শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৮

নেই দেশের নাগরিক

“আর যদি নৌকো পাড়ে ভেড়াতে না পারে!” সাদ্দামের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল আতিফ। সাদ্দাম এবার ফ্যাসাদে পড়ে গেল, তাই তো! তাহলে! যা ঝড় হলো তাতে নদীর ওপর নৌকো ভেসে থাকা অসম্ভব। আতিফের ফ্যাকাসে মুখের দিকে তাকাল সাদ্দাম। মুখটা ইট চাপা দেওয়া ঘাসের মতো হলুদ হয়ে গেছে। চোখে দুশ্চিন্তার কালো ছায়া। মুখের আদলে এতিম এতিম ভাব। সাদ্দাম মনে মনে ভাবল, এই মুখে কী আর মিথ্যে সান্ত্বনা দেব। সত্যি যে বড় কঠিন। বড় রুঢ়। ওর যে পরিবারকে ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনায় পুরো জল ঢেলে দিয়েছে আশ্বিনের ঝড়। পরিবারের সঙ্গে মিল হওয়ার এক আনা সম্ভাবনাও যে নেই। তবুও মনের আসল কথাটাকে জিভের তলে আটকে রেখে ওপরে ওপরে সান্ত্বনা দিয়ে বলল, “নৌকোর মাঝি যদি দক্ষ হন, আর নৌকোর কাঠামো যদি পোক্ত হয়, তাহলে এ ঝড়ে খুউব বেশি ক্ষতি করতে পারবে না।”

আতিফ ভাবল, মতি ভাই নৌকো চালনায় যথেষ্ট দক্ষ। নৌকোবাইচ প্রতিযোগিতায় ঢের কয়েকবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। নুহু ভাইও ভালোই সঙ্গ দেয়। তার হাতের বাহুতে বলদের দোম। বুকে নেকড়ের সাহস। সুতরাং মাঝি হিসেবে তারা সুদক্ষ পাল্লাদার। আর আমাদের বাড়ির ‘ঘাটবাড়ি কৌশা’ নৌকোটা একটু পুরোনো হলেও, কাঠে এখনো ঘুণ ধরেনি। রোদে জলে শুকিয়ে ভিজে এখনো সেভাবে ফাটল ধরেনি। এখনো হাতুড়ের ঘা দিলে ‘টং’ করে ওঠে। এতটুকুও টুস্কায় না। তা ছাড়া, বছর বছর নৌকোর খোলে আলকাতরা মাখানো হয়। যত্নআত্তিরের কোনো খামতি থাকে না।

যে আতিফ বাড়িতে থাকলে একবারও নৌকোয় ওঠে না। একবার মজা করেও ছুঁয়ে দেখে না। মা হালেমা ‘আমরা হলেম কি নদীর কূলের মানুষ, সাঁতার আর নৌকো না চালাতে জানলে হয়, যা শিখে রাখ’ বলে কানের কাছে ঘ্যানর ঘ্যানর করলে আতিফ তিড়িংবিড়িং করে বলত, ‘জেলের ছেলে জেলে হবে কেন? লেখাপড়া শিখে চাকরি করবে। ব্যবসা করবে। গোটা বংশ সারাজীবন একই ঘাটে পড়ে থাকবে কেন?’ সেই আতিফ এখন, নৌকোর ফাঁটল খুঁজছে, নৌকোটায় কোথাও তিল পরিমাণ ঘুণ ধরেছে কি না, তা হন্যে হয়ে হাতড়াচ্ছে। নৌকোটা কতটা ঝড়ের ঝাপটা এড়াতে পারবে, তার চুলচেরা পরিমাপ করছে। একই বলে, ঘাটের ছেলে ঘাটে ফিরে আসা। যে নাড়ি কেটে পেটের ছেলে দূরে চলে গেছিল সেই নাড়ির টানেই আবার নাড়ির বাঁধনে ফিরে আসা।

বাইরের বীভৎসতা দেখে আঁতকে ওঠে আতিফ। বেশীরভাগ ত্রিপলের ঘর ঝড়-বৃষ্টিতে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে! যাকে বলে, একেবারে মাটিতে মিশে যাওয়া। চারিদিকে হাহাকার আর আর্তনাদ। এই সময়ে আশ্বিনের ঝড়টা যেন ঘা’এর ওপর বিষফোঁড়া! লোকগুলো এমনিতেই ভিটেমাটি আত্মীয়স্বজন হারিয়ে সহায় সম্বলহীন পথের ভিখিরি হয়ে গেছে, তার ওপর আবার এমন জানে মেরে দেওয়া ঝড়! আল্লাহর রহমানের রহিম হয়েও বান্দার ওপর কেন এত রুষ্ট? আল্লাহ গযব দেওয়ার কি আর জায়গা পেলেন না? পাকা ফলনে মলন দিলে যা হয়, নয়াপাড়ার এই শরণার্থী শিবিরের এখন সেই অবস্থা! মানুষ, গরু, ছাগল, ভেড়া, ত্রিপলের ঘর ঘাসপাতার মতো পানিকাদায় পুঁতে গেছে! জীবন এখানে নাক অবধি মরে কোনরকমে বেঁচে আছে। “সাদ্দাম, এখানকার শরণার্থীদের খাবারের সমস্যা কেমন?” জানতে চায়ল আতিফ। “চরম। কেউ একবেলা খেয়ে কেউ আবার অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।”

“কেন? ইউনিসেফ তো টনটন খাবার পাঠায়। সেগুলো কোথায় যায়?” “সেগুলোর সব কি আর এখানে পৌঁছায়? মাঝপথে নিশ্চয় কিছু হাপিস হয়ে যায়।” “শরণার্থীদের খাবারও চুরি! লোপাট! মানুষ আর কত নিচে নামতে পারে! ছিঃ!” “মানুষ তো জ্যান্ত মানুষকেই খেয়ে ফেলছে, আর এ তো খাবার। লোপাট তো করবেই।” “এখানে যা দেখছি, ত্রিপলেরও তো প্রচুর ঘাটতি। বহু মানুষ খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাচ্ছে।“
“নীল আকাশ হল ছাদ আর মাটি হল বিছানা। পৃথিবীর সব উদ্বাস্তুদেরই তো এই অবস্থা। না আছে মাথার ওপর ছাদ না আছে পায়ের নিচে মাটি।” “তোরা খাবারের দিকটা ব্যাপক জোর দে। এদিক ওদিক লোক পাঠিয়ে ত্রাণ সংগ্রহ কর।”

“সে পথও তো মারা। বাংলাদেশ সেনা এখান থেকে কোন রোহিঙ্গাকে অন্যত্র যেতে দেয় না। নথিভুক্তিকরণের সময় সেটা কড়া ভাবে বলে দিয়েছে।” “কেন, আগে যে সবাই এদিক ওদিক কাজ করতে যেত?” “এখন নিয়ম বদলেছে। এখন কড়াকড়ি বেশি। ঢাকা শাহবাগ চত্বরে বোমব্লাস্টের পর থেকে এই কড়াকড়িটা বেড়েছে।” “তাহলে তো কাজ করা খুবই মুশকিল। তোর কাজও কঠিন হয়ে গেছে নিশ্চয়?” “কঠিন মানে, কোন কঠিন, যাকে বলে জান হাতে করে কাজ করতে হচ্ছে। তবে দেশের জন্যে তো এটুকু করতেই হবে। আমরা তো আর নুন-তেলের মানুষ নই? আমরা হলেম গুলি-বারুদের মানুষ। জীবন তো এমনিতে যাবেই, যাবেই যখন তখন দেশের স্বাধীনতার জন্যেই যাক। ‘স্বাধীন রাখাইন রাষ্ট্র’ আমরা প্রতিষ্ঠা করবই।” সাদ্দামের বুকের সিনা কয়েক ইঞ্চি ফুলে ওঠে। চোখে মুখে জেহাদের বিপ্লবী-মন্ত্র। “রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধি এখানে আসেন?”

“হ্যাঁ, শুধু কি রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধি, অনেক দেশের প্রতিনিধিই এখানে আসেন। তারা এলাকা পরিদর্শন করেন। অনেকেই ত্রাণ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান।” “শোন, মানুষের ক্ষোভকে কিন্তু কাজে লাগাতে হবে। ক্ষোভ, হিংসা, রাগ যত বাড়বে, আর জে এফ’এর সদস্য সংখ্যাও তত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে।” “সে ফরমুলা আমার জানা বন্ধু। পেটের খিদেকে আগুন বানিয়ে শত্রুর দোরে ছুড়ে দাও। মনের হিংসাকে ‘বোম’ বানিয়ে শত্রুর ডেরায় ফেলে দাও। ব্যস, কেল্লাফতে।”

“একদম ঠিক। দারুন বলেছিস। একেই বলে ‘চালাকির দ্বারা কাজ হাশিল করা’।” চোখ ঘুলিয়ে উঠল আতিফ। তারপর চোখের মণিতে টিপ করে পাতা ফেলে, মুহূর্তে ঘোমটা টানার মতো ওপরে তুলে বলল, “আচ্ছা, এখন নাফ নদীতে আছে, এমন কেউ তোর পরিচিত নেই?” “না, সেরকম কেউ নেই। তবে কাজের সূত্রে কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। এই যা। সেটাও না না করে মাসখানেক তো হয়ে গেল।” “ওদের কারও সঙ্গে কোনোভাবে কন্ট্যাক করা যাবে না?” “না না, তা কী করে সম্ভব? আমার কাছে তো ওদের কোনো ফোন নম্বর নেই।” “কন্ট্যাকটা করা গেলে খুব ভালো হতো রে!” আফসোস করে আতিফ। ধীরে ধীরে পা তুলে ত্রিপলের চাটায়ের ঘরের ভেতরে ঢুকল আতিফ। ছাপুর ঘরটার মাথার ফাঁক দিয়ে উঁকি মারছে বৃষ্টিস্নাত আধক্ষোয়া চাঁদ।

তরমুজের ফালির মতো চাঁদটা ফিনফিনে সাদা থানের মতো মেঘ কেটে কেটে যাচ্ছে। স্কুলে পড়া কবিতার লাইনটা একটু ঘুরিয়ে তার মনে ঠক করে ওঠে, মেঘ দেখে করিস নে ভয়, আড়ালে তার চাঁদ হাসে। সত্যিই আকাশ পারেও বটে এত কলা করতে! কানে রূপোর দুল আর পরনে হলুদ শাড়ি পরে খুপরি ঘরের মটকার ফাঁক দিয়ে ঘুমোতে আসছে জ্যোৎস্না। তার লাবণ্যমাখা শরীর ঝড়ে কুঁকড়ে যাওয়া ত্রিপলের ঘরটাকে মাদকাময় করে তুলছে। সঙ্গের গা কাঁটা দেওয়া হীমশীতল বাতাস সে শরীরে আরও মোহময়ী খুসবু ছড়িয়ে দিচ্ছে। মাটির সোঁদা গন্ধ সে বাতাসের ঘাড়ে ভর করে ছড়িয়ে পড়ছে ঘরময়। ডাগর ধানের শীষের গন্ধ মাটির সোঁদা গন্ধে মিশে মনের একতারায় পাগলপারা সুর তুলছে। অন্য সময় হলে আতিফ নাক ডুবিয়ে ঘাস, মাটি, ধান, কাদাপানির ঘ্রাণ নিত। শুঁকত গন্ধ। কিন্তু আজ তার উচাটন মন সেদিকে সিঁদ কাটতেই পারছে না। মনের মধ্যে পুঁতে আছে দুশ্চিন্তার ঘোর।আপনজনকে খুঁজে পাওয়ার তাড়না। মনের আকাশে এভাবে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ জমলে, ফুলকেও কাঁটা মনে হয়। চাঁদের আলোকে মনে হয় কাঠপোড়া আগুন। জীবনের সব স্বাদ তখন কষ্টে তেতো হয়ে যায়।

আতিফের ক্লান্ত শ্রান্ত চোখ আলতো করে মুদে আসতেই, বাড়ির নৌকোটার কথা ‘ধড়াক’ করে উঠল। তার মা’এর মুখটা বড্ড মনে পড়ছে। মনে পড়ছে হাড়গিলে বাপ’টার কথা। মতিভাইয়ের রোদপুড়া তামাটে মুখ। চোখ খুললেই, ফালি চাঁদের একটা মিহি আলো চোখের আয়নায় ঠিকরে পড়ল। চোখের দুই কোণ চাপা অশ্রুতে চিকচক করছে। অশ্রুর এই বিন্দু ফোটায় প্রতিবিম্বিত হচ্ছে, নাফ নদী, আশ্বিনের ঝড়, ঘাটবাড়ি কৌশা নৌকো আর আব্বা মায়েদের মুখ। অন্য সময় হলে, এভাবে কাস্তে চাঁদের আলো চোখে ঠিকরে পড়লে মনের আকাশে হেসে উঠত পূর্ণিমার মতো ভরা যৌবনের চাঁদ। আর আজ সেই একই আলোকে তার শত্রুর ছোড়া তীর মনে হচ্ছে। যে মনের আকাশে উড়ে বেড়াত লাল-নীল ঘুড়ি, সেই আকাশে এখন চরে বেড়াচ্ছে মরা খেকো শকুন। আতিফের মন কাগজের ঠোঙার মতো একটু একটু করে গুটিয়ে যাচ্ছে। দেহের বদল হতে ঢের সময় লাগলেও, মনের বদল যে মুহূর্তে হয়ে যায়। এই লাগে কাশফুলের দোলা তো ওই লাগে আগুনের ছ্যাকা। জীবন এখানে এক অঙ্কের বিয়োগ। শূন্যের গুণ। উদরে যাওয়া মলাট।

সাদ্দাম দড়ির খাটিয়াটাকে ঝেড়েঝুরে বলল, “শুয়ে পড়। রাত অনেক হয়ে গেছে।” রাত কি শুধু এই চরাচরেই হয়েছে? মনের চরাচরে তো সেই কবে থেকেই রাত হয়ে আছে। সেখানে তো শুধু অন্ধকার আর অন্ধকার। সূর্যের বিন্দুমাত্র দেখা নেই। সে রাতে কতবার আছড়ে পড়েছে ‘আশ্বিনের ঝড়’ ‘কালবৈশাখী’, পাড় ভেঙে হৃদয়ের দুকুল প্লাবিত করে দিয়েছে মনের নাফ নদী। গাছপুড়া মানুষপুড়া দাবানলের আগুন দাউদাউ করে পুড়িয়ে দিয়েছে মনের বসতভিটে। সে রাতের যে সকাল হওয়ার নাম নেই! শুধু অন্ধকারেই মুখ ঢুকিয়ে বসে আছে। মনে মনে বিড়বিড় করে আতিফ। মনের দেওয়ালে আঁচড় টানে মনের কালি। মনের কথনে সুর বাঁধে যন্ত্রণার বাঁশি। মনের অন্ধকারে নেমে আসে আরও ঘন রাত। পাশের খেতি থেকে ভেসে আসছে ঝিঁঝিঁর ডাক। দূরে শিয়ালের হুক্কাহুয়া। মিহি করে ভেসে আসছে সাপের ব্যাং ধরার করুণ শব্দ। ‘ক্যাঁচ’ করে একটা শব্দ গেঙড়ে উঠল! সাদ্দাম পা তুলে শাট হয়ে শুলো খাটিয়াটার একপাশে। বালিশে রাখা মাথা ঘুরিয়ে বলল, “আয়, শুয়ে পড়। ভোর ভোর উঠতে হবে।”

“নাহ, শুব না। শুলে হবে না। এখনই রওনা দিতে হবে।” থুতনি সরু হয়ে উঠল আতিফের। ‘তড়াক’ করে উঠল সাদ্দাম। চোখে বিস্ময়। “এখন রাত কটা বাজে, জানিস? এই চত্বরে এত রাতে বের হওয়া কতটা বিপদের তা তোর আন্দাজও নেই। আমি জানি। আমি আড়াই বছর ধরে এখানে আছি। এখানকার পানি-হাওয়া কি কথা বলে, তা আমিই জানি। তুই হয়ত জানিস না, এখন বাংলাদেশ সরকার প্রত্যেক রোহিঙ্গার পায়ে সন্দেহের বেড়ি পরিয়ে দিয়েছে। পায়ের পাওঠায় পাওঠায় পাতা থাকে তাদের গোপন আড়কাঠি।” মেজাজ কুসুম গরম হয়ে ওঠে সাদ্দামের। এলাকার চালচুলোর আভাস দেয়। দেয় গোয়েন্দাদের হাঁড়ির খবর। আতিফ তার একগুঁয়েমিকে রশা দিয়ে আরও কড়া করে বাঁধে। বলে, “আমাদের জীবন শেয়ালের, নেড়ি কুত্তার, রাতবিরেত বলে কোনও শব্দ নেই। আরাম আয়েশ কবেই হারাম হয়ে গেছে। এখন একটা মিনিট নষ্ট করা মানে, ভুলের ‘পরে ভুল করা। জীবন থেকে জীবনকে হারিয়ে ফেলা। আমাদের জীবনকে কেউ যদি ছাগলের খাল ছাড়ানোর মতো ছাড়িয়ে নেয়, তবুও আমাদের উচিৎ, সত্যের জন্যে ‘ভ্যা’ করে যাওয়া। মৃত্যু আমাদের কানের দুল, গলার হার। মৃত্যুভয়ের জন্যে আমাদেরকে ঘরে শুয়ে থাকতে হবে? এত মোমের মানুষ আমরা কবে হলাম, সাদ্দাম? তুই হয়ত ভুলে যাচ্ছিস, আমরা জীবনের কাঠিতে কবেই বারুদ লাগিয়ে নিয়েছি। এতে আগুন লাগবে তো এখন আর তখন কী।”

চলবে...

আগের পর্ব পড়ুন

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

 

Header Ad
Header Ad

খিলগাঁওয়ের আগুনে পুড়ে ছাই ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল

ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলা মার্কেটের পাশের একটি স’মিলে শুক্রবার রাত ৭টা ৩০ মিনিটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ৯টা ৩৫ মিনিটে এই আগুন নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। আগুনে প্রায় ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল পুড়ে গেছে।

আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, কেমিক্যাল ড্রাম বিস্ফোরণে স’মিলে লাগা আগুন চারদিক ছড়িয়ে পড়ে।

তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘খিলগাঁওয়ের আগুনে আনুমানিক ২০টি দোকান এবং দুটি স মিল পুড়েছে। আগুনে হয়তো কেমিক্যাল ড্রাম বিস্ফোরিত হয়েছে; যার ফলে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের নয়টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে আরো চারটি ইউনিট ছিল, তবে সেগুলোকে কাজ করতে হয়নি।

লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আগুনে কেউ নিখোঁজ রয়েছে এমন কোনো সংবাদ আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত আসেনি। এ ছাড়া আমরা এখন পর্যন্ত আহত ও নিহতের কোনো সংবাদ পাইনি।’

আগুনের উৎসটি কি ছিল প্রাথমিকভাবে জানা গেছে কিনা প্রশ্ন করা হলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই মুহূর্তে এ বিষয়ে বলা যাবে না তদন্ত ছাড়া। সিগারেটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে নাকি স্যাবোটেজ হয়েছে— এই প্রত্যেকটা বিষয়ে আমাদের তদন্ত করে দেখতে হবে।

অনেকগুলো সোর্স থেকে আগুনের সৃষ্টি হতে পারে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেও আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তাই তদন্ত ছাড়া এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।’
এদিকে, দুই ঘণ্টা ধরে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ জানান, ‘শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সেখানে আগুন লাগার খবর পাই।

প্রথমে আমাদের দুটি ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে আরো সাতটি ইউনিট যোগ দেয়। এরপর রাত ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন লাগার পরে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করতে ছুটে আসেন সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাবের সদস্যরা।’

তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স মিল থেকে আগুন গাড়ির গ্যারেজে ছড়িয়ে পড়ে। পরে গ্যারেজে থাকা বিভিন্ন গাড়িতে আগুন লেগে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এ সময় আশপাশের মানুষ ছোটাছুটি করতে থাকে। উৎসুক জনতার ভিড়ে ফায়ার সার্ভিসকে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেশ বেগ পেতে হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, ওই এলাকায় একটি গাড়ির গ্যারেজ ও রাবারের কাঁচামালের গোডাউন রয়েছে। কিছু গাড়ি বের করা সম্ভব হলেও অনেক গাড়ি পুড়ে গেছে।

খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দাউদ হোসেন বলেন, ‘ওই স মিল খিলগাঁও থানার কাছেই। পাশের একটি গাড়ির গ্যারেজেও আগুন ছড়িয়েছে। ক্রাউডের কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছিল।

 

Header Ad
Header Ad

পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  

ব্যবসায়ী আবুল বাসার ওরফে মিন্টু। ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী নগরীর পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো একটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে নগরীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চ সংলগ্ন এলাকার কাশবন থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, হত্যা করে কাশবনে ফেলে দেওয়া হয়েছে লাশটি।

নিহত ব্যক্তির নাম আবুল বাসার ওরফে মিন্টু (৩৫)। পেশায় ব্যবসায়ী মিন্টু নগরীর মির্জাপুর পূর্বপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। বিনোদপুর বাজারে তার ইলেকট্রিক ব্যবসার দোকান আছে।

নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম জানান, কাশবনে ঘুরতে আসা কয়েকজন লাশটি দেখে পুলিশে খবর দেয়। ঘুরতে আসা অনেকে লাশের ছবিটি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে শেয়ার করে। জানাজানির পর নিহতের পরিবার ঘটনাস্থলে এসে লাশটি শনাক্ত করে।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে মিন্টুর খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। কাশবনে তার মুখ পলিথিন দিয়ে ঢাকা ছিল। পলিথিনের ওপর স্কচটেপ প্যাঁচানো ছিল।

ওসি আরও বলেন, ‘আলামত দেখে মনে হয়েছে এটি হত্যাকাণ্ড। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে হত্যা মামলা হবে।’

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খিলগাঁওয়ের আগুনে পুড়ে ছাই ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল
পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  
সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম