শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক

“আধখানা রাখাইন নৌকোতে নাড়া বেঁধেছে যে! সে কী কম লোক! কম নৌকো! খোলে খোলে মানুষের জট! কুকুর বেড়ালের মতো গুটিসুটি মেরে পড়ে আছে! সবাইকে জায়গা দিলে, চারখানা নয়াপাড়া লাগবে। কক্সবাজার উপচে বান্দারবান টপকে চট্টগ্রাম ঢেকে যাবে! আমি তো সিকি ভাগের এককোণাও এগোতে পারিনি। লোকের মুখে ঘটনাটার কথা শুনেই পালিয়ে আসতে হলো! অন্ধকারে আন্দাজ করিনি তাই, এখান থেকে নয়াপাড়ার ঘাট অনেক দূর।“ কথাটা বলতেই বলতেই খক খক করে কেশে উঠল মতি। মুখে জল ঢুকে গেছিল। জলে বাধা পেয়ে কথা ‘খক’ করে কাশি হয়ে বেরিয়ে এলো। ইয়াসিন মাস্টার চোখের মণি ঘুরিয়ে বললেন, “সাবধানে মতিভাই, মুখ তুলে চলুন। যেকোনো সময় বিপদ হয়ে যেতে পারে!“

বিপদ কী শুধু জলে? বিপদ আগে পিছে, ওপরে, নিচে, চারদিক থেকে ছেকে ধরে আছে। কোন দিকে আর মুখ তুলে চলব? আল্লাহ বলেন কি না, তিনি নাকি মানুষের জন্যে ছাদ বানিয়েছেন, ‘আসমান’ নামের ছাদ, যখন এই আসমান জল্লাদের মতো কুঠার নিয়ে তেড়ে আসে, তখন কোন বাপ ঠেকাবে? এই আসমানে একটা মই লাগিয়ে দিলেই তো পারতেন? খপ করে ধরে খড়বড় করে আসমানে উঠে পড়তাম। তারপর জান কবজের ফেরেশতাকে বলতাম, এই নিন, আপনাদের কাছ থেকে ধার করা রুহু, যেখান থেকে ধার দিয়েছিলেন, সেখানে জমা করে নিন। যে রুহুর পায়ের মাটি নেই, মাথার ছাদ নেই, সে রুহু কখনো শরীর হতে পারে না। রুহুকে ‘হাওয়া’ করে পাঠালেই পারতেন? ফুঁ দিয়ে যেকোনো দিকে চলে যেত পারত। না হতে হতো ‘ঘরকা’ না হতে হতো ‘ঘাটকা। না লাগত ‘চালা’ না লাগত ‘চুলো’। চোখদুটো আসমানের দিকে করে খেয়ালি হয়ে উঠল মতি। মনের নদীতে জোয়ারের জল তুলল। সে জলের ঢেউ আছড়ে পড়তে লাগল ভাবনার উপকূলে। অনুভূতির তটরেখায়। চোখ যেন আর শুধু দৃশ্য দর্শনের ইন্দ্রিয় নয়, মনের আবেগ অনাবেগের ক্যানভাস।
সবাই হাঁ করে বসে আছে! চোখ ফেড়ে দেখছে তাদের! যেন বিশ্বজয় করে ফিরে এসেছে মতিরা। অথবা তারা যেন অন্য গ্রহের মানুষ। ছইয়ের ভেতরে কাঁদনের গোঙানি শোনা গেল! মেয়ে মানুষের ফোঁপানো কণ্ঠস্বর! হ্যাজাব্যাজা হয়ে মতি আর ইয়াসিন মাস্টার নৌকোর কাছে পৌঁছল। নুহু কপালের ভাজগুলোকে ওপরে ঠেলে মতিকে বলল, “কোথায় গিয়েছিলে! কাউকে কিছু না বলে, কিছু না জানিয়ে, আচমকা দুম করে হাওয়া!”

“কেন, আবুল তো জানে?” নৌকোর খোলে দাঁড়িয়ে গামছা দিয়ে গা মুছতে মুছতে বললেন ইয়াসিন মাস্টার।
“আবুল! ও ব্যাটা তো ঘুমিয়ে কাদা হয়ে গেছিল! এক্ষুণি উঠল। ঘুম থেকে উঠে, সবাইকে কাঁদতে দেখে তবেই কবলাল।“ আবুলের দিকে চোখ বাঁকিয়ে বলল নুহু। ইয়াসিন মাস্টারের দিকে ভয় চোখে তাকিয়ে আবুল ধড়ফড় করে বলল, “আরে আমি তো এদের বলছি, মাস্টাররা পাড়ের খোঁজ নিতে গেছেন, এরা সে কথা বিশ্বাসই করছেন না। বলছেন, আপনারা নাকি বার্মাসেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেছেন, মায়ানমার সেনারা আপনাদের গুলি করে মেরে ফেলবেন!” বৈঠা হাতে ভেটুল গাছের গুঁড়ির মতো পা’গুলো খাড়া করে দাঁড়িয়ে আছে আবুল। তার গোস্ত ঝুলা পা’গুলোর ফাঁক দিয়ে গলে যাচ্ছে নদী থেকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে উঠে আসা অন্ধকার। ছিদল দাঁতগুলো আবারও নড়ে উঠল, “আরে আমার কি দয়া মায়া নেই? আমি কি কোনদিন মাস্টারের ক্ষতি করেছি? নিজের জান দিয়ে মাস্টারকে ভালোবাসি। মাস্টাররা না থাকলে এই আবুল কি আজ দুনিয়ায় বেঁচে থাকত? রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনে আপনারা মানুষ করেছিলেন বলেই তো আজ কথা বলতে পারছি। আপনারাই তো আমার বাপ-মা। রক্তের সম্পর্কের চেয়ে আপনাদের সাথে আমার সম্পর্ক কোনো অংশে কম নয়। তবুও এমন করে মাঝে মধ্যে খোটা দেবেন, যেন আমি পর, রাস্তার কুড়িয়ে আনা ছেলে।“ ফুঁপিয়ে ওঠে আবুল। গামছা দিয়ে চেপে মুখ ধরে। একটা আস্ত বেটাছেলে মোমের মতো গলে পড়ছে!

“তোমরাও হয়েছ সব এক একটা গাড়ল! ওকে কেন যে কষ্ট দাও! ওরও তো একটা মন আছে নাকি? ও তো একটা মানুষ? আর আমাকে নিয়ে এত দুশ্চিন্তা করার কী আছে? ক্ষয়ে ক্ষয়ে আর এক পোয়া জীবন তো বাকি পড়ে আছে! সেটুকুই তো ঠোঙায় নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। এই নদীর নুনপানি খেয়ে সেই এক পোয়াও ফুরিয়ে যাবে! সেসব নিয়ে এত ভাবনার কী আছে? জীবনের ঘড়িতে দম দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন আল্লাহ, কখন যে থেমে যাবে, তা কি কেউ বলতে পারে?” বিড়বিড় করে উঠলেন ইয়াসিন মাস্টার। মাথা ছাপড়িয়ে ছইয়ের ভেতরে ঢুকলেন। একটা হলুদ আলো সিঁদুর মেখে খিলখিল করে হাসছে ছইয়ের বাতায় বাতায়। সেখান থেকে কোলের শিশুর মতো হামাগুড়ি দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে দু’পাশের খোলে। অন্ধকারের গায়ে পশমের সুতোর মতো ফিনফিন করছে হামাগুড়ি দিয়ে আসা সে আলো।
“ভাইজান আপনার কিছুতে লাগেনি তো?” অশ্রুজড়ানো কণ্ঠে ইয়াসিন মাস্টারকে জিজ্ঞেস করল আবুল।
“না রে না, কিচ্ছু হয়নি, খুউব বেশি দূর তো যাইনি।“ ছইয়ের ভেতর থেকে গড়া দিয়ে আসা আলোর সাথে ভেসে এল ইয়াসিন মাস্টারের গলা। কথাটা বলেই, তিনি দু’পায়ের জাঙের মাংস লুকিয়ে টিপলেন। ব্যথায় কনকন করছে। অভ্যাস না থাকলে যা হয় আর কি। টানা সাঁতার কেটে টনটন করে টাটাচ্ছে। ইয়াসিন মাস্টার মনে মনে বলছেন, টাটাচ্ছে টাটাক, না ফুল্লেই হল। যন্ত্রণা মনের মধ্যে পুরে হজম করা যাবে, কিন্তু পা ফুল্লে তো সবাই জেনে যাবে। তখন সবাই ডাঙা খোঁজা বাদ দিয়ে ফোলা পা নিয়েই পড়ে থাকবে! তখন ধান ভানতে এসে শীবের গীত গাহানোয় হবে!

গামছাটাকে চিপে ঘাড়ে ফেলে ছইয়ের ভেতরে কোলকুঁজো হয়ে ঢুকতে ঢুকতে বিড়বিড় করছে মতি। এক হাঁড়া রাত ঠোঁট বাঁকিয়ে ঢুকে পড়েছে ছইয়ের অন্দরমহলে। অন্ধকার ছেকে আছে ছইটাকে। এবার গলা খেঁকিয়ে উঠল মতি, “আরে লম্ফ টম্ফ ধরাবে না এই অন্ধকারেই ঘাপটি মেরে বসে থাকবে?”
“কেরোসিন নেই।“ আরিফার মিহি কণ্ঠ অন্ধকারে কাঁটার মতো বিঁধল। কণ্ঠটা ভারি বেসুরো। শুকনো লংকার সাথে কাচা নুন যেন বেটে লাগানো আছে।
“তেল নেই! বলছ কী!” চোখ থেমে গেল মতির।
“হ্যাঁ, আধকুপিও নেই।“
“হাই আল্লাহ!” মতির মাথায় হাত। সে নুহুর দিকে চোখ বাজিয়ে বলল, “কী রে নুহু, আসার সময় কেরোসিনের ডামটা আনিসনি?”
“জানই আনতে পারছিলাম না তো কেরোসিনের ডাম!” চোখ পাকালো নুহু।
“এখন কী করা যাবে!” মতির জুলপি চুঁইয়ে নামছে দুশ্চিন্তা।
“কী করা আর যাবে, চুপ করে বসে আল্লাহ আল্লাহ করতে হবে!” ঠেস মারল আরিফা। আঁচলের পাড় কোমরে গুঁজল।
“রাত বিরেতের ব্যাপার! আলো টালো না থাকলে হয়?” কপাল ঠুকল মতি।
“ওদের কাছে এট্টুআট্টু চাইলে দেবে না?” মতলব বের করল নুহু।
“তা হয়। কিন্তু……।“ ঠোঁট কাটল মতি। আরিফা থড়বড় করে বলে উঠল, “কিন্তু’র আবার কী আছে? আমরা একসাথেই তো থাকছি, দেবে না ক্যানে?”
“দেখি, ওদের আবার আছে কি না।“ কথাটা ফিসফিস করে বলে, আবুলদের নৌকোর দিকে পা বাড়াল মতি। দু ধাপ এগিয়ে আবার গলা চেপে বলল, “নুহু, তুই যা না ক্যানে, একটুখানি তেল চেহে আন।“
“আমি যাব না, আমাকে দেবে না, একটা বিড়ি দিতে চায় না, সেখানে কেরোসিন তেল দিতে চাইবে? ওসব হাড়কিপ্টে লোক।“
“আস্তে কথা বল।“ চোখ ট্যারাল মতি। “কোথায় কী কথা বলতে হয় জানে না, আর ফদফদ করে বকে যায়! বিড়ি আর কেরোসিন তেল কি এক হলো!” দাঁত খিটমিট করে উঠল মতি, “কথার কোন মাথা মুণ্ডু নেই, বলতে হয় তাই বলে দেয়।“ তারপর আরিফার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল, “দেখি দাও, কুপিটা আমাকেই দাও, আমিই যাচ্ছি।“ ডুবে যাওয়া চাঁদের উল্টো পিঠের আধো আলো ছইয়ের চালা দিয়ে ছেকে যেটুকু ঢুকছে তাতে আরিফা বুঝতে পারল মতির রগাচগা হিলহিলে হাতটা পেতে আছে। ছায়াঘন অন্ধকারে আন্দাজে ছইয়ের কোণায় হাত চালাল আরিফা। একটা নিভে আসা আলতো গরম ভাপ ঠেকল হাতে। কুপির গা’টা এখনও গরম আছে! নেভা তো খুউব বেশিক্ষণ হয়নি? মতিদের ফেরার কিছুক্ষণ আগেই নিভল। শেষ শীখাটা নেভার ধোঁয়া এখনও মিহি করে উড়ছে। কুপিটা স্বামীর হাতে দিল আরিফা। একেবারেই পাতলা ঠনঠনে! কুপিটা কানের কাছে নিয়ে গিয়ে দু-একবার ঠনঠন করে নড়াল মতি। নাহ, তেলের বংশ নেই! একেবারে শুকিয়ে হাড় হয়ে গেছে। নারিকেলের কৌটো কেটে কুপিটা বানানো। মতি নারিকেলের কৌটোটাকে মাপ করে কেটে দিলে, আরিফা কাপড় ছেড়া ত্যানা সরু করে পাকিয়ে সলতে বানিয়েছিল। এভাবে বানানো কুপির আলো নাকি হলুদ হয়। মাটির দেওয়ালে সে আলো পড়লে, দেওয়ালগুলো মনে হয় যেন কাঁচা হলুদ বেটে লাগানো আছে।
“মাস্টারভাই, ও মাস্টারভাই।“ দুই নৌকোর জোড়াতালির ওপরে দাঁড়িয়ে মোলায়েম কণ্ঠে হাঁক দিল মতি।
“কী হলো, মতিভাই, কিছু বলছেন?” অন্দর থেকে ইয়াসিন মাস্টারের উৎকণ্ঠার সুর।
“একটু বাইরে আসবেন। দরকার ছিল।“
মতির বাপের অসুখটা কি আবার বাড়ল! লোকটার যা যাই যাই অবস্থা, তাতে কখন কী হয়ে যায়, বলা মুশকিল! ভাবতে ভাবতে মাথা ঝুঁকে বাইরে বেরোলেন ইয়াসিন মাস্টার। “কী হয়েছে, মতিভাই!”
“আপনাদের কাছে কি এক কুপি কেরোসিন তেল পাওয়া যাবে?” মতির কণ্ঠে আকুতি।
চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

 

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী

ছবিঃ সংগৃহীত

যানজটে আটকে থাকা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের গাড়ি বহরকে সাইড করে দিতে গিয়ে বাস চাপায় নিহত হয়েছেন জসিম উদ্দিন (৫৩) নামে জামায়াতের একজন কর্মী।

নিহত জসিম উদ্দিন উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত আলী আশ্রাফ মোল্লার ছেলে। তার স্ত্রী ও শিশুসহ তিন ছেলে সন্তান রয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমাই উপজেলার সৈয়দপুর এলাকার ওয়ালটন শো-রুমের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা মারুপ সিরাজী বলেন, লক্ষীপুর যাওয়ার পথে জামায়াত আমিরের বহরের ৪টি গাড়ি বাগমারা উত্তরবাজারে যানজটে আটকা পড়লে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ তিশা পরিবহনের ঢাকামুখী একটি দ্রুতগতির বাস ধাক্কা দিলে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দীনের মাথা থেতলে যায়। রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম মুন্না বলেন, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হলেও বাগমারা বাজার অংশে অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে দুই লেন করা হয়েছে।সে কারণে ২৪ ঘণ্টাই সড়কের এই অংশে যানজট লেগে থাকে। যানজট নিরসনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করলে আজ হয়তো এমন মৃত্যু হতো না।

লালমাই উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসেন বলেন, আমিরে জামায়াত লক্ষীপুর যাওয়ার পথে বাগমারা উত্তর বাজার বালুর মাঠে পথসভা করেন। পথসভাস্থলে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে তাঁর গাড়ি বহর যানজটে আটকা পড়ে।

তখন আমিসহ সংগঠনের ১৫/২০ জন কর্মী ট্রাফিকের দায়িত্ব শুরু করি। আমরা আমিরে জামায়াতকে নিয়ে পথসভায় চলে যাওয়ার পর জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দিন বাস চাপায় মারা যান।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, বাগমারা উত্তরবাজারে বাস চাপায় জসিম উদ্দিন নামের একজন মারা গেছেন। মরদেহ নিহতের বাড়িতে রয়েছে। খবর পেয়েই নিহতের বাড়িতে গিয়েছি।

 

Header Ad
Header Ad

সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  

ছবিঃ সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর বাজারে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। পুলিশের আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং দলীয় অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল রায়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় আসামি ধরাকে কেন্দ্র করে মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম মজনু এবং যুবদল নেতা শহিদ মিয়ার লোকজনের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপি ও যুবদলের অস্থায়ী অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে মধ্যনগর বাজার এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনার আশঙ্কা এবং সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়ার আগে পর্যন্ত বাজার এবং আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধ করা হয়।

মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সজীব রহমান বলেন, ‘মধ্যনগর যুবদল নেতা শহিদ মিয়া ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাঈযুম মজনুর লোকজনের মধ্যে পুলিশের আসামি ধরা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে উভয় পক্ষের লোকজন বিএনপি ও যুবদলের অফিস ভাঙচুর করে। এতে বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাজার ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। বিশৃঙ্খল অবস্থা এড়াতে বাজারে পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাজার ও আশপাশের এলাকায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম
ইসরায়েলের তেল আবিবে তিনটি বাসে বিস্ফোরণ
বিয়ের ছবি ভাইরাল, বললেন শুভকামনা জানানোর জন্য ধন্যবাদ