রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চায় ডিআরইউ

সাগর-রুনী হত্যার দ্রুত বিচার দাবি সাংবাদিকদের

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনী হত্যা মামলার তদন্তের জট খুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ দাবি করেছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)। আজ শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে ডিআরইউ চত্বরে এক প্রতিবাদ সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।

ডিআরইউ’র সদস্য সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনী হত্যার প্রতিবাদে এ কর্মসূচির আয়োজন করে সংগঠনটি। সাগর-রুনী হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বারবার না পিছিয়ে দ্রুত বিচার দাবি করেন সাংবাদিকরা।

গত দশ বছরে ৮৫ বার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পরিবর্তনের ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিক নেতারা বলেন, তদন্ত কার্যক্রমে পুলিশের ওপর আমরা আস্থা পাচ্ছি না। বারবার ব্যর্থ হচ্ছে তদন্ত কর্মকর্তারা। এ জন্যই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দরকার।

ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু বলেন, সাগর-রুনী হত্যার বিচারের দাবিতে আগামী রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। আমরা একই দাবিতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং প্রধান বিচারপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করবো।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, দুজন সাংবাদিককে এক দশক আগে হত্যা করা হয়েছে। তাদের হত্যাকারীদের প্রশাসন এখনো গ্রেপ্তার না করায় ক্ষোভ জানাচ্ছি। আদালত যদি এ বিচারের দিকে সুদৃষ্টি দেয় তবে সারা দেশের মানুষের প্রত্যাশিত বিচার দ্রুত শেষ হবে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলাম খান তপু বলেন, ২০১২ সালের এ দিনে সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনী খুন হন। ওই বছর আমাদের প্রতিবাদের বছর ছিল। সারা দেশে দলমত নির্বিশেষে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল সেটির কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এ ডিআরইউ। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমরা সেই বিচার পাইনি।

ডিআরইউয়ের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব বলেন, দফায় দফায় তদন্ত প্রতিবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে। এ পর্যন্ত এ মামলার তদন্ত ৮৫ বার পেছানো হয়েছে। কিন্তু কেন এমন হলো আমরা জানতে চাই? হয়ত কয়েক দিন পরে সেটি ১০০ পার হয়ে যাবে। সেটি না করে দ্রুত আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের যুগ্ম মহাসচিব শেখ মামুনুর রশিদ, ডিআরইউ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, সাবেক সহ-সভাপতি আজমল হক হেলাল, মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক, ডিআরইউর সাবেক অর্থ সম্পাদক রাশেদ আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক শাহনাজ শারমীন, অর্থ সম্পাদক এস এম এ কালাম, নারী বিষয়ক সম্পাদক তাপসী রাবেয়া আঁখি, তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক কামাল মোশারেফ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাদিয়া শারমিন প্রমুখ।

নেতারা বলেন, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনীকে নৃশংসভাবে নিজ বাসায় হত্যা করা হয়। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, হত্যাকাণ্ডের পর দশ বছর পেরিয়ে গেলেও হত্যাকারীদের আজও শনাক্ত কিংবা গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিচার প্রক্রিয়াও থমকে আছে। এমনকি ৮৫ বার মামলার চাজশীর্ট প্রদানের তারিখ নেয়া হয়েছে।

নেতারা অবিলম্বে এই মামলার খুনীদের গ্রেপ্তারের দাবি করে বলেন, এভাবে সভা-সমাবেশ করলে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টনক নড়বে না। এজন্য প্রয়োজন সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন।

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনীর হত্যার বিচারের দাবীতে এবার ডিআরইউ তিন দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে; যার প্রথম বৃহস্পতিবার রাতে ডিআরইউ চত্বরে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়। কর্মসূচিতে সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনী দম্পতির একমাত্র সন্তান মাহির সারওয়ার মেঘ এবং রুনির ভাই নওশের রোমান উপস্থিত ছিলেন।

আগামী রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।

এমএইচ/এসএন

/এপি/

Header Ad

বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটিশ রাজা চার্লস

ফাইল ছবি

বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস। সরকারি সফরের অংশ হিসেবে ভারতীয় উপমহাদেশে আসার পরিকল্পনা করছেন তিনি। চলতি বছরের শুরুর দিকে শরীরে ক্যানসার শনাক্ত হওয়ার পর বিদেশ সফর থেকে বিরত রয়েছেন ব্রিটিশ এই রাজা। তবে কিছু দিনের মধ্যে তিনি বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান সফর করতে পারেন বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিররের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস ও তার স্ত্রী রানি ক্যামিলা অদূর ভবিষ্যতে ভারতীয় উপমহাদেশ সফরের পরিকল্পনা করছেন। রাজা তৃতীয় চার্লস ক্যানসার থেকে ধীরে ধীরে সেরে ওঠায় শিগগিরই এই সফরে বের হতে পারেন। ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটেনের রাজার সফরের পরিকল্পনাকে তার শারীরিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতির লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ঠিক কবে নাগাদ ব্রিটিশ রাজা ও রানির এই সফর শুরু হতে পারেন, সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য জানায়নি ডেইলি মিরর।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর তৃতীয় চার্লস সব ধরনের সফর বাতিল করতে বাধ্য হন। তবে ভারতীয় উপমহাদেশের তিন দেশ—বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তান সফরের এই পরিকল্পনার মাধ্যমে পুনরায় তার সফর শুরু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্রেক্সিট পরবর্তী বিশ্বে তাৎপর্যপূর্ণ অর্থনৈতিক সংযোগ প্রতিষ্ঠা করতে চায় ব্রিটেন। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্রিটিশ রাজা ও রানির সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

দেশটির একটি সূত্র বলেছে, ‘‘রাজা এবং রানির জন্য এই ধরনের সফরের পরিকল্পনা করাটা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। ভারতীয় উপমহাদেশে তাদের একটি সফর শুরুর কথা রয়েছে; যা বিশ্ব মঞ্চে ব্রিটেনের জন্য রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ হবে। এই সময়ে ব্রিটেনের জন্য রাজা এবং রানিই জুতসই রাষ্ট্রদূত।’’

ডেইল মিরর বলছে, রাজ সফরের জন্য সম্ভাব্য আয়োজক দেশগুলোর সাথে আলোচনার করতে ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তান সফরের খসড়া তৈরি করা হচ্ছে। গত বছর ভারত সফর বাতিল করার পর রাজা ও রানিকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে দেশটিতে ব্রিটিশ রাজা ও রানির সফর নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। গত মাসে ব্রিকসের শীর্ষ সম্মেলনে সাক্ষাৎ করেছিলেন এই দুই রাষ্ট্রনেতা। এছাড়া গত মঙ্গলবার ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার ‘‘কৌশলগত অংশীদারত্বে’’ স্বাগত জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। যদিও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইউক্রেন যুদ্ধ ‘‘শান্তিপূর্ণভাবে শেষ’’ হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন।

২০০৬ সালে ক্যামিলাকে সঙ্গে নিয়ে ওয়েলসের যুবরাজ হিসেবে এক সপ্তাহের জন্য পাকিস্তান সফর করেছিলেন চার্লস। সেই সময় শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আপনাদের কাছে পৌঁছাতে আমার প্রায় ৫৮ বছর লেগেছে। তবে এটা যে চেষ্টা করার অভাবে নয়, তা আমি বলতে পারি।’’

Header Ad

নির্বাচনের ফাঁকা মাঠ ভেবে খুশি হচ্ছেন, সাবধান হন : তারেক রহমান

ছবি: সংগৃহীত

যেসব নেতাকর্মী সামনে নির্বাচনের ফাঁকা মাঠ ভেবে খুশি হচ্ছেন। তারা সাবধান হন। সামনে ভয়ংকর অন্ধকার দেয়াল আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেল পাঁচটায় রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠানটি ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলার বিষয়ে আইনজীবীর প্রশ্নের উত্তরে তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচার পড়ে গেছে, পালিয়ে গেছে। তারা তো বসে নাই, তারা ষড়যন্ত্র করছে। যদি তাদের ষড়যন্ত্র সফল হয়- মামলা তো উঠবেই না বরং নেতাকর্মীদের নামে জ্যামিতিক হারে ২০টা মামলা হয়ে যাবে। সেই সম্ভাবনাও আছে। সেই সম্ভাবনাকে যদি নস্যাৎ করে দিতে হয়, তাহলে আজকে থেকে আপনাদের প্রত্যেকেই সতর্ক হতে হবে।

তিনি বলেন, আপনাদের একটাই টার্গেট হতে হবে। জনগণ, জনগণ অ্যান্ড জনগণ। এর বাইরে যদি কিছু চিন্তা করেন। তাহলে পতিত স্বৈরাচার সফল হবে। তারা সফল হলে আইনজীবী সহকর্মীর বক্তব্য অনুযায়ী মামলা আপনাদের মিটবে না। বরং মাথার ওপরে আরও ১০টি, ২০টি মামলা চেপে বসবে। আপনাদের নিজেকে যদি বাঁচাতে হয় তাহলে উপায় একটাই- জনগণের আস্থা অর্জন করেন। আপনার পরিবার-পরিজনকে রক্ষা করতে হলে উপায় একটাই জনগণের আস্থা আর্জন করেন।

তিনি বলেন, ফারাক্কা বাঁধের বিষয়ে আমাদের একটি ধারণা আছে। এটি একটি আন্তর্জাতিক বিষয়। বিএনপির বাইরে অন্য সরকার যখন ক্ষমতায় এসেছে, তারা যথাযথভাবে এটা দেখেনি। পতিত স্বৈরাচার সরকার প্রতিবেশী দেশকে খুশি করার জন্য ইচ্ছা করেই করেনি। আমরা সময়মতো অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কাজ করবো। আমাদের ন্যায্য হিস্যা আদায়ের জন্য প্রয়োজনে দেশের স্বার্থে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের নিয়েই কাজ করবো।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে পাঁচ বছরে পাঁচ কোটি বৃক্ষরোপণের ইচ্ছে আছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের পানি বাড়ছে। গবেষণায় উঠে আসছে বাংলাদেশের অনেকাংশ, অর্ধেক বা তার কম অংশ ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। এই দেশের মানুষকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। খালেদা জিয়া সরকারের সময় আমরা বৃক্ষমেলা করতাম। আমাদের যেভাবেই হোক, এই কর্মসূচি আবার শুরু করতে হবে। সবাইকে উৎসাহ দিতে হবে বৃক্ষরোপণের জন্য। গাছ প্রকৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ব্যক্তিগতভাবে আমার একটা পরিকল্পনা আছে। আগামী দিনে আমরা সুযোগ পেলে পাঁচ বছরে আমরা পাঁচ কোটি বৃক্ষরোপণ করব।

এর আগে সকাল ১০টায় প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়। এসময় বক্তব্য দেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, চেয়ারপারসনের বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ড. মাহাদী আমিন।

কর্মশালায় আলোচনা করেন, বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশিদা বেগম হীরা ও কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা হাবিব। সভাপতিত্ব করেন, বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত।

বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব এবিএম মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় নেতা ওবায়দুর রহমান চন্দন, আমিরুল ইসলাম আলীম প্রমুখ।

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটিশ রাজা চার্লস
নির্বাচনের ফাঁকা মাঠ ভেবে খুশি হচ্ছেন, সাবধান হন : তারেক রহমান
গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ