শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ | ২৭ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

কেমন আছো মৌমিতা

এত সুন্দর ভোর মৌমি কখনো দেখেনি! ফজরের আযানের পর আকাশ পরিষ্কার হতেই মৌমি হাঁটতে বের হবে। মৌমি মনে মনে ঠিক করে রেখেছে, এখানে প্রতিদিন ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠবে। ঘাঁসের বুকে হেটে বেড়াবে। পদ্মদীঘির পাড়ে গিয়ে কিছুক্ষণ বসে থাকবে। সবুজ দেখে চোখ জুড়াবে। আরও কতশত ভাবনা মন জুড়ে।

মৌমি লন্ডন স্কুল অফ ইকোনোমিক্সের শেষ বর্ষের ছাত্রী। পরীক্ষা পরবর্তী ছুটিতে দেশে বেড়াতে এসেছে। চলে যাওয়ার সময় প্রায় ঘনিয়ে এসেছে। পরশু সন্ধ্যায় মৌমির ফ্লাইট। তাই ফিরে যাবার আগে বন্ধুদের নিয়ে কয়েকদিনের জন্য বেড়াতে এসেছে শ্বশুড়ের নতুন বাংলোতে। আবার কবে কখন দেখা হবে সবার সাথে জানা নেই। সেজন্যই এই আয়োজন।

মৌমি নিচে নেমে এল। পীতাভরঙ শাড়িতে কালো টিপ পড়লে যে কাউকে এত মায়াবী লাগে, আজ ভোরে মৌমিকে না দেখলে কেউ জানতো না কোনদিন। গেট পেরিয়ে বাইরে পা রাখতে যাবে, এমন সময় পেছন থেকে ডাক শুনতে পেলো মৌমি।

-কোথায় যাচ্ছিস? সোমা এগিয়ে এসে বলল।
-ও তুই! ঘুম ভেঙ্গেছে?
-হু, রাতে খুব ভালো ঘুম হয়েছে। কোথায় যাচ্ছিস?
-খুব হাটতে ইচ্ছে করছে বনের ভেতর ভোরের বাতাসে ।
চল আমি ও যাবো। কালো টিপে তাকে অসাধারণ লাগছে! খুব মায়াবতী লাগছে তোকে।
- সাহেব ঘুমাচ্ছে বুঝি? হেসে জিজ্ঞেস করলো মৌমি।
-হাসি ফিরিয়ে দিয়ে সোমা বলল, হ্যাঁ, এখনও ঘুমাচ্ছে।
-ঠিক আছে, চল।
দুই বান্ধবী হাঁটতে হাঁটতে বনের ভিতর ঢুকে গেলো। অজস্ৰ বকুল বিছিয়ে আছে মাটিতে। ওরা বকুল কুড়াতে লাগলো সেই ছেলেবেলার মতো ।

আচ্ছা মৌ, তোর শ্বশু্রতো অর্থমন্ত্রী তাই না।
- হু, মৌমি একমনে বকুল কুড়াচ্ছে।
- আশ্চর্য! আমি শুনেছি, মন্ত্রীদের হৃদয় বলে কিছু থাকে না। কিছুদিন মন্ত্রীত্ব করলে সুখ দুঃখ হাসি কানা সব নাকি শেষ হয়ে যায়। মানে আবেগ শূন্য হয়ে যায় তারা। কিন্তু তোর শ্বশুরতো ভয়াবহ কাণ্ড করে বসে আছেন। কোন মন্ত্রী এত টাকা পয়সা খরচ করে প্রকৃতিকে এভাবে বাচিয়ে রেখেছে না দেখলে আমি বিশ্বাস করতাম না কিছুতেই।

তুই কি বিশ্বাস করতি?
-আমি ভাবতাম মন্ত্রী হবার শর্তই হচ্ছে নিজের আত্মা আর বিবেককে অকেজো করে দেয়া। এরা পতাকা বাহিত গাড়িতে উঠে বসে। পতাকা উড়িয়ে এদের কোথায় যে নিয়ে যায়, কেনইবা নিয়ে যায় এরা জানে না। জানবে কি করে? সবতো অকেজো।

সোমার কথার ধরনে খুব হেঁসে উঠে মৌমি। দারুনতো!
কি?
তুই যা বললি। এখন কি তোর ভাবনা বদল হয়েছে?
তোর শ্বশুরের লাগানো বকুল গাছের বকুল ফুল হাতে নিয়ে আছি। কি করি বলতো?
হাত থেকে বকুল ফুল ফেলে দে।
. অসম্ভব, পারবো না। মরে গেলেও না।
. তাহলে যে তোর ভাবনা অদল বদল হয়ে যাবে।
. আচ্ছা তোর শ্বশুর কেমন মানুষ?
মানে?
ভাল না কি মন্দ?
.জানিনা। শ্বশুর শ্বশুরের মতো। তবে আমার মনে হয় তিনি একজন ভালো মানুষ।
আর তোর শ্বাশুরি?
-আমি তার থেকে ভালো কিছু শিখতে পারিনি। বুঝলি?
- হু, বুঝলাম। প্রসঙ্গ পাল্টে সোমা বলল- সত্যিই বিশ্বাস কর,এত সবুজ আমি কোনদিন দেখিনি। মৌমির দিকে তাকিয়ে হাসলো সোমা। তোর জন্য দেখতে পেলাম। থ্যাঙ্কু।
-মৌমি ও সোমা বনের ভেতর বসার মতো একটা জায়গা দেখে সেদিকে এগিয়ে গিয়ে বসলো। চুপচাপ ভাবছিল মৌমি।
এত কি ভাবছিস আনমনে হয়ে?
চোখ ফিরিয়ে সোমাকে দেখে মৌমি। তারপর বলে, সোমা আজ তোকে আমি একটি গল্প বলবো।
-কি গল্প?
-রূপকথার গল্প । মৌমি হেসে উঠে।
-রূপকথার গল্প ?
আচ্ছা, আগে গল্পটা শুনে নে। তারপর বলবি।
-আচ্ছা বল।

-একটি মেয়ে। মায়ের লক্ষ্মী মেয়ে। পড়াশোনায় খুব ভালো। ভালো ঘর আর ভালো বর দেখে মা তাকে বিয়ে দেয়। মেয়েটি তার স্বামীকে ভালবাসে। কিন্তু বিয়ের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই গুণধর সামীটির মুখোশ ধরা পড়ে যায়। মেয়েটির স্বামী ছিল মাতাল । নারী মন নয়, নারী শরীরের প্রতি লোভী ছিল সে। মনে মনে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয় মেয়েটি। ঠিক করে ফেলে সে আর পরাজিতার মতো সংসার করবে না । নিজের পথ নিজে বেছে নেবে। যদিও একসময় সবার চেষ্টায় মেয়েটির স্বামী ঘরে ফিরে আসে। প্রচণ্ডভাবে ভালবাসতে শুরু করে মেয়েটিকে। আর মেয়েটিও নিজের জীবন নিজের নিয়তিকে মেনে নিতে চেষ্টা করে। অন্য সবার মতো সুখী হতে চেষ্টা করে মেয়েটি। কিন্তু আরও একটি কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছিলো যেন ওর জন্য। পড়াশোনার পরীক্ষাগুলো্তে মেয়েটি যত সহজে উতরে যায়, জীবনের পরীক্ষাগুলোতে সে ততটাই বিচলিত হয়ে পড়ে। সহজ পথের মেয়ে জটিলতায় সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা যেন কিছুতেই।
এবার মৌমি একটু থামে।

তারপর?

মৌমি আবারও বলতে শুরু করে। একসময় তার জীবনে আসে অন্য পুরুষ। ওর শৈশবের খেলার সাথী। মেয়েটির প্রতি তার ভালোবাসা বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠ কিংবা জাগ্রত সমুদ্রের মতো কিংবা বলা যায় সুবিশাল নীলাকাশের মতো। মেয়েটি তা টের পায় নিজের হৃদয় দিয়ে। মেয়েটি তার বয়ে যাওয়া জীবনকে নিয়েই যেমন পথ চলতে চায়, তেমনি সেই বন্ধুটি যেন তাকে মনে মনে ডাকে!

হঠাৎ সোমা মৌমিকে থামিয়ে দিয়ে বলল,
এই গল্পের মেয়েটি কি তুই?
-মৌমি চুপ করে থাকে।-তারপর চোখ তুলে সোমার দিকে তাকিয়ে বলে হ্যাঁ, আমিই সেই মেয়ে।
-এবার তুই আমাকে বল, আমি কি করবো।
-তার আগে তুই আমাকে বল, তোর সেই বন্ধুটি নিশ্চয়ই বিজয়!
-মৌমি খুব অবাক হয়। তারপর বলে, তুই কি করে জানলি?
-সত্যি কিনা বল।
হ্যাঁ, বিজয়! মৌমি অকপটে স্বীকার করে।
-সোমা হাসে।
-হাসছিস যে, আমি কি হাসির কিছু বলেছি?
-মৌমি,আমরা সবাই জানতাম বিজয় তোকে ভালবাসে। কিন্তু;
-কিন্তু কি?
কিন্তু তোরা কেউ জানতিস না আমি মনে মনে বিজয়কে ভালোবাসতাম! বিজয় কিন্তু জানতো। সোমা হাসে।
-বিজয়ও কি তোকে...
না, না। ওর ধ্যান জ্ঞানে জড়িয়ে ছিলি শুধু তুই। মৌমিতা মেহজাবিন।

আমার অবস্থা এমন হয়ে ছিল যে, আমি সবসময় সবকিছুতে যেন বিজয়কে দেখতে পেতাম। অনেকটা মরীচিকার মতো মনে হতো বুঝলি! আই ফিল থার্সট ইন মাই হার্ট ফর হিম। অলওয়েজ। কি কঠিনভাবে ফিল করতাম ওকে! কতটা পাগল ছিলাম আমি সেই সময়ে বিজয়ের জন্য। ভাবলে এখনও শিউরে উঠি! সেসব আর বলতে ইচ্ছে করছে না। খুব কষ্টে গিয়েছে সেই দিন গুলিরে!
সোমার কথাগুলো যেন অনেক দূর থেকে ভেসে আসতে লাগলো মৌমির কানে।
অথচ দেখ! আমিতো দিব্বি রুহানের সংসার করছি। আমরা ভালোও আছি। আমার সামনে পিছনে ভিতরে বাইরে কোথাও বিজয়কে পাই না আর।

মৌমি চুপচাপ সোমার দিকে তাকিয়ে থাকে।
- সোমা বলে, মৌ ভালোবাসা জোয়ার ভাটার মতো। নিজের জন্যই কখনো সেটা আকাশ ছুঁতে চায়। আবার নিজের জন্যই কখনো সেটা হৃদয় থেকে মুছে যায়। এর বেশি কিছু না।
- তোর ভিতর বাইরে বিজয় কি সত্যিই নেই সোমা!
- নাহ, নেই। একফোঁটাও নেই আজ। আমি ভুলে গিয়েছে। আমি সব ভুলে গিয়েছি। সোমা আনমনে বলতে থাকে কথাগুলো। সোমা আরও বলে, মৌ, শোন।
মৌমিতা সোমার দিকে এমনভাবে তাকায়, যেন সোমা তার মনের কথাটিই বলবে।
তুইতো বিজয়কে সুখী করতে পারবিনা, মৌ। তুই একজন বিবাহিতা। এটা কাটা হয়ে বিধবেই তোদের জীবনে।আমি কি মিথ্যা বলছি?
ঠিকই বলেছিস তুই। মৌমি দূরের দিগন্তে তাকিয়ে থাকে চুপচাপ।
-মৌমি যা কিছু তোর নিজের তা নষ্ট করিস না। ভুল করবি। আর শোন, পড়ালেখা শেষ হলেই তুই একটা বাবু নিয়ে নিবি বুঝলি। সন্তান ছাড়া সংসার সুবাস ছাড়া ফুলের মতো পানসে লাগে।
তুই নিচ্ছিস না কেন?
-ভাবছি। আচ্ছা বলতো কোন জিনিসগুলো খুব সত্য আর মূল্যবান মানুষের জীবনে।
-জানিনা।
-অশ্রু, আনন্দ, সন্তান, সময় আর মানুষের মন। যখন এগুলো তোর দখলে তখন পৃথিবীটা তোর। বুঝলি?
-মৌমিতা সোমা প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে চুপচাপ বেঞ্চটাতে বসে রইলো। অনেকক্ষণ কেউ কোন কথা বলল না ওরা।

একসময় মৌমি রাজন কে ভালোবেসেছিলো। কিন্তু ভালোবাসার গভীরতা অনুভব করেনি সেভাবে। রাজনের ভালোবাসা অনেকটা সাদা ভাতের মতো, যা বেঁচে থাকার জন্য হয়তো প্রয়োজনীয়। কিন্তু বিজয়কে দেখে মৌমি শিখেছিল প্রকৃত ভালোবাসার অনুভূতি, ভালোবাসার সৌন্দর্য। মৌমি অবাক হয়েছিলো বিজয়ের ভালোবাসার সুক্ষ্মটানকে নিজের ভেতর অনুভব করে। মৌমি ছাড়া যে কেউ এই ভালোবাসার টানে নিশ্চয়ই ভেসে যেতো, হারিয়ে যেতো। কিন্তু কিছুটা সময়ের জন্য টালমাটাল হলেও মৌমি ফিরে এসেছে নিজের কাছে। সত্যের মুখোমুখি দাঁড়াতে ভয় পায়নি। মৌমি খুব বুদ্ধিমতী আর খুব বেশি আত্মসচেতন মেয়ে বলেই হয়তো।

মৌমির লুসিয়ার কথা মনে পড়ে। লুসিয়ার কথা হলো যে ওকে এমন হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা দেবে, ও তার কাছেই ফিরে যাবে। এ জীবনের জন্য ভালোবাসা ছাড়া আর সবকিছুই মূল্যহীন ওর কাছে। কিন্তু সোমা বলল ভিন্ন কথা। সোমার কথা হলো, জীবনের প্রয়োজনেই ভালোবাসা, ভালোবাসার জন্য জীবন নয়। যা হওয়া উচিত তাই করা উচিত। বাস্তববাদী কথা ওর।

মৌমিতা ভাবে আচ্ছা, আমার মনের কথাটি কি তবে? আমি চাই সময়ের হাত ধরে পথ চলতে। আর পিছনে ফিরে তাকাতে চাই না। বিজয়কে চিনতে না পারার ভুলের মাসুল দিতে গিয়ে নতুন কোন ভুলের পথিক হতে চাইনা আমি ।

মৌমিতা শোন, তুই খুব নরম মনের মানুষ, তাই এত ভাবছিস। কিন্তু তুই কখনো ভেবে দেখেছিস, তুই অন্য আরেকজনের হাত ধরে আছিস। তার সাথে জড়িয়ে আছে তোর ঘরের সুখ। অনেকগুলো মুখের সুখ। ভুল করা সহজ কিন্তু ভুলগুলোকে শুধরানো এত সহজ নয়। রাজন নিজেকে শুধরে নিয়েছে। সে তোকে প্রচণ্ড ভালোবাসে। এটাই তোর জীবন, এটাই তোর সংসার। বিজয় পথিক। মাঝে মাঝে দেখা হলে হাসি মুখে কথা বলা ছাড়া আর কোন সম্পর্ক রাখার মানে কি জানিস?

কি?
শখ করে কস্ট কিনে বয়ে বেড়ানো।ভুল করিস না মৌমি, সোমা বলে।

মৌমি সোমার কথাগুলি বুঝতে চেস্টা করে। নিখাদ ভালোবাসাকে লালন করার জন্য মন ও শরীর দুটিই নিখাদ হওয়া প্রয়োজন। সোমা ঠিকই বলেছে। যে দিকে কোন পথই নেই সেদিকে মন পছন্দে পথ তৈরি করা শখ করে কষ্ট কেনার মতোই। শুরুতেই সে পথ বন্ধ করে দেয়া উচিত। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে, রাজনের সব কিছু খুব ফরমাল। অনেক বেশি আবেগ তার নেই। কিন্তু এটিও সত্য যে, আমার সাথে রাজনের সম্পর্কে আজ আর কোন মিথ্যা নেই। সে আমাকে ভালোবাসে,মৌমিতা ভাবে।আমি বাস্তবতাকে এড়াতে পারবো না।
-এক সময় মৌমি বলে উঠে চল, এবার উঠি।
- হ্যাঁ, চল।
-হাঁটতে হাঁটতে মৌমিতা বলে, জানিস, লুসিয়া বলেছিল এমন ভালোবাসা পেলে সে এই জীবনে আর কিছু চাইতো না।
লুসিয়া কে?
আমার সাথে পড়ে। কালো কিন্তু বেশ মিষ্টি একটা মেয়ে। খুব ডেসপারেট।
হু, বুঝলাম । কিন্তু তুইতো লুসিয়া না। তুই মৌমিতা।

মৌমিতার বিজয়ের কথা মনে পড়ে। বিজয় বলেছিল ,আজন্ম আমি তোমায় ভালবেসেছি।আমার মানসপটে তোমাকে আমার রানী করে রেখেছি। তোমার যোগ্য করে নিজেকে গড়তে চেয়েছি। কি না করেছি আমি তোমার জন্য মৌমিতা? অথচ দেখো, এত কিছুর পরেও আমি একজন ব্যর্থ মানুষ।

এ কথা বলছ কেন? মৌমিতা জানতে চেয়েছিল ।

তোমাকে পাওয়া হলো না আমার এ জীবনের জন্য!

উত্তরে মৌমিতা বিজয়ের দিকে তাকিয়ে বলেছিল, তুমিতো সাধক বিজয়। যে সাধনা করে সে কি বিনিময় আশা করে বলো? যেন মৌমিতা নয়, মৌমিতার ভিতর থেকে অন্য কেউ বলেছিল, বিজয়ের দুঃখ তাকে খুব বেশি স্পর্শ করেছিল বলেই হয়তোবা। 

কিন্তু আমিতো সাধক হতে চাই নি। আমি তোমাকে পাশে পেতে চেয়েছিলাম মৌমিতা!

বিজয়ের সেই প্রশ্নের উত্তর মৌমিতা সেদিন দিতে পারেনি। তবে সব প্রশ্নের উত্তর যে সত্যিই হয় না মৌমিতা আজ তা জানে।

 মৌমিতা সোমার দিকে তাকিয়ে বলল হ্যাঁ, সেটাই। তুই ঠিকই বলেছিস। আমি লুসিয়া নই। আমি মৌমিতা। তবে লুসিয়ার মতো হলেই জীবনটা সহজ হতো মনে হয়। মৌমিতা ওর দীর্ঘশ্বাস গোপন করতে চেষ্টা করলো না।

-মৌমি ও সোমা বাংলোর দিকে ফিরে গেল। কিছুদূরে যেতেই ওরা বিজয়কে দেখতে পেলো। বিজয়ও মনে হচ্ছে হাঁটতে বেরিয়েছে। এদিকেই আসছে ও।
কাছাকাছি আসতেই ওরা দাঁড়িয়ে পড়লো।
বিজয় মৌমিকে একটুক্ষণ দেখলো। তারপর সোমার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো।
- আরে সোমা? তুমি কবে এসেছো?
- পরশু সন্ধ্যায়, তুমি?
-এইতো গতকাল রাতে। আড়চোখে মৌমিকে আরও একবার দেখে নিয়ে বলল, অনেক রাতে। ঘুমিয়ে পড়েছিলে তাই রাজন আর ডাকেনি ।
-ও, আচ্ছা।
- হাঁটতে বেরিয়েছ নাকি ফিরে যাচ্ছ?
-আমাদের হাঁটা শেষ। ফিরে যাচ্ছি।

আচ্ছা, ঠিক আছে।

বিজয় আবার মৌমির দিকে তাকালো। এবার চোখাচোখি হলো ওদের। কিন্তু কেউ কোন কথা বলল না। মৌমিতা চোখ নামিয়ে নিয়ে বাংলোর দিকে হাঁটতে লাগলো।

 

 

 

 

 

Header Ad
Header Ad

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার

দিলশাদ আফরিন। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক কমিটির শৃঙ্খলা ও আদর্শ বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনটির নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা শাখার সদস্য দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এই বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়।

বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) গণমাধ্যমের সামনে আসে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বহিষ্কারাদেশে বলা হয়, ‘এই পত্রের মাধ্যমে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় নাগরিক কমিটি-এর নিয়ম ও নীতিমালা অনুযায়ী আপনার সাম্প্রতিক কর্মকান্ড আমাদের সংগঠনের শৃঙ্খলা এবং আদর্শের পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হয়েছে। সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এবং সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন এর অনুরোধক্রমে আপনাকে জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলার দায়িত্বে থাকা জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কারের বিষয়ে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল। জাতীয় নাগরিক কমিটি অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় গত ৮ এপ্রিল তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

আফরিন জাতীয় নাগরিক কমিটির শহীদ আহত কল্যাণ সেলের কোনো দায়িত্বে ছিলেন না। তারপরেও তিনি ব্যক্তিগতভাবে শহীদ ও আহত পরিবারের আর্থিক বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন। যা নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি অবগত ছিল না বলেও জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে বিএনপি ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। এ ছাড়া জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বাড়ানো যায়, তা নিয়েও দলটি কাজ করতে চায়।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫–এ অংশ নিয়ে বিএনপি এসব পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

‘১ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমি’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)/মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়েও কাজ করতে চায় বিএনপি।

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইকে জনপ্রিয় করতে বিএনপি ১১টি রেগুলেটরি পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। এর মধ্যে আটটি প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। এগুলো হলো বিডাকে কার্যকর করা, ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট বিধির আধুনিকীকরণ, বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৪x৭ (দিনে ২৪ ঘণ্টা ও সপ্তাহে ৭ দিন) সেবা চালু করা, স্বয়ংক্রিয় মুনাফা প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা, স্থানীয়ভাবে দক্ষ জনশক্তির ব্যবস্থা করা, বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধি।

সরকার গঠন করতে পারলে দেশের মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া, প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধির জন্য বিএনপি অতীতের চেয়েও ব্যাপক সফলতা অর্জন করতে চায় বলে জানান মির্জা ফখরুল। পোস্টে তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিনিয়োগ সম্মেলন উপলক্ষে এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনটি বিষয় বলেছেন। এগুলো হলো ঐক্যই ভবিষ্যৎ জাতীয় উন্নয়নের সোপান, এফডিআই আকৃষ্ট করতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকার আইন করেছিল এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সরকারগুলোর বিনিয়োগবান্ধব নীতি ছিল।

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১ টা থেকে ‍দুপুর ১২ টা ২০ মিনিট পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকা মেহেরপুর জেলার ইছাখালি সীমান্ত এলাকার মেইন পিলার ১২৪ এর নিকট শূন্য রেখা বরাবর ভারতীয় পার্শ্বে বিএসএফ নব চন্দ্রপুর ক্যাম্পে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এবং প্রতিপক্ষ ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সাথে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বিজিবি’র পক্ষে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হাসান স্টাফ অফিসারসহ মোট ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব প্রদান করেন।

অপরদিকে বিএসএফ এর পক্ষে ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট শ্রী বিনয় কুমার তাঁর স্টাফ অফিসারসহ ৮ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

বৈঠকের শুরুতে উভয় পক্ষ ঈদ-উল-ফিতর পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার সীমান্ত এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে চোরাচালান প্রতিরোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, যৌথ টহল তৎপরতা জোরদারকরণ এবং গোয়েন্দা নজরদারির বিষয়সমূহে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সীমান্তকে অধিক সুসংহত ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ একমত পোষণ করেন। এছাড়াও, সীমান্তে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা ও সীমান্ত সংক্রান্ত যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ সম্মত হন।

বৈঠক শেষে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার মেইন পিলার ১২৪ সহ তৎসংলগ্ন সীমান্ত পিলারসমূহ যৌথভাবে পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেন।
দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আন্তরিক ও সদ্ভাবপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক শেষ হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার
সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত
আবারও চেন্নাইয়ের অধিনায়ক হলেন ধোনি
‘ক্রিম আপা’ খ্যাত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শারমিন শিলা গ্রেফতার
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা, ভরি ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা
ভিন্ন ধর্মের ছেলের সঙ্গে প্রেম, বাবার হাতে প্রাণ গেল মেয়ের
পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হলেন সাবেক আইজিপি ময়নুল
জেনে নিন গ্রীষ্মে সুস্বাদু আর উপকারী কাঁচা আমের ১১টি বিস্ময়কর গুণ
এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে কিশোরী
সাধারণ মানুষ চায় এই সরকার আরো ৫ বছর থাকুক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মানববন্ধন (ভিডিও)
জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এমন অপকর্মের সাহস পেত না: মির্জা আব্বাস (ভিডিও)
নওগাঁয় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২
বাংলাদেশ রেলওয়ের দুই কর্মকর্তাকে পদায়ন ও বদলি
২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশে হাসপাতাল বানাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি
কাদের-কামালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে চিঠি
সিলেটে থানায় লালগালিচা দেখে ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দিল্লিতে লিঙ্গ পরিবর্তনের চিকিৎসা নিতে এসে গ্রেপ্তার ৫ বাংলাদেশি
রবিবার ৩ জেলায় সাধারণ ছুটি, সবমিলিয়ে টানা ৪ দিনের অবকাশ