বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৮

নেই দেশের নাগরিক

“আর যদি নৌকো পাড়ে ভেড়াতে না পারে!” সাদ্দামের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল আতিফ। সাদ্দাম এবার ফ্যাসাদে পড়ে গেল, তাই তো! তাহলে! যা ঝড় হলো তাতে নদীর ওপর নৌকো ভেসে থাকা অসম্ভব। আতিফের ফ্যাকাসে মুখের দিকে তাকাল সাদ্দাম। মুখটা ইট চাপা দেওয়া ঘাসের মতো হলুদ হয়ে গেছে। চোখে দুশ্চিন্তার কালো ছায়া। মুখের আদলে এতিম এতিম ভাব। সাদ্দাম মনে মনে ভাবল, এই মুখে কী আর মিথ্যে সান্ত্বনা দেব। সত্যি যে বড় কঠিন। বড় রুঢ়। ওর যে পরিবারকে ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনায় পুরো জল ঢেলে দিয়েছে আশ্বিনের ঝড়। পরিবারের সঙ্গে মিল হওয়ার এক আনা সম্ভাবনাও যে নেই। তবুও মনের আসল কথাটাকে জিভের তলে আটকে রেখে ওপরে ওপরে সান্ত্বনা দিয়ে বলল, “নৌকোর মাঝি যদি দক্ষ হন, আর নৌকোর কাঠামো যদি পোক্ত হয়, তাহলে এ ঝড়ে খুউব বেশি ক্ষতি করতে পারবে না।”

আতিফ ভাবল, মতি ভাই নৌকো চালনায় যথেষ্ট দক্ষ। নৌকোবাইচ প্রতিযোগিতায় ঢের কয়েকবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। নুহু ভাইও ভালোই সঙ্গ দেয়। তার হাতের বাহুতে বলদের দোম। বুকে নেকড়ের সাহস। সুতরাং মাঝি হিসেবে তারা সুদক্ষ পাল্লাদার। আর আমাদের বাড়ির ‘ঘাটবাড়ি কৌশা’ নৌকোটা একটু পুরোনো হলেও, কাঠে এখনো ঘুণ ধরেনি। রোদে জলে শুকিয়ে ভিজে এখনো সেভাবে ফাটল ধরেনি। এখনো হাতুড়ের ঘা দিলে ‘টং’ করে ওঠে। এতটুকুও টুস্কায় না। তা ছাড়া, বছর বছর নৌকোর খোলে আলকাতরা মাখানো হয়। যত্নআত্তিরের কোনো খামতি থাকে না।

যে আতিফ বাড়িতে থাকলে একবারও নৌকোয় ওঠে না। একবার মজা করেও ছুঁয়ে দেখে না। মা হালেমা ‘আমরা হলেম কি নদীর কূলের মানুষ, সাঁতার আর নৌকো না চালাতে জানলে হয়, যা শিখে রাখ’ বলে কানের কাছে ঘ্যানর ঘ্যানর করলে আতিফ তিড়িংবিড়িং করে বলত, ‘জেলের ছেলে জেলে হবে কেন? লেখাপড়া শিখে চাকরি করবে। ব্যবসা করবে। গোটা বংশ সারাজীবন একই ঘাটে পড়ে থাকবে কেন?’ সেই আতিফ এখন, নৌকোর ফাঁটল খুঁজছে, নৌকোটায় কোথাও তিল পরিমাণ ঘুণ ধরেছে কি না, তা হন্যে হয়ে হাতড়াচ্ছে। নৌকোটা কতটা ঝড়ের ঝাপটা এড়াতে পারবে, তার চুলচেরা পরিমাপ করছে। একই বলে, ঘাটের ছেলে ঘাটে ফিরে আসা। যে নাড়ি কেটে পেটের ছেলে দূরে চলে গেছিল সেই নাড়ির টানেই আবার নাড়ির বাঁধনে ফিরে আসা।

বাইরের বীভৎসতা দেখে আঁতকে ওঠে আতিফ। বেশীরভাগ ত্রিপলের ঘর ঝড়-বৃষ্টিতে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে! যাকে বলে, একেবারে মাটিতে মিশে যাওয়া। চারিদিকে হাহাকার আর আর্তনাদ। এই সময়ে আশ্বিনের ঝড়টা যেন ঘা’এর ওপর বিষফোঁড়া! লোকগুলো এমনিতেই ভিটেমাটি আত্মীয়স্বজন হারিয়ে সহায় সম্বলহীন পথের ভিখিরি হয়ে গেছে, তার ওপর আবার এমন জানে মেরে দেওয়া ঝড়! আল্লাহর রহমানের রহিম হয়েও বান্দার ওপর কেন এত রুষ্ট? আল্লাহ গযব দেওয়ার কি আর জায়গা পেলেন না? পাকা ফলনে মলন দিলে যা হয়, নয়াপাড়ার এই শরণার্থী শিবিরের এখন সেই অবস্থা! মানুষ, গরু, ছাগল, ভেড়া, ত্রিপলের ঘর ঘাসপাতার মতো পানিকাদায় পুঁতে গেছে! জীবন এখানে নাক অবধি মরে কোনরকমে বেঁচে আছে। “সাদ্দাম, এখানকার শরণার্থীদের খাবারের সমস্যা কেমন?” জানতে চায়ল আতিফ। “চরম। কেউ একবেলা খেয়ে কেউ আবার অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।”

“কেন? ইউনিসেফ তো টনটন খাবার পাঠায়। সেগুলো কোথায় যায়?” “সেগুলোর সব কি আর এখানে পৌঁছায়? মাঝপথে নিশ্চয় কিছু হাপিস হয়ে যায়।” “শরণার্থীদের খাবারও চুরি! লোপাট! মানুষ আর কত নিচে নামতে পারে! ছিঃ!” “মানুষ তো জ্যান্ত মানুষকেই খেয়ে ফেলছে, আর এ তো খাবার। লোপাট তো করবেই।” “এখানে যা দেখছি, ত্রিপলেরও তো প্রচুর ঘাটতি। বহু মানুষ খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাচ্ছে।“
“নীল আকাশ হল ছাদ আর মাটি হল বিছানা। পৃথিবীর সব উদ্বাস্তুদেরই তো এই অবস্থা। না আছে মাথার ওপর ছাদ না আছে পায়ের নিচে মাটি।” “তোরা খাবারের দিকটা ব্যাপক জোর দে। এদিক ওদিক লোক পাঠিয়ে ত্রাণ সংগ্রহ কর।”

“সে পথও তো মারা। বাংলাদেশ সেনা এখান থেকে কোন রোহিঙ্গাকে অন্যত্র যেতে দেয় না। নথিভুক্তিকরণের সময় সেটা কড়া ভাবে বলে দিয়েছে।” “কেন, আগে যে সবাই এদিক ওদিক কাজ করতে যেত?” “এখন নিয়ম বদলেছে। এখন কড়াকড়ি বেশি। ঢাকা শাহবাগ চত্বরে বোমব্লাস্টের পর থেকে এই কড়াকড়িটা বেড়েছে।” “তাহলে তো কাজ করা খুবই মুশকিল। তোর কাজও কঠিন হয়ে গেছে নিশ্চয়?” “কঠিন মানে, কোন কঠিন, যাকে বলে জান হাতে করে কাজ করতে হচ্ছে। তবে দেশের জন্যে তো এটুকু করতেই হবে। আমরা তো আর নুন-তেলের মানুষ নই? আমরা হলেম গুলি-বারুদের মানুষ। জীবন তো এমনিতে যাবেই, যাবেই যখন তখন দেশের স্বাধীনতার জন্যেই যাক। ‘স্বাধীন রাখাইন রাষ্ট্র’ আমরা প্রতিষ্ঠা করবই।” সাদ্দামের বুকের সিনা কয়েক ইঞ্চি ফুলে ওঠে। চোখে মুখে জেহাদের বিপ্লবী-মন্ত্র। “রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধি এখানে আসেন?”

“হ্যাঁ, শুধু কি রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধি, অনেক দেশের প্রতিনিধিই এখানে আসেন। তারা এলাকা পরিদর্শন করেন। অনেকেই ত্রাণ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান।” “শোন, মানুষের ক্ষোভকে কিন্তু কাজে লাগাতে হবে। ক্ষোভ, হিংসা, রাগ যত বাড়বে, আর জে এফ’এর সদস্য সংখ্যাও তত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে।” “সে ফরমুলা আমার জানা বন্ধু। পেটের খিদেকে আগুন বানিয়ে শত্রুর দোরে ছুড়ে দাও। মনের হিংসাকে ‘বোম’ বানিয়ে শত্রুর ডেরায় ফেলে দাও। ব্যস, কেল্লাফতে।”

“একদম ঠিক। দারুন বলেছিস। একেই বলে ‘চালাকির দ্বারা কাজ হাশিল করা’।” চোখ ঘুলিয়ে উঠল আতিফ। তারপর চোখের মণিতে টিপ করে পাতা ফেলে, মুহূর্তে ঘোমটা টানার মতো ওপরে তুলে বলল, “আচ্ছা, এখন নাফ নদীতে আছে, এমন কেউ তোর পরিচিত নেই?” “না, সেরকম কেউ নেই। তবে কাজের সূত্রে কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। এই যা। সেটাও না না করে মাসখানেক তো হয়ে গেল।” “ওদের কারও সঙ্গে কোনোভাবে কন্ট্যাক করা যাবে না?” “না না, তা কী করে সম্ভব? আমার কাছে তো ওদের কোনো ফোন নম্বর নেই।” “কন্ট্যাকটা করা গেলে খুব ভালো হতো রে!” আফসোস করে আতিফ। ধীরে ধীরে পা তুলে ত্রিপলের চাটায়ের ঘরের ভেতরে ঢুকল আতিফ। ছাপুর ঘরটার মাথার ফাঁক দিয়ে উঁকি মারছে বৃষ্টিস্নাত আধক্ষোয়া চাঁদ।

তরমুজের ফালির মতো চাঁদটা ফিনফিনে সাদা থানের মতো মেঘ কেটে কেটে যাচ্ছে। স্কুলে পড়া কবিতার লাইনটা একটু ঘুরিয়ে তার মনে ঠক করে ওঠে, মেঘ দেখে করিস নে ভয়, আড়ালে তার চাঁদ হাসে। সত্যিই আকাশ পারেও বটে এত কলা করতে! কানে রূপোর দুল আর পরনে হলুদ শাড়ি পরে খুপরি ঘরের মটকার ফাঁক দিয়ে ঘুমোতে আসছে জ্যোৎস্না। তার লাবণ্যমাখা শরীর ঝড়ে কুঁকড়ে যাওয়া ত্রিপলের ঘরটাকে মাদকাময় করে তুলছে। সঙ্গের গা কাঁটা দেওয়া হীমশীতল বাতাস সে শরীরে আরও মোহময়ী খুসবু ছড়িয়ে দিচ্ছে। মাটির সোঁদা গন্ধ সে বাতাসের ঘাড়ে ভর করে ছড়িয়ে পড়ছে ঘরময়। ডাগর ধানের শীষের গন্ধ মাটির সোঁদা গন্ধে মিশে মনের একতারায় পাগলপারা সুর তুলছে। অন্য সময় হলে আতিফ নাক ডুবিয়ে ঘাস, মাটি, ধান, কাদাপানির ঘ্রাণ নিত। শুঁকত গন্ধ। কিন্তু আজ তার উচাটন মন সেদিকে সিঁদ কাটতেই পারছে না। মনের মধ্যে পুঁতে আছে দুশ্চিন্তার ঘোর।আপনজনকে খুঁজে পাওয়ার তাড়না। মনের আকাশে এভাবে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ জমলে, ফুলকেও কাঁটা মনে হয়। চাঁদের আলোকে মনে হয় কাঠপোড়া আগুন। জীবনের সব স্বাদ তখন কষ্টে তেতো হয়ে যায়।

আতিফের ক্লান্ত শ্রান্ত চোখ আলতো করে মুদে আসতেই, বাড়ির নৌকোটার কথা ‘ধড়াক’ করে উঠল। তার মা’এর মুখটা বড্ড মনে পড়ছে। মনে পড়ছে হাড়গিলে বাপ’টার কথা। মতিভাইয়ের রোদপুড়া তামাটে মুখ। চোখ খুললেই, ফালি চাঁদের একটা মিহি আলো চোখের আয়নায় ঠিকরে পড়ল। চোখের দুই কোণ চাপা অশ্রুতে চিকচক করছে। অশ্রুর এই বিন্দু ফোটায় প্রতিবিম্বিত হচ্ছে, নাফ নদী, আশ্বিনের ঝড়, ঘাটবাড়ি কৌশা নৌকো আর আব্বা মায়েদের মুখ। অন্য সময় হলে, এভাবে কাস্তে চাঁদের আলো চোখে ঠিকরে পড়লে মনের আকাশে হেসে উঠত পূর্ণিমার মতো ভরা যৌবনের চাঁদ। আর আজ সেই একই আলোকে তার শত্রুর ছোড়া তীর মনে হচ্ছে। যে মনের আকাশে উড়ে বেড়াত লাল-নীল ঘুড়ি, সেই আকাশে এখন চরে বেড়াচ্ছে মরা খেকো শকুন। আতিফের মন কাগজের ঠোঙার মতো একটু একটু করে গুটিয়ে যাচ্ছে। দেহের বদল হতে ঢের সময় লাগলেও, মনের বদল যে মুহূর্তে হয়ে যায়। এই লাগে কাশফুলের দোলা তো ওই লাগে আগুনের ছ্যাকা। জীবন এখানে এক অঙ্কের বিয়োগ। শূন্যের গুণ। উদরে যাওয়া মলাট।

সাদ্দাম দড়ির খাটিয়াটাকে ঝেড়েঝুরে বলল, “শুয়ে পড়। রাত অনেক হয়ে গেছে।” রাত কি শুধু এই চরাচরেই হয়েছে? মনের চরাচরে তো সেই কবে থেকেই রাত হয়ে আছে। সেখানে তো শুধু অন্ধকার আর অন্ধকার। সূর্যের বিন্দুমাত্র দেখা নেই। সে রাতে কতবার আছড়ে পড়েছে ‘আশ্বিনের ঝড়’ ‘কালবৈশাখী’, পাড় ভেঙে হৃদয়ের দুকুল প্লাবিত করে দিয়েছে মনের নাফ নদী। গাছপুড়া মানুষপুড়া দাবানলের আগুন দাউদাউ করে পুড়িয়ে দিয়েছে মনের বসতভিটে। সে রাতের যে সকাল হওয়ার নাম নেই! শুধু অন্ধকারেই মুখ ঢুকিয়ে বসে আছে। মনে মনে বিড়বিড় করে আতিফ। মনের দেওয়ালে আঁচড় টানে মনের কালি। মনের কথনে সুর বাঁধে যন্ত্রণার বাঁশি। মনের অন্ধকারে নেমে আসে আরও ঘন রাত। পাশের খেতি থেকে ভেসে আসছে ঝিঁঝিঁর ডাক। দূরে শিয়ালের হুক্কাহুয়া। মিহি করে ভেসে আসছে সাপের ব্যাং ধরার করুণ শব্দ। ‘ক্যাঁচ’ করে একটা শব্দ গেঙড়ে উঠল! সাদ্দাম পা তুলে শাট হয়ে শুলো খাটিয়াটার একপাশে। বালিশে রাখা মাথা ঘুরিয়ে বলল, “আয়, শুয়ে পড়। ভোর ভোর উঠতে হবে।”

“নাহ, শুব না। শুলে হবে না। এখনই রওনা দিতে হবে।” থুতনি সরু হয়ে উঠল আতিফের। ‘তড়াক’ করে উঠল সাদ্দাম। চোখে বিস্ময়। “এখন রাত কটা বাজে, জানিস? এই চত্বরে এত রাতে বের হওয়া কতটা বিপদের তা তোর আন্দাজও নেই। আমি জানি। আমি আড়াই বছর ধরে এখানে আছি। এখানকার পানি-হাওয়া কি কথা বলে, তা আমিই জানি। তুই হয়ত জানিস না, এখন বাংলাদেশ সরকার প্রত্যেক রোহিঙ্গার পায়ে সন্দেহের বেড়ি পরিয়ে দিয়েছে। পায়ের পাওঠায় পাওঠায় পাতা থাকে তাদের গোপন আড়কাঠি।” মেজাজ কুসুম গরম হয়ে ওঠে সাদ্দামের। এলাকার চালচুলোর আভাস দেয়। দেয় গোয়েন্দাদের হাঁড়ির খবর। আতিফ তার একগুঁয়েমিকে রশা দিয়ে আরও কড়া করে বাঁধে। বলে, “আমাদের জীবন শেয়ালের, নেড়ি কুত্তার, রাতবিরেত বলে কোনও শব্দ নেই। আরাম আয়েশ কবেই হারাম হয়ে গেছে। এখন একটা মিনিট নষ্ট করা মানে, ভুলের ‘পরে ভুল করা। জীবন থেকে জীবনকে হারিয়ে ফেলা। আমাদের জীবনকে কেউ যদি ছাগলের খাল ছাড়ানোর মতো ছাড়িয়ে নেয়, তবুও আমাদের উচিৎ, সত্যের জন্যে ‘ভ্যা’ করে যাওয়া। মৃত্যু আমাদের কানের দুল, গলার হার। মৃত্যুভয়ের জন্যে আমাদেরকে ঘরে শুয়ে থাকতে হবে? এত মোমের মানুষ আমরা কবে হলাম, সাদ্দাম? তুই হয়ত ভুলে যাচ্ছিস, আমরা জীবনের কাঠিতে কবেই বারুদ লাগিয়ে নিয়েছি। এতে আগুন লাগবে তো এখন আর তখন কী।”

চলবে...

আগের পর্ব পড়ুন

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

 

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

বক্তব্য রাখছেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নির্বাচন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের নৌ পরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডক্টর এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্প্রতি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব লর্ডসে মানবাধিকার সংগঠন ‘ভয়েস ফর বাংলাদেশ’ আয়োজিত সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

‘ডিসকাশন অন ডেমোক্রেটিক কলাপ্স অ্যান্ড রিবিল্ডিং অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সম্মেলনে হাউস অব লর্ডসের সিনিয়র সদস্য আলেক্সান্ডার চার্লস কার্লাইল কিউসি সভাপতিত্ব করেন। ভয়েস ফর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্রডকাস্টার আতাউল্লাহ ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্মেলেনে সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী পল স্কালি বলেন, বাংলাদেশে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তার সঠিক তদন্ত শেষে যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে করে এ ধরনের ঘটনার পুররাবৃত্তি না হয়।

লর্ড হোসাইন বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সব সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে সব ধরনের সহায়তা পাবে।

সম্মেলনে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান লেবার দলীয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুপা হক।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
ধামরাইয়ে শ্রমিকবাহী বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪