শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

স্মৃতিই হয়ে গেলেন পীর ভাই...

পীর হাবিবুর রহমান

ল্যাবএইড হাসপাতালের সিসিইউ। দরজা বন্ধ। ভেতরে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সরা পীর হাবিবুর রহমানের শরীর থেকে সমস্ত যন্ত্রপাতি সরাচ্ছেন। যা দিয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা পীর হাবিবুর রহমান এতক্ষণ বেঁচে ছিলেন।

শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকের ঘটনা এটি।

এর কিছুক্ষণ পর রুমের ভেতর থেকে সাদা কাফনে মোড়ানো পীর ভাইয়ের নিথর দেহ ট্রলিতে করে নিয়ে যাওয়া হল লিফটের দিকে। আমরা ছুটলাম পিছু পিছু। সোজা ল্যাবএইড হাসপাতালের পুরনো ভবনের বেজমেন্টে। সেখানে লাশবাহী গাড়িতে ট্রলিটি উঠানো হল।

পীর ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ শুনে তার বন্ধু-বান্ধব, শুভাকাঙ্ক্ষী,দীর্ঘদিনের সহকর্মী, নিজ এলাকার মানুষ, কাছের দূরের সব স্বজনরা জড়ো হয়েছিলেন ধানমন্ডির সাইন্সল্যাব মোড়ের হাসপাতালটিতে। সংবাদকর্মী আর টেলিভিশন ক্যামেরার উপস্থিতি ছিল চির বিদায় নেওয়া পীর ভাইয়ের শেষ শব যাত্রার চিত্র ধারণ করার জন্য।

লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ীর ছোট দরজাটি খোলা রাখা হয়েছিল, সবাই যেন এক নজর দেখতে পারেন প্রিয় মানুষটিকে। কিন্তু সাদা কাপড়ে মোড়ানো পীর ভাইয়ের মরদেহ দেখা গেলেও মুখ দেখা যাচ্ছিল না। তারপরও স্বজন আর শুভাকাঙ্খীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল সেই স্বচ্ছ গ্লাসের উপরে।

সন্ধ্যার আকাশে সূর্য ডুবো ডুবো। এর মধ্যেই লাশবাহী গাড়িটি পীর ভাইকে নিয়ে বের হয়ে গেল হাসপাতালে বেসমেন্ট থেকে। গন্তব্য উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের বাসা। সেখানে শনিবার বাদ এশা প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হলো। রাতভর সেখানেই ছিল মরদেহটি।

রবিবার শীতের সকাল। ঢাকার আকাশে ঝকঝকে রোদ। উত্তরা থেকে রওয়ানা হয়ে শব যাত্রাটি সকাল ১১টার কিছু পর পৌঁছালো কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। উদ্দেশ্য এই বিশিষ্ট সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকের শেষ যাত্রায় যেন তার ভক্ত, অনুসারী, দীর্ঘদিনের সহকর্মী আর পরিচিতজনরা শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারেন।

একঘণ্টারও বেশি সময় সেখানে রাখা হয়েছিল কফিন বন্দি মরদেহটি। ফুলে ফুলে সয়লাব হয়ে গিয়েছিল। শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত পীর হাবিবুর রহমানের শব বাহী বাহনটি এবার চলে এলো তার দীর্ঘদিনের আড্ডাস্থল জাতীয় প্রেসক্লাবে।

এখানে দ্বিতীয় নামাজের জানাজা শেষে নিয়ে যাওয়া হল রিপোর্টারদের প্রাণের সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রাঙ্গণে। সেখানে জানাজা ও শ্রদ্ধা জানানো শেষে তৃতীয় জানাজার জন্য নিয়ে যাওয়া হল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তার সর্বশেষ কর্মস্থলে।

সেখান থেকে বিকেলেই শববাহী অ্যাম্বুলেন্সটি রওয়ানা হল সেই মাটির উদ্দেশে, যেখানে তার নাড়ি পোঁতা, তার (পীর হাবিব) ভাষায় জল-জোছনার শহর, কবিতার শহর, শান্তির শহর, হাওর কন্যা সুনামগঞ্জে।

সোমবার দু’দফা জানাজা শেষে এবং প্রিয় মানুষটির প্রতি সুনামগঞ্জবাসীর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তাকে সমাহিত করা হবে পারিবারিক কবরস্থানে মা বাবার কবরের পাশে।

সুনামগঞ্জ যাওয়ার আগে পথে সিলেট শহরের চৌহাট্টায় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সিলেটের সবস্তরের প্রতিনিধিরা।


আর কখনো পীর হাবিব ফিরবেন না ইট পাথরের এই শহরে। আর কখনোই মানুষের কথা লিখবেন না। মানুষের সুখ-দুঃখের কথা শুনবেন না। তার কলম দিয়ে আর কখনোই রাজনৈতিক বিশ্লেষণ বের হবে না। তার ভক্ত পাঠককুল আর কখনোই তার লেখার কোনো আলোচনা কিংবা সমালোচনা করবেন না, করতে পারবেন না। তার পুরোনো লেখা আর স্মৃতিগুলো আঁকড়ে ধরেই ভক্ত পাঠককুলকে পার করতে হবে বাকিটা সময়, খুঁজতে হবে শান্তনা। প্রিয় বন্ধু-বান্ধব স্বজন প্রতিবেশী কিংবা সহকর্মীর ডাকে সাড়া দেবেন না। দেখাও দেবেন না। এই শহরে তার শূন্যতা দীর্ঘদিন অনুভব হবে।


পীর ভাইয়ের সঙ্গে আমার অনেক অনেক মধুর মধুর স্মৃতি আছে। তার আগে বলে রাখি, পীর ভাইয়ের নামের সঙ্গে মফস্বল থেকেই পরিচিত। কিন্তু সামনাসামনি কখনোই দেখা হয়নি। ঢাকায় মূলধারার সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পরও দেখা বা পরিচয় কোনটাই হয়নি।

২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে যোগ দিলাম দৈনিক যুগান্তরে। তখনই পীর ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয়। প্রথম পরিচয়েই বুকে জড়িয়ে ধরলেন। যেন অনেক দিনের চেনা। সেই থেকেই পীর ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক। কিন্তু যুগান্তরে তাকে বেশিদিন পাইনি।

২০১১ সালে তিনি উপসম্পাদক হিসেবে যোগ দেন বাংলাদেশ প্রতিদিনে। তার কিছুদিন পর এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে হঠাৎ একদিন দুপুরে ফোন করলেন। বললেন, বিপুল তুই কই? বললাম, ঢাকার বাইরে আছি ভাই। বিকেলে ফিরব। বললেন, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় আমার অফিসে আমার সঙ্গে আজই দেখা করবি।

বিকেলে ফিরেই পীর ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করলাম। বললেন, তুই আমার সঙ্গে কাজ করবি। সিভি দিয়ে যাস। ঠিক আছে বলে বিদায় নিলাম।

পরদিন মেইলে সিভি পাঠিয়ে দিলাম। তারপর আরেকদিন পীর ভাইয়ের ফোন, দ্রুত আমার অফিসে আয়। যেতেই তিনি আমাকে নিয়ে গেলেন শাহজাহান সরদার ভাইয়ের কক্ষে। শাহজাহান ভাই তখন বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক।

আমাকে দেখে শাহজাহান ভাই নানান কথা জিজ্ঞেস করলেন। এক পর্যায়ে পীর ভাই বললেন, শাহজাহান ভাই বিপুলকে সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে সচিবালয় বিটে নেওয়া যায়। ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী তাকে ... বেতন দিয়েন।

এরপর আমি চলে আসলাম। তার কয়েকদিন পর ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশ প্রতিদিন থেকে ফোন। আপনার একটা চিঠি আছে। ওই দিনই গেলাম পত্রিকা অফিসটিতে। নিয়োগপত্র নিয়ে আসলাম। পরদিন ১৮ এপ্রিল যুক্ত হলাম পীর ভাইয়ের সঙ্গে। তারপর টানা নয় বছর নয় মাস ১২ দিন ছিলাম। পীর ভাইয়ের ছায়ায়। যদিও মধ্যে এক বছর পীর ভাই ছিলেন না পত্রিকাটিতে।

এই দীর্ঘ সময়ে পীর ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে অনেক নিউজের আইডিয়া পেয়েছি। আবার আমি অনেক নিউজ নিয়ে যখন তার সামনে হাজির হয়েছি। ঘটনা শুনে লাফিয়ে উঠেছেন। বলেন, দারুণ রিপোর্ট। এটা হিট হবে, কিংবা এটা লিড করা যাবে।


একবার একটি রিপোর্ট লিখেছিলাম একজন মন্ত্রী, একজন সচিব ও একটি সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে নিয়ে। তাদের বিদেশ ভ্রমণ আর নারী প্রীতি নিয়ে। রিপোর্টের কাহিনী বলতেই পীর ভাই বললেন, ভালো করে লেখ। এটা বক্স আইটেম করব। দেখবে এই রিপোর্ট হিট হবে। সত্যিই পরদিন রিপোর্টটি বক্স আইটেম হিসেবে প্রথম পাতায় তিন কলামে ছাপা হয়েছিল।

রিপোর্ট প্রকাশের পর কত কত ফোন। এক মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বললেন, ভাই আগামী ৬ মাস আপনি আমার মন্ত্রণালয়ের ধারের কাছেও আসবেন না। কেন, কেন? জিজ্ঞেস করতেই বললেন, রিপোর্ট লিখলেন আপনি। আর মন্ত্রী থেকে শুরু করে সবাই আমাকে দায়ী করছেন। বলছেন, আমি নাকি তথ্য দিয়েছি। আপনার সঙ্গে তো গত একমাসেও আমার দেখা হয়নি। শুনে বললাম, ভয় পাইয়েন না। আমি আপনার আশপাশেও আসব না।

আরেক কর্মকর্তার পক্ষে একজন অফিসে ফোন করলেন। আর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমার ওই সময়ের সহকর্মী মতিন আব্দুল্লাহকে বললেন, আপনাদের রিপোর্টার তো আমাকে শেষ করে দিয়েছে। এসব ঘটনা দারুণ এনজয় করেছিলাম।


এমন আরও অনেক অনেক স্মৃতি আছে। অন্য কোনো সময় লেখার চেষ্টা করব। লেখাটি শেষ করতে চাই পীর ভাইয়ের অন্তিম যাত্রায় তার জন্য শুধু প্রার্থনার মধ্য দিয়ে।
অসময়ে চলে যাওয়া পীর ভাই ওপারে ভালো থাকবেন।

আরএ

Header Ad

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মৃত তিন শিক্ষার্থী হলেন- মোজাম্মেল হোসেন নাঈম (২৪), মোস্তাকিম রহমান মাহিন (২২) ও জোবায়ের আলম সাকিব (২২)।

জানা গেছে, শনিবার সকালে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ৬টি ডাবল ডেকার বাস ও ৩টি মাইক্রোবাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়ক ধরে রিসোর্টের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় উত্তর পেলাইদ গ্রামের উদয়খালী বাজারে পৌঁছালে বিআরটিসির ডাবল ডেকার একটি বাস পল্লী বিদ্যুতের তারের স্পর্শে আসে। এ সময় বাসটি বিদ্যুতায়িত হলে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাকিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তিনজনকেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। আহত সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা জরুরি বিভাগে যাচ্ছি।

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ