এক নজরে করোনা পরিসংখ্যান
সর্বোচ্চ শনাক্ত-মৃত্যু ঢাকা জেলায়, সর্বনিম্ন বান্দরবানে
বাংলাদেশে করোনার ২ বছর পূর্ণ হচ্ছে আগামীকাল ৮ মার্চ। চীন থেকে প্রথম উৎপত্তি হওয়ার পর বাংলাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তির কথা প্রথম জানা যায় ২০২০ সালের ৮ মার্চ এবং সে বছরই ১৮ মার্চ প্রথম করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি মারা যান। রোগীদের মধ্যে দুজন পুরুষ প্রবাসী বাংলাদেশি ছিলেন যারা সবে ইতালি থেকে ফিরে এসেছিলেন এবং একজন মহিলা আত্মীয় ছিলেন, যিনি তাদের একজনের সংস্পর্শে এসে সংক্রমিত হন।
বর্তমানে দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আছে। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ধাপে ধাপে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। অনলাইনের বদলে চলছে শারীরিক উপস্থিতিতে পাঠদান। একদিকে কমেছে করোনার প্রভাব অন্যদিকে বাড়ছে অসেচতনতা। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন করোনা ঠেকাতে স্বাস্থ্য সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই এবং অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
২০২১ সালের ১০ আগস্ট দেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ ২৬৪ জন এবং ২৮ জুলাই শনাক্তের সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জন। তারপর থেকেই শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসে। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪ জনের মৃত্যু এবং নতুন করে ৪৩৬ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এনিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা ১৯ লাখ ৪৭ হাজার ৭০২ জন এবং মোট মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৮৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, বিভাগ ভিত্তিতে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক লোক মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে, ১২ হাজার ৭৭৫ জন যা মোট মৃত্যুর ৪৩ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন মারা গেছেন ময়মনসিংহ বিভাগে, ৮৭৯ জন যা মোট মৃত্যুর ৩ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। এ ছাড়া মৃত্যুর সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে আছে চট্টগ্রাম, ৫ হাজার ৮৬০ জন (২০.১৫%); তৃতীয় খুলনা, ৩ হাজার ৭১৫ জন (১২.৭৭%); চতুর্থ রাজশাহী, ২ হাজার ১৩৯ জন (৭.৩৫%); পঞ্চম রংপুর, ১ হাজার ৪১৬ জন (৪.৮৭%); ষষ্ঠ সিলেট, ১ হাজার ৩২৪ জন (৪.৫৫%); সপ্তম বরিশাল, ৯৮১ জন (৩.৩৭%)।
দেশে ৬০ বছরের উর্ধ্বের বয়সী মারা গেছেন ১৬ হাজার ২০২ জন যা মোট মৃত্যুর ৫৫ দশমিক ৭ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী মারা গেছেন ৬ হাজার ৭৭৯ জন (২৩.৩০%), ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী মারা গেছেন ৩ হাজার ৪২৩ জন (১১.৭৭%), ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী মারা গেছেন ১ হাজার ৭১৫ জন (৫.৯০%), ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী মারা গেছেন ৬৮৫ জন (২.৩৫%), ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী মারা গেছেন ১৯৮ জন (০.৬৮%) এবং ১০ বছরের নিচে শিশু মারা গেছে ৮৭ জন (০.৩০%)।
মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ২৪ হাজার ৬৬১ জন যা মোট মৃত্যুর ৮৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ, বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ৩ হাজার ৬১১ জন (১২.৪১%), বাড়িতে মারা গেছেন ৭৮২ জন (২.৬৯%) এবং হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে ৩৫ জনকে (০.১২%)।
জেলা ভিত্তিতে সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা ঢাকা জেলায় ৮ হাজার ৩১১ জন যা মোট মৃত্যুর ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন মৃত্যুর সংখ্যা বান্দরবান জেলায় ১৮ জন যা মোট মৃত্যুর দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। সর্বোচ্চ শনাক্তের সংখ্যাও ঢাকা জেলায় ৯ লাখ ৮৭ হাজার ৬৯১ জন যা মোট মৃত্যুর ৫০ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন শনাক্তের সংখ্যাও বান্দরবান জেলায় ৩ হাজার ২০৮ জন যা মোট মৃত্যুর দশমিক ১৬ শতাংশ।
দেশে এখন পর্যন্ত পুরুষ মারা গেছেন ১৮ হাজার ৫৬৯ জন যা মোট মৃত্যুর ৬৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং নারী মারা গেছেন ১০ হাজার ৫২০ জন যা মোট মৃত্যুর ৩৬ দশমিক ১৬ শতাংশ।
বর্তমানে সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫৮টি আরটি-পিসিআর, ৫৭টি জিন-এক্সপার্ট এবং ৬৬১টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট ল্যাবসহ মোট ৮৭৬টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ কোটি ৩৫ লাখ ৪৬ হাজার ৯৫০টি। যার মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯০ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৬ টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪৫ লাখ ২০ হাজার ২৭৪ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
/এএস