শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক

“আকাশ এ রকম হলে, ঝড়ের দাঁত নখ আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠে। জান খেয়ে তবেই তার জান জুড়োয়। মেজাজ শান্ত হয়।” দড়িটাকে নৌকোর খোলের সঙ্গে বেঁধে গিট দিতে দিতে মিনমিন করল মতি। নুহু, দড়ির অপর প্রান্তটা নৌকোর খোলে আঁটা কাঠের পাটাতনের মধ্যে পুরে একপাক ব্যাড় দিয়ে, আবার ছইয়ের মাথার ওপর দিয়ে ছুড়ে ফেলে দিয়ে বলল, “ছুঁড়লাম, ধর ভাই।” অন্ধকারেই ‘খপ’ করে ধরল মতি। প্রান্তটা ধরে টান করে বাঁধল। মাথার উপর তখন যবের বাঁকা শীষের মতো চাঁদ। চাঁদটা থেকে কালো মেঘের রাক্ষুসে মুখটা দু-মানুষ দূরে। চাঁদটাকে গিলে খাওয়ার জন্যে, কালো ষাঁড়ের মতো শিং খাড়া করে শুসে আসছে! পাকা গমের পাতার রঙের মতো চাঁদের চিকন আলোতে দড়িটা ছইয়ের এপার-ওপার করে ছইটাকে শক্ত করে বেঁধে নিল দুই ভাই। দড়িটায় চাঁদের সেই চিকন আলো পড়ে দড়িটা রূপোর রেখার মতো ঝলমল করছে। মতি দুধাপ এগিয়ে এসে, ছইয়ের গায়ে হাত দিয়ে নড়িয়ে দেখল,ছইটা শক্ত হয়েছে কি না। আগের মতো ল্যাকপ্যাক করছে কি না। নাহ, আঁটির মতো শক্ত হয়ে গেছে। ছোটখাট ঝড় এর একটা বাতাও নড়াতে পারবে না। ভাবল, মতি। নুহুকে উদ্দেশ্য করে বলল, “নোঙরটা হাতের নাগালের মধ্যে রাখ।”

“ঠিক আছে।” ঘাড় হেলাল নুহু। খড়মড় করে হেঁটে নৌকোর মাঝের খন্দে এলো। হাতের নাগাল দিয়ে পরখ করল, নোঙরটা ঠিক আছে কি না। ফিনফিন করে বয়তে থাকা হাওয়াটা ক্রমশ জট পাকাচ্ছে। আকাশের কালো ষাঁড় মেঘও পায়ের খুড় দাপাটে শুরু করেছে। ফুঁসে উঠছে সিং। বিদ্যুতের ঝলকানিতে নখের আঁচড়ের মতো চিড়ে চিড়ে যাচ্ছে কালো বোরখা পরা আকাশের গা-গতর। এই গা শিরশির করা আশ্বিন মাসের ঝড় গেরস্তের হাঁড়ি পর্যন্ত উপড়ে দেয়। বৃষ্টির ছাট শিলের মতো শক্ত হয়। যেন মনে হয়, গায়ে ছুটে এসে শুকনো ঢিল লাগল। জট পাকিয়ে যখন ঝড়টা গাছের মাথা খেয়ে ধেয়ে আসে, তখন তার রাক্ষুসে চোখ দেখে মনে হয় উঠোনও খোলের মতো উপড়ে নেবে। মেঘটা পুব দিকের রাখাইনের আকিয়াবের মাথায় ঢোল পিটছে দেখে নুহু বলল, “ভাই, নৌকোটা পুব-পশ্চিম মুখ করে রাখছি। ঝড়টা মনে হচ্ছে আকিয়াবের দিক থেকে আসছে। পুব-পশ্চিম মুখ করে রাখলে, হাওয়ার বাধা কম লাগবে।”
“হু, তাইই কর।” মাথা ঝুকাল মতি। মনে মনে বলল, ঝড় আকিয়াবের দিক থেকে আসবে না তো কোন দিক থেকে আসবে? যত ঝড়-ঝঞ্ঝা, বিপদ-আপদ তো ওই মুখ পোড়া দেশটা থেকেই আসবে। আজরাইল যে ওখানেই গেড়ে বসেছেন। সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে তাবু খাটিয়েছেন। ওদিক থেকে ঝড় আসবে না তো কি ফুল আসবে? দেশটার মানুষ খেয়ে পেট ভরছে না! আবারও খামচা খামচা জান খাওয়ার জন্যে আকাশ ফুঁড়ে ফুঁসছে! মেঘ যত গেংড়িয়ে উঠছে, মতি তত ‘মালেকুল মওত’এর গন্ধ টের পাচ্ছে। আঁচ করতে পারছে তার উপস্থিতি। মতি অনুধাবন করছে, আজ ঝড়-বৃষ্টির ফেরেশতা মেকাইল আর মৃত্যুর ফেরেশতা আজরাইল হাতে হাত মিলিয়েছেন। ধ্বংস অনিবার্য। মরণ নিশ্চিত। মতির আদুর গা’এ সমুদ্রের লবণ হাওয়া ঝাঁকানি দিচ্ছে। মতি বুঝতে পারছে, গরম হাওয়া ধীরে ধীরে কাল হয়ে উঠছে। বৃষ্টি বেশি দূরে নেই। মোহনা ছেড়ে উপকূলে আছড়ে পড়ছে হয়ত! গাছ-পাতা, পশুপাখি-কীটপতঙ্গ বগলে পুরে সাঁ সাঁ করে ধেয়ে আসছে! এই সময় আকাশ যেন হাঁটু পেড়ে নেমে আসে। রাক্ষুসে নখ দিয়ে খুঁটে নেয় ‘জীবন’! ধান কুড়োনির মতো জান কুড়িয়ে নিয়ে যায়। ছইয়ের অন্দরে মাথা ঝুঁকিয়ে মতি বলল, “তোমরা জামা-কাপড়, বিছানা-কাঁথা যা আছে গুটিয়ে পলিথিন দিয়ে মুড়ে দাও। যাতে করে পানিতে না ভেজে।”

“ও সব পুটলাতে ভরে নিয়েছি। শুধু সাকিবের দাদার গায়ের চাদরটা গুটাইনি। আব্বার গায়ে জড়ানো আছে।” জানাল আরিফা। শাশুড়ির দিকে মুখ করে বলল, “মা, আপনি টাপার একেবারে গা ঘেঁষে বসে থাকুন। পরনের কাপড়টা আর ভিজাবেন না। আর তো শুকনো কাপড় নেই। যেটা ভিজিয়েছেন সেটা তো এখনো শুকোইনি।”

“ঠিক আছে, মা, আমি তো টাপার মাঝখানেই জড় হয়ে বসে আছি।” ধোকানি কন্ঠে বললেন হালেমা। তিনি ছইয়ের একেবারে মধ্যেখানে হেলান দিয়ে পুটলা হয়ে বসে আছেন। বিকালে নদীতে মুখ বাড়িয়ে বদনায় জল তুলতে গিয়ে পা হড়কে পড়ে গেছিলেন। সে এক খিটকেল। কেউই প্রথমে খেয়াল করেনি। যখনই, ‘ঝপাং’ শব্দটা কানে এসে বেজেছিল, অমনি চোখ পড়তেই, ‘হায় আল্লাহ’ বলে জলে ‘ঝপাং’ করে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নুহু। মতি নৌকোর মটকা থেকে ‘খড়মড়’ করে ছুটে এসে ‘হাপুস’ ‘হাপুস’ করতে থাকা বুড়ো হাতটাকে হুকের মতো জাপটে ধরেছিল। নুহু জলে দাঁড়িয়ে মা’র কোমর ধরে নৌকোর উপর ঠেলে চাগান দিয়ে ধরেছিল। নৌকোর ওপর থেকে টেনে তুলে নিয়েছিল মতি। সে ফাঁড়া বেঁচে গেছিলেন হালেমা। ছেলেদের কাছে খেয়েছিলেন, আচ্ছা বকুনি। মতি তো চোখ গরম করে বলেছিল, “তোমার অত নিজে থেকে মুড়োলি করা কী দরকার? যা পারবে না তা গায়ের জোরে করা কী দরকার? আমরা কি মরে গেছি? না বানের পানিতে ভেসে গেছি?”

“একবার হুকুম করলেই তো হত। আমরা তো এখানেই বসে আছি।” ভেজা কন্ঠ কাঁপিয়ে গরম করে উঠেছিল নুহু। হালেমা সেরকম কিচ্ছু বলেননি। কাকভেজা জুবুথুবু শরীরটা হালছিল। ঠোঁট মিহি করে আলগোছে বলেছিলেন, “পা’টা হড়কে গেল যে, আমি কী করব।”

“এ কি আর সমান জায়গা? উঁচুনিচু এবড়ো খেবড়ো পাটাতন। পা তো হড়কাবেই। আর তোমার পায়ে কি আর সেই জোর আছে, যে হড়কার ঝুল সামলাতে পারবে?” বিড়বিড় করে উঠেছিল মতি। হালেমা ভেবেছিল, ঠিকই তো, আমার পায়ে কি আর সেই জোর আছে? পায়ের হাড় তো কবেই নড়বড়ে হয়ে গেছে। গোস্তগুলোও শুকিয়ে শুকনো হাড়ের সঙ্গে চামটে লেগে হাড় হয়ে গেছে। এই ঠনঠনে নড়বড়ে পা কি আর বুড়ো শরীরের ভার সামলাতে পারে? এতদিন যতই সংসারের হাজার হাজার ভার সামলে আসুক, এই পাদুটোর ওপর ভর দিয়ে যতই কেটে যাক এতদিনের হেঁসেল-গোহাল, বুড়ো তো একদিন সবাইকেই হতে হয়। বয়স যেমন চুলের হয়, হাড়েরও তো হয়? তারপর নড়বড় করতে করতে এক সময় এভাবেই ‘কট’ করে ভেঙে যায়। তখন মন বুঝতে পারে দেহের বয়স হয়েছে। আবার কতদিন!

হাওয়াটা ধীরে ধীরে ঘূর্ণি পাকাচ্ছে! একবার ‘বুঁ-উ’ করে শিং বাঁকিয়ে হাওয়াটা যেই ছইয়ের ভেতরে ঢিপালো, অমনি ছেড়া গলায় একবার ‘খক’ করে ‘ঝিল্লিকাশি’ কাশলেন জাফর আলি। ‘থক’ করে উঠল হালেমার ভেতর। থুত্থুরে স্বরথলি বলে উঠল, “এই জানখেকি ঝড় তোদের বাপ’টাকে মনে হয় ছিনিয়ে নিয়ে যাবে রে!”
“মা, ওসব কথা এখন রাখো তো? আব্বার গায়ে চাদরটা ভালো করে জড়িয়ে দাও।” চোখ বাঁকাল মতি। মনে মনে বলল, মেঘ যেভাবে গ্যাংড়াচ্ছে, তাতে শুধু বাপ একা কেন, বাপ’এর ব্যাটাগুলোকেও ‘গব’ করে গিলে খেয়ে জানগুলোকে ছিনিয়ে নিয়ে যাবে।

“আমার মন বলছে, এ মেঘ যত গর্জাচ্ছে, তত বর্ষাবে না।” আকাশের দিকে চোখ তুলে আলুথালু করে বলল নুহু। “এভাবে চিড়িক চিড়িক করে বিদ্যুৎ ছিঁড়ে পড়া, দুম দাম করে ঢোল ফাটানোর মতো মেঘ গর্জানো দেখে তোর কি মনে হচ্ছে, আকাশ ঢলাচ্ছে? গতবারের আগের বারের কথা তোর কি মনে নেই, এক ঝিনয়ের মতো মেঘ কীভাবে মুহূর্তে পাহাড় হয়ে আছড়ে পড়েছিল মাটিতে! ‘আশ্বিনের ঝড়’ কীভাবে ‘নিশ্চিহ্নের ঝড়’ হয়ে উঠেছিল! গ্রামের একটাও খড়ের চালা অবশিষ্ট ছিল না! উপড়ে নিয়ে গেছিল ভিতের খুঁটি। চালার ঠ্যাকনা। কীভাবে ‘বনবন’ করে ঘুরছিল, ধানের শুকনো আউড়গুলো! হিন্দুপাড়ার শ্যাম কাকার কথা মনে নেই? বুড়োটার ধুতি পাকুড় গাছের মটকায় আটকে গেছিল!”

‘শ্যাম কাকার ধুতির’ কথাটা মনে পড়ায় মনে মনে ‘ফিক’ করে হেসে উঠল নুহু। সে এক কিত্তি! মাঠ থেকে ফিরছিলেন শ্যাম বাড়ুই। সত্তর বছরের হাড়গিলে বগা বুড়ো। বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে ঝড়ের মুখে পড়েছিলেন। ব্যস, আর যান কোথায়। আশ্বিনের ঘূর্ণি ঝড়টা তার পায়ের গুল্লে দিয়ে হাঁটু ডিঙিয়ে অন্দরে ঢুকে পরনের দুধ সাদা ধুতিটাকে উড়িয়ে নিয়ে গেছিল। ‘এইযযা এইযযা’ করতে করতে গায়ের সাদা পাঞ্জাবিটাকে নিচের দিকে টেনে ধরে, আলুথালু হয়ে কোনোরকমে পাশের বাড়িটার ভেতরে সেধিয়ে গেছিলেন বুড়োটা। পাকুড় গাছের চাতালে বসে থাকা জনা কয়েক এঁচোড় পাকা ছেলে-ছোকরা শ্যাম বুড়োর হাল দেখে সে কী হাসি, ‘খি খি’ করে দাঁত বের করছিল। হাসিতে একেবারে গড়ে পড়েছিল। পাকুড় গাছ লাগোয়া ধানের খেতিটায় নিড়ানি দিচ্ছিল মতি আর নুহু। মতি তো চোখ গরম করে, ছেলেগুলোর পাকামো দেখে ধমকানি দিয়ে উঠেছিল, “এই ত্যাঁদরের দল, লোকটাকে নিয়ে ঠাট্টা করা হচ্ছে? তোদের পাছায়ও যখন ঝড় সেধিয়ে যাবে, তখন বুঝবি মজা।”

চলবে...

আগের পর্ব পড়ুন

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

Header Ad
Header Ad

দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

"শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, প্রগতি"—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ওপেন হাউস ডে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিরামপুর থানা চত্বরে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমতাজুল হক। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফত হুসাইন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনিম আওন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, ড. মুহাদ্দিস এনামুল হক, বিএনপির বিরামপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মিঞা শফিকুল ইসলাম মামুন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজু, উপজেলা আমির হাফিজুল ইসলাম, যুবদলের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শিরণ আলম, ইঞ্জিনিয়ার শাহিনুর ইসলামসহ বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য, স্থানীয় শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

পুলিশ সুপার মারুফত হুসাইন তার বক্তব্যে বলেন, “প্রথমে আমি আমার পুলিশকে ঠিক করেছি। এখন আমাদের সামনের দিনগুলো ভালো প্রত্যাশা চাই। আমরা আমাদের সমাজে আর কোনো অপরাধ করতে দেব না এবং এই জেলাকে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও মাদকমুক্ত করব ইনশাল্লাহ।”

তিনি আরও বলেন, পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা এবং সহযোগিতাই পারে সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূল করতে। তাই সবাইকে আরও সচেতন ও সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার, শঙ্কায় বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ স্বপ্ন

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শুরুতে দুর্বল প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে টানা তিন জয়ে শীর্ষে ছিল নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। তবে শক্ত প্রতিপক্ষের মুখে পড়ে একের পর এক হারে এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছে তাদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। প্রথমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩ উইকেটে হারের পর শনিবার (১৯ এপ্রিল) লাহোরে পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে বসেছে বাংলাদেশ।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। মাত্র ২১ রানের মধ্যেই ফিরেছেন তিন ব্যাটার—ফারজানা হক (০), দিলারা আক্তার (১৩) ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা (১)। এরপর শারমিন আক্তার ও রিতু মনির ৪৪ রানের জুটি এবং রিতু ও নাহিদা আক্তারের ৪৭ রানের জুটি কিছুটা স্থিতি আনলেও তা বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি। রিতু মনি করেন ৪৭ রান, আর ফাহিমা খাতুন অপরাজিত থাকেন ৪৪ রানে। ৫০ ওভারে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৭৮ রান। পাকিস্তানের সাদিয়া ইকবাল ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দেন।

 

ছবি: সংগৃহীত

জবাবে পাকিস্তানও শুরুতেই শাওয়াল জুলফিকারকে হারায়, যাকে এলবিডব্লিউ করেন মারুফা আক্তার। তবে এরপর সিদরা আমিন (৩৭), মুনিবা আলি (৬৯), আলিয়া রিয়াজ (৪৮*) এবং নাতালিয়া পারভেজ (১৩*) মিলে ৩৯.৪ ওভারে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান।

এই হারের ফলে বাংলাদেশের নেট রানরেট নেমে এসেছে +০.৬৪-এ। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নেট রানরেট এখন -০.২৮। ফলে এখন বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে থাইল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের দিকে। ক্যারিবিয়ানরা যদি বড় ব্যবধানে না জেতে, তবেই কেবল বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বাংলাদেশের।

শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ব্যর্থতা, ব্যাটিং দুর্বলতা এবং ধারাবাহিকতা না থাকায় কঠিন হয়ে উঠেছে টাইগ্রেসদের বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করা। এখন সব কিছু নির্ভর করছে অন্য দলের পারফরম্যান্সের ওপর, যা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ নারী দলের জন্য উদ্বেগের বিষয়।

Header Ad
Header Ad

ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ জানানো যাবে দুই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে

ছবি: সংগৃহীত

ঘুষ, দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার হলে এখন সরাসরি ই-মেইলে অভিযোগ জানানো যাবে স্থানীয় সরকার ও যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে। অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে এবং যথাযথ প্রমাণসহ অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি এবং ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে সরাসরি অভিযোগ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, দুই মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ যেকোনো সংস্থা বা দফতরে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়া, দুর্নীতি, অনিয়ম কিংবা সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হলে তা ই-মেইলে জানাতে পারবেন সেবা গ্রহীতারা।

অভিযোগ পাঠানোর ঠিকানা:
advisorasifofficial1@gmail.com

পোস্টে বলা হয়, অভিযোগের সঙ্গে যথাযথ তথ্য ও প্রমাণ সংযুক্ত করলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেকোনো অভিযোগ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে এবং অভিযোগকারীর পরিচয় সম্পূর্ণরূপে গোপন রাখা হবে।

"জনস্বার্থে এই উদ্যোগ। ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে সক্রিয় নাগরিক অংশগ্রহণ আমাদের সবচেয়ে বড় প্রেরণা।"

এ উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেকে। তারা মনে করছেন, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘব এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এটি একটি সাহসী পদক্ষেপ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত
পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার, শঙ্কায় বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ স্বপ্ন
ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ জানানো যাবে দুই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে
টঙ্গীতে দুই শিশুকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা, মায়ের স্বীকারোক্তি
টানা ৫ দিন দেশজুড়ে বৃষ্টি, তাপমাত্রা বাড়ার পূর্বাভাস
বাফুফের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সরফরাজের পদত্যাগ
ভর্তুকি মূল্যে পাটের তৈরি বাজারের ব্যাগ সরবরাহ করা হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা
রবিবার সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের
দেশের ইতিহাসে এবারের নির্বাচন সর্বোত্তম হবে: প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে ভারত: রিজভী
ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!
জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয় : নাহিদ ইসলাম
আ.লীগের মিছিল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ
হাসিনা-কাদেরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন
নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর সেই শিশু সেহেরিশের লাশ উদ্ধার
আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কাজ করছে সরকার
লাল কাপড়ে ঢাকা হবে দেশের সব পলিটেকনিকের ফটক
৬০ বছর বয়সে বিয়ে করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ