শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্রয়াণ

একবার যদি তোমাকে ছাড়া বেঁচে থাকতে শিখে যাই, তাহলে তোমার সংসর্গও আমার কাছে বিরক্তিকর ঠেকবে। তখন তুমি বাঁচবে কার স্পর্শ নিয়ে? কাকে বিলিয়ে দিবে তোমার প্রণয়? কার জন্য চোখে জমিয়ে রাখবে কান্না, কার জন্য ভালবাসার বাঁধ ভেঙ্গে সৃষ্টি করবে খুশির বন্যা? শিবলীর কথার বৃষ্টিতে চমকিতা বনে যায় অপূর্বা। কি উত্তর দেবে ভেবে পাচ্ছে না। চুপ করে থাকবে, নাকি জড়িয়ে ধরবে ওর হাতটা, বুঝে উঠতে পারছে না।

 এক বছরের অন্তরঙ্গতায় শিবলী এতটুকু বুঝতে পেরেছে অপূর্বা ইন্ট্রোভার্ট বা অন্তর্মুখী স্বভাবের মেয়ে। অন্য সব মেয়েদের চেয়ে একটু অন্যরকম। ওর হাসিতে লুকিয়ে থাকে অদ্ভুত রকমের কান্নার সিলমোহর। কান্নাতে লুকিয়ে থাকে ভীষণ রকমের মায়ার আলপনা। কিন্তু শিবলীর মনে একটা প্রশ্ন বারবারই জট পাকিয়ে উঠে, 'ও আমাকে বুঝতে পেরেছে কতটুকু? বুঝবার চেষ্টা করছে কি কখনো!" উত্তরের খোঁজে মরিয়া হয়ে উঠে ওর মন।

অপূর্বা চুপ করে থাকে। স্তব্ধ হয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে ওর পাশে। বিদিশার চুলের কালো রঙে ছেয়ে উঠে চারপাশ। হঠাৎই কিছু না বলেই রিকশা ডেকে উঠে পড়ে অপূর্বা।

বুকফাটা কষ্ট নিয়ে ঘোলা চোখে তাকিয়ে ওর চলে যাওয়া দেখে শিবলী। চাইলে সবার সামনে খুব জোরে ওর হাতটা চেপে ধরে উত্তরটা জানতে পারতো। কারণ সেই অধিকারটা আছে ওর। তবুও চশমাটা খুলে আবার তাকায় ওর দিকে। কিন্তু এবার সত্যি সত্যি-ই সবকিছু ঘোলাটে লাগছে ওর কাছে।

তাহলে ওদের প্রেমটাও কি ঘোলাটে কিছু স্মৃতি মাত্র! মেয়েটা কি তাহলে প্রেমের অভিনয় করেছে ওর সাথে। মনে মনে ভাবে, মেয়েরা কি এভাবেই অভিনয় করে প্রেমের! কত টাই না আপন করে নিয়েছিল ওকে। ও ভাবতে লাগে সেদিনের ঘটনা কিভাবে ভুলে গেল অপূর্বা। স্মৃতিরা এসে আঘাত হানে ওর বুকে আর নিউরন স্মরণ করে সেই ঘটনা-

-এই শুন না!

-কি?

-থাক বলবো না।

-কি হয়েছে বলো।

-ইচ্ছে করছে...

-কি ইচ্ছে করছে?

-ইচ্ছে করছে তোমার বুকে মাথা দিয়ে হাঁটি।

-বুকে মাথা রেখে কি হাঁটা যায়?

-আমি জানি না। আমি হাঁটবো। তোমার বুকে মাথা রেখেই হাঁটবো।

-আচ্ছা। ঠিক আছে। এই বুকটা তো তোমারই।

-সত্যি!

-হ্যা, সত্যি।

-কতটুকু সত্যি?

-সত্যি তো সত্যিই। এক সত্যি, দুই সত্যি, তিন সত্যি- একশো বার সত্যি। এবার খুশি!

-অনেকটা, খুশি।

-দেখ অপূর্বা, চন্দ্রিমা কি অপরূপা! কি মায়াবতী!  কি সুন্দরী! সোনালী রঙের মসলিন শাড়িতে কি সুন্দর লাগছে ওকে।

-এই চন্দ্রিমা কে? কোথায় চন্দ্রিমা। আমি কাউকেই তো দেখছিনা।

-চন্দ্রিমা আমার বুকে।

-একটু আগে না বললে, এই বুকটা আমার। এখন মিথ্যে বলছো কেনো?

-মিথ্যে বলবো কেন!

-এই দেখো আমার বুকে চন্দ্রিমা।

-কোথায়! দেখি। ওকে আজকে নাস্তানাবুদ করেই ছাড়ব। কেউই তো নেই তোমার বুকে।

-চন্দ্রিমা তো চাঁদের আলো। মিষ্টি চাঁদের আলো নববধূবেশে লাজুক বদনে এসে মিশেছে আমার বুকে। তবে তুমি কিন্তু আছো সবসময় আমার অনুভবে। চাঁদের কিরণের চেয়েও বেশি অপরূপা তুমি। তুমিই তো আছো আমার প্রতিটি নিঃশ্বাসে, হৃদয়ের কোয়াড্রেট, কডেটে।

-তাহলে এতো ঢং করার কি দরকার ছিলো। আমার চোখের জল ঝরানো ছাড়া কি তোমার শান্তি হয় না।

-পাগলী টা কাঁদছে কোনো! এত ছোট একটা বিষয়ের জন্য কি কাঁদতে হয়!

-হ্যা, আমি কাঁদব এখন। হাউমাউ করে কাঁদব।

-এই কাদতে হবে না প্লিজ। একটা জিনিস দেখবে।

-কি!

-দেখো দুটো পাখির ছায়া।

-উপরে চেয়ে দেখো ছাদের উপরে দুটো পাখি।

-কি ভালবাসা পাখিদের মধ্যে, তাই না?

-হ্যা, পাখি দুটো কত কাছাকাছি বসে আছে। মনে হচ্ছে সাত জনমের বাঁধনে বেঁধে আছে ওরা এক সুতোয়।

-ওদের সময়গুলো কতটা আবেগঘন, তাই না?

-আস্তে কথা বলো না হয় পাখি দুটো উড়ে যাবে।

-আচ্ছা, আচ্ছা। ঠিক আছে। সারাটি জীবন এভাবে পাশে থাকবে তো আমার?

-কেনো থাকব না, বলো! তুমি-ই আমার সবকিছু। আমি তোমাতেই রবো চিরকাল।

পুরনো সেই স্মৃতি মনে উঠতেই চোখের কোণে বৃষ্টি ঝরতে শুরু করে। মন খারাপ হলে নিভৃতে মৌনী হয়ে তাকিয়ে থাকে শিবলী। রাস্তার মাঝে থ হয়ে বিজন চাওনি তে দেখে ওর চলে যাওয়া। অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে ব্যস্ত পথের জীবন্ত যানবাহনের দিকে। সবকিছুই ছুটে চলছে আপন গতিতে। জীবনটা কি এরকমই! চলে যায় যে যার মতো। 

হঠাৎই ট্রাক এসে আঘাত করে পেছন থেকে। এরকম আঘাতে কেউ বেঁচে ফিরতে পারে না। কিন্তু রক্তাক্ত দেহে প্রাণটা এখনও আছে। নিয়ে যাওয়া হয় কমিউনিটি বেসড মেডিকেল হসপিটালে। কিছুক্ষণ পর কাঁদতে কাঁদতে চলে আসে হলের সব বন্ধু বান্ধব। এই প্রথম একসাথে এতগুলো যুবক ছেলে কাঁদছে। বন্ধুগুলো আসলে এই রকমই হয়। জগতে মৃত্যুটা মাঝে মাঝে খুব কঠিন, আবার মাঝে মাঝে খুব সহজ। শিবলীও মরে যেতে পারতো। কিন্তু মরবে কিভাবে, ভালবাসার উত্তরটা যে এখনও বাকি রয়ে গেছে। তাই হয়তো সৃষ্টিকর্তা ওকে প্রাণে মারে নি, বাচিয়ে রেখেছে সেই উত্তরের আশায়।

ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ছিল তিনদিন। দুনিয়াতে ওর আপন বলতে আছে মমতাময়ী এক মা। ছেলের খবর শুনে নীলফামারী থেকে ছুটে এসেছে মা আর মামা। বাবা নেই। দশ বছর আগে মারা গেছে রোড এক্সিডেন্টে। তাই মায়ের চিন্তার অন্ত নেই। মায়ের মনে বারবারই জাগে শমনের ভয়। মা ছেলের শিয়রে বসে কাঁদে আর হাত তুলে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে প্রার্থনা করে সৃষ্টিকর্তার কাছে। সৃষ্টিকর্তা হয়তো ওর মায়ের প্রার্থনা সেদিন কবুল করে নিয়েছিল।

চারদিন পরেই ও মোটামুটি সুস্থ হয়ে উঠে। কিন্তু ডাক্তার বলে দেয় পনেরো দিনের আগে বাসায় নিয়ে যাওয়া যাবে না। আশেপাশে ও প্রতিদিনই খুঁজে বেড়ায় অপূর্বার প্রতিচ্ছবি। কিন্তু খুঁজে পায় না একটি বারের জন্যেও। কতটা নির্মম হৃদয়ের মেয়ে অপূর্বা!

একটি বারের জন্যও দেখতে আসতে মন চাইল না ওর। অতীতের রঙিন আলপনা মাখা স্মৃতিগুলো বারবার আঘাত দিয়ে যায় ওর পীড়িত দেহের ভীত মনটাতে।

এদিকে অপূর্বার মনটাও খারাপ। কেন খারাপ তা ও জানে না। মেয়ে মানুষের কান্নাটা খুব রহস্যের। ওর কান্নাটা আরও বেশি রহস্যের। ওর মন কেন জানি আতঙ্কের স্পন্দনে কম্পিত হয়ে উঠে। মনে হচ্ছে ও হারাতে চলেছে আপন কাউকে। কিন্তু হারাবেই বা কাকে! সেদিনের ঘটনার পর রাগ করে ভেঙ্গে ফেলেছে নতুন কেনা মুঠোফোনটি। অকারণে মায়ের সাথে রাগ করে চলে এসেছে নানু বাসায়। চট্টগ্রামের নাসিরাবাদে ১৬ নং হাউসিং সোসাইটির বিপরীতে ওর নানু বাসা। কিন্তু মনটা কেন খারাপ তার কারণ ও খুঁজে পায় না।

শিবলী ওর বন্ধু মেহেদিকে বলেছিল অপূর্বাকে ফোন করে জানাতে। মেহেদি ওকে ফোনে না পেয়ে, ওর কয়েকজন বান্ধবীকে বলে দেয় শিবলীর এক্সিডেন্টের কথা। ওরাও চেষ্টা করেছে অপূর্বার সাথে যোগাযোগ করার। কিন্তু পারেনি।

বিবাগী মনে অপূর্বা তাকিয়ে থাকে আকাশে। রাতের আকাশে দুটো তারাকে পাশাপাশি দেখে খুব হিংসে হয় ওর। ভাবে, সেদিন ওর সাথে এমন করাটা ঠিক হয়নি। ছেলেটা মনে হয় খুব কষ্ট পেয়েছে। এখন ও আবার নিজেই আফসোস করে তখন মনটা অনুগ্র হলো না কেনো! তাহলেই তো ঝামেলা হতো না।

ওর চঞ্চল মন আবার এটাও ভাবে, প্রেমে যদি একটু বিরহের ছোয়া না লাগে, তাহলে তাকে প্রেম বলে না। তখন সেটা হয়ে যায় নিতান্তই ভালো লাগা। ও বুঝে ভালোলাগা এবং ভালোবাসা এক জিনিস নয়। সে হিসেবে ও ভাবে, যা করেছি, ঠিকই করেছি ওর সাথে।

তবে ওর অদ্ভুত আচরণে কষ্ট পেয়ে শিবলী এখন মৃত্যু পথযাত্রী। কোনমতে বেঁচে আছে। ওর কাছে এই সত্যটা এখনো অজানা। কিন্তু অনুভব করছে অশুভ কিছু একটা ঘটেছে। কোন কারন খুঁজে না পেয়ে একান্তে বসে বসে কেঁদে কেঁদে সময় কাটায়।

পাঁচদিন পার হলেই বাসায় ফিরবে। কারণ, ভার্সিটিও অফ আছে। সমস্যা হবে না কোনো।

ওর বাসা ময়মনসিংহের আকুয়ায়। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। পড়াশোনা করছে ফিসারিজ অনুষদে। শিবলী পশুপালন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। পরিচয় হয়েছিল গতবছর। ১৩ ফেব্রুয়ারি কৃষিবিদ দিবসের দিন।আজ মার্চ মাসের দশ তারিখ। এক বছরেরও বেশি সময় হয়ে গেছে ওদের অপরিচিত থেকে খুব কাছের মানুষ হবার।

অপূর্বার বাসা ময়মনসিংহ হলেও থাকে বেগম রোকেয়া হলে। এদিকে আজকে শিবলীর মাথায় অপারেশন হবার কথা। কিন্তু খুব ভয় পাচ্ছে ও। মামা এসে সাহস দিয়ে যায়, বন্ধুরা এসে সাহস দিয়ে বলে, "কিছু হবে না দোস্ত। তুই আবার সুস্থ হয়ে উঠবি।" ও সাহস পায় বুকে। মা হাত বুলিয়ে দেয় মাথায়। নিজ হাতে খাইয়ে দেয় ছেলেকে। ছেলে বলে, " আর কত কাঁদবে গো মা! এই তো আর কয়েকটি দিন।তারপরেই আমি সুস্থ হয়ে উঠছি।" মা ছেলের কথা শুনে হাসে, তারপর আবার কাঁদে লুকিয়ে লুকিয়ে। সেই কান্না চোখে পরে না শিবলীর। 

সন্ধ্যায় অপারেশন হবে। অপারেশন করার সময় হঠাৎই রক্তের প্রয়োজন পড়ে। ও নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত। মেহেদি বিশ্ববিদ্যালয়ের "বাঁধন " সংগঠন কে ফোন দেয় কিন্তু এই গ্রুপের রক্ত নেই। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে গিয়েও পাওয়া যায়নি রক্ত। ডাক্তার বলছে, "রোগীর অবস্থা খুব সিরিয়াস। খুব তাড়াতাড়ি রক্তের ব্যবস্থা করতে হবে।"

এদিকে কিছুক্ষণ আগেই হলে ফিরে এসেছে অপূর্বা।এসে শিবলীর দূর্ঘটনার কথা শুনে বিবশ হয়ে পড়ে ও। বিশ্ববিদ্যালয়ের এম্বুলেন্স নিয়ে চলে আসে হাসপাতালে। এসে দেখে সবাই কাঁদছে। কোথাও নেই ও নেগেটিভ রক্ত। ও বলে, " আমার ও নেগেটিভ রক্ত। আপনারা প্লিজ রোগীকে বাঁচান। " ডাক্তার ওর রক্তের চেক আপ করে এক ব্যাগ রক্ত নিয়ে যায় অপারেশন থিয়েটারে । নার্স আবার চলে আসে ভীত হয়ে। এসে বলে, " আর ও এক ব্যাগ রক্ত লাগবে।" ডাক্তার বলে দেয়," রক্তদাতার শরীর থেকে এরচেয়ে বেশি রক্ত নেয়া সম্ভব হবে না।"

কিন্তু অপূর্বা পাগল হয়ে গেছে। বারবার বলে উঠছে, "যত রক্ত লাগে নিন। কিন্তু আমার শিবলীকে আপনারা বাঁচান। ওকে খুব ভালোবাসি আমি। ওকে ছাড়া বাঁচব না আমি।"

হঠাৎই শুরু হয় ঝোড়ো বৃষ্টি।

ডাক্তারের নিষেধ সত্ত্বেও ও রক্ত দিতে মরিয়া হয়ে উঠে। একদিকে বিত্তীর্ণ জার্নি, অর্ধভুক্ত দেহে দুই ব্যাগ রক্ত দেয়া! রক্ত নেবার পর অপূর্বা চোখ মেলে না। একদিকে শিবলীর অবস্থা মুমূর্ষু। অন্যদিকে অপূর্বা এখন সিরিয়াস ওয়ার্ডে। এক ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। এখনও চোখ মেলছে না অপূর্বা। ঝড়ের বেগ আর-ও বেড়েই চলছে। ডাক্তাররা খুব চেষ্টা করছে দুজনকে বাঁচাতে। দুইটা সিরিয়াস ওয়ার্ড থেকে দুইজন ডাক্তার বের হয়ে আসে বেদনাকান্ত মন নিয়ে।

কিভাবে বলবে সেই কথা বুঝে উঠতে পারছে না। সব দোষ-ই যে নিয়তির। নিয়তি কেন নিয়ে আসলো অপূর্বাকে। অপূর্বা যে কতটা ভালবাসে শিবলীকে, শিবলীর আর জানা হলো না। মনে অতৃপ্তি নিয়েই মারা গেলো দু'জনে। খুব জোরে বৃষ্টি হচ্ছে। হঠাৎই বৃষ্টি কারণ কী? মনে হয় ওদের দুজনের জন্ম দিনেই খুব বৃষ্টি হয়েছিল। তাই হচ্ছে আজও।

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত