বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক

 

জুনাইদ মোল্লারা গাড়ি চেপে ‘ভুউউ’ করে বেরিয়ে গেলে, আতিফ ধড়ফড় করে ইয়াসিন মাস্টারের নম্বরে ফোন করল। ‘যে নম্বরে আপনি ডায়াল করছেন, সেটি এখন বন্ধ করা আছে’। “ধ্যুর”! মেজাজ আরও খাট্টা হয়ে উঠল আতিফের। আরে বাবা একজ্যাক্ট লোকেশানটা জানতে পারলে তো হতো, হুট করে দুদিনের মধ্যে ঘুরে চলে আসতাম। কথাটা আতিফের মনে আউড়িবাউড়ি খাচ্ছে।

“অত মেজাজ হারালে হবে না বন্ধু।“ বলল নবী। ব্যালকনির কাঠের করিডরে দাঁড়িয়ে সেও লেফটেন্যান্ট মজিদ ভাটদের চলে যাওয়াটা দেখছিল। খট খট করে হেঁটে এল আতিফের কাছে। সকালের নাবালক রোদ ব্যালকনির রেলিংএ হামাগুড়ি দিয়ে দেওয়ালে উঠছে। জানালার কার্নিশ ছুঁয়ে কেবলই কথা শিখছে ‘দিন’। নবী নকশার কারিকুরি করা কাঠের রেলিংএ হেলান দিয়ে কণ্ঠ কাঠ করে বলল, “যে জীবন গেছে, গেছে, সে জীবনের জাবর কেটে আর কী লাভ! আমরা এখন শেষ দ্বীপে এসে ঠোকর খাওয়া নদী, এপার ওপার ভেঙে-গড়ে মোহনায় এসে ঠেকেছি। মৃত্যু নামক সমুদ্রের গিলে খেতে আর কতটুকুই বা বিলম্ব আছে! সমুদ্রে বিলীন হলেই তো মুক্তি।“
“এ মুক্তি কীসের? দেহের না মনের? দেহের মুক্তি তো পচনে, কিন্তু মনের মুক্তি তো পচনে নয়? মানুষ যদি এত সহজেই মনের মুক্তি পেয়ে যেত, তাহলে আর কেনই বা ‘দেশ’ কেনই বা ‘ঘর’? একটা ডোবাপুকুরের স্রোত হয়েই ডাঙায় মিশে যেতে পারত। কোনো খড়কুটোরও হিসেব লাগত না। শুধু ‘ঢিল’কে বলত, আরও একটু আগে এসে ঢেউ তোলনি কেন?”

আতিফের মনের একতারাটা ‘টিং’ করে বেজে ওঠে। একটা বাউল হাওয়া সুর গেয়ে ওঠে আহত মননে। নবী আরও খেয়ালি হয়ে ওঠে, “এ মুক্তি শুধু দেহের, মনের নয়। শুধু নিজের মুক্তির জন্যে তো এ পথে আসিনি? এ মুক্তি সমষ্টির। একটা জাতিসত্তার মুক্তি। মনের মুক্তি হলে কী করে আর ‘দেশ’ ফিরে পাব? ‘দেহ’ ‘মন’ দুইয়ের মুক্তি হলে তো সে মৃত্যু ছাগলের, গরুর, ভাগাড়ের পশুর। দেহের মুক্তি হবে আর মন থেকে যাবে মানুষের মাঝে, তবেই না শহীদ, দেশ ও জাতির জন্যে বলিদান? সে ‘মন’ থেকে যাবে মানুষের মননে, বই ও দেওয়ালে, কথা ও সুরে। লেখনির বর্ণমালায় সে ‘মন’ অমরত্ব পাবে। মানুষের গল্পে হয়ে উঠবে ‘চরিত্র’। ‘দেশহীন’ মানুষদের কাছে এনে দেবে ‘দেশ’। ‘ভিটেহীন’ মানুষদের কাছে এনে দেবে ‘ভিটে’।“
“তুই তো পরশু আবার নিজের জন্মভিটেই ফিরে যাচ্ছিস। তোর কেমন আনন্দ হচ্ছে?”
“এ আনন্দ কাফনে মোড়া আনন্দ। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে যাচ্ছে, এর চেয়ে আনন্দের তো কিছু হয় না? তবু এ আনন্দের পেটে এক রূপ পিঠে আরেক রূপ। পেটে ‘ঘর’ পাওয়ার স্বপ্ন আর পিঠে মৃত্যুর খাড়া। এমন আনন্দ যেন আল্লাহ আর দ্বিতীয় কাউকে না দেন.....।“ ফুঁপিয়ে ওঠে নবী। কান্নার দলা বুক ঠেলে উঠে আসে। আতিফ ঘাড়ে হাত দেয়। বলে, “চোখের পানি মুছ নবী, এ পানি দেখার কেউ নেই।“ তারপর দূরের বককন গাছটার দিকে আনমনা চোখে তাকিয়ে উদাস গলায় বলে, “মাটির মালিক আল্লাহ, তবুও মাটির জন্যেই দুনিয়ায় সব থেকে বেশি মানুষ মরে! মাটির মায়া শরীরের মায়ার চেয়ে কোনো অংশে কম নয় রে। বিটি মাটি, মাটি বিটি, এইই তো জীবন।“
“আমি তো আগামীকাল ভোরেই চলে যাব। তুই কী করবি?” প্রশ্ন করল নবী।
“সেটাই তো ভাবছি রে, হাতে আর মাত্র চার দিন বাকি, যা করার এই চার দিনের মধ্যেই করতে হবে।“ মাথা ঠুকে আতিফ। নবী চোখ নাচিয়ে বলে ওঠে, “আইডিয়া।“
“আইডিয়া! কী আইডিয়া?” করলাফালির মতো ফেড়ে ওঠে আতিফের চোখ।
“না, থাক।“ কথাটা ঢোক গেলার চেষ্টা করে নবী।
“না, থাক, মানে?” থির চোখ বেঁকে উদগ্রিব হয়ে ওঠে আতিফ।
“কিচ্ছু না, তোকে জাস্ট বাজিয়ে দেখছিলাম।“
“এটা একদম ঠিক হচ্ছে না, নবী। সবকিছু নিয়ে ঠাট্টা মশকরা ঠিক নয়। তুই মৃত্যু নিয়েও মশকরা করতে পারিস!”
“ঠাট্টা ঠিক নয় রে।“
“তবে!”
“একটা ভাবনা মাথায় এসেছে, ভাবছি তোকে সেটা বলা ঠিক হবে কি না।“
“কোনো কিন্তু না রেখে ফটাফট বলে ফেল। আমি না তোর জানপেরানের বন্ধু?“
“খারাপ মাইন্ডে নিবি না তো?”
“আরে না না, বন্ধুর কথা আবার খারাপ মাইন্ড কী রে!”
“না, আসলে কথাটা একটু অন্যরকম তো, তাই আর কী।“
“অত, ভড়ং না করে বলে ফেল তো, তখন থেকে শুধু গৌরচন্দ্রিকা গেহেই যাচ্ছে! কথাটা পেট থেকে বের করার জন্যে এবার কি পেটে লাথি মারতে হবে?” খচে উঠে আতিফ। একটা ঠাট্টার ঘুষি তুলতে উদ্যত হলে, নবী থতমত করে বলে ওঠে, “আরে থাম, থাম, অত খচে যাচ্ছিস কেন? তোকে কি আর জ্বালানোর ফুরসত পাব? পরশু তো পরকালের টিকিট কেটেই নেব। তখন না থাকবে এ বান্দা, না থাকবে এ বন্ধুর জ্বালাতন।“
“তোর মতো বন্ধুর জ্বালাতন যে জন্ম জন্মান্তর ধরে সহ্য করতে রাজি আছি রে। আল্লাহর কাছে দোয়া চাইছি, তুই যেন পরকালে গিয়েও আমাকে এভাবেই জ্বালাতন করিস।“

নবীকে বুকের মধ্যে পুরে নিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে আতিফ। নবীরও বুকের বাঁধ ভেঙে যায়। ডুকরে ওঠে। দুই বন্ধুর কাঁদনে সকালের ঝিরঝিরে বাতাসের চোখও সিক্ত হয়ে ওঠে। কষ্টের সুরেলা ধ্বনি পাতাকাঁপার শব্দে মিশে সদ্য ফোটা সকালকে কান্নাতুর করে দিচ্ছে। পাতার আড়াল দিয়ে ঝিলমিলিয়ে পড়া রোদ দুই বন্ধুর চোখের পাতায় এসে ভিজে যাচ্ছে। তাদের ডুকরানো দেখে রোদ টের পাচ্ছে, চোখের কান্নার চেয়ে অন্তরের কান্নার হাহাকার বেশি। যন্ত্রণা বেশি। দেহের চেয়ে ঢের বেশি কাঁদছে রুহু।
“আরে ধুর, আমরা আবার কাঁদছি কেন? আমরা না মুজাহিদ? আমাদের না কাঁদতে নেই। এসব নাকে চোখে মুখে পেটে ফ্যাত ফুত করতে নেই। হাস, হাস, হা হা হা, হাস, হাস, আতিফ, হাস, নবী তুইও হাস, হা হা।“ মাথা ঝুঁকে নিজের দিকে তাকিয়ে ঠোঁটে হাসির রস মিশিয়ে কেমন যেন পাগলের মতো হেসে ওঠে নবী। আতিফ ‘থ’ মেরে যায় নবীর আচরণে। ছুঁড়াটা কি পাগল হয়ে গেল নাকি! কী সব আজেবাজে বকছে! নবীকে উচ্চস্বরে যাত্রাপালার ভিলেনের মতো ঢাক ফাটা হাসি হাসতে দেখে, দুই হাতের কব্জি ধরে ঝাকা দিয়ে বলে উঠল, “এসব কী পাগলামি করছিস, নবী? তোর কি মাথা খারাপ হয়ে গেল!”

“হ্যাঁ, মাথা খারাপ, মন খারাপ, হাড় মজ্জা সব খারাপ হয়ে গেছে। ভালো রেখেই বা কী হবে। বৌ হবে? বাচ্চা হবে? সংসার হবে? মানুষের জন্মস্বাদ তো পেলামই না। শুধু বারুদ আর কার্তুজের স্বাদেই এ জীবন লোহালক্কর হয়ে উঠল! ফুল না হতাম, একটুখানি মোম তো হতে পারতাম? কারও উষ্ণ ছোঁয়াই একটুখানি গলতে তো পারতাম? গলতে কার না ইচ্ছে করে! গলনেই তো সৃষ্টি। মেঘ গলে বলেই তো বৃষ্টি। না গললে সৃষ্টি হবে কী করে! না গলেই ধোঁয়া হয়ে যেতে হচ্ছে। ধোঁয়া! কিছু না পেয়েই ফুরনোর ধোঁয়া! কোনো মানুষ কি কাঠখড় পোড়ানোর ধোঁয়া হতে চায় না মানুষ গলনের ধোঁয়া হতে চায়? মানুষের ছোঁয়াই মানুষের গলন। জীবনের স্পর্শে জীবনের গলন। সে গলনে আদর আছে, তাপ আছে, আর আছে সমর্পণ। শরীরের সাথে সাথে মনেরও সমর্পণ। এই সমর্পণেই তো বেজে ওঠে সৃষ্টির গান। জীবনের করতাল।“
“কী রে দার্শনিক হয়ে গেলি নাকি! তুই জানিস, তুই কী সব বকছিস!”
“জানি রে জানি। সব মানুষই তো কখনো না কখনো দার্শনিক হয়ে ওঠে। সে হাটের আলু-পটল বিক্রেতাই হোক আর দর্শনের পুঁথি গিলে খাওয়া ইউনিভার্সিটির ডক্টরেটই হোক। যিনিই জীবনকে ছেঁচেছেন, তিনিই দর্শনের পাঠ লিখেছেন। আমরা না হয় শাড়ি ভাঁজের দর্শন শিখিনি, বারুদে আগুন ছোঁয়ার দর্শন তো শিখেছি? জীবনের দর্শন তো ‘মক্কা না ফক্কা’ নয়? জীবনের দর্শন শ্বাসে, বাঁচার স্বাদে। তুই আবার কম কীসে যাস, বন্ধু?”
“এসব ক্লাসের লেকচার শোনাবি, না, ‘আইডিয়াটা’ বলবি? বড়বড় বাতলিং তো ভালোই শিখেছিস?” ঠোঁট বাঁকিয়ে ওঠে আতিফ।
“আচ্ছা, বৌ’র শাড়ি ভাঁজ করে দেওয়ার মধ্যে কতটুকু ‘দর্শন’ লুকিয়ে থাকে জানিস?”
“শালা, আমার তো একশখানা বৌ আছে যে, ওসব ঘেঁটেঘুটে জানা আছে!” রেগে টং হয়ে ওঠে আতিফ।
“না থাক, একটু ভাব, একটু কল্পনা কর।“
“হ্যাঁ, এখন ওসবই ভাবি, জন্মদাতা বাপ-মা পানিতে ঢুবে মরছে, কাল বাদ পরশু নিজেই মরতে যাচ্ছি, আর এখন বসে বসে পরের বৌ’র শাড়ি ভাঁজ করা ভাবি! তোর মাথার ঘেলু মনে হয় সব গোবর হয়ে গেছে!”
“জীবনের স্বাদ তো নিতে শিখলি না! মরণের আগের শ্বাস পড়া পর্যন্ত জীবনের স্বাদ নিতে হয়। মানব জন্ম তো একবারই না? আল্লাহর হাদিস-কোরান তো তাইই বলছে।“
“তো, তুই নাক চুবড়িয়ে স্বাদ নিবি তো অত ভাববিহ্বল হয়ে পড়ছিস কেন? অত দুঃখ কষ্ট মাখা কথা আউড়াচ্ছিস কেন?” আতিফের কথার বাণে এবার ঘায়েল হয়ে যায় নবী। চুপ করে ‘কাপ’ নিয়ে নেয়। আতিফ তার মাথায় আবারও ঠক করে টোকা দেয়, “কী রে, ‘আইডিয়াটা’ বল।“
“ওহ, হ্যাঁ, আইডিয়া।“ নবী এমন করে কথাটা উচ্চারণ করে যেন কোনো ধ্যানমগ্ন ঋষির কেউ ধ্যান ভাঙিয়ে দিল। তারপর কণ্ঠস্বর নিচু করে ফিসফিস করে বলল, “আইডিয়াটা আর কিছুই নয়, একটা খুন।“
“খুন!” আকাশ থেকে পড়ল আতিফ। তার চোখ কপালে উঠার জোগাড়।
“হ্যাঁ, খুন, একটা ছোট্ট খুন। আমরা তো আস্ত একটা ‘রাষ্ট্র’কে খুন করতে চলেছি, সে তুলনায় এটা একটা মামুলি খুন। সেটা একটা গুলিতেও হতে পারে, আবার একটা সাড়ে তিন হাত দড়িতেও হতে পারে।“
“কী সব বকছিস, আমার মাথায় কিছুই ঢুকছে না!”
“ঢুকবে, ঢুকবে, ঠিকই ঢুকবে। ঢুকবে না যাবে কোথায়?”
“অত হেঁয়ালি না করে, ব্যাপারটা এবার খুলে বলত।“
“বলবই তো, বলার জন্যেই তো ভেবেছি। না বললে, কাজটা হবে কী করে?”
“ওহঃ, আবার সেই হেঁয়ালি! ছাড় তোর ওসব বাটপাড়ি কথা।“ মেজাজ খাটা করে ঘরের দিকে পা বাড়াতে বাড়াতে আতিফ মোবাইলটা হাতে নিয়ে বলল, “দেখি, এবার ফোন করে লোকটাকে পাই কি না।“ বলেই মোবাইলটা কানে ধরল। পর পর দুবার ‘রিডায়াল’ করে ‘ধুর’ বলে যেই বিরক্তি প্রকাশ করল আতিফ, অমনি ব্যালকনির করিডর থেকে ভেসে এল, “মেজর জেনারেল জুনাইদ মোল্লা খতম!”

চলবে...

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

বক্তব্য রাখছেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নির্বাচন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের নৌ পরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডক্টর এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্প্রতি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব লর্ডসে মানবাধিকার সংগঠন ‘ভয়েস ফর বাংলাদেশ’ আয়োজিত সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

‘ডিসকাশন অন ডেমোক্রেটিক কলাপ্স অ্যান্ড রিবিল্ডিং অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সম্মেলনে হাউস অব লর্ডসের সিনিয়র সদস্য আলেক্সান্ডার চার্লস কার্লাইল কিউসি সভাপতিত্ব করেন। ভয়েস ফর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্রডকাস্টার আতাউল্লাহ ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্মেলেনে সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী পল স্কালি বলেন, বাংলাদেশে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তার সঠিক তদন্ত শেষে যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে করে এ ধরনের ঘটনার পুররাবৃত্তি না হয়।

লর্ড হোসাইন বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সব সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে সব ধরনের সহায়তা পাবে।

সম্মেলনে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান লেবার দলীয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুপা হক।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
ধামরাইয়ে শ্রমিকবাহী বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪