সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫ | ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

দেশান্তরী হয়েও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন তারা

ছবি: সংগৃহীত

স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসন আমলে গুম, খুন, দমন-পীড়ন ছিলো স্বাভাবিক ঘটনা। স্বাধীন বাংলাদেশে যেন বাকস্বাধীনতাই হারিয়ে ফেলেছিলো বাংলার জনগন। বিরোধী মতের কাউকেই গ্রাহ্য করতেন না। হাসিনার গত দেড় দশকের কর্তৃত্ববাদী সরকারের জমানায় চক্ষুশূল হয়েছিলেন অনেক সাংবাদিক-সমাজকর্মীও। জেল-জুলুম, মামলা-হামলায় বিপর্যস্ত হয়ে দেশান্তরী হয়েছেন অনেকে। সমাজ-সংসার ফেলে বিদেশ বিভুঁইয়ে কাটানো এসব মানুষ দেশ ছাড়লেও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ছিলেন প্রতিবাদে মুখর।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকার ও সরকারি দলের লোকজনের নানা অপরাধ, দুর্নীতি, গুম, খুন ও নিপীড়নের খবর তথ্যসহ তুলে ধরতেন। কেউ কেউ প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে সংবাদ প্রকাশে রাখতেন বড় ভূমিকা। নানা কারণে ‘চুপ’ থাকা দেশীয় মিডিয়া যেখানে সরকারের গুণকীর্তন করত, তার বিপরীতে এসব মানুষ সত্য প্রকাশে নিয়েছেন সাহসী তৎপরতা। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সুইডেন, কানাডাসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত এ সচেতন মানুষদের ভূমিকা গণতন্ত্রকামী মানুষকে দিয়েছিল আন্দোলনের ভিন্ন এক রসদ।

মুশফিকুল ফজল আনসারী

দৈনিক ইত্তেফাক, ইউএনবিসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কূটনৈতিক রিপোর্টার হিসেবে বেশ উজ্জ্বল মুখ ছিলেন মুশফিকুল ফজল আনসারী। তিনি ২০০১-২০০৬ মেয়াদে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সহকারী প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর জাস্ট নিউজ বিডির প্রধান সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালীন সরকারের রোষানলে দেশ ছাড়েন এই সাংবাদিক। দেশ ছাড়লেও সরকারের অন্যায়, অনিয়ম আর কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করেন আন্তর্জাতিক মহলে। বিশ্বের বড় বড় মিডিয়ায় নিজের লেখনীতে তুলে ধরেন এক স্বৈরাচারী সরকারের গল্প। জাতিসংঘের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংগুলোতে প্রশ্ন করে আন্তর্জাতিক ফোরামে সরকারকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মুশফিকুল ফজল আনসারী। এ ছাড়া জাতিসংঘ, হোয়াইট হাউস এবং ওয়াশিংটনকেন্দ্রিক বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের সদস্য হওয়ার সুবাদে বাংলাদেশে স্বৈরাচারী সরকারের নানা অনিয়ম আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরেন তিনি।

জুলকারনাইন সায়ের খান সামি

জনপ্রিয় বৈশ্বিক গণমাধ্যম আলজাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক এবং মানবাধিকারকর্মী জুলকারনাইন সায়ের খান সামি। সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের দুর্নীতি এবং শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা অপরাধ সাম্রাজ্যে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্যাপক আলোচনায় আসেন এই সাংবাদিক। এরপর একের পর এক সংবাদ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের নথি ফাঁস করে গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে আস্থার নাম হয়ে ওঠেন জুলকারনাইন। লন্ডনে অবস্থানরত এ সাংবাদিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সক্রিয়। নির্ভুল তথ্য সরবরাহ, নানা গোপন নথি প্রকাশ করে সরকারকে বিভিন্ন সময়েই প্রশ্নের মুখে ফেলেন এই সাংবাদিক। বর্তমানে বাংলা আউটলুকের প্রধান সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন।

নেত্র নিউজের প্রধান সম্পাদক তাসনীম খলিল

সুইডেনভিত্তিক গণমাধ্যম নেত্র নিউজের প্রধান সম্পাদক তাসনীম খলিল। নির্বাসনে থাকা এই সাংবাদিক একের পর এক দুর্নীতি এবং অনিয়মের নিউজ প্রকাশ করে সারাবছরই আলোচনায় ছিলেন বাংলাদেশের। সরকারও নেত্র নিউজ সাইট ব্লক করে রাখে বাংলাদেশে। বিদ্যুৎ সেক্টর, ব্যাংক, পুলিশি হত্যাকাণ্ড, গুমসহ দেশের প্রায় সব অনিয়ম এবং দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার ছিলেন তাসনীম খলিল এবং নেত্র নিউজ।

পিনাকী ভট্টাচার্য

ফ্রান্সে নির্বাসনে থাকা বাংলাদেশি মানবাধিকার কর্মী পিনাকী ভট্টাচার্য। ব্যক্তিজীবনে চিকিৎসক হলেও তিনি সবসময় মানবাধিকার নিয়ে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। যার ফলে দেশ ছাড়তে হয় তাকে। বিদেশে অবস্থানকালে তিনি যেন মুক্তিকামী মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠেন। সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতি এবং দলবাজির কঠোর সমালোচনার পাশাপাশি ইউটিউবে তুলে ধরতেন বিশ্লেষণাত্মক মতামত। সাধারণ মানুষের কাছে তুমুল জনপ্রিয় শিক্ষক বাবার সন্তান পিনাকীর গ্রামের বাড়ি দেশের বগুড়া জেলায়।

লন্ডনে নির্বাসিত সাংবাদিক জাওয়াদ নির্ঝর

টুঁটি চেপে রাখা গণমাধ্যমের নানা অনিয়ম, সুবিধাবাদী সাংবাদিক এবং সরকারের দুর্নীতি, শোষণের নানা চিত্র তুলে ধরে সবসময় আলোচনা ছিলেন লন্ডনে নির্বাসিত সাংবাদিক জাওয়াদ নির্ঝর। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় অসংখ্য মামলাও করেছেন সরকারের সুবিধাভোগীরা। গ্রামের বাড়িতে হামলা, বাবা-মাকে মারধরের ঘটনাও ঘটেছে। এরপরও গত প্রায় অর্ধডজন বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল সোচ্চার ছিলেন জাওয়াদ নির্ঝর। স্বৈরাচারী সরকারের নানা অনিয়ম, নেতাদের দুর্নীতি নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই তুলে ধরতেন নানা তথ্য। সোচ্চার ছিলেন পুলিশি হত্যা, গুম-খুন নিয়েও। নানা চাপে দেশীয় গণমাধ্যমে যেসব সংবাদ প্রকাশ হতো না, সেসব সংবাদ নিজের ফেসবুক এবং ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করতেন। এ ছাড়া করাপশন ইন মিডিয়া নামে একটি ফেসবুক পেজে তুলে ধরতেন গণমাধ্যম সংক্রান্ত নানা অনিয়মও।

সাংবাদিক মনির হায়দার

বাংলাদেশি সাংবাদিক মনির হায়দার। সরকারের রোষানলে দেশ ছেড়ে আবাস গড়েন মার্কিন মুল্লুকে। তবে সরকারের অন্যায় এবং অনিয়ম নিয়ে সোচ্চার ছিলেন বরাবরই। নিজের ফেসবুক পেজে নিয়মিত অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য উন্মোচনের পাশাপাশি ইউটিউবেও সমালোচনা করতেন সরকারের। স্বৈরাচারী সরকারের পুলিশি নির্যাতন, গুম, খুনের বিষয়গুলো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে তুলে ধরতেন মনির হায়দার।

নাগরিক টিভি পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান টিটো এবং নাজমুস সাকিব

যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডাভিত্তিক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম নাগরিক টিভি। এটি পরিচালনা করেন মোস্তাফিজুর রহমান টিটো এবং নাজমুস সাকিব। প্রায় এক দশক ধরে সরকারের অনুগত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দুর্নীতি এবং অনিয়ম তুলে ধরে আলোচনায় ছিল এ প্ল্যাটফর্মটি। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের শোষণমূলক নীতি, গুম, খুনের বিষয়েও সোচ্চার ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান টিটো এবং নাজমুস সাকিব।

মোস্তফা ফিরোজ

দেশীয় গণমাধ্যমের আলোচিত মুখ মোস্তফা ফিরোজ। দেশের অনেক প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের হাতেখড়ি মোস্তফা ফিরোজের হাত ধরে। তবে স্বৈরাচারী সরকারের রোষাণলে পড়ে দেশ ছাড়তে হয় তাকে। দেশে হুমকির মুখে পড়লেই তিনি চলে যেতেন বিদেশে। সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় বসে কাজ করতেন। সেখানে বসে সরকারের নানা অন্যায় আর অনিয়ম নিয়ে নিয়মিত লিখে গেছেন এই সাংবাদিক। ফেসবুক এবং ইউটিউবে নিয়মিত সমালোচনামূলক ভিডিও আপলোড করতেন মোস্তফা ফিরোজ। দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাও তুলে ধরতেন আন্তর্জাতিক মহলে।

চিকিৎসাবিজ্ঞানী ফাহাম আব্দুস সালাম

চিকিৎসাবিজ্ঞানী ফাহাম আব্দুস সালাম স্বৈরাচারী সরকারের একজন কঠোর সমালোচক ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে মলিকুলার থেরাপিউটিক্স নিয়ে গবেষণা করে লাভ করেন পিএইচডি ডিগ্রি। বিজ্ঞানের নানা বিষয়ে দক্ষতা থাকা ফাহাম আব্দুস সালাম নানা তথ্য এবং যুক্তিনির্ভর সমালোচনা করতেন সরকারের। শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় এ বিজ্ঞানী ফেসবুক সরকারের অনিয়ম এবং অনাচার নিয়ে নিয়মিত লিখতেন। এ ছাড়া ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমেও সরকারের নানা অনিয়মের উপাত্তনির্ভর সমালোচনা করতেন।

সাংবাদিক ড. কনক সারোয়ার

ক্ষুরধার যুক্তি এবং নতুন নতুন তথ্য দেওয়ার কারণে সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত সাংবাদিক ড. কনক সারোয়ার। স্বৈরাচারী সরকারের গুম-খুনের বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠের কনক সারোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে অনেক। এমনকি তার পরিবারকেও এর মূল্য দিতে হয়েছে। এরপরও থেমে যাননি তিনি। সরকারের নানা গোপন তথ্য, অনিয়ম-দুর্নীতি প্রকাশ করে তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি।

অনুসন্ধানী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন

একসময়ের জনপ্রিয় অনুসন্ধানী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন। সরকারের রোষাণলে পড়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় অনেক মামলাও রয়েছে। তবে বিদেশে অবস্থান করলেও ইলিয়াস হোসেন নানা তথ্যনির্ভর সংবাদ প্রকাশ করেন নিজের ফেসবুক আইডি এবং ইউটিউব চ্যানেলে। বেশ কয়েকটি অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশ করে আলোড়ন তোলেন দেশের মিডিয়া পাড়ায়।

টেলিভিশন সাংবাদিকতায় জনপ্রিয় মুখ শাহেদ আলম। সরকারের রোষাণলে পড়ে দেশ ছেড়ে যান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে বসেও সরকারের নানা অনিয়ম নিয়ে ছিলেন সোচ্চার। ফেসবুক এবং ইউটিউবে তথ্যনির্ভর সমালোচনা দেশের তরুণদের মধ্যে তাকে জনপ্রিয় করে তুলেছে।

সরকারের কঠোর সমালোচনা এবং দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনকে নানা তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করে সারা বছরই বেশ আলোচনায় ছিলেন জ্যাকব মিল্টন এবং শফিকুল আলম।

Header Ad
Header Ad

এনআইডিতে ডাকনাম-একাধিক স্ত্রীর নাম যুক্তের নীতিগত সিদ্ধান্ত

ফাইল ছবি

জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) ডাকনাম ও একাধিক স্ত্রীর নাম সংযুক্ত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ (এনআইডি)। সোমবার (১০ মার্চ) অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এম এম হুমায়ূন কবীর এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এনআইডিতে প্রচুর সংশোধনের আবেদন আসছে জানিয়ে হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘এগুলোতে দেখা যাচ্ছে অনেক ব্যক্তি, তাদের ডাকনাম সেখানে পাচ্ছি না। এ জন্য এগুলোর সমাধানও করতে পারছি না।’

তিনি বলেন, ‘এ জন্য কাল আমরা এটা নিয়ে বসেছিলাম। তখন আমাদের আলোচনায় প্রাথমিক একটি চিন্তা এমন হয়েছে যে আমরা যদি, বাংলাদেশে যেহেতু প্রচুর মানুষ ডাকনাম আলাদাভাবে ব্যবহার করে, অফিশিয়াল নাম বা আসল নাম বলে। এ ক্ষেত্রে ২ নম্বর ফরমে যদি আমরা ডাকনামটা নিয়ে নিতে পারে তাহলে সম্ভবত আমাদের অনেক লোককে চিহ্নিত করতে সহযোগিতা করবে।’

এনআইডির মহাপরিচালক বলেন, ‘আর দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, অনেক সময় দ্বিতীয় স্ত্রীরা এসে বলেন যে তাদের নাম ডেটাবেইসে অন্তর্ভুক্ত করতে। আমরা এই তো সুয়োমটো করতে পারি না। আমরা যদি দুই নম্বর ফরমে একাধিক স্ত্রী যদি কারো থাকে তার নামটা যদি আগেই সংরক্ষণ করে নিই তাহলে দেখা যাবে ভবিষ্যতে ওই সমস্যা আর থাকবে না। এ জন্য দুই নম্বর ফরমে এটা রাখা যায় কি না এটা নিয়ে আলোচনা করেছি।’

হুমায়ূন কবীর জানান, নির্বাচন কমিশন বা সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল বিষয়টি অনুমোদন করার পর এটি বাস্তবায়ন করা হবে।

Header Ad
Header Ad

হাতের ইশারায় পলকের সালাম, বললেন মুখ খুললেই বাড়ে মামলা

জুনায়েদ আহমেদ পলক। ছবি: সংগৃহীত

কথা বললে মামলার সংখ্যা ও রিমান্ড বাড়তে থাকে। কথা বলে কী লাভ? আদালত প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে এসব অভিযোগ করেছেন সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত প্রাঙ্গণে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এদিন দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলায় পলককে দুপুর ১২টার পর কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। সেখান থেকে দুপুর পৌনে ২টার দিকে প্রিজনভ্যানে তাকে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে হাজির করা হয়।

প্রিজনভ্যানে থাকা অবস্থায় লোহার জানালার কাছে গিয়ে হাতের ইশারায় হাসিমুখে সালাম দেন পলক। এরপর উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, কথা বললে মামলা ও রিমান্ডের সংখ্যা বাড়তে থাকে। কথা বলে কি লাভ? আমার জন্য দোয়া করবেন।

কিছুক্ষণ পরে প্রিজনভ্যানের মধ্যে এক পুলিশ সদস্য ওঠে পলককে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট পরিয়ে দেন। এরপর তাকে পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়।

হাজতখানায় নেওয়ার পথে পলক আবারও বলেন, কথা বললে মামলা ও রিমান্ডের সংখ্যা বাড়তে থাকে। পেছনে হ্যান্ডকাপও দেওয়া হয়। কথা বলার অধিকার কি আমাদের আছে? এখন পর্যন্ত আমাকে ৭৮ মামলার আসামি করা হয়েছে।

পলকের আইনজীবী ফারজানা ইসলাম রাখি জানান, আজকে দুদকের মামলায় পলকের হাজিরার জন্য দিন ধার্য ছিল। এজন্য তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালত আনা হয়েছে।

পলক কোনও ডিভিশন পাচ্ছেন না অভিযোগ করে এই আইনজীবী বলেন, কাশিমপুর কারাগারের চার নম্বর সেলে তাকে হাই সিকিউরিটির মধ্যে রাখা হয়েছে। কোনও প্রকার ডিভিশন দেওয়া হচ্ছে না। তার ফ্যামিলির সঙ্গে যোগাযোগ পর্যন্তও করতে দেওয়া হচ্ছে না। সাধারণ কয়েদিদের মতো করে তাকে রাখা হচ্ছে। দেশের খবর জানার জন্য অখ্যাত চারটি পত্রিকা তাকে দেওয়া হয়। জাতীয় কোনও পত্রিকা দেওয়া হচ্ছে না। মূলত সেখানে ডিভিশনের ব্যবস্থা নেই বলে জানান তিনি।

এর আগে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত ১২ ডিসেম্বর জুনাইদ আহমেদ এবং তার স্ত্রী আরিফা জেসমিনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। মামলার তথ্য অনুযায়ী, জুনায়েদ আহমেদ পলকের ২৪টি ব্যাংক হিসাবে ঘুষ, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে ৩২ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩১৪ টাকা জমা হয়। এর মধ্যে ২৯ কোটি ৮৪ লাখ ৭২ হাজার ৯৫ টাকা তুলে নেওয়া হয়। ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এ লেনদেন হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

দলীয় নেতাকে খুনের অভিযোগে চুয়াডাঙ্গায় বিএনপির তিন নেতা বহিষ্কার

নিজ দলের নেতাকে হত্যার অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার চুয়াডাঙ্গা তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিলন মিয়া ও সেক্রেটারি আবুল হোসের টোটন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম (মল্লিক) খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত দলের তিন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

রোববার (৯ মার্চ) রাতে দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি খাজা আবুল হাসনাত ও সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলীর যৌথ স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। বহিষ্কৃত নেতারা হলেন- তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিলন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন (টোটন) ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক।

বহিষ্কারাদেশে বলা হয়েছে, তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় গঠনতন্ত্র ও আদর্শ বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে এবং দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। তাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর গঠনতন্ত্রের আলোকে এবং দলের স্বার্থ রক্ষার্থে জেলা বিএনপির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের পদ থেকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি ও দল থেকে বহিষ্কার করা হলো।

জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খুনের ঘটনায় এই তিন নেতার নাম প্রকাশ্যে চলে এসেছে। তৃণমূলের নেতাদের সম্মতিক্রমে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও যাদের নাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তাদের বিষয়েও তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নে টিসিবি ও ভিজিএফের চালের কার্ড নিয়ে বিরোধের জেরে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিলন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম টোটনের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। শনিবার সকালে বিষয়টি মীমাংসার কথা বলে রফিককে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ইউনিয়ন বিএনপির নেতাসহ তাদের সহযোগীরা মিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্যে রফিককে হত্যা করে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।

এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাহিদা খাতুন মুক্তি বাদী হয়ে তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিলন মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম টোটনসহ ৩৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন দর্শনা থানায়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

এনআইডিতে ডাকনাম-একাধিক স্ত্রীর নাম যুক্তের নীতিগত সিদ্ধান্ত
হাতের ইশারায় পলকের সালাম, বললেন মুখ খুললেই বাড়ে মামলা
দলীয় নেতাকে খুনের অভিযোগে চুয়াডাঙ্গায় বিএনপির তিন নেতা বহিষ্কার
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী
কাফির বাড়িতে আগুনের ঘটনায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ২ কর্মী গ্রেপ্তার
এবার ঈদের আগে বাজারে আসছে না নতুন নোট
ছাত্র আন্দোলনে গুলি করা আওয়ামী লীগ নেতার ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন
যে প্রক্রিয়ায় কোটি টাকা কেজিতে রপ্তানি হচ্ছে মাছ! (ভিডিও)
ওমরাহ পালন করে দলের ঐক্য দৃঢ় করল জাতীয় ফুটবল দল
হাসিনা ও পরিবারের ১২৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৬৩৫ কোটি টাকার খোঁজ
জুলাই আন্দোলনে জড়িয়ে পড়া নিয়ে জাতিসংঘ থেকে বার্তা পায়নি সেনাবাহিনী: আইএসপিআর
আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রক্সি ভোট দিতে পারবেন বাংলাদেশি প্রবাসীরা
“ধর্ষণের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল রাজপথে থাকবে”
ধনশ্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর নতুন বান্ধবী নিয়ে দুবাইতে চাহাল! কে এই সুন্দরী?
পাচার করা টাকা ফেরাতে দ্রুত বিশেষ আইন করা হবে : প্রেস সচিব
বাবা হারালেন অভিনেত্রী রুনা খান
ধর্ষণের বিচার দাবিতে কুবি ছাত্রদলের মানববন্ধন
শেখ হাসিনা-রেহানা পরিবারসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বেকসুর খালাস পেলেন তারেক রহমান
পদত্যাগ করলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আমিনুল ইসলাম