হাওরে শুধু এলিভেটেড সড়ক: মন্ত্রিসভা
হাওর বা নিচু এলাকায় কোনোরকম সড়ক না করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে মন্ত্রিসভা। আগাম বর্ষা, উজানের ঢল ও বন্যার কারণে হাওরের ফসল ডুবে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে বিষদ আলোচনা হয়েছে।
সেখান থেকেই সিদ্ধান্ত এসেছে হাওর এলাকায় রাস্তাঘাট না করার। এখন থেকে যা হবে সবই এলিভেটেড সড়ক করতে হবে। একই সঙ্গে পলিতে ভরাট হয়ে যাওয়া হাওর খননেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মিঠাইমন-অষ্টগ্রাম সড়ক নির্মাণের কারণে পানি প্রবাহে কোনো বাধা সৃষ্টি হয়েছে কি না সেটাও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে ওই সড়কে ঘন ঘন সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সচিবালয়ে নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, হাওর পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ আলোচনা হয়েছে। পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী এবং পরিকল্পনামন্ত্রী হাওর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। অন্যরাও যোগ দেন।
আনোয়ারুল ইসলাম জানান, আজকের বৈঠকে পরিস্কার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, হাওর এলাকায় এখন থেকে কোনো রাস্তাঘাট করা যাবে না। যদি কিছু করতে হয় সেটা এলিভেটেড ওয়েতে করতে হবে। যাতে পানি প্রবাহে বাধা না হয় হয়
পার্টিকুলারলি এটাও দেখতে বলা হয়েছে যে, সিলেটের পানিটা নামে অষ্টগ্রামের ওইদিক দিয়ে। বিভিন্ন নদীর শাখা-প্রশাখা দিয়ে। এই জন্য বলা হয়েছে, মিঠাইমন-অষ্টগ্রামে যে রাস্তাটা করা হয়েছে সেটাতে পানির প্রবাহে কোনো বাধা হল কি না, এটা দেখতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে সড়ক ও জনপথ বিভাগকে বলা হয়েছে, এটা রিভিউ করে প্রতি আধা কিলোমটার পর পর দেড়শ-দুশ মিটার ব্রীজ করে দেওয়া যায় কি না।
এ সময় সাংবাদিকরা জানতে চান, বিদ্যমান সড়কে আধা কিলোমটার পর পর কি সেতু করা হবে? জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সেতু আছে। তারপরও দেখতে বলা হয়েছে, সার্ভে করতে বলা হয়েছে, যে সড়ক করা হয়েছে সেটার কারণে যদি পানি আটকে যায়, পানির জন্য বাধা হয়।
পাহাড়ি ঢলে আসা পলিতে হাওর ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, এটা আলোচনা হয়েছে। হাওরের নদী-নালা, খাল এবং হাওর যেটা পলিতে ভরাট হয়েছে, অনেক জায়গায় যেখানে বেশি ভরাট হয়েছে সেখানে আগামী মৈৗসুমে শুরুতেই এগুলো অপসারণের কাজ শুরু করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বছরে পাঁচ হাজার মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু এবার এই এপ্রিলেই হয়ে গেছে ১২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত। ফলে স্বাভাবিকভাবে উপর থেকে পানি চলে এসেছে। ফলে প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সেখানে চাষ হয়েছে প্রায় দুই লাখ ৭০ হেক্টর জমিতে।
তিনি বলেন, এরপর যদি আর বৃষ্টি না হয় তাহলে ইনশাল্লাহ আর সমস্যা হবে না। হাওর এলাকায় তো এপ্রিলের মধ্যেই প্রায় সব ধান কাটা হয়ে যায়। সাধারণত এপ্রিলের শেষ থেকে মে মাসের প্রথম দিকে পানি আসে। কিন্তু এবার একটু আগেই বৃষ্টি চলে এসেছে। ১০/১২ দিন সময় পেলে ধান কেটে ফেলা যাবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বারি, ব্রি, বিনা’র মাধ্যমে চেষ্টা করা হচ্ছে আগাম জাতের ধানের জাত উদ্ভাবন করা যায় কি না। যাতে এপ্রিল মাসের শুরুতেই ধানট কেটে ফেলা যায়, সেটা তারা চিন্তা করছে।
এনএইচবি/এমএমএ/