ভোটের যতটুকু উন্নয়ন আমরাই করেছি: প্রধানমন্ত্রী
ভোটের যতটুকু উন্নয়ন হয়েছে সেটা আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা যদি সত্যিই ভোট নিয়ে খেলতাম, যদি সত্যি ভোট ছিনতাই করে নিতাম, তাহলে ওই যে ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মতো যেভাবে জনগণ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে ছিল সেভাবে আমাদের হঠাত। মানুষ তো সেখানে সাড়া দেয়নি। কারন মানুষতো ভোট দিতে পেরেছে। আজকে ভোটের যতটুকু উন্নয়ন সেটা আমরাই করেছি।’
বুধবার (৩০ মার্চ) দুপুরে একাদশ জাতীয় সংসদের ১৭তম অধিবেশনে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা একথা বলেন।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের ইতিহাস তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর মাত্র ৯ মাসের মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটা সংবিধান দিলেন, শুধু সংবিধান দিলেন না, সংবিধানের ভিত্তিতে একটা নির্বাচনের দিলেন। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিটা তিনি সুষ্ঠুভাবে চালু করলেন। এরপর ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। সংবিধান লংঘন করে আর্মি রুলস লঙ্ঘন করে প্রথমে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এল; তিনি একাধারে সেনাপ্রধান একাধারে রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জেনারেল এরশাদও একই কাজ করলেন। সেনাপ্রধান আবার নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করলেন। এভাবেই তো ক্ষমতার পালাবদল শুরু হলো। আমরা এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছি, আন্দোলন করেছি। আমরা গণতন্ত্র দিতে চাই দেশে। বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি এরপর ২০০১ সালে ক্ষমতা হস্তান্তর করি। বাংলাদেশের ইতিহাসে শান্তিপূর্ণভাবে কখনো ক্ষমতা হস্তান্তর হয়নি। একমাত্র ১৯৯৬ সালের ১৬ জুলাই যখন আমি ক্ষমতা হস্তান্তর করে আসি তখনই কেবল শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। আওয়ামী লীগ পায়নি, বিএনপি পায়নি, জাতীয় পার্টিও না। তখন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন সাহেব আমাদের ডাকলেন, আমাকে বললেন আপনি তো জাতীয় পার্টি ও জামায়াতকে নিয়ে সরকার গঠন করতে পারেন। আমি বলেছিলাম না সংখ্যাগরিষ্ঠতা যেহেতু পাইনি আমি সরকার গঠন করব না। পরে খালেদা জিয়া জামায়াতকে নিয়ে সরকার গঠন করল এটা হলো বাস্তবতা। এরপর খালেদা জিয়া কি করল? ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুারি নির্বাচন দিল কোনো দল অংশ নেয়নি। সারাদেশে সেনাবাহিনী নামিয়ে ভোটার বিহীন একটা নির্বাচন করল। সেই নির্বাচনে ৩-৪ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি। আর্মি নামিয়ে পুরো নির্বাচনকে কুলষিত করল। মানুষের অধিকার কেড়ে নিলে মানুষ কিন্তু বসে থাকে না। আমরা আন্দোলনের ডাক দিলাম সেই আন্দোলনে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ল। এরপর ১৯৯৬ সালের ৩ মার্চ খালেদা জিয়া পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন হলো, সেই নির্বাচন যাতে না হয় তার জন্য নানান চক্রান্ত করল খালেদা জিয়া, এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচন হলো বিএনপি দুপুর ১২টার পর থেকে সরে গেল। তারপর বলব ক্ষমতার ধারাবাহিকতা ছিল। একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত ছিল। যদি আমরা ভোট না পেতাম ওই যে খালেদা জিয়া আন্দোলনের ডাক দিল, অবরোধরে ডাক দিল। এত আন্দোলন করার পর জনগণের সাড়া পেল না কেন?
এসএম/এসএন