গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস হলে স্বাধীন সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্ত হবে: নোয়াব
প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস হলে হলে স্বাধীন সাংবাদিকতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্তসহ সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত হবে বলে মনে করে দৈনিক সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।
রবিবার (২৪ এপ্রিল) নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ ও সহসভাপতি এ এস এম শহীদুল্লাহ খানের সই করা এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।
প্রস্তাবিত আইনটি প্রচলিত বিচারব্যবস্থা, শিল্প আইন ও বাংলাদেশ শ্রম আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক মন্তব্য করে নোয়াব বলছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংবাদকর্মীদের স্বাধীনভাবে চিন্তা করার ক্ষেত্রে একধরনের চাপ তৈরি করেছে। এর ওপর প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস হলে শিল্প হিসেবে সংবাদপত্র আরও বেশি রুগ্ন হবে। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের জন্য তা হবে মর্যাদাহানিকর।
প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইনে দেনা-পাওনা নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য এক বা একাধিক বিভাগীয় এলাকার জন্য গণমাধ্যম আদালত স্থাপন করার কথা বলা হয়েছে। এই আদালতে একজন চেয়ারম্যান এবং দুজন সদস্য থাকবেন।
কর্মরত জেলা জজদের মধ্যে একজন চেয়ারম্যান হবেন। দুই সদস্যের একজন হবেন গণমাধ্যমের মালিক ও আরেকজন গণমাধ্যমকর্মী।
সংবাদকর্মীদের দেনা-পাওনা এবং যেকোনো বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য শ্রম আদালত রয়েছে জানিয়ে নোয়াব বলছে, ‘গণমাধ্যমকর্মী আইন’ নামে নতুন কোনো আইনের প্রয়োজনীয়তা নেই।
গত ২৮ মার্চ জাতীয় সংসদে ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন, ২০২২’ উত্থাপন করা হয়। বিলটি ৬০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশের সংবাদপত্রশিল্পের বিকাশে নোয়াব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, নোয়াবের ধারাবাহিক দাবির কারণে সরকার ২০১৪ সালে সংবাদপত্রকে ‘শিল্প’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু শিল্প-সম্পর্কিত প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা সংবাদপত্র পাচ্ছে না।
কোভিডের অভিঘাতের কারণে সংবাদপত্রশিল্প এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে উল্লেখ করে নোয়াব বলছে, কোভিডকালে লকডাউনের সময় সরকারের কাছে বারবার আর্জি জানালেও অন্যান্য খাতের মতো সংবাদপত্রশিল্প কোনো সহায়তা পায়নি। ২০২০ সালে নিউজপ্রিন্টের আমদানি মূল্য প্রতি টন ৫০০ মার্কিন ডলারের আশপাশে থাকলেও এখন তা ১ হাজার ডলার ছাড়িয়েছে।
অন্যদিকে, ডিজিটাল বাস্তবতা ছাপা সংবাদপত্রকে পাঠক প্রাপ্তি ও ব্যবসায়িক দিক থেকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। সংবাদপত্রের এই সংকটকালের মধ্যেই গণমাধ্যমকর্মী আইন সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রস্তাবিত আইনটির ৫৪টি ধারার মধ্যে ৩৭টি ধারাই সাংবাদিকবান্ধব নয় বলে সম্পাদক পরিষদ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা মতামত ব্যক্ত করেছেন।
আরইউ/এমএমএ/