ফাল্গুনী শপের সিইও আবারও গ্রেফতার, অন্য দুটি নামে চালাতো ব্যবসা
ফাল্গুনী শপের সিইও পাভেলকে গ্রেফতার করেছে র্যাব
প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অনলাইন শপ ‘ফাল্গুনী শপ ডটকম’ এর সিইও মো. পাভেল হোসেনকে আবারও গ্রেফতার করেছে র্যাব। এ সময় আটক করা হয় তার তিন সহযোগীকে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনশ্রী থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, মো. পাভেল হোসেন, তার সহযোগী মো. সাইদুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল হাসান এবং ফারজানা আক্তার মিম।
ফাল্গুনী শপ.কম বন্ধ করে দেবার পর মো. পাভেল অরিমপো.কম ও টেক ফেমিলি.কম নামে নুতুন দুটি অনলাইন শপ খুলে ব্যবসা শুরু করে। এ দুটি প্রতিষ্ঠানের এমডি পাভেল এবং তার স্ত্রী রিতা আক্তার চেয়ারম্যান। এ প্রতিষ্ঠান দুটির আড়ালেই ফাল্গুনী শপ.কম এর কার্যক্রম চালাতো পাভেল।
অভিযানে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির অফিস থেকে ১ টি বিদেশী পিস্তল, ১ টি ম্যাগজিন, ২ রাউন্ড গুলি, ২৪ ক্যান বিয়ার, ৪ বোতল দেশি মদ, ১ টি প্রাইভেট কার, কম্পিউটার, প্রিন্টার, বিপুল পরিমান এন-৯৫ মাস্ক, ১০০ টি ইনভয়েস, ৩০ চেক বহি, ৮০ টি সীল ও বিপুল পরিমান বিজ্ঞাপনের স্ক্রীনশট জব্দ করা হয়।
গোডাউন থেকে উদ্ধার করা হয় ৪২৩ কেজি চা পাতা, ৭১৫ কেজি চাউল, ৪১২ কেজি মসুর ডাল, ২৬০ কেজি ফুলক্রিম মিল্ক, ৮ টি বাই-সাইকেল, ৪৫০ লিটার সয়াবিন তেল, ২১৪ লিটার সরিষার তেল, ৫০ কেজি লবন, ১১০ কেজি হুইল পাউডার, গ্লাস ক্লিনার, হারপিক অন্যান্য সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়।
কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সম্প্রতি, অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু প্রতারণার অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে গ্রেফতার হয় ওই চারজন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ২০১৯ সালের শুরুতে পাভেল, দিদারুল আলম, কানিজ ফাতেমা ও রহমতুল্লাহ শওকত মিলে ফাল্গুনী শপ.কম নামে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটি চালু করেন। শুরুতে তারা উত্তরা এলাকায় একটি জায়গা ভাড়া নিয়ে আউটলেট খুলে ব্যবসার কার্যক্রম পরিচালনা করতো। ব্যবসার অন্য অংশীদাররা গ্রহক ঠকানোর বিষয়টি বুঝতে পেরে পাভেলের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করে। উকিল নোটিশ পাঠিয়ে যৌথ ব্যবসা থেকে সড়ে যায়। বিষয়টি জয়েন্ট স্টক অথোরিটিকেও অবহিত করেন তারা। তারপরও পাভেল তাদের স্বাক্ষর নকল ও জাল সীল ব্যবহার করে গ্রাহকদের প্রতারিত করে আসছিল। এমনকি তাদের নাম ব্যবহার করে যৌথ নামে চেক ইস্যু করত পাভেল।
২০২১ সালের মে মাসে প্রতারণার অভিযোগে কয়েকজন গ্রাহক পাভেলের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় প্রতারণার মামলা দায়ের করলে পাভেল গ্রেফতার হয় এবং ২১ দিন জেল খেটে জামিনে ছাড়া পায়। এরপর সে আগের চেয়েও বেপরোয়া হয়ে উঠে। কিছু সংখ্যক গ্রাহক ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে অভিযোগ করলে অধিদপ্তর কর্তৃক একাধিকবার ফাল্গুনী শপ.কম এর আউটলেট বন্ধ করে দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, এই প্রতারক চক্রের সদস্যরা করোনা মহামারিতে লকডাউন চলাকালীন অনলাইনে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী স্বল্প মূল্যে বিক্রির বিজ্ঞাপন প্রচার করে। তাদের এই বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে ক্রেতাসাধারণ তাদের সাথে যোগাযোগ করে এবং বিপুল পরিমান অর্ডার দিতে থাকে। পরবর্তীতে প্রতারক প্রতিষ্ঠানটি কিছু কিছু ক্রেতাকে আংশিক, কিছু কিছু ক্রেতাকে নিম্নমানের পণ্য আবার কিছু ক্রেতাদের কোন পণ্য সরবরাহ করা হতো না। ক্রেতাদেরকে পণ্যের মূল্য অগ্রিম পরিশোধ করতে বলা হতো। সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে মোবাইল ব্যাংকিং ও অনলাইন গেটওয়ের মাধ্যমে পণ্যে মূল্য অগ্রিম পরিশোধ করতো। পরে পাভেল মার্চেন্ট একাউন্ট ও অনলাইন গেটওয়ে থেকে টাকা তুলে নিতো।
কে এফ