কোটি মানুষ ঢাকা ছাড়বে, নারকীয় পরিস্থিতির আশঙ্কা
করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় এবার ঈদে এক কোটির বেশি মানুষ ঢাকা ছাড়বে বলে জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এ ছাড়াও এক জেলা থেকে অপর জেলায় আরও প্রায় ৫ কোটি মানুষ যাতায়াত করতে পারে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা না গেলে নারকীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কাও রয়েছে তাদের।
রবিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘ঈদযাত্রায় অসহনীয় যানজট, পথে পথে যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
যানজট ও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে গণপরিবহনের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা না গেলে এবারের ঈদযাত্রায় নারকীয় পরিস্থিতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে সংগঠনটি ঈদযাত্রায় অসহনীয় যানজট, পথে পথে যাত্রী হয়রানি, ভাড়া নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণেরও দাবি জানিয়েছে।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, আগামী ২০ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত ঈদবাজার, গ্রামের বাড়ি যাতায়াতসহ নানা কারণে দেশের বিভিন্ন শ্রেণির পরিববহনে বাড়তি প্রায় ৬০ কোটি ট্রিপ যাত্রীর যাতায়াত হতে পারে। এজন্য প্রয়োজন বাড়তি নিরাপত্তা, সর্বোচ্চ সতর্কতা, সব পথের প্রতিটি যানবাহনের সর্বোচ্চ ব্যবহার সুনিশ্চিত করা।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্য, পরিবহন নেতাদের চাঁদাবাজি এবং বিভিন্ন টোল পয়েন্টের কারণে জাতীয় মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট হয় বলে দাবি মোজাম্মেল হক চৌধুরীর। ঈদযাত্রায় সড়কে চাঁদাবাজি ও যানজটমুক্ত করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় রাজধানীবাসী যানজটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বে। তাই এ মুহূর্ত থেকে রাজধানীর সব পথের ফুটপাত ও রাস্তা হকার ও অবৈধ পার্কিং মুক্ত করতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে জোর দাবি জানাই।
রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের প্রবেশদ্বারগুলোতে অসহনীয় যানজট সৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কা করে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এসব যানজট নিয়ন্ত্রণে রাস্তার মোড় পরিষ্কার রাখা ও ছোট যানবাহন বিশেষ করে রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক প্রধান সড়কে চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে আগামী ২৫ রমজান থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত দুপুরের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাজধানী অচল হয়ে যাবে।
বাড়ি ফিরতে যাত্রীদের গুণতে হবে অতিরিক্ত অর্থ
মোজাম্মেল হক চৌধুরী সড়ক পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করে বলেন, ট্রেনের টিকিটও কালোবাজারিদের হাতে চলে যেতে পারে। এর ফলে কালোবাজারিদের কাছ থেকে বেশি দামে টিকিট কিনতে হতে পারে যাত্রীদের। এ ছাড়া সম্প্রতি রেল ধর্মঘটের কারণে রেলওয়ে ব্যাপক শিডিউল বিপর্যয়ের মুখে পড়ায় ব্যাপক ভোগান্তির আশঙ্কা রয়েছে।
বিমানের টিকিট সম্পর্কে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রুটের টিকিট আসন্ন ঈদের আগে ও পরের ১০ দিনের বাংলাদেশ বিমানসহ বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলোর টিকিট বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সিগুলো দখল করে নিয়েছে। এর ফলে এবারের ঈদে যাত্রী সাধারণকে এসব ফ্লাইটে টিকিট কয়েকগুণ বাড়তি দামে কিনতে হবে।
এ ছাড়া এবার দ্বিগুণ দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এ ছাড়া ফেরির সংখ্যা বাড়ানো এবং অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম ঠেকানোসহ সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দাবি জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
আরইউ/এসএন