শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক

 

জুনাইদ মোল্লারা গাড়ি চেপে ‘ভুউউ’ করে বেরিয়ে গেলে, আতিফ ধড়ফড় করে ইয়াসিন মাস্টারের নম্বরে ফোন করল। ‘যে নম্বরে আপনি ডায়াল করছেন, সেটি এখন বন্ধ করা আছে’। “ধ্যুর”! মেজাজ আরও খাট্টা হয়ে উঠল আতিফের। আরে বাবা একজ্যাক্ট লোকেশানটা জানতে পারলে তো হতো, হুট করে দুদিনের মধ্যে ঘুরে চলে আসতাম। কথাটা আতিফের মনে আউড়িবাউড়ি খাচ্ছে।

“অত মেজাজ হারালে হবে না বন্ধু।“ বলল নবী। ব্যালকনির কাঠের করিডরে দাঁড়িয়ে সেও লেফটেন্যান্ট মজিদ ভাটদের চলে যাওয়াটা দেখছিল। খট খট করে হেঁটে এল আতিফের কাছে। সকালের নাবালক রোদ ব্যালকনির রেলিংএ হামাগুড়ি দিয়ে দেওয়ালে উঠছে। জানালার কার্নিশ ছুঁয়ে কেবলই কথা শিখছে ‘দিন’। নবী নকশার কারিকুরি করা কাঠের রেলিংএ হেলান দিয়ে কণ্ঠ কাঠ করে বলল, “যে জীবন গেছে, গেছে, সে জীবনের জাবর কেটে আর কী লাভ! আমরা এখন শেষ দ্বীপে এসে ঠোকর খাওয়া নদী, এপার ওপার ভেঙে-গড়ে মোহনায় এসে ঠেকেছি। মৃত্যু নামক সমুদ্রের গিলে খেতে আর কতটুকুই বা বিলম্ব আছে! সমুদ্রে বিলীন হলেই তো মুক্তি।“
“এ মুক্তি কীসের? দেহের না মনের? দেহের মুক্তি তো পচনে, কিন্তু মনের মুক্তি তো পচনে নয়? মানুষ যদি এত সহজেই মনের মুক্তি পেয়ে যেত, তাহলে আর কেনই বা ‘দেশ’ কেনই বা ‘ঘর’? একটা ডোবাপুকুরের স্রোত হয়েই ডাঙায় মিশে যেতে পারত। কোনো খড়কুটোরও হিসেব লাগত না। শুধু ‘ঢিল’কে বলত, আরও একটু আগে এসে ঢেউ তোলনি কেন?”

আতিফের মনের একতারাটা ‘টিং’ করে বেজে ওঠে। একটা বাউল হাওয়া সুর গেয়ে ওঠে আহত মননে। নবী আরও খেয়ালি হয়ে ওঠে, “এ মুক্তি শুধু দেহের, মনের নয়। শুধু নিজের মুক্তির জন্যে তো এ পথে আসিনি? এ মুক্তি সমষ্টির। একটা জাতিসত্তার মুক্তি। মনের মুক্তি হলে কী করে আর ‘দেশ’ ফিরে পাব? ‘দেহ’ ‘মন’ দুইয়ের মুক্তি হলে তো সে মৃত্যু ছাগলের, গরুর, ভাগাড়ের পশুর। দেহের মুক্তি হবে আর মন থেকে যাবে মানুষের মাঝে, তবেই না শহীদ, দেশ ও জাতির জন্যে বলিদান? সে ‘মন’ থেকে যাবে মানুষের মননে, বই ও দেওয়ালে, কথা ও সুরে। লেখনির বর্ণমালায় সে ‘মন’ অমরত্ব পাবে। মানুষের গল্পে হয়ে উঠবে ‘চরিত্র’। ‘দেশহীন’ মানুষদের কাছে এনে দেবে ‘দেশ’। ‘ভিটেহীন’ মানুষদের কাছে এনে দেবে ‘ভিটে’।“
“তুই তো পরশু আবার নিজের জন্মভিটেই ফিরে যাচ্ছিস। তোর কেমন আনন্দ হচ্ছে?”
“এ আনন্দ কাফনে মোড়া আনন্দ। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে যাচ্ছে, এর চেয়ে আনন্দের তো কিছু হয় না? তবু এ আনন্দের পেটে এক রূপ পিঠে আরেক রূপ। পেটে ‘ঘর’ পাওয়ার স্বপ্ন আর পিঠে মৃত্যুর খাড়া। এমন আনন্দ যেন আল্লাহ আর দ্বিতীয় কাউকে না দেন.....।“ ফুঁপিয়ে ওঠে নবী। কান্নার দলা বুক ঠেলে উঠে আসে। আতিফ ঘাড়ে হাত দেয়। বলে, “চোখের পানি মুছ নবী, এ পানি দেখার কেউ নেই।“ তারপর দূরের বককন গাছটার দিকে আনমনা চোখে তাকিয়ে উদাস গলায় বলে, “মাটির মালিক আল্লাহ, তবুও মাটির জন্যেই দুনিয়ায় সব থেকে বেশি মানুষ মরে! মাটির মায়া শরীরের মায়ার চেয়ে কোনো অংশে কম নয় রে। বিটি মাটি, মাটি বিটি, এইই তো জীবন।“
“আমি তো আগামীকাল ভোরেই চলে যাব। তুই কী করবি?” প্রশ্ন করল নবী।
“সেটাই তো ভাবছি রে, হাতে আর মাত্র চার দিন বাকি, যা করার এই চার দিনের মধ্যেই করতে হবে।“ মাথা ঠুকে আতিফ। নবী চোখ নাচিয়ে বলে ওঠে, “আইডিয়া।“
“আইডিয়া! কী আইডিয়া?” করলাফালির মতো ফেড়ে ওঠে আতিফের চোখ।
“না, থাক।“ কথাটা ঢোক গেলার চেষ্টা করে নবী।
“না, থাক, মানে?” থির চোখ বেঁকে উদগ্রিব হয়ে ওঠে আতিফ।
“কিচ্ছু না, তোকে জাস্ট বাজিয়ে দেখছিলাম।“
“এটা একদম ঠিক হচ্ছে না, নবী। সবকিছু নিয়ে ঠাট্টা মশকরা ঠিক নয়। তুই মৃত্যু নিয়েও মশকরা করতে পারিস!”
“ঠাট্টা ঠিক নয় রে।“
“তবে!”
“একটা ভাবনা মাথায় এসেছে, ভাবছি তোকে সেটা বলা ঠিক হবে কি না।“
“কোনো কিন্তু না রেখে ফটাফট বলে ফেল। আমি না তোর জানপেরানের বন্ধু?“
“খারাপ মাইন্ডে নিবি না তো?”
“আরে না না, বন্ধুর কথা আবার খারাপ মাইন্ড কী রে!”
“না, আসলে কথাটা একটু অন্যরকম তো, তাই আর কী।“
“অত, ভড়ং না করে বলে ফেল তো, তখন থেকে শুধু গৌরচন্দ্রিকা গেহেই যাচ্ছে! কথাটা পেট থেকে বের করার জন্যে এবার কি পেটে লাথি মারতে হবে?” খচে উঠে আতিফ। একটা ঠাট্টার ঘুষি তুলতে উদ্যত হলে, নবী থতমত করে বলে ওঠে, “আরে থাম, থাম, অত খচে যাচ্ছিস কেন? তোকে কি আর জ্বালানোর ফুরসত পাব? পরশু তো পরকালের টিকিট কেটেই নেব। তখন না থাকবে এ বান্দা, না থাকবে এ বন্ধুর জ্বালাতন।“
“তোর মতো বন্ধুর জ্বালাতন যে জন্ম জন্মান্তর ধরে সহ্য করতে রাজি আছি রে। আল্লাহর কাছে দোয়া চাইছি, তুই যেন পরকালে গিয়েও আমাকে এভাবেই জ্বালাতন করিস।“

নবীকে বুকের মধ্যে পুরে নিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে আতিফ। নবীরও বুকের বাঁধ ভেঙে যায়। ডুকরে ওঠে। দুই বন্ধুর কাঁদনে সকালের ঝিরঝিরে বাতাসের চোখও সিক্ত হয়ে ওঠে। কষ্টের সুরেলা ধ্বনি পাতাকাঁপার শব্দে মিশে সদ্য ফোটা সকালকে কান্নাতুর করে দিচ্ছে। পাতার আড়াল দিয়ে ঝিলমিলিয়ে পড়া রোদ দুই বন্ধুর চোখের পাতায় এসে ভিজে যাচ্ছে। তাদের ডুকরানো দেখে রোদ টের পাচ্ছে, চোখের কান্নার চেয়ে অন্তরের কান্নার হাহাকার বেশি। যন্ত্রণা বেশি। দেহের চেয়ে ঢের বেশি কাঁদছে রুহু।
“আরে ধুর, আমরা আবার কাঁদছি কেন? আমরা না মুজাহিদ? আমাদের না কাঁদতে নেই। এসব নাকে চোখে মুখে পেটে ফ্যাত ফুত করতে নেই। হাস, হাস, হা হা হা, হাস, হাস, আতিফ, হাস, নবী তুইও হাস, হা হা।“ মাথা ঝুঁকে নিজের দিকে তাকিয়ে ঠোঁটে হাসির রস মিশিয়ে কেমন যেন পাগলের মতো হেসে ওঠে নবী। আতিফ ‘থ’ মেরে যায় নবীর আচরণে। ছুঁড়াটা কি পাগল হয়ে গেল নাকি! কী সব আজেবাজে বকছে! নবীকে উচ্চস্বরে যাত্রাপালার ভিলেনের মতো ঢাক ফাটা হাসি হাসতে দেখে, দুই হাতের কব্জি ধরে ঝাকা দিয়ে বলে উঠল, “এসব কী পাগলামি করছিস, নবী? তোর কি মাথা খারাপ হয়ে গেল!”

“হ্যাঁ, মাথা খারাপ, মন খারাপ, হাড় মজ্জা সব খারাপ হয়ে গেছে। ভালো রেখেই বা কী হবে। বৌ হবে? বাচ্চা হবে? সংসার হবে? মানুষের জন্মস্বাদ তো পেলামই না। শুধু বারুদ আর কার্তুজের স্বাদেই এ জীবন লোহালক্কর হয়ে উঠল! ফুল না হতাম, একটুখানি মোম তো হতে পারতাম? কারও উষ্ণ ছোঁয়াই একটুখানি গলতে তো পারতাম? গলতে কার না ইচ্ছে করে! গলনেই তো সৃষ্টি। মেঘ গলে বলেই তো বৃষ্টি। না গললে সৃষ্টি হবে কী করে! না গলেই ধোঁয়া হয়ে যেতে হচ্ছে। ধোঁয়া! কিছু না পেয়েই ফুরনোর ধোঁয়া! কোনো মানুষ কি কাঠখড় পোড়ানোর ধোঁয়া হতে চায় না মানুষ গলনের ধোঁয়া হতে চায়? মানুষের ছোঁয়াই মানুষের গলন। জীবনের স্পর্শে জীবনের গলন। সে গলনে আদর আছে, তাপ আছে, আর আছে সমর্পণ। শরীরের সাথে সাথে মনেরও সমর্পণ। এই সমর্পণেই তো বেজে ওঠে সৃষ্টির গান। জীবনের করতাল।“
“কী রে দার্শনিক হয়ে গেলি নাকি! তুই জানিস, তুই কী সব বকছিস!”
“জানি রে জানি। সব মানুষই তো কখনো না কখনো দার্শনিক হয়ে ওঠে। সে হাটের আলু-পটল বিক্রেতাই হোক আর দর্শনের পুঁথি গিলে খাওয়া ইউনিভার্সিটির ডক্টরেটই হোক। যিনিই জীবনকে ছেঁচেছেন, তিনিই দর্শনের পাঠ লিখেছেন। আমরা না হয় শাড়ি ভাঁজের দর্শন শিখিনি, বারুদে আগুন ছোঁয়ার দর্শন তো শিখেছি? জীবনের দর্শন তো ‘মক্কা না ফক্কা’ নয়? জীবনের দর্শন শ্বাসে, বাঁচার স্বাদে। তুই আবার কম কীসে যাস, বন্ধু?”
“এসব ক্লাসের লেকচার শোনাবি, না, ‘আইডিয়াটা’ বলবি? বড়বড় বাতলিং তো ভালোই শিখেছিস?” ঠোঁট বাঁকিয়ে ওঠে আতিফ।
“আচ্ছা, বৌ’র শাড়ি ভাঁজ করে দেওয়ার মধ্যে কতটুকু ‘দর্শন’ লুকিয়ে থাকে জানিস?”
“শালা, আমার তো একশখানা বৌ আছে যে, ওসব ঘেঁটেঘুটে জানা আছে!” রেগে টং হয়ে ওঠে আতিফ।
“না থাক, একটু ভাব, একটু কল্পনা কর।“
“হ্যাঁ, এখন ওসবই ভাবি, জন্মদাতা বাপ-মা পানিতে ঢুবে মরছে, কাল বাদ পরশু নিজেই মরতে যাচ্ছি, আর এখন বসে বসে পরের বৌ’র শাড়ি ভাঁজ করা ভাবি! তোর মাথার ঘেলু মনে হয় সব গোবর হয়ে গেছে!”
“জীবনের স্বাদ তো নিতে শিখলি না! মরণের আগের শ্বাস পড়া পর্যন্ত জীবনের স্বাদ নিতে হয়। মানব জন্ম তো একবারই না? আল্লাহর হাদিস-কোরান তো তাইই বলছে।“
“তো, তুই নাক চুবড়িয়ে স্বাদ নিবি তো অত ভাববিহ্বল হয়ে পড়ছিস কেন? অত দুঃখ কষ্ট মাখা কথা আউড়াচ্ছিস কেন?” আতিফের কথার বাণে এবার ঘায়েল হয়ে যায় নবী। চুপ করে ‘কাপ’ নিয়ে নেয়। আতিফ তার মাথায় আবারও ঠক করে টোকা দেয়, “কী রে, ‘আইডিয়াটা’ বল।“
“ওহ, হ্যাঁ, আইডিয়া।“ নবী এমন করে কথাটা উচ্চারণ করে যেন কোনো ধ্যানমগ্ন ঋষির কেউ ধ্যান ভাঙিয়ে দিল। তারপর কণ্ঠস্বর নিচু করে ফিসফিস করে বলল, “আইডিয়াটা আর কিছুই নয়, একটা খুন।“
“খুন!” আকাশ থেকে পড়ল আতিফ। তার চোখ কপালে উঠার জোগাড়।
“হ্যাঁ, খুন, একটা ছোট্ট খুন। আমরা তো আস্ত একটা ‘রাষ্ট্র’কে খুন করতে চলেছি, সে তুলনায় এটা একটা মামুলি খুন। সেটা একটা গুলিতেও হতে পারে, আবার একটা সাড়ে তিন হাত দড়িতেও হতে পারে।“
“কী সব বকছিস, আমার মাথায় কিছুই ঢুকছে না!”
“ঢুকবে, ঢুকবে, ঠিকই ঢুকবে। ঢুকবে না যাবে কোথায়?”
“অত হেঁয়ালি না করে, ব্যাপারটা এবার খুলে বলত।“
“বলবই তো, বলার জন্যেই তো ভেবেছি। না বললে, কাজটা হবে কী করে?”
“ওহঃ, আবার সেই হেঁয়ালি! ছাড় তোর ওসব বাটপাড়ি কথা।“ মেজাজ খাটা করে ঘরের দিকে পা বাড়াতে বাড়াতে আতিফ মোবাইলটা হাতে নিয়ে বলল, “দেখি, এবার ফোন করে লোকটাকে পাই কি না।“ বলেই মোবাইলটা কানে ধরল। পর পর দুবার ‘রিডায়াল’ করে ‘ধুর’ বলে যেই বিরক্তি প্রকাশ করল আতিফ, অমনি ব্যালকনির করিডর থেকে ভেসে এল, “মেজর জেনারেল জুনাইদ মোল্লা খতম!”

চলবে...

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার, শঙ্কায় বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ স্বপ্ন

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শুরুতে দুর্বল প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে টানা তিন জয়ে শীর্ষে ছিল নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। তবে শক্ত প্রতিপক্ষের মুখে পড়ে একের পর এক হারে এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছে তাদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। প্রথমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩ উইকেটে হারের পর শনিবার (১৯ এপ্রিল) লাহোরে পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে বসেছে বাংলাদেশ।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। মাত্র ২১ রানের মধ্যেই ফিরেছেন তিন ব্যাটার—ফারজানা হক (০), দিলারা আক্তার (১৩) ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা (১)। এরপর শারমিন আক্তার ও রিতু মনির ৪৪ রানের জুটি এবং রিতু ও নাহিদা আক্তারের ৪৭ রানের জুটি কিছুটা স্থিতি আনলেও তা বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি। রিতু মনি করেন ৪৭ রান, আর ফাহিমা খাতুন অপরাজিত থাকেন ৪৪ রানে। ৫০ ওভারে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৭৮ রান। পাকিস্তানের সাদিয়া ইকবাল ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দেন।

 

ছবি: সংগৃহীত

জবাবে পাকিস্তানও শুরুতেই শাওয়াল জুলফিকারকে হারায়, যাকে এলবিডব্লিউ করেন মারুফা আক্তার। তবে এরপর সিদরা আমিন (৩৭), মুনিবা আলি (৬৯), আলিয়া রিয়াজ (৪৮*) এবং নাতালিয়া পারভেজ (১৩*) মিলে ৩৯.৪ ওভারে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান।

এই হারের ফলে বাংলাদেশের নেট রানরেট নেমে এসেছে +০.৬৪-এ। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নেট রানরেট এখন -০.২৮। ফলে এখন বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে থাইল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের দিকে। ক্যারিবিয়ানরা যদি বড় ব্যবধানে না জেতে, তবেই কেবল বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বাংলাদেশের।

শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ব্যর্থতা, ব্যাটিং দুর্বলতা এবং ধারাবাহিকতা না থাকায় কঠিন হয়ে উঠেছে টাইগ্রেসদের বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করা। এখন সব কিছু নির্ভর করছে অন্য দলের পারফরম্যান্সের ওপর, যা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ নারী দলের জন্য উদ্বেগের বিষয়।

Header Ad
Header Ad

ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ জানানো যাবে দুই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে

ছবি: সংগৃহীত

ঘুষ, দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার হলে এখন সরাসরি ই-মেইলে অভিযোগ জানানো যাবে স্থানীয় সরকার ও যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে। অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে এবং যথাযথ প্রমাণসহ অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি এবং ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে সরাসরি অভিযোগ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, দুই মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ যেকোনো সংস্থা বা দফতরে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়া, দুর্নীতি, অনিয়ম কিংবা সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হলে তা ই-মেইলে জানাতে পারবেন সেবা গ্রহীতারা।

অভিযোগ পাঠানোর ঠিকানা:
advisorasifofficial1@gmail.com

পোস্টে বলা হয়, অভিযোগের সঙ্গে যথাযথ তথ্য ও প্রমাণ সংযুক্ত করলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেকোনো অভিযোগ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে এবং অভিযোগকারীর পরিচয় সম্পূর্ণরূপে গোপন রাখা হবে।

"জনস্বার্থে এই উদ্যোগ। ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে সক্রিয় নাগরিক অংশগ্রহণ আমাদের সবচেয়ে বড় প্রেরণা।"

এ উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেকে। তারা মনে করছেন, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘব এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এটি একটি সাহসী পদক্ষেপ।

Header Ad
Header Ad

টঙ্গীতে দুই শিশুকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা, মায়ের স্বীকারোক্তি

টঙ্গীতে দুই শিশুকে কুপিয়ে হত্যার শিকার করেছে মা। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের টঙ্গীর আরিচপুর এলাকায় দুই শিশু সন্তানকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন তাদের মা সালেহা বেগম। নিহতরা হলেন মালিহা আক্তার (৬) ও আবদুল্লাহ বিন ওমর (৪)। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম জানান, আরিচপুরের জামাইবাজার রুপবানের টেক এলাকার সেতু ভিলা ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘর থেকে রক্তমাখা একটি বঁটি জব্দ করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় ঘরে ছিলেন শুধু সালেহা বেগম। সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা গেছে, বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে অন্য কেউ ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেনি। ঘটনার পর সালেহা নিজেই তার দুই দেবরকে ডেকে আনেন এবং তার কথাবার্তা অসংলগ্ন ছিল।

পরে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হলে মধ্যরাতে সালেহা স্বীকার করেন, তিনিই বঁটি দিয়ে দুই সন্তানকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। তবে তিনি কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, তা এখনো অস্পষ্ট।

নিহত শিশুদের বাবা আবদুল বাতেন মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তাতুয়াকান্দি এলাকার বাসিন্দা। পরিবার নিয়ে তিনি ওই ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন।

সালেহার মা শিল্পি বেগম জানান, সালেহা দীর্ঘদিন ধরে মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগছেন। তবে কখনও অস্বাভাবিক আচরণ করেননি। পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং সালেহার মানসিক অবস্থা যাচাই করতে চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে।

এদিকে দুই শিশুর মরদেহ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ বলছে, ঘটনাটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং বিস্তারিত তদন্ত শেষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার, শঙ্কায় বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ স্বপ্ন
ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ জানানো যাবে দুই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে
টঙ্গীতে দুই শিশুকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা, মায়ের স্বীকারোক্তি
টানা ৫ দিন দেশজুড়ে বৃষ্টি, তাপমাত্রা বাড়ার পূর্বাভাস
বাফুফের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সরফরাজের পদত্যাগ
ভর্তুকি মূল্যে পাটের তৈরি বাজারের ব্যাগ সরবরাহ করা হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা
রবিবার সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের
দেশের ইতিহাসে এবারের নির্বাচন সর্বোত্তম হবে: প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে ভারত: রিজভী
ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!
জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয় : নাহিদ ইসলাম
আ.লীগের মিছিল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ
হাসিনা-কাদেরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন
নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর সেই শিশু সেহেরিশের লাশ উদ্ধার
আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কাজ করছে সরকার
লাল কাপড়ে ঢাকা হবে দেশের সব পলিটেকনিকের ফটক
৬০ বছর বয়সে বিয়ে করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে ১২ কেজি রূপার গয়না জব্দ