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে গঠিত জাতীয় সরকার রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ ও গণভোটের মাধ্যমে গঠিত হবে। তার প্রস্তাবিত ‘জাতীয় সরকারের ফর্মুলা’য় রাষ্ট্রপতি হবেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান অথবা ড. কামাল হোসেন। আর প্রধানমন্ত্রী হবেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস। একইসঙ্গে তিনি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এবং বিভিন্ন কমিশনের চেয়ারম্যানদের নামও প্রস্তাব করেছেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রস্তাব
জনসংযোগ, স্বরাষ্ট্র ও জন প্রশাসন দায়িত্বে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস; দুর্নীতি দমনে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও শহীদদের তালিকা প্রণয়নে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, জবাবদিহিতামুলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) ইকবাল করিম ভুঁইয়া প্রতিরক্ষায় দায়িত্ব পালন করবেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী উল্লেখ করেন, আইন, সংসদ ও সংবিধান সংস্কারে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, মানবাধিকার ও আইন কমিশনে অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অর্থ ও দরিদ্রতা নিরসনে অর্থনীতিবিদ ড. বিনায়ক সেন, ব্যাংক ও মানিলন্ডারিং নিয়ন্ত্রণে ড. সালেহ উদ্দিন আহমদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে এস এম আকরাম, সংখ্যালঘু ও আদিবাসীর দায়িত্বে অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কিত দায়িত্বে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য থাকবেন।
শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকবেন অধ্যাপক কাজী কামরুজ্জামান, সঙ্গে ওষুধ প্রশাসনের প্রধানের দায়িত্বে বিএসএমএমইউ’র অধ্যাপক সাইদুর রহমান খসরু এবং মেডিক্যাল ও প্যারামেডিক্যাল শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের দায়িত্বে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক আবুল কাশেম চৌধুরী, শিল্প বাণিজ্যের দায়িত্বে শেখ বসিরুদ্দিন আকিজ, তথ্য সম্প্রচার ও মিডিয়ার দায়িত্বে শিল্পপতি-মিডিয়া মালিক এ কে আজাদ, স্থানীয় শাসন ও প্রদেশ বা স্টেট সৃষ্টি সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে সমাজ বিজ্ঞানী ড. তোফায়েল আহমেদ।
নৌপথ, নৌবন্দর, আন্তর্জাতিক নদীর পানির অধিকার সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে প্রকৌশলী ইনামুল হক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দায়িত্বে প্রকৌশলী সামসুল আলম, নগর উন্নয়ন ও যোগাযোগে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন। প্রবাসী অভিবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন ও শিক্ষক-ছাত্র বিনিময় কর্মসূচি স্থাপনে প্রবাসী শিক্ষাবিদ অধ্যাপক হাসনাত হোসেন, এমবিই।
ধর্ম ও নৈতিকতায় শিক্ষাবিদ অধ্যাপক পারভীন হাসান, সংস্কৃতি, যাত্রা ও মেলার প্রসারে শিল্পী নবনীতা চৌধুরী, পরিবেশ ও প্রাণীজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শ্রমিক কল্যাণ ও নিরাপদ সড়ক দায়িত্বে বাম জোটের প্রতিনিধি মনজরুল আহসান খান।
নারী ও যুব উন্নয়নে বিএনপি প্রতিনিধি ব্যারিস্টার জাইমা রহমান, মানবাধিকার ও সমাজ কল্যাণে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা এবং খাদ্য সরবরাহ ও রেশনিংয়ে সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সঙ্গে কৃষি ও কৃষক সমবায় প্রসারে সাবেক সচিব ড. শওকত আলী।
ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রস্তাব করেন, গণভোটে নির্বাচিত হবে জাতীয় সরকার। দুই বছর মেয়াদের জন্য গঠিত হওয়া এই সরকার হবে সর্বদলীয় এবং সর্বজন স্বীকৃত জাতীয় সরকার। এর সদস্য এবং বিভিন্ন কমিশনের চেয়ারম্যানেরা ২০২৮ সাল পর্যন্ত কোনও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। তাদের সকল আর্থিক তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।
এপি/এমএমএ/