বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক

 

“ওই ভরসা নিয়েই থাক। আর ভেতরে ভেতরে মরণের পানিটা নাকে উঠে আসুক।“ মুখ ভ্যাংচাল মতি। মাথাটাকে হাঁটুর ভাঁজে ঢুকিয়ে দিয়ে দাঁত দিয়ে মন কাটতে লাগল। নুহুর মাথায় তখন ঠকঠক করছে নূহনবীর জলোচ্ছ্বাসের কথা। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ নবী নূহ। তাঁর সময়ে ক্রমবর্ধমান মানবকূলে শিরক ও কুসংস্কারের আবির্ভাব ঘটে এবং তা বিস্তৃতি লাভ করে। ফলে তাদের সংশোধনের জন্যে আল্লাহ নূহ-কে নবী করে পাঠান। তিনি সাড়ে নয়শ বছরের জীবন লাভ করেছিলেন। তিনি পথভ্রষ্ট মানুষকে আল্লাহর পথে আনার জন্যে ‘দাওয়াত’ দিতে থাকেন। কিন্তু তাঁর কওম তাঁকে প্রত্যাখান করে। ফলে আল্লাহর গজব নেমে আসে। নূহ আল্লাহর আদেশে গফার কাঠের বিশাল এক নৌকো নির্মাণ করেন এবং প্রত্যেক প্রাণিকুল এক জোড়া করে এবং তাঁর সময়ের ঈমানদার অর্থাৎ যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল তাদের নিয়ে সাগরে রওনা দেন। এরপর আল্লাহ তাঁর গোত্রে মহাপ্লাবনের সৃষ্টি করেন। এতে পাহাড়-পর্বতও জলের নিচে তলিয়ে যায়। কাফেরসহ সব প্রাণীকুল ধ্বংস হয়ে যায়। পরে আল্লাহর নির্দেশে প্লাবনের জল কমে গেলে নূহনবী তাঁর সহযাত্রীদের নিয়ে আবার নতুন করে জীবন ধারণ করা শুরু করেন।

আউড়িবাউড়ি পাকিয়ে একটা জল-ঝড় নৌকোতে মারণ কামড় দিল! নৌকোর খোল কানায় কানায় ভরে গেল জলে। নুহু ছিটকে পড়ল নদীতে। কালবাহুশ নদীর মিশমিশে অন্ধকার বুকে ‘ঝপাং’ করে একটা জান ছেঁড়া শব্দ কামড় দিয়ে উঠল! মতি আঁতকে উঠল, “নুহু!”
মাথার ওপরে নীল রঙের একটা পলিথিন চুড়িদারের ওড়নার মতো প্যালপ্যাল করে উড়ছে। এমনভাবে তড়পাচ্ছে যেন মনে হচ্ছে বাঁধন ছিঁড়ে উড়ে যাবে। হাওয়াটাও যে ভারি দুষ্টু। একেবারে মোষের মতো শিং ঢিপাচ্ছে! নীল রঙের এই পলিথিনটাই ছাদ! বাঁশের খুঁটি আর কাঠের ঠেকা দিয়ে কোনোরকমে মাথা গোঁজার চালাটা খাড়া করা। ফাঁকফোকরগুলো ন্যাকড়া ট্যাকড়া দিয়ে তাপ্তিতাপ্তা মেরে আঁটা আছে। চালায় চালা জোড়া। একটা ডাপের সঙ্গে আরেকটা ডাপ খাঁজ কেটে বাঁধা। কোথাও কোথাও আবার একটা লম্বা পলিথিনের তলায় দু-তিনটে খুপরি ঘর। উপর থেকে দেখে মনে হবে, আস্ত একটা পলিথিনের দেশ।

আশেপাশে লকলক করছে ঘন সবুজ আমন ধান। ধানের পেটে গিজগিজ করছে থোড়। কোনো কোনো গাছে থোড় ফেটে বেরিয়ে গেছে শীষ। সুক্ষ্ম সুক্ষ্ম সাদা রেণু। ধান গাছের আলে থিকথিক করছে মানুষ। কোনো কোনো ধানি জমি পায়ে পিষে লেপ্টে গেছে। সেই ঘাড় ভাঙা কোমর ভাঙা ধান গাছের জমিতে গড়ে উঠেছে ভিটে ছাড়া দেশ ছাড়া মানুষের বসতি। মানুষ আর কাদা এক হয়ে গেছে। অভুক্ত, বুভুক্ষ, কঙ্কালসার মানুষগুলোকে যেন শকুনেও খাবে না। চোখ খুঁটলে ঢুকে গেছে। বাতির হাড় দাঁত বের করে খিলখিল করছে। এক একটা মানুষ যেন ঝড়ে ভাঙা এক একটা গাছ। এক একটা পরিবার যেন ঝড়ে উপড়ানো এক একটা ঝোপ। কারও বাপ নেই তো কারও ছেলে নেই। কেউ স্বামী হারিয়েছেন তো কেউ হারিয়েছেন বউ। মা-শিশুদের কান্নায় কেঁপে উঠছে আল্লাহর আরশ।

সকাল থেকেই রেডিওতে সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছিল, বিকেলের পর যেকোনো সময় নাফ নদীর উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়। লোকজনকে সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসকে সত্যি প্রমাণিত করে সন্ধ্যার মুখেই আছড়ে পড়েছে ‘আশ্বিনের ঝড়’। আতিফ ঝড়ের মুখে পড়ে, কোনোরকমে কাদায় লেপ্টে সেপ্টে, জুতো হাতে করে, ধুমদুমিয়া গ্রামের এই নয়াপাড়া শরণার্থী শিবিরে পৌঁছতে পেরেছে! বাপের ভাগ্য ভালো, ধানের শীষের সাথে সাথে সেও ঝড়ে উড়ে যায়নি! ঝড় একেবারে ধান গাছের মাথা খেয়ে মানুষ খাওয়ার জন্যে ক্যাম্পটার দিকে ধেয়ে আসছে! যেন হাওয়া নয়, ধারালো ছুরি ধেয়ে আসছে! কোনো কোনো চালা থেকে খড়কুটোর মতো উড়ে যাচ্ছে ধানের নাড়ার চালা। পলিথিনের ছাউনি। পোঁটলাপুঁটলি। হাওয়ার যা বেগ তাতে মানুষও উড়ে যাওয়ার উপক্রম! গরু-ছাগলের ‘ব্যা’ ‘ব্যা’ ‘হাম্বা’ ‘হাম্বা’ হাওয়ার গতির সাথে বাড়ছে। হাওয়াতে ল্যাকপ্যাক করে উড়তে থাকা ধূসর রঙের চটের পর্দাটা টেনে হুটপাট করে ভেতরে ঢুকল আতিফ। আগে আগে সাদ্দাম। বলদের মতো হাপাচ্ছে আতিফ।

সাদ্দামও ধোকাচ্ছে হুপ হুপ করে। একটা শুকনো লুঙ্গি আতিফকে দিয়ে বলল, “এটা পরে নে। গায়ের সব ভিজে গেছে। ঠান্ডা লেগে যাবে।“ সাদ্দাম লুঙ্গিটা আতিফকে দিয়ে, নিজে একটা বারমোডা পরে নিল। পরনের ভেজা কাপড়গুলো বাঁশের ডাপটায় ঝুলিয়ে দিল।
“এখানে বস।“ একটা লাল রঙের ফাইব্রারের টুল এগিয়ে দিয়ে বলল সাদ্দাম। পরনের শুকনো লুঙ্গিটা গুটিয়ে আতিফ বসতেই টুলটা ‘কচ’ করে উঠল।
“সাবধানে, টুলটা ফাটা আছে।“ সতর্ক করল সাদ্দাম।
“ওহ, আচ্ছা।“ ঘাড় হেলালো আতিফ। ঝড়টার দাঁতলা মুখ, লাল চোখ, নেকড়ের মতো গর্জন এমনভাবে হাম্বিতাম্বি করছে, যেন এই পলিথিনের চালা চাটাইয়ের ঘরটাকে শেকড়সহ উপড়ে নিয়ে যাবে! ঝড়ের হাওয়াই হাবলা হয়ে যাওয়া চটের পর্দাটার ফাঁক দিয়ে ঘোলা দৃষ্টি ফেলল আতিফ। ঝড় ‘গ’ ‘গ’ করে ছোবল মারছে। আলো-আঁধারি আকাশে ধুলো, পলিথিনের চালা, কাপড়, ন্যাকড়া সব খড়কুটোর মতো উড়ে যাচ্ছে! মেঘ আর বাড়ি যেন এক হয়ে যাচ্ছে! জীবন আর মৃত্যু যেন একই ঢোলে পিটছে কাঠি! এ যেন মৃত্যুর বাজনা, ধ্বংসের হুঙ্কার। শিকড় থেকে প্রাণ ছিড়ে নিয়ে যাওয়ার খোল-করতাল। আর এসবের মাঝে নুয়ে পড়া ধান গাছের মতো মুসড়ে পড়া চালা-চাটায়ের বসতি কষ্টের যন্ত্রণার মাতম গাহাচ্ছে। আতিফ দেখছে, একটা ঝড় কীভাবে জ্বলজ্যান্ত দেহ থেকে মুড়িমুড়কির মতো উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে প্রাণ। গাছের হলুদ পাতার মতো কত সহজে ঝরিয়ে দিচ্ছে জীবনের রুহু। এজন্যেই তো কথায় বলে মুহূর্তে সব ধ্বংস করে দিতে, আল্লাহর এক ‘ফুঁ’ই যথেষ্ট।
“সমুদ্রের মুখে নিশ্চয় এর চেয়ে বেশি ঝড় হচ্ছে!” কেমন একটা খেয়ালহীন ভাবে বলল আতিফ।
“সে তো অবশ্যই। সমুদ্র বলে কথা। সমুদ্রই তো ঝড়ের আঁতুড়ঘর। আগুন যেমন ঘি পেলে আরও ‘দপ’ করে ওঠে, ঝড়ও তো নদী কিম্বা সমুদ্র পেলে ফোঁস করে ওঠে। ঝড়ের পৌরুষ তখন ‘দপ’ করে বেড়ে যায়। সে তখন নাবালক শিশু থেকে ভয়ংকর দানব হয়ে ওঠে!” সাদ্দামের চোখ গোল হয়ে ওঠে। তার হৃদপিণ্ডে ‘আশ্বিনের ঝড়’টা যেন হাড়ের ঘা মারল! চোখে মৃত্যুভয়ের আজরাইলি কাঠি ছুঁইয়ে বলল, “আজ নদীতে কত মানুষ যে মরবে, তার ইয়াত্তা নেই!”
“অনেকগুলো নৌকো একসাথে জোড় বেঁধে কলোনি গড়ে থাকলে, নিশ্চয়, অত ঝড় লাগবে না।“ আতিফের কণ্ঠে আশ্বস্তের সুর।
“যা ঝড় বইছে, তাতে ওসব কিচ্ছু মানবে না। সব নৌকো উল্টে দেবে।“
“নৌকোর মাঝি দক্ষ থাকলে, ঝড়ের পক্ষে নৌকো উলটানো অত সহজ হবে না।“
“কে বলল? নৌকোই শূন্যে তুলে উল্টে দেবে তো মাঝি কোন ছাই! ও মাঝি কিছু টের পাওয়ার আগেই, নৌকো পানির তলে। নৌকো বেঁচে থাকলে পরেই তো মাঝির কেরামতি? নৌকোই যদি না ভেসে থাকে তো মাঝি বৈঠা নিয়ে কী পালোয়ানগিরি দেখাবে?”
“সে তো ঠিক। কিন্তু, নৌকো যদি পারে ভিড়ে থাকে তবে?”
“তবে বাঁচার একটা সম্ভাবনা থাকবে। নৌকো পারে লেগে থাকলে, ঝড় অত ঝাপটা মারতে পারবে না।“
“আচ্ছা, সাগরের মুখে নাফ নদীটা কি খুব চওড়া?”
“অনেকটাই চওড়া। ওখানে নদী তো রীতিমত সমুদ্র!”
“তাহলে তো আশা খুবই কম!” কিছু একটা আশংকা করে আতিফ।
“তুই কীসের আশার কথা বলছিস?” জানতে চায় সাদ্দাম।
“বেঁচে থাকার আশার কথা।“
“কার বেঁচে থাকা? কীসের বেঁচে থাকা? তুই তখন থেকে কেমন যেন একটা হেঁয়ালি মেরে মেরে কথা বলছিস, আসল ব্যাপারটা কী বলত? নদীতে কি তোর কেউ আছে?”
“আছে’! হয়ত বা এখনও ‘আছে’। ঝড়ের যা মাতলামি, তাতে এখনও ‘থাকলে’ সেটা আল্লাহর মোজেজা। তোর কথায় যেন সত্যি হয় রে।“ কণ্ঠ ভিজে আসে আতিফের।
“কী যে বলছিস, আমি কিছুই বুঝতে পারছি নে! যাককে, তোর মনের কথা তোর মনেই পুষে রাখ। আমার অত জেনেবুঝে লাভ নেই। এবার কাজের কথায় আসি, এই লটের সংখ্যাটা কিন্তু অনেক বেশি। ইয়ং ছেলেরা হুড়হুড় করে আসছে।“
“আজ ওসবের জন্যে আমি আসিনি, সাদ্দাম।“
“ওসবের জন্যে আসিসনি মানে!” সাদ্দামের চোখে বিস্ময়।
“আচ্ছা, এখান থেকে মোহনাটা কতদূর বলত?”
“মোহনা? মানে, নাফ নদীর মোহনা?”
“হ্যাঁ, নাফ নদীর কথাই বলছি।“
“তা না না করে, পঞ্চাশ-ষাট কিমি তো হবেই।“
“নৌকো ছাড়া অন্য কোন শর্টকাট পথ?”
“হ্যাঁ, আছে, হেলিকপ্টার অথবা বিমান।“
“এই, ইয়ার্কি করিস না, আমি সিরিয়াস জানতে চায়ছি।“
“আরে বাবা, নদীতে যাবি, তাতে নৌকো ছাড়া আবার কীসে যাবি?”
“না, আমি বলছিলাম কী লঞ্চ বা স্পিডবোড, এসব আর কী।“
“সেসবও আছে, তবে সেসব তো সীমান্তরক্ষীবাহিনীরা ব্যবহার করেন। নাফ নদী যেহেতু বর্ডার নদী, তাই ওসব দুরন্ত জলযান সাধারণ মানুষদের জন্যে নিষেধ। তা ছাড়া এখন যেহেতু হুলুস্থুল চলছে তাই আরও কড়াকড়ি।“
“যেভাবেই হোক, আমার জন্যে একটা স্পিডবোড ম্যানেজ করতে হবে।“
“তোর কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে? নদীতে ওসব অবৈধভাবে নামতে দেখলেই, এপারের বিজিবি অথবা বাংলাদেশ নৌবাহিনী আর ওপারের মায়ানমার সেনা অথবা মায়ানমার নৌবাহিনীর ব্রাউন ওয়াটার নেভী’র সদস্যরা হয় গ্রেপ্তার করবেন অথবা গুলি করে মেরে দেবেন।“
“আমি ওসব কিছুই শুনতে চাই না। তোকে আমাকে একটা স্পিডবোড ম্যানেজ করে দিতেই হবে। সেটা আগামীকাল সকালের মধ্যেই।“ গো ধরে আতিফ।
“এটা কি মামা বাড়ির মোয়া, যে চায়লেই পাওয়া যাবে?” খচে ওঠে সাদ্দাম।
“আমি জানি, তোর এই চত্বরে লম্বা হাত। বিজিবির সাথে তোর ব্যাপক দহরমমহরম। তুই চেষ্টা করলেই পারবি।“
“আচ্ছা, আগে বলত, তুই হঠাৎ স্পিডবোড নিয়ে কী করবি? তোর মাথায় এই স্পিডবোডের ভূত আচানক কেন চাপল?” দড়ির খাটিয়াটা থেকে উঠে দাঁড়াল সাদ্দাম।
“বলব, বলব, সব বলব, তোকে সব না বললে আমার কাজ কী করে হবে? তুইই তো আমার একমাত্র ভরসা।“
“কী যে বলিস না, তুই, তুই হচ্ছিস আর জে এফ’এর কমান্ডার আর আমি হচ্ছি কি না একজন সামান্য অধঃস্থন কর্মী। কোথায় চাঁদ আর কোথায় বামুন!”
“সবাই সব জায়গার বাঘ হয় না। ডাঙায় বাঘ যতই ‘বাঘ’ হোক, পানিতে কিন্তু কুমিরই ‘রাজা’, মনে রাখিস। সবার একএকটা নিজস্ব তল্লাট থাকে। সেই তল্লাটের সেই রাজা। তুই হচ্ছিস, নয়াচরের দেওয়ালের পেছনের সম্রাট। বাঘেরও বাঘ। এক সাদ্দাম হুসেন ছিলেন ইরাকের বীর শাসক, আর তুই সাদ্দাম হচ্ছিস কি এই নয়াপাড়া, কুতুপালংএর একচ্ছত্র শাসক। তুই এই সামান্য কাজটা করবি তো অত আঁকুপাঁকু করছিস কেন?” সাদ্দামকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে ওপরে তোলে আতিফ। খুঁচ ধরনের কিছু একটা ধা করে চাটাইয়ের ছোট্ট খুপরি জানালা দিয়ে ভেতরে ঢুকল। ‘স্যাত’ করে আতিফের কানের পাশ দিয়ে ছুটে গিয়ে বাঁশের চাটাইয়ের দেওয়ালে লাগল! আতিফ ‘বাপ গ’ বলে ঘাড় বাঁকাল। সাদ্দাম তড়বড় করে হেঁটে গিয়ে জানালার পাল্লাদুটো ‘হড়াম’ করে লাগিয়ে দিল। আতিফ চোখ ফেড়ে দেখল, গাব গাছের একটা শুকনো ডাল! ঝড়ে উড়ে এসে ঘরের ভেতর ঢুকে পড়েছে।
“আর একটু হলে চোখটাই যাচ্ছিল রে!” আঁতকে ওঠে আতিফ।
“এখনো যাবে না তারই বা কী মানে আছে। ঝড় তো এখনো মধ্যযৌবনে!“ আলগোছে বলল সাদ্দাম।
“শালা, যত খারাপ কপাল আমার! যেখানেই যাচ্ছি আপদ ফেউ’এর মতো লেগে থাকছে! বিপদের ফাঁড়া যেন কোনোভাবেই কাটছে না।“ কপাল ঢুকে আতিফ।
“আমাদের তো জন্ম থেকেই পোড়া কপাল। যেখানে জন্মালাম সেখানেই তো ঠাই পেলাম না। নিজের দেশই যদি পর করে দেয়, তাহলে তো পরপর করবেই। দূরদূর করবেই। কপালে দানাকড়িও জুটবে না। এ কপালের তো বিপদ আপদই অলংকার?” চটের দরজার আড়ালে আড়াল করে দাঁড়িয়ে বিড়বিড় করে উঠল সাদ্দাম। তারপর হাওয়াই হলহল করে উড়তে থাকা ঝুলন্ত চটটাকে আরও টেনে দিয়ে বলল, “হ্যাঁ, এবার বল, স্পিডবোড কী করবি?”

চলবে...

আগের পর্ব পড়ুন

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

এসএন  

 

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত