শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক

“আধখানা রাখাইন নৌকোতে নাড়া বেঁধেছে যে! সে কী কম লোক! কম নৌকো! খোলে খোলে মানুষের জট! কুকুর বেড়ালের মতো গুটিসুটি মেরে পড়ে আছে! সবাইকে জায়গা দিলে, চারখানা নয়াপাড়া লাগবে। কক্সবাজার উপচে বান্দারবান টপকে চট্টগ্রাম ঢেকে যাবে! আমি তো সিকি ভাগের এককোণাও এগোতে পারিনি। লোকের মুখে ঘটনাটার কথা শুনেই পালিয়ে আসতে হলো! অন্ধকারে আন্দাজ করিনি তাই, এখান থেকে নয়াপাড়ার ঘাট অনেক দূর।“ কথাটা বলতেই বলতেই খক খক করে কেশে উঠল মতি। মুখে জল ঢুকে গেছিল। জলে বাধা পেয়ে কথা ‘খক’ করে কাশি হয়ে বেরিয়ে এলো। ইয়াসিন মাস্টার চোখের মণি ঘুরিয়ে বললেন, “সাবধানে মতিভাই, মুখ তুলে চলুন। যেকোনো সময় বিপদ হয়ে যেতে পারে!“

বিপদ কী শুধু জলে? বিপদ আগে পিছে, ওপরে, নিচে, চারদিক থেকে ছেকে ধরে আছে। কোন দিকে আর মুখ তুলে চলব? আল্লাহ বলেন কি না, তিনি নাকি মানুষের জন্যে ছাদ বানিয়েছেন, ‘আসমান’ নামের ছাদ, যখন এই আসমান জল্লাদের মতো কুঠার নিয়ে তেড়ে আসে, তখন কোন বাপ ঠেকাবে? এই আসমানে একটা মই লাগিয়ে দিলেই তো পারতেন? খপ করে ধরে খড়বড় করে আসমানে উঠে পড়তাম। তারপর জান কবজের ফেরেশতাকে বলতাম, এই নিন, আপনাদের কাছ থেকে ধার করা রুহু, যেখান থেকে ধার দিয়েছিলেন, সেখানে জমা করে নিন। যে রুহুর পায়ের মাটি নেই, মাথার ছাদ নেই, সে রুহু কখনো শরীর হতে পারে না। রুহুকে ‘হাওয়া’ করে পাঠালেই পারতেন? ফুঁ দিয়ে যেকোনো দিকে চলে যেত পারত। না হতে হতো ‘ঘরকা’ না হতে হতো ‘ঘাটকা। না লাগত ‘চালা’ না লাগত ‘চুলো’। চোখদুটো আসমানের দিকে করে খেয়ালি হয়ে উঠল মতি। মনের নদীতে জোয়ারের জল তুলল। সে জলের ঢেউ আছড়ে পড়তে লাগল ভাবনার উপকূলে। অনুভূতির তটরেখায়। চোখ যেন আর শুধু দৃশ্য দর্শনের ইন্দ্রিয় নয়, মনের আবেগ অনাবেগের ক্যানভাস।
সবাই হাঁ করে বসে আছে! চোখ ফেড়ে দেখছে তাদের! যেন বিশ্বজয় করে ফিরে এসেছে মতিরা। অথবা তারা যেন অন্য গ্রহের মানুষ। ছইয়ের ভেতরে কাঁদনের গোঙানি শোনা গেল! মেয়ে মানুষের ফোঁপানো কণ্ঠস্বর! হ্যাজাব্যাজা হয়ে মতি আর ইয়াসিন মাস্টার নৌকোর কাছে পৌঁছল। নুহু কপালের ভাজগুলোকে ওপরে ঠেলে মতিকে বলল, “কোথায় গিয়েছিলে! কাউকে কিছু না বলে, কিছু না জানিয়ে, আচমকা দুম করে হাওয়া!”

“কেন, আবুল তো জানে?” নৌকোর খোলে দাঁড়িয়ে গামছা দিয়ে গা মুছতে মুছতে বললেন ইয়াসিন মাস্টার।
“আবুল! ও ব্যাটা তো ঘুমিয়ে কাদা হয়ে গেছিল! এক্ষুণি উঠল। ঘুম থেকে উঠে, সবাইকে কাঁদতে দেখে তবেই কবলাল।“ আবুলের দিকে চোখ বাঁকিয়ে বলল নুহু। ইয়াসিন মাস্টারের দিকে ভয় চোখে তাকিয়ে আবুল ধড়ফড় করে বলল, “আরে আমি তো এদের বলছি, মাস্টাররা পাড়ের খোঁজ নিতে গেছেন, এরা সে কথা বিশ্বাসই করছেন না। বলছেন, আপনারা নাকি বার্মাসেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেছেন, মায়ানমার সেনারা আপনাদের গুলি করে মেরে ফেলবেন!” বৈঠা হাতে ভেটুল গাছের গুঁড়ির মতো পা’গুলো খাড়া করে দাঁড়িয়ে আছে আবুল। তার গোস্ত ঝুলা পা’গুলোর ফাঁক দিয়ে গলে যাচ্ছে নদী থেকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে উঠে আসা অন্ধকার। ছিদল দাঁতগুলো আবারও নড়ে উঠল, “আরে আমার কি দয়া মায়া নেই? আমি কি কোনদিন মাস্টারের ক্ষতি করেছি? নিজের জান দিয়ে মাস্টারকে ভালোবাসি। মাস্টাররা না থাকলে এই আবুল কি আজ দুনিয়ায় বেঁচে থাকত? রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনে আপনারা মানুষ করেছিলেন বলেই তো আজ কথা বলতে পারছি। আপনারাই তো আমার বাপ-মা। রক্তের সম্পর্কের চেয়ে আপনাদের সাথে আমার সম্পর্ক কোনো অংশে কম নয়। তবুও এমন করে মাঝে মধ্যে খোটা দেবেন, যেন আমি পর, রাস্তার কুড়িয়ে আনা ছেলে।“ ফুঁপিয়ে ওঠে আবুল। গামছা দিয়ে চেপে মুখ ধরে। একটা আস্ত বেটাছেলে মোমের মতো গলে পড়ছে!

“তোমরাও হয়েছ সব এক একটা গাড়ল! ওকে কেন যে কষ্ট দাও! ওরও তো একটা মন আছে নাকি? ও তো একটা মানুষ? আর আমাকে নিয়ে এত দুশ্চিন্তা করার কী আছে? ক্ষয়ে ক্ষয়ে আর এক পোয়া জীবন তো বাকি পড়ে আছে! সেটুকুই তো ঠোঙায় নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। এই নদীর নুনপানি খেয়ে সেই এক পোয়াও ফুরিয়ে যাবে! সেসব নিয়ে এত ভাবনার কী আছে? জীবনের ঘড়িতে দম দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন আল্লাহ, কখন যে থেমে যাবে, তা কি কেউ বলতে পারে?” বিড়বিড় করে উঠলেন ইয়াসিন মাস্টার। মাথা ছাপড়িয়ে ছইয়ের ভেতরে ঢুকলেন। একটা হলুদ আলো সিঁদুর মেখে খিলখিল করে হাসছে ছইয়ের বাতায় বাতায়। সেখান থেকে কোলের শিশুর মতো হামাগুড়ি দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে দু’পাশের খোলে। অন্ধকারের গায়ে পশমের সুতোর মতো ফিনফিন করছে হামাগুড়ি দিয়ে আসা সে আলো।
“ভাইজান আপনার কিছুতে লাগেনি তো?” অশ্রুজড়ানো কণ্ঠে ইয়াসিন মাস্টারকে জিজ্ঞেস করল আবুল।
“না রে না, কিচ্ছু হয়নি, খুউব বেশি দূর তো যাইনি।“ ছইয়ের ভেতর থেকে গড়া দিয়ে আসা আলোর সাথে ভেসে এল ইয়াসিন মাস্টারের গলা। কথাটা বলেই, তিনি দু’পায়ের জাঙের মাংস লুকিয়ে টিপলেন। ব্যথায় কনকন করছে। অভ্যাস না থাকলে যা হয় আর কি। টানা সাঁতার কেটে টনটন করে টাটাচ্ছে। ইয়াসিন মাস্টার মনে মনে বলছেন, টাটাচ্ছে টাটাক, না ফুল্লেই হল। যন্ত্রণা মনের মধ্যে পুরে হজম করা যাবে, কিন্তু পা ফুল্লে তো সবাই জেনে যাবে। তখন সবাই ডাঙা খোঁজা বাদ দিয়ে ফোলা পা নিয়েই পড়ে থাকবে! তখন ধান ভানতে এসে শীবের গীত গাহানোয় হবে!

গামছাটাকে চিপে ঘাড়ে ফেলে ছইয়ের ভেতরে কোলকুঁজো হয়ে ঢুকতে ঢুকতে বিড়বিড় করছে মতি। এক হাঁড়া রাত ঠোঁট বাঁকিয়ে ঢুকে পড়েছে ছইয়ের অন্দরমহলে। অন্ধকার ছেকে আছে ছইটাকে। এবার গলা খেঁকিয়ে উঠল মতি, “আরে লম্ফ টম্ফ ধরাবে না এই অন্ধকারেই ঘাপটি মেরে বসে থাকবে?”
“কেরোসিন নেই।“ আরিফার মিহি কণ্ঠ অন্ধকারে কাঁটার মতো বিঁধল। কণ্ঠটা ভারি বেসুরো। শুকনো লংকার সাথে কাচা নুন যেন বেটে লাগানো আছে।
“তেল নেই! বলছ কী!” চোখ থেমে গেল মতির।
“হ্যাঁ, আধকুপিও নেই।“
“হাই আল্লাহ!” মতির মাথায় হাত। সে নুহুর দিকে চোখ বাজিয়ে বলল, “কী রে নুহু, আসার সময় কেরোসিনের ডামটা আনিসনি?”
“জানই আনতে পারছিলাম না তো কেরোসিনের ডাম!” চোখ পাকালো নুহু।
“এখন কী করা যাবে!” মতির জুলপি চুঁইয়ে নামছে দুশ্চিন্তা।
“কী করা আর যাবে, চুপ করে বসে আল্লাহ আল্লাহ করতে হবে!” ঠেস মারল আরিফা। আঁচলের পাড় কোমরে গুঁজল।
“রাত বিরেতের ব্যাপার! আলো টালো না থাকলে হয়?” কপাল ঠুকল মতি।
“ওদের কাছে এট্টুআট্টু চাইলে দেবে না?” মতলব বের করল নুহু।
“তা হয়। কিন্তু……।“ ঠোঁট কাটল মতি। আরিফা থড়বড় করে বলে উঠল, “কিন্তু’র আবার কী আছে? আমরা একসাথেই তো থাকছি, দেবে না ক্যানে?”
“দেখি, ওদের আবার আছে কি না।“ কথাটা ফিসফিস করে বলে, আবুলদের নৌকোর দিকে পা বাড়াল মতি। দু ধাপ এগিয়ে আবার গলা চেপে বলল, “নুহু, তুই যা না ক্যানে, একটুখানি তেল চেহে আন।“
“আমি যাব না, আমাকে দেবে না, একটা বিড়ি দিতে চায় না, সেখানে কেরোসিন তেল দিতে চাইবে? ওসব হাড়কিপ্টে লোক।“
“আস্তে কথা বল।“ চোখ ট্যারাল মতি। “কোথায় কী কথা বলতে হয় জানে না, আর ফদফদ করে বকে যায়! বিড়ি আর কেরোসিন তেল কি এক হলো!” দাঁত খিটমিট করে উঠল মতি, “কথার কোন মাথা মুণ্ডু নেই, বলতে হয় তাই বলে দেয়।“ তারপর আরিফার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল, “দেখি দাও, কুপিটা আমাকেই দাও, আমিই যাচ্ছি।“ ডুবে যাওয়া চাঁদের উল্টো পিঠের আধো আলো ছইয়ের চালা দিয়ে ছেকে যেটুকু ঢুকছে তাতে আরিফা বুঝতে পারল মতির রগাচগা হিলহিলে হাতটা পেতে আছে। ছায়াঘন অন্ধকারে আন্দাজে ছইয়ের কোণায় হাত চালাল আরিফা। একটা নিভে আসা আলতো গরম ভাপ ঠেকল হাতে। কুপির গা’টা এখনও গরম আছে! নেভা তো খুউব বেশিক্ষণ হয়নি? মতিদের ফেরার কিছুক্ষণ আগেই নিভল। শেষ শীখাটা নেভার ধোঁয়া এখনও মিহি করে উড়ছে। কুপিটা স্বামীর হাতে দিল আরিফা। একেবারেই পাতলা ঠনঠনে! কুপিটা কানের কাছে নিয়ে গিয়ে দু-একবার ঠনঠন করে নড়াল মতি। নাহ, তেলের বংশ নেই! একেবারে শুকিয়ে হাড় হয়ে গেছে। নারিকেলের কৌটো কেটে কুপিটা বানানো। মতি নারিকেলের কৌটোটাকে মাপ করে কেটে দিলে, আরিফা কাপড় ছেড়া ত্যানা সরু করে পাকিয়ে সলতে বানিয়েছিল। এভাবে বানানো কুপির আলো নাকি হলুদ হয়। মাটির দেওয়ালে সে আলো পড়লে, দেওয়ালগুলো মনে হয় যেন কাঁচা হলুদ বেটে লাগানো আছে।
“মাস্টারভাই, ও মাস্টারভাই।“ দুই নৌকোর জোড়াতালির ওপরে দাঁড়িয়ে মোলায়েম কণ্ঠে হাঁক দিল মতি।
“কী হলো, মতিভাই, কিছু বলছেন?” অন্দর থেকে ইয়াসিন মাস্টারের উৎকণ্ঠার সুর।
“একটু বাইরে আসবেন। দরকার ছিল।“
মতির বাপের অসুখটা কি আবার বাড়ল! লোকটার যা যাই যাই অবস্থা, তাতে কখন কী হয়ে যায়, বলা মুশকিল! ভাবতে ভাবতে মাথা ঝুঁকে বাইরে বেরোলেন ইয়াসিন মাস্টার। “কী হয়েছে, মতিভাই!”
“আপনাদের কাছে কি এক কুপি কেরোসিন তেল পাওয়া যাবে?” মতির কণ্ঠে আকুতি।
চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

 

Header Ad
Header Ad

দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

"শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, প্রগতি"—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ওপেন হাউস ডে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিরামপুর থানা চত্বরে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমতাজুল হক। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফত হুসাইন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনিম আওন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, ড. মুহাদ্দিস এনামুল হক, বিএনপির বিরামপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মিঞা শফিকুল ইসলাম মামুন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজু, উপজেলা আমির হাফিজুল ইসলাম, যুবদলের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শিরণ আলম, ইঞ্জিনিয়ার শাহিনুর ইসলামসহ বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য, স্থানীয় শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

পুলিশ সুপার মারুফত হুসাইন তার বক্তব্যে বলেন, “প্রথমে আমি আমার পুলিশকে ঠিক করেছি। এখন আমাদের সামনের দিনগুলো ভালো প্রত্যাশা চাই। আমরা আমাদের সমাজে আর কোনো অপরাধ করতে দেব না এবং এই জেলাকে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও মাদকমুক্ত করব ইনশাল্লাহ।”

তিনি আরও বলেন, পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা এবং সহযোগিতাই পারে সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূল করতে। তাই সবাইকে আরও সচেতন ও সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার, শঙ্কায় বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ স্বপ্ন

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শুরুতে দুর্বল প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে টানা তিন জয়ে শীর্ষে ছিল নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। তবে শক্ত প্রতিপক্ষের মুখে পড়ে একের পর এক হারে এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছে তাদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। প্রথমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩ উইকেটে হারের পর শনিবার (১৯ এপ্রিল) লাহোরে পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে বসেছে বাংলাদেশ।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। মাত্র ২১ রানের মধ্যেই ফিরেছেন তিন ব্যাটার—ফারজানা হক (০), দিলারা আক্তার (১৩) ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা (১)। এরপর শারমিন আক্তার ও রিতু মনির ৪৪ রানের জুটি এবং রিতু ও নাহিদা আক্তারের ৪৭ রানের জুটি কিছুটা স্থিতি আনলেও তা বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি। রিতু মনি করেন ৪৭ রান, আর ফাহিমা খাতুন অপরাজিত থাকেন ৪৪ রানে। ৫০ ওভারে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৭৮ রান। পাকিস্তানের সাদিয়া ইকবাল ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দেন।

 

ছবি: সংগৃহীত

জবাবে পাকিস্তানও শুরুতেই শাওয়াল জুলফিকারকে হারায়, যাকে এলবিডব্লিউ করেন মারুফা আক্তার। তবে এরপর সিদরা আমিন (৩৭), মুনিবা আলি (৬৯), আলিয়া রিয়াজ (৪৮*) এবং নাতালিয়া পারভেজ (১৩*) মিলে ৩৯.৪ ওভারে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান।

এই হারের ফলে বাংলাদেশের নেট রানরেট নেমে এসেছে +০.৬৪-এ। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নেট রানরেট এখন -০.২৮। ফলে এখন বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে থাইল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের দিকে। ক্যারিবিয়ানরা যদি বড় ব্যবধানে না জেতে, তবেই কেবল বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বাংলাদেশের।

শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ব্যর্থতা, ব্যাটিং দুর্বলতা এবং ধারাবাহিকতা না থাকায় কঠিন হয়ে উঠেছে টাইগ্রেসদের বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করা। এখন সব কিছু নির্ভর করছে অন্য দলের পারফরম্যান্সের ওপর, যা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ নারী দলের জন্য উদ্বেগের বিষয়।

Header Ad
Header Ad

ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ জানানো যাবে দুই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে

ছবি: সংগৃহীত

ঘুষ, দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার হলে এখন সরাসরি ই-মেইলে অভিযোগ জানানো যাবে স্থানীয় সরকার ও যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে। অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে এবং যথাযথ প্রমাণসহ অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি এবং ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে সরাসরি অভিযোগ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, দুই মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ যেকোনো সংস্থা বা দফতরে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়া, দুর্নীতি, অনিয়ম কিংবা সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হলে তা ই-মেইলে জানাতে পারবেন সেবা গ্রহীতারা।

অভিযোগ পাঠানোর ঠিকানা:
advisorasifofficial1@gmail.com

পোস্টে বলা হয়, অভিযোগের সঙ্গে যথাযথ তথ্য ও প্রমাণ সংযুক্ত করলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেকোনো অভিযোগ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে এবং অভিযোগকারীর পরিচয় সম্পূর্ণরূপে গোপন রাখা হবে।

"জনস্বার্থে এই উদ্যোগ। ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে সক্রিয় নাগরিক অংশগ্রহণ আমাদের সবচেয়ে বড় প্রেরণা।"

এ উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেকে। তারা মনে করছেন, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘব এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এটি একটি সাহসী পদক্ষেপ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত
পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার, শঙ্কায় বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ স্বপ্ন
ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ জানানো যাবে দুই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে
টঙ্গীতে দুই শিশুকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা, মায়ের স্বীকারোক্তি
টানা ৫ দিন দেশজুড়ে বৃষ্টি, তাপমাত্রা বাড়ার পূর্বাভাস
বাফুফের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সরফরাজের পদত্যাগ
ভর্তুকি মূল্যে পাটের তৈরি বাজারের ব্যাগ সরবরাহ করা হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা
রবিবার সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের
দেশের ইতিহাসে এবারের নির্বাচন সর্বোত্তম হবে: প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে ভারত: রিজভী
ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!
জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয় : নাহিদ ইসলাম
আ.লীগের মিছিল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ
হাসিনা-কাদেরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন
নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর সেই শিশু সেহেরিশের লাশ উদ্ধার
আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কাজ করছে সরকার
লাল কাপড়ে ঢাকা হবে দেশের সব পলিটেকনিকের ফটক
৬০ বছর বয়সে বিয়ে করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ