শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪২

নেই দেশের নাগরিক

‘পারলে তুমিই কিছু করতে পারবে, বাপ। খোদার দোহাই, একবার দেখ না, আমার বাপ-মা মরা মেয়েটি কোথায় আছে।’ সাদ্দামের পায়ের কাছে হুটরে পড়েন বৃদ্ধা। সাদ্দাম, আশস্ত করে বলে, ‘ফুপু, চোখের পানি মুছেন। আমি কালকের মধ্যেই সুমির খোঁজ নিচ্ছি।’ মাতব্বরের মতো দায়িত্ব নিয়ে বলল সাদ্দাম। যদিও সে জানে, এসব ফাঁকা বুলি ছাড়া কিছুই নয়। ফাঁপা বাঁশে ফুঁ দেওয়া মাত্র।

সুমি যাদের খপ্পরে পড়েছে, তাদের ডেরা থেকে স্বয়ং যমও তাকে উদ্ধার করে আনতে পারবে না। তার ঠিকানা এতক্ষণে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের কোন নিষিদ্ধপল্লী। এতক্ষণে হয়ত নেকড়ে পুরুষদের খপ্পরে পড়েও গেছে। সাদ্দাম, আর বেশি কিছু বলল না। বৃদ্ধাকে শান্তনা দিয়ে, ছঞ্চে ডিঙিয়ে সিঁথির মতো সরু গলিরাস্তায় এল। সাদ্দামকে দুশ্চিন্তার মেঘে আচ্ছন্ন হতে দেখে আতিফ জিজ্ঞেস করল, ‘কী ব্যাপার বল তো? আমি ঠিক ঠাহর করে উঠতে পারলাম না।’
‘এটা একটা বড় সমস্যা আতিফ। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ কোনোভাবেই পাচ্ছি নে।’
‘কী সমস্যা, সাদ্দাম?’
‘কিডন্যাপ।’
‘কিডন্যাপ! মানে, পাচার?’
‘হু।’ ঘাড় নড়ায় সাদ্দাম। বিড়বিড় করে বলে, ‘মানুষ পশুর থেকেও কত অধম হতে পারে একবার ভেবেছিস! মানুষ মানুষকে পণ্য করছে! মানুষের খাবার হচ্ছে মানুষ!’

‘আল্লাহ তো বলেইছেন, মানুষ যেমন সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ, ঠিক তেমনি মানুষ সৃষ্টির নিকৃষ্টও। তুই ভুলে যাচ্ছিস কেন, আল্লাহ কোনো পশু, গরু ছাগল ভেড়ার জন্যে জাহান্নাম বানাননি, তিনি মানুষ আর জিনের জন্যেই জাহান্নাম বানিয়েছেন।’ হাদিসের মশলা ঘাটল আতিফ। তারপর ফুঁ দিয়ে বুঁদবুঁদি ছেড়ে দেওয়ার মতো করে বলল, ‘এ তো দুনিয়ার আদিম সমস্যা। সে বুদ্ধের আমলেও ছিল, নবীজীর আমলেও ছিল।’
‘কিন্তু, এভাবে আমাদের এই রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির থেকে শিশু আর নারী পাচার হতে থাকলে তো একদিন পুরো শিবিরগুলো শিশু আর নারীহীন হয়ে যাবে! আমাদের অস্তিত্বই তো বিপন্ন হয়ে যাবে! এর থেকে পরিত্রাণের উপায় আমাদের খুঁজতেই হবে।’ মাথা খুঁটে সাদ্দাম। দুশ্চিন্তা এমন করে তার শরীরের রগরক্তে কটকট করে কাটছে, যে এই হিমশীতল ঠান্ডা রাতেও ঘামে ভিজে কাদা হয়ে যাচ্ছে সাদ্দাম! কপালের চুল কপালের ঘামে লেপ্টে যাচ্ছে! জুলপি দিয়ে চোয়াচ্ছে চুলচেপা ঘাম।
‘তুই এখানে মাঝেমধ্যে সচেতনতা-শিবির কর। যাতে করে মেয়েরা কারও টোপে না পড়ে।’ পরামর্শ দিল আতিফ।
‘সচেতনতা-শিবির? সেসব অনেকবার করেছি। এমনকি
প্রত্যেক মহল্লায় একটা করে ‘নজরদারি টিম’ও করে দিয়েছি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। আসল ব্যাপার হল, ক্ষিদে, পেটের টান। পেটের টান যে সব থেকে বড় টান। কোথাকার লোক এসে রুটিরুজির টোপ দিয়ে দিচ্ছে, আর খপ করে সে টোপে পড়ে যাচ্ছে মেয়েরা! একবার খোঁজখবর নিয়েও দেখছে না, যে লোকগুলো যা বলছে তা সত্যি না ভুয়ো!’
‘এই চক্রে নিশ্চয় লোকাল লোক আছে। লোকাল লোক ছাড়া একাজ সম্ভব নয়।’
‘সে তো আছেই। ওই খবিষগুলোকে খুঁজে বের করে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিতে হবে। শালোরা মানুষ হয়ে মানুষ বিক্কিরি করে!’ তেতে ওঠে সাদ্দাম।

‘তুই কথাটা ঠিকই বলেছিস। এদিকটায় বেশি করে জোর দিতে হবে। আমাদের মা বোনেরা না থাকলে আমাদের প্রজন্ম টিকে থাকবে কী করে?’
‘আতিফ, তুই আর জে এফ কে বল, এদিকটায় কিছু ফান্ড ব্যয় করতে। মানুষচোরদের একটা জুতসই ব্যবস্থা করতেই হবে।’ দাঁত খিঁচল সাদ্দাম।
‘আমি এ ব্যাপারে কথা বলব। ব্যাপারটা নিয়ে ভাবতেই হবে। একটা নতুন কোন প্রজেক্ট বানাতে হবে।’
‘মানুষই যদি না থাকে তাহলে আর নতুন দেশ বানিয়ে কী লাভ, তাই না?’
‘সে তো ঠিকই।’ মাথা কাত করল আতিফ। প্রসঙ্গ পাল্টে বলল, ‘তাহলে এখন কী করবি, সুমি তো হাতছাড়া।’
‘দেখি, মেজর আসলামকে অন্য কোনভাবে পটানো যায় কি না।’ মাথার ঘেলু খুঁটে সাদ্দাম।
‘যা করবি, তাড়াতাড়ি কর। ভোর হতে আর খুব দেরি নেই।’ তাড়া দেয় আতিফ।

‘আয়।’ বলেই গডগড করে হাঁটা ধরে সাদ্দাম। আতিফ কিছু বলে না। ঘাড়ের ব্যাগটা পিঠে ঝুলিয়ে সেও সাদ্দামের পিছু নেয়। রাত তখন শেষপ্রহরের বাঁশি বাজাচ্ছে। ফেঁসোর মতো ফিনফিন করে ছড়িয়ে থাকা মেঘের আড়াল দিয়ে উঁকিঝুঁকি মারছে নক্ষত্ররাজি। কাঁধে রাত চাপিয়ে ছোপ ছোপ অন্ধকার ধানের শীষ বেয়ে নেমে যাচ্ছে পাতায়। ঘাসের ডগায় ঘুমোচ্ছে বৃষ্টির ফোটা। ঝিঁঝিঁর ডাকে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে চরাচর। যেন দিগন্ত জুড়ে ঘুমের বিছানা পেড়ে নিজে হাঁটু ভাঁজ করে ঘুমোচ্ছে রাত। মাথার ওপরের আকাশ যেন রাতের চোখ। জেগে থাকা চোখ। মাটি, ধানখেত, চরাচর রাতের শরীর আর আকাশ যেন তার জেগে থাকা চোখ। আতিফ, একবার আকাশের ঈশান কোণের দিকে তাকাল। একটা তারা আকাশের বুক থেকে খসে পড়ল নিচে। আতিফ ভাবল, আল্লাহ শয়তানকে ঢিল ছুড়ে মারলেন। আতিফ মনে মনে ‘আয়তাল কুরশি’ পাঠ করল। মনে মনে বলল, আহাঃ, আমাদেরও যদি তারার মতো এমন ঢিল থাকত, তাহলে আকাশ থেকে ছুড়ে ছুড়ে মারতাম মায়ানমার সেনাদের গায়ে। তাদের সেনাক্যাম্পে। আলপথ শেষ করে একটা ডাঙা রাস্তায় উঠল দুজনে। রাস্তাটা আগের মোড়াম রাস্তার থেকেও সরু। আতিফ পেছন থেকে আচপাচ করে বলল, ‘নয়াপাড়া চৌকিটা আর কতদূর?’

‘এই সামনেই। মোড়াম রাস্তাটা শেষ হলেই, বিজিবি’র সীমান্তকরিডর। সংরক্ষিত জোন। বর্ডারের ঝাঁ চকচকে পিচ রাস্তা। আর দেড়মাইলের মতো পথ বাকি।’ বলল সাদ্দাম। রাত ক্রমশ পাতলা হতে শুরু করে দিয়েছে। একটা বাবলা গাছের তলা দিয়ে মোড়াম রাস্তাটা বেঁকে চলে গেছে পুব দিকে। আকাশের নিচের এই ফালি রাস্তাটা সিঁথিতে সিঁদুর দেওয়ার মতো চিপসে আছে। দুধারে ভাঁট-পিটুলির জঙ্গল। নয়ানজলির নিচে সবুজ ধানখেত। রাতের হিম গাছের পাতায় জড়সড় হয়ে জমে আছে। টসটস করে তাকাচ্ছে বিন্দু বিন্দু হিম অথবা বৃষ্টির ফোটা। সাদ্দাম ঠিকই বলেছে, মোড়াম রাস্তার মুখ থেকে এই জোনটা দেড়মাইলের মতোই হবে। একটা সুউচ্চ কারিকুরি করা ফটক থেকে কিছুটা দূরের পাতাবাহার গাছের আড়ালে এসে দাঁড়াল সাদ্দামরা। সামনে বি জি বি’র লোগো আঁকা একটা বিশাল তোরণ। ফটকে রাইফেল তাক করে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কয়েকজন অতন্দ্রপ্রহরী। সাদ্দাম আতিফকে তার স্বয়ংক্রিয় এস আই জি প্রো সেমি অটোমেটিক পিস্তল এবং দামাস্ক ভূজালিটা রাখতে দিয়ে বলল, ‘এগুলো লুকিয়ে রাখ। আমি ভেতর থেকে ঘুরে আসি। এসব সঙ্গে করে নিয়ে গেলে, ধরা পড়ে যাব। তখন আর ফিরে আসার জো থাকবে না। হয় গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যাব অথবা আজীবন জেলে থেকে থেকে পচব।’
‘ঠিক আছে। তাড়াতাড়ি ফিরে আসিস।’ সাদ্দামের দিকে ভ্যালভ্যাল করে চোখ বের করে বলল আতিফ।
‘সে তো চেষ্টা করবই। তবে কিছুটা দেরি হবেই। মেজর মহম্মদ আসলামের কোয়ার্টারটা একেবারে পেছনে। নদীর ধার লাগোয়া।’
‘নদীটা কতদূর?’ নদীর কথা শুনেই উথলে ওঠে আতিফ।
‘এই তো, সামনেই। বিজিবি’র এই সীমান্তচৌকির পরেই তো।’
‘তার মানে আমরা নদীর কাছে চলে এসেছি?’
‘হ্যাঁ, আর মিনিট কুঁড়ি পথ হাঁটলেই তো নদীর পানি দেখা যাবে।’
‘তাহলে তো কাছেই।’ মুখটা জিরাফের মতো ওপরে তুলে একবার পুবদিকে তাকাল আতিফ। সাদ্দাম আতিফের হাবভাব দেখে বলল, ‘অত মুখ তুলে লাভ নেই। এখান থেকে দেখা যাবে না। তবে নদীর হাওয়া টের পাওয়া যাবে।’ প্যান্টের পকেট থেকে সবুজরঙের একটা কার্ড বের করতে করতে বলল সাদ্দাম।
‘ওটা কী?’ জানতে চায়ল আতিফ।
‘গেটপাস।’
‘কীসের গেটপাস?’
‘বিজিবি’র গেটপাস। কার্ডটা মেজর মহম্মদ আসলামই পাইয়ে দিয়েছেন। আমাকে মাঝেমধ্যেই তো হ্যান ত্যান নিয়ে যেতে হয়। মেজর আসলামকে হাতে রাখাটা রোহিঙ্গাদের জন্যে খুবই প্রয়োজন।’
‘যেভাবেই হোক, একটা স্পিডবোট কিন্তু ম্যানেজ করতে হবে।’ কথাটা আরও একবার মনে করিয়ে দেয় আতিফ।
‘দেখি, কী করতে পারি।’

মূলফটকের দিকে পা বাড়াল সাদ্দাম। আতিফ পাতাবাহার গাছের আড়াল থেকে লুকিয়ে দেখতে থাকল। সাদ্দাম দুই হাত ওপরে তুলে খাড়া করে ফটকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ওপরে তোলা ডানহাতের আঙুলে খাড়া করে ধরা আছে সবুজ রঙের গেটপাসটি। থপ থপ করে হেঁটে গিয়ে মূল দরজার সামনে দাঁড়াল সাদ্দাম। দুজন ফটক প্রহরী দাঁড় করালেন তাকে। আতিফ লক্ষ্য করল, প্রহরীদের সঙ্গে সাদ্দামের ফিসফিস করে কিছু কথাবার্তা হল। তারপর সাদ্দাম তার হাতের ‘গেটপাসটা’ একজন প্রহরী চেক করলেন। পাশের ওপর প্রহরী ঠোঁটে হাসি মাখিয়ে কি যেন একটা বললেন। তারপর সাদ্দাম মিচকি হেসে ভেতরে ঢুকে গেল। যাক, গেটের বাঁধা তো পেরোল! বুক থেকে একটা পাথর নেমে গেল আতিফের। সে এবার ল্যাটা মেরে পাথরের একটা চাইএর ওপর বসল। চরাচরে ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। পুব দিগন্ত থেকে লেপ্টে থাকা অন্ধকার একটু একটু করে মুছতে শুরু করে দিয়েছে। রঙের আগের রঙ দিয়ে আকাশ দখল করতে শুরু করে দিয়েছে ভোরের তুলি। প্রায়ই থেমে গেছে ঝিঁঝিঁপোকার ডাক। আর একটু পরেই মসজিদ থেকে ভেসে আসবে ফজরের আযান। বাঁশঝাড় থেকে পাখির কিচিরমিচির। আতিফের মাথায় ঠকঠক করে কড়া নাড়ল, নাফনদীতে ভেসে থাকা তাদের নৌকোটা। সন্ধ্যার ঝড় থেমে, রাতের ঘোমটা সরে এখন দিনের আলো ফোটার তোড়জোড় চলছে। তার আব্বা-মা, ভাই-ভাবীদের কথা মনে পড়তেই, বৃষ্টিতে জুবুথুবু কাকপাখির কথা মনে পড়ছে। আব্বারাও নিশ্চয় ওভাবে ভিজে সারারাত থত্থর করে কেঁপেছে! হয়ত এখন অনেকেই জ্বরে কাবু হয়ে হলহল করে হালছে! হে আল্লাহ, ওদের জানে সবুর দাও। প্রকৃতির ঝড়ঝঞ্ঝা সহ্য করার শক্তি দান কর।

আতিফ পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে নবীকে একটা ফোন লাগাল। ‘স্যুইচঅফ’। এর আগেও কয়েকবার ফোন লাগিয়েছে আতিফ। একই কথা বেজে গেছে। তার ‘অ্যাকশানটা’র কী যে হল, খবর নেব তো, মোবাইল স্যুইচঅফ! তবে কি, নবী..... কি যেন একটা ভেবে মনে মনে ডুকরে উঠল আতিফ। হৃদয়ের তারে দুঃসংবাদের একটা ঘা পড়ল। বাইরেটা ইস্পাতের মতো শক্ত দেখালেও ভেতরটা ধসের মতো ভাঙতে লাগল। আতিফ আকাশের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকাল। বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের নয়াপাড়া সীমান্ত চৌকির সুউচ্চ তোরণের ওপর মায়ানমারের আকাশে একটা নীলরঙের তারা টিপটিপ করে জ্বলছে। তারাটার গায়ে সাদা ওড়নার মতো ফিনফিনে সাদা মেঘের পালক লেগে আছে। যেন ফিনফিনে মেঘটুকু বাঁধনহীনভাবে তারার নিচে ঝুলে আছে। আর সেই ঝাঁঝরি ফিনফিনে সাদা মেঘের বিত্তিফাঁক দিয়ে গলে পড়ছে তারাটা থেকে খসে পড়া নীল-সাদা আলো। আতিফ চোখ পুঁতে তারাটাকে দেখতে থাকল। তারা আর তার চোখের মাঝে ভবনার সরলরেখাটা ধীরে ধীরে মোটা হচ্ছে। আতিফের চোখ আকাশ থেকে নিচে নেমে আসতেই মূলফটকের কাছে দৃশ্যমান হল সাদ্দামের থিনথিনে অস্পষ্ট অবয়ব। কানে ভেসে এল দূর কোনো মসজিদ থেকে ফজরের আযানের সুর। আতিফের অন্তরটা ধিন করে উঠল। এ কি আনন্দ? নাকি, আনন্দকে আহ্বানের আরতি? খাড়া হয়ে উঠল আতিফ। আযান শুনে আযানের প্রত্যুত্তর দিতে লাগল মনে মনে। পাশের গাছগাছালি থেকে মিহি করে পাখির কিচিরমিচির আসছে। অন্ধকারের কালো দেহ ধীরে ধীরে হলুদ হয়ে উঠছে। ফ্যাকাসে হয়ে উঠছে রাত। রাতের পাঁজর ভেঙে সময়ের দরজায় টোকা দিচ্ছে দিন। সাদ্দাম এগিয়ে আসতেই হুড়মুড় করে পাতাবাহার গাছের আড়াল থেকে বেরিয়ে এল আতিফ। চোখে মুখে এক আকাশ উৎকণ্ঠা। হাজার হাজার প্রশ্ন। সাদ্দাম মুখের সম্মুখে আসতেই তার মুখ থেকে বেরিয়ে এল, ‘বোটটা পাওয়া গেল?’
‘থাম থাম, অত উতলা হচ্ছিস কেন? বলছি। সব বলছি।’ ফিসফিস করে বলল সাদ্দাম।
‘সব বলছি মানে! সব আবার কী!’ আতিফ ভ্রূ কুঁচকায়। মুখ ভেংচে বলে, ‘কথা তো একটাই, বোটটা পাওয়া গেল না পাওয়া গেল না। আর তো কোনো কথা নেই।’
‘আছে, আছে।’ হেঁয়ালি মারে সাদ্দাম।
‘আছে, তো বল। অত হেঁয়ালি না করে বল।’ রেগে ওঠে আতিফ।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>
নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী

ছবিঃ সংগৃহীত

যানজটে আটকে থাকা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের গাড়ি বহরকে সাইড করে দিতে গিয়ে বাস চাপায় নিহত হয়েছেন জসিম উদ্দিন (৫৩) নামে জামায়াতের একজন কর্মী।

নিহত জসিম উদ্দিন উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত আলী আশ্রাফ মোল্লার ছেলে। তার স্ত্রী ও শিশুসহ তিন ছেলে সন্তান রয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমাই উপজেলার সৈয়দপুর এলাকার ওয়ালটন শো-রুমের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা মারুপ সিরাজী বলেন, লক্ষীপুর যাওয়ার পথে জামায়াত আমিরের বহরের ৪টি গাড়ি বাগমারা উত্তরবাজারে যানজটে আটকা পড়লে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ তিশা পরিবহনের ঢাকামুখী একটি দ্রুতগতির বাস ধাক্কা দিলে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দীনের মাথা থেতলে যায়। রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম মুন্না বলেন, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হলেও বাগমারা বাজার অংশে অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে দুই লেন করা হয়েছে।সে কারণে ২৪ ঘণ্টাই সড়কের এই অংশে যানজট লেগে থাকে। যানজট নিরসনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করলে আজ হয়তো এমন মৃত্যু হতো না।

লালমাই উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসেন বলেন, আমিরে জামায়াত লক্ষীপুর যাওয়ার পথে বাগমারা উত্তর বাজার বালুর মাঠে পথসভা করেন। পথসভাস্থলে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে তাঁর গাড়ি বহর যানজটে আটকা পড়ে।

তখন আমিসহ সংগঠনের ১৫/২০ জন কর্মী ট্রাফিকের দায়িত্ব শুরু করি। আমরা আমিরে জামায়াতকে নিয়ে পথসভায় চলে যাওয়ার পর জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দিন বাস চাপায় মারা যান।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, বাগমারা উত্তরবাজারে বাস চাপায় জসিম উদ্দিন নামের একজন মারা গেছেন। মরদেহ নিহতের বাড়িতে রয়েছে। খবর পেয়েই নিহতের বাড়িতে গিয়েছি।

 

Header Ad
Header Ad

সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  

ছবিঃ সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর বাজারে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। পুলিশের আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং দলীয় অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল রায়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম মজনু এবং যুবদল নেতা শহিদ মিয়ার লোকজনের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপি ও যুবদলের অস্থায়ী অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে মধ্যনগর বাজার এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনার আশঙ্কা এবং সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়ার আগে পর্যন্ত বাজার এবং আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধ করা হয়।

মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সজীব রহমান বলেন, ‘মধ্যনগর যুবদল নেতা শহিদ মিয়া ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাঈযুম মজনুর লোকজনের মধ্যে পুলিশের আসামি ধরা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে উভয় পক্ষের লোকজন বিএনপি ও যুবদলের অফিস ভাঙচুর করে। এতে বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাজার ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। বিশৃঙ্খল অবস্থা এড়াতে বাজারে পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাজার ও আশপাশের এলাকায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম
ইসরায়েলের তেল আবিবে তিনটি বাসে বিস্ফোরণ
বিয়ের ছবি ভাইরাল, বললেন শুভকামনা জানানোর জন্য ধন্যবাদ