শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক

 

“মানুষ উদ্ধার।“
“মানুষ উদ্ধার! স্পিডবোডে আর ক-জন ধরবে? তা ছাড়া এখন তো সীমান্ত সিল। কোনো রোহিঙ্গাই তো আর নদী পেরিয়ে ইচ্ছেমতো এখানে আসতে পারবে না। বিজিবির কড়া নজরদারি রয়েছে। তাদের চোখে ধুলো দেওয়া মানে, নিশ্চিত মৃত্যু।“
“ধুলো দিতে হবে কী মূলো দিতে হবে, সেসব তোর ব্যাপার। আমাকে নাফ নদীতে যেতে হবে এবং আমার পরিবারকে উদ্ধার করে এখানে আনতে হবে, এটাই শেষ কথা। এবার কী করতে হবে না হবে সেটা তুই ভাব।“
“পরিবার! তোর পরিবার!” আকাশ থেকে পড়ল সাদ্দাম।
“হ্যাঁ, আমার পরিবার। আমার আব্বা, মা, ভাই, ভাবি, ভাইপো সবাই এখন নাফ নদীতে।“
“তুই বলছিস কী!”
“হ্যাঁ, আমি ঠিকই বলছি।“
“তা জানলি কী করে?”
“ফোনে। আব্বাদের নৌকোদের সঙ্গে একই সঙ্গে একটা নৌকো ছিল। সেই নৌকোর কোনো লোক ফোন করেছিল। আসলে, হয়েছিল কী, আমার কোনো ভাই হয়ত ওই লোকটার ফোন থেকে আমাকে ফোন করেছিল, তখন আমার ফোন বন্ধ ছিল। যেহেতু আমার ফোনে ‘মিসডকল অ্যালারট’ সার্ভিস অন ছিল, তাই পরে আমি ওই নম্বর থেকে ‘মিসডকল’ দেখতে পাই। আমি কার ফোন না কার ফোন বলে, কলব্যাক করি, তখন ওই ভদ্রলোক ফোনটা রিসিভ করেন এবং আব্বাদের নাফ নদীতে ভেসে থাকার ব্যাপারটা বলেন।“
“তোর বাড়ির কারোর সঙ্গে সরাসরি কথা হয়নি?”
“নাহ, লোকটাকে যখন আমি ফোন করি, তখন আমাদের বাড়ির নৌকোটা ওদের নাগালের বাইরে চলে গেছিল।“
“পরে আর কন্টাক করিসনি?”
“একবার নয়, দুবার নয়, বহুবার করেছি। পাইনি। বলছে, স্যুইচঅফ। আমার মনে হয়, মোবাইলে চার্জ নেই।“
“তাহলে তো একটা স্পিডবোড জোগাড় করতেই হয়।“ সাদ্দামের মনটা তড়াক করে ওঠে। সে যেন একটা নাড়ির টান অনূভব করে।
সাদ্দামের সঙ্গে আতিফের রক্তের কোনো সম্পর্ক নেই। সে মংডুর ফাতাংজার লোক। ‘রোহিঙ্গা জেহাদি ফৌজ’এ এসে তাদের আলাপ। সাদ্দাম মূলত আর জে এফ’এর হয়ে গুপ্তচরের কাজ করে। তরুণ ছেলেদের মগজ ধোলাই করে আর জে এফ’এ ঢোকানো তার কাজ। সে বয়সে আতিফের মাথামাথি। তার চিমটে শরীরের হাড়ে হাড়ে বুদ্ধি। তার চিথোল কপালের ডানদিকে একটা কাটা দাগ আছে। দাগটা অনেকটা ইংরাজি জে অক্ষরের মতো। উজ্জ্বল তামাটে রঙের সাদ্দামের মাথায় ঝাঁকড়া চুল। মুখে চাপ দাড়ি। হাল্কা ফিনফিনে গোঁফ।
ঝড়ের লেজের ঝাপটায় চটের দরজাটা উৎপটাং হয়ে সাদ্দামের পিঠের উপর দিয়ে উড়ে গিয়ে পেছনের চুলের হিপ্পিতে ঠেকল। ঠান্ডা হলহলে বাতাস হলহল করে ঘরে ঢুকছে। গায়ে কাঁটা দিচ্ছে আশ্বিনের কালহা। আতিফ উদেম দরজা দিয়ে বাইরে দেখছে, পলিথিনের ছাপুর ঘরগুলোর চালা ঝড়ের আউড়িবাউড়ি বেঁধে একে একে শুকনো পাতার মতো উড়ে যাচ্ছে। যেভাবে উড়ে যাচ্ছে ধানগাছের শীষ, পাতা। এই নদী তীরবর্তী পলিজমির ধানি ক্ষেতির মাঝে এই ত্রিপলের ছাউনিগুলো যেন আগাছার মতো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। যেন বড্ড বেমানান। আর ঝড় এসে সেই আগাছাগুলোকেই বেশি বেশি করে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতি যেন এই অস্থায়ী বসতভিটের উপর রুষ্ট। কিন্তু মানুষ তো প্রকৃতি থেকে আলাদা কেউ নয়। মানুষ তো প্রকৃতিরই সন্তান। ধান যেমন মানুষের ফসল। ঠিক তেমনই মানুষ ঈশ্বরের ফসল। আর সব ফসলই প্রকৃতির কোলে বেড়ে ওঠে। পুষ্ট হয়। ফুল ফল দেয়। গন্ধ ছড়ায়।

আতিফ দেখছে, যেসব রোহিঙ্গারা এখনো এই অস্থায়ী মাথা গোঁজার চালাছাউনি পায়নি, তারা এই ঘোর দুর্যোগে ঘাসের, ধানের ঝোপ আঁকড়ে আকাশের দিকে পিঠ করে, উপুড় হয়ে শুইয়ে আছে। মাথার তলায় বাড়ি থেকে বয়ে নিয়ে আসা পোঁটলাপুঁটলির বালিশ। পিঠের উপর সাট করে পেড়ে রাখা বস্তার থলে। মানুষ কুকুর শেয়ালের থেকেও খারাপ ভাবে বেঁচে আছে। আতিফ ভাবে, এই শরীরে রুহু দাঁত কামড়ে কেন যে পড়ে আছে? এতে শরীরেরও ছড়াদ, জানেরও ছড়াদ। জীবন এখানে ডালের খোসা ছাড়ানোর মতো যাঁতাকলে অনবরত পেষন খাচ্ছে। পড়পড় করে উঠে যাচ্ছে, তার ছালচামড়া। তবুও এ শরীর রুহুকে ছাড়তে চায় না। রুহুকে আঁকড়ে ধরে রাখতে চায়। মাংস যায় যাক, চামড়া যায় যাক, রক্ত আর হাড় থাকলেই হল। ওতেই ঠনঠন করে বাড়ি মেরে বেঁচে থাকবে। থপথপ করে হাটবে জীবন। মাথার উপরের পড়পড়, টপটপ, সাঁ সাঁ, খচমচ শব্দ ধীরে ধীরে কমে আসছে। বাতাসের ঝাপটার বেগও একটু একটু করে মরে আসছে। আশ্বিনের সর্বনেশে ঝড়টার তেজ কমে আসছে। জানালার খোপ দিয়ে তার আধমরা আস্ফালনটা হুড়ুম হুড়ুম করছে।
“চাচাজির খবর কী? শরীরের অবস্থা?” জানতে চাইল সাদ্দাম।
“ভালো না। এমনিতে তো বিছানাগত ছিলই। লোকটা ফোনে যেটুকু আভাস দিয়েছিলেন, তাতে আব্বার কন্ডিশন খুবই সিরিয়াস। ‘যাই যাই’ অবস্থা। জানি না, আজ আর বেঁচে আছে কি না!” আতিফের গলা ভারী হয়ে ওঠে।
“তুই, টেনশান করিস না। চাচাজী সুস্থই থাকবেন।“
“এসব কথার কথা সাদ্দাম, বলতে হয় তাই বলছিস। বাস্তব তো অন্য কথা বলছে। আব্বার যা অবস্থা ছিল, তাতে তার পক্ষে আর বেঁচে থাকা কোনোমতেই সম্ভব নয়।“
“তুই এভাবে বলতে পারিস না। হায়াত-মউতের মালিক আল্লাহ। তিনি যদি বাঁচিয়ে রাখেন তো চাচাজি নিশ্চয় বেঁচে আছেন।“
“তোর কথায় যেন সত্যি হয়। আমাদের স্বাধীন দেশের জন্যে আব্বার বেঁচে থাকাটা যে খুবই জরুরি। আব্বার যে দাফনের মাটিটুকু পাওয়া বড্ড প্রয়োজন।“
“হ্যাঁ, তুই যেন স্বপ্নটার কথা একদিন বলছিলি। তুই এসব মানিস?”
“দেখ, আমি বিজ্ঞানের ছাত্র ঠিকই, কোনো বুজরকি, কুসংস্কারে আমি বিশ্বাস করি না। কিন্তু, এই ব্যাপারটা যেন আমার অন্তরকে অনবরত ভাবায়। আমার এতদিনের বদ্ধমূল ধারণায় অনবরত হাতুড়ি ঠুকে। কেমন যেন মনের মধ্যে একটু একটু করে বিশ্বাস জন্মে উঠছে। আমার ক্যালকুলাস, কোয়ান্টাম থিউরির উপর গেঁড়ে বসছে জিন-পরি, ফেরেশতা আর রাতের খোয়াব। আমি অলৌকিক বিশ্বাসে বিশ্বাসী হয়ে উঠছি।“
“মানুষের নিজের মন দুর্বল হয়ে গেলে, নিজে নিঃস্ব হয়ে গেলে, সে টাকায় নিঃস্ব নয়, ভাবনায়, আপনজনে, আত্মীয়-কুটুমে নিঃস্ব, একা হয়ে গেলে, মনে এসব বিশ্বাস দানা বাঁধে। মানুষ তখন, নিজের বুদ্ধিতে নয়, হাওয়া-বাতাসের কাছে নিজেকে সঁপে দেয়। তখন মাথার মগজের থেকে কাঁধের ফেরেশতার প্রতি বেশি বিশ্বাস জন্মায়। মানুষ তখন জিন-ফেরেশতার তুরকি নাচনে নাচে। হাঁটে। খায়। অর্থাৎ যাপন করে।“
“আব্বার স্বপ্নাদেশটা যাইই হোক, যত বুজরকি, শেরেকি হোক না কেন, আমাদের চেষ্টা করতে তো কোনো ক্ষতি নেই? কী আর দিতে হবে, হাতের তিনমুঠো মাটি। সাড়ে তিন হাত মাটির উপরে একটা কবর। এতে তো আর রাষ্ট্রও চলে যাচ্ছে না, রাজপাটও চলে যাচ্ছে না। ক-দিনের আর মাটি দখল? বড়জোর ছ-মাস, এক বছর, না হয় দু-বছরই হলো, পচে তো সেই মাটিই হয়ে যাবে? কবর কখনো চির দখলের জায়গা নয়। কানো মৌরসিপাট্টাও নয়। শুধু রক্ত-মাংসের দেহটা পচে মাটি হওয়া পর্যন্ত কদিনের ঠাঁই মাত্র।“
“একটা ‘কবর’ মানেই যে আজ একটা ‘দেশ’। কবরের মাটি পাওয়া মানেই তো দেশ পাওয়া। আল্লাহ যেন চাচাজির কপালে ‘দাফনের মাটি’ লিখে রাখেন।“
“ঝড় মনে হয় থেমে আসছে, তুই বোটটার ব্যবস্থা কর।“ বাইরের ঝড় থেমে আসলে, মনের ঝড় ওঠে। আতিফের মন তার পরিবারের জন্যে আনচান করে উঠল।
“কাজটা বড্ড কঠিন, তবে অসম্ভব নয়, দেখি, ব্যবস্থা করতে পারি কি না। বিজিবির নয়াপাড়া রিজিয়ন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট সৈয়দ হাসান মির্জা খুবই কড়া ধাতের, তাঁকে বশে আনা মুশকিল। কুতুপালং রিজিয়ন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার মারুফ হাসানকে দিয়ে কাজটা করাতে হবে। তাঁর টাকার উপর বড্ড লোভ। টাকার টোপ দিলেই হলো, ব্যস, কাজ হাশিল।“
“দেখ, এই এলাকায় কে কীসে মুখ দেন, ঘাসে না গোবরে, কে কীসে বশ হন, টাকায় না নারীতে, কে কীসের গন্ধে মজেন, নোটে না ঘোঁটে, সেসব নাড়িনক্ষত্র তোর হাড়ে হাড়ে জানা। ফলে, যা করবি, তুইই করবি, আমি তো এখানে ঠুঁটো জগন্নাথ। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া তো কিছুই করার নেই।“
“সকাল হোক, ব্যবস্থা ঠিক একটা হয়ে যাবে। আপাতত যেখানে বসে আছিস, সেখান থেকে একটু সরে বস। ত্রিপল ফুটো হয়ে পানি পড়বে।“ সাদ্দামের কথায় পই করে মাথা তুলে উপরে ছাদের দিকে তাকাল আতিফ। এক নান জল ত্রিপলের উপর জমে কালো ত্রিপলটা ন-মাসের পোয়াতি মেয়ের পেটের মতো ফুলে উঠেছে! যেকোনো মুহূর্তে ভার সামলাতে না পেরে ত্রিপল ফুটো হয়ে নিচে পড়বে। টুলটা পাশে সরিয়ে বসল আতিফ। সাদ্দামকে বলল, “একটা কিছু দিয়ে উপরের দিকে ঠেলা দিয়ে পানিটা ফেলে দে।“
“হু, দিচ্ছি।“ বলেই সাদ্দাম ঘরের উত্তর-পশ্চিম কোণের দিকে গডগড করে হেঁটে গেল। গোপন আস্তানায় রাখা একটা এ কে সাতচল্লিশ রাইফেল হাতে নিয়ে, জলের ভারে ঝুলে থাকা ত্রিপলটার একটু পাশে দাঁড়িয়ে, রাইফেলের নলের ডগা দিয়ে উপরের দিকে মারল ঠেলা। আতিফ চোখ ছানাবড়া করে বলল, “পানি ফেলতেও এ কে ফট্টি সেভেন! এ তো কথাটা ঘুরে বললে, পানি মারতে কামান দাগা।“

চলবে…

আগের পর্ব পড়ুন

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

এসএন  

Header Ad
Header Ad

খিলগাঁওয়ের আগুনে পুড়ে ছাই ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল

ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলা মার্কেটের পাশের একটি স’মিলে শুক্রবার রাত ৭টা ৩০ মিনিটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ৯টা ৩৫ মিনিটে এই আগুন নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। আগুনে প্রায় ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল পুড়ে গেছে।

আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, কেমিক্যাল ড্রাম বিস্ফোরণে স’মিলে লাগা আগুন চারদিক ছড়িয়ে পড়ে।

তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘খিলগাঁওয়ের আগুনে আনুমানিক ২০টি দোকান এবং দুটি স মিল পুড়েছে। আগুনে হয়তো কেমিক্যাল ড্রাম বিস্ফোরিত হয়েছে; যার ফলে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের নয়টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে আরো চারটি ইউনিট ছিল, তবে সেগুলোকে কাজ করতে হয়নি।

লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আগুনে কেউ নিখোঁজ রয়েছে এমন কোনো সংবাদ আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত আসেনি। এ ছাড়া আমরা এখন পর্যন্ত আহত ও নিহতের কোনো সংবাদ পাইনি।’

আগুনের উৎসটি কি ছিল প্রাথমিকভাবে জানা গেছে কিনা প্রশ্ন করা হলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই মুহূর্তে এ বিষয়ে বলা যাবে না তদন্ত ছাড়া। সিগারেটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে নাকি স্যাবোটেজ হয়েছে— এই প্রত্যেকটা বিষয়ে আমাদের তদন্ত করে দেখতে হবে।

অনেকগুলো সোর্স থেকে আগুনের সৃষ্টি হতে পারে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেও আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তাই তদন্ত ছাড়া এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।’
এদিকে, দুই ঘণ্টা ধরে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ জানান, ‘শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সেখানে আগুন লাগার খবর পাই।

প্রথমে আমাদের দুটি ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে আরো সাতটি ইউনিট যোগ দেয়। এরপর রাত ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন লাগার পরে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করতে ছুটে আসেন সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাবের সদস্যরা।’

তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স মিল থেকে আগুন গাড়ির গ্যারেজে ছড়িয়ে পড়ে। পরে গ্যারেজে থাকা বিভিন্ন গাড়িতে আগুন লেগে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এ সময় আশপাশের মানুষ ছোটাছুটি করতে থাকে। উৎসুক জনতার ভিড়ে ফায়ার সার্ভিসকে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেশ বেগ পেতে হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, ওই এলাকায় একটি গাড়ির গ্যারেজ ও রাবারের কাঁচামালের গোডাউন রয়েছে। কিছু গাড়ি বের করা সম্ভব হলেও অনেক গাড়ি পুড়ে গেছে।

খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দাউদ হোসেন বলেন, ‘ওই স মিল খিলগাঁও থানার কাছেই। পাশের একটি গাড়ির গ্যারেজেও আগুন ছড়িয়েছে। ক্রাউডের কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছিল।

 

Header Ad
Header Ad

পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  

ব্যবসায়ী আবুল বাসার ওরফে মিন্টু। ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী নগরীর পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো একটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে নগরীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চ সংলগ্ন এলাকার কাশবন থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, হত্যা করে কাশবনে ফেলে দেওয়া হয়েছে লাশটি।

নিহত ব্যক্তির নাম আবুল বাসার ওরফে মিন্টু (৩৫)। পেশায় ব্যবসায়ী মিন্টু নগরীর মির্জাপুর পূর্বপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। বিনোদপুর বাজারে তার ইলেকট্রিক ব্যবসার দোকান আছে।

নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম জানান, কাশবনে ঘুরতে আসা কয়েকজন লাশটি দেখে পুলিশে খবর দেয়। ঘুরতে আসা অনেকে লাশের ছবিটি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে শেয়ার করে। জানাজানির পর নিহতের পরিবার ঘটনাস্থলে এসে লাশটি শনাক্ত করে।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে মিন্টুর খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। কাশবনে তার মুখ পলিথিন দিয়ে ঢাকা ছিল। পলিথিনের ওপর স্কচটেপ প্যাঁচানো ছিল।

ওসি আরও বলেন, ‘আলামত দেখে মনে হয়েছে এটি হত্যাকাণ্ড। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে হত্যা মামলা হবে।’

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খিলগাঁওয়ের আগুনে পুড়ে ছাই ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল
পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  
সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম