সাংবাদিক জুয়েলের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারে আল্টিমেটাম
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সদস্য ডিবিসি নিউজের স্টাফ রিপোর্টার সাইফুল ইসলাম জুয়েলের বিরুদ্ধে করা মামলা আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। এ সময়ের মধ্যে মামলা প্রত্যাহার না করা হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) উদ্যোগে সাইফুল ইসলাম জুয়েলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসুটিতে এ হুঁশিয়ারি দেন সাংবাদিক নেতারা।
এ সময় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল বলেন, সাইফুল ইনলাম জুয়েলের ওপর হামলার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে যে, ভিক্টর ট্রেডিং করপোরেশনের কাওসার ভুঁইয়া একজন খারাপ লোক।
তিনি দুর্নীতি করলেন, সাংবাদিক পেটালেন আবার উল্টো মামলাও করলেন। মামলা করেছেন ভাবছেন আমরা নেগোশিয়েট করতে যাব। আপনি জেনে রাখুন, আমরা কখনো আপনার কাছে যাবো না। আপনি মামলা তুলে নেন আর না নেন। আমরা রাস্তায় নেমেছি এর শেষ দেখে ছাড়ব।
পুলিশ প্রশাসনকে বলতে চাই, কাওসার ভুঁইয়া তার ভাইকে দিয়ে যে মিথ্যা মামলা করিয়েছে সেই মামলায় যেন সাংবাদিক জুয়েল কোনোরকম হয়রানির শিকার না হয়। আপনাদের আরও বলতে চাই, আপনারা এমন কিছু করবেন না, যাতে আমাদের রাস্তায় নামতে হয়। আর যদি রাস্তায় নামতেই হয় তবে আপনাদেরকেও রাস্তায় নামিয়ে ছাড়ব যোগ করেন ক্র্যাব সভাপতি।
মির্জা মেহেদী তমাল আরও বলেন, আমরা সাত দিনের আল্টিমেটাম দিচ্ছি। এর মধ্যে এই মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এ ছাড়া কাওসার ভুঁইয়াসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে সাত দিনের মধ্যে ওই মামলার চার্জশিট দিতে হবে। এর মধ্য দিয়ে কাওসার ভুঁইয়াকে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিতে হবে।
এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। ক্র্যাব সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু বলেন, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহর না করা হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। এ ধরনের মামলা সাংবাদিকদের কন্ঠরোধ করার শামিল।
তিনি মনে করেন সরকারের এ বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়া উচিৎ। সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কর্মসূচি আমার জাতির সামনে তুলে ধরি। কিন্তু স্বাস্থ্যখাতের অনিয়মের সংবাদ তুলে ধরার চেষ্টা করায় সাইফুল ইসলাম জুয়েলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হলো, যা নিন্দনীয়। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি অবিলম্বে এই মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হামলা করে কেউ রেহাই পাবে না। অতীতে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে আমরা রাজপথে থেকেছি, সামনেও থাকব।
সাংবাদিকদের জন্য যে নতুন আইন হয়েছে তা সংশোধনের জন্য বলা হয়েছে। অচিরেই সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু বলেন, স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির অনুসন্ধান করায় সাইফুল ইসলাম জুয়েলের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আবার উল্টো তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হলো। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা রাজপেথ আছি থাকব। আমাদের দাবি মানা না হলে প্রয়োজনে সাংবাদিকদের সকল সংগঠন একত্রিত হয়ে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমালের সভাপতিত্বে ও দপ্তর সম্পাদক ইসমাঈল হুসাইন ইমুর পরিচালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব, ক্র্যাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার আলম, ডিআরইউর সাবেক সাধারণ সম্পাদক কবির আহমেদ খান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জামাল, ক্র্যাবের সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান, ক্র্যাবের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রুদ্র রাসেল, ডিআরইউর সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাদিয়া শারমিন, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সুশান্ত কুমার সাহা, রিপোর্টার্স এগেইনষ্ট করাপশনের (র্যাক) সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক কার্যরির্বাহী সদস্য গোলাম মুজতবা ধ্রুব, ক্র্যাবের সিনিয়র সদস্য মাহমুদুর রহমান খান, মহিম মিজান, দীপন দেওয়ান, দাউদ খান প্রমুখ।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ক্র্যাবের সাবেক সভাপতি ইসারফ হোসেন ইসা, আবু সালেহ আকন, ডিফেন্স জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (ডিজাব) সভাপতি মামুনুর রশিদ, ক্র্যাবের অর্থ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম মন্টু, কার্যনির্বাহী সদস্য সিরাজুল ইসলাম, সিনিয়র সদস্য ইকরামুল কবির টিপু, দেব দুলাল মিত্র, শেখ কালিমউল্লাহ নয়ন, উজ্জল হোসেন জিসানসহ ক্র্যাব, ডিআরইউ ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্যরা।
এএইচ/এমএমএ/