প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চায় ডিআরইউ
সাগর-রুনী হত্যার দ্রুত বিচার দাবি সাংবাদিকদের
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনী হত্যা মামলার তদন্তের জট খুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ দাবি করেছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)। আজ শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে ডিআরইউ চত্বরে এক প্রতিবাদ সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।
ডিআরইউ’র সদস্য সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনী হত্যার প্রতিবাদে এ কর্মসূচির আয়োজন করে সংগঠনটি। সাগর-রুনী হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বারবার না পিছিয়ে দ্রুত বিচার দাবি করেন সাংবাদিকরা।
গত দশ বছরে ৮৫ বার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পরিবর্তনের ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিক নেতারা বলেন, তদন্ত কার্যক্রমে পুলিশের ওপর আমরা আস্থা পাচ্ছি না। বারবার ব্যর্থ হচ্ছে তদন্ত কর্মকর্তারা। এ জন্যই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দরকার।
ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু বলেন, সাগর-রুনী হত্যার বিচারের দাবিতে আগামী রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। আমরা একই দাবিতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং প্রধান বিচারপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করবো।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, দুজন সাংবাদিককে এক দশক আগে হত্যা করা হয়েছে। তাদের হত্যাকারীদের প্রশাসন এখনো গ্রেপ্তার না করায় ক্ষোভ জানাচ্ছি। আদালত যদি এ বিচারের দিকে সুদৃষ্টি দেয় তবে সারা দেশের মানুষের প্রত্যাশিত বিচার দ্রুত শেষ হবে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলাম খান তপু বলেন, ২০১২ সালের এ দিনে সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনী খুন হন। ওই বছর আমাদের প্রতিবাদের বছর ছিল। সারা দেশে দলমত নির্বিশেষে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল সেটির কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এ ডিআরইউ। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমরা সেই বিচার পাইনি।
ডিআরইউয়ের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব বলেন, দফায় দফায় তদন্ত প্রতিবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে। এ পর্যন্ত এ মামলার তদন্ত ৮৫ বার পেছানো হয়েছে। কিন্তু কেন এমন হলো আমরা জানতে চাই? হয়ত কয়েক দিন পরে সেটি ১০০ পার হয়ে যাবে। সেটি না করে দ্রুত আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের যুগ্ম মহাসচিব শেখ মামুনুর রশিদ, ডিআরইউ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, সাবেক সহ-সভাপতি আজমল হক হেলাল, মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক, ডিআরইউর সাবেক অর্থ সম্পাদক রাশেদ আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক শাহনাজ শারমীন, অর্থ সম্পাদক এস এম এ কালাম, নারী বিষয়ক সম্পাদক তাপসী রাবেয়া আঁখি, তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক কামাল মোশারেফ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাদিয়া শারমিন প্রমুখ।
নেতারা বলেন, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনীকে নৃশংসভাবে নিজ বাসায় হত্যা করা হয়। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, হত্যাকাণ্ডের পর দশ বছর পেরিয়ে গেলেও হত্যাকারীদের আজও শনাক্ত কিংবা গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিচার প্রক্রিয়াও থমকে আছে। এমনকি ৮৫ বার মামলার চাজশীর্ট প্রদানের তারিখ নেয়া হয়েছে।
নেতারা অবিলম্বে এই মামলার খুনীদের গ্রেপ্তারের দাবি করে বলেন, এভাবে সভা-সমাবেশ করলে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টনক নড়বে না। এজন্য প্রয়োজন সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনীর হত্যার বিচারের দাবীতে এবার ডিআরইউ তিন দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে; যার প্রথম বৃহস্পতিবার রাতে ডিআরইউ চত্বরে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়। কর্মসূচিতে সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনী দম্পতির একমাত্র সন্তান মাহির সারওয়ার মেঘ এবং রুনির ভাই নওশের রোমান উপস্থিত ছিলেন।
আগামী রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
এমএইচ/এসএন
/এপি/