মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক

 

“মানুষ উদ্ধার।“
“মানুষ উদ্ধার! স্পিডবোডে আর ক-জন ধরবে? তা ছাড়া এখন তো সীমান্ত সিল। কোনো রোহিঙ্গাই তো আর নদী পেরিয়ে ইচ্ছেমতো এখানে আসতে পারবে না। বিজিবির কড়া নজরদারি রয়েছে। তাদের চোখে ধুলো দেওয়া মানে, নিশ্চিত মৃত্যু।“
“ধুলো দিতে হবে কী মূলো দিতে হবে, সেসব তোর ব্যাপার। আমাকে নাফ নদীতে যেতে হবে এবং আমার পরিবারকে উদ্ধার করে এখানে আনতে হবে, এটাই শেষ কথা। এবার কী করতে হবে না হবে সেটা তুই ভাব।“
“পরিবার! তোর পরিবার!” আকাশ থেকে পড়ল সাদ্দাম।
“হ্যাঁ, আমার পরিবার। আমার আব্বা, মা, ভাই, ভাবি, ভাইপো সবাই এখন নাফ নদীতে।“
“তুই বলছিস কী!”
“হ্যাঁ, আমি ঠিকই বলছি।“
“তা জানলি কী করে?”
“ফোনে। আব্বাদের নৌকোদের সঙ্গে একই সঙ্গে একটা নৌকো ছিল। সেই নৌকোর কোনো লোক ফোন করেছিল। আসলে, হয়েছিল কী, আমার কোনো ভাই হয়ত ওই লোকটার ফোন থেকে আমাকে ফোন করেছিল, তখন আমার ফোন বন্ধ ছিল। যেহেতু আমার ফোনে ‘মিসডকল অ্যালারট’ সার্ভিস অন ছিল, তাই পরে আমি ওই নম্বর থেকে ‘মিসডকল’ দেখতে পাই। আমি কার ফোন না কার ফোন বলে, কলব্যাক করি, তখন ওই ভদ্রলোক ফোনটা রিসিভ করেন এবং আব্বাদের নাফ নদীতে ভেসে থাকার ব্যাপারটা বলেন।“
“তোর বাড়ির কারোর সঙ্গে সরাসরি কথা হয়নি?”
“নাহ, লোকটাকে যখন আমি ফোন করি, তখন আমাদের বাড়ির নৌকোটা ওদের নাগালের বাইরে চলে গেছিল।“
“পরে আর কন্টাক করিসনি?”
“একবার নয়, দুবার নয়, বহুবার করেছি। পাইনি। বলছে, স্যুইচঅফ। আমার মনে হয়, মোবাইলে চার্জ নেই।“
“তাহলে তো একটা স্পিডবোড জোগাড় করতেই হয়।“ সাদ্দামের মনটা তড়াক করে ওঠে। সে যেন একটা নাড়ির টান অনূভব করে।
সাদ্দামের সঙ্গে আতিফের রক্তের কোনো সম্পর্ক নেই। সে মংডুর ফাতাংজার লোক। ‘রোহিঙ্গা জেহাদি ফৌজ’এ এসে তাদের আলাপ। সাদ্দাম মূলত আর জে এফ’এর হয়ে গুপ্তচরের কাজ করে। তরুণ ছেলেদের মগজ ধোলাই করে আর জে এফ’এ ঢোকানো তার কাজ। সে বয়সে আতিফের মাথামাথি। তার চিমটে শরীরের হাড়ে হাড়ে বুদ্ধি। তার চিথোল কপালের ডানদিকে একটা কাটা দাগ আছে। দাগটা অনেকটা ইংরাজি জে অক্ষরের মতো। উজ্জ্বল তামাটে রঙের সাদ্দামের মাথায় ঝাঁকড়া চুল। মুখে চাপ দাড়ি। হাল্কা ফিনফিনে গোঁফ।
ঝড়ের লেজের ঝাপটায় চটের দরজাটা উৎপটাং হয়ে সাদ্দামের পিঠের উপর দিয়ে উড়ে গিয়ে পেছনের চুলের হিপ্পিতে ঠেকল। ঠান্ডা হলহলে বাতাস হলহল করে ঘরে ঢুকছে। গায়ে কাঁটা দিচ্ছে আশ্বিনের কালহা। আতিফ উদেম দরজা দিয়ে বাইরে দেখছে, পলিথিনের ছাপুর ঘরগুলোর চালা ঝড়ের আউড়িবাউড়ি বেঁধে একে একে শুকনো পাতার মতো উড়ে যাচ্ছে। যেভাবে উড়ে যাচ্ছে ধানগাছের শীষ, পাতা। এই নদী তীরবর্তী পলিজমির ধানি ক্ষেতির মাঝে এই ত্রিপলের ছাউনিগুলো যেন আগাছার মতো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। যেন বড্ড বেমানান। আর ঝড় এসে সেই আগাছাগুলোকেই বেশি বেশি করে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতি যেন এই অস্থায়ী বসতভিটের উপর রুষ্ট। কিন্তু মানুষ তো প্রকৃতি থেকে আলাদা কেউ নয়। মানুষ তো প্রকৃতিরই সন্তান। ধান যেমন মানুষের ফসল। ঠিক তেমনই মানুষ ঈশ্বরের ফসল। আর সব ফসলই প্রকৃতির কোলে বেড়ে ওঠে। পুষ্ট হয়। ফুল ফল দেয়। গন্ধ ছড়ায়।

আতিফ দেখছে, যেসব রোহিঙ্গারা এখনো এই অস্থায়ী মাথা গোঁজার চালাছাউনি পায়নি, তারা এই ঘোর দুর্যোগে ঘাসের, ধানের ঝোপ আঁকড়ে আকাশের দিকে পিঠ করে, উপুড় হয়ে শুইয়ে আছে। মাথার তলায় বাড়ি থেকে বয়ে নিয়ে আসা পোঁটলাপুঁটলির বালিশ। পিঠের উপর সাট করে পেড়ে রাখা বস্তার থলে। মানুষ কুকুর শেয়ালের থেকেও খারাপ ভাবে বেঁচে আছে। আতিফ ভাবে, এই শরীরে রুহু দাঁত কামড়ে কেন যে পড়ে আছে? এতে শরীরেরও ছড়াদ, জানেরও ছড়াদ। জীবন এখানে ডালের খোসা ছাড়ানোর মতো যাঁতাকলে অনবরত পেষন খাচ্ছে। পড়পড় করে উঠে যাচ্ছে, তার ছালচামড়া। তবুও এ শরীর রুহুকে ছাড়তে চায় না। রুহুকে আঁকড়ে ধরে রাখতে চায়। মাংস যায় যাক, চামড়া যায় যাক, রক্ত আর হাড় থাকলেই হল। ওতেই ঠনঠন করে বাড়ি মেরে বেঁচে থাকবে। থপথপ করে হাটবে জীবন। মাথার উপরের পড়পড়, টপটপ, সাঁ সাঁ, খচমচ শব্দ ধীরে ধীরে কমে আসছে। বাতাসের ঝাপটার বেগও একটু একটু করে মরে আসছে। আশ্বিনের সর্বনেশে ঝড়টার তেজ কমে আসছে। জানালার খোপ দিয়ে তার আধমরা আস্ফালনটা হুড়ুম হুড়ুম করছে।
“চাচাজির খবর কী? শরীরের অবস্থা?” জানতে চাইল সাদ্দাম।
“ভালো না। এমনিতে তো বিছানাগত ছিলই। লোকটা ফোনে যেটুকু আভাস দিয়েছিলেন, তাতে আব্বার কন্ডিশন খুবই সিরিয়াস। ‘যাই যাই’ অবস্থা। জানি না, আজ আর বেঁচে আছে কি না!” আতিফের গলা ভারী হয়ে ওঠে।
“তুই, টেনশান করিস না। চাচাজী সুস্থই থাকবেন।“
“এসব কথার কথা সাদ্দাম, বলতে হয় তাই বলছিস। বাস্তব তো অন্য কথা বলছে। আব্বার যা অবস্থা ছিল, তাতে তার পক্ষে আর বেঁচে থাকা কোনোমতেই সম্ভব নয়।“
“তুই এভাবে বলতে পারিস না। হায়াত-মউতের মালিক আল্লাহ। তিনি যদি বাঁচিয়ে রাখেন তো চাচাজি নিশ্চয় বেঁচে আছেন।“
“তোর কথায় যেন সত্যি হয়। আমাদের স্বাধীন দেশের জন্যে আব্বার বেঁচে থাকাটা যে খুবই জরুরি। আব্বার যে দাফনের মাটিটুকু পাওয়া বড্ড প্রয়োজন।“
“হ্যাঁ, তুই যেন স্বপ্নটার কথা একদিন বলছিলি। তুই এসব মানিস?”
“দেখ, আমি বিজ্ঞানের ছাত্র ঠিকই, কোনো বুজরকি, কুসংস্কারে আমি বিশ্বাস করি না। কিন্তু, এই ব্যাপারটা যেন আমার অন্তরকে অনবরত ভাবায়। আমার এতদিনের বদ্ধমূল ধারণায় অনবরত হাতুড়ি ঠুকে। কেমন যেন মনের মধ্যে একটু একটু করে বিশ্বাস জন্মে উঠছে। আমার ক্যালকুলাস, কোয়ান্টাম থিউরির উপর গেঁড়ে বসছে জিন-পরি, ফেরেশতা আর রাতের খোয়াব। আমি অলৌকিক বিশ্বাসে বিশ্বাসী হয়ে উঠছি।“
“মানুষের নিজের মন দুর্বল হয়ে গেলে, নিজে নিঃস্ব হয়ে গেলে, সে টাকায় নিঃস্ব নয়, ভাবনায়, আপনজনে, আত্মীয়-কুটুমে নিঃস্ব, একা হয়ে গেলে, মনে এসব বিশ্বাস দানা বাঁধে। মানুষ তখন, নিজের বুদ্ধিতে নয়, হাওয়া-বাতাসের কাছে নিজেকে সঁপে দেয়। তখন মাথার মগজের থেকে কাঁধের ফেরেশতার প্রতি বেশি বিশ্বাস জন্মায়। মানুষ তখন জিন-ফেরেশতার তুরকি নাচনে নাচে। হাঁটে। খায়। অর্থাৎ যাপন করে।“
“আব্বার স্বপ্নাদেশটা যাইই হোক, যত বুজরকি, শেরেকি হোক না কেন, আমাদের চেষ্টা করতে তো কোনো ক্ষতি নেই? কী আর দিতে হবে, হাতের তিনমুঠো মাটি। সাড়ে তিন হাত মাটির উপরে একটা কবর। এতে তো আর রাষ্ট্রও চলে যাচ্ছে না, রাজপাটও চলে যাচ্ছে না। ক-দিনের আর মাটি দখল? বড়জোর ছ-মাস, এক বছর, না হয় দু-বছরই হলো, পচে তো সেই মাটিই হয়ে যাবে? কবর কখনো চির দখলের জায়গা নয়। কানো মৌরসিপাট্টাও নয়। শুধু রক্ত-মাংসের দেহটা পচে মাটি হওয়া পর্যন্ত কদিনের ঠাঁই মাত্র।“
“একটা ‘কবর’ মানেই যে আজ একটা ‘দেশ’। কবরের মাটি পাওয়া মানেই তো দেশ পাওয়া। আল্লাহ যেন চাচাজির কপালে ‘দাফনের মাটি’ লিখে রাখেন।“
“ঝড় মনে হয় থেমে আসছে, তুই বোটটার ব্যবস্থা কর।“ বাইরের ঝড় থেমে আসলে, মনের ঝড় ওঠে। আতিফের মন তার পরিবারের জন্যে আনচান করে উঠল।
“কাজটা বড্ড কঠিন, তবে অসম্ভব নয়, দেখি, ব্যবস্থা করতে পারি কি না। বিজিবির নয়াপাড়া রিজিয়ন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট সৈয়দ হাসান মির্জা খুবই কড়া ধাতের, তাঁকে বশে আনা মুশকিল। কুতুপালং রিজিয়ন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার মারুফ হাসানকে দিয়ে কাজটা করাতে হবে। তাঁর টাকার উপর বড্ড লোভ। টাকার টোপ দিলেই হলো, ব্যস, কাজ হাশিল।“
“দেখ, এই এলাকায় কে কীসে মুখ দেন, ঘাসে না গোবরে, কে কীসে বশ হন, টাকায় না নারীতে, কে কীসের গন্ধে মজেন, নোটে না ঘোঁটে, সেসব নাড়িনক্ষত্র তোর হাড়ে হাড়ে জানা। ফলে, যা করবি, তুইই করবি, আমি তো এখানে ঠুঁটো জগন্নাথ। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া তো কিছুই করার নেই।“
“সকাল হোক, ব্যবস্থা ঠিক একটা হয়ে যাবে। আপাতত যেখানে বসে আছিস, সেখান থেকে একটু সরে বস। ত্রিপল ফুটো হয়ে পানি পড়বে।“ সাদ্দামের কথায় পই করে মাথা তুলে উপরে ছাদের দিকে তাকাল আতিফ। এক নান জল ত্রিপলের উপর জমে কালো ত্রিপলটা ন-মাসের পোয়াতি মেয়ের পেটের মতো ফুলে উঠেছে! যেকোনো মুহূর্তে ভার সামলাতে না পেরে ত্রিপল ফুটো হয়ে নিচে পড়বে। টুলটা পাশে সরিয়ে বসল আতিফ। সাদ্দামকে বলল, “একটা কিছু দিয়ে উপরের দিকে ঠেলা দিয়ে পানিটা ফেলে দে।“
“হু, দিচ্ছি।“ বলেই সাদ্দাম ঘরের উত্তর-পশ্চিম কোণের দিকে গডগড করে হেঁটে গেল। গোপন আস্তানায় রাখা একটা এ কে সাতচল্লিশ রাইফেল হাতে নিয়ে, জলের ভারে ঝুলে থাকা ত্রিপলটার একটু পাশে দাঁড়িয়ে, রাইফেলের নলের ডগা দিয়ে উপরের দিকে মারল ঠেলা। আতিফ চোখ ছানাবড়া করে বলল, “পানি ফেলতেও এ কে ফট্টি সেভেন! এ তো কথাটা ঘুরে বললে, পানি মারতে কামান দাগা।“

চলবে…

আগের পর্ব পড়ুন

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

এসএন  

Header Ad
Header Ad

বিদ্যুৎ খাতে ১৫ বছরে ৭২ হাজার কোটি টাকার লুটপাট

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিদ্যুৎ খাতকে কেন্দ্র করে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দ্রুত সরবরাহ আইন (কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট আইন) প্রণয়ন করে দায়মুক্তি দেওয়ার মাধ্যমে এই খাতে লুটপাটের মডেল তৈরি হয়। গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনায় ঘুষ, কমিশন, এবং অপ্রয়োজনীয় সক্ষমতার কারণে জনগণের ওপর ৭২ হাজার কোটি টাকার বোঝা চাপানো হয়েছে।

২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৫,৭০০ মেগাওয়াট থেকে বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৩২,০০০ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে। এ সময়ে শতাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে বেশিরভাগ প্রকল্প দ্রুত সরবরাহ আইনের আওতায় অনুমোদন পাওয়ায় উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার সুযোগ বন্ধ ছিল।

বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে ৩০ থেকে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার দুর্নীতির মাধ্যমে লুট হয়েছে।

মহাপরিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুতের চাহিদা ৩০,০০০ মেগাওয়াট ধরা হলেও, পরে এই লক্ষ্যমাত্রা ৪০,০০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়। চাহিদার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করায় অপ্রয়োজনীয় সক্ষমতা তৈরি হয়। এই অতিরিক্ত সক্ষমতার জন্য ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বাবদ প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার অপচয় হয়েছে।

বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেছেন, “উচ্চমাত্রার লক্ষ্য নির্ধারণ করে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এর ফলে জনগণের কাঁধে ভাড়া ও অন্যান্য ব্যয়ের বোঝা চেপেছে।”

শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্যে সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন নির্মাণ এবং মিটার কেনাকাটায় বিপুল অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। তবে এসব খাতে দুর্নীতির বিস্তারিত চিত্র এখনও স্পষ্ট নয়।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিদ্যুৎ খাতে এ ধরনের দুর্নীতি অর্থনীতিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সরকারের উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের ফলে জনগণকে অযৌক্তিকভাবে অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে হয়েছে।

প্রস্তাবিত সমাধান:

- বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি কমাতে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে প্রকল্প অনুমোদন।
- দায়মুক্তি আইন বাতিল করে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
- শ্বেতপত্রে বিস্তারিত তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতির চিত্র প্রকাশ।
- অপ্রয়োজনীয় সক্ষমতা বন্ধ এবং বিদ্যুতের চাহিদা অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ।

বিদ্যুৎ খাতের এই সংকট উত্তরণে জনসাধারণ, বিশেষজ্ঞ এবং গণমাধ্যমের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

Header Ad
Header Ad

সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় নাগরিক আটক

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে মো. নাজির উদ্দিন কার্তিক (২৫) আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে নওগাঁ ব্যাটালিয়নের (১৬ বিজিবি) বিজিবি সদস্যরা গোমস্তাপুর উপজেলার কেতাব বাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন।

আজ মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ১৬ বিজিবির গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো এক হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

নওগাঁ ব্যাটালিয়নের (১৬ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বাংগাবাড়ি বিজিবির নিয়মিত টহল দল মঙ্গলবার সকালে সীমান্ত পিলার ২০৪/এমপি হতে আনুমানিক ১ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যান্তরে কেতাব বাজার এলাকায় টহল পরিচালনা করছিলেন। টহল দেওয়ার সময় একজন ব্যক্তির গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে বিজিবির সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি অসংলগ্ন বক্তব্য দিতে থাকেন। পরে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি স্বীকার করেন তিনি ভারতীয় নাগরিক। ওই ব্যক্তির ভাষ্যমতে তাঁর নাম, নাজির উদ্দিন কার্তিক। তিনি ভারতের বিহার রাজ্যের কাঠিয়ার জেলার আবাদপুর থানার গাবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। তল্লাশী করে ওই ব্যক্তির কাছ ভারতীয় ১০ রুপি এবং বাংলাদেশী ২৫০ টাকা পাওয়া গেছে। তাঁর কাছ থেকে কোনো পাসপোর্ট বা বৈধ ডকুমেন্ট পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে আটক পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রম চলমান আছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Header Ad
Header Ad

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশি জানলেই হয়রানি

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় ভ্রমণ ও চিকিৎসার কাজে যাওয়া বাংলাদেশিরা সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক হয়রানির শিকার হচ্ছেন। চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এবং বিজেপি সমর্থকদের লংমার্চ কর্মসূচি ঘিরে এই হয়রানির মাত্রা বেড়ে গেছে।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) থেকে আগরতলায় হোটেল ভাড়া না পেয়ে বাংলাদেশি পর্যটকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বাসিন্দা ফরিদ মিয়া জানান, হোটেল ভাড়া নেওয়ার পর মুসলিম এবং বাংলাদেশি হওয়ায় তাকে এক ঘণ্টার মধ্যেই হোটেল থেকে বের করে দেওয়া হয়। টাকা ফেরত না পেয়ে তিনি বাধ্য হয়ে শহরের বাইরে আত্মীয়ের বাড়িতে রাত কাটান এবং পরদিন দেশে ফিরে আসেন।

আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টে বাঁশের বেড়া দিয়ে চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সীমান্ত পারাপারের সময় বাংলাদেশিদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হচ্ছে। আখাউড়া স্থলবন্দরে ফিরে আসা যাত্রীরা জানিয়েছেন, সীমান্তে বাংলাদেশিদের হুমকি ও হয়রানির মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান শিলচরে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ারে জামদানি শাড়ির একটি স্টল দিয়েছিলেন। সেখানে একদল যুবক "জয় শ্রী রাম" স্লোগান দিয়ে তার দোকানে হামলা চালায়। হামলাকারীরা দোকান ভাঙচুর করে এবং সমস্ত টাকা-পয়সা লুটপাট করে নিয়ে যায়।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি অতিরিক্ত সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। বিজিবি ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জাবের বিন জব্বার জানিয়েছেন, সীমান্তে কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশিরা এমন হয়রানি ও বৈষম্যমূলক আচরণের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে এর সমাধানের জন্য দুই দেশের সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা নিরসনে কূটনৈতিক পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিদ্যুৎ খাতে ১৫ বছরে ৭২ হাজার কোটি টাকার লুটপাট
সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় নাগরিক আটক
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশি জানলেই হয়রানি
প্রতিবেশী রাষ্ট্রের গোলামি করতে স্বাধীনতা অর্জন করিনি: সোহেল তাজ
মাইক্রোসফটের সমীক্ষায় ভুয়া খবর ছড়ানোর শীর্ষে ভারত
আগরতলার বাংলাদেশ হাইকমিশনে কনস্যুলার সেবা বন্ধ
একটি ইস্যু দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক মূল্যায়ন করা যাবে না : ভারতীয় হাইকমিশনার
জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ
শান্তিরক্ষী বাহিনীর ভূমিকা মমতা বোঝেন কিনা, নিশ্চিত নই: শশী থারুর
যমুনার চর কেটে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ
২০২৩ সালে সর্বোচ্চ দুর্নীতি পাসপোর্ট, বিআরটিএ ও আইনশৃঙ্খলায়
শেখ হাসিনার পতন কোনোভাবেই মানতে পারছেন না ভারত : রিজভী
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে জরুরি তলব
সেনাবাহিনীর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, এসএসসি পাসেই আবেদনের সুযোগ
এস আলম পরিবারের ৩৫০ ব্যাংক হিসাবের সন্ধান
২৮ বিয়ে প্রসঙ্গে যা বললেন নায়িকা রোমানা
বাংলাদেশিদের সেবা দেবে না ত্রিপুরার কোনো হোটেল–রেস্তোরাঁ
ভারত সফরে আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন
‘বাংলাদেশি কনস্যুলেটে হামলা প্রতিবেশীদের মধ্যে বিবাদের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে’
বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলায় ৩ পুলিশ বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ৭