রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

‘টুইয়া’ ভ্রমণ তরীর রেস্টুরেন্ট একেবারে নিচের তলায়, বেশ বড় হল ঘর জুড়ে চারটি সারিতে টেবিল চেয়ার পাতা। একসাথে অন্তত দেড়শজনের লাঞ্চ বা ডিনারের ব্যবস্থা এখানে। দেড়টার দিকে রেস্তোরাঁয় ঢুকতে গেলে সুকুমার রায়ের চণ্ডীদাসের খুড়োর মতো কালো স্যুটপরা বেঁটে খাটো টেকো রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার কান পর্যন্ত হাসি বিস্তৃত করে রুম নাম্বার জানতে চাইলেন, তারপরে যে কোনো একটা টেবিল বেছে নিতে বললেন। তখন পর্যন্ত বেশিরভাগ টেবিলই খালি, কাজেই আমরা দেখে শুনে কোণের দিকের জানালার কাছে একটা জায়গা বেছে নিলাম।

প্রবেশ পথের উল্টো দিকের পুরোটা জুড়ে বুফে ডিশ সাজানো। ডান দিকে একেবারে শুরুতে পশ্চিমা ধরনের রুটির সমাবেশ এর সাথে বালাদি এবং মাহলাব নামের মিশরীয় রুটি। এরপর সেদ্ধ অথবা আধসেদ্ধ সবজি, টমেটো, গাজর, শশা, লেটুস পাতা, পেয়াঁজের সালাদ এবং সবজির বিভিন্ন আইটেম। এরপর মাছ, মাংস, ডিমের নানা পরিবেশনা। গ্রিল, ফ্রাই, গ্রেভি এবং লম্বা ঝোলে চুবানো হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল–একদিক থেকে নিশ্চিন্ত, এখানে কোনো নিষিদ্ধ মাংস নেই। নুডুলস, পাস্তা এবং মিশরীয ফালাফেল এবং কোশারি ছাড়াও নাম না জানা কিছু আইটেম আর সবশেষে মিষ্টান্ন। বিভিন্ন ধরনের কেক-পেস্ট্রি, পুডিং-পায়েশ ছাড়াও বুফেতে বিস্কট কুকিজ দেখে অবাক হই। উদর পূর্তি করে বুফে লাঞ্চের পরে কারা যে বিস্কুট চানাচুর খায়! হতে পারে কেউ কেউ এ সব দিয়েই লাঞ্চ বা ডিনার শুরু করে।

লাঞ্চে এত সব আয়োজন থাকলেও চা-কফি ছাড়া আর কোনো পানীয়ের ব্যবস্থা নেই। তবে নেই মানে একেবারে নেই বললে ভুল হবে। ‘ফেলো কড়ি মাখো তেল’ কথাটার উৎপত্তি কেন হয়েছিল জানি না, কিন্তু ‘ফেলো পাউন্ড খাও পানি’ এখানকার নিয়ম। অতএব ঊনচল্লিশ পাউন্ড দামের দেড় লিটার পানির বোতল নিয়ে টেবিলে বসেছিলাম।

এশিয়া ইওরোপের বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াবার অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের জানা ছিল অনেক দেশেই রেস্তোরাঁয় বুফের সাথে খাবার পানি থাকে না। সেক্ষেত্রে চীনের শিয়ানে, সুইজারল্যান্ডের জুরিখে কিংবা বাড়ির কাছে শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডিতে একই ব্যবস্থা। দলে ভারি থাকলে একসাথে গোটাকয় পাঁচ লিটারের বোতল কিনে ফেলেছি। এখানে জাহাজে থাকতে হবে তিনরাত, কাজেই আগেইভাগেই সতর্ক হয়ে রায়ান ডিপার্টমেন্ট স্টোর থেকে দেড় লিটারের পাঁচটা বোতল নিয়ে ঘরে ফিরেছি। রায়ানে দেড় লিটার সাড়ে তিন পাউন্ড এবং এক লিটার আড়াই পাউন্ড মাত্র। অর্থাৎ ‘টুইয়া’ শুধ পানি বিক্রি করেই যাত্রীদের পকেট ‘ধুইয়া’ দেবার যে ব্যবস্থা করে রেখেছে তা থেকে আপাতত বাঁচা গেল।



দোকান থেকে দেড় লিটারের পাঁচটা বোতল হাতে জাহাজে ফেরাও ছিল একটা বিড়ম্বনা। মোহামেদ ‘ঐ যে ঘাট দেখা যায়’ বলে কেটে পড়লে ঘাটে যাবার সময় আমার পুরোনো ঢাকার সেই রসিকতার কথা মনে পড়লো। রিকশাওয়ালা ভাড়া একটু বেশি দাবী করায় যাত্রী বলেছিল ‘ঐ যে সদর ঘাট দেখা যায়। এত ভাড়া চাও কেন?’ তখন রিশাওয়ালার জবাব ছিল ‘আসমানের চাঁদ ভি দেখা যায়, গিয়া দ্যাখেন হালায়, কেমুন লাগে!’

আমাদের ঘাটও চোখে দেখা যাচ্ছিল, ঠিকই কিন্তু পানির বোতল ছাড়াও রানাভাই পপকর্ন, চিপস আরো কতো কীযে কিনেছিলেন সব কিছু নিয়ে হাঁটতে শুরু করার পরে বুঝলাম জাহাজের দূরত্ব চোখে দেখা দূরত্বের চেয়ে কিছুটা হলেও বেশি।

রাতে ডিনারের সময় দেখা দিল আরেক সমস্যা। চণ্ডীদাসের খুড়ো যথারীতি প্রবেশ পথে দাঁড়িয়ে বিনয়ে বিগলিত হয়ে বললেন, ‘স্যার বাইরে থেকে কোনো খাবার বা পানীয় কিছুই নেওয়া যাবে না।’

এদের এই ব্যবসায়ী চালাকিতে প্রথম রাতে খুব মেজাজ খারাপ করে কয়েক বাটি স্যুপ এবং পরদিন সকালে কয়েক গ্লাস ফলের রস খেয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু পরদিন দুপুর থেকে দেখা গেল অনেকইে পানির বোতল হাতে ঢুকে পড়েছেন। বোঝা গেল চণ্ডীদাসের খুড়ো শেষপর্যন্ত যাত্রীদের সম্মিলিত আক্রমণ ঠেকাতে না পেরে হাল ছেড়ে দিয়েছেন।

আমার ধারণা ছিল, সন্ধ্যায় আমাদের ভ্রমণতরী নোঙর তুলে উত্তরে যাত্রা শুরু করবে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেল আগামীকাল দুপুরের আগে আসোয়ান ছাড়ছে না টুইয়া। এখান থেকেই অতি ভোরে আমরা বেরিয়ে পড়বো আবু সিম্বেলের উদ্দেশ্যে। ভোর চারটায় রিসেপশান থেকে ওয়েক-আপ কল দেয়ার আগেই উঠে পড়েছি। বাড়তি সতর্কতা হিসাবে মোবাইল ফোনে এ্যালার্ম দেওয়া ছিল, কিন্তু ঘুম ভেঙেছে তারও আগে। তৈরি হয়ে বেরোতে বেশি দেরি হয়নি। এত সকালে ভ্রমণ ব্যবস্থাপক ইয়াসিরের সাথে দেখা হবে ভাবিনি। আমরা তিনজন যেহেতু ব্রেকফাস্টের সময় জাহাজে থাকতে পারবো না সেই কারণে সৌরভ বলে দিয়েছিল টেক্অ্যাওয়ে ব্রেকফাস্টের কথা যেন আগের রাতেই বলে রাখি। আমরা ভুলে গেলও ইয়াসির নিজে উপস্থিত থেকে চারজনের নাস্তার প্যাকেটসহ গাইড ওসামার সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে দিয়েছে। আমি বোধহয় নিজের অজান্তেই উচ্চারণ করে বলে ফেলেছিলাম, ‘ওসামা বিন লাদেন!’ ওসামা নিজেকে বাঁচাতে দ্রুত বলে উঠলেন, ‘আমি একজন নিরিহ স্কুল মাস্টার।’ ওসামার বিস্তৃত পরিচয় নেবার আগেই মাইক্রোবাসে উঠে পড়তে হলো। টুইয়া থেকে নেমে ঘাটে অন্তত গোটা তিনেক মাইক্রোবাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি। প্রথমটাতে আমাদের জাহাজের কয়েকজন যাত্রী দেখে আমি সেটাতে প্রায় উঠে পড়েছিলাম। ইয়াসির জানালো আমাদের গাড়ি পেছনে এবং যাত্রী আমরা তিনজন।

এই প্রথম জানতে পারলাম ‘টুইয়া’ জাহাজের সাথে আমাদের ফিলাই কিংবা আবু সিম্বেল ভ্রমণের তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। এখানে দাঁড়ানো গোটা চার পাঁচেক বাহন তাদের নিজস্ব টুরিস্টদের নিয়ে ভোরে যাত্রা করে বেলা দেড়টার মধ্যে আবার জাহাজে তুলে দেবে, তারপরেই জাহাজ নোঙর তুলে যাত্রা করবে লাক্সরের পথে। মাত্র গোটা কুড়ি প্রকৃত পর্যটক যখন ভোরের সুখনিদ্রার সময় শয্যা ত্যাগ করে আবু সিম্বেলে দ্বিতীয় রামেসেস এবং নেফারতিতির মূর্তি দেখতে যাচ্ছে, তখন জাহাজ শুদ্ধো শ’তিনেক মানুষ বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।

চালকের আসনে বসে আয়মান যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব আসোয়ান শহর থেকে বেরিয়ে যেতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু রাত না পোহাতেই রাস্তায় ‘উন্নয়ন কাজ’ শুরু হয়ে যাওয়ায় মাঝে মাঝেই একদিকের চলাচল বন্ধ রেখে শুধু অন্যদিকের গাড়িগুলো চলছিল। শহর পেরোবার আগেই বেশ কয়েকটা পথের মোড়ে, চৌরাস্তায় কিংবা কোনো চত্বরে আলোকোজ্জ্বল পাথরের ভাস্কর্য চোখে পড়ে। খুব শৈল্পিক বা কুশলী কোনো নির্মাণ নয়, পাথর কেটে বা খোদাই করে এক ধরনের অবয়ব বা কাঠামো নির্মাণ! ওসামা জানালেন, এখানে বিভিন্ন ধরনের পাথরের সহজলভ্যতার জন্য সারা দেশ থেকে ভাস্কর্যের শিক্ষার্থীসহ শিল্পীরা আসোয়ানে এসে পাথর খোদাই শিল্পের শিক্ষালাভ করে। সেইসব শিক্ষানবীশ শিল্পীদের কিছু কাজ শহরের বিভিন্ন জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে। পথে ওসামা ডাইনে বাঁয়ের দুই একটা দ্রষ্টব্যের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে ধারা বিবরণী দিচ্ছিলেন, ‘হাতের বামে ওই যে দূরে ফিলাই টেম্পলে বাতি জ্বলছে।’ একটা বেশ চওড়া খালের উপর দিয়ে পার হচ্ছি, জানলাম লেক নাসের থেকে এই লেকের উৎপত্তি, মিলেছে নীল নদে।

আসোয়ান থেকে আবু সিম্বেলের দূরত্ব ২৯০ কিলোমিটার। শহর ছাড়ার ঘণ্টাখানেক পরে মরুভূমির শেষ প্রান্তে আকাশ লাল হতে আরম্ভ করলো, তারপরেই একটু একটু করে উঁকি দিয়ে চোখ মেলে দেখা দিলো ভোরের প্রথম সূর্য। সোয়া পাঁচটার দিকে সূর্যোদয় দেখতে দেখতেই আমরা আরো কয়েক কিলোমিটার এগিয়ে গেলে সকালের রোদে ঝলমল করে উঠলো পূবের মরুপ্রান্তর। কিছুক্ষণ পরে আয়মার গাড়ির গতি কমাতে শুরু করলে হাতের ডাইনে পথে পাশে চোখে পড়লো বিভিন্ন দিকে স্বল্প দূরত্বের মধ্যে পাঁচ ছয়টি মন্দিরের নাম লেখা দিক নির্দেশক ফলক। এই ধু ধু মরুভূমির আশেপাশেই যদি একাধিক মন্দিরের অস্তিত্ব থাকে, সাড়ে তিন হাজার বছর আগের প্রত্নতাত্ত্বিক অবশেষ যদি এখনো খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে ফারাওদের রাজত্বে এই অঞ্চলে আরো কতো যে মন্দির, কতো উপাসনালয়, কতো প্রাসাদ গড়ে উঠেছিল তার হিসাব হয়তো আর কখনোই পাওয়া যাবে না।

ইউনেস্কো ঐতিহ্যের অংশ আবু সিম্বেলের মন্দির দুটির বিশেষত্ব হলো–দুটি স্থাপনার কোনোটিই পাথর, কাদামাটি, সিমেন্ট বা অন্য কোনো পদার্থ দিয়ে গড়ে পিটে তৈরি নয়, বরং পাহাড়ের বিশাল পাথরের শরীর কেটে কুঁদে নির্মাণ করা হয়েছে। আসোয়ানের বিপুলায়তন বাঁধ নির্মাণের সময় তিন হাজার দুশ বছর আগের মন্দির দুটি সম্পূর্ণ জলমগ্ন হয়ে চিরদিনের জন্য বিলুপ্ত হতে চলেছিল। মিশর সরকার মন্দির দুটি রক্ষার জন্যে ইউনেস্কোর কাছে আবেদন জানায়। এই অনুরোধের প্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী তহবিল সংগ্রহের কাজ শুরু হয় ১৯৬০ সালে। প্রধানত একটি সুইডিশ প্রতিষ্ঠানের তত্ত্ববধানে বিশ্বের অনেকগুলো দেশের অভিজ্ঞ পরামর্শক, স্থপতি এবং প্রকৌশলী মন্দির দুটি স্থানান্তরের কাজ শুরু করে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে তিন হাজার মানুষ দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে সফল ভাবে বর্তমান জায়গায় স্থানান্তর করেছে রামসেস নেফারতিতিকে।

আবু সিম্বেল টেম্পল স্থানান্তরের সময় প্রথমেই এর ছাদসহ পাহাড়ের উপরের অংশ সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর ছাদ, দেয়াল, পিলার এবং মূল মূর্তিগুলো ছোট ছোট ব্লকের আকারে কেটে ফেলা হয়েছে। তবে পাথরের এ সব ছোট ব্লকের এক একটির ওজনও তিন টন থেকে ত্রিশ টন পর্যন্ত। পাথর কাটার জন্যে কোনো বিস্ফোরক বা ভারি হ্যামার ব্যবহার করা হয়নি। বৈদ্যুতিক করাত এবং অনেক ক্ষেত্রে ড্রিল মেশিন ও হ্যান্ড স’ব্যবহার করে সতর্কতার সাথে বিশাল এক একটি ব্লক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নতুন জায়গায় বসাবার সময়ে সর্বোচ্চ পাঁচ মিলিমিটারের বেশি এদিক সেদিক হয়নি। ওসামা যখন বলছিলেন আবু সিম্বেল স্থানান্তরের কাজে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, তখন ভাবছিলাম আফগানিস্তানে মোল্লা ওমর তার রাজত্বকালে কতো কম খরচে বামিয়ান বুদ্ধমূর্তি বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। আফগান জাতীয় জাদুঘরের সকল প্রাক-ইসলামিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ধ্বংস করে তালেবানরা ইসলামের ঝাণ্ডা উড়িয়ে দিয়েছে।

চালকের আসনের পাশেই বসেছিলেন রানা ভাই এবং ওসামা বসেছিলেন ঠিক আমাদের আসনের সামনে। মাঝে একবার পথে গাড়ি থামিয়ে আরো একজনকে তুলে নিয়ে ওসামা বললেন ওর নাম সাঈদ, আমাদের বদলি ড্রাইভার। অর্থাৎ পর্যটক তিনজন এবং গাইড ও চালক মিলিয়ে তিনজন। এ ভাবে এখন কেমন চলছে মিশরের পর্যটন শিল্প? ওসামাকে জিজ্ঞেস করতেই উত্তর পেলাম, ‘আসলে কোভিড আমাদের সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। পর্যটন, শিক্ষা, শিল্প-বাণিজ্য কিছুই বাদ নেই।’

চমৎকার ইংরেজি বলেন ওসামা। রানা ভাইয়ের প্রশ্নের উত্তরে জানা গেল ভয়ংকর ওসামা নামের আড়ালে আমাদের ওসামা স্কুলের অংকের শিক্ষক, কোভিডে চাকরি হারিয়ে এখন টুর গাইডের কাজ নিয়েছেন। তবে এখনো টুরিস্টের সংখ্যা কম, শুধু গাইডের কাজ করে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

আমাদের গাড়ির গতি কমতে কমতে এক সময় ডান দিকে নেমে গেল। প্রান্তরের ভেতরে অস্থায়ী সরাইখানায় যাত্রা বিরতি। অনেকগুলো টুরিস্ট বাস আগে থেকেই দাঁড়িয়ে ছিল। ছোট বড় আরো কিছু বাহনের ফাঁকে দেখা গেল বড় একটা বাসের গায়ে লেখা আওয়ামি ট্রাভেলস। নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, মালয়েশিয়া বা কানাডায় ব্যবসা বাণিজ্য করলেও আমাদের কোনো দেশিভাই মিশরে এসে ট্রাভেল এ্যান্ড টুরিজম ব্যবসা শুরু করেননি। অতএব আওয়ামি বাসকে পাশ কাটিয়ে রেস্তোরাঁর ভেতরে ঢুকে গেলাম। ভেতরে বসার জন্যে জায়গা যথেষ্ট খালি থাকলেও প্রক্ষালণ কক্ষের সামনে লাইন বেশ দীর্ঘ। নারী পুরুষের দুটি ভিন্ন কক্ষের দরজার কাছে টোল আদায়কারীর মতো বসে থাকা দ্বাররক্ষকের কাছে পাঁচ পাউন্ড পরিশোধ করে ঢুকতে হবে। আমি প্রথম সুযোগে ভেতরে ঢুকে গেলে রানা ভাই একটা গদি আঁটা চেয়ারে বসে আয়েশ করে একটা সিগারেট ধরালেন।

(চলবে)

এসএ/

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad
Header Ad

হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের হাকিমপুরে সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (ওএমএস) সাড়ে ৫ মেট্রিকটন চাল ও ১০৪টি খালি চালের বস্তা উদ্ধার করা হয়েছে। এসব চাল একটি ধান ভাঙ্গা মিলের গুদামে মজুদ করা ছিল। ঘটনাটি ঘটেছে ২৬ এপ্রিল, শনিবার রাতে, যখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত রায় অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধার করেন।

গুদামটির মালিক আসাদুজ্জামান আসাদ, যিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সদস্য, তার বিরুদ্ধে চাল মজুদ করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, আলীহাট ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের কাছে তার মিলের গুদামে এসব চাল মজুদ ছিল। অভিযান চালিয়ে সাড়ে ৫ মেট্রিকটন চাল জব্দ করা হয়, তবে অভিযানের সময় মিল মালিক এবং কোনো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় আসাদকে গ্রেপ্তার করা না গেলেও তাকে আসামী করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, চাল মজুদ করা বেআইনি এবং এটি অপরাধ। উদ্ধারকৃত চাল উপজেলা খাদ্যগুদামে পাঠানো হয়েছে এবং পরবর্তীতে নিয়মিত মামলায় তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা খালেদা খাতুন জানিয়েছেন, মামলাটি রবিবার বিকালে থানায় করা হবে, যেখানে আসাদুজ্জামান আসাদকে প্রধান আসামী হিসেবে দায়ের করা হবে।

এদিকে, আসাদ আগেও বৈষম্যবিরোধী দুই ছাত্র হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

ক্যামেরার লেন্স চুরির অভিযোগ প্রমাণের ভিত্তিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত দুই শিক্ষার্থী হলেন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের আনাস আহমেদ ও শামীম ভূঁইয়া।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল হাকিম। 

আনাস আহমেদকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার ও আবাসিক হলের সীট বাতিল এবং শামীম ভুঁইয়াকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া তার ব্যাপারে পরিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে আগামীকাল সিন্ডিকেটে আলোচনা করা হবে বলে জানা গেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল হাকিম বলেন, "গণমাধ্যমে আনাসকে নিয়ে রিপোর্ট হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হয়েছে। এছাড়া তার চুরির সত্যতা পাওয়া গেছে। ফলে তাকে এক বছরের বহিষ্কার এবং হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর শামীমের ব্যাপারে শৃঙ্খলা বোর্ড বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে। আগামীকাল বিষয়টি সিন্ডিকেটে আলোচনা হবে।'

এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, 'শৃঙ্খলা বোর্ড দুইটি সিদ্ধান্তের সুপারিশ করেছে। এখনো সাইন হয়নি পেপারে। আগামীকাল সিন্ডিকেটে ফাইনাল হবে বিষয়টি।'

উল্লেখ্য, এর আগে কুমিল্লার একটি অভিজাত হোটেল থেকে ক্যামেরার লেন্স চুরি করে আনাস এবং শামীম। সিসি ফোটেজ বিশ্লেষণ করে এর সত্যতাও পাওয়া যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৫ এপ্রিল রাতে বেশ কয়েকজন বহিরাগত এসে ক্যাম্পাসে আনাসকে মারধরও করে।

Header Ad
Header Ad

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

অধিকৃত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা বেড়েই চলছে। তবে এই ইস্যুতে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে চলমান উত্তেজনা প্রশমনের পক্ষে বাংলাদেশ। দুটি বন্ধুপ্রতিম দেশ চাইলে বাংলাদেশ মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে তার আগে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা।

রোববার (২৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান স্পষ্ট, আমরা শান্তি চাই দক্ষিণ এশিয়ায়। আমরা জানি, বিভিন্ন ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতময় সম্পর্ক আছে। কিন্তু আমরা চাই না এখানে কোনো বড় কোনো সংঘাত সৃষ্টি হোক, যাতে এটা এ অঞ্চলের মানুষের কোনো বিপদের কারণ না হয়ে উঠতে পারে। ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক বিদ্যমান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা চাইব তারা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তাদের সমস্যার সমাধান করে ফেলুক। আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি, দু’একটি দেশের পক্ষ থেকে মধ্যস্থতার প্রস্তাব এসেছে। যেভাবে হোক মধ্যস্থতার মাধ্যমে হোক, দ্বিপক্ষীয় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে হোক, আমরা চাই উত্তেজনা প্রশমিত হোক এবং শান্তি বজায় থাকুক।

ভারত-পাকিস্তান দুটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইরান ও সৌদি আরব ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সমস্যা সমাধানে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশও মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করতে পারি কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমি মনে করি না এই মুহূর্তে আমাদের মধ্যস্থতা করার মতো কোনো ভূমিকা নেওয়া উচিত। আমরা চাইব, তারা নিজেরা নিজেরা সমস্যার সমাধান করুক। তারা যদি আমাদের সহায়তা চায়, আপনারা মধ্যস্থতা করুন তাহলে হয়ত আমরা যাব। কিন্তু তার আগে আমরা আগবাড়িয়ে কিছু করতে চাই না।

ভারত-পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনার কোনো প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে কি না– জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আধুনিক জামানায় সবকিছু সবাইকে কমবেশি প্রভাবিত করে। কাজেই কোনো কিছু আমাদের একটুও প্রভাবিত করবে না, সেটা আমি বলি না। তাদের যেই সংঘাত সেটা আমাদের সরাসরি প্রভাবিত করার কিছু নাই। কারণ, আমরা এতে কোনো পক্ষ নিইনি। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যেকোনো সংঘাত বা সম্পর্ক খারাপ হলে প্রভাব পড়ে।

‘তবে তাদের কাছ থেকে আমাদের যদি কোনো স্বার্থ থাকে আমদানি করার, আমরা করব।’, যোগ করেন তৌহিদ হোসেন।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্নে উপদেষ্টা জানান, এটা হয়ত নিরাপত্তা নিয়ে যারা সরাসরি কাজ করেন তারা বলতে পারবেন। এই মুহূর্তে আমার কাছে এরকম কোনো তথ্য নেই।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু
নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা চায় জামায়াত
কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক এমপি জাফর আলম গ্রেপ্তার
ভারতের দিকে তাক করা পাকিস্তানের ১৩০ পারমাণবিক বোমা
চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় তাওহিদ হৃদয়, বাড়ছে নাটকের রঙ
উত্তেজনার মধ্যেই যুদ্ধজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল ভারত
ছেলে খুঁজে পাচ্ছি না, একজন জীবনসঙ্গী দরকার: মিলা
টাঙ্গাইলে শ্রমিকদলের নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধে ভারতের ১.১৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির শঙ্কা
দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা
রাজনীতির চেয়ারে ঘুণপোকা ধরেছে, এটি সংস্কার করা প্রয়োজন: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
উত্তাল ইউআইইউ ক্যাম্পাস, ভিসি-ডিনসহ ১১ কর্মকর্তার পদত্যাগ
এপ্রিলেই দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, সঙ্গে থাকবেন দুই পুত্রবধূ
বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে বিশাল নিয়োগ, পদ ৬০৮
ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় ফ্যাসিবাদী শাসক পালাতে বাধ্য হয়েছে: আলী রীয়াজ
মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত