শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

‘টুইয়া’ ভ্রমণ তরীর রেস্টুরেন্ট একেবারে নিচের তলায়, বেশ বড় হল ঘর জুড়ে চারটি সারিতে টেবিল চেয়ার পাতা। একসাথে অন্তত দেড়শজনের লাঞ্চ বা ডিনারের ব্যবস্থা এখানে। দেড়টার দিকে রেস্তোরাঁয় ঢুকতে গেলে সুকুমার রায়ের চণ্ডীদাসের খুড়োর মতো কালো স্যুটপরা বেঁটে খাটো টেকো রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার কান পর্যন্ত হাসি বিস্তৃত করে রুম নাম্বার জানতে চাইলেন, তারপরে যে কোনো একটা টেবিল বেছে নিতে বললেন। তখন পর্যন্ত বেশিরভাগ টেবিলই খালি, কাজেই আমরা দেখে শুনে কোণের দিকের জানালার কাছে একটা জায়গা বেছে নিলাম।

প্রবেশ পথের উল্টো দিকের পুরোটা জুড়ে বুফে ডিশ সাজানো। ডান দিকে একেবারে শুরুতে পশ্চিমা ধরনের রুটির সমাবেশ এর সাথে বালাদি এবং মাহলাব নামের মিশরীয় রুটি। এরপর সেদ্ধ অথবা আধসেদ্ধ সবজি, টমেটো, গাজর, শশা, লেটুস পাতা, পেয়াঁজের সালাদ এবং সবজির বিভিন্ন আইটেম। এরপর মাছ, মাংস, ডিমের নানা পরিবেশনা। গ্রিল, ফ্রাই, গ্রেভি এবং লম্বা ঝোলে চুবানো হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল–একদিক থেকে নিশ্চিন্ত, এখানে কোনো নিষিদ্ধ মাংস নেই। নুডুলস, পাস্তা এবং মিশরীয ফালাফেল এবং কোশারি ছাড়াও নাম না জানা কিছু আইটেম আর সবশেষে মিষ্টান্ন। বিভিন্ন ধরনের কেক-পেস্ট্রি, পুডিং-পায়েশ ছাড়াও বুফেতে বিস্কট কুকিজ দেখে অবাক হই। উদর পূর্তি করে বুফে লাঞ্চের পরে কারা যে বিস্কুট চানাচুর খায়! হতে পারে কেউ কেউ এ সব দিয়েই লাঞ্চ বা ডিনার শুরু করে।

লাঞ্চে এত সব আয়োজন থাকলেও চা-কফি ছাড়া আর কোনো পানীয়ের ব্যবস্থা নেই। তবে নেই মানে একেবারে নেই বললে ভুল হবে। ‘ফেলো কড়ি মাখো তেল’ কথাটার উৎপত্তি কেন হয়েছিল জানি না, কিন্তু ‘ফেলো পাউন্ড খাও পানি’ এখানকার নিয়ম। অতএব ঊনচল্লিশ পাউন্ড দামের দেড় লিটার পানির বোতল নিয়ে টেবিলে বসেছিলাম।

এশিয়া ইওরোপের বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াবার অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের জানা ছিল অনেক দেশেই রেস্তোরাঁয় বুফের সাথে খাবার পানি থাকে না। সেক্ষেত্রে চীনের শিয়ানে, সুইজারল্যান্ডের জুরিখে কিংবা বাড়ির কাছে শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডিতে একই ব্যবস্থা। দলে ভারি থাকলে একসাথে গোটাকয় পাঁচ লিটারের বোতল কিনে ফেলেছি। এখানে জাহাজে থাকতে হবে তিনরাত, কাজেই আগেইভাগেই সতর্ক হয়ে রায়ান ডিপার্টমেন্ট স্টোর থেকে দেড় লিটারের পাঁচটা বোতল নিয়ে ঘরে ফিরেছি। রায়ানে দেড় লিটার সাড়ে তিন পাউন্ড এবং এক লিটার আড়াই পাউন্ড মাত্র। অর্থাৎ ‘টুইয়া’ শুধ পানি বিক্রি করেই যাত্রীদের পকেট ‘ধুইয়া’ দেবার যে ব্যবস্থা করে রেখেছে তা থেকে আপাতত বাঁচা গেল।



দোকান থেকে দেড় লিটারের পাঁচটা বোতল হাতে জাহাজে ফেরাও ছিল একটা বিড়ম্বনা। মোহামেদ ‘ঐ যে ঘাট দেখা যায়’ বলে কেটে পড়লে ঘাটে যাবার সময় আমার পুরোনো ঢাকার সেই রসিকতার কথা মনে পড়লো। রিকশাওয়ালা ভাড়া একটু বেশি দাবী করায় যাত্রী বলেছিল ‘ঐ যে সদর ঘাট দেখা যায়। এত ভাড়া চাও কেন?’ তখন রিশাওয়ালার জবাব ছিল ‘আসমানের চাঁদ ভি দেখা যায়, গিয়া দ্যাখেন হালায়, কেমুন লাগে!’

আমাদের ঘাটও চোখে দেখা যাচ্ছিল, ঠিকই কিন্তু পানির বোতল ছাড়াও রানাভাই পপকর্ন, চিপস আরো কতো কীযে কিনেছিলেন সব কিছু নিয়ে হাঁটতে শুরু করার পরে বুঝলাম জাহাজের দূরত্ব চোখে দেখা দূরত্বের চেয়ে কিছুটা হলেও বেশি।

রাতে ডিনারের সময় দেখা দিল আরেক সমস্যা। চণ্ডীদাসের খুড়ো যথারীতি প্রবেশ পথে দাঁড়িয়ে বিনয়ে বিগলিত হয়ে বললেন, ‘স্যার বাইরে থেকে কোনো খাবার বা পানীয় কিছুই নেওয়া যাবে না।’

এদের এই ব্যবসায়ী চালাকিতে প্রথম রাতে খুব মেজাজ খারাপ করে কয়েক বাটি স্যুপ এবং পরদিন সকালে কয়েক গ্লাস ফলের রস খেয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু পরদিন দুপুর থেকে দেখা গেল অনেকইে পানির বোতল হাতে ঢুকে পড়েছেন। বোঝা গেল চণ্ডীদাসের খুড়ো শেষপর্যন্ত যাত্রীদের সম্মিলিত আক্রমণ ঠেকাতে না পেরে হাল ছেড়ে দিয়েছেন।

আমার ধারণা ছিল, সন্ধ্যায় আমাদের ভ্রমণতরী নোঙর তুলে উত্তরে যাত্রা শুরু করবে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেল আগামীকাল দুপুরের আগে আসোয়ান ছাড়ছে না টুইয়া। এখান থেকেই অতি ভোরে আমরা বেরিয়ে পড়বো আবু সিম্বেলের উদ্দেশ্যে। ভোর চারটায় রিসেপশান থেকে ওয়েক-আপ কল দেয়ার আগেই উঠে পড়েছি। বাড়তি সতর্কতা হিসাবে মোবাইল ফোনে এ্যালার্ম দেওয়া ছিল, কিন্তু ঘুম ভেঙেছে তারও আগে। তৈরি হয়ে বেরোতে বেশি দেরি হয়নি। এত সকালে ভ্রমণ ব্যবস্থাপক ইয়াসিরের সাথে দেখা হবে ভাবিনি। আমরা তিনজন যেহেতু ব্রেকফাস্টের সময় জাহাজে থাকতে পারবো না সেই কারণে সৌরভ বলে দিয়েছিল টেক্অ্যাওয়ে ব্রেকফাস্টের কথা যেন আগের রাতেই বলে রাখি। আমরা ভুলে গেলও ইয়াসির নিজে উপস্থিত থেকে চারজনের নাস্তার প্যাকেটসহ গাইড ওসামার সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে দিয়েছে। আমি বোধহয় নিজের অজান্তেই উচ্চারণ করে বলে ফেলেছিলাম, ‘ওসামা বিন লাদেন!’ ওসামা নিজেকে বাঁচাতে দ্রুত বলে উঠলেন, ‘আমি একজন নিরিহ স্কুল মাস্টার।’ ওসামার বিস্তৃত পরিচয় নেবার আগেই মাইক্রোবাসে উঠে পড়তে হলো। টুইয়া থেকে নেমে ঘাটে অন্তত গোটা তিনেক মাইক্রোবাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি। প্রথমটাতে আমাদের জাহাজের কয়েকজন যাত্রী দেখে আমি সেটাতে প্রায় উঠে পড়েছিলাম। ইয়াসির জানালো আমাদের গাড়ি পেছনে এবং যাত্রী আমরা তিনজন।

এই প্রথম জানতে পারলাম ‘টুইয়া’ জাহাজের সাথে আমাদের ফিলাই কিংবা আবু সিম্বেল ভ্রমণের তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। এখানে দাঁড়ানো গোটা চার পাঁচেক বাহন তাদের নিজস্ব টুরিস্টদের নিয়ে ভোরে যাত্রা করে বেলা দেড়টার মধ্যে আবার জাহাজে তুলে দেবে, তারপরেই জাহাজ নোঙর তুলে যাত্রা করবে লাক্সরের পথে। মাত্র গোটা কুড়ি প্রকৃত পর্যটক যখন ভোরের সুখনিদ্রার সময় শয্যা ত্যাগ করে আবু সিম্বেলে দ্বিতীয় রামেসেস এবং নেফারতিতির মূর্তি দেখতে যাচ্ছে, তখন জাহাজ শুদ্ধো শ’তিনেক মানুষ বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।

চালকের আসনে বসে আয়মান যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব আসোয়ান শহর থেকে বেরিয়ে যেতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু রাত না পোহাতেই রাস্তায় ‘উন্নয়ন কাজ’ শুরু হয়ে যাওয়ায় মাঝে মাঝেই একদিকের চলাচল বন্ধ রেখে শুধু অন্যদিকের গাড়িগুলো চলছিল। শহর পেরোবার আগেই বেশ কয়েকটা পথের মোড়ে, চৌরাস্তায় কিংবা কোনো চত্বরে আলোকোজ্জ্বল পাথরের ভাস্কর্য চোখে পড়ে। খুব শৈল্পিক বা কুশলী কোনো নির্মাণ নয়, পাথর কেটে বা খোদাই করে এক ধরনের অবয়ব বা কাঠামো নির্মাণ! ওসামা জানালেন, এখানে বিভিন্ন ধরনের পাথরের সহজলভ্যতার জন্য সারা দেশ থেকে ভাস্কর্যের শিক্ষার্থীসহ শিল্পীরা আসোয়ানে এসে পাথর খোদাই শিল্পের শিক্ষালাভ করে। সেইসব শিক্ষানবীশ শিল্পীদের কিছু কাজ শহরের বিভিন্ন জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে। পথে ওসামা ডাইনে বাঁয়ের দুই একটা দ্রষ্টব্যের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে ধারা বিবরণী দিচ্ছিলেন, ‘হাতের বামে ওই যে দূরে ফিলাই টেম্পলে বাতি জ্বলছে।’ একটা বেশ চওড়া খালের উপর দিয়ে পার হচ্ছি, জানলাম লেক নাসের থেকে এই লেকের উৎপত্তি, মিলেছে নীল নদে।

আসোয়ান থেকে আবু সিম্বেলের দূরত্ব ২৯০ কিলোমিটার। শহর ছাড়ার ঘণ্টাখানেক পরে মরুভূমির শেষ প্রান্তে আকাশ লাল হতে আরম্ভ করলো, তারপরেই একটু একটু করে উঁকি দিয়ে চোখ মেলে দেখা দিলো ভোরের প্রথম সূর্য। সোয়া পাঁচটার দিকে সূর্যোদয় দেখতে দেখতেই আমরা আরো কয়েক কিলোমিটার এগিয়ে গেলে সকালের রোদে ঝলমল করে উঠলো পূবের মরুপ্রান্তর। কিছুক্ষণ পরে আয়মার গাড়ির গতি কমাতে শুরু করলে হাতের ডাইনে পথে পাশে চোখে পড়লো বিভিন্ন দিকে স্বল্প দূরত্বের মধ্যে পাঁচ ছয়টি মন্দিরের নাম লেখা দিক নির্দেশক ফলক। এই ধু ধু মরুভূমির আশেপাশেই যদি একাধিক মন্দিরের অস্তিত্ব থাকে, সাড়ে তিন হাজার বছর আগের প্রত্নতাত্ত্বিক অবশেষ যদি এখনো খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে ফারাওদের রাজত্বে এই অঞ্চলে আরো কতো যে মন্দির, কতো উপাসনালয়, কতো প্রাসাদ গড়ে উঠেছিল তার হিসাব হয়তো আর কখনোই পাওয়া যাবে না।

ইউনেস্কো ঐতিহ্যের অংশ আবু সিম্বেলের মন্দির দুটির বিশেষত্ব হলো–দুটি স্থাপনার কোনোটিই পাথর, কাদামাটি, সিমেন্ট বা অন্য কোনো পদার্থ দিয়ে গড়ে পিটে তৈরি নয়, বরং পাহাড়ের বিশাল পাথরের শরীর কেটে কুঁদে নির্মাণ করা হয়েছে। আসোয়ানের বিপুলায়তন বাঁধ নির্মাণের সময় তিন হাজার দুশ বছর আগের মন্দির দুটি সম্পূর্ণ জলমগ্ন হয়ে চিরদিনের জন্য বিলুপ্ত হতে চলেছিল। মিশর সরকার মন্দির দুটি রক্ষার জন্যে ইউনেস্কোর কাছে আবেদন জানায়। এই অনুরোধের প্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী তহবিল সংগ্রহের কাজ শুরু হয় ১৯৬০ সালে। প্রধানত একটি সুইডিশ প্রতিষ্ঠানের তত্ত্ববধানে বিশ্বের অনেকগুলো দেশের অভিজ্ঞ পরামর্শক, স্থপতি এবং প্রকৌশলী মন্দির দুটি স্থানান্তরের কাজ শুরু করে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে তিন হাজার মানুষ দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে সফল ভাবে বর্তমান জায়গায় স্থানান্তর করেছে রামসেস নেফারতিতিকে।

আবু সিম্বেল টেম্পল স্থানান্তরের সময় প্রথমেই এর ছাদসহ পাহাড়ের উপরের অংশ সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর ছাদ, দেয়াল, পিলার এবং মূল মূর্তিগুলো ছোট ছোট ব্লকের আকারে কেটে ফেলা হয়েছে। তবে পাথরের এ সব ছোট ব্লকের এক একটির ওজনও তিন টন থেকে ত্রিশ টন পর্যন্ত। পাথর কাটার জন্যে কোনো বিস্ফোরক বা ভারি হ্যামার ব্যবহার করা হয়নি। বৈদ্যুতিক করাত এবং অনেক ক্ষেত্রে ড্রিল মেশিন ও হ্যান্ড স’ব্যবহার করে সতর্কতার সাথে বিশাল এক একটি ব্লক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নতুন জায়গায় বসাবার সময়ে সর্বোচ্চ পাঁচ মিলিমিটারের বেশি এদিক সেদিক হয়নি। ওসামা যখন বলছিলেন আবু সিম্বেল স্থানান্তরের কাজে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, তখন ভাবছিলাম আফগানিস্তানে মোল্লা ওমর তার রাজত্বকালে কতো কম খরচে বামিয়ান বুদ্ধমূর্তি বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। আফগান জাতীয় জাদুঘরের সকল প্রাক-ইসলামিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ধ্বংস করে তালেবানরা ইসলামের ঝাণ্ডা উড়িয়ে দিয়েছে।

চালকের আসনের পাশেই বসেছিলেন রানা ভাই এবং ওসামা বসেছিলেন ঠিক আমাদের আসনের সামনে। মাঝে একবার পথে গাড়ি থামিয়ে আরো একজনকে তুলে নিয়ে ওসামা বললেন ওর নাম সাঈদ, আমাদের বদলি ড্রাইভার। অর্থাৎ পর্যটক তিনজন এবং গাইড ও চালক মিলিয়ে তিনজন। এ ভাবে এখন কেমন চলছে মিশরের পর্যটন শিল্প? ওসামাকে জিজ্ঞেস করতেই উত্তর পেলাম, ‘আসলে কোভিড আমাদের সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। পর্যটন, শিক্ষা, শিল্প-বাণিজ্য কিছুই বাদ নেই।’

চমৎকার ইংরেজি বলেন ওসামা। রানা ভাইয়ের প্রশ্নের উত্তরে জানা গেল ভয়ংকর ওসামা নামের আড়ালে আমাদের ওসামা স্কুলের অংকের শিক্ষক, কোভিডে চাকরি হারিয়ে এখন টুর গাইডের কাজ নিয়েছেন। তবে এখনো টুরিস্টের সংখ্যা কম, শুধু গাইডের কাজ করে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

আমাদের গাড়ির গতি কমতে কমতে এক সময় ডান দিকে নেমে গেল। প্রান্তরের ভেতরে অস্থায়ী সরাইখানায় যাত্রা বিরতি। অনেকগুলো টুরিস্ট বাস আগে থেকেই দাঁড়িয়ে ছিল। ছোট বড় আরো কিছু বাহনের ফাঁকে দেখা গেল বড় একটা বাসের গায়ে লেখা আওয়ামি ট্রাভেলস। নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, মালয়েশিয়া বা কানাডায় ব্যবসা বাণিজ্য করলেও আমাদের কোনো দেশিভাই মিশরে এসে ট্রাভেল এ্যান্ড টুরিজম ব্যবসা শুরু করেননি। অতএব আওয়ামি বাসকে পাশ কাটিয়ে রেস্তোরাঁর ভেতরে ঢুকে গেলাম। ভেতরে বসার জন্যে জায়গা যথেষ্ট খালি থাকলেও প্রক্ষালণ কক্ষের সামনে লাইন বেশ দীর্ঘ। নারী পুরুষের দুটি ভিন্ন কক্ষের দরজার কাছে টোল আদায়কারীর মতো বসে থাকা দ্বাররক্ষকের কাছে পাঁচ পাউন্ড পরিশোধ করে ঢুকতে হবে। আমি প্রথম সুযোগে ভেতরে ঢুকে গেলে রানা ভাই একটা গদি আঁটা চেয়ারে বসে আয়েশ করে একটা সিগারেট ধরালেন।

(চলবে)

এসএ/

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত