ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২৩
নেই দেশের নাগরিক
“কোই, দেন।“ কড়া করে কথাটা বলে হাত বাড়াল আবুল। মতি কুপিটা তার হাতে দিল। আবুল ছইয়ের ভেতরে সেঁদিয়ে গেল। নদীর একটা স্রোত নৌকোর এ মটকা থেকে ও মটকায় না যেতে যেতেই আবুল ফিরে এল, “নিন।“ কুপিটা হাত বাড়িয়ে নিল মতি। পাতলা ঠনঠনে! দুটো পাঁচ টাকার কয়েনের মতোও ভারী হবে না! মতি কুপিটাকে আলতো করে ঝাঁকাল। ভেতরে মিহি ছলছল শব্দ পটবাড়ি খেল। হ্যাঁ, তেল আছে, তবে পরিমাণে খুবই কম! আরিফা হলে ঠোঁট কেটে বলত, আপনি এমন চিপোস, হাতে এতটুকু তেলও ওঠে না! তেল দিয়েছেন না মজাক করেছেন! এতে তো সলতেই ভিজবে না! মতিকে কুপিটা নাড়াতে দেখে আবুল ঠোঁটে চালাকির হাসি মাখিয়ে বলল, “তেল বেশি নেই। যা আছে, ওই থেকেই একটুখানি দিলাম।“
“এমারজেন্সি কাজে জ্বালাবেন। অন্য সময় নিভিয়ে রাখবেন। আমাদেরও তো তাইই করতে হবে। উপায় তো নেই।“ পরামর্শ দিলেন ইয়াসিন মাস্টার।
“সেটাই করতে হবে। তা ছাড়া কী আর করা যাবে!” বলেই কুপিটা নিয়ে তাদের নৌকোর ছইয়ের দিকে এগোল মতি। হাতে ঠোঙার মতো ঠনঠনে কুপিটা হাতে নিয়ে সে ভাবল, আমাদের দেহের জানটাও তো এতটুকু তেলের মতো তলানিতে এসে ঠেকেছে। যেকোনো সময় ফুঁৎ করে ফুরিয়ে যাবে। মানুষের জানও তো তেলের মতো জ্বালানি, যতক্ষণ থাকে ততক্ষণ জ্বলে। ফুরিয়ে গেলেই, ঠনঠনে কুপির মতো এই শরীরটাও খোলের মতো ঠোঙা হয়ে যায়। কিন্তু এইটুকু তেলে আর ক-রাত যাবে! এখনও তো কোনো ডাঙার টিকি দেখতে পেলাম না! আকাশের দিকে চোখ তোলে মতি, কী আর করা যাবে, আল্লাহর দেওয়া তারা-নক্ষত্রের আলোই ভরসা। চাঁদও তো থালা ভরে আলো দিতে পারে। এই ভিটেহীন চালাহীন মানুষের কাছে আল্লাহর চাঁদ-তারাই আমাদের অফুরন্ত কুপি, হ্যারিকেন। রাতের আলো-ছায়ায় নৌকোর পাটাতনের ওপর দিয়ে খড়খড় করে হেঁটে চলল মতি। অন্ধকার গেড়ে বসতে শুরু করেছে। নদী থেকে উঠে আসছে থোক থোক অন্ধকার। সে অন্ধকারে আরও কালো হয়ে উঠছে মতি। চোখ ফুঁড়ে ঢুকে পড়ছে কোটরে। ছায়াময় হয়ে উঠছে মন। সে মন বিন্দু বিন্দু করে ছড়িয়ে পড়ছে আসমান-জমিন। চরাচর। মতি ভাবছে, নয়াপাড়ার আশা তো শেষ। আর বাকি থাকা বলতে সেই শাহপরীর দ্বীপ আর সেন্ট মারটিন দ্বীপ। সে তো অনেক দূর! বঙ্গোপসাগরের বুকে। মাঝ দরিয়াই! আব্বার তো যা হাল, তাতে গেল গেল অবস্থা! কবরের মাটি কোথায় পাব! আব্বার কথাই বা একা বলছি কেন, আমাদেরও তো বিদায় ঘণ্টা বেজে যেতে পারে। খাবার প্রায় শেষ। কুপির তেলও নেই। খাবার পানিও যাই যাই। শরীরটা তো আর হাওয়া খেয়ে চলবে না? আমাদের না হয় কবরের মাটি না পেলেও হবে, নদীর পানিতে ফেলে দিলেই জন্তুজানোয়ারে ঠিক ছিঁড়েছুড়ে খেয়ে নেবে। দেহের আর কী আছে? রুহুটা চলে গেলেই তো ওটা একটা খোল। এই যেমন নৌকোর খোল। এই তক্তাগুলোও একসময় গাছ ছিল। জীবন্ত গাছ। ফুল ফল পাতা সবই ছিল। যেই কুড়ুলের কোপে জানটা ধড়ফড় করে বেরিয়ে গেল, অমনি গাছটা ‘গাছ’ থেকে ‘কাঠ’ হয়ে গেল! ঠিক তেমনি, আমাদের শরীর থেকে রুহুটা বেরিয়ে গেলেই, শরীরটা ‘শরীর’ থেকে ‘লাশ’ হয়ে যায়! অর্থাৎ শরীরের খোল। কিন্তু আব্বার ক্ষেত্রে তো ব্যাপারটা আলাদা। আল্লাহর স্বপ্নাদেশ আছে। আব্বা যদি দাফনের মাটি পায়, তাহলে রোহিঙ্গারাও দেশ পাবে। আব্বাকে যেকোনোভাবে মাটিতে কবর দিতেই হবে। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই হৈচৈ চেঁচামেচি! হুল্লোড়! নৌকোর ভিড় পাতলা হতে শুরু করেছে। ভোরে আবারও গুলি ছুটেছে। ক-জন মারা গেছে কে জানে। যে যেদিকে পাচ্ছে, পালাচ্ছে। কচুরিপানার জমাট ঝোঁপ যেমন বন্যার জলের তোড়ে ভুষভুষে মাটির মতো ছেড়েছুড়ে যায়, রোহিঙ্গা নৌকোগুলোও ঠিক তেমন ভাবে এদিক ওদিক ভেসে যাচ্ছে।
আবুল আচমকা বলে বসল, “নৌকো খুলে নিচ্ছি আমরা।“
“কেন!” আকাশ থেকে পড়ল মতি। চোখ বড় করে বলল, “নৌকো খুলে নেবে মানে ঠিক বুঝলাম না!”
“মানে খুবই সহজ। আমরা আলাদা আপনারা আলাদা। জোড় বেঁধে আর যাব না।“ কাঠ কথাগুলো চোখমুখ উলটে বলল আবুল।
“সে ঠিক আছে…।“ আমতা আমতা করে নুহু। “একসাথে থাকলে বেশি সুবিধে হচ্ছিল, এই আর কী।“
“মাস্টারভাই বলে দিয়েছেন, নৌকো খুলে নিতে, আমি খুলে নিচ্ছি। আপনাদের দড়িটাও আপনারা খুলে নেন।“ বলেই আবুল দড়ির গিঁট খুলতে লাগল। মতির নরম হৃদয়টা ডুকরে উঠল। আবুল একটা করে গিঁট খুলছে আর মতির হৃদয়টায় একবার করে হাতুড়ির ঘা পড়ছে! চোখ ছলছলিয়ে উঠল তার। নুহু খোটা দিয়ে বলল, “হ্যাঁ হ্যাঁ খোলো খোলো, কৃপণের বিছন, তোমাদের সাথে থেকে আমাদের কী হবে, আমরা কি দেশ ফিরে পাব, না তোমরা আল্লাহ যে আমাদের জান বাঁচাবে?”
“তুই চুপ কর, নুহু।“ ধমকায় মতি। তার গলা ভিজতে শুরু করেছে। নুহু বড় ভাইয়ের কথায় কান না দিয়ে আবারও ফুট কাটল, “আস্ত দেশ ছেড়ে চলে এসেছি তো কোথাকার পর মানুষের একটা নৌকো! জন্মভিটের লেগেই কাঁদিনি, তো চিনি না শুনি না কোথাকার কার জন্যে দুখ কাঁদব! বড়ভাই তুমি সরো তো, আমিই আমাদের নৌকো খুলে নিচ্ছি।“ হুটপাট করে ছোবড়ার দড়ির বাঁধন খুলতে লাগল নুহু। মতি আর বাধা দিল না, বাধা দিয়েই বা কী করবে, ওরা যখন মনস্থির করেই ফেলেছেন একসাথে থাকবেন না, তখন জোর করে আত্মীয়তা পাতানোর তো কোনো দরকার হয় না। জোর করে কি আর কুটুমতালি হয়? মতি একবার ভাবল, ইয়াসিন মাস্টারকে একটু বলি, হুট করে কী এমন হলো, যে আলাদা হতে হলো? মাস্টার তো শিক্ষিত মানুষ। এলেমওয়ালা লোক। বললে, নিশ্চয় বুঝবেন। আবার পরক্ষণেই ভাবল, নাহ, থাক, অত দরদ দেখানোর কিছু নেই। সেরকম কোনো ইচ্ছে থাকলে, উনি এতক্ষণে ছইয়ের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসতেন। যখন বাইরে আসছেন না, ভেতরে কাপ নিয়ে বসে আছেন, তখন অত নিজেকে ছোট করে আর একসাথে থাকার কথা বলতে যাওয়ার কোনো মানে হয় না। উনি নিশ্চয় অন্য কিছু ভেবেছেন। নিজের যেটা ভালো, সেটাই ভেবেছেন। ওদের নিজস্ব ভাবনায় কেন হস্তক্ষেপ করতে যাব? যে যা ভাবছে ভাবুক গে।
নুহু আর আবুল যেন পাল্লাপাল্লি করে দড়ির গিঁট খুলছে। মতি খাড়া হয়ে নৌকোর পাটাতনের ওপর দাঁড়িয়ে ছলছল চোখে দেখছে আর ভাবছে, দড়ির গিঁটের মতো এভাবেই কী সম্পর্কগুলো একদিন খুলে খুলে যায়! সে রক্তের সম্পর্কই হোক আর অ-রক্তের সম্পর্কই হোক। সব সম্পর্কই তো কোনো না কোনো বাঁধনি দিয়ে বাঁধা থাকে। তারপর সময় এলেই সেসব বাঁধন খুলে যায়। যেমন বৃন্ত থেকে খুলে যায় পাতা, বোঁটা থেকে খুলে পড়ে ফুল, শরীর থেকে ছেড়ে যায় রুহু। জন্মভিটে ছেড়ে এলে সেও তো একদিন পর হয়ে যায়। এভাবে পর হয়ে যায় ‘দেশ’ও। সমস্ত বন্ধনের গিঁট একটা একটা করে খুলে, একসময় নিজেই নিজের কাছে পর হয়ে যায় জীবন। তখন সম্পর্কহীন হাড়ের মতো মাটিও আর হাড়কে আপন করে নেয় না। সারাজীবন দূর দূর করে তাড়িয়েই রাখে।
“আচানক কী এমন হলো গ!” ঘাড়ের কাছে এসে দাঁড়াল আরিফা। নিশ্বাসে বিচ্ছেদের হিম ভাপ। মতি ঘাড় ঘোরাল। মা হালেমাও বিছানা ছেড়ে উঠে এসে কোল কুঁজো করে লাঙলের ঈশের মতো বেঁকিয়ে দাঁড়িয়েছেন। মতি একবার ‘খক’ করে কেশে গলাটাকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করল, বলল, “কী জানি, কী হলো, বুঝতে পারছি নে! কারও সাথে তো কোনো ঠুক্মুকও হয়নি!”
“তুমি গিয়ে একবার বলো না ক্যানে, লোকটা তো মাস্টার মানুষ, ঠিকই কথা বুঝবেন।“ মাথার ঘোমটাটা কপালের নিচ পর্যন্ত টানল আরিফা। ডান চোখের নিচের মেহদির ফলের মতো আঁচিলটা টসটস করে তাকাচ্ছে।
“বলে লাভ কিছু হবে না। বলাই হবে। তা ছাড়া ওরা যখন নিজে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তখন যেচে আমাদের বলাটা কি ভালো দেখাই?“ অন্ধকার নদীর দিকে মায়াবি চোখ ফেলে তাকিয়ে থাকল মতি। মনের নদীটায় কান্না জোয়ার ঠেলে বেরিয়ে আসতে চায়ছে। কোনোমতে সামাল দিচ্ছে মতি। হৃদয়ের উপকূলে কচ্ছপের মতো বাসা বাঁধতে এসেছিল যেসব সুখ, তারাও বিচ্ছেদের ছাটে ভেসে যাচ্ছে! সুখ এত কম স্থায়ী কেন? মানুষের শরীর কি সুখকে বেশি দিন সহ্য করতে পারে না, না সুখই শরীরকে বেশি দিন আপন করে নিতে পারে না? আসলে, সুখ পর্ণমোচী। ঝরার জন্যেই ছটফট করে। দুঃখের হাওয়া লাগলেই, ঝরঝর করে ঝরে যায়। একটার পর একটা ঢেউ আসছে আর নৌকোর খোলে ধাক্কা লেগে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ঢেউগুলো শুধু আলতো করে খোলটাকে টোকা দিচ্ছে। সেই টোকাই নৌকোটা ভোরের ঝাউপাতার মতো মিহি করে নড়ে উঠছে। থির জলে হাওয়া লেগে ঢেউগুলোর জন্ম হচ্ছে, তারপর বকপাখির কুঁজের মতো ঢেউগুলো নদীর বুকে গড়া দিতে দিতে আবার জলেই মিশে যাচ্ছে। সুখ তো নদীর এই ঢেউ-এর মতোই, মনের নদীতে কিছুদিন তা তা থৈ থৈ করে আবার মনের গহনেই ডুবে যায়। তার আনন্দের গুনগুন গান, মনের একতারাই ধুন তুলে আবার একতারাতেই ঘুমিয়ে যায়। মতির নির্লিপ্ত চোখ নদীর বুকে গেঁথে আছে। মতি যেন মনে মনে নদীর সাথে কথা বলছে। কার সাথেই আর মনের দুঃখ ফিসফিসাবে? ভাগ্যিস নদীর বুকে মাটি নেই। মাটি থাকলে এই একপেয়ে নদীটাও কাঁটাতারে ঘেরা দেশ হয়ে উঠত, সেই দেশ, যে দেশ তাকে যমের মতো তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াত। তার গদ্দন কেটে ‘ভিনদেশি’র তকমা সাঁটিয়ে দিত।
“ওদের কাছে এক কুপি কেরোসিন তেল আর কয়েক সের চাল চেয়ে নিলে হতো না? চাল যে শেষ!” ঘাড়ের কাছে কথাটা ভুড়ভুড়ি কেটে উঠল। কথাটা বলেই মুখ কচলাল আরিফা। মতি চোখ পাকিয়ে তার দিকে তাকাল। “শুধু কেরোসিন তেল আর চাল কেন? আস্ত একটা দেশই চেয়ে নাও গা না ক্যানে?” চ্যাটাং করে উঠল মতি। চোখ গরম করে বলল, “তুমি বুঝতে পারছ না, ওরা কেন আলাদা হতে চাইছেন? এসব চাওয়ার জন্যেই তো?“
আরিফার নিটোল পলিমাটির মাথায় এসব না ঢুকলেও, মতির এঁটেলমাটির মাথা ঠিকই ধরতে পেরেছে, আসলে ইয়াসিন মাস্টাররা বুঝতে পেরেছেন, একসাথে থাকলে মতিরা তাদের মজুদ খাবারে হাত বাড়াবে, খিদের তাড়নায় জমা খাবারের ওপর হুটড়ে পড়বে। যে খাবারে তাদের নিজেদের দশ দিন যাবে, মতিদের পেট ভরাতে গেলে সে খাবারে দুদিনও যাবে না! তখন হয় না খেয়ে মরতে হবে না হয় চাতক পাখির মতো আকাশে তাকিয়ে থাকতে হবে কখন ত্রাণের হেলিকপ্টারটা ভু ভু করে উড়ে আসে। অথবা খিদেকে কণ্ঠে ধারণ করে পথ চেয়ে বসে থাকতে হবে, কখন বঙ্গোপসাগরের বুক ঠেলে একটা খাবারবাহী জাহাজ গঁ গঁ করে ভেসে আসছে।
কথাটা ইয়াসিন মাস্টারের কানে প্রথম তোলে কুচক্রি আবুল। ইয়াসিন মাস্টারকে ছইয়ের ভেতরে ডেকে নিয়ে ফিসফিস করে বলে, “আপনি এ কী ভুল করছেন মাস্টার ভাই?” ইয়াসিন প্রথমে আবুলের ইঙ্গিতটা বুঝতে পারেননি। আবুলকে চোখ উল্টাতে দেখে, প্রশ্ন করেছিলেন, “কী ভুলের কথা বলছিস?” আবুল তার ড্যাবডেবে চোখ মতিদের নৌকোর দিকে পেঁচিয়ে বলেছিল, “ওদের এভাবে তেল-নুন-চাল যদি দিতে থাকেন, তো আমরা খাব কী?” এক ইশারাতেই ব্যাপারটা বুঝে গেছিলেন শিক্ষক ইয়াসিন। তাই তো! ব্যাপারটা তো অত তলিয়ে দেখিনি! মাথার ঘেলু ঢেউ পাকিয়ে উঠেছিল তার। এ তো এক ধরনের খিটকেলই। মাথা খটখটালেন ইয়াসিন মাস্টার। কিন্তু এই ফ্যাচাং থেকে বাঁচার উপায় পাচ্ছিলেন না। “কিন্তু কী করা যায়, বলত?” ইয়াসিন মাস্টার কথাটা বলতেই আবুল ফন্দিটা ফিসফিস করে আউড়েছিল, “আলাদা হয়ে যান। নৌকো ছাড়িয়ে নিই। ওসব উটকো ঝামেলা টেনে কী লাভ?”
উটকো ঝামেলা! মানুষের আপদ-বিপদে সহমর্মী হয়ে থাকাটা ‘উটকো ঝামেলা’! অন্য সময় হলে এই কথাগুলো ইয়াসিন মাস্টারের মাথাটাকে খচিয়ে দিত। আবুলকে সপাটে থাপ্পড় মারতেন তিনি। চোখ গরম করে বলতেন, “মানুষের জন্যেই মানুষ রে, একজনকে অভুক্ত রেখে আমি নিজে পেট পুরে খাব, এ আবার কেমন ঈমান?”
কিন্তু এখন পরিস্থিতি আলাদা। নিজের জান বাঁচানোই ফরজ কাজ এখন। নিজের জান বাঁচলে, বাপের নাম। ইয়াসিন মাস্টার রগ-রক্ত হেচিয়ে পেঁচিয়ে ভাবলেন, আবুল মন্দ কিছু বলছে না। আমরা এই দু-চার বস্তা ধানকুটা চাল আর আধ ড্রামের কেরোসিন তেল দিয়ে আর ক-জন’কেই বা বাঁচাতে পারব? চোখের সামনে তো কত মানুষই অনাহারে মারা গেল, তাদের একজনকেও তো বাঁচাতে পারিনি! সে ফুরসতই তো নেই। এ যে মৃত্যুর ঢল নেমেছে! ইয়াসিন মাস্টার ফিসফিস করে আবুলকে বলেছিলেন, “তাহলে তাইই কর।“
চলবে…
আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>
এসএন