বর্ষীয়ান সাংবাদিক তোয়াব খান আর নেই
একুশে পদকপ্রাপ্ত বর্ষীয়ান সাংবাদিক, দৈনিক বাংলার সম্পাদক তোয়াব খান আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। বার্ধক্যজনিত জটিলতায় অসুস্থ হলে তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শনিবার (১ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
২০১৬ সালে একুশে পদক পাওয়া তোয়াব খানের সাংবাদিকতা জীবনের শুরু ১৯৫৩ সালে সাপ্তাহিক জনতার মাধ্যমে। ১৯৫৫ সালে যোগ দেন দৈনিক সংবাদে। ১৯৬১ সালে তিনি দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক হন। এরপর ১৯৬৪ সালে যোগ দেন দৈনিক পাকিস্তানে।
দেশ স্বাধীনের পর দৈনিক পাকিস্তান থেকে বদলে যাওয়া দৈনিক বাংলার প্রথম সম্পাদক ছিলেন তোয়াব খান। ১৯৭২ সালের ১৪ জানুয়ারি তিনি দৈনিক বাংলার সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সচিব ছিলেন। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ও প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেন।
১৯৮৭-১৯৯১ মেয়াদে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ ও প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদেরও প্রেসসচিব ছিলেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে শব্দসৈনিকের ভূমিকা পালন করেন তোয়াব খান। সে সময় তার আকর্ষণীয় উপস্থাপনায় নিয়মিত প্রচারিত হয় ‘পিণ্ডির প্রলাপ’ নামের অনুষ্ঠান।
দৈনিক জনকণ্ঠের শুরু থেকে গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত পত্রিকাটির উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন তিনি। এরপর নতুন আঙ্গিক ও ব্যবস্থাপনায় প্রকাশিত দৈনিক বাংলার সম্পাদকের দায়িত্ব নেন তিনি।
সাংবাদিকতায় অনন্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০১৬ সালে একুশে পদক প্রদান করে।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম শব্দ সৈনিক বর্ষিয়ান সাংবাদিক তোয়াব খানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জয় বাংলা সাংবাদিক মঞ্চের সভাপতি জয়ন্ত আচার্য ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর খান বাবু। এ ছাড়া বিভিন্ন সাংবাদিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে। শোক বিবৃতিতে মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করা হয়েছে। এ ছাড়া দেশের ভাষা আন্দোলন স্বাধীনতা সংগ্রামসহ মুক্তিযুদ্ধে তার অনবদ্য অবদানের জন্য মরহুম তোয়াব খান স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এনএইচবি/আরএ/