শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক

“নো, থ্যাঙ্কস, আমি কিছুই খাব না, পেট ভর্তি হয়ে আছে।“ কৌশলে অনুরোধটা নাকচ করলেন মজিদ ভাট। আসলে তাদের খেতে মানা। বাইরের কোনোকিছু তারা খেতে পারবেন না। তারা হাড়ে হাড়ে জানেন তাদের ছায়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ায় মৃত্যু। প্রশিক্ষণের সময় তাদের বলে দেওয়া হয়, মানুষ তো দূরের কথা দেয়ালকেও সন্দেহের তালিকায় রাখতে হবে। গুপ্তচরদের কাছে কোনো কিছুই সন্দেহের বাইরে নয়। একটা কলাগাছও শত্রু হয়ে উঠতে পারে। ‘বিশ্বাস’ নামক বস্তুটাকে মন থেকে ঝেরে ফেলতে হবে। কখনো কখনো নিজের মনেও ফোটাতে হবে সন্দেহের সূঁচ। ব্যাপারটার কিছু আঁচ পেয়ে জুনাইদ আর চাপাচাপি করলেন না। আতিফের দিকে চোখ ইশারা করাতে, আতিফ গ্লাসদুটো ট্রে তে করে রান্নাঘরে নিয়ে গেল। একটা মিষ্টি গন্ধ চারপাশ থেকে ভেসে আসছে। সকালের টাটকা গন্ধ। ফুল যেমন ফোটার পর পরই একটা টাটকা গন্ধ ছড়ায়, একটা দিনও রাতের গর্ভ থেকে বের হওয়ার সময় একটা গন্ধ ছড়ায়। এ গন্ধ সে গন্ধ। দিন ফোটার গন্ধ। গন্ধটা ঘরের চারপাশকে মাতিয়ে দিচ্ছে। তারপর অরণ্যে ঘেরা বাড়ি। বনানী ফুলের গন্ধ রোদের সঙ্গে মিশে চরাচরকে আরও মাতোয়ারা করে দিচ্ছে। আতিফ রান্নাঘর থেকে ফিরে এলে, মেজর জেনারেল জুনাইদ মোল্লা মজিদ ভাটকে বললেন, “হুজুর, এবার আপনার কথা পাড়ুন।“
“জি” বলে, লেফটেন্যান্ট মজিদ ভাট বলতে শুরু করলেন, “দ্যাখো, আতিফ, তোমার সম্বন্ধে আমরা অনেক শুনেছি, তুমি ইঞ্জিনিয়ারিং এর মেধাবী ছাত্র, একধারে সাহসী অন্যধারে বুদ্ধির মারপ্যাচ ভালোই পার। তা ছাড়া তোমার অভিজ্ঞতাও প্রচুর। যাকে বলে ঠেকে শেখা, সেটা তোমার আছে। তোমার কুটিল ব্রেন আমাদের খুউব কাজে লাগবে। দ্যাখো, আসল অস্ত্র তো ব্রেন, তাই না? ব্রেন ঠিকভাবে খাটাতে পারলে, পৃথিবীর যেকোনো কাজে জেতা যায়। সে যুদ্ধই হোক আর খেলাই হোক। ব্রেনে ধার না থাকলে, কিছুই করা যাবে না। ভোঁতা ব্রেন দিয়ে একটা পুকুরও জয় করা যায় না। আমরা জানি, গোটা নেপিদ শহর তোমার হাতের তালুর মতো চেনা। তাই আমাদের পরবর্তী ‘অ্যাটাক’ এর মাস্টারমাইন্ড তোমাকেই হতে হবে।“
“মাপ করবেন, ব্যাপারটা ঠিক বুঝলাম না।“ মাথা খুঁটে আতিফ।
“ব্যাপারটা পানির মতো সহজ, আতিফ।“ বললেন জুনাইদ মোল্লা। আতিফ জুনাইদের দিকে চোখ ঘোরাতে, জুনাইদ বললেন, “আইএসআই’এর এ পর্যন্ত যতগুলো অ্যাকশন সংঘটিত হয়েছে, তার সব চেয়ে বড় ‘অ্যাকশন’ সংঘটিত হতে যাচ্ছে এবার। সঙ্গে থাকছি আমরা, ‘রোহিঙ্গা জেহাদি ফৌজ’। অর্থ, প্ল্যানিং ও ব্লুপ্রিন্ট আইএসআই এর। ফিল্ডে কাজ করব আমরা।“
“সে তো বুঝতে পারলাম, হুজুর, কিন্তু প্ল্যানিং টা কী?” কপালের ভাঁজ সরু করল আতিফ।

“প্ল্যানিং টার নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্মাইলিং ইব্রাহিম’।“ স্যুটকেসটার কয়রা চেনটা ঘ্যাঁচ করে খুলতে খুলতে বললেন মজিদ ভাট। চতুর মজিদ ভাটের আইএসআই’ উইংসে ব্যাপক নামডাক। বিগত আট বছর ধরে আইএসআইএর কোরগ্রুপের মেম্বার। ইতোপূর্বে আফগানিস্তান ও ভারতে কাজ করেছেন। আইএসআই-এ যোগদানের পূর্বে তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ছিলেন। দাপুটে সেনা অফিসার। করাচি সেনা অ্যাকাডেমিতে এখনো তার নাম শুনলে সবাই ‘সেলাম’ ঠুকেন। ভারতে থাকার সময় চতুরতার সাথে ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র) এর একটা ‘গোপন ষড়যন্ত্র’ বানচাল করে দিয়েছিলেন। ষড়যন্ত্রটা ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাশ্মীরের পুঞ্চ সেক্টর দিয়ে ‘সারজিক্যাল অ্যাটাক’ করে পাকিস্তানি সেনাছাউনি ধ্বংস করে দেওয়া। গোপন তথ্য পাচারের মধ্য দিয়ে পুরো পরিকল্পনাটাই ভেস্তে দিয়েছিলেন লেফটেন্যান্ট মজিদ ভাট। এর ফলে আইএসআই ডিপার্টমেন্টে তার প্রমোশনও হয়। তিনি ‘ফিল্ড এজেন্ট’ থেকে ‘ফিল্ড অফিসার’ এ উন্নিত হন। আইএসআই-এর কোরগ্রুপের মেম্বার হন। চেনটা খুলে, স্যুটকেসের ভেতর থেকে খড়মড় করে একগুচ্ছ কাগজের বান্ডিল বের করে মজিদ ভাট চোখ টান করে বললেন, “মিয়ানমারের ওপর আমাদের সব থেকে বড় অ্যাকশন। একাজেই ওরা টের পাবে, ওদের মৃত্যুঘণ্টা বেজে গেছে। মৃত্যুর বদলা হবে মৃত্যু। লাশের বদলা লাশ।“

আতিফ আর নবী দুজন দুজনের দিকে মুখ চাওয়াচায়ি করল। চোখের ইশারায় আতিফ জানতে চায়ল, অ্যাকশনটা কী? নবী ঘাড় নড়াল, কিছুই বুঝতে পারছি না। লেফটেন্যান্ট মজিদ ভাট একটা সাদা রঙের কাগজের ওপর নীল কালি দিয়ে কী সব আঁকিবুঁকি আঁকা স্কেচ বের করে বললেন, “এটা চিনতে পারছ, আতিফ?” আতিফ মাথা ঝুঁকে চোখদুটোকে কাগজের আঁকিবুঁকির মধ্যে পুরে দিল, নাহ, ঠিক বোঝা যাচ্ছে না! তবে এটুকু আন্দাজ করা যাচ্ছে যে, কোনো একটা বিল্ডিং-এর স্কেচ। আতিফ ঘাড় এদিক ওদিক করে বলল, “নাহ, চিনতে পারছি না।“ মজিদ ভাট স্কেচের ওপর আঙুল রেখে স্তরের পর স্তর আঁকা একটা টাওয়ারের স্কেচ নির্দেশ করে জিজ্ঞেস করলেন, “এটা চিনতে পারছ?” আতিফ ভালো করে চোখের জরিপ করে দেখল, একটা প্যাগোডার স্কেচ।

“এটা একটা প্যাগোডার স্কেচ, সেটা বোঝা যাচ্ছে, কিন্তু কোথায়, কী, সেসব কিচ্ছু বুঝতে পারা যাচ্ছে না।“ কথাটা বলেই আতিফ ভাবল, লোকটা আমাকে এসব কেন দেখাচ্ছেন! এসব দেখিয়ে তিনি কী করতে চায়ছেন! কিছু বলা নেই কহা নেই, হুট করে একটা কাগজ বের করে তার ওপর আঁকা একটা বিল্ডিং-এর স্কেচ কেন দেখাচ্ছেন! ভোর থেকে এমনিতেই মনটা খারাপ। আব্বাদের খোঁজটা পাওয়ার পর থেকে মনটা নাফ নদীতেই পড়ে আছে। সবসময় মনটা গাহাচ্ছে, আব্বাদের কী হয় কী হয়! সবকজন না খেয়ে মারা গেলে, বংশটা নির্বংশ হয়ে যাবে! আমার আর কী ভরসা! এই আছি এই নেই! হৃদয় কুরে কুরে কাটে আতিফের। এতক্ষণ ধরে মনের মধ্যে উসখুস করতে থাকা কথাটা এবার পেড়েই বসল আতিফ, “স্মাইলিং ইব্রাহিম অ্যাকশনটা কী, একটু খুলে বললে ভালো হয়।“
“অত উতলা হচ্ছ কেন আতিফ, সব খুলে বলা হবে, সব খুলে বলার জন্যেই তো আমাদের এখানে এই সাতসকালে আসা।“ ঠোঁটে একটা রহস্যমাখা হাসি মাখিয়ে বললেন মেজর জুনাইদ। জুনাইদের কথা শেষ হতে না হতেই মজিদ ভাট জুনাইদের কথার সঙ্গে জুড়ে দিলেন, “স্মাইলিং ইব্রাহিম হলো মিয়ানমারের উপর সব থেকে বড়সড় অ্যাটাক, রাজধানী নেপিদে অবস্থিত মায়ানমারের পার্লামেন্টে আক্রমণ। নয়জনের আত্মঘাতী টিম থাকবে। তিনজন সুযোগ বুঝে পার্লামেন্টের ভেতরে ঢুকে যাবে, তিনজন বাইরে থাকবে আর বাকি তিনজন পার্লামেন্ট লাগোয়া এলাকায় টহল দেবে। সুযোগ বুঝে প্যাগোডাটাকেও উড়িয়ে দিতে হবে। পুরো মিশনটা আমাদের এক ক্যাপ্টেন কো-অরডিনেট করবেন। তিনি নেপিদের এক নামি হোটেলে গোপন আস্তানা গেড়ে থাকবেন। কাজ সফল করে পালাবার পথ না পেলে নিজেকে আত্মঘাতী বোম দিয়ে উড়িয়ে দিতে হবে। কোনোভাবেই ধরা পড়া চলবে না।“

চোখ মুখ ‘থ’ করে শুনছে আতিফ। মনে মনে বলছে, সে তো মরতে হবেই, এতদিন গাড়ি গাড়ি টাকা খরচ করে কোরবানির খাসির মতো করে পুষেছেন, এবার তো কোরবানি হতে হবেই। মজিদ ভাট এবার আতিফের দিকে তাকিয়ে বুকের সিনা ফুলিয়ে বললেন, “আমরা ঠিক করেছি, প্রথম তিনজনের টিমের তুমি থাকবে ক্যাপ্টেন। তোমার নেতৃত্বেই বাকি দুজন পার্লামেন্টের ভেতরে ঢুকবে।“
“কিন্তু… ।“ কাঁচুমাচু করে আতিফ। জুনাইদ চোখ ঘুরিয়ে বলে উঠলেন, “কোনো সমস্যা, আতিফ?” আতিফ মনের কথাটা গিলে নিয়ে বলল, “না, সেরকম কিছু না।“ নবী চেয়ার ছেড়ে উঠে বলল, “লুকোচ্ছিস ক্যানে আতিফ, মনের কথাটা খুলে বলে ফেল।“

লেফটেন্যান্ট মজিদ ভাট রিমলেস চশমার ওপর দিয়ে এমুখ ওমুখ চাওয়াচায়ি করেন। মনের কথা! কথা খুলে বলবে! কিছুই বুঝে উঠতে পারেন না ভাটসাহেব। তবে তার গোয়েন্দা মন আন্দাজ করে, আতিফ কিছু একটা ব্যাড় বাঁধানোর চেষ্টা করবে। হয় বাড়ির অজুহাত না হয় পেটের অসুখ। এসব তো কম চরালাম না! এসব চরিয়ে চরিয়েই বুড়ো হয়ে গেলাম। এদের ধাত দেখলেই অসুখ চেনা যায়।
“হুজুর আতিফ আজ সকালে……।“ নবী কথাটা বলতে শুরু করলেই, “এই নবী, তুই চুপ করবি?” ধমকে থামিয়ে দিল আতিফ। নবী আতিফের ধমকের ভাষা বুঝতে পেরে কথাটাকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে বলল, “আতিফ আজ পুরো কোরআন শরিফ ‘খতম’(তিরিশ পারা পাঠ সম্পূর্ণ করা ) দিয়েছে।“
“মাসআল্লাহ!” উৎফুল্ল হয়ে উঠলেন মেজর জেনারেল জুনাইদ মোল্লা। মজিদ ভাট, জুনাইদ মোল্লার মতো অত উৎফুল্ল না হয়ে ঠোঁটে হাসি মাখিয়ে বললেন, “এ তো খুব ভালো ব্যাপার। এখন থেকে তুমি কোরআন পড়া মানুষ। আল্লাহর অন্যতম নেকবান্দা।“
ব্যাপারটা যে একেবারে ডাহা মিথ্যে তা নয়, আতিফ এমনিতেই প্রত্যেক ভোরে কোরআন তেলওয়াত করে। তার ‘খতম’ দেওয়াটা দিন সাতেক আগেই সম্পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু এখানে নবী প্রথমদিকে সেকথা বলতে চায়নি, সে বলতে চেয়েছিল, আতিফের আব্বা-মা, ভাইয়েদের খোঁজ পাওয়ার কথা। আতিফ যে এই কটা দিন অন্য কোনো কাজে যেতে পারবে না, সে নয়াপাড়া ক্যাম্প হয়ে নাফ নদীতে যাবে, সেকথা বলতে চেয়েছিল। কিন্তু আতিফের ধমকের ইশারায় নবী তার ভুলটা বুঝতে পারে। জুনাইদ মোল্লা বা মজিদ ভাটরা যদি কোনোভাবে জানতে পারেন, আতিফ ‘অ্যাটাক’এর আগে তার বাপ-মায়ের খোঁজে চলে যাবে, তাহলে তার গদ্দন থাকবে না। আর জে এফ কোনোমতেই তার মতো সাহসী ও বুদ্ধিমান শিক্ষিত মুজাহিদকে হাতছাড়া করবে না। এমনিতেই একা একা বাইরে বেরোনো নিষেধ, তার ওপর নয়াপাড়া হয়ে নাফ নদীতে যাওয়া! আকাশ কুসুম কল্পনা! আতিফ তো এখন আর শুধু জাফর আলির ছেলে নয়, নবীর অন্তরঙ্গ বন্ধুও নয়, আতিফ এখন ভুরি ভুরি গোপন তথ্য আর ষড়যন্ত্র ঠেসে পুরা একটা জীবন্ত ফাইল। হেঁটে চলে বেরোনো কম্পিউটার! আর জে এফ, আইএসআই আর আইএসআইএস-এর ভেতরের কথা জানা মানুষ। সুতরাং সে কোনোভাবে শত্রুর হাতে পড়ে গেলে অনেক গোপন তথ্য লিক হয়ে যাবে! মুজাহিদদের ‘মুজাহিদজীবন’ থেকে জীবন্ত বেরোনোর কোনো পথ থাকে না। নজরে রাখার জন্যে, একজন মুজাহিদের পেছনে আরেকজন মুজাহিদকে গোয়েন্দার মতো লাগানো থাকে।

“এই প্ল্যানিংটার এখনো মাস তিনেক সময় আছে। তার আগে নিজেদের তৈরি করতে হবে। আর জে এফএর একটা টিম সামনের সপ্তাহেই নেপিদ যাবে। ব্লুপ্রিন্ট অনুযায়ী তারা লোকেশন ঠিক করে আসবে। এই টিমে তোমাকেও যেতে হবে।“ চোখ থেকে চশমাটা খুলে দাগ পড়া চোখে তাকিয়ে বললেন মজিদ ভাট।
“আমাকে!” আঁতকে ওঠার মতো করে বলল আতিফ। তারপর পরক্ষণেই গলার স্বর নামিয়ে বলল, “ও আচ্ছা।“ মনের উপকূলে আছড়ে পড়ল দুশ্চিন্তার ঢেউ, সামনের সপ্তাহ মানে তো হাতে মাত্র চারদিন বাকি! এই চারদিনের মধ্যে কী করে লুকিয়ে নাফ নদী ঘুরে আসব? নবীও তো আমার সঙ্গে যেতে পারবে না, ও বালুখালি আক্রমণের কমান্ডার। সেটাও তো একদিন পর। এখান থেকে নয়াপাড়া যেতে পাঁচ ঘণ্টাও লাগবে না, কিন্তু সেখান থেকে নাফ নদীতে নেমে নৌকো করে আব্বাদের খোঁজ পাওয়াটা তো আর পাঁচ ঘণ্টায় হবে না? কত ঘণ্টা না কয়দিন লাগবে তার ঠিক ঠিকানা নেই। আবার দুদিনের বেশি এই ট্রেনিং অ্যাকাডেমি ছেড়ে আত্মগোপন করে থাকাও যাবে না। নবী থাকলে না হয় ও আরও এক-আধটা দিন ম্যানেজ করে নিতে পারত, কিন্তু এই গেরোতে ও তো অ্যাকাডেমিতে থাকবে না! ও তো কুরবানির ডোর গলায় পরেই নিয়েছে! শুধু জিলহজের চাঁদ উঠতে বাকি। যেনতেন প্রকারে আব্বাদের ডাঙায় উঠিয়ে দিয়ে আসতে পারলেই হলো, আর চিন্তা নেই, আব্বা মারা গেলে কবরের মাটি তখন ঠিকই পেয়ে যাবে। আব্বার স্বপ্নটাও সত্য হবে। তখন আমি বাঁচি আর মরি, কোনো চিন্তা নেই। দেশের জন্যে হাসিমুখে শহীদ হয়ে যাব।

চলবে...

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

 

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী

ছবিঃ সংগৃহীত

যানজটে আটকে থাকা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের গাড়ি বহরকে সাইড করে দিতে গিয়ে বাস চাপায় নিহত হয়েছেন জসিম উদ্দিন (৫৩) নামে জামায়াতের একজন কর্মী।

নিহত জসিম উদ্দিন উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত আলী আশ্রাফ মোল্লার ছেলে। তার স্ত্রী ও শিশুসহ তিন ছেলে সন্তান রয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমাই উপজেলার সৈয়দপুর এলাকার ওয়ালটন শো-রুমের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা মারুপ সিরাজী বলেন, লক্ষীপুর যাওয়ার পথে জামায়াত আমিরের বহরের ৪টি গাড়ি বাগমারা উত্তরবাজারে যানজটে আটকা পড়লে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ তিশা পরিবহনের ঢাকামুখী একটি দ্রুতগতির বাস ধাক্কা দিলে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দীনের মাথা থেতলে যায়। রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম মুন্না বলেন, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হলেও বাগমারা বাজার অংশে অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে দুই লেন করা হয়েছে।সে কারণে ২৪ ঘণ্টাই সড়কের এই অংশে যানজট লেগে থাকে। যানজট নিরসনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করলে আজ হয়তো এমন মৃত্যু হতো না।

লালমাই উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসেন বলেন, আমিরে জামায়াত লক্ষীপুর যাওয়ার পথে বাগমারা উত্তর বাজার বালুর মাঠে পথসভা করেন। পথসভাস্থলে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে তাঁর গাড়ি বহর যানজটে আটকা পড়ে।

তখন আমিসহ সংগঠনের ১৫/২০ জন কর্মী ট্রাফিকের দায়িত্ব শুরু করি। আমরা আমিরে জামায়াতকে নিয়ে পথসভায় চলে যাওয়ার পর জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দিন বাস চাপায় মারা যান।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, বাগমারা উত্তরবাজারে বাস চাপায় জসিম উদ্দিন নামের একজন মারা গেছেন। মরদেহ নিহতের বাড়িতে রয়েছে। খবর পেয়েই নিহতের বাড়িতে গিয়েছি।

 

Header Ad
Header Ad

সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  

ছবিঃ সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর বাজারে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। পুলিশের আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং দলীয় অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল রায়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম মজনু এবং যুবদল নেতা শহিদ মিয়ার লোকজনের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপি ও যুবদলের অস্থায়ী অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে মধ্যনগর বাজার এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনার আশঙ্কা এবং সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়ার আগে পর্যন্ত বাজার এবং আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধ করা হয়।

মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সজীব রহমান বলেন, ‘মধ্যনগর যুবদল নেতা শহিদ মিয়া ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাঈযুম মজনুর লোকজনের মধ্যে পুলিশের আসামি ধরা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে উভয় পক্ষের লোকজন বিএনপি ও যুবদলের অফিস ভাঙচুর করে। এতে বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাজার ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। বিশৃঙ্খল অবস্থা এড়াতে বাজারে পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাজার ও আশপাশের এলাকায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম
ইসরায়েলের তেল আবিবে তিনটি বাসে বিস্ফোরণ
বিয়ের ছবি ভাইরাল, বললেন শুভকামনা জানানোর জন্য ধন্যবাদ