কম খরচে সৌর বিদ্যুতের একক মডিউল উৎপাদনে সফল হয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সালাহউদ্দীন মিনা। এ সাফল্য আগামী দিনে দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মনে করেন।
বুধবার (২০ এপ্রিল) সহকারী অধ্যাপক মো. সালাহউদ্দীন মিনা ঢাকাপ্রকাশকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গবেষণাটি দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচন ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জুমহো কিনের তত্ত্বাবধানে করা হয়েছে।
সৌর বিদ্যুতের একক মডিউল বা সৌর প্যানেল হলো অনেকগুলো একক কোষের সন্নিবেশ। কোষগুলো সূর্যের আলো সরাসরি শোষণ করে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করে, যা পুরোপুরি পরিবেশবান্ধব একটি প্রক্রিয়া।
গবেষণায় দেখা গেছে, খার উপাদান মিশ্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করে উচ্চ মানের আলো শোষণকারী পাতলা ফিল্মের (সোলার সেল) উৎপাদন পদ্ধতি ব্যবহার করে খুব কম খরচে পানির দ্রবণের মাধ্যমে সৌর বিদ্যুতের একক মডিউল উৎপাদন করা সম্ভব। এ উদ্ভাবনের ফলে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন সহজ হবে। একইসঙ্গে সৌর কোষ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের এ প্রক্রিয়াটি অর্থনৈতিক দিক থেকে আরও সাশ্রয়ী হবে।
ন্যানো ফটো ইলেক্ট্রনিকস ডিভাইসেস ল্যাবে গবেষণাটি করা হয়। সালাহউদ্দীন মিনারের এ উদ্ভাবনটি বর্তমানে কোরিয়ান সরকারের মেধাসত্ত্ব (পেটেন্ট) হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
গবেষক সালাহউদ্দীন মিনা বলেন, 'বাংলাদেশ সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ ভাগ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য মাধ্যম ব্যবহার করে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এদিক থেকে আমার উদ্ভাবনটি কম খরচে নবায়নযোগ্য মাধ্যম ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।'
২০১৩ সালে প্রভাষক হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় যোগদানের পর তিনি ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে উচ্চতর শিক্ষা (পিএইচডি) গ্রহণের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া যান।
হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে প্রকাশ্যে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এবার ট্রাম্পের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার জন্য জেলেনস্কিকে ক্ষমা চাইতে বেলেছেন শীর্ষ
মার্কিন কূটনীতিক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
ওভাল অফিসের আলোচনা তর্ক-বিতর্কের পর সিএনএনকে রুবিও বলেন, ‘জেলেনস্কির উচিত আমাদের সময় নষ্ট করার জন্য ক্ষমা চাওয়া’।
রুবিও প্রশ্ন তুলেছেন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আক্রমণের পর তিন বছর কেটে গেছে, বেশি সময় ধরে যুদ্ধ সহ্য করে এখন কি প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যুদ্ধের অবসান চান না?
তিনি বলেন, ‘তার এগুলোর মধ্যে এসে দ্বন্দ্বে জড়ানোর দরকার নেই। আপনি যখন আক্রমণাত্মকভাবে কথা বলতে শুরু করবেন—এবং প্রেসিডেন্ট হলেন মধ্যস্থতাকারী, তিনি সারাজীবন এটা করেছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘হয়তো জেলেনস্কি শান্তি চুক্তি চান না, এটাই বোঝা যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘তিনি চানও আবার সম্ভবত তিনি চান না।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ওই বৈঠক চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, যখন জেলেনস্কি শান্তির জন্য প্রস্তুত হবেন, তখন হোয়াইট হাউসে আসতে পারেন।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের বরাতে সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট- ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়েছে।
শুক্রবার বৈঠকের পর ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে বলেছেন, হোয়াইট হাউসে শুক্রবার অর্থবহ মিটিং করেছি।
এত চাপ ও উত্তেজনার মধ্যে এমন কিছু শেখা গেছে, যা কথা না বললে কখনো বোঝা যেত না। আবেগের মধ্য দিয়ে যা বেরিয়ে আসে তা আশ্চর্যজনক, আমি স্থির হয়েছি যে জেলেনস্কি শান্তির জন্য প্রস্তুত না। এতে যদি আমেরিকা যুক্ত থাকে, কারণ তিনি মনে করেন আমাদের যুক্ত থাকার ফলে আলোচনায় তার একটা বড় সুবিধা হবে। আমি সুবিধা চাই না, শান্তি চাই।
ট্রাম্প আরো বলেন, তিনি (জেলেনস্কি) যখন শান্তির জন্য প্রস্তুত হবেন, তখন তিনি আসতে পারেন। তিনি প্রিয় ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রকে অসম্মান করেছেন।
বৈঠকের শুরুতে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের বিষয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তারা। যখন তাদের বাদানুবাদ চলছিল, তখন বৈঠকে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূতকে মাথায় হাত অবস্থায় দেখা গেছে। এই বৈঠকের আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, ইউক্রেনের খনিজসম্পদ নিয়ে শুক্রবার তার সঙ্গে জেলেনস্কির চুক্তি সই হবে। গতকাল শুক্রবার রাত ১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ইউক্রেন যুদ্ধের পুরো পরিস্থিতি যেন উল্টে যেতে বসেছে।
এর আগে, বৈঠকে জেলেনস্কি প্রকাশ্যেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি ট্রাম্পের নরম দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তাকে চ্যালেঞ্জ করে বসেন। তিনি বলেন, ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কোনওভাবেই আপোস হওয়া উচিত নয়।
ওদিকে ট্রাম্প বলেন, পুতিন একটি চুক্তি করতে চান। রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি চুক্তি করতে চাইলে ইউক্রেনকে কিছু ছাড় দিতে হবে। একপর্যায়ে গর্জে উঠে জেলেনস্কিকে ট্রাম্প বলেন, আপনি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন।
ক্ষুব্ধ ট্রাম্প জেলেনস্কিকে আরো বলেন, আপনি বড় সংকটে রয়েছেন। আপনি এটা (যুদ্ধ) জিততে পারবেন না। একটি চুক্তি করুন, নইলে আমরা বেরিয়ে যাই। এসময় জেলেনস্কিকে আরো কৃতজ্ঞ হতেও বলেন তিনি। ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জেলেনস্কিকে ‘অভদ্র’ও বলে বসেন।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের হোয়াইট হাউস সংবাদদাতারা এ বৈঠককে উত্তেজনার এক নজিরবিহীন মুহূর্ত বলে বর্ণনা করেছেন। দুই দেশের দুই শীর্ষ নেতার এমন আচরণে, বিশেষত রাষ্ট্রীয় শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে যাবতীয় কূটনৈতিক শিষ্টাচারকে জলাঞ্জলি দেওয়ার এই ঘটনায় গোটা বিশ্ব স্তব্ধ হয়ে গেছে বলা যায়।
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ভোলা জেলার ১০ গ্রামে রোজা রেখেছেন অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ। জেলার সাত উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে থাকা সুরেশ্বরী দরবার শরিফ ও সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরিফের অনুসারীরা রোজা রাখেন।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) তারাবি নামাজ আদায় করে আজ শনিবার ০১ মার্চ থেকে তাদের প্রথম রোজা শুরু হয়েছে।
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের মুলাইপত্তন গ্রামে সুরেশ্বরী ও মির্জাখীল দরবার শরীফের অনুসারীরা সবচেয়ে বেশি। জেলায় তাদের সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার হলেও টবগী ইউনিয়নে রয়েছে প্রায় তিন হাজারের মতো।
মুলাইপত্তন গ্রামের আমিন মিয়া চৌকিদার বাড়ি দরজা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আনোয়ার হোসেন জানান, প্রতিবার তাদের অনুসারীরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখেন। এ জন্য শুক্রবার ওই মসজিদে তিনি রাত ৯টায় প্রথম তারাবির নামাজ শুরু করেছেন। একদিন আগেই রোজা শুরু ভোলার ১০ গ্রামে।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. মাসুদ পারভেজ রহিম জানান, প্রতি বছরের মতো এ বছরও তারা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখেন। শুক্রবার থেকে তাদের প্রথম তারাবি ও শনিবার থেকে প্রথম রোজা শুরু হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ভোলা জেলার সদর, বোরহানউদ্দিন, দৌলতখান, তজুমদ্দিন, লালমোহন, চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলার ১০টি গ্রামে সুরেশ্বরী দরবার শরিফ ও সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরিফ অনুসারী মানুষের সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে তাদের টবগী ইউনিয়নের মুলাইপত্তন গ্রামে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার সীমান্তের ওপারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহতের খবর পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয় একাধিক সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেলেও এ ব্যাপারে বিজিবির দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নিহত যুবক হলেন কসবার পুটিয়া গ্রামের সুলতান মিয়ার ছেলে আল আমীন (৩২)।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় কসবার পুটিয়া সীমান্তের ওপারে কয়েকজন যুবককে লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছুঁড়ে বিএসএফ। এতে আল আমীন নামে এক যুবক আহত হয়। পরে বিএসএফ সদস্যরা তাকে ভারতের হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে শুক্রবার রাত ৯টায় মারা যান তিনি। মরদেহ বিএসএফ ক্যাম্পে রয়েছে।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদির ও কসবার বায়েক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তারা আল আমীন নামের ওই যুবকের বিএসএফের গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনাটি স্থানীয় বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। তবে এ বিষয়ে বিজিবির সুলতানপুর ৬০ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।