বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মন্ডলের মুক্তি ও দোষীদের শাস্তি দাবি নির্মূল কমিটির
মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের নিঃশর্ত মুক্তি ও ষড়যন্ত্রকারীদের শাস্তির দাবি করেছে ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’। বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) সংগঠনের সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়- ‘আমরা মৌলবাদীদের ষড়যন্ত্রের শিকার শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের নিঃর্শত মুক্তি দাবি করছি। আর যে কিশোর ছাত্ররা মৌলবাদী চিন্তা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে অপমান করে পুলিশে সোপর্দ করেছে তাদের মধ্যে মানবিক চেতনার বিকাশ ঘটানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।’
আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশে যেভাবে প্রশাসন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উগ্র মৌলবাদী, ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িক মানসিকতার প্রসার ঘটছে তাতে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। বিকৃত সাম্প্রদায়িক মানসিকতায় আচ্ছন্ন পুলিশ কর্তৃক কলেজ শিক্ষক ড. লতা সমাদ্দারের লাঞ্ছনার ক্ষত উপশমের আগেই স্কুল শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের লাঞ্ছনা ও গ্রেফতারের ঘটনায় আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ।’
স্বাক্ষরদাতারা হলেন-বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম, বিচারপতি শামসুল হুদা, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, লেখক সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী, অধ্যাপক অনুপম সেন, নাট্যজন মুক্তিযোদ্ধা রামেন্দু মজুমদার, সমাজকর্মী মালেকা খান, শিল্পী হাশেম খান, শিল্পী রফিকুন নবী, অধ্যাপিকা পান্না কায়সার, অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম, জননেতা ঊষাতন তালুকদার, কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন, চলচ্চিত্রনির্মাতা মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীন ইউসুফ, অধ্যাপক ডা. কাজী কামরুজ্জামান, ক্যাপ্টেন (অব.) আলমগীর সাত্তার বীরপ্রতীক, ক্যাপ্টেন (অব.) সাহাবউদ্দিন আহমেদ বীরউত্তম, মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আবদুর রশীদ (অব.), মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. আমজাদ হোসেন, ড. নূরন নবী, লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, শহীদজায়া সালমা হক, কলামিস্ট সৈয়দ মাহবুবুর রশিদ, শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ, অধ্যাপক শিল্পী আবুল বারক আলভী, সমাজকর্মী কাজী মুকুল, কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, অধ্যাপক আয়েশ উদ্দিন, অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, ডা. শেখ বাহারুল আলম, ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, ডা. ইকবাল কবীর, মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চক্রবর্ত্তী, মুক্তিযোদ্ধা মকবুল-ই এলাহী চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান শহীদ, এডভোকেট আবদুস সালাম, অধ্যাপক মোহাম্মদ সেলিম, অধ্যাপক আবদুল গাফ্ফার, কবি জয়দুল হোসেন, ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজ, মুক্তিযোদ্ধা কাজী লুৎফর রহমান, সাবেক জাতীয় ফুটবলার শামসুল আলম মঞ্জু, সমাজকর্মী কামরুননেসা মান্নান, এডভোকেট আজাহার উল্লাহ্ ভূইয়া, অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, সঙ্গীতশিল্পী জান্নাত-ই ফেরদৌসী লাকী, অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব, সাংবাদিক শওকত বাঙালি, উপাধ্যক্ষ কামরুজ্জামান, অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী শম্পা, লেখক আলী আকবর টাবী, এডভোকেট কাজী মানছুরুল হক খসরু, এডভোকেট দীপক ঘোষ, অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট ড. কানিজ আকলিমা সুলতানা, ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরী, সাংবাদিক মহেন্দ্র নাথ সেন, শহীদসন্তান তৌহিদ রেজা নূর, শহীদসন্তান শমী কায়সার, শহীদসন্তান আসিফ মুনীর তন্ময়, শহীদসন্তান তানভীর হায়দার চৌধুরী শোভন, মানবাধিকারকর্মী তরুণ কান্তি চৌধুরী, লেখক সাংবাদিক সাব্বির খান, মানবাধিকারকর্মী আনসার আহমদ উল্লাহ, মানবাধিকারকর্মী স্বীকৃতি বড়ুয়া, এডভোকেট আবদুল মালেক, লেখক কলামিস্ট মিথুশিলাক মুর্মু, কলামিস্ট অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট লীনা পারভীন, মানবাধিকারকর্মী রহমান খলিলুর, অধ্যাপক সুজিত সরকার, সমাজকর্মী হারুণ অর রশীদ, এডভোকেট মালেক শেখ, সহকারী অধ্যাপক তপন পালিত, সাংবাদিক দিলীপ মজুমদার, সমাজকর্মী রাশেদ রাশেদুল ইসলাম, সমাজকর্মী ইস্রাফিল খান বাপ্পি, সমাজকর্মী শিমন বাস্কে, সমাজকর্মী শেখ আলী শাহনেওয়াজ পরাগ, সমাজকর্মী সাইফ উদ্দিন রুবেল, লেখক ও চলচ্চিত্রনির্মাতা শাকিল রেজা ইফতি ও সমাজকর্মী ফয়সাল হাসান তানভীর প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত ২২ মার্চ সকালে মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠে বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিচারের দাবিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে প্রধান শিক্ষক পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। পরে বিদ্যালয়ের ইলেকট্রিশিয়ান আসাদ বাদী হয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্মানুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে মামলা করেন। এরপর থেকে ওই শিক্ষক কারাগারে রয়েছেন।