শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক

“আকাশ এ রকম হলে, ঝড়ের দাঁত নখ আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠে। জান খেয়ে তবেই তার জান জুড়োয়। মেজাজ শান্ত হয়।” দড়িটাকে নৌকোর খোলের সঙ্গে বেঁধে গিট দিতে দিতে মিনমিন করল মতি। নুহু, দড়ির অপর প্রান্তটা নৌকোর খোলে আঁটা কাঠের পাটাতনের মধ্যে পুরে একপাক ব্যাড় দিয়ে, আবার ছইয়ের মাথার ওপর দিয়ে ছুড়ে ফেলে দিয়ে বলল, “ছুঁড়লাম, ধর ভাই।” অন্ধকারেই ‘খপ’ করে ধরল মতি। প্রান্তটা ধরে টান করে বাঁধল। মাথার উপর তখন যবের বাঁকা শীষের মতো চাঁদ। চাঁদটা থেকে কালো মেঘের রাক্ষুসে মুখটা দু-মানুষ দূরে। চাঁদটাকে গিলে খাওয়ার জন্যে, কালো ষাঁড়ের মতো শিং খাড়া করে শুসে আসছে! পাকা গমের পাতার রঙের মতো চাঁদের চিকন আলোতে দড়িটা ছইয়ের এপার-ওপার করে ছইটাকে শক্ত করে বেঁধে নিল দুই ভাই। দড়িটায় চাঁদের সেই চিকন আলো পড়ে দড়িটা রূপোর রেখার মতো ঝলমল করছে। মতি দুধাপ এগিয়ে এসে, ছইয়ের গায়ে হাত দিয়ে নড়িয়ে দেখল,ছইটা শক্ত হয়েছে কি না। আগের মতো ল্যাকপ্যাক করছে কি না। নাহ, আঁটির মতো শক্ত হয়ে গেছে। ছোটখাট ঝড় এর একটা বাতাও নড়াতে পারবে না। ভাবল, মতি। নুহুকে উদ্দেশ্য করে বলল, “নোঙরটা হাতের নাগালের মধ্যে রাখ।”

“ঠিক আছে।” ঘাড় হেলাল নুহু। খড়মড় করে হেঁটে নৌকোর মাঝের খন্দে এলো। হাতের নাগাল দিয়ে পরখ করল, নোঙরটা ঠিক আছে কি না। ফিনফিন করে বয়তে থাকা হাওয়াটা ক্রমশ জট পাকাচ্ছে। আকাশের কালো ষাঁড় মেঘও পায়ের খুড় দাপাটে শুরু করেছে। ফুঁসে উঠছে সিং। বিদ্যুতের ঝলকানিতে নখের আঁচড়ের মতো চিড়ে চিড়ে যাচ্ছে কালো বোরখা পরা আকাশের গা-গতর। এই গা শিরশির করা আশ্বিন মাসের ঝড় গেরস্তের হাঁড়ি পর্যন্ত উপড়ে দেয়। বৃষ্টির ছাট শিলের মতো শক্ত হয়। যেন মনে হয়, গায়ে ছুটে এসে শুকনো ঢিল লাগল। জট পাকিয়ে যখন ঝড়টা গাছের মাথা খেয়ে ধেয়ে আসে, তখন তার রাক্ষুসে চোখ দেখে মনে হয় উঠোনও খোলের মতো উপড়ে নেবে। মেঘটা পুব দিকের রাখাইনের আকিয়াবের মাথায় ঢোল পিটছে দেখে নুহু বলল, “ভাই, নৌকোটা পুব-পশ্চিম মুখ করে রাখছি। ঝড়টা মনে হচ্ছে আকিয়াবের দিক থেকে আসছে। পুব-পশ্চিম মুখ করে রাখলে, হাওয়ার বাধা কম লাগবে।”
“হু, তাইই কর।” মাথা ঝুকাল মতি। মনে মনে বলল, ঝড় আকিয়াবের দিক থেকে আসবে না তো কোন দিক থেকে আসবে? যত ঝড়-ঝঞ্ঝা, বিপদ-আপদ তো ওই মুখ পোড়া দেশটা থেকেই আসবে। আজরাইল যে ওখানেই গেড়ে বসেছেন। সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে তাবু খাটিয়েছেন। ওদিক থেকে ঝড় আসবে না তো কি ফুল আসবে? দেশটার মানুষ খেয়ে পেট ভরছে না! আবারও খামচা খামচা জান খাওয়ার জন্যে আকাশ ফুঁড়ে ফুঁসছে! মেঘ যত গেংড়িয়ে উঠছে, মতি তত ‘মালেকুল মওত’এর গন্ধ টের পাচ্ছে। আঁচ করতে পারছে তার উপস্থিতি। মতি অনুধাবন করছে, আজ ঝড়-বৃষ্টির ফেরেশতা মেকাইল আর মৃত্যুর ফেরেশতা আজরাইল হাতে হাত মিলিয়েছেন। ধ্বংস অনিবার্য। মরণ নিশ্চিত। মতির আদুর গা’এ সমুদ্রের লবণ হাওয়া ঝাঁকানি দিচ্ছে। মতি বুঝতে পারছে, গরম হাওয়া ধীরে ধীরে কাল হয়ে উঠছে। বৃষ্টি বেশি দূরে নেই। মোহনা ছেড়ে উপকূলে আছড়ে পড়ছে হয়ত! গাছ-পাতা, পশুপাখি-কীটপতঙ্গ বগলে পুরে সাঁ সাঁ করে ধেয়ে আসছে! এই সময় আকাশ যেন হাঁটু পেড়ে নেমে আসে। রাক্ষুসে নখ দিয়ে খুঁটে নেয় ‘জীবন’! ধান কুড়োনির মতো জান কুড়িয়ে নিয়ে যায়। ছইয়ের অন্দরে মাথা ঝুঁকিয়ে মতি বলল, “তোমরা জামা-কাপড়, বিছানা-কাঁথা যা আছে গুটিয়ে পলিথিন দিয়ে মুড়ে দাও। যাতে করে পানিতে না ভেজে।”

“ও সব পুটলাতে ভরে নিয়েছি। শুধু সাকিবের দাদার গায়ের চাদরটা গুটাইনি। আব্বার গায়ে জড়ানো আছে।” জানাল আরিফা। শাশুড়ির দিকে মুখ করে বলল, “মা, আপনি টাপার একেবারে গা ঘেঁষে বসে থাকুন। পরনের কাপড়টা আর ভিজাবেন না। আর তো শুকনো কাপড় নেই। যেটা ভিজিয়েছেন সেটা তো এখনো শুকোইনি।”

“ঠিক আছে, মা, আমি তো টাপার মাঝখানেই জড় হয়ে বসে আছি।” ধোকানি কন্ঠে বললেন হালেমা। তিনি ছইয়ের একেবারে মধ্যেখানে হেলান দিয়ে পুটলা হয়ে বসে আছেন। বিকালে নদীতে মুখ বাড়িয়ে বদনায় জল তুলতে গিয়ে পা হড়কে পড়ে গেছিলেন। সে এক খিটকেল। কেউই প্রথমে খেয়াল করেনি। যখনই, ‘ঝপাং’ শব্দটা কানে এসে বেজেছিল, অমনি চোখ পড়তেই, ‘হায় আল্লাহ’ বলে জলে ‘ঝপাং’ করে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নুহু। মতি নৌকোর মটকা থেকে ‘খড়মড়’ করে ছুটে এসে ‘হাপুস’ ‘হাপুস’ করতে থাকা বুড়ো হাতটাকে হুকের মতো জাপটে ধরেছিল। নুহু জলে দাঁড়িয়ে মা’র কোমর ধরে নৌকোর উপর ঠেলে চাগান দিয়ে ধরেছিল। নৌকোর ওপর থেকে টেনে তুলে নিয়েছিল মতি। সে ফাঁড়া বেঁচে গেছিলেন হালেমা। ছেলেদের কাছে খেয়েছিলেন, আচ্ছা বকুনি। মতি তো চোখ গরম করে বলেছিল, “তোমার অত নিজে থেকে মুড়োলি করা কী দরকার? যা পারবে না তা গায়ের জোরে করা কী দরকার? আমরা কি মরে গেছি? না বানের পানিতে ভেসে গেছি?”

“একবার হুকুম করলেই তো হত। আমরা তো এখানেই বসে আছি।” ভেজা কন্ঠ কাঁপিয়ে গরম করে উঠেছিল নুহু। হালেমা সেরকম কিচ্ছু বলেননি। কাকভেজা জুবুথুবু শরীরটা হালছিল। ঠোঁট মিহি করে আলগোছে বলেছিলেন, “পা’টা হড়কে গেল যে, আমি কী করব।”

“এ কি আর সমান জায়গা? উঁচুনিচু এবড়ো খেবড়ো পাটাতন। পা তো হড়কাবেই। আর তোমার পায়ে কি আর সেই জোর আছে, যে হড়কার ঝুল সামলাতে পারবে?” বিড়বিড় করে উঠেছিল মতি। হালেমা ভেবেছিল, ঠিকই তো, আমার পায়ে কি আর সেই জোর আছে? পায়ের হাড় তো কবেই নড়বড়ে হয়ে গেছে। গোস্তগুলোও শুকিয়ে শুকনো হাড়ের সঙ্গে চামটে লেগে হাড় হয়ে গেছে। এই ঠনঠনে নড়বড়ে পা কি আর বুড়ো শরীরের ভার সামলাতে পারে? এতদিন যতই সংসারের হাজার হাজার ভার সামলে আসুক, এই পাদুটোর ওপর ভর দিয়ে যতই কেটে যাক এতদিনের হেঁসেল-গোহাল, বুড়ো তো একদিন সবাইকেই হতে হয়। বয়স যেমন চুলের হয়, হাড়েরও তো হয়? তারপর নড়বড় করতে করতে এক সময় এভাবেই ‘কট’ করে ভেঙে যায়। তখন মন বুঝতে পারে দেহের বয়স হয়েছে। আবার কতদিন!

হাওয়াটা ধীরে ধীরে ঘূর্ণি পাকাচ্ছে! একবার ‘বুঁ-উ’ করে শিং বাঁকিয়ে হাওয়াটা যেই ছইয়ের ভেতরে ঢিপালো, অমনি ছেড়া গলায় একবার ‘খক’ করে ‘ঝিল্লিকাশি’ কাশলেন জাফর আলি। ‘থক’ করে উঠল হালেমার ভেতর। থুত্থুরে স্বরথলি বলে উঠল, “এই জানখেকি ঝড় তোদের বাপ’টাকে মনে হয় ছিনিয়ে নিয়ে যাবে রে!”
“মা, ওসব কথা এখন রাখো তো? আব্বার গায়ে চাদরটা ভালো করে জড়িয়ে দাও।” চোখ বাঁকাল মতি। মনে মনে বলল, মেঘ যেভাবে গ্যাংড়াচ্ছে, তাতে শুধু বাপ একা কেন, বাপ’এর ব্যাটাগুলোকেও ‘গব’ করে গিলে খেয়ে জানগুলোকে ছিনিয়ে নিয়ে যাবে।

“আমার মন বলছে, এ মেঘ যত গর্জাচ্ছে, তত বর্ষাবে না।” আকাশের দিকে চোখ তুলে আলুথালু করে বলল নুহু। “এভাবে চিড়িক চিড়িক করে বিদ্যুৎ ছিঁড়ে পড়া, দুম দাম করে ঢোল ফাটানোর মতো মেঘ গর্জানো দেখে তোর কি মনে হচ্ছে, আকাশ ঢলাচ্ছে? গতবারের আগের বারের কথা তোর কি মনে নেই, এক ঝিনয়ের মতো মেঘ কীভাবে মুহূর্তে পাহাড় হয়ে আছড়ে পড়েছিল মাটিতে! ‘আশ্বিনের ঝড়’ কীভাবে ‘নিশ্চিহ্নের ঝড়’ হয়ে উঠেছিল! গ্রামের একটাও খড়ের চালা অবশিষ্ট ছিল না! উপড়ে নিয়ে গেছিল ভিতের খুঁটি। চালার ঠ্যাকনা। কীভাবে ‘বনবন’ করে ঘুরছিল, ধানের শুকনো আউড়গুলো! হিন্দুপাড়ার শ্যাম কাকার কথা মনে নেই? বুড়োটার ধুতি পাকুড় গাছের মটকায় আটকে গেছিল!”

‘শ্যাম কাকার ধুতির’ কথাটা মনে পড়ায় মনে মনে ‘ফিক’ করে হেসে উঠল নুহু। সে এক কিত্তি! মাঠ থেকে ফিরছিলেন শ্যাম বাড়ুই। সত্তর বছরের হাড়গিলে বগা বুড়ো। বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে ঝড়ের মুখে পড়েছিলেন। ব্যস, আর যান কোথায়। আশ্বিনের ঘূর্ণি ঝড়টা তার পায়ের গুল্লে দিয়ে হাঁটু ডিঙিয়ে অন্দরে ঢুকে পরনের দুধ সাদা ধুতিটাকে উড়িয়ে নিয়ে গেছিল। ‘এইযযা এইযযা’ করতে করতে গায়ের সাদা পাঞ্জাবিটাকে নিচের দিকে টেনে ধরে, আলুথালু হয়ে কোনোরকমে পাশের বাড়িটার ভেতরে সেধিয়ে গেছিলেন বুড়োটা। পাকুড় গাছের চাতালে বসে থাকা জনা কয়েক এঁচোড় পাকা ছেলে-ছোকরা শ্যাম বুড়োর হাল দেখে সে কী হাসি, ‘খি খি’ করে দাঁত বের করছিল। হাসিতে একেবারে গড়ে পড়েছিল। পাকুড় গাছ লাগোয়া ধানের খেতিটায় নিড়ানি দিচ্ছিল মতি আর নুহু। মতি তো চোখ গরম করে, ছেলেগুলোর পাকামো দেখে ধমকানি দিয়ে উঠেছিল, “এই ত্যাঁদরের দল, লোকটাকে নিয়ে ঠাট্টা করা হচ্ছে? তোদের পাছায়ও যখন ঝড় সেধিয়ে যাবে, তখন বুঝবি মজা।”

চলবে...

আগের পর্ব পড়ুন

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী

ছবিঃ সংগৃহীত

যানজটে আটকে থাকা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের গাড়ি বহরকে সাইড করে দিতে গিয়ে বাস চাপায় নিহত হয়েছেন জসিম উদ্দিন (৫৩) নামে জামায়াতের একজন কর্মী।

নিহত জসিম উদ্দিন উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত আলী আশ্রাফ মোল্লার ছেলে। তার স্ত্রী ও শিশুসহ তিন ছেলে সন্তান রয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমাই উপজেলার সৈয়দপুর এলাকার ওয়ালটন শো-রুমের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা মারুপ সিরাজী বলেন, লক্ষীপুর যাওয়ার পথে জামায়াত আমিরের বহরের ৪টি গাড়ি বাগমারা উত্তরবাজারে যানজটে আটকা পড়লে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ তিশা পরিবহনের ঢাকামুখী একটি দ্রুতগতির বাস ধাক্কা দিলে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দীনের মাথা থেতলে যায়। রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম মুন্না বলেন, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হলেও বাগমারা বাজার অংশে অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে দুই লেন করা হয়েছে।সে কারণে ২৪ ঘণ্টাই সড়কের এই অংশে যানজট লেগে থাকে। যানজট নিরসনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করলে আজ হয়তো এমন মৃত্যু হতো না।

লালমাই উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসেন বলেন, আমিরে জামায়াত লক্ষীপুর যাওয়ার পথে বাগমারা উত্তর বাজার বালুর মাঠে পথসভা করেন। পথসভাস্থলে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে তাঁর গাড়ি বহর যানজটে আটকা পড়ে।

তখন আমিসহ সংগঠনের ১৫/২০ জন কর্মী ট্রাফিকের দায়িত্ব শুরু করি। আমরা আমিরে জামায়াতকে নিয়ে পথসভায় চলে যাওয়ার পর জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দিন বাস চাপায় মারা যান।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, বাগমারা উত্তরবাজারে বাস চাপায় জসিম উদ্দিন নামের একজন মারা গেছেন। মরদেহ নিহতের বাড়িতে রয়েছে। খবর পেয়েই নিহতের বাড়িতে গিয়েছি।

 

Header Ad
Header Ad

সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  

ছবিঃ সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর বাজারে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। পুলিশের আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং দলীয় অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল রায়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম মজনু এবং যুবদল নেতা শহিদ মিয়ার লোকজনের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপি ও যুবদলের অস্থায়ী অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে মধ্যনগর বাজার এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনার আশঙ্কা এবং সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়ার আগে পর্যন্ত বাজার এবং আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধ করা হয়।

মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সজীব রহমান বলেন, ‘মধ্যনগর যুবদল নেতা শহিদ মিয়া ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাঈযুম মজনুর লোকজনের মধ্যে পুলিশের আসামি ধরা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে উভয় পক্ষের লোকজন বিএনপি ও যুবদলের অফিস ভাঙচুর করে। এতে বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাজার ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। বিশৃঙ্খল অবস্থা এড়াতে বাজারে পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাজার ও আশপাশের এলাকায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম
ইসরায়েলের তেল আবিবে তিনটি বাসে বিস্ফোরণ
বিয়ের ছবি ভাইরাল, বললেন শুভকামনা জানানোর জন্য ধন্যবাদ