প্রতিবন্ধীদের বৈষম্য দূর করতে কাজ করছে সূচনা ফাউন্ডেশন: স্পিকার
সূচনা ফাউন্ডেশন স্নায়ু-বিকাশগত প্রতিবন্ধকতা ও মানসিক স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিকভাবে পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে অগ্রসর করার জন্য কাজ করে থাকে বলে জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সাধনে কাজ করে চলেছে সূচনা ফাউন্ডেশন।’
রবিবার (২৪ এপ্রিল) সূচনা ফাউন্ডেশন এবং সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত স্টিফেন মার্ক শোর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ বিয়ন্ড দ্য ওয়ালের বাংলা অনুবাদ ‘প্রাচীর পেরিয়ে’ এর মোড়ক উন্মোচনের ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সূচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন ও সিআরআই-এর ভাইস চেয়ারপার্সন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্য, বিশ্ববিখ্যাত অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ, এস.এস.পি, এন.সি.এস.পি এবং এডেলফি ইউনিভার্সিটির এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর স্টিফেন শোর প্যানেল ডিসকাশনে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন।
এ সময় বইটি অনুবাদের মতো একটি মহতী উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সায়মা ওয়াজেদকে ধন্যবাদ জানান স্পিকার।
স্পিকার বলেন, ‘প্রতিবন্ধীতাসম্পন্ন মানুষ যেন নিজের সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে সকলের সহযোগিতায় অর্থবহ ও মানসম্পন্ন জীবন গড়ে তুলতে পারে সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছে সূচনা ফাউন্ডেশন। ‘প্রাচীর পেরিয়ে’ গ্রন্থটি এক্ষেত্রে সকলের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের অর্থবহ জীবন গড়ে তোলা যায়, তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত প্রফেসর শোর। মনোবিজ্ঞানী সায়মা ওয়াজেদের নেতৃত্বে সূচনা ফাউন্ডেশন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য অভিনব, কার্যকরী কর্মসূচি ও নীতি প্রণয়নে কাজ করার পাশাপাশি জাতিসংঘে অটিজম বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রেজুলেশন গৃহীত হয়েছে। সায়মা ওয়াজেদ অটিজম ডিজঅর্ডার বিষয়ে সচেতনতা ও সংবেদনশীলতা গড়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। এ বিষয়ে তিনি অন্যতম পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করছেন। সূচনা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক একাধিক রেজুলেশন গৃহীত হয়েছে, যা এদেশের জন্য গৌরবের।’
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে অটিজম বিষয়ে ব্যাপক কার্যক্রম গৃহীত হয়েছে। প্রতিবন্ধীদের জন্য ৮টি বিভাগে স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, ট্রাস্টের মাধ্যমে তাদের ডরমেটরি নির্মানের উদ্যোগ গ্রহণ, ২০১০ সালে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের ক্যাম্পাসে অটিজম রিসোর্স সেন্টারের কার্যক্রম শুরু, বিনামূল্যে চিকিৎসা ও শিক্ষাসেবা প্রদান, সুবর্না ভবন স্থাপন ইত্যাদি নানবিধ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আইনি কাঠামোর আওতায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সংরক্ষণের জন্য ‘নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন, ২০১৩’ এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়ন ও কল্যাণে ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩’ প্রণয়ন করা হয়েছে। ‘নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্টের বিধিমালা, ২০১৪’ এবং ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা বিধিমালা, ২০১৪’ প্রণয়ন করা হয়েছে। একটি নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্টি বোর্ড ও গঠন করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সময়ের সাথে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহনে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণে সকলকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান স্পিকার।
ড. হেলাল উদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে গেস্ট স্পিকার হিসেবে মিস জেইন পিয়ার্স, আদিবা ইবনাত পশলা, নিগার রহমান বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।
এসএম/এমএমএ/