বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

রানা প্লাজা ধসের ৯ বছর: ভালো নেই তারা

আজ থেকে ৯ বছর আগে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শ্রমিক ট্র্যাজেডির সাক্ষী হয় বাংলাদেশ। ২৪ এপ্রিল ২০১৩, সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে রানা প্লাজা নামের বহুতল ভবনটি ধসে পড়ে। ওই ঘটনায় হতাহত হন কয়েক হাজার শ্রমিক। সেদিন কেউ মা-বাবা, কেউ ভাই-বোন, কেউ স্ত্রী-সন্তান-স্বামী হারিয়েছেন। কেউ হয়ে গেছেন চিরতরে নিঃস্ব। এখনো কেউ কেউ শারীরিক প্রতিবন্ধিতাকে সঙ্গী করে চলছেন। আজও আহত ও নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের দেওয়া হয়নি ক্ষতিপূরণ। হতাহতের ঘটনায় করা হত্যা মামলার বিচারও এগিয়েছে খুব সামান্যই। সবমিলিয়ে এটুকু বলা যায়–ভালো নেই তারা।

কী ছিল রানা প্লাজায়

সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের রানা প্লাজার ভবনটি ছিল নয়তলা। ভবনের প্রথম তলায় ছিল বিভিন্ন দোকান। দোতলায় ছিল দোকান আর ব্যাংক। তিনতলায় নিউ ওয়েভ বটমস লিমিটেড, চার ও পাঁচতলায় নিউ ওয়েভ স্টাইল লিমিটেডে এবং ফ্যানটম লিমিটেড, ছয় ও সাততলায় ছিল ইথারটেক্স লিমিটেড গার্মেন্টস। আট ও নয়তলায়ও ছিল পোশাক কারখানা। শ্রমিকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভবনের তিনতলা থেকে নয়তলা পর্যন্ত ছিল পাঁচটি পোশাক কারখানা।

এতে প্রায় চার হাজার পোশাকশ্রমিক কাজ করতেন। প্রতিদিনের মতো ওই দিন সকাল ৮টায় হাজির হন কর্মস্থলে। উৎপাদনও শুরু করেন নির্ধারিত সময়ে। হঠাৎ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিকট শব্দ। আশপাশে উড়তে থাকে ধুলাবালু। ধসে পড়ে রানা প্লাজা। শুরু হয় শ্রমিকদের আহাজারি। উদ্ধারে এগিয়ে আসেন স্থানীয়রা। পরে তাদের সঙ্গে যুক্ত হন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, আনসার, র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। চলে বিরতিহীন উদ্ধার অভিযান। ভবন ধসের সঙ্গে সঙ্গে ভেতরে চাপা পড়েন চার হাজার পোশাকশ্রমিক। বাঁচাও, পানি দাও, আমার হাতটি কেটে বের করো; এমন নানা আহাজারিতে ভারী হয়ে ‍উঠে চারপাশ।

আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক বন্ধ করে দিয়ে মহাসড়কের দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয় অ্যাম্বুলেন্স। তাদের হাসপাতালে পাঠানো, প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়াসহ সব ধরনের সহযোগিতার জন্য বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ছুটে আসেন হাজারো স্বেচ্ছাসেবী। একে একে বের করা হয় আহত ও নিহতদের।

কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লাশের সংখ্যা বেড়ে যায়। হাসপাতালের মর্গ ভর্তি হয়ে যায়। পরে লাশগুলো নিয়ে যাওয়া সাভারের অধরচন্দ্র স্কুলের মাঠে। স্কুল বারান্দায় সারিবদ্ধভাবে লাশ রেখে দেওয়া হয়।

হতাহতের সংখ্যা

রানা প্লাজা ধসে এক হাজার ১৩৬ শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করেছেন উদ্ধারকর্মীরা। দুই হাজার ৪৩৮ শ্রমিককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। আহতদের মধ্যে অনেকেই পঙ্গু হয়ে গেছেন। অনেকে আবার মানসিক রোগী হয়ে আছেন।

আহাজারির সাক্ষী অধরচন্দ্র স্কুল মাঠ

বেদনার সাক্ষী হয়ে আছে সাভারের অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ। ঘটনার দিন থেকে টানা ১৭ দিন ওই বিদ্যালয়ের মাঠে নিহতদের নিয়ে রাখা হতো। আর সেখান থেকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হতো। প্রিয় মানুষটির সন্ধান পেতে সেসময় স্বজনরা চারদিকে ছোটাছুটি করেছেন। রানা প্লাজা থেকে বিদ্যালয়ের মাঠ দেড় কিলোমিটারজুড়ে সেসময় অ্যাম্বুলেন্সের শব্দ সবাইকে জাগিয়ে তুলতো। অপেক্ষারত স্বজনরা হুমড়ি খেয়ে পড়তেন। এই বুঝি এলো নিখোঁজ মানুষটি। আজও সেই মাঠটি আছে, তবে নেই সেই চিত্র। তবে মাঠটি যেন আগের মতো আর হাসে না। প্রাণচঞ্চলতা হারিয়ে গেছে।

অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ফরিদ জানান, আগে সকাল-দুপুর-রাত এমন কোনো সময় নেই যে মাঠে না আসতাম, কোনো ভয় ছিল না। তবে রানা প্লাজার ধসে পড়ার পর মৃত লাশগুলো সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছিল। এরপর থেকে আর সাহস পাই না।

উদ্ধারকাজের ৫ম দিনে (২৮ এপ্রিল) ভবনের ভেতরে একজনের প্রাণের স্পন্দন পাওয়া যায়। কাছে গিয়ে উদ্ধারকর্মীরা জানতে পারেন তার নাম শাহীনা। তাকে বাঁচাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে কায়কোবাদ নামে এক উদ্ধারকর্মী গুরুতর আহত হন। টানা সাতদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ৫ মে রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে যান শাহীনা।

ভবন ধসের ১৭তম দিনে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে উদ্ধারকাজ সমাপ্ত ঘোষণা করার আগ মুহূর্তে ঘটে এক অলৌকিক ঘটনা। ধ্বংসস্তূপের ভেতরে পাওয়া যায় আরেকজনের প্রাণের স্পন্দন। অলৌকিকভাবে চারটি বিস্কুট ও এক বোতল পানি খেয়ে বেঁচে ছিল রেশমা। ১৭তম দিন বিকাল ৩টার দিকে ভেতর থেকে তাকে কাঠি নাড়াতে দেখেন উদ্ধারকর্মীরা। পরে রেশমাকে জীবিত দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে সাভারের সিএমএইচ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া রেশমাকে দেখতে হাসপাতালে হেলিকপ্টারযোগে ছুটে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের মন্ত্রিপরিষদের ব্যক্তিবর্গ।

২০তম দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রানা প্লাজার উদ্ধারকাজ সমাপ্ত ঘোষণা করেন উদ্ধারকাজে গঠিত সমন্বয় কমিটির প্রধান নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সোহরাওয়ার্দী। তিনি উদ্ধারকাজ শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এক হাজার ১৩৬ জনের মৃত্যু ও দুই হাজার ৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধারের কথা জানান। পরদিন জায়গাটি ঢাকা জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

শনিবার বিকালে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য দিয়েছেন শ্রমিকনেতা, রানা প্লাজার আহত ও নিহতদের স্বজনরা।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, নয় বছর হলো, অথচ এই ঘটনার মূলহোতা সোহেল রানার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হয়নি। এখন পর্যন্ত হতাহত শ্রমিকদের দেওয়া হয়নি ক্ষতিপূরণ। করা হয়নি চিকিৎসার ব্যবস্থা। এজন্য আজও এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছি আমরা। রানা প্লাজার জায়গা অধিগ্রহণ করে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও পরিবারের পুনর্বাসন এবং ২৪ এপ্রিলকে শোক দিবস ঘোষণা করার দাবি জানাই।’

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, শুধুমাত্র রানা প্লাজা নয়, তাজরীন ফ্যাশন অগ্নিকাণ্ড, স্পেকট্রাম গার্মেন্টস ভবন ধসসহ এ পর্যন্ত দেশের যেসব গার্মেন্টেসে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, আজ পর্যন্ত বিচার হয়নি। তাই সোহেল রানাসহ সব অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানাই।

গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল ইসলাম মিন্টু বলেন, রানা প্লাজার ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের এখন পর্যন্ত বিচারের আওতায় আনা হয়নি। যখনই ২৪ এপ্রিল আসে বিচার নিয়ে কথা ওঠে। কিন্তু বছরের বাকি ১১ মাস এ নিয়ে কোনও কথা হয় না। শ্রম আইন সংশোধনের মাধ্যমে কারখানাগুলো নিরাপদ করতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছিল। এরপর অ্যাকোর্ড, অ্যালায়েন্স এসেছে। কিন্তু কারখানায় নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি। এখনও বিভিন্ন কারখানায় ঘটছে দুর্ঘটনা। শ্রমিকরা জীবন দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এখনও রানা প্লাজার যেসব শ্রমিক জীবিত আছেন তারা এই দিনে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আসতে চাইলে কারখানার মালিকরা ছুটি দেন না। সরকার ও কারখানার মালিকরা এই দিন ভুলিয়ে দিতে চায়। কিন্তু আমরা এ ঘটনার বিচার চাই এবং চাইবো।

রানা প্লাজার আহত শ্রমিক নিলুফা আক্তার বলেন, আমি ক্ষতিপূরণ চাই। আমার চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। পাশাপাশি রানার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুন।

রানা প্লাজায় নিহত শ্রমিক রাব্বির মা রাহেলা খাতুন বলেন, ছেলে হারানোর নয় বছর হলো। কিন্তু আমরা বিচার পেলাম না। দোষীদের বিচার এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি সরকার।

রাজা প্লাজা ধসে চার মামলা

রাজা প্লাজা ধসের ঘটনায় চারটি মামলা করা হয়। এর মধ্যে হত্যা, ইমারত নির্মাণ আইন ভঙ্গসহ তিনটি মামলার বিচার কাজ এখনো শেষ হয়নি। শুধু ভবন ধসের ঘটনার পর সম্পদের হিসাব চেয়ে রানা প্লাজার সোহেল রানাকে নোটিশ দেয় দুদক। কিন্তু হিসাব না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সেই মামলায় সোহেল রানাকে তিন বছরের সাজা দিয়েছেন বিশেষ জজ আদালত।

রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় পরদিন সাভার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ ভবন নির্মাণে অবহেলা ও ত্রুটিজনিত হত্যার অভিযোগে মামলা করেন। ২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় অভিযোগপত্রে ৫৯৪ জনকে সাক্ষী করা হয়। আসামি ৪১ জনের মধ্যে তিন আসামি মারা যান। বর্তমানে আসামির সংখ্যা ৩৮ জন। ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই ঢাকার তত্কালীন জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। কিন্তু ঐ অভিযোগ গঠন আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান আট আসামি। স্থগিত হয় বিচার কাজ। ফলে গত ছয় বছরে ২৫ বার পেছায় সাক্ষ্যগ্রহণ। অবশেষে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হওয়ায় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শুরু হয় কাঙ্ক্ষিত সেই সাক্ষ্যগ্রহণ।

আসামি পক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলায় প্রায় ৬০০ জনকে সাক্ষী করেছে। দীর্ঘ এই তালিকার সাক্ষীদের সাক্ষগ্রহণ করে বিচার শেষ করতে আরো কয়েক বছর লাগবে।

তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি হত্যা মামলা প্রমাণে সকল সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের প্রয়োজন নাই। যেসব সাক্ষী গুরুত্বপূর্ণ তাদের সাক্ষ্য নিয়ে বিচার শেষ করার সুযোগ রয়েছে। এতে বিচার বিলম্বের যে নজির রয়েছে তা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে।

আইন না মেনে রানা প্লাজা নির্মাণ করায় ইমারত নির্মাণ আইনে সাভার থানায় আরেকটি মামলা করে রাজউক। ২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডি ভবনের মালিক সোহেল রানাসহ ১৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ১৩০ জনকে মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে। ২০১৬ সালের ১৪ জুন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। তবে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় এ মামলার বিচার কাজ এখন বন্ধ রয়েছে।

এসএ/

Header Ad

স্বৈরাচার পালিয়েছে কিন্তু লেজ রেখে গেছে, তারা ষড়যন্ত্র করছে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারের সময়ে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে তারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আপনাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে এবং তারা ষড়যন্ত্র করছে, তারা কিন্তু বসে নেই।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দিনভর সিলেটে বিএনপির উদ্যোগে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক কর্মশালা শেষে বিকালে সমাপনী বক্তব্যে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, দেশের মানুষ বিএনপির সঙ্গে রয়েছেন। মানুষ মনে করে বিএনপির কাছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা নিরাপদ। এজন্য মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। জনগণের এ আস্থাকে ধরে রাখার দায়িত্ব বিএনপি নেতাকর্মীদের।

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ও গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। দল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ও দেশের গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি আরও বলেন, আগামীতে বাংলাদেশকে কোনো হুমকি থেকে রক্ষা করতে হলে গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে হবে।

সিলেট শিল্পকলা একাডেমিতে সকাল থেকে শুরু হওয়া রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক কর্মশালায় অংশ নেন সিলেট বিভাগের পাঁচ ইউনিটের নেতারা।

কর্মশালায় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউসের সভাপতিত্বে ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রশিক্ষণ প্রদানকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীসহ কয়েকজন নেতার ৩১ দফা কর্মসূচির ওপর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

প্রশিক্ষণে প্যানেল আলোচক ছিলেন- ডা. মওদুদ আলমগীর, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহবায়ক ডা. মহিউদ্দিন আলমগীর পাবেল, কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবা হাবিবা, সহ-ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আলি, সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু।

কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আনিসুর রহমান তালুকদার, নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরের দায়িত্বে) আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তাহসিনা রুশদির লুনা, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও ড. এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ-সম্পাদক শাম্মী আক্তার ও আব্দুর রাজ্জাক, নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবান ফজলুল হক ময়ুন, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিব।

সমাপনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতেই ঢাকায় গত দুই দিনের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারের সময়ে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে তারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আপনাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে এবং তারা ষড়যন্ত্র করছে, তারা কিন্তু বসে নেই। আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে শক্তি, দেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। মানুষ মনে করে বিএনপির কাছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা নিরাপদ। এজন্য মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে।

নেতাকর্মীদের প্রতি তারেক রহমান বলেন, মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। মানুষের আস্থা ধরে রাখার দায়িত্ব তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। জনগণের এ আস্থাকে ধরে রাখার দায়িত্ব আপনার।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন করা সব দলের পক্ষ থেকে ৩১ দফা ঘোষণা করা হয়েছে। এটির মধ্যে রাষ্ট্রকাঠামোর অধিকাংশই আছে। আরও যত প্রস্তাব আসবে তা যুক্তিসংগত হলে যুক্ত করা হবে। আজকে বিভাগ পর্যায়ে ৩১ দফা নিয়ে আলোচনার পর জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। বইয়ে অনেক কিছু সুন্দরভাবে লিখা থাকে, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করতে হয় মানুষকে। তাই ভালো নিয়ত নিয়ে ভালো নিয়ত থাকলে আমরা ভালো কিছু করতে পারব।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র চলার পথে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বিগত ১৬ বছরে বহু মানুষ গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। জুলাই-আগস্টে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ শহিদ হয়েছেন। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে এ প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন সম্ভব। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতাকে বজায় রাখলে জবাবদিহিতা তৈরি হবে। এজন্য যেকোনো মূল্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখব।

Header Ad

সহজেই বাংলাদেশকে হারাল উইন্ডিজ

ছবি: সংগৃহীত

পরাজয়ের মঞ্চ প্রস্তুত হয়েই ছিল। দেখার ছিল টেস্টের শেষ দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ঠিক কতটা অপেক্ষায় রাখতে পারে বাংলাদেশ। তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ক্যারিবীয়দের। দ্রুতই সফরকারীদের গুটিয়ে বড় রনের জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।

অ্যান্টিগা টেস্টের শেষ দিনে আজ মঙ্গলবার মেহেদী হাসান মিরাজের দল হারের ব্যবধান কতোটা কমাতে পারে সেটাই ছিল দেখার। কিন্তু ৩ উইকেট নিয়ে লড়তেই পারলেন না ব্যাটাররা। দিনের খেলা শুরুর ৪০ মিনিটের মধ্যেই জয় নিশ্চিত করে ফেলে উইন্ডিজ।

অ্যান্টিগা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতল ২০১ রানে। একইসঙ্গে ২ ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। জ্যামাইকায় ৩০ নভেম্বর সিরিজের ২য় ও শেষ টেস্টে মুখোমুখি হবে এই দুই দল।

আগের দিন জয়ের জন্য ৩৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ১০৯ রানে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করে বাংলাদেশ। আর আজ ২ উইকেট হারাতেই শেষ হয়ে যায় ম্যাচ। শরিফুল ইসলাম চোটে থাকায় ব্যাট করতে করতে পারেন নি। রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে তিনি ড্রেসিংরুমে।

কাঁধে আঘাত পাওয়ার ব্যাটিং চালিয়ে যেতে পারেননি শরিফুল। তাতেই ৯ উইকেটে ১৩২ রানে থামল বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। হাতে ১ উইকেট থাকলেও বাংলাদেশ হার মেনে নিয়ে মাঠ ছাড়ে। আগের দিন ১ উইকেট হাতে থাকলেও ১৮১ রানে পিছিয়ে থেকে ইনিংস ঘোষণা করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

আজ টেস্টের প্রথম দিনে উইকেটে আসা-যাওয়ার দায়টুকু সারতেই যেন মাঠে নামল বাংলাদেশ ব্যাটাররা। ৪০ মিনিটের কম সময়ের মধ্যে শেষ ইনিংস। খেলতে পারল মাত্র ৭ ওভার। আগের দিনের রানের সঙ্গে যোগ করতে পারল মাত্র ২৩ রান।

জাকের আলি ফিরে গেলেন ৩১ রানে। আগের দিন মিরাজ করেন ৪৫ রান। এ নিয়ে টানা তিন সফরে অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টে হারল বাংলাদেশ দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা পঞ্চম হার দেখল দলটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৪৫০/৯ ডিক্লে.
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৬৯/৯ ডিক্লে.
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ১৫২/১০
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৩৮ ওভারে ১৩২/১০ (জাকের ৩১, হাসান ০, তাসকিন ৪*, শরিফুল ১ আহত আউট; রোচ ৮-১-২০-৩, সিলস ১৩-৩-৪৫-৩, শামার জোসেফ ৬-১-২২-১, আলজারি জোসেফ ৮-১-৩২-২, গ্রেভস ৩-১-১২-০)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০১ রানে জয়ী
সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
পরবর্তী টেস্ট: ৩০ নভেম্বর, জ্যামাইকায়

Header Ad

আইনজীবী হত্যায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

পোস্টে শফিকুল আলম লিখেছেন, চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি লেখেন, জনগণকে শান্ত থাকার এবং অপ্রীতিকর কার্যকলাপে অংশ নেওয়া থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলিকে বন্দর নগরীসহ সমস্ত ঝুঁকিপূর্ণ আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন।

যেকোনো মূল্যে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে ও সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানিয়েছেন ড. ইউনূস।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে সৃষ্ট সংঘর্ষে নিহত হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। নিহত আলিফ (৩৫) সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি)। সাইফুল লোহাগাড়ার চুনতি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে তার অনুসারীরা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হন।

আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আহত শিক্ষানবিশ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে মৃত ঘোষণা করেন।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

স্বৈরাচার পালিয়েছে কিন্তু লেজ রেখে গেছে, তারা ষড়যন্ত্র করছে: তারেক রহমান
সহজেই বাংলাদেশকে হারাল উইন্ডিজ
আইনজীবী হত্যায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান
এ আর রহমান আমার বাবার মতো: মোহিনী দে
ইসকন আন্দোলনে দেশি-বিদেশি ইন্ধন রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সাইম আইয়ুবের বিস্ফোরক সেঞ্চুরিতে সমতায় ফিরলো পাকিস্তান
কে এই চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, তাকে গ্রেপ্তার নিয়ে কেন এত হইচই
ভারত থেকে আলু ও পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ, বেড়েছে দাম
৮০ বছর বয়সেও মডেলিং করবেন রুনা খান
চট্টগ্রামে চিন্ময়ের অনুসারীদের হামলায় আইনজীবী নিহত
গুলিবিদ্ধ হওয়ার ২২ দিন পর নওগাঁ যুবদল নেতার মৃত্যু
ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতের বিবৃতি
সম্প্রদায়ের নেতা হিসেবে নয়, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় গ্রেফতার: আসিফ মাহমুদ
সংবিধানের ৬২ জায়গায় সংশোধনের প্রস্তাব বিএনপির
বঙ্গবন্ধু রেল সেতুতে চলল পরীক্ষামূলক ট্রেন
শাপলা চত্বর গণহত্যায় শেখ হাসিনাসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
এখনও দেশের প্রতিষ্ঠিত অনেক গণমাধ্যম ভুল সংবাদ ও গুজব প্রচার করছে : উপদেষ্টা নাহিদ
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে প্রেরণ
ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে উত্তাল পাকিস্তান, নিহত ছয়