শত তরুণ-তরুণীর ভারতে ভ্রমণের সুযোগ
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঙ্গনের মেধাবী একশ তরুণ-তরুণীর ভারত ভ্রমণ বিষয়ক কর্মসূচি ফের চালু করেছে ঢাকায় দেশটির হাইকমিশন।
করোনা মহামারির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে এই কর্মসূচি বন্ধ থাকলেও এ বছর থেকে সেই সুযোগ পাবেন বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীরা। ভারতের অর্থনীতি, প্রযুক্তি, শিল্প-সংস্কৃতি ও ইতিহাস বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থানগুলিতে ভ্রমণের জন্য আয়োজিত এই সফরে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রের ১০০ জন তরুণ প্রতিনিধিকে নির্বাচন করা হবে।
রবিবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে ‘বাংলাদেশ ইয়ুথ ডেলিগেশন টু ইন্ডিয়া’ শীর্ষক কর্মসূচি পুনরায় চালুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।
উদ্বোধনের পূর্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক রক্তের অক্ষরে লেখা। এই সম্পর্ককে আরও ভিন্নমাত্রায় নিয়ে যেতে মানুষে মানুষে সম্পর্কোন্নয়নের এ ধরনের প্রোগ্রাম গুরুত্বপূর্ণ। যেসকল তরুণ-তরুণী এই সুযোগ পাচ্ছে তাদের মাধ্যমে দুই দেশের মানুষের মানুষের যে সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, দুদেশের মানুষে মানুষে সম্পর্কের আরও উন্নয়নে এই ডেলিগেশন সদস্যরা অনুঘটকের ভূমিকা রাখবে। আমাদের সম্পর্কের মাত্রা অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শাসনামলে দুই দেশের সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, এই ডেলিগেশন কর্মসূচি বাংলাদেশ-ভারতের সামাজিক-সাংস্কৃতিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। ডেলিগেশনের সদস্যরা এক্ষেত্রে এক সময় সেটাকে বাণিজ্যিক-প্রাযুক্তিকও রূপ দিতে পারবেন বলে আমরা আশাবাদী।
পরে মন্ত্রী ও হাইকমিশনার ভারতীয় হাইকমিশনের ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ডেলিগেশন কর্মসূচিতে আবেদনের কার্যক্রমের উদ্বোন করেন। এরপর ডেলিগেশন কর্মসূচির সাবেক ব্যাচগুলোর কয়েকজন প্রতিনিধির অনুভূতি নিয়ে বানানো ভিডিওচিত্র প্রদর্শিত হয়।
আয়োজনের শেষভাগে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এই পরিবেশনায়ও অংশ নেন ডেলিগেশন কর্মসূচির সাবেক ব্যাচগুলোর সদস্যরা।
জানা যায়, ২০১২ সালে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত প্রণব মুখার্জির ইচ্ছায় শুরু হয় এই ইয়ুথ ডেলিগেশন টু ইন্ডিয়া কার্যক্রমের। এই ভ্রমণকারীদের মধ্যে থাকেন শিক্ষা, চিকিৎসা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, ক্রীড়া, প্রকৌশল, সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন অঙ্গনের প্রতিনিধিত্বশীল ভূমিকায় থাকা তরুণ-তরুণীরা। তারা যেমন স্ব-স্ব আচার-সংস্কৃতি বিনিময় করেন ভারতে, আবার ভারতবর্ষে যা দেখার সুযোগ পান, যা ধারণ করতে পারেন, তা এসে পৌঁছে দেন বাংলাদেশে। এই বিনিময়টা বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীকে নিয়ে যায় আরও অনন্য উচ্চতায়।
কর্মকর্তাদের মতে, সফরটা কেবল দুই দেশের মধ্যকার সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিনিময়ের নয়, এতে অংশগ্রহণকারী একজন ডেলিগেট তারই দেশের বিভিন্ন অঙ্গনের প্রতিনিধিত্বশীল ভূমিকার আরও ৯৯ জনের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন, তাদের মধ্যে যোগাযোগ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়। তাদের এই বোঝাপড়া, মিথষ্ক্রিয়া সমাজ গঠনে রাখতে পারে দারুণ ভূমিকা।
আবেদন করতে ইচ্ছুক তরুণরা ভারতীয় হাই কমিশনের ওয়েবসাইটে https://hcidhaka.gov.in গিয়ে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আবেদনকারীদের জীবন বৃত্তান্ত পূরণ করতে হবে এবং অত্যাবশ্যকীয় হিসেবে নির্মিত একটি ফেসবুক ভিডিওর লিংক শেয়ার করতে হবে। ফেসবুক ভিডিওটির দৈর্ঘ্য ১২০ সেকেন্ডের বেশি হওয়া যাবে না এবং এর মাধ্যমে আবেদনকারীরা তাদের পরিচিতির পাশাপাশি এই কর্মসূচিতে তারা কেন অন্তর্ভূক্ত হওয়ার যোগ্য তা তুলে ধরতে পারবেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে বাংলাদেশ যুব প্রতিনিধিদলের ফেসবুক পেজে- https://www.facebook.com/BangladeshYouthDelegationToIndia।
এসএম/এমএমএ/