শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক

 

“ওই ভরসা নিয়েই থাক। আর ভেতরে ভেতরে মরণের পানিটা নাকে উঠে আসুক।“ মুখ ভ্যাংচাল মতি। মাথাটাকে হাঁটুর ভাঁজে ঢুকিয়ে দিয়ে দাঁত দিয়ে মন কাটতে লাগল। নুহুর মাথায় তখন ঠকঠক করছে নূহনবীর জলোচ্ছ্বাসের কথা। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ নবী নূহ। তাঁর সময়ে ক্রমবর্ধমান মানবকূলে শিরক ও কুসংস্কারের আবির্ভাব ঘটে এবং তা বিস্তৃতি লাভ করে। ফলে তাদের সংশোধনের জন্যে আল্লাহ নূহ-কে নবী করে পাঠান। তিনি সাড়ে নয়শ বছরের জীবন লাভ করেছিলেন। তিনি পথভ্রষ্ট মানুষকে আল্লাহর পথে আনার জন্যে ‘দাওয়াত’ দিতে থাকেন। কিন্তু তাঁর কওম তাঁকে প্রত্যাখান করে। ফলে আল্লাহর গজব নেমে আসে। নূহ আল্লাহর আদেশে গফার কাঠের বিশাল এক নৌকো নির্মাণ করেন এবং প্রত্যেক প্রাণিকুল এক জোড়া করে এবং তাঁর সময়ের ঈমানদার অর্থাৎ যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল তাদের নিয়ে সাগরে রওনা দেন। এরপর আল্লাহ তাঁর গোত্রে মহাপ্লাবনের সৃষ্টি করেন। এতে পাহাড়-পর্বতও জলের নিচে তলিয়ে যায়। কাফেরসহ সব প্রাণীকুল ধ্বংস হয়ে যায়। পরে আল্লাহর নির্দেশে প্লাবনের জল কমে গেলে নূহনবী তাঁর সহযাত্রীদের নিয়ে আবার নতুন করে জীবন ধারণ করা শুরু করেন।

আউড়িবাউড়ি পাকিয়ে একটা জল-ঝড় নৌকোতে মারণ কামড় দিল! নৌকোর খোল কানায় কানায় ভরে গেল জলে। নুহু ছিটকে পড়ল নদীতে। কালবাহুশ নদীর মিশমিশে অন্ধকার বুকে ‘ঝপাং’ করে একটা জান ছেঁড়া শব্দ কামড় দিয়ে উঠল! মতি আঁতকে উঠল, “নুহু!”
মাথার ওপরে নীল রঙের একটা পলিথিন চুড়িদারের ওড়নার মতো প্যালপ্যাল করে উড়ছে। এমনভাবে তড়পাচ্ছে যেন মনে হচ্ছে বাঁধন ছিঁড়ে উড়ে যাবে। হাওয়াটাও যে ভারি দুষ্টু। একেবারে মোষের মতো শিং ঢিপাচ্ছে! নীল রঙের এই পলিথিনটাই ছাদ! বাঁশের খুঁটি আর কাঠের ঠেকা দিয়ে কোনোরকমে মাথা গোঁজার চালাটা খাড়া করা। ফাঁকফোকরগুলো ন্যাকড়া ট্যাকড়া দিয়ে তাপ্তিতাপ্তা মেরে আঁটা আছে। চালায় চালা জোড়া। একটা ডাপের সঙ্গে আরেকটা ডাপ খাঁজ কেটে বাঁধা। কোথাও কোথাও আবার একটা লম্বা পলিথিনের তলায় দু-তিনটে খুপরি ঘর। উপর থেকে দেখে মনে হবে, আস্ত একটা পলিথিনের দেশ।

আশেপাশে লকলক করছে ঘন সবুজ আমন ধান। ধানের পেটে গিজগিজ করছে থোড়। কোনো কোনো গাছে থোড় ফেটে বেরিয়ে গেছে শীষ। সুক্ষ্ম সুক্ষ্ম সাদা রেণু। ধান গাছের আলে থিকথিক করছে মানুষ। কোনো কোনো ধানি জমি পায়ে পিষে লেপ্টে গেছে। সেই ঘাড় ভাঙা কোমর ভাঙা ধান গাছের জমিতে গড়ে উঠেছে ভিটে ছাড়া দেশ ছাড়া মানুষের বসতি। মানুষ আর কাদা এক হয়ে গেছে। অভুক্ত, বুভুক্ষ, কঙ্কালসার মানুষগুলোকে যেন শকুনেও খাবে না। চোখ খুঁটলে ঢুকে গেছে। বাতির হাড় দাঁত বের করে খিলখিল করছে। এক একটা মানুষ যেন ঝড়ে ভাঙা এক একটা গাছ। এক একটা পরিবার যেন ঝড়ে উপড়ানো এক একটা ঝোপ। কারও বাপ নেই তো কারও ছেলে নেই। কেউ স্বামী হারিয়েছেন তো কেউ হারিয়েছেন বউ। মা-শিশুদের কান্নায় কেঁপে উঠছে আল্লাহর আরশ।

সকাল থেকেই রেডিওতে সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছিল, বিকেলের পর যেকোনো সময় নাফ নদীর উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়। লোকজনকে সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসকে সত্যি প্রমাণিত করে সন্ধ্যার মুখেই আছড়ে পড়েছে ‘আশ্বিনের ঝড়’। আতিফ ঝড়ের মুখে পড়ে, কোনোরকমে কাদায় লেপ্টে সেপ্টে, জুতো হাতে করে, ধুমদুমিয়া গ্রামের এই নয়াপাড়া শরণার্থী শিবিরে পৌঁছতে পেরেছে! বাপের ভাগ্য ভালো, ধানের শীষের সাথে সাথে সেও ঝড়ে উড়ে যায়নি! ঝড় একেবারে ধান গাছের মাথা খেয়ে মানুষ খাওয়ার জন্যে ক্যাম্পটার দিকে ধেয়ে আসছে! যেন হাওয়া নয়, ধারালো ছুরি ধেয়ে আসছে! কোনো কোনো চালা থেকে খড়কুটোর মতো উড়ে যাচ্ছে ধানের নাড়ার চালা। পলিথিনের ছাউনি। পোঁটলাপুঁটলি। হাওয়ার যা বেগ তাতে মানুষও উড়ে যাওয়ার উপক্রম! গরু-ছাগলের ‘ব্যা’ ‘ব্যা’ ‘হাম্বা’ ‘হাম্বা’ হাওয়ার গতির সাথে বাড়ছে। হাওয়াতে ল্যাকপ্যাক করে উড়তে থাকা ধূসর রঙের চটের পর্দাটা টেনে হুটপাট করে ভেতরে ঢুকল আতিফ। আগে আগে সাদ্দাম। বলদের মতো হাপাচ্ছে আতিফ।

সাদ্দামও ধোকাচ্ছে হুপ হুপ করে। একটা শুকনো লুঙ্গি আতিফকে দিয়ে বলল, “এটা পরে নে। গায়ের সব ভিজে গেছে। ঠান্ডা লেগে যাবে।“ সাদ্দাম লুঙ্গিটা আতিফকে দিয়ে, নিজে একটা বারমোডা পরে নিল। পরনের ভেজা কাপড়গুলো বাঁশের ডাপটায় ঝুলিয়ে দিল।
“এখানে বস।“ একটা লাল রঙের ফাইব্রারের টুল এগিয়ে দিয়ে বলল সাদ্দাম। পরনের শুকনো লুঙ্গিটা গুটিয়ে আতিফ বসতেই টুলটা ‘কচ’ করে উঠল।
“সাবধানে, টুলটা ফাটা আছে।“ সতর্ক করল সাদ্দাম।
“ওহ, আচ্ছা।“ ঘাড় হেলালো আতিফ। ঝড়টার দাঁতলা মুখ, লাল চোখ, নেকড়ের মতো গর্জন এমনভাবে হাম্বিতাম্বি করছে, যেন এই পলিথিনের চালা চাটাইয়ের ঘরটাকে শেকড়সহ উপড়ে নিয়ে যাবে! ঝড়ের হাওয়াই হাবলা হয়ে যাওয়া চটের পর্দাটার ফাঁক দিয়ে ঘোলা দৃষ্টি ফেলল আতিফ। ঝড় ‘গ’ ‘গ’ করে ছোবল মারছে। আলো-আঁধারি আকাশে ধুলো, পলিথিনের চালা, কাপড়, ন্যাকড়া সব খড়কুটোর মতো উড়ে যাচ্ছে! মেঘ আর বাড়ি যেন এক হয়ে যাচ্ছে! জীবন আর মৃত্যু যেন একই ঢোলে পিটছে কাঠি! এ যেন মৃত্যুর বাজনা, ধ্বংসের হুঙ্কার। শিকড় থেকে প্রাণ ছিড়ে নিয়ে যাওয়ার খোল-করতাল। আর এসবের মাঝে নুয়ে পড়া ধান গাছের মতো মুসড়ে পড়া চালা-চাটায়ের বসতি কষ্টের যন্ত্রণার মাতম গাহাচ্ছে। আতিফ দেখছে, একটা ঝড় কীভাবে জ্বলজ্যান্ত দেহ থেকে মুড়িমুড়কির মতো উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে প্রাণ। গাছের হলুদ পাতার মতো কত সহজে ঝরিয়ে দিচ্ছে জীবনের রুহু। এজন্যেই তো কথায় বলে মুহূর্তে সব ধ্বংস করে দিতে, আল্লাহর এক ‘ফুঁ’ই যথেষ্ট।
“সমুদ্রের মুখে নিশ্চয় এর চেয়ে বেশি ঝড় হচ্ছে!” কেমন একটা খেয়ালহীন ভাবে বলল আতিফ।
“সে তো অবশ্যই। সমুদ্র বলে কথা। সমুদ্রই তো ঝড়ের আঁতুড়ঘর। আগুন যেমন ঘি পেলে আরও ‘দপ’ করে ওঠে, ঝড়ও তো নদী কিম্বা সমুদ্র পেলে ফোঁস করে ওঠে। ঝড়ের পৌরুষ তখন ‘দপ’ করে বেড়ে যায়। সে তখন নাবালক শিশু থেকে ভয়ংকর দানব হয়ে ওঠে!” সাদ্দামের চোখ গোল হয়ে ওঠে। তার হৃদপিণ্ডে ‘আশ্বিনের ঝড়’টা যেন হাড়ের ঘা মারল! চোখে মৃত্যুভয়ের আজরাইলি কাঠি ছুঁইয়ে বলল, “আজ নদীতে কত মানুষ যে মরবে, তার ইয়াত্তা নেই!”
“অনেকগুলো নৌকো একসাথে জোড় বেঁধে কলোনি গড়ে থাকলে, নিশ্চয়, অত ঝড় লাগবে না।“ আতিফের কণ্ঠে আশ্বস্তের সুর।
“যা ঝড় বইছে, তাতে ওসব কিচ্ছু মানবে না। সব নৌকো উল্টে দেবে।“
“নৌকোর মাঝি দক্ষ থাকলে, ঝড়ের পক্ষে নৌকো উলটানো অত সহজ হবে না।“
“কে বলল? নৌকোই শূন্যে তুলে উল্টে দেবে তো মাঝি কোন ছাই! ও মাঝি কিছু টের পাওয়ার আগেই, নৌকো পানির তলে। নৌকো বেঁচে থাকলে পরেই তো মাঝির কেরামতি? নৌকোই যদি না ভেসে থাকে তো মাঝি বৈঠা নিয়ে কী পালোয়ানগিরি দেখাবে?”
“সে তো ঠিক। কিন্তু, নৌকো যদি পারে ভিড়ে থাকে তবে?”
“তবে বাঁচার একটা সম্ভাবনা থাকবে। নৌকো পারে লেগে থাকলে, ঝড় অত ঝাপটা মারতে পারবে না।“
“আচ্ছা, সাগরের মুখে নাফ নদীটা কি খুব চওড়া?”
“অনেকটাই চওড়া। ওখানে নদী তো রীতিমত সমুদ্র!”
“তাহলে তো আশা খুবই কম!” কিছু একটা আশংকা করে আতিফ।
“তুই কীসের আশার কথা বলছিস?” জানতে চায় সাদ্দাম।
“বেঁচে থাকার আশার কথা।“
“কার বেঁচে থাকা? কীসের বেঁচে থাকা? তুই তখন থেকে কেমন যেন একটা হেঁয়ালি মেরে মেরে কথা বলছিস, আসল ব্যাপারটা কী বলত? নদীতে কি তোর কেউ আছে?”
“আছে’! হয়ত বা এখনও ‘আছে’। ঝড়ের যা মাতলামি, তাতে এখনও ‘থাকলে’ সেটা আল্লাহর মোজেজা। তোর কথায় যেন সত্যি হয় রে।“ কণ্ঠ ভিজে আসে আতিফের।
“কী যে বলছিস, আমি কিছুই বুঝতে পারছি নে! যাককে, তোর মনের কথা তোর মনেই পুষে রাখ। আমার অত জেনেবুঝে লাভ নেই। এবার কাজের কথায় আসি, এই লটের সংখ্যাটা কিন্তু অনেক বেশি। ইয়ং ছেলেরা হুড়হুড় করে আসছে।“
“আজ ওসবের জন্যে আমি আসিনি, সাদ্দাম।“
“ওসবের জন্যে আসিসনি মানে!” সাদ্দামের চোখে বিস্ময়।
“আচ্ছা, এখান থেকে মোহনাটা কতদূর বলত?”
“মোহনা? মানে, নাফ নদীর মোহনা?”
“হ্যাঁ, নাফ নদীর কথাই বলছি।“
“তা না না করে, পঞ্চাশ-ষাট কিমি তো হবেই।“
“নৌকো ছাড়া অন্য কোন শর্টকাট পথ?”
“হ্যাঁ, আছে, হেলিকপ্টার অথবা বিমান।“
“এই, ইয়ার্কি করিস না, আমি সিরিয়াস জানতে চায়ছি।“
“আরে বাবা, নদীতে যাবি, তাতে নৌকো ছাড়া আবার কীসে যাবি?”
“না, আমি বলছিলাম কী লঞ্চ বা স্পিডবোড, এসব আর কী।“
“সেসবও আছে, তবে সেসব তো সীমান্তরক্ষীবাহিনীরা ব্যবহার করেন। নাফ নদী যেহেতু বর্ডার নদী, তাই ওসব দুরন্ত জলযান সাধারণ মানুষদের জন্যে নিষেধ। তা ছাড়া এখন যেহেতু হুলুস্থুল চলছে তাই আরও কড়াকড়ি।“
“যেভাবেই হোক, আমার জন্যে একটা স্পিডবোড ম্যানেজ করতে হবে।“
“তোর কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে? নদীতে ওসব অবৈধভাবে নামতে দেখলেই, এপারের বিজিবি অথবা বাংলাদেশ নৌবাহিনী আর ওপারের মায়ানমার সেনা অথবা মায়ানমার নৌবাহিনীর ব্রাউন ওয়াটার নেভী’র সদস্যরা হয় গ্রেপ্তার করবেন অথবা গুলি করে মেরে দেবেন।“
“আমি ওসব কিছুই শুনতে চাই না। তোকে আমাকে একটা স্পিডবোড ম্যানেজ করে দিতেই হবে। সেটা আগামীকাল সকালের মধ্যেই।“ গো ধরে আতিফ।
“এটা কি মামা বাড়ির মোয়া, যে চায়লেই পাওয়া যাবে?” খচে ওঠে সাদ্দাম।
“আমি জানি, তোর এই চত্বরে লম্বা হাত। বিজিবির সাথে তোর ব্যাপক দহরমমহরম। তুই চেষ্টা করলেই পারবি।“
“আচ্ছা, আগে বলত, তুই হঠাৎ স্পিডবোড নিয়ে কী করবি? তোর মাথায় এই স্পিডবোডের ভূত আচানক কেন চাপল?” দড়ির খাটিয়াটা থেকে উঠে দাঁড়াল সাদ্দাম।
“বলব, বলব, সব বলব, তোকে সব না বললে আমার কাজ কী করে হবে? তুইই তো আমার একমাত্র ভরসা।“
“কী যে বলিস না, তুই, তুই হচ্ছিস আর জে এফ’এর কমান্ডার আর আমি হচ্ছি কি না একজন সামান্য অধঃস্থন কর্মী। কোথায় চাঁদ আর কোথায় বামুন!”
“সবাই সব জায়গার বাঘ হয় না। ডাঙায় বাঘ যতই ‘বাঘ’ হোক, পানিতে কিন্তু কুমিরই ‘রাজা’, মনে রাখিস। সবার একএকটা নিজস্ব তল্লাট থাকে। সেই তল্লাটের সেই রাজা। তুই হচ্ছিস, নয়াচরের দেওয়ালের পেছনের সম্রাট। বাঘেরও বাঘ। এক সাদ্দাম হুসেন ছিলেন ইরাকের বীর শাসক, আর তুই সাদ্দাম হচ্ছিস কি এই নয়াপাড়া, কুতুপালংএর একচ্ছত্র শাসক। তুই এই সামান্য কাজটা করবি তো অত আঁকুপাঁকু করছিস কেন?” সাদ্দামকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে ওপরে তোলে আতিফ। খুঁচ ধরনের কিছু একটা ধা করে চাটাইয়ের ছোট্ট খুপরি জানালা দিয়ে ভেতরে ঢুকল। ‘স্যাত’ করে আতিফের কানের পাশ দিয়ে ছুটে গিয়ে বাঁশের চাটাইয়ের দেওয়ালে লাগল! আতিফ ‘বাপ গ’ বলে ঘাড় বাঁকাল। সাদ্দাম তড়বড় করে হেঁটে গিয়ে জানালার পাল্লাদুটো ‘হড়াম’ করে লাগিয়ে দিল। আতিফ চোখ ফেড়ে দেখল, গাব গাছের একটা শুকনো ডাল! ঝড়ে উড়ে এসে ঘরের ভেতর ঢুকে পড়েছে।
“আর একটু হলে চোখটাই যাচ্ছিল রে!” আঁতকে ওঠে আতিফ।
“এখনো যাবে না তারই বা কী মানে আছে। ঝড় তো এখনো মধ্যযৌবনে!“ আলগোছে বলল সাদ্দাম।
“শালা, যত খারাপ কপাল আমার! যেখানেই যাচ্ছি আপদ ফেউ’এর মতো লেগে থাকছে! বিপদের ফাঁড়া যেন কোনোভাবেই কাটছে না।“ কপাল ঢুকে আতিফ।
“আমাদের তো জন্ম থেকেই পোড়া কপাল। যেখানে জন্মালাম সেখানেই তো ঠাই পেলাম না। নিজের দেশই যদি পর করে দেয়, তাহলে তো পরপর করবেই। দূরদূর করবেই। কপালে দানাকড়িও জুটবে না। এ কপালের তো বিপদ আপদই অলংকার?” চটের দরজার আড়ালে আড়াল করে দাঁড়িয়ে বিড়বিড় করে উঠল সাদ্দাম। তারপর হাওয়াই হলহল করে উড়তে থাকা ঝুলন্ত চটটাকে আরও টেনে দিয়ে বলল, “হ্যাঁ, এবার বল, স্পিডবোড কী করবি?”

চলবে...

আগের পর্ব পড়ুন

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

এসএন  

 

Header Ad
Header Ad

খিলগাঁওয়ের আগুনে পুড়ে ছাই ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল

ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলা মার্কেটের পাশের একটি স’মিলে শুক্রবার রাত ৭টা ৩০ মিনিটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ৯টা ৩৫ মিনিটে এই আগুন নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। আগুনে প্রায় ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল পুড়ে গেছে।

আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, কেমিক্যাল ড্রাম বিস্ফোরণে স’মিলে লাগা আগুন চারদিক ছড়িয়ে পড়ে।

তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘খিলগাঁওয়ের আগুনে আনুমানিক ২০টি দোকান এবং দুটি স মিল পুড়েছে। আগুনে হয়তো কেমিক্যাল ড্রাম বিস্ফোরিত হয়েছে; যার ফলে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের নয়টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে আরো চারটি ইউনিট ছিল, তবে সেগুলোকে কাজ করতে হয়নি।

লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আগুনে কেউ নিখোঁজ রয়েছে এমন কোনো সংবাদ আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত আসেনি। এ ছাড়া আমরা এখন পর্যন্ত আহত ও নিহতের কোনো সংবাদ পাইনি।’

আগুনের উৎসটি কি ছিল প্রাথমিকভাবে জানা গেছে কিনা প্রশ্ন করা হলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই মুহূর্তে এ বিষয়ে বলা যাবে না তদন্ত ছাড়া। সিগারেটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে নাকি স্যাবোটেজ হয়েছে— এই প্রত্যেকটা বিষয়ে আমাদের তদন্ত করে দেখতে হবে।

অনেকগুলো সোর্স থেকে আগুনের সৃষ্টি হতে পারে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেও আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তাই তদন্ত ছাড়া এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।’
এদিকে, দুই ঘণ্টা ধরে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ জানান, ‘শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সেখানে আগুন লাগার খবর পাই।

প্রথমে আমাদের দুটি ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে আরো সাতটি ইউনিট যোগ দেয়। এরপর রাত ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন লাগার পরে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করতে ছুটে আসেন সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাবের সদস্যরা।’

তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স মিল থেকে আগুন গাড়ির গ্যারেজে ছড়িয়ে পড়ে। পরে গ্যারেজে থাকা বিভিন্ন গাড়িতে আগুন লেগে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এ সময় আশপাশের মানুষ ছোটাছুটি করতে থাকে। উৎসুক জনতার ভিড়ে ফায়ার সার্ভিসকে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেশ বেগ পেতে হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, ওই এলাকায় একটি গাড়ির গ্যারেজ ও রাবারের কাঁচামালের গোডাউন রয়েছে। কিছু গাড়ি বের করা সম্ভব হলেও অনেক গাড়ি পুড়ে গেছে।

খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দাউদ হোসেন বলেন, ‘ওই স মিল খিলগাঁও থানার কাছেই। পাশের একটি গাড়ির গ্যারেজেও আগুন ছড়িয়েছে। ক্রাউডের কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছিল।

 

Header Ad
Header Ad

পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  

ব্যবসায়ী আবুল বাসার ওরফে মিন্টু। ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী নগরীর পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো একটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে নগরীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চ সংলগ্ন এলাকার কাশবন থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, হত্যা করে কাশবনে ফেলে দেওয়া হয়েছে লাশটি।

নিহত ব্যক্তির নাম আবুল বাসার ওরফে মিন্টু (৩৫)। পেশায় ব্যবসায়ী মিন্টু নগরীর মির্জাপুর পূর্বপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। বিনোদপুর বাজারে তার ইলেকট্রিক ব্যবসার দোকান আছে।

নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম জানান, কাশবনে ঘুরতে আসা কয়েকজন লাশটি দেখে পুলিশে খবর দেয়। ঘুরতে আসা অনেকে লাশের ছবিটি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে শেয়ার করে। জানাজানির পর নিহতের পরিবার ঘটনাস্থলে এসে লাশটি শনাক্ত করে।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে মিন্টুর খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। কাশবনে তার মুখ পলিথিন দিয়ে ঢাকা ছিল। পলিথিনের ওপর স্কচটেপ প্যাঁচানো ছিল।

ওসি আরও বলেন, ‘আলামত দেখে মনে হয়েছে এটি হত্যাকাণ্ড। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে হত্যা মামলা হবে।’

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খিলগাঁওয়ের আগুনে পুড়ে ছাই ২০টি দোকান ও দুটি স’মিল
পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  
সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম