শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ | ২৭ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্রয়াণ

একবার যদি তোমাকে ছাড়া বেঁচে থাকতে শিখে যাই, তাহলে তোমার সংসর্গও আমার কাছে বিরক্তিকর ঠেকবে। তখন তুমি বাঁচবে কার স্পর্শ নিয়ে? কাকে বিলিয়ে দিবে তোমার প্রণয়? কার জন্য চোখে জমিয়ে রাখবে কান্না, কার জন্য ভালবাসার বাঁধ ভেঙ্গে সৃষ্টি করবে খুশির বন্যা? শিবলীর কথার বৃষ্টিতে চমকিতা বনে যায় অপূর্বা। কি উত্তর দেবে ভেবে পাচ্ছে না। চুপ করে থাকবে, নাকি জড়িয়ে ধরবে ওর হাতটা, বুঝে উঠতে পারছে না।

 এক বছরের অন্তরঙ্গতায় শিবলী এতটুকু বুঝতে পেরেছে অপূর্বা ইন্ট্রোভার্ট বা অন্তর্মুখী স্বভাবের মেয়ে। অন্য সব মেয়েদের চেয়ে একটু অন্যরকম। ওর হাসিতে লুকিয়ে থাকে অদ্ভুত রকমের কান্নার সিলমোহর। কান্নাতে লুকিয়ে থাকে ভীষণ রকমের মায়ার আলপনা। কিন্তু শিবলীর মনে একটা প্রশ্ন বারবারই জট পাকিয়ে উঠে, 'ও আমাকে বুঝতে পেরেছে কতটুকু? বুঝবার চেষ্টা করছে কি কখনো!" উত্তরের খোঁজে মরিয়া হয়ে উঠে ওর মন।

অপূর্বা চুপ করে থাকে। স্তব্ধ হয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে ওর পাশে। বিদিশার চুলের কালো রঙে ছেয়ে উঠে চারপাশ। হঠাৎই কিছু না বলেই রিকশা ডেকে উঠে পড়ে অপূর্বা।

বুকফাটা কষ্ট নিয়ে ঘোলা চোখে তাকিয়ে ওর চলে যাওয়া দেখে শিবলী। চাইলে সবার সামনে খুব জোরে ওর হাতটা চেপে ধরে উত্তরটা জানতে পারতো। কারণ সেই অধিকারটা আছে ওর। তবুও চশমাটা খুলে আবার তাকায় ওর দিকে। কিন্তু এবার সত্যি সত্যি-ই সবকিছু ঘোলাটে লাগছে ওর কাছে।

তাহলে ওদের প্রেমটাও কি ঘোলাটে কিছু স্মৃতি মাত্র! মেয়েটা কি তাহলে প্রেমের অভিনয় করেছে ওর সাথে। মনে মনে ভাবে, মেয়েরা কি এভাবেই অভিনয় করে প্রেমের! কত টাই না আপন করে নিয়েছিল ওকে। ও ভাবতে লাগে সেদিনের ঘটনা কিভাবে ভুলে গেল অপূর্বা। স্মৃতিরা এসে আঘাত হানে ওর বুকে আর নিউরন স্মরণ করে সেই ঘটনা-

-এই শুন না!

-কি?

-থাক বলবো না।

-কি হয়েছে বলো।

-ইচ্ছে করছে...

-কি ইচ্ছে করছে?

-ইচ্ছে করছে তোমার বুকে মাথা দিয়ে হাঁটি।

-বুকে মাথা রেখে কি হাঁটা যায়?

-আমি জানি না। আমি হাঁটবো। তোমার বুকে মাথা রেখেই হাঁটবো।

-আচ্ছা। ঠিক আছে। এই বুকটা তো তোমারই।

-সত্যি!

-হ্যা, সত্যি।

-কতটুকু সত্যি?

-সত্যি তো সত্যিই। এক সত্যি, দুই সত্যি, তিন সত্যি- একশো বার সত্যি। এবার খুশি!

-অনেকটা, খুশি।

-দেখ অপূর্বা, চন্দ্রিমা কি অপরূপা! কি মায়াবতী!  কি সুন্দরী! সোনালী রঙের মসলিন শাড়িতে কি সুন্দর লাগছে ওকে।

-এই চন্দ্রিমা কে? কোথায় চন্দ্রিমা। আমি কাউকেই তো দেখছিনা।

-চন্দ্রিমা আমার বুকে।

-একটু আগে না বললে, এই বুকটা আমার। এখন মিথ্যে বলছো কেনো?

-মিথ্যে বলবো কেন!

-এই দেখো আমার বুকে চন্দ্রিমা।

-কোথায়! দেখি। ওকে আজকে নাস্তানাবুদ করেই ছাড়ব। কেউই তো নেই তোমার বুকে।

-চন্দ্রিমা তো চাঁদের আলো। মিষ্টি চাঁদের আলো নববধূবেশে লাজুক বদনে এসে মিশেছে আমার বুকে। তবে তুমি কিন্তু আছো সবসময় আমার অনুভবে। চাঁদের কিরণের চেয়েও বেশি অপরূপা তুমি। তুমিই তো আছো আমার প্রতিটি নিঃশ্বাসে, হৃদয়ের কোয়াড্রেট, কডেটে।

-তাহলে এতো ঢং করার কি দরকার ছিলো। আমার চোখের জল ঝরানো ছাড়া কি তোমার শান্তি হয় না।

-পাগলী টা কাঁদছে কোনো! এত ছোট একটা বিষয়ের জন্য কি কাঁদতে হয়!

-হ্যা, আমি কাঁদব এখন। হাউমাউ করে কাঁদব।

-এই কাদতে হবে না প্লিজ। একটা জিনিস দেখবে।

-কি!

-দেখো দুটো পাখির ছায়া।

-উপরে চেয়ে দেখো ছাদের উপরে দুটো পাখি।

-কি ভালবাসা পাখিদের মধ্যে, তাই না?

-হ্যা, পাখি দুটো কত কাছাকাছি বসে আছে। মনে হচ্ছে সাত জনমের বাঁধনে বেঁধে আছে ওরা এক সুতোয়।

-ওদের সময়গুলো কতটা আবেগঘন, তাই না?

-আস্তে কথা বলো না হয় পাখি দুটো উড়ে যাবে।

-আচ্ছা, আচ্ছা। ঠিক আছে। সারাটি জীবন এভাবে পাশে থাকবে তো আমার?

-কেনো থাকব না, বলো! তুমি-ই আমার সবকিছু। আমি তোমাতেই রবো চিরকাল।

পুরনো সেই স্মৃতি মনে উঠতেই চোখের কোণে বৃষ্টি ঝরতে শুরু করে। মন খারাপ হলে নিভৃতে মৌনী হয়ে তাকিয়ে থাকে শিবলী। রাস্তার মাঝে থ হয়ে বিজন চাওনি তে দেখে ওর চলে যাওয়া। অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে ব্যস্ত পথের জীবন্ত যানবাহনের দিকে। সবকিছুই ছুটে চলছে আপন গতিতে। জীবনটা কি এরকমই! চলে যায় যে যার মতো। 

হঠাৎই ট্রাক এসে আঘাত করে পেছন থেকে। এরকম আঘাতে কেউ বেঁচে ফিরতে পারে না। কিন্তু রক্তাক্ত দেহে প্রাণটা এখনও আছে। নিয়ে যাওয়া হয় কমিউনিটি বেসড মেডিকেল হসপিটালে। কিছুক্ষণ পর কাঁদতে কাঁদতে চলে আসে হলের সব বন্ধু বান্ধব। এই প্রথম একসাথে এতগুলো যুবক ছেলে কাঁদছে। বন্ধুগুলো আসলে এই রকমই হয়। জগতে মৃত্যুটা মাঝে মাঝে খুব কঠিন, আবার মাঝে মাঝে খুব সহজ। শিবলীও মরে যেতে পারতো। কিন্তু মরবে কিভাবে, ভালবাসার উত্তরটা যে এখনও বাকি রয়ে গেছে। তাই হয়তো সৃষ্টিকর্তা ওকে প্রাণে মারে নি, বাচিয়ে রেখেছে সেই উত্তরের আশায়।

ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ছিল তিনদিন। দুনিয়াতে ওর আপন বলতে আছে মমতাময়ী এক মা। ছেলের খবর শুনে নীলফামারী থেকে ছুটে এসেছে মা আর মামা। বাবা নেই। দশ বছর আগে মারা গেছে রোড এক্সিডেন্টে। তাই মায়ের চিন্তার অন্ত নেই। মায়ের মনে বারবারই জাগে শমনের ভয়। মা ছেলের শিয়রে বসে কাঁদে আর হাত তুলে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে প্রার্থনা করে সৃষ্টিকর্তার কাছে। সৃষ্টিকর্তা হয়তো ওর মায়ের প্রার্থনা সেদিন কবুল করে নিয়েছিল।

চারদিন পরেই ও মোটামুটি সুস্থ হয়ে উঠে। কিন্তু ডাক্তার বলে দেয় পনেরো দিনের আগে বাসায় নিয়ে যাওয়া যাবে না। আশেপাশে ও প্রতিদিনই খুঁজে বেড়ায় অপূর্বার প্রতিচ্ছবি। কিন্তু খুঁজে পায় না একটি বারের জন্যেও। কতটা নির্মম হৃদয়ের মেয়ে অপূর্বা!

একটি বারের জন্যও দেখতে আসতে মন চাইল না ওর। অতীতের রঙিন আলপনা মাখা স্মৃতিগুলো বারবার আঘাত দিয়ে যায় ওর পীড়িত দেহের ভীত মনটাতে।

এদিকে অপূর্বার মনটাও খারাপ। কেন খারাপ তা ও জানে না। মেয়ে মানুষের কান্নাটা খুব রহস্যের। ওর কান্নাটা আরও বেশি রহস্যের। ওর মন কেন জানি আতঙ্কের স্পন্দনে কম্পিত হয়ে উঠে। মনে হচ্ছে ও হারাতে চলেছে আপন কাউকে। কিন্তু হারাবেই বা কাকে! সেদিনের ঘটনার পর রাগ করে ভেঙ্গে ফেলেছে নতুন কেনা মুঠোফোনটি। অকারণে মায়ের সাথে রাগ করে চলে এসেছে নানু বাসায়। চট্টগ্রামের নাসিরাবাদে ১৬ নং হাউসিং সোসাইটির বিপরীতে ওর নানু বাসা। কিন্তু মনটা কেন খারাপ তার কারণ ও খুঁজে পায় না।

শিবলী ওর বন্ধু মেহেদিকে বলেছিল অপূর্বাকে ফোন করে জানাতে। মেহেদি ওকে ফোনে না পেয়ে, ওর কয়েকজন বান্ধবীকে বলে দেয় শিবলীর এক্সিডেন্টের কথা। ওরাও চেষ্টা করেছে অপূর্বার সাথে যোগাযোগ করার। কিন্তু পারেনি।

বিবাগী মনে অপূর্বা তাকিয়ে থাকে আকাশে। রাতের আকাশে দুটো তারাকে পাশাপাশি দেখে খুব হিংসে হয় ওর। ভাবে, সেদিন ওর সাথে এমন করাটা ঠিক হয়নি। ছেলেটা মনে হয় খুব কষ্ট পেয়েছে। এখন ও আবার নিজেই আফসোস করে তখন মনটা অনুগ্র হলো না কেনো! তাহলেই তো ঝামেলা হতো না।

ওর চঞ্চল মন আবার এটাও ভাবে, প্রেমে যদি একটু বিরহের ছোয়া না লাগে, তাহলে তাকে প্রেম বলে না। তখন সেটা হয়ে যায় নিতান্তই ভালো লাগা। ও বুঝে ভালোলাগা এবং ভালোবাসা এক জিনিস নয়। সে হিসেবে ও ভাবে, যা করেছি, ঠিকই করেছি ওর সাথে।

তবে ওর অদ্ভুত আচরণে কষ্ট পেয়ে শিবলী এখন মৃত্যু পথযাত্রী। কোনমতে বেঁচে আছে। ওর কাছে এই সত্যটা এখনো অজানা। কিন্তু অনুভব করছে অশুভ কিছু একটা ঘটেছে। কোন কারন খুঁজে না পেয়ে একান্তে বসে বসে কেঁদে কেঁদে সময় কাটায়।

পাঁচদিন পার হলেই বাসায় ফিরবে। কারণ, ভার্সিটিও অফ আছে। সমস্যা হবে না কোনো।

ওর বাসা ময়মনসিংহের আকুয়ায়। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। পড়াশোনা করছে ফিসারিজ অনুষদে। শিবলী পশুপালন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। পরিচয় হয়েছিল গতবছর। ১৩ ফেব্রুয়ারি কৃষিবিদ দিবসের দিন।আজ মার্চ মাসের দশ তারিখ। এক বছরেরও বেশি সময় হয়ে গেছে ওদের অপরিচিত থেকে খুব কাছের মানুষ হবার।

অপূর্বার বাসা ময়মনসিংহ হলেও থাকে বেগম রোকেয়া হলে। এদিকে আজকে শিবলীর মাথায় অপারেশন হবার কথা। কিন্তু খুব ভয় পাচ্ছে ও। মামা এসে সাহস দিয়ে যায়, বন্ধুরা এসে সাহস দিয়ে বলে, "কিছু হবে না দোস্ত। তুই আবার সুস্থ হয়ে উঠবি।" ও সাহস পায় বুকে। মা হাত বুলিয়ে দেয় মাথায়। নিজ হাতে খাইয়ে দেয় ছেলেকে। ছেলে বলে, " আর কত কাঁদবে গো মা! এই তো আর কয়েকটি দিন।তারপরেই আমি সুস্থ হয়ে উঠছি।" মা ছেলের কথা শুনে হাসে, তারপর আবার কাঁদে লুকিয়ে লুকিয়ে। সেই কান্না চোখে পরে না শিবলীর। 

সন্ধ্যায় অপারেশন হবে। অপারেশন করার সময় হঠাৎই রক্তের প্রয়োজন পড়ে। ও নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত। মেহেদি বিশ্ববিদ্যালয়ের "বাঁধন " সংগঠন কে ফোন দেয় কিন্তু এই গ্রুপের রক্ত নেই। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে গিয়েও পাওয়া যায়নি রক্ত। ডাক্তার বলছে, "রোগীর অবস্থা খুব সিরিয়াস। খুব তাড়াতাড়ি রক্তের ব্যবস্থা করতে হবে।"

এদিকে কিছুক্ষণ আগেই হলে ফিরে এসেছে অপূর্বা।এসে শিবলীর দূর্ঘটনার কথা শুনে বিবশ হয়ে পড়ে ও। বিশ্ববিদ্যালয়ের এম্বুলেন্স নিয়ে চলে আসে হাসপাতালে। এসে দেখে সবাই কাঁদছে। কোথাও নেই ও নেগেটিভ রক্ত। ও বলে, " আমার ও নেগেটিভ রক্ত। আপনারা প্লিজ রোগীকে বাঁচান। " ডাক্তার ওর রক্তের চেক আপ করে এক ব্যাগ রক্ত নিয়ে যায় অপারেশন থিয়েটারে । নার্স আবার চলে আসে ভীত হয়ে। এসে বলে, " আর ও এক ব্যাগ রক্ত লাগবে।" ডাক্তার বলে দেয়," রক্তদাতার শরীর থেকে এরচেয়ে বেশি রক্ত নেয়া সম্ভব হবে না।"

কিন্তু অপূর্বা পাগল হয়ে গেছে। বারবার বলে উঠছে, "যত রক্ত লাগে নিন। কিন্তু আমার শিবলীকে আপনারা বাঁচান। ওকে খুব ভালোবাসি আমি। ওকে ছাড়া বাঁচব না আমি।"

হঠাৎই শুরু হয় ঝোড়ো বৃষ্টি।

ডাক্তারের নিষেধ সত্ত্বেও ও রক্ত দিতে মরিয়া হয়ে উঠে। একদিকে বিত্তীর্ণ জার্নি, অর্ধভুক্ত দেহে দুই ব্যাগ রক্ত দেয়া! রক্ত নেবার পর অপূর্বা চোখ মেলে না। একদিকে শিবলীর অবস্থা মুমূর্ষু। অন্যদিকে অপূর্বা এখন সিরিয়াস ওয়ার্ডে। এক ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। এখনও চোখ মেলছে না অপূর্বা। ঝড়ের বেগ আর-ও বেড়েই চলছে। ডাক্তাররা খুব চেষ্টা করছে দুজনকে বাঁচাতে। দুইটা সিরিয়াস ওয়ার্ড থেকে দুইজন ডাক্তার বের হয়ে আসে বেদনাকান্ত মন নিয়ে।

কিভাবে বলবে সেই কথা বুঝে উঠতে পারছে না। সব দোষ-ই যে নিয়তির। নিয়তি কেন নিয়ে আসলো অপূর্বাকে। অপূর্বা যে কতটা ভালবাসে শিবলীকে, শিবলীর আর জানা হলো না। মনে অতৃপ্তি নিয়েই মারা গেলো দু'জনে। খুব জোরে বৃষ্টি হচ্ছে। হঠাৎই বৃষ্টি কারণ কী? মনে হয় ওদের দুজনের জন্ম দিনেই খুব বৃষ্টি হয়েছিল। তাই হচ্ছে আজও।

Header Ad
Header Ad

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার

দিলশাদ আফরিন। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক কমিটির শৃঙ্খলা ও আদর্শ বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনটির নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা শাখার সদস্য দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এই বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়।

বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) গণমাধ্যমের সামনে আসে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বহিষ্কারাদেশে বলা হয়, ‘এই পত্রের মাধ্যমে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় নাগরিক কমিটি-এর নিয়ম ও নীতিমালা অনুযায়ী আপনার সাম্প্রতিক কর্মকান্ড আমাদের সংগঠনের শৃঙ্খলা এবং আদর্শের পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হয়েছে। সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এবং সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন এর অনুরোধক্রমে আপনাকে জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলার দায়িত্বে থাকা জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কারের বিষয়ে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল। জাতীয় নাগরিক কমিটি অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় গত ৮ এপ্রিল তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

আফরিন জাতীয় নাগরিক কমিটির শহীদ আহত কল্যাণ সেলের কোনো দায়িত্বে ছিলেন না। তারপরেও তিনি ব্যক্তিগতভাবে শহীদ ও আহত পরিবারের আর্থিক বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন। যা নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি অবগত ছিল না বলেও জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে বিএনপি ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। এ ছাড়া জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বাড়ানো যায়, তা নিয়েও দলটি কাজ করতে চায়।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫–এ অংশ নিয়ে বিএনপি এসব পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

‘১ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমি’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)/মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়েও কাজ করতে চায় বিএনপি।

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইকে জনপ্রিয় করতে বিএনপি ১১টি রেগুলেটরি পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। এর মধ্যে আটটি প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। এগুলো হলো বিডাকে কার্যকর করা, ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট বিধির আধুনিকীকরণ, বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৪x৭ (দিনে ২৪ ঘণ্টা ও সপ্তাহে ৭ দিন) সেবা চালু করা, স্বয়ংক্রিয় মুনাফা প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা, স্থানীয়ভাবে দক্ষ জনশক্তির ব্যবস্থা করা, বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধি।

সরকার গঠন করতে পারলে দেশের মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া, প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধির জন্য বিএনপি অতীতের চেয়েও ব্যাপক সফলতা অর্জন করতে চায় বলে জানান মির্জা ফখরুল। পোস্টে তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিনিয়োগ সম্মেলন উপলক্ষে এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনটি বিষয় বলেছেন। এগুলো হলো ঐক্যই ভবিষ্যৎ জাতীয় উন্নয়নের সোপান, এফডিআই আকৃষ্ট করতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকার আইন করেছিল এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সরকারগুলোর বিনিয়োগবান্ধব নীতি ছিল।

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১ টা থেকে ‍দুপুর ১২ টা ২০ মিনিট পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকা মেহেরপুর জেলার ইছাখালি সীমান্ত এলাকার মেইন পিলার ১২৪ এর নিকট শূন্য রেখা বরাবর ভারতীয় পার্শ্বে বিএসএফ নব চন্দ্রপুর ক্যাম্পে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এবং প্রতিপক্ষ ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সাথে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বিজিবি’র পক্ষে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হাসান স্টাফ অফিসারসহ মোট ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব প্রদান করেন।

অপরদিকে বিএসএফ এর পক্ষে ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট শ্রী বিনয় কুমার তাঁর স্টাফ অফিসারসহ ৮ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

বৈঠকের শুরুতে উভয় পক্ষ ঈদ-উল-ফিতর পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার সীমান্ত এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে চোরাচালান প্রতিরোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, যৌথ টহল তৎপরতা জোরদারকরণ এবং গোয়েন্দা নজরদারির বিষয়সমূহে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সীমান্তকে অধিক সুসংহত ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ একমত পোষণ করেন। এছাড়াও, সীমান্তে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা ও সীমান্ত সংক্রান্ত যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ সম্মত হন।

বৈঠক শেষে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার মেইন পিলার ১২৪ সহ তৎসংলগ্ন সীমান্ত পিলারসমূহ যৌথভাবে পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেন।
দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আন্তরিক ও সদ্ভাবপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক শেষ হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার
সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত
আবারও চেন্নাইয়ের অধিনায়ক হলেন ধোনি
‘ক্রিম আপা’ খ্যাত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শারমিন শিলা গ্রেফতার
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা, ভরি ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা
ভিন্ন ধর্মের ছেলের সঙ্গে প্রেম, বাবার হাতে প্রাণ গেল মেয়ের
পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হলেন সাবেক আইজিপি ময়নুল
জেনে নিন গ্রীষ্মে সুস্বাদু আর উপকারী কাঁচা আমের ১১টি বিস্ময়কর গুণ
এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে কিশোরী
সাধারণ মানুষ চায় এই সরকার আরো ৫ বছর থাকুক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মানববন্ধন (ভিডিও)
জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এমন অপকর্মের সাহস পেত না: মির্জা আব্বাস (ভিডিও)
নওগাঁয় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২
বাংলাদেশ রেলওয়ের দুই কর্মকর্তাকে পদায়ন ও বদলি
২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশে হাসপাতাল বানাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি
কাদের-কামালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে চিঠি
সিলেটে থানায় লালগালিচা দেখে ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দিল্লিতে লিঙ্গ পরিবর্তনের চিকিৎসা নিতে এসে গ্রেপ্তার ৫ বাংলাদেশি
রবিবার ৩ জেলায় সাধারণ ছুটি, সবমিলিয়ে টানা ৪ দিনের অবকাশ