সাংবাদিক পীর হাবিবের প্রতি শ্রদ্ধা
শহীদ মিনারে রবিবার, সুনামগঞ্জে সোমবার
সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক পীর হাবিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ রবিবার (৬ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে।
এ ছাড়া সাংবাদিক ও তার সহকর্মীদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় প্রেসক্লাব, ডিআরইউ ও বাংলাদেশ প্রতিদিন কার্যালয়ে নেওয়া হবে। পীর হাবিবের ভাই পীর ফজলুর রহমান মিজবাহ এ কর্মসূচির কথা জানিয়েছেন।
সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য পীর হাবিবের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। বাদ জোহর জাতীয় প্রেসক্লাবে দ্বিতীয় জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদন হবে। এরপর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে। বেলা তিনটায় মরদেহ তার কর্মস্থল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাংলাদেশ প্রতিদিন কার্যালয়ে নেওয়া হবে। সেখান থেকে মরদেহ তার নিজ এলাকা সুনামগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হবে।
সোমবার (৭ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় সুনামগঞ্জ পৌর শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে পীর হাবিবুর রহমানের মরদেহ। বাদ জোহর সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় মসজিদে এবং নিজ গ্রাম মাইজবাড়ীতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে পিতা-মাতার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন পীর হাবিবুর রহমান।
প্রথম জানাজা আজ বাদ এশা
পীর হাবিবুর রহমানের মরদেহ হাসপাতাল থেকে উত্তরার বাসায় নেওয়া হবে। বাদ এশা উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের পার্ক মসজিদে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত
সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান আজ শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টা ৮ মিনিটে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে পীর হাবিব ছিলেন তৃতীয়। তার এক ছোটভাই পীর ফজলুর রহমান মিজবাহ বর্তমান জাতীয় সংসদ সদস্য। তিনি স্ত্রী, দুই সন্তান রেখে গেছেন।
তিনি ক্যান্সার আক্রান্ত ছিলেন। গত বছর অক্টোবরে মুম্বাই জাসলুক হাসপাতালে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের মাধ্যমে ক্যানসার মুক্ত হন। ২২ জানুয়ারি তিনি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হন। বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহর পরামর্শে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি হন। করোনামুক্ত হওয়ার পর কিডনি জটিলতার কারণে তাকে ভর্তি হতে হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় স্ট্রোক করলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
পীর হাবিবুর রহমানের জন্ম ১৯৬৩ সালের ১২ নভেম্বর সুনামগঞ্জ শহরে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে ১৯৮৪ সাল থেকে সাংবাদিকতায় তার হাতেখড়ি। রিপোর্টার হিসেবে দৈনিক বাংলাবাজার, যুগান্তর, মানবকণ্ঠ, আমাদের সময় পত্রিকায় কাজ করেছেন। কিছু দিন তিনি অনলাইন মাধ্যমে কাজ করেন। তিনি নিউজপোর্টাল পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজের প্রতিষ্ঠাতা। সর্বশেষ বর্তমানে বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলামিস্ট হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।
শোক প্রকাশ
পীর হাবিবুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, পীর হাবিবুর রহমানের মৃত্যু দেশের গণমাধ্যম জগতের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। দেশে সাংবাদিকতার উন্নয়ন ও প্রসারে তিনি যে ভূমিকা রেখেছেন সংবাদকর্মীরা তা চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।
এ ছাড়া, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, সিলেট বিভাগ সাংবাদিক সমিতি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান এক সময়ের তুখোড় রিপোর্টার ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক পীর হাবিবের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন : সাংবাদিক পীর হাবিব আর নেই
এপি/এমএমএ/