শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ | ২৭ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ফিরে পড়া ছোটবেলার বই

বই আমার প্রিয়তম শেষ আশ্রয়, জগৎ যখন শূন্য হয়ে যায় তখনও তার বুক থাকে পূর্ণ।

বয়সে বড় হয়ে গেলেও, কিংবা বয়স বেড়ে গেছে বলেই হয়তো এখনো আমি ছোটদের বই পড়ি। ছোটদের বই মানে ছোটদের জন্য লেখা বই, যদিও ওগুলো আদৌ ছোটদের জন্য লেখা কি না, নাকি বড়দের জন্যই, সে প্রশ্ন জাগে মনে মাঝে-মধ্যেই। কারণ এসব বইয়ে এমন কিছু বিষয় থাকে, যা বড়দেরই বোঝার কথা, ছোটদের নয়। অবশ্য কথাটা এভাবে বলাও যায় না, বড়রা ছোটদের চেয়ে বেশি বোঝে এমন কোনো প্রমাণ আসলে নেই। ছোটদের জগৎটা আলাদা, তাদের বোঝা-পড়ার ধরন আলাদা, আলাদা মানে তো এই নয় যে, তারা কম বোঝে! বরং ব্যাপারটা এইরকম যে, তারা একভাবে বোঝে, বড়রা অন্যভাবে।

ছোটরা বোঝাপড়ার জন্য নিজেদের কল্পনার রং অবাধে মিশিয়ে নেয়, বড়দের কল্পনার জগৎ যেহেতু বাস্তবতার আঘাতে ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু ও ক্ষুদ্র হয়ে আসে তাই তারা ততটা রং মেশাতে পারে না। যেমন, ধরা যাক, ছোটদের একটা উপন্যাস ছোট্ট রাজপুত্র’র কথা, যেটি লিখেছিলেন অঁতোয়ান দ্য স্যাঁৎ-একজ্যুপেরি (Antoine de Saint-Exupéry), আজ থেকে প্রায় আশি বছর আগে। এই উপন্যাসে ভিন্ন এক গ্রহ বা গ্রহাণু থেকে ছোট্ট এক রাজপুত্র আসে পৃথিবী ভ্রমণে, তার আগে সে বেড়িয়ে আসে আরো কয়েকটি ছোট ছোট গ্রহ থেকে যেগুলোতে মাত্র একজন করে লোকের বাস। উপন্যাসে ফুল কথা বলে, সাপ কথা বলে, শেয়াল কথা বলে; মোট কথা মানুষ ছাড়াও প্রাণীজগৎ ও জড়জগতের নানা সদস্য কথা বলে। ওই রাজপুত্র অবলীলায় তাদের সঙ্গে কথোপকথন চালিয়ে যায় যেন এটা নিতান্তই মামুলি ব্যাপার। আমরা, মানে বড়রা, যখন ওটা পড়ি তখন মনে হয়, এ নিছক রূপকথা, ওগুলো কি আর সত্যিই কথা বলতে পারে? কিন্তু একজন ক্ষুদে পাঠক কখনো ভাববে না যে, ওরা কথা বলতে পারে না, বরং ভেবে নেবে সত্যিই ওদের ভাষা আছে। ফলে তাদের বোঝার ধরন যে আমাদের চেয়ে অন্যরকম হবে তাতে আর সন্দেহ কী? একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, শিশুরা অনবরত বস্তুজগতের নানান জিনিসের সঙ্গে কথা বলে চলে, বিশেষ করে তাদের খেলনাদের সঙ্গে। কখনো আমার এরকম মনে হয়, ওগুলো কি তাদের ভাষা বোঝে? নইলে এরকম একতরফা আলাপ কতক্ষণ চালিয়ে যাওয়া যায়?

যা বলছিলাম সেই প্রসঙ্গে ফিরি। আমি ছোটদের জন্য লেখা বইগুলো এখনো পড়ি। বলাইবাহুল্য যে, আনন্দ পাওয়ার জন্যই পড়ি, পাইও, প্রভূত আনন্দ পাই, কিন্তু সঙ্গে আরো কিছু পাই। লক্ষ করে দেখি, ছোটবেলায় এই বইটি বা এরকম কোনো বই পড়ে যা মনে হয়েছিল, এখন অন্যরকম মনে হচ্ছে। এই বইয়ের ব্যাখ্যা আমার কাছে পাল্টে যাচ্ছে। এই যে ভিন্ন অর্থ নিয়ে বহুকাল পরে একটি লেখা নতুনরূপে ধরা দেয়, এটাই হলো লেখকের শক্তিমত্তা। এও মনে হয় যে, ছোটদের জন্য যারা লেখেন, তারাই জগতের সবচেয়ে শক্তিমান শিল্পী। কারণ, তাকে ছোটদের মন বুঝতে হয়, ছোটদের ভাষা বুঝতে হয়, ছোটদের কল্পনা বুঝতে হয়, যদিও তিনি নিজে বড় হয়ে গেছেন এবং সম্ভবত ছোটদের মনটি হারিয়ে ফেলেছেন। সত্যিই কি হারিয়েছেন? পড়তে গেলে মনে হয়, তার আসলে দুটো মন, একটি শিশুদের মতো সরল ও কল্পনার রঙে রাঙানো, অন্যটি বড়দের মতো বিদঘুটে।

কোনো-কোনো সময় নতুন কোনো বই পড়তে ইচ্ছে করে না। হয়তো নতুন এক জগৎ ওই বইয়ের ভেতরে অপেক্ষা করে আছে, নতুন কোনো উপলব্ধি, ইঙ্গিত বা ইশারার সঙ্গে হয়তো দেখা হয়ে যাবে ওই বইটি পড়লে, তবু ইচ্ছে করে না। নতুন বইয়ের গন্ধে লোভ সামলাতে না পেরে ভেতরে ঢুকে প্রতারিত হবার অভিজ্ঞতাও তো কম নয়! হয়তো খুব নামিদামি স্বাস্থ্যবান কোনো বই পড়তে পড়তে শেষ পৃষ্ঠায় গিয়ে মনে হয়েছে–যতটা সময় ব্যয় করলাম তা অপচয়ই হয়ে গেল। আবার কোনো কোনো বই পড়তেই পারিনি, মানে পাঠযোগ্যই মনে হয়নি। এরকম অর্ধপঠিত বইয়ের সংখ্যাও কম নয়। তাই নানা কারণে মন যখন বিমূঢ় হয়ে থাকে, কিংবা বিষণ্ন, কিংবা অস্থিরতায় ভুগি, হতবাক হয়ে থাকি কোনো কারণে, তখন নতুন কোনো বই হাতে তুলে নেয়া ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়। তখন ভালো লাগে পুরনো কোনো প্রিয় বই পড়তে। একজন পাঠক যখন তার পঠিত একটি বই আবার তুলে নেন হাতে, পড়ার জন্য, বুঝে নিতে হয়–ওই বইয়ের ভেতরে এমনকিছু আছে যা তাকে ফিরে যেতে বাধ্য করেছে। ওই ধরনের বই পড়লে হৃদয় এক অনির্বচনীয় অনুভূতিতে ভরে ওঠে, কোমল আর মায়াময় হয়ে ওঠে মন, মানুষকে ভালোবাসতে ইচ্ছে করে, জীবন ও পৃথিবীর দিকে নতুন চোখে তাকাতে ইচ্ছে করে, জগৎকে আরো বেশি বাসযোগ্য মনে হয়। এ এক অপ্রকাশযোগ্য অনুভূতি। একে কেবল আধ্যাত্মিক অনুভূতির সঙ্গে তুলনা করা চলে। কিন্তু মুশকিল হলো- এই বইগুলো ইতিমধ্যেই কয়েকবার পড়া হয়ে গেছে আমার। নানা সময়ে ফিরে ফিরে গেছি তাদের কাছে, ফলে এতটাই পরিচিত তারা যে, কোন পৃষ্ঠায় কী আছে তাও যেন চোখের সামনে ভাসে। আমার সংগ্রহে যে বইগুলো আছে তার মধ্যে ওরকম প্রিয় বইয়ের সংখ্যা কম নয়। আমি যখন ঘুরে ঘুরে ওগুলো দেখতে থাকি, ভাবি হাতে তুলে নেবো কি না, তখন যেন দেখতে পাই কোথাও কোথাও উজ্জ্বল সব পঙক্তি আবেদনময়ীর ভঙ্গিতে শুয়ে আছে বইটির অমুক পাতায়, কোথাও বা বিষণ্ন কোনো পঙক্তি মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে আছে ওইখানে, কোথাও-বা রাগী কোনো পঙক্তি চোখ গরম করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। পঙক্তিগুলো যেন রক্তমাংসের মানুষ একেকটা, অনুভূতিময়, প্রকাশোন্মুখ। হ্যাঁ এভাবেই বই পড়ি আমি। এতটা গভীর ভালোবেসে। বই আমার প্রিয়তম শেষ আশ্রয়, জগৎ যখন শূন্য হয়ে যায় তখনও তার বুক থাকে পূর্ণ।

ছোটবেলা থেকে বাছবিচারহীনভাবে বই পড়েছি অনেকগুলো বছর, এবং এভাবে পড়ার একটা সুবিধা পাচ্ছি এই মধ্যবয়সে এসে। পড়তে পড়তে একটা স্ট্যান্ডার্ড তৈরি হয়ে যায় নিজের অজান্তেই, এরপর যে-কোনো লেখা আর পড়ার দায় থাকে না, কোনো-কোনোটি দু-চারপাতা পড়েই রেখে দেয়া যায়। অবশ্য এটা ভালো না খারাপ তা বলা মুশকিল, কিন্তু এ-কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়–এই স্ট্যান্ডার্ড তৈরি হওয়ার জন্য যে পরিমাণ পড়তে হয় তাতে ওই রেখে দেয়ার অধিকার জন্মে যায় একজন পাঠকের। এবং আরেকটি ব্যাপারও ঘটে, এই যে স্ট্যান্ডার্ড, সেখানে দু-একজন লেখক দাঁড়িয়ে যান, যাঁদেরকে নির্দ্বিধায় পড়া যায়, বারবার ফিরে ফিরে পড়া যায। এই লেখকদের প্রায় সবাই প্রিয় লেখকে পরিণত হন। তার মানে এই নয় যে, এঁদের বাইরে আর কোনো প্রিয় লেখক নেই বা থাকেন না, কিন্তু ওই ফিরে ফিরে পড়ার ব্যাপারটা সবার ক্ষেত্রে ঘটে না। একজন পাঠক যখন তার পঠিত একটি বই আবার তুলে নেন হাতে, পড়ার জন্য, বুঝে নিতে হয়, ওই বইয়ের ভেতরে এমনকিছু আছে যা তাকে ফিরে যেতে বাধ্য করেছে।

কিন্তু কেনইবা পুরনো বই ফিরে ফিরে পড়ি বারবার? হয়তো হাজারটা কারণ বলা যায় এ প্রশ্নের উত্তরে, কিংবা কিছু নাও বলা যায়, পড়তে ভালো লাগে, পড়তে ইচ্ছে করে এই কি যথেষ্ট নয়?

যখন আমার মন খারাপ থাকে বা বিক্ষিপ্ত হয়ে থাকে সমস্ত চিন্তা এবং কল্পনা তখন আমি যে বইগুলো পড়ি সেগুলোর প্রায় সবই ছোটদের বই। যেমন ঠাকুরমার ঝুলি কিংবা রুশদেশের উপকথা’র মতো রূপকথার বই। সুকুমার রায় কিংবা শিবরাম চক্রবর্তীর অতি-অসম্ভব আর অদ্ভুত সুন্দর লেখাগুলো। পেটার বিকসেলের গল্পগুলো। তবে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশিবার পড়া বইটি হলো অঁতোয়ান দ্য স্যাঁৎ-একজ্যুপেরির অনবদ্য উপন্যাস লিটল প্রিন্স বা ছোট্ট রাজপুত্র।

‘ঠাকুরমার ঝুলি’র সঙ্গে পরিচয় ঘটেছিল একেবারে ছোটবেলায়। সেই তখন থেকে শুরু করে কতবার যে পড়া হলো সেটি, ইয়ত্তা নেই। এখনো বাচ্চাদের মতো আনন্দ পাই গল্পগুলো পড়ে। বাস্তবতারিক্ত অধিবাস্তবতা আর জাদুবাস্তবতার কী অসম্ভব সুন্দর আর রঙিন এক জগৎই না নির্মাণ করেছিলেন আমাদের পূর্বসুরিরা, কেবল মুখে মুখে গল্প বলার জন্য! এরপর কী করে যেন পেয়ে গিয়েছিলাম ‘রুশদেশের উপকথা’ নামক এক অপূর্ব-সুন্দর বই। প্রথম দর্শনেই ভালো লেগে গিয়েছিল বইটি। কী সুন্দর কাগজ, ঝকঝকে ছাপা, গল্পের সঙ্গে সুন্দর সুন্দর কত ছবি, ভালো না লেগে উপায় আছে? এর আগে কখনো এমন বই তো দেখিইনি! কীভাবে সেটা বাড়ি পর্যন্ত এসেছিল, কে এনে দিয়েছিলেন, তা আর মনে পড়ে না। তবে বইটি পাওয়ার পর নাওয়া-খাওয়া ভোলার মতো অবস্থা হলো আমার। ওটাও রূপকথার বই, তবে মানুষগুলো একেবারেই অচেনা। যে বরফঢাকা দেশটির গল্প ওটাতে ছিল, সেটিও অচেনা। ঠাকুরমার ঝুলি পড়তে গিয়ে যেমন কাউকে কাউকে প্রায় চেনা মানুষের আদলে ভাবতে পেরেছি, এই বই থেকে তা পারা যাচ্ছে না। এই অচেনা মানুষগুলো কী কী করছে সেই কৌত‚হলে আমি প্রায় উত্তেজনায় কাঁপছি। বলাইবাহুল্য, মানুষগুলো অচেনা হলেও তারা যে সত্যি মানুষ তা নিয়ে আমার কোনো সন্দেহই ছিল না। ঠাকুরমার ঝুলির সব মানুষকেও সত্যি বলে মনে হতো আমার। এবং রূপকথায় যেমনটি থাকে, মানুষ ছাড়াও অন্য প্রাণীরা–এমনকি বৃক্ষরাও–কথাটথা বলতে পারে, আমার সেটাকেও সত্যি বলেই মনে হতো। তো, ওই রুশদেশের উপকথার ইভান নামের রাজপুত্রটিই আমার ছোটবেলার নায়ক হয়ে ওঠে। আমার প্রথম নায়ক। বলাইবাহুল্য, ইভানের সঙ্গে আমার কোনো মিলই ছিল না, নিজেকে ইভানের জায়গায় কল্পনা করাও ছিল অসম্ভব। কারণ ওই বরফের দেশে, স্লেজগাড়ির দেশে যা যা ঘটে তা আমার দূর কল্পনাতেও ধরা পড়তো না। তবু ইভানকে এত ভালো লেগেছিল কেন? কেন বারবার পড়েছিলাম ইভানের গল্পগুলো? মনে পড়ে না।

সত্যি বলতে কি, রুশদেশের উপকথা পড়ার পর, বিশেষ করে ইভানের সঙ্গে পরিচয় হবার পর, অন্য কোনো রূপকথার বই আমার আর ভালো লাগেনি। অন্য বই যে পড়তাম না তা নয়, তবে বারবার ফিরে যেতাম ওই বইটির কাছে। পড়তাম, পড়তে পড়তে কল্পনায় নিজেকে রাঙিয়ে নিতে চেষ্টা করতাম, আমার নায়ক রাজপুত্র ইভানের সঙ্গে স্লেজগাড়িতে চড়ে হারিয়ে যেতাম বরফ-ঢাকা দেশটির দূর কোনো অচেনা প্রান্তরে। এই কল্পনায় ভরা রূপকথার জগৎটি নিয়ে আমি ভালোই ছিলাম, আনন্দে ছিলাম। এখনো গল্পগুলো পড়লে ছোটবেলার সেই আনন্দের স্মৃতি ফিরে আসে আমার।

আরো কত বইয়ের কথা বলা হলো না! বলবো কখনো, অন্য কোথাও, অন্য কোনো সময়ে।

 

লেখক: কথা সাহিত্যিক

 

 

Header Ad
Header Ad

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার

দিলশাদ আফরিন। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক কমিটির শৃঙ্খলা ও আদর্শ বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনটির নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা শাখার সদস্য দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এই বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়।

বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) গণমাধ্যমের সামনে আসে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বহিষ্কারাদেশে বলা হয়, ‘এই পত্রের মাধ্যমে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় নাগরিক কমিটি-এর নিয়ম ও নীতিমালা অনুযায়ী আপনার সাম্প্রতিক কর্মকান্ড আমাদের সংগঠনের শৃঙ্খলা এবং আদর্শের পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হয়েছে। সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এবং সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন এর অনুরোধক্রমে আপনাকে জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলার দায়িত্বে থাকা জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কারের বিষয়ে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল। জাতীয় নাগরিক কমিটি অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় গত ৮ এপ্রিল তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

আফরিন জাতীয় নাগরিক কমিটির শহীদ আহত কল্যাণ সেলের কোনো দায়িত্বে ছিলেন না। তারপরেও তিনি ব্যক্তিগতভাবে শহীদ ও আহত পরিবারের আর্থিক বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন। যা নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি অবগত ছিল না বলেও জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে বিএনপি ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। এ ছাড়া জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বাড়ানো যায়, তা নিয়েও দলটি কাজ করতে চায়।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫–এ অংশ নিয়ে বিএনপি এসব পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

‘১ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমি’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)/মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়েও কাজ করতে চায় বিএনপি।

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইকে জনপ্রিয় করতে বিএনপি ১১টি রেগুলেটরি পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। এর মধ্যে আটটি প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। এগুলো হলো বিডাকে কার্যকর করা, ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট বিধির আধুনিকীকরণ, বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৪x৭ (দিনে ২৪ ঘণ্টা ও সপ্তাহে ৭ দিন) সেবা চালু করা, স্বয়ংক্রিয় মুনাফা প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা, স্থানীয়ভাবে দক্ষ জনশক্তির ব্যবস্থা করা, বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধি।

সরকার গঠন করতে পারলে দেশের মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া, প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধির জন্য বিএনপি অতীতের চেয়েও ব্যাপক সফলতা অর্জন করতে চায় বলে জানান মির্জা ফখরুল। পোস্টে তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিনিয়োগ সম্মেলন উপলক্ষে এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনটি বিষয় বলেছেন। এগুলো হলো ঐক্যই ভবিষ্যৎ জাতীয় উন্নয়নের সোপান, এফডিআই আকৃষ্ট করতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকার আইন করেছিল এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সরকারগুলোর বিনিয়োগবান্ধব নীতি ছিল।

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১ টা থেকে ‍দুপুর ১২ টা ২০ মিনিট পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকা মেহেরপুর জেলার ইছাখালি সীমান্ত এলাকার মেইন পিলার ১২৪ এর নিকট শূন্য রেখা বরাবর ভারতীয় পার্শ্বে বিএসএফ নব চন্দ্রপুর ক্যাম্পে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এবং প্রতিপক্ষ ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সাথে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বিজিবি’র পক্ষে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হাসান স্টাফ অফিসারসহ মোট ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব প্রদান করেন।

অপরদিকে বিএসএফ এর পক্ষে ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট শ্রী বিনয় কুমার তাঁর স্টাফ অফিসারসহ ৮ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

বৈঠকের শুরুতে উভয় পক্ষ ঈদ-উল-ফিতর পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার সীমান্ত এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে চোরাচালান প্রতিরোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, যৌথ টহল তৎপরতা জোরদারকরণ এবং গোয়েন্দা নজরদারির বিষয়সমূহে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সীমান্তকে অধিক সুসংহত ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ একমত পোষণ করেন। এছাড়াও, সীমান্তে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা ও সীমান্ত সংক্রান্ত যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ সম্মত হন।

বৈঠক শেষে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার মেইন পিলার ১২৪ সহ তৎসংলগ্ন সীমান্ত পিলারসমূহ যৌথভাবে পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেন।
দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আন্তরিক ও সদ্ভাবপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক শেষ হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার
সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত
আবারও চেন্নাইয়ের অধিনায়ক হলেন ধোনি
‘ক্রিম আপা’ খ্যাত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শারমিন শিলা গ্রেফতার
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা, ভরি ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা
ভিন্ন ধর্মের ছেলের সঙ্গে প্রেম, বাবার হাতে প্রাণ গেল মেয়ের
পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হলেন সাবেক আইজিপি ময়নুল
জেনে নিন গ্রীষ্মে সুস্বাদু আর উপকারী কাঁচা আমের ১১টি বিস্ময়কর গুণ
এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে কিশোরী
সাধারণ মানুষ চায় এই সরকার আরো ৫ বছর থাকুক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মানববন্ধন (ভিডিও)
জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এমন অপকর্মের সাহস পেত না: মির্জা আব্বাস (ভিডিও)
নওগাঁয় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২
বাংলাদেশ রেলওয়ের দুই কর্মকর্তাকে পদায়ন ও বদলি
২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশে হাসপাতাল বানাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি
কাদের-কামালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে চিঠি
সিলেটে থানায় লালগালিচা দেখে ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দিল্লিতে লিঙ্গ পরিবর্তনের চিকিৎসা নিতে এসে গ্রেপ্তার ৫ বাংলাদেশি
রবিবার ৩ জেলায় সাধারণ ছুটি, সবমিলিয়ে টানা ৪ দিনের অবকাশ