রাশিয়ার বিপক্ষে ভোট না দেওয়ায় বাংলাদেশকে টিকা দেবে না লিথুয়ানিয়া
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশকে করোনার টিকা দেবে না লিথুয়ানিয়া। গতকাল সোমবার (৭ মার্চ) দেশটির ন্যাশনাল রেডিও অ্যান্ড টেলিভিশন (এলআরটি) এ তথ্য জানিয়েছে।
লিথুয়ানিয়ান প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র রাসা জাকিলাইটিয়েনের বরাতে এলআরটি জানিয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের নিন্দায় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আনা প্রস্তাবে ভোটদানে বাংলাদেশ বিরত থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২ মার্চ লিথুয়ানিয়া সরকার ঘোষণা করেছিল, তারা বাংলাদেশকে মানবিক সহায়তা হিসেবে ফাইজারের তৈরি চার লাখ ৪ হাজার ৬০০ ডোজ করোনার টিকা সরবরাহ করবে।
ইতিমধ্যে ইউক্রেন, লাটভিয়া, মলদোভা, জর্জিয়া, আর্মেনিয়া, তাজিকিস্তান, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামকে টিকা সরবরাহ করেছে লিথুয়ানিয়া।
গত রবিবার (৬ মার্চ) পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, শান্তি রক্ষার স্বার্থে ইউক্রেন সংকট নিয়ে একটি প্রস্তাবে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ভোটদানে বাংলাদেশ বিরত ছিল।
এর আগে ২ মার্চ ইউক্রেনের ওপর মস্কোর সামরিক অভিযান বন্ধ করা এবং অবিলম্বে সব রুশ সেনা প্রত্যাহারের দাবিতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের জরুরি অধিবেশনে উত্থাপিত প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার চারটি দেশ–ভারত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানসহ জাতিসংঘের ৩৫টি সদস্য রাষ্ট্র ইউক্রেন ইস্যুতে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল।
‘ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন’ শিরোনামের প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটির সময় জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৪১টি রাষ্ট্র প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছে। আর বেলারুশ, সিরিয়া, উত্তর কোরিয়া ও ইরিত্রিয়া এই চারটি দেশ রাশিয়ার পক্ষ নিয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। অন্য রাষ্ট্রগুলো ভোটদানে বিরত ছিল।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
বারো দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষে আজ চলছে যুদ্ধের ১৩তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/