শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৯

নেই দেশের নাগরিক

‘নাহ, এখন গাঢ় অন্ধকার তো, তাই আর কি।’ আলগোছে বলল সাদ্দাম।
‘জীবনের অন্ধকারের থেকে কি ঘরের অন্ধকার বেশি গাঢ়? বেশি ভয়ানক?’
‘না, তা নয়।’ হাত কচলায় সাদ্দাম।
‘তবে?’ গলায় বাজ পড়ে আতিফের। তারপর খ্যাঁকানি দিয়ে বলে ওঠে, ‘বালিশে মাথা রেখে ঘুমোনোর জন্যে আমাদের জীবন নয়? আমাদের জীবন জ্বালানির মতো। সুযোগ পেলেই জ্বলে উঠতে হবে।’

চুপ মেরে যায় সাদ্দাম। বুঝতে পারে, আতিফ এখন আবেগে এসব বকছে। নিজের পরিবার তো। নিজের গর্ভধারিণী মা, জন্মদাতা বাপ, সহোদর ভাই যখন ব্যাপারটার সাথে জড়িয়ে তখন আবেগ থাকবেই। থাকাটাই স্বাভাবিক। সেও তো রক্ত-মাংসের মানুষ। সে তো আল্লাহর নুরের দ্বারা তৈরি কোন ফেরেশতা নয়। সাদ্দাম ভাবে, আতিফকে আর রাগানো ঠিক হবে না। সে যা বলছে তাইই করতে হবে। একবার পথে বেরোলে বুঝতে পারবে, ঠেলা কাকে বলে। ‘তিড়িং’ করে খাটিয়া থেকে নামল সাদ্দাম। বলল, ‘ঠিক আছে, চল, এখনই চল, দেখি কী করতে পারি।’
‘তুই ফোনে ফোনে বোট’টার ব্যবস্থা করতে পারিস কি না দেখ।’
‘এত রাতে কাউকে ফোনে পাব না।’

‘আগে ফোনটা করেই দেখ না ক্যানে।’ কণ্ঠ চড়াল আতিফ। প্লাস্টিকের মোড়কে জড়ানো মোবাইলটা মোড়ক থেকে বের করে কোথাও ফোন লাগাল সাদ্দাম। কানে কিছুক্ষণ ঠেসে ধরে থাকল। ‘সুইচঅফ’। কলটা কেটে দিয়ে অন্য একজায়গায় ডায়াল করল। নাহ! এটাও সুইচঅফ! মুখটা বাংলা পাঁচের মতো করে বলল, ‘নাহ, কাউকেই পাচ্ছি নে! সব ‘সুইচঅফ’।’
‘কোনো বিকল্প পথ?’
‘বিকল্প পথ’! আতিফের আবদার শুনে খচে উঠল সাদ্দাম। মনে বিড়বিড় কাটল, হ্যাঁ, হ্যাঁ, আমি তো একেবারে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট, যে সব পথ আমার জন্যে খোলা? এটা কি আমার মগের মুলুক না বাপের জমিদারি? যে ইচ্ছে করলেই সব কাজ আপনা আপনি হয়ে যাবে? আরে বাবা, আমি হলেম কি একজন ঘরপোড়া উদ্বাস্তু। পরের মুলুকে কোনোক্রমে ঠাঁই নিয়েছি। আমি কি এখানকার জায়গির নিয়েছি? আরে, কাজের হাল্কা কঠিনও তো আছে। সম্ভব অসম্ভব আছে। যেটা আমার দ্বারা সম্ভব নয়, সেটাই আমাকে জোর করে করতে বলছে! বিজিবি’র ঠ্যালা তো খায়নি? একবার খেলে টের পেত, ঠাপের নাম বাবাজী কাকে বলে।

‘কোনো পথ নেই।’ কথায় গরম বাষ্পের ঠেলা দিয়ে বলল সাদ্দাম।
‘তুই কিন্তু রেগে যাচ্ছিস, সাদ্দাম।’ সাদ্দামের কথার ঝাঁঝ শুনে বলল আতিফ।
‘আরে না না, রাগব কেন? এতে রাগারই বা কী আছে। তোর কাজ মানেই তো আমার কাজ। তোর পরিবার মানেই তো আমার পরিবার।’ রাগটাকে ধামা চাপা দিয়ে ‘আমি তো তোরই লোক’ গোছের কথার প্রলাপ করল সাদ্দাম। সে পরনে ছাই রঙের একটা ফুলপ্যান্ট পরতে পরতে আরও বলল, ‘নয়াপাড়া চৌকি হয়ে যেতে হবে। ওখানে বাংলাদেশ নেভির এক মেজর আমার খুউব ঘনিষ্ট। তাকে পটিয়ে পাটিয়ে একটা স্পিডবোট ম্যানেজ করতে হবে। তবে এজন্যে আমাদের একটা পাপ কাজ করতে হবে।’

‘পাপ কাজ! মানে?’ চোখ কপালে আতিফের।
‘মানে, কাজটা খুবই সহজ। আবার কঠিনও।’
‘হেঁয়ালি মারিস ন্যা। খুলে বল।’
‘হেঁয়ালি আর কী মারব। যেটা বাস্তব সেটা বলছি।’
‘কাজটা কী?’ উতসুক হয়ে ওঠে আতিফ। ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় খাড়া হয়ে ওঠে তার।
‘একটা মেয়ে জোগাড় করতে হবে।’ আমতা আমতা করে বলল সাদ্দাম।
‘মেয়ে! মেয়ে কী হবে!’ আকাশ থেকে পড়ল আতিফ।
‘মেয়ে আবার কী হয়। মেয়ে যা কাজে লাগে তাই।’ আলগোছে বলল সাদ্দাম।
‘তার মানে তুই বলতে চায়ছিস ওই নোংড়া কাজ। ছিঃ! ছিঃ সাদ্দাম! ছিঃ!’ কিছু একটা আন্দাজ করে ছিছি করে ওঠে আতিফ।
‘দেখ, যুদ্ধে মেয়েদের শরীরও একটা অস্ত্র। আর এটা কোন যুগে ছিল না, বল?’
‘ছলনা কপটতা করে যুদ্ধ জয় হতে পারে, কিন্তু মানুষের মন জয় করা যায় না।’
‘মানুষ থাকলেই তো মানুষের মন জয় করবি? যাদের কথা বলছি, তারা আর মানুষ নেই। ক্ষমতা আর টাকায় অমানুষ হয়ে গেছেন।’

‘তাই বলে এক মায়ের শরীরের বিনিময়ে আরেক মায়ের শরীর উদ্ধার! অসম্ভব। এ হারাম কাজ। এ আমি হারগিজ মেনে নেব না।’ কণ্ঠ বাজিয়ে বলল আতিফ। তারপর ফিসফিস করে বলল, ‘শরীরের বিনিময়ে শরীর! এক নারীর বিনিময়ে আরেক নারী উদ্ধার! ছিঃ!’
‘এ ছাড়া কোনো উপায় নেই। ওই মেজর নারীর শরীর অথবা টাকার থলে ছাড়া কাউকে ভিড়তে দেবেন না। এই রাতে একমাত্র উনিই ভরসা ছিলেন। সেটা যদি বাতিল করি, তাহলে সাঁতার কেটে নদী পেরোতে হবে। সেটাও সম্ভব নয়।’ হাত-পা ছেড়ে নিজের কথা নিজেই ঢিলা দিল সাদ্দাম। আতিফ থপাস করে অন্তরফাটা টুলটায় বসল। এবার টুলটা একটু জোরে ‘ক্যাঁচ’ করে কেঁদে উঠল। আতিফের মনটাও কেঁদে উঠছে। তার অন্তরও যে ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। যন্ত্রণার পেরেক বিষ মেখে অনবরত হাঙছে হৃদয়। যে হৃদয়ে এখন ঠোকর খাচ্ছে পরিবার পরিজন ফিরে পাওয়ার আকুতি। হৃদয়ের দেওয়ালে, ঠক্কর খাচ্ছে সাদ্দামের নোংড়া প্ল্যানিংটা। চোখ ঘোলা হয়ে আসছে তার। খিজিবিজি করছে মাথা। নারীর শরীরকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে তার কুন্ঠাবোধ হচ্ছে। সে ভালই জানে, নারীর শরীর যুগযুগ ধরে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। কিন্তু এ যে কাবিরা(বড়) গুনাহর কাজ। সারাজীবন জাহান্নামে থাকতে হবে। কিন্তু স্পিডবোট ছাড়া তো এত অল্প সময়ে নাফ নদী হন্যতন্য করে আব্বাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। এই দুঃসময়ে স্পিডবোটটাও যে খুবই দরকার। দোলাচলে পড়ে গেল আতিফ। মনের চিন্তনে দোটানার মন্থনে একটু একটু করে উঠে আসে আপনজনের টান। মন গাহায়, এই গণনিধনে কত মেয়েই তো ধর্ষিতা হয়ে মারা গেল, কত নারীর যৌবন নেকড়ের মতো ছিঁড়ে খেল বার্মিজ সেনারা। কত শরীর কত মানুষের খাবার হল। সেখানে আরও একটা মেয়ে না হয় আরও ছ ছটা মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্যে তার শরীরকে একটা পুরুষের কাছে কিছুক্ষণের ভোগের জন্যে বন্ধকই না হয় দিল। এতটুকু একটা ভিটেমাটির জন্যে কত তাজা প্রাণ ঝরে যাচ্ছে। আর এ তো শরীরের কিছুটা এঁটো যৌবন কিছুক্ষণের জন্যে চেটেপুটে খেতে দেওয়া। কিছুটা ইজ্জত যাচ্ছে, প্রাণ তো আর যাচ্ছে না? আর সে এঁটো ইজ্জত কেউ তো আর বাহির থেকে দেখতে পাচ্ছে না? তাছাড়া অনেক মেয়েই তো আছে যারা টাকার বিনিময়ে ইজ্জত বিক্রি করে। সে আমার আপত্তি থাকলেও করবে, আপত্তি না থাকলেও করবে। রক্তের টানের কাছে ধর্মের টান আলগা হয়ে আসছে আতিফের। পাপবোধের জায়গাটা একটু একটু করে ঢিলা হয়ে আসছে। যে হৃদয়ে এতদিন পুণ্যের চাষ করে এসেছে, সেই হৃদয়েই বপন করছে পাপ। ঘাড় থেকে নিচের দিকে মাথা ঝুলিয়ে ফিস করে বলল, ‘এত রাতে মেয়ে কোথায় পাবি?’

এই তো! বগা এবার ঠিক লাইনে ভিড়েছে। যে জোয়াল কাঁধে দিয়েছি তাতে না ভিড়ে উপায় আছে? মনে মনে বলল সাদ্দাম। তারপর চোখ উল্টিয়ে সাদ্দাম বলল, ‘সে তোকে ভাবতে হবে না। এই শিবিরে ওসব গাঢ়ি গাঢ়ি। সব খুইখুই করে বেড়াচ্ছে। একটা টোপ দিলেই হল। খপ করে বড়শিতে আটকে যাবে।’
‘এই শিবিরে!’ চোখে বিস্ময় আতিফের।
‘হ্যাঁ, এই শিবিরে। এই নয়াপাড়া রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু শিবিরে।’
‘আমাদের ভিটেমাটি ছাড়া মেয়েরা এসব কুকাজ করছে!’
‘কেন করবে না? পেট তো সবারই আছে নাকি? এখানে শরীরের খিদের থেকে পেটের খিদে মারাত্মক। এরা শরীরের খিদে বেঁচে পেটের খিদে মেটায়। ইজ্জত বিক্রি করে পেটের খোরাক জোগায়। আরে, শরীরের জানটাকে তো বাঁচিয়ে রাখতে হবে নাকি? জান না থাকলে, আর ইজ্জত রেখে কী লাভ। পেট বাঁচলেই তো ইজ্জত বাঁচবে?’
‘খদ্দের কারা?’ উৎসাহ বাড়তে থাকে আতিফের।
‘আমরাই। এই শিবিরে থাকা মানুষরাই।’
‘মানে, আমাদের রোহিঙ্গা পুরুষরা?’
‘হ্যাঁ, তবে শুধু রোহিঙ্গারা একা নয়, বাংলাদেশিরাও আছেন।’
‘রুজগার কেমন হয়?’ গোয়েন্দার মতো প্রশ্ন করে আতিফ।
‘যার যেমন ডিমান্ড, তার তেমন। গতর দেখে আয়।’
‘এই মেয়েদের সংখ্যাটা কেমন?’
‘তা না না করেও শ-খানেক তো হবেই। আর ভেতরে ভেতরে আরও কত আছে কে জানে। কেন তোর অত আগ্রহ কেন? এক্ষুনি যে আমাকে ছিছিক্কারি করছিলি?’

সাদ্দামের কথার কোনো উত্তর দেয় না আতিফ। সে সাদ্দামের কথায় অন্য এক অংকের মারপ্যাঁচে পড়ে যায়। এক অন্য হিসেব তার মাথাটাকে নাড়িয়ে দিচ্ছে। কুরে কুরে খাচ্ছে তার হৃদয়। তার দেশের মেয়েদের ইজ্জত বাঁচানোর জন্যে নিজের দেশ ছেড়ে এ দেশে পালিয়ে এসে, পেটের তাগিদে সেই ইজ্জতই বিক্রি করতে হচ্ছে! এ তো বিড়ালের হাত থেকে বাঁচতে বাঘের খপ্পরে পড়া! এ জাতি তো নিজের পাপের ভারেই ধ্বংস হয়ে যাবে! ওই জন্যেই মনে হয় আল্লাহ, এত ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় দিলেন। এ তো এক ধরনের আল্লাহর গজবই। আর আমাদের জাতভাইয়েরাও হয়েছে এক একটা নরপিশাচ। শয়তানের বিছন। এত ঠেলা খেয়েও মনের ভেতরে পুষে রাখা পশুটাকে মেরে ফেলতে পারছে না! পাশবিক হৃদয় নিয়ে কী দরকার ছিল নদী পেরিয়ে এদেশে আসা? ওদেশে গুলি খেয়ে মরলেই তো পারত? নদী পেরিয়ে আসার সময় নৌকো উল্টে ডুবে মরে যায়নি কেন? মাঝ নদীতে কেন নেমে আসেনি আল্লাহর গযব? এসব খবিষের দল কেন যে এখানে এসে জায়গা দখল করে বসে আছে! ভেতরে রাগে ক্ষোভে টগবগ করে ফুটতে থাকে আতিফ। তার রগ-রক্ত তীর হয়ে বেরিয়ে আসছে। ইটভাটার তপ্ত চিমনির মতো গনগন করছে শিরা-ধমনি। চোখ মুখ দিয়ে গলগল করে বেরিয়ে আসছে সে আগুনের গরম ধোঁয়া। এবার ‘ভক’ করে একটা লেলিহান শীখা বেরিয়ে এল, ‘এই খদ্দেরগুলোকে নজরে রাখ, সব শালাকটাকে জবেহ করব। এইসব কাফেরদের আগে জবেহ না করতে পারলে কীসের জেহাদ? কীসের মুজাহিদ? শালোরা মদ্দা হনুর মতো নিজের স্বজাতিকেই খেয়ে নিচ্ছে! এ তো নিজের গায়ে নিজের থুথু ফেলা! ছিঃ!’ ঘৃণায় গা হাংলিয়ে ওঠে আতিফের। পাশের তাক’এ রাখা জগ থেকে ঢকঢক করে জল ঢালে গলায়। গলাটা বাঁশের চাঁচির মতো শুকিয়ে গেছে। জল পান করার পর ‘ঠক’ করে জগটা যেখানে ছিল সেখানে রেখে দিল। বাঁশের চাটাইয়ের ঘুপসি ঘর। ঘর না বলে চট-চাটাইয়ের ছাউনি বলায় ভালো। মাথার ওপরে বাঁশের ডাপের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্টে বাঁধা কালো রঙের একটা ত্রিপল। পশ্চিম দিকের একটা দেওয়ালে কাঠ দিয়ে বানানো দেড় হাত লম্বা দুটো তাক। নিচের তাকে কমলা রঙের মুখ চ্যাপ্টা একটা জলের জগ, একটা স্টেনলেসস্টিলের গিলাস আর কয়েকটা বাসনপত্তর। আর ওপরের তাকে থাক থাক করে সাজানো কয়েকটা বই। সব ওপরে রেহেলের ওপর যত্ন করে শুইয়ে রাখা একটা কোরআনশরীফ। পুবদিকের দেয়াল হেলে টাঙ্গানো একটা টার। তাতে ঝুলছে কিছু পোশাক আশাক। সাদ্দামের ‘উঠ বললে চট বগলে’র সংসার। কক্সবাজারেও সাদ্দামের একটা আস্তানা আছে। সেখানেও সে প্রায়শই ঘাঁটি গেঁড়ে থাকে। আর জে এফ’এর কাজে তাকে কখনো কক্সবাজার কখনও এই নয়াপাড়ায় রাত কাটাতে হয়। সাদ্দামের ‘মানুষকে মগজ ধোলাই করার’ টেকনিক এবং বুদ্ধি প্রখর। সে এই অল্প সময়েই এই চত্বরের প্রশাসনের অনেককে হাত করে ফেলেছে। কাকে কোন টোপ দিলে খাবে, তা তার ভালো ভাবেই জানা। সেভাবে চাড় তৈরিতেও সে সিদ্ধহস্ত। এই এলাকার সব লটঘটের খবর রাখে সে। এই জোনে আর জে এফ’এর সব ফন্দিফেউর’এ তার মগজ থাকে। সাদ্দাম আর জে এফ’এর একটা শক্তিশালী হ্যান্ড। তার যখন জন্ম হয়, তখন ইরাক দেশে সাদ্দাম হুসেনের বিশাল দাপোট। সাবেক রাষ্ট্রপতি সাদ্দাম হুসেন তখন বিশ্বজুড়ে মুসলিম দুনিয়ায় একটা বীরত্বের নাম। ফাতাংজার এই সবকত হুসেন তার সদ্য জন্মানো তৃতীয় পুত্রের নাম রাখলেন ‘সাদ্দাম হুসেন।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>
নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

Header Ad
Header Ad

খিলগাঁওয়ের আগুনে পুড়ে ছাই ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল

ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলা মার্কেটের পাশের একটি স’মিলে শুক্রবার রাত ৭টা ৩০ মিনিটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ৯টা ৩৫ মিনিটে এই আগুন নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। আগুনে প্রায় ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল পুড়ে গেছে।

আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, কেমিক্যাল ড্রাম বিস্ফোরণে স’মিলে লাগা আগুন চারদিক ছড়িয়ে পড়ে।

তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘খিলগাঁওয়ের আগুনে আনুমানিক ২০টি দোকান এবং দুটি স মিল পুড়েছে। আগুনে হয়তো কেমিক্যাল ড্রাম বিস্ফোরিত হয়েছে; যার ফলে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের নয়টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে আরো চারটি ইউনিট ছিল, তবে সেগুলোকে কাজ করতে হয়নি।

লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আগুনে কেউ নিখোঁজ রয়েছে এমন কোনো সংবাদ আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত আসেনি। এ ছাড়া আমরা এখন পর্যন্ত আহত ও নিহতের কোনো সংবাদ পাইনি।’

আগুনের উৎসটি কি ছিল প্রাথমিকভাবে জানা গেছে কিনা প্রশ্ন করা হলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই মুহূর্তে এ বিষয়ে বলা যাবে না তদন্ত ছাড়া। সিগারেটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে নাকি স্যাবোটেজ হয়েছে— এই প্রত্যেকটা বিষয়ে আমাদের তদন্ত করে দেখতে হবে।

অনেকগুলো সোর্স থেকে আগুনের সৃষ্টি হতে পারে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেও আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তাই তদন্ত ছাড়া এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।’
এদিকে, দুই ঘণ্টা ধরে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ জানান, ‘শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সেখানে আগুন লাগার খবর পাই।

প্রথমে আমাদের দুটি ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে আরো সাতটি ইউনিট যোগ দেয়। এরপর রাত ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন লাগার পরে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করতে ছুটে আসেন সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাবের সদস্যরা।’

তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স মিল থেকে আগুন গাড়ির গ্যারেজে ছড়িয়ে পড়ে। পরে গ্যারেজে থাকা বিভিন্ন গাড়িতে আগুন লেগে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এ সময় আশপাশের মানুষ ছোটাছুটি করতে থাকে। উৎসুক জনতার ভিড়ে ফায়ার সার্ভিসকে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেশ বেগ পেতে হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, ওই এলাকায় একটি গাড়ির গ্যারেজ ও রাবারের কাঁচামালের গোডাউন রয়েছে। কিছু গাড়ি বের করা সম্ভব হলেও অনেক গাড়ি পুড়ে গেছে।

খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দাউদ হোসেন বলেন, ‘ওই স মিল খিলগাঁও থানার কাছেই। পাশের একটি গাড়ির গ্যারেজেও আগুন ছড়িয়েছে। ক্রাউডের কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছিল।

 

Header Ad
Header Ad

পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  

ব্যবসায়ী আবুল বাসার ওরফে মিন্টু। ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী নগরীর পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো একটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে নগরীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চ সংলগ্ন এলাকার কাশবন থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, হত্যা করে কাশবনে ফেলে দেওয়া হয়েছে লাশটি।

নিহত ব্যক্তির নাম আবুল বাসার ওরফে মিন্টু (৩৫)। পেশায় ব্যবসায়ী মিন্টু নগরীর মির্জাপুর পূর্বপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। বিনোদপুর বাজারে তার ইলেকট্রিক ব্যবসার দোকান আছে।

নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম জানান, কাশবনে ঘুরতে আসা কয়েকজন লাশটি দেখে পুলিশে খবর দেয়। ঘুরতে আসা অনেকে লাশের ছবিটি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে শেয়ার করে। জানাজানির পর নিহতের পরিবার ঘটনাস্থলে এসে লাশটি শনাক্ত করে।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে মিন্টুর খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। কাশবনে তার মুখ পলিথিন দিয়ে ঢাকা ছিল। পলিথিনের ওপর স্কচটেপ প্যাঁচানো ছিল।

ওসি আরও বলেন, ‘আলামত দেখে মনে হয়েছে এটি হত্যাকাণ্ড। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে হত্যা মামলা হবে।’

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খিলগাঁওয়ের আগুনে পুড়ে ছাই ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল
পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  
সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম