শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক

“আধখানা রাখাইন নৌকোতে নাড়া বেঁধেছে যে! সে কী কম লোক! কম নৌকো! খোলে খোলে মানুষের জট! কুকুর বেড়ালের মতো গুটিসুটি মেরে পড়ে আছে! সবাইকে জায়গা দিলে, চারখানা নয়াপাড়া লাগবে। কক্সবাজার উপচে বান্দারবান টপকে চট্টগ্রাম ঢেকে যাবে! আমি তো সিকি ভাগের এককোণাও এগোতে পারিনি। লোকের মুখে ঘটনাটার কথা শুনেই পালিয়ে আসতে হলো! অন্ধকারে আন্দাজ করিনি তাই, এখান থেকে নয়াপাড়ার ঘাট অনেক দূর।“ কথাটা বলতেই বলতেই খক খক করে কেশে উঠল মতি। মুখে জল ঢুকে গেছিল। জলে বাধা পেয়ে কথা ‘খক’ করে কাশি হয়ে বেরিয়ে এলো। ইয়াসিন মাস্টার চোখের মণি ঘুরিয়ে বললেন, “সাবধানে মতিভাই, মুখ তুলে চলুন। যেকোনো সময় বিপদ হয়ে যেতে পারে!“

বিপদ কী শুধু জলে? বিপদ আগে পিছে, ওপরে, নিচে, চারদিক থেকে ছেকে ধরে আছে। কোন দিকে আর মুখ তুলে চলব? আল্লাহ বলেন কি না, তিনি নাকি মানুষের জন্যে ছাদ বানিয়েছেন, ‘আসমান’ নামের ছাদ, যখন এই আসমান জল্লাদের মতো কুঠার নিয়ে তেড়ে আসে, তখন কোন বাপ ঠেকাবে? এই আসমানে একটা মই লাগিয়ে দিলেই তো পারতেন? খপ করে ধরে খড়বড় করে আসমানে উঠে পড়তাম। তারপর জান কবজের ফেরেশতাকে বলতাম, এই নিন, আপনাদের কাছ থেকে ধার করা রুহু, যেখান থেকে ধার দিয়েছিলেন, সেখানে জমা করে নিন। যে রুহুর পায়ের মাটি নেই, মাথার ছাদ নেই, সে রুহু কখনো শরীর হতে পারে না। রুহুকে ‘হাওয়া’ করে পাঠালেই পারতেন? ফুঁ দিয়ে যেকোনো দিকে চলে যেত পারত। না হতে হতো ‘ঘরকা’ না হতে হতো ‘ঘাটকা। না লাগত ‘চালা’ না লাগত ‘চুলো’। চোখদুটো আসমানের দিকে করে খেয়ালি হয়ে উঠল মতি। মনের নদীতে জোয়ারের জল তুলল। সে জলের ঢেউ আছড়ে পড়তে লাগল ভাবনার উপকূলে। অনুভূতির তটরেখায়। চোখ যেন আর শুধু দৃশ্য দর্শনের ইন্দ্রিয় নয়, মনের আবেগ অনাবেগের ক্যানভাস।
সবাই হাঁ করে বসে আছে! চোখ ফেড়ে দেখছে তাদের! যেন বিশ্বজয় করে ফিরে এসেছে মতিরা। অথবা তারা যেন অন্য গ্রহের মানুষ। ছইয়ের ভেতরে কাঁদনের গোঙানি শোনা গেল! মেয়ে মানুষের ফোঁপানো কণ্ঠস্বর! হ্যাজাব্যাজা হয়ে মতি আর ইয়াসিন মাস্টার নৌকোর কাছে পৌঁছল। নুহু কপালের ভাজগুলোকে ওপরে ঠেলে মতিকে বলল, “কোথায় গিয়েছিলে! কাউকে কিছু না বলে, কিছু না জানিয়ে, আচমকা দুম করে হাওয়া!”

“কেন, আবুল তো জানে?” নৌকোর খোলে দাঁড়িয়ে গামছা দিয়ে গা মুছতে মুছতে বললেন ইয়াসিন মাস্টার।
“আবুল! ও ব্যাটা তো ঘুমিয়ে কাদা হয়ে গেছিল! এক্ষুণি উঠল। ঘুম থেকে উঠে, সবাইকে কাঁদতে দেখে তবেই কবলাল।“ আবুলের দিকে চোখ বাঁকিয়ে বলল নুহু। ইয়াসিন মাস্টারের দিকে ভয় চোখে তাকিয়ে আবুল ধড়ফড় করে বলল, “আরে আমি তো এদের বলছি, মাস্টাররা পাড়ের খোঁজ নিতে গেছেন, এরা সে কথা বিশ্বাসই করছেন না। বলছেন, আপনারা নাকি বার্মাসেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেছেন, মায়ানমার সেনারা আপনাদের গুলি করে মেরে ফেলবেন!” বৈঠা হাতে ভেটুল গাছের গুঁড়ির মতো পা’গুলো খাড়া করে দাঁড়িয়ে আছে আবুল। তার গোস্ত ঝুলা পা’গুলোর ফাঁক দিয়ে গলে যাচ্ছে নদী থেকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে উঠে আসা অন্ধকার। ছিদল দাঁতগুলো আবারও নড়ে উঠল, “আরে আমার কি দয়া মায়া নেই? আমি কি কোনদিন মাস্টারের ক্ষতি করেছি? নিজের জান দিয়ে মাস্টারকে ভালোবাসি। মাস্টাররা না থাকলে এই আবুল কি আজ দুনিয়ায় বেঁচে থাকত? রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনে আপনারা মানুষ করেছিলেন বলেই তো আজ কথা বলতে পারছি। আপনারাই তো আমার বাপ-মা। রক্তের সম্পর্কের চেয়ে আপনাদের সাথে আমার সম্পর্ক কোনো অংশে কম নয়। তবুও এমন করে মাঝে মধ্যে খোটা দেবেন, যেন আমি পর, রাস্তার কুড়িয়ে আনা ছেলে।“ ফুঁপিয়ে ওঠে আবুল। গামছা দিয়ে চেপে মুখ ধরে। একটা আস্ত বেটাছেলে মোমের মতো গলে পড়ছে!

“তোমরাও হয়েছ সব এক একটা গাড়ল! ওকে কেন যে কষ্ট দাও! ওরও তো একটা মন আছে নাকি? ও তো একটা মানুষ? আর আমাকে নিয়ে এত দুশ্চিন্তা করার কী আছে? ক্ষয়ে ক্ষয়ে আর এক পোয়া জীবন তো বাকি পড়ে আছে! সেটুকুই তো ঠোঙায় নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। এই নদীর নুনপানি খেয়ে সেই এক পোয়াও ফুরিয়ে যাবে! সেসব নিয়ে এত ভাবনার কী আছে? জীবনের ঘড়িতে দম দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন আল্লাহ, কখন যে থেমে যাবে, তা কি কেউ বলতে পারে?” বিড়বিড় করে উঠলেন ইয়াসিন মাস্টার। মাথা ছাপড়িয়ে ছইয়ের ভেতরে ঢুকলেন। একটা হলুদ আলো সিঁদুর মেখে খিলখিল করে হাসছে ছইয়ের বাতায় বাতায়। সেখান থেকে কোলের শিশুর মতো হামাগুড়ি দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে দু’পাশের খোলে। অন্ধকারের গায়ে পশমের সুতোর মতো ফিনফিন করছে হামাগুড়ি দিয়ে আসা সে আলো।
“ভাইজান আপনার কিছুতে লাগেনি তো?” অশ্রুজড়ানো কণ্ঠে ইয়াসিন মাস্টারকে জিজ্ঞেস করল আবুল।
“না রে না, কিচ্ছু হয়নি, খুউব বেশি দূর তো যাইনি।“ ছইয়ের ভেতর থেকে গড়া দিয়ে আসা আলোর সাথে ভেসে এল ইয়াসিন মাস্টারের গলা। কথাটা বলেই, তিনি দু’পায়ের জাঙের মাংস লুকিয়ে টিপলেন। ব্যথায় কনকন করছে। অভ্যাস না থাকলে যা হয় আর কি। টানা সাঁতার কেটে টনটন করে টাটাচ্ছে। ইয়াসিন মাস্টার মনে মনে বলছেন, টাটাচ্ছে টাটাক, না ফুল্লেই হল। যন্ত্রণা মনের মধ্যে পুরে হজম করা যাবে, কিন্তু পা ফুল্লে তো সবাই জেনে যাবে। তখন সবাই ডাঙা খোঁজা বাদ দিয়ে ফোলা পা নিয়েই পড়ে থাকবে! তখন ধান ভানতে এসে শীবের গীত গাহানোয় হবে!

গামছাটাকে চিপে ঘাড়ে ফেলে ছইয়ের ভেতরে কোলকুঁজো হয়ে ঢুকতে ঢুকতে বিড়বিড় করছে মতি। এক হাঁড়া রাত ঠোঁট বাঁকিয়ে ঢুকে পড়েছে ছইয়ের অন্দরমহলে। অন্ধকার ছেকে আছে ছইটাকে। এবার গলা খেঁকিয়ে উঠল মতি, “আরে লম্ফ টম্ফ ধরাবে না এই অন্ধকারেই ঘাপটি মেরে বসে থাকবে?”
“কেরোসিন নেই।“ আরিফার মিহি কণ্ঠ অন্ধকারে কাঁটার মতো বিঁধল। কণ্ঠটা ভারি বেসুরো। শুকনো লংকার সাথে কাচা নুন যেন বেটে লাগানো আছে।
“তেল নেই! বলছ কী!” চোখ থেমে গেল মতির।
“হ্যাঁ, আধকুপিও নেই।“
“হাই আল্লাহ!” মতির মাথায় হাত। সে নুহুর দিকে চোখ বাজিয়ে বলল, “কী রে নুহু, আসার সময় কেরোসিনের ডামটা আনিসনি?”
“জানই আনতে পারছিলাম না তো কেরোসিনের ডাম!” চোখ পাকালো নুহু।
“এখন কী করা যাবে!” মতির জুলপি চুঁইয়ে নামছে দুশ্চিন্তা।
“কী করা আর যাবে, চুপ করে বসে আল্লাহ আল্লাহ করতে হবে!” ঠেস মারল আরিফা। আঁচলের পাড় কোমরে গুঁজল।
“রাত বিরেতের ব্যাপার! আলো টালো না থাকলে হয়?” কপাল ঠুকল মতি।
“ওদের কাছে এট্টুআট্টু চাইলে দেবে না?” মতলব বের করল নুহু।
“তা হয়। কিন্তু……।“ ঠোঁট কাটল মতি। আরিফা থড়বড় করে বলে উঠল, “কিন্তু’র আবার কী আছে? আমরা একসাথেই তো থাকছি, দেবে না ক্যানে?”
“দেখি, ওদের আবার আছে কি না।“ কথাটা ফিসফিস করে বলে, আবুলদের নৌকোর দিকে পা বাড়াল মতি। দু ধাপ এগিয়ে আবার গলা চেপে বলল, “নুহু, তুই যা না ক্যানে, একটুখানি তেল চেহে আন।“
“আমি যাব না, আমাকে দেবে না, একটা বিড়ি দিতে চায় না, সেখানে কেরোসিন তেল দিতে চাইবে? ওসব হাড়কিপ্টে লোক।“
“আস্তে কথা বল।“ চোখ ট্যারাল মতি। “কোথায় কী কথা বলতে হয় জানে না, আর ফদফদ করে বকে যায়! বিড়ি আর কেরোসিন তেল কি এক হলো!” দাঁত খিটমিট করে উঠল মতি, “কথার কোন মাথা মুণ্ডু নেই, বলতে হয় তাই বলে দেয়।“ তারপর আরিফার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল, “দেখি দাও, কুপিটা আমাকেই দাও, আমিই যাচ্ছি।“ ডুবে যাওয়া চাঁদের উল্টো পিঠের আধো আলো ছইয়ের চালা দিয়ে ছেকে যেটুকু ঢুকছে তাতে আরিফা বুঝতে পারল মতির রগাচগা হিলহিলে হাতটা পেতে আছে। ছায়াঘন অন্ধকারে আন্দাজে ছইয়ের কোণায় হাত চালাল আরিফা। একটা নিভে আসা আলতো গরম ভাপ ঠেকল হাতে। কুপির গা’টা এখনও গরম আছে! নেভা তো খুউব বেশিক্ষণ হয়নি? মতিদের ফেরার কিছুক্ষণ আগেই নিভল। শেষ শীখাটা নেভার ধোঁয়া এখনও মিহি করে উড়ছে। কুপিটা স্বামীর হাতে দিল আরিফা। একেবারেই পাতলা ঠনঠনে! কুপিটা কানের কাছে নিয়ে গিয়ে দু-একবার ঠনঠন করে নড়াল মতি। নাহ, তেলের বংশ নেই! একেবারে শুকিয়ে হাড় হয়ে গেছে। নারিকেলের কৌটো কেটে কুপিটা বানানো। মতি নারিকেলের কৌটোটাকে মাপ করে কেটে দিলে, আরিফা কাপড় ছেড়া ত্যানা সরু করে পাকিয়ে সলতে বানিয়েছিল। এভাবে বানানো কুপির আলো নাকি হলুদ হয়। মাটির দেওয়ালে সে আলো পড়লে, দেওয়ালগুলো মনে হয় যেন কাঁচা হলুদ বেটে লাগানো আছে।
“মাস্টারভাই, ও মাস্টারভাই।“ দুই নৌকোর জোড়াতালির ওপরে দাঁড়িয়ে মোলায়েম কণ্ঠে হাঁক দিল মতি।
“কী হলো, মতিভাই, কিছু বলছেন?” অন্দর থেকে ইয়াসিন মাস্টারের উৎকণ্ঠার সুর।
“একটু বাইরে আসবেন। দরকার ছিল।“
মতির বাপের অসুখটা কি আবার বাড়ল! লোকটার যা যাই যাই অবস্থা, তাতে কখন কী হয়ে যায়, বলা মুশকিল! ভাবতে ভাবতে মাথা ঝুঁকে বাইরে বেরোলেন ইয়াসিন মাস্টার। “কী হয়েছে, মতিভাই!”
“আপনাদের কাছে কি এক কুপি কেরোসিন তেল পাওয়া যাবে?” মতির কণ্ঠে আকুতি।
চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

 

Header Ad

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মৃত তিন শিক্ষার্থী হলেন- মোজাম্মেল হোসেন নাঈম (২৪), মোস্তাকিম রহমান মাহিন (২২) ও জোবায়ের আলম সাকিব (২২)।

জানা গেছে, শনিবার সকালে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ৬টি ডাবল ডেকার বাস ও ৩টি মাইক্রোবাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়ক ধরে রিসোর্টের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় উত্তর পেলাইদ গ্রামের উদয়খালী বাজারে পৌঁছালে বিআরটিসির ডাবল ডেকার একটি বাস পল্লী বিদ্যুতের তারের স্পর্শে আসে। এ সময় বাসটি বিদ্যুতায়িত হলে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাকিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তিনজনকেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। আহত সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা জরুরি বিভাগে যাচ্ছি।

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ