ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রেলওয়ের যত কর্মপরিকল্পনা
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে বেশ কিছু কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এসব কর্মপরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে রেগুলার ট্রেন, স্পেশাল ট্রেন, টিকেটিং ও আইনশৃঙ্খলাসহ নানা বিষয়।
এবার ঈদের অগ্রিম টিকিট ৫ দিনের হিসেবে আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে দেওয়া শুরু হবে৷ যথাক্রমে, ২৩ তারিখে ২৭ তারিখের, ২৪ তারিখে ২৮ তারিখের, ২৫ তারিখে ২৯ তারিখের, ২৬ তারিখে ৩০ তারিখের এবং ২৭ তারিখে ১ মে তারিখের অগ্রিম টিকিট দেওয়া হবে।
উল্লিখিত সময়ে সব রুটের টিকিট কমলাপুর বা বিমানবন্দরে পাওয়া যাবে না। ভিড় ও চাপ কমাতে রুট অনুযায়ী বিভিন্ন স্থান ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।
কমলাপুরে শুধু পশ্চিমাঞ্চলের সব ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে। খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, নীলফামারি, পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম রুটের সব ট্রেনের টিকিট শুধু মাত্র কমলাপুরেই পাওয়া যাবে।
বিমানবন্দর স্টেশনে শুধু চট্রগ্রাম ও নোয়াখালী রুটের সব ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে৷
তেজগাঁও থেকে শুধু ময়মনসিংহ, জামালপুরগামী ও দেওয়ানগঞ্জ রুটের সকল আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে৷
ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে শুধুমাত্র মোহনগঞ্জগামী মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেসের টিকিট পাওয়া যাবে৷
ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন) থেকে শুধুমাত্র সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সকল আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে।
এবার টিকিট কাটতে গেলে সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) কপি বাধ্যতামূলকভাবে লাগবে। কারণ এবার রেল ভ্রমণ নিরাপদ ও আরামদায়ক করার লক্ষ্যে ‘টিকিট যার ভ্রমণ তার’ স্লোগানে এনআইডি/জন্মনিবন্ধন সনদ ছাড়া কেউকে টিকিট দেওয়া হবে না।
এবারের ঈদের টিকিট হস্তান্তরযোগ্যও নয়। অর্থাৎ অন্যের টিকিট দিয়ে ভ্রমণ করা যাবে না। ভ্রমণ করলে অর্থদণ্ডসহ শাস্তির ব্যাবস্থা রয়েছে৷
একজন মানুষ সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট কিনতে পারবেন। তাই টিকিট কেটে ভ্রমণের ক্ষেত্রেও প্রমাণ হিসেবে মুল এনআইডি’র কপি সঙ্গে রাখতে হবে।
কাউন্টারের পাশাপাশি ৫০ শতাংশ টিকিট অনলাইনেও পাওয়া যাবে৷ তবে এবার কোন অ্যাপ থেকে টিকিট কাটার সুবিধা থাকছে না। শুধুমাত্র রেলের ই-টিকিট পোর্টাল থেকে অনলাইনে টিকিট কাটা যাবে৷ (https://eticket.railway.gov.bd)
উল্লিখিত তারিখগুলোতে কাউন্টার থেকে সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা ও অনলাইনে সকাল ৬ টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হবে।
আগামী ২৫ এপ্রিল থেকে সকল আন্তঃনগর ট্রেনের অফ ডে প্রত্যাহার করা হবে। অর্থাৎ ঈদের আগ পর্যন্ত ট্রেন গুলো প্রতিদিনই চলবে।
সকল ট্রেন ঈদের দিন বন্ধ থাকবে। সেই সঙ্গে ঈদ যেহেতু চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। তাই আগামী ২, ৩ ও ৪ মে তারিখের টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকবে। ১ মে চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে উক্ত তারিখের টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সকল আন্তঃনগর ছাড়াও কিছু রুটে ঈদ স্পেশাল/বিশেষ ট্রেন চালাবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। রুটগুলো হলো-"চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম" রুটে ২ টি, চাঁদপুর স্পেশাল ১/২। ‘ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা’ রুটে ১টি, দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল। ‘খুলনা-ঢাকা-খুলনা’ রুটে ১টি, খুলনা স্পেশাল (মৈত্রীর রেক দিয়ে চলনো হবে তাই ফুল রেক এসি কোচ থাকবে)
উল্লিখিত ট্রেনগুলোর মধ্যে শুধু ‘খুলনা স্পেশাল’ আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন বা ১মে পর্যন্ত চলবে। এবং বাকি চাঁদপুর ও দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল ২৯ এপ্রিল থেকে ১ মে ও ৪ মে থেকে ৮ মে পর্যন্ত চলাচল করবে।
ঈদের দিন শুধুমাত্র ‘সোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে ২টি বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। সোলাকিয়া স্পেশাল-১, ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ-ভৈরববাজার, রুট দিয়ে। শোলাকিয়া স্পেশাল-২, ‘ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ’ রুট দিয়ে চলাচল করবে।
ফিরতি টিকিট দেওয়া হবে ১ মে থেকে। ১ মে দেওয়া হবে ৫ মে তারিখের টিকিট। এছাড়া ২ মে ৬ মে তারিখের, ৩ মে ৭ মে তারিখের এবং ৪ মে ৮ মে তারিখের টিকিট দেওয়া হবে।
এবার ঈদযাত্রায় প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনে শুধুমাত্র মহিলা ও প্রতিবন্ধী যাত্রীদের জন্য একটি করে স্বতন্ত্র কোচ সংযোজন করা হবে।
প্রতিটি টিকিট বিক্রয় কেন্দ্রে একটি করে মহিলা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য কাউন্টার থাকবে। ঈদের অগ্রিম টিকিট অফেরৎযোগ্য। অর্থাৎ বিক্রিত টিকিট ফেরৎ নেওয়া হবে না।
স্পেশাল ট্রেনের কোন টিকেট অনলাইনে পাওয়া যাবে না। শুধুমাত্র রুট অনুযায়ী স্টেশন কাউন্টার হতে বিক্রি করা হবে।
টিকিট কালোবাজারী ঠেকাতে রেলের বিশেষ মনিটরিং টিম, নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশ, আরএনবি, বিজিবি, র্যাব সার্বক্ষণিক প্রহরায় থাকবে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
বড় স্টেশনগুলোতে যেকোন পরিস্থিতিতে বা ইমারজেন্সিতে তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার সুবিধার্থে কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।
যাত্রীবাহী ট্রেন চলার সুবিধার্থে ঈদের ৩ দিন আগে থেকে অতিপ্রয়োজনীয় কন্টেইনার ও জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন ছাড়া সকল পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। সেই সঙ্গে যেকোন দুর্ঘটনা দ্রুত মোকাবিলায় নিজ নিজ অবস্থানে রিলিফ ট্রেন বা উদ্ধারকারী ট্রেন তৎপর থাকিবে।
আরইউ/এমএমএ/