শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪২

নেই দেশের নাগরিক

‘পারলে তুমিই কিছু করতে পারবে, বাপ। খোদার দোহাই, একবার দেখ না, আমার বাপ-মা মরা মেয়েটি কোথায় আছে।’ সাদ্দামের পায়ের কাছে হুটরে পড়েন বৃদ্ধা। সাদ্দাম, আশস্ত করে বলে, ‘ফুপু, চোখের পানি মুছেন। আমি কালকের মধ্যেই সুমির খোঁজ নিচ্ছি।’ মাতব্বরের মতো দায়িত্ব নিয়ে বলল সাদ্দাম। যদিও সে জানে, এসব ফাঁকা বুলি ছাড়া কিছুই নয়। ফাঁপা বাঁশে ফুঁ দেওয়া মাত্র।

সুমি যাদের খপ্পরে পড়েছে, তাদের ডেরা থেকে স্বয়ং যমও তাকে উদ্ধার করে আনতে পারবে না। তার ঠিকানা এতক্ষণে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের কোন নিষিদ্ধপল্লী। এতক্ষণে হয়ত নেকড়ে পুরুষদের খপ্পরে পড়েও গেছে। সাদ্দাম, আর বেশি কিছু বলল না। বৃদ্ধাকে শান্তনা দিয়ে, ছঞ্চে ডিঙিয়ে সিঁথির মতো সরু গলিরাস্তায় এল। সাদ্দামকে দুশ্চিন্তার মেঘে আচ্ছন্ন হতে দেখে আতিফ জিজ্ঞেস করল, ‘কী ব্যাপার বল তো? আমি ঠিক ঠাহর করে উঠতে পারলাম না।’
‘এটা একটা বড় সমস্যা আতিফ। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ কোনোভাবেই পাচ্ছি নে।’
‘কী সমস্যা, সাদ্দাম?’
‘কিডন্যাপ।’
‘কিডন্যাপ! মানে, পাচার?’
‘হু।’ ঘাড় নড়ায় সাদ্দাম। বিড়বিড় করে বলে, ‘মানুষ পশুর থেকেও কত অধম হতে পারে একবার ভেবেছিস! মানুষ মানুষকে পণ্য করছে! মানুষের খাবার হচ্ছে মানুষ!’

‘আল্লাহ তো বলেইছেন, মানুষ যেমন সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ, ঠিক তেমনি মানুষ সৃষ্টির নিকৃষ্টও। তুই ভুলে যাচ্ছিস কেন, আল্লাহ কোনো পশু, গরু ছাগল ভেড়ার জন্যে জাহান্নাম বানাননি, তিনি মানুষ আর জিনের জন্যেই জাহান্নাম বানিয়েছেন।’ হাদিসের মশলা ঘাটল আতিফ। তারপর ফুঁ দিয়ে বুঁদবুঁদি ছেড়ে দেওয়ার মতো করে বলল, ‘এ তো দুনিয়ার আদিম সমস্যা। সে বুদ্ধের আমলেও ছিল, নবীজীর আমলেও ছিল।’
‘কিন্তু, এভাবে আমাদের এই রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির থেকে শিশু আর নারী পাচার হতে থাকলে তো একদিন পুরো শিবিরগুলো শিশু আর নারীহীন হয়ে যাবে! আমাদের অস্তিত্বই তো বিপন্ন হয়ে যাবে! এর থেকে পরিত্রাণের উপায় আমাদের খুঁজতেই হবে।’ মাথা খুঁটে সাদ্দাম। দুশ্চিন্তা এমন করে তার শরীরের রগরক্তে কটকট করে কাটছে, যে এই হিমশীতল ঠান্ডা রাতেও ঘামে ভিজে কাদা হয়ে যাচ্ছে সাদ্দাম! কপালের চুল কপালের ঘামে লেপ্টে যাচ্ছে! জুলপি দিয়ে চোয়াচ্ছে চুলচেপা ঘাম।
‘তুই এখানে মাঝেমধ্যে সচেতনতা-শিবির কর। যাতে করে মেয়েরা কারও টোপে না পড়ে।’ পরামর্শ দিল আতিফ।
‘সচেতনতা-শিবির? সেসব অনেকবার করেছি। এমনকি
প্রত্যেক মহল্লায় একটা করে ‘নজরদারি টিম’ও করে দিয়েছি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। আসল ব্যাপার হল, ক্ষিদে, পেটের টান। পেটের টান যে সব থেকে বড় টান। কোথাকার লোক এসে রুটিরুজির টোপ দিয়ে দিচ্ছে, আর খপ করে সে টোপে পড়ে যাচ্ছে মেয়েরা! একবার খোঁজখবর নিয়েও দেখছে না, যে লোকগুলো যা বলছে তা সত্যি না ভুয়ো!’
‘এই চক্রে নিশ্চয় লোকাল লোক আছে। লোকাল লোক ছাড়া একাজ সম্ভব নয়।’
‘সে তো আছেই। ওই খবিষগুলোকে খুঁজে বের করে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিতে হবে। শালোরা মানুষ হয়ে মানুষ বিক্কিরি করে!’ তেতে ওঠে সাদ্দাম।

‘তুই কথাটা ঠিকই বলেছিস। এদিকটায় বেশি করে জোর দিতে হবে। আমাদের মা বোনেরা না থাকলে আমাদের প্রজন্ম টিকে থাকবে কী করে?’
‘আতিফ, তুই আর জে এফ কে বল, এদিকটায় কিছু ফান্ড ব্যয় করতে। মানুষচোরদের একটা জুতসই ব্যবস্থা করতেই হবে।’ দাঁত খিঁচল সাদ্দাম।
‘আমি এ ব্যাপারে কথা বলব। ব্যাপারটা নিয়ে ভাবতেই হবে। একটা নতুন কোন প্রজেক্ট বানাতে হবে।’
‘মানুষই যদি না থাকে তাহলে আর নতুন দেশ বানিয়ে কী লাভ, তাই না?’
‘সে তো ঠিকই।’ মাথা কাত করল আতিফ। প্রসঙ্গ পাল্টে বলল, ‘তাহলে এখন কী করবি, সুমি তো হাতছাড়া।’
‘দেখি, মেজর আসলামকে অন্য কোনভাবে পটানো যায় কি না।’ মাথার ঘেলু খুঁটে সাদ্দাম।
‘যা করবি, তাড়াতাড়ি কর। ভোর হতে আর খুব দেরি নেই।’ তাড়া দেয় আতিফ।

‘আয়।’ বলেই গডগড করে হাঁটা ধরে সাদ্দাম। আতিফ কিছু বলে না। ঘাড়ের ব্যাগটা পিঠে ঝুলিয়ে সেও সাদ্দামের পিছু নেয়। রাত তখন শেষপ্রহরের বাঁশি বাজাচ্ছে। ফেঁসোর মতো ফিনফিন করে ছড়িয়ে থাকা মেঘের আড়াল দিয়ে উঁকিঝুঁকি মারছে নক্ষত্ররাজি। কাঁধে রাত চাপিয়ে ছোপ ছোপ অন্ধকার ধানের শীষ বেয়ে নেমে যাচ্ছে পাতায়। ঘাসের ডগায় ঘুমোচ্ছে বৃষ্টির ফোটা। ঝিঁঝিঁর ডাকে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে চরাচর। যেন দিগন্ত জুড়ে ঘুমের বিছানা পেড়ে নিজে হাঁটু ভাঁজ করে ঘুমোচ্ছে রাত। মাথার ওপরের আকাশ যেন রাতের চোখ। জেগে থাকা চোখ। মাটি, ধানখেত, চরাচর রাতের শরীর আর আকাশ যেন তার জেগে থাকা চোখ। আতিফ, একবার আকাশের ঈশান কোণের দিকে তাকাল। একটা তারা আকাশের বুক থেকে খসে পড়ল নিচে। আতিফ ভাবল, আল্লাহ শয়তানকে ঢিল ছুড়ে মারলেন। আতিফ মনে মনে ‘আয়তাল কুরশি’ পাঠ করল। মনে মনে বলল, আহাঃ, আমাদেরও যদি তারার মতো এমন ঢিল থাকত, তাহলে আকাশ থেকে ছুড়ে ছুড়ে মারতাম মায়ানমার সেনাদের গায়ে। তাদের সেনাক্যাম্পে। আলপথ শেষ করে একটা ডাঙা রাস্তায় উঠল দুজনে। রাস্তাটা আগের মোড়াম রাস্তার থেকেও সরু। আতিফ পেছন থেকে আচপাচ করে বলল, ‘নয়াপাড়া চৌকিটা আর কতদূর?’

‘এই সামনেই। মোড়াম রাস্তাটা শেষ হলেই, বিজিবি’র সীমান্তকরিডর। সংরক্ষিত জোন। বর্ডারের ঝাঁ চকচকে পিচ রাস্তা। আর দেড়মাইলের মতো পথ বাকি।’ বলল সাদ্দাম। রাত ক্রমশ পাতলা হতে শুরু করে দিয়েছে। একটা বাবলা গাছের তলা দিয়ে মোড়াম রাস্তাটা বেঁকে চলে গেছে পুব দিকে। আকাশের নিচের এই ফালি রাস্তাটা সিঁথিতে সিঁদুর দেওয়ার মতো চিপসে আছে। দুধারে ভাঁট-পিটুলির জঙ্গল। নয়ানজলির নিচে সবুজ ধানখেত। রাতের হিম গাছের পাতায় জড়সড় হয়ে জমে আছে। টসটস করে তাকাচ্ছে বিন্দু বিন্দু হিম অথবা বৃষ্টির ফোটা। সাদ্দাম ঠিকই বলেছে, মোড়াম রাস্তার মুখ থেকে এই জোনটা দেড়মাইলের মতোই হবে। একটা সুউচ্চ কারিকুরি করা ফটক থেকে কিছুটা দূরের পাতাবাহার গাছের আড়ালে এসে দাঁড়াল সাদ্দামরা। সামনে বি জি বি’র লোগো আঁকা একটা বিশাল তোরণ। ফটকে রাইফেল তাক করে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কয়েকজন অতন্দ্রপ্রহরী। সাদ্দাম আতিফকে তার স্বয়ংক্রিয় এস আই জি প্রো সেমি অটোমেটিক পিস্তল এবং দামাস্ক ভূজালিটা রাখতে দিয়ে বলল, ‘এগুলো লুকিয়ে রাখ। আমি ভেতর থেকে ঘুরে আসি। এসব সঙ্গে করে নিয়ে গেলে, ধরা পড়ে যাব। তখন আর ফিরে আসার জো থাকবে না। হয় গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যাব অথবা আজীবন জেলে থেকে থেকে পচব।’
‘ঠিক আছে। তাড়াতাড়ি ফিরে আসিস।’ সাদ্দামের দিকে ভ্যালভ্যাল করে চোখ বের করে বলল আতিফ।
‘সে তো চেষ্টা করবই। তবে কিছুটা দেরি হবেই। মেজর মহম্মদ আসলামের কোয়ার্টারটা একেবারে পেছনে। নদীর ধার লাগোয়া।’
‘নদীটা কতদূর?’ নদীর কথা শুনেই উথলে ওঠে আতিফ।
‘এই তো, সামনেই। বিজিবি’র এই সীমান্তচৌকির পরেই তো।’
‘তার মানে আমরা নদীর কাছে চলে এসেছি?’
‘হ্যাঁ, আর মিনিট কুঁড়ি পথ হাঁটলেই তো নদীর পানি দেখা যাবে।’
‘তাহলে তো কাছেই।’ মুখটা জিরাফের মতো ওপরে তুলে একবার পুবদিকে তাকাল আতিফ। সাদ্দাম আতিফের হাবভাব দেখে বলল, ‘অত মুখ তুলে লাভ নেই। এখান থেকে দেখা যাবে না। তবে নদীর হাওয়া টের পাওয়া যাবে।’ প্যান্টের পকেট থেকে সবুজরঙের একটা কার্ড বের করতে করতে বলল সাদ্দাম।
‘ওটা কী?’ জানতে চায়ল আতিফ।
‘গেটপাস।’
‘কীসের গেটপাস?’
‘বিজিবি’র গেটপাস। কার্ডটা মেজর মহম্মদ আসলামই পাইয়ে দিয়েছেন। আমাকে মাঝেমধ্যেই তো হ্যান ত্যান নিয়ে যেতে হয়। মেজর আসলামকে হাতে রাখাটা রোহিঙ্গাদের জন্যে খুবই প্রয়োজন।’
‘যেভাবেই হোক, একটা স্পিডবোট কিন্তু ম্যানেজ করতে হবে।’ কথাটা আরও একবার মনে করিয়ে দেয় আতিফ।
‘দেখি, কী করতে পারি।’

মূলফটকের দিকে পা বাড়াল সাদ্দাম। আতিফ পাতাবাহার গাছের আড়াল থেকে লুকিয়ে দেখতে থাকল। সাদ্দাম দুই হাত ওপরে তুলে খাড়া করে ফটকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ওপরে তোলা ডানহাতের আঙুলে খাড়া করে ধরা আছে সবুজ রঙের গেটপাসটি। থপ থপ করে হেঁটে গিয়ে মূল দরজার সামনে দাঁড়াল সাদ্দাম। দুজন ফটক প্রহরী দাঁড় করালেন তাকে। আতিফ লক্ষ্য করল, প্রহরীদের সঙ্গে সাদ্দামের ফিসফিস করে কিছু কথাবার্তা হল। তারপর সাদ্দাম তার হাতের ‘গেটপাসটা’ একজন প্রহরী চেক করলেন। পাশের ওপর প্রহরী ঠোঁটে হাসি মাখিয়ে কি যেন একটা বললেন। তারপর সাদ্দাম মিচকি হেসে ভেতরে ঢুকে গেল। যাক, গেটের বাঁধা তো পেরোল! বুক থেকে একটা পাথর নেমে গেল আতিফের। সে এবার ল্যাটা মেরে পাথরের একটা চাইএর ওপর বসল। চরাচরে ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। পুব দিগন্ত থেকে লেপ্টে থাকা অন্ধকার একটু একটু করে মুছতে শুরু করে দিয়েছে। রঙের আগের রঙ দিয়ে আকাশ দখল করতে শুরু করে দিয়েছে ভোরের তুলি। প্রায়ই থেমে গেছে ঝিঁঝিঁপোকার ডাক। আর একটু পরেই মসজিদ থেকে ভেসে আসবে ফজরের আযান। বাঁশঝাড় থেকে পাখির কিচিরমিচির। আতিফের মাথায় ঠকঠক করে কড়া নাড়ল, নাফনদীতে ভেসে থাকা তাদের নৌকোটা। সন্ধ্যার ঝড় থেমে, রাতের ঘোমটা সরে এখন দিনের আলো ফোটার তোড়জোড় চলছে। তার আব্বা-মা, ভাই-ভাবীদের কথা মনে পড়তেই, বৃষ্টিতে জুবুথুবু কাকপাখির কথা মনে পড়ছে। আব্বারাও নিশ্চয় ওভাবে ভিজে সারারাত থত্থর করে কেঁপেছে! হয়ত এখন অনেকেই জ্বরে কাবু হয়ে হলহল করে হালছে! হে আল্লাহ, ওদের জানে সবুর দাও। প্রকৃতির ঝড়ঝঞ্ঝা সহ্য করার শক্তি দান কর।

আতিফ পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে নবীকে একটা ফোন লাগাল। ‘স্যুইচঅফ’। এর আগেও কয়েকবার ফোন লাগিয়েছে আতিফ। একই কথা বেজে গেছে। তার ‘অ্যাকশানটা’র কী যে হল, খবর নেব তো, মোবাইল স্যুইচঅফ! তবে কি, নবী..... কি যেন একটা ভেবে মনে মনে ডুকরে উঠল আতিফ। হৃদয়ের তারে দুঃসংবাদের একটা ঘা পড়ল। বাইরেটা ইস্পাতের মতো শক্ত দেখালেও ভেতরটা ধসের মতো ভাঙতে লাগল। আতিফ আকাশের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকাল। বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের নয়াপাড়া সীমান্ত চৌকির সুউচ্চ তোরণের ওপর মায়ানমারের আকাশে একটা নীলরঙের তারা টিপটিপ করে জ্বলছে। তারাটার গায়ে সাদা ওড়নার মতো ফিনফিনে সাদা মেঘের পালক লেগে আছে। যেন ফিনফিনে মেঘটুকু বাঁধনহীনভাবে তারার নিচে ঝুলে আছে। আর সেই ঝাঁঝরি ফিনফিনে সাদা মেঘের বিত্তিফাঁক দিয়ে গলে পড়ছে তারাটা থেকে খসে পড়া নীল-সাদা আলো। আতিফ চোখ পুঁতে তারাটাকে দেখতে থাকল। তারা আর তার চোখের মাঝে ভবনার সরলরেখাটা ধীরে ধীরে মোটা হচ্ছে। আতিফের চোখ আকাশ থেকে নিচে নেমে আসতেই মূলফটকের কাছে দৃশ্যমান হল সাদ্দামের থিনথিনে অস্পষ্ট অবয়ব। কানে ভেসে এল দূর কোনো মসজিদ থেকে ফজরের আযানের সুর। আতিফের অন্তরটা ধিন করে উঠল। এ কি আনন্দ? নাকি, আনন্দকে আহ্বানের আরতি? খাড়া হয়ে উঠল আতিফ। আযান শুনে আযানের প্রত্যুত্তর দিতে লাগল মনে মনে। পাশের গাছগাছালি থেকে মিহি করে পাখির কিচিরমিচির আসছে। অন্ধকারের কালো দেহ ধীরে ধীরে হলুদ হয়ে উঠছে। ফ্যাকাসে হয়ে উঠছে রাত। রাতের পাঁজর ভেঙে সময়ের দরজায় টোকা দিচ্ছে দিন। সাদ্দাম এগিয়ে আসতেই হুড়মুড় করে পাতাবাহার গাছের আড়াল থেকে বেরিয়ে এল আতিফ। চোখে মুখে এক আকাশ উৎকণ্ঠা। হাজার হাজার প্রশ্ন। সাদ্দাম মুখের সম্মুখে আসতেই তার মুখ থেকে বেরিয়ে এল, ‘বোটটা পাওয়া গেল?’
‘থাম থাম, অত উতলা হচ্ছিস কেন? বলছি। সব বলছি।’ ফিসফিস করে বলল সাদ্দাম।
‘সব বলছি মানে! সব আবার কী!’ আতিফ ভ্রূ কুঁচকায়। মুখ ভেংচে বলে, ‘কথা তো একটাই, বোটটা পাওয়া গেল না পাওয়া গেল না। আর তো কোনো কথা নেই।’
‘আছে, আছে।’ হেঁয়ালি মারে সাদ্দাম।
‘আছে, তো বল। অত হেঁয়ালি না করে বল।’ রেগে ওঠে আতিফ।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>
নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা

ছবি: সংগৃহীত

অ্যন্টিগার পেস সহায়ক উইকেটে নতুন বলের বাড়তি সুবিধা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছিল বাংলাদেশ। দিনের প্রথম সেশনে দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সময় গড়াতেই বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় দুই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার মিকাইল লুইস ও আলিক অ্যাথানেজকে। জুটি গড়ে দুজনের ছুটতে থাকেন শতকের পথে। কিন্তু দুজনের কারও প্রত্যাশা পূরণ হতে দেয়নি বাংলাদেশ। দিনের শেষভাগে নার্ভাস নাইন্টিতে দুজনকে মাঠ ছাড়া করে প্রথম দিনের ইতি টানে বাংলাদেশ।

টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৫০ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিকে বৃষ্টি হানা দেয় ম্যাচে। বৃষ্টি থামার পর আলোক স্বল্পতায় ৮৪ ওভার হওয়ার পরই দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়াররা।

টস জিতে বোলিংয়ে নেমে মেডেন ওভারে শুরুটা ভালো করেন হাসান মাহমুদ। অন্যপ্রান্তে আরেক পেসার শরিফুল ইসলামও মেডেন ওভার নেন। উইকেটের দেখা না পেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার কার্লোস ব্রাথওয়েট ও লুইসকে বেশ কয়েকবার পরাস্ত করেন বাংলাদেশের দুই পেসার।

ইনিংসের অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আনা হয় তাসকিন আহমেদকে। এই পেসারই প্রথম ব্রেকথ্রু দেন দলকে। ১৪তম ওভারে তাসকিনের অফ স্টাম্পে পড়ে একটু ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ডিফেন্স করেছিলেন ব্রাথওয়েট। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানে পায়ে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেন। যদিও তৎক্ষণাৎ রিভিউ নেন ব্রাথওয়েট। তবে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়নি।

তিনে নেমে টিকতে পারেননি কেসি কার্টি। ডানহাতি ব্যাটারকেও ফিরিয়েছেন তাসকিন। উইকেটে আসার পর থেকেই তাড়াহুড়ো করছিলেন তিনি। তাসকিনের মিডল এবং লেগ স্টাম্পের লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করার চেষ্টায় লিডিং এজ হয়ে মিড অনে থাকা তাইজুল ইসলামকে ক্যাচ দিয়েছেন কার্টি।

২৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে পথ দেখান লুইস ও কেভম হজ। তবে হজ ২৫ রান করে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৫৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।

এরপর বাংলাদেশকে বেশ ভুগিয়েছে লুইস ও আথানজে জুটি। দুজনেই সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। তবে সম্ভাবনা জাগিয়েও কেউই মাইলফলক ছুঁতে পারেননি।

ইনিংসের ৭৫তম ওভারে মিরাজের বলে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে ভুল করেন লুইস। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় স্লিপে। ক্যাচ নিতে ভুল করেননি শাহাদাত হোসেন দিপু। নব্বইয়ের ঘরে ২৬ বল আটকে থেকে আউট হন লুইস। ফলে ভেঙে যায় ২২১ বলে ১৪০ রানের জুটি। ২১৮ বলে এক ছক্কা ও নয় চারে ৯৭ রান করেন এই ওপেনার।

এর কিছুক্ষণ পরই ফিরেছেন আথানজেও। তাইজুলের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি স্কুপের মতো খেলেছিলেন আথানজে। যদিও তেমন গতি না থাকায় তার ব্যাটে লেগে বল উপরে উঠে যায়। সহজ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক লিটন। দশটি চার ও একটি ছক্কায় ১৩০ বলে ৯০ রান আসে বাঁহাতি এই ব্যাটারের ব্যাটে। তিন রানের মধ্যে দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে লড়াইয়ে ফেরার সম্ভাবনা জাগায় বাংলাদেশ।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি