দেশে খাদ্য সংকট নেই: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
বর্তমান সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও প্রান্তিক কৃষকের পরিশ্রমে দেশে এখন খাদ্য সংকট নেই বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। বুধবার (২০ এপ্রিল) পিরোজপুরের সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ২০২১-২২ অর্থবছরে ও ২০২২-২৩ মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে আউশ ধান বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাজধানীর সচিবালয়ের নিজ দপ্তর কক্ষ থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। পিরোজপুর সদর উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পিরোজপুর সদর এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, কৃষকদের সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের ইতিহাসে কোন সরকার এতো কাজ করেনি, যেটা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার করছে। তাঁর সরকার বিদেশ থেকে কৃষি উপকরণ, সার-কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় করে অর্ধেকের বেশি ভর্তুকি দিয়ে কৃষকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন কৃষিনির্ভর বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে কৃষককে বাঁচাতে হবে। আর কৃষককে বাঁচাতে হলে, কৃষকের পরিশ্রমের মূল্য দিতে হলে কৃষি উপকরণ ও অন্যান্য সহযোগিতা তাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। কৃষক এখন ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খুলতে পারছে। বিনা জামানতে কৃষি ঋণ গ্রহণ করছে। তাদের বিনামূল্যে বীজ, কীটনাশকসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা হচ্ছে। এ বছর ৩০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে কৃষককে সার বিতরণ করা হচ্ছে।
শ ম রেজাউল করিম এ সময় আরো বলেন, বিএনপি সরকারের সময়ে বিদ্যুতের দাবির কারণে কানসাটে ও ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষককে নির্মমভাবে বুলেটবিদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। শেখ হাসিনার সময়ে কৃষকদের ভেতরে কোথাও অসন্তোষ নেই। তিনি কৃষককে ভালোবাসেন, কৃষিকে ভালোবাসেন। কৃষকের কাছে তিনি বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছেন, কৃষি উপকরণ পৌঁছে দিচ্ছেন। সার-বীজ, কৃষি যন্ত্রপাতি, প্রণোদনা পৌঁছে দিচ্ছেন। এ রকম কৃষকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে অতীতে কখনও আসেনি।
মন্ত্রী আরো বলেন, কৃষককে সবল করতে না পারলে, খাদ্যে যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা বাংলাদেশ অর্জন করেছে সে জায়গা থেকে আমরা পেছনে পড়ে যাব। প্রধানমন্ত্রীর পরিষ্কার বক্তব্য খাদ্যে কোনভাবেই সংকটের মুখোমুখি হওয়া যাবে না। পরনির্ভরশীল থাকা যাবে না। সে জন্য এক ইঞ্চি জায়গাও পতিত রাখার সুযোগ নেই। একই জমিতে তিন ফসল উৎপাদনে সরকার কাজ করছে। লবণাক্ত এলাকায় লবণসহিষ্ণু ধান ও অন্যান্য শস্য উৎপাদন করা হচ্ছে। বিদেশী মূল্যবান ফল এখন দেশে উৎপাদন করা হচ্ছে।
কৃষকদের উদ্দেশে এ সময় মন্ত্রী যোগ করেন, কৃষিনির্ভর সমাজ ব্যবস্থায় বাংলাদেশের প্রান্তিক পর্যায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জনশক্তি আপনারা। আপনাদের ত্যাগ ও পরিশ্রমে উৎপাদিত শস্য খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে ভূমিকা রাখছে। শুধু ধান, গম, ভুট্টার উপর নির্ভর না করে অন্যান্য যে সব ফসল ফলানো সম্ভব, সে বিষয়েও আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরো যোগ করেন, করোনার প্রাথমিক অবস্থায় অনেক দেশ বলেছিল বাংলাদেশে খাদ্য সংকট দেখা দেবে। কিন্তু বাংলাদেশে এখন খাবারের কোন হাহাকার নেই, সংকট নেই। তবে কৃষি উৎপাদন প্রক্রিয়ার দুর্বার গতি রক্ষা করতে না পারলে এ সংকট যে কোন সময় দেখা দিতে পারে।
পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নাজিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিপন চন্দ্র ঘোষ, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত মল্লিকসহ উপজেলায় কর্মরত অন্যান্য সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে পিরোজপুর সদর উপজেলার ১৫০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে আউশ ধান বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়।