শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৭

নেই দেশের নাগরিক

ঘ্যাচাং ঘ্যাচাং করে অনবরত ফুটতে থাকা যন্ত্রণার সূঁচ। যত সময় যাচ্ছে তত খিটখিটে হয়ে উঠছে মতি। কোনো কথাই আর হজম হচ্ছে না। আসলে চাল-চুলোহীন মানুষগুলো বোধ হয় এরকমই হয়। প্রেমের ফুলও এদের কাছে কাঁটা বলে মনে হয়। ভালোবাসার বাঁশির সুর যুদ্ধের সাইরেনের মতো বাজে। আদরের চুম্বনকে মনে হয়, বিষাক্ত সাপের ছোবল। তবুও তো শুকনো তামাটে হৃদয়ে গোলাপের পাপড়ি ফোটায় এই বিনিপয়সার প্রেম, ভাঙা হাড়ে বাজায় ভালোবাসার বাঁশি। মরমিয়া জীবন ভালোবাসার ঘর বাঁধে এই হাভাতের সংসারেই। কিন্তু সেসব যেন আজ মিছে। বড্ড অসত্য। নদী ফুলে ফেঁপে উঠতেই এদিক ওদিক থেকে হৈহুল্লোর করে চিৎকার চেঁচামেচি ভেসে এল। নৌকোগুলো উথালপাথাল করে দুলে উঠতেই, বিভিন্ন নৌকোর ভেতরের বাচ্চাকাচ্চা, মেয়ে-পুরুষ, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা কেঁদে উঠল। কান্নার রোল শুনে মনে হচ্ছে, যেন নাফ নদীর সাতসকালে জান ছাড়ছে! নৌকো দুলতে থাকায় সাকিবেরও ঘুম ভেঙে গেল। সে নৌকোটাকে হেংলেপেংলে দুলতে দেখে ডুকরে উঠল, ‘মা, তাড়াতাড়ি বাড়ি চল, আমরা পানিতে ডুবে যাব!’ আরিফা ছেলেকে বুকের মধ্যে লুকিয়ে নিল, ‘চুপ কর বাপ, জোয়ারটা থামলেই বাড়ি ফিরে যাব। চুপ চুপ, এখন কাঁদতে নেই, নদীতে কাঁদলে নদীও কাঁদে, আর নদী কাঁদলে আল্লাহর গজব নেমে আসে!’

আরিফা ছেলেকে ভয় দেখায়। আল্লাহর গজবের ভয়। নৌকো ডুবে যাওয়ার ভয়। সাকিব কি আর গজব টজব বোঝে? তার কাছে এখন গজবও যা জুজুও তাই। সে আঁচলের ভেতরে ফুঁপিয়ে বলতে থাকল, ‘আমি বাড়ি যাব, বাড়ি যাব, আমাকে এক্ষুনি বাড়ি নিয়ে চল।’

‘বাড়ি যাব তো, আজকেই যাব, এখন চুপ, দেখতে পাচ্ছিস ন্যা, নদী ফুঁসে উঠছে! ঢেউটা একটু থিতাক, ঠিক বাড়ি চলে যাব।’

‘না, তুমি যাবে না, সেই রাত থেকেই বলছ, বাড়ি যাচ্ছি যাচ্ছি, কিন্তু কই যাচ্ছ? এত দেরি হচ্ছে কেন? আমাদের বাড়ি তো অনেক দূর নয়?’
‘এই চুপ কর তো? দেখতে পাচ্ছিস ন্যা এখন আপদ।’ ধমকে উঠল আরিফা।
‘ম্যা’ করে কেঁদে উঠল সাকিব। ‘কী হল?’ চেঁচিয়ে উঠল মতি। ‘কই, কিচ্ছু না।’ কথাটাকে আড়াল করল আরিফা।

‘এই ঘোর দুর্যোগে তুমি আবার ছেলে শাসন করছ নাকি?’ চোখ গরম করল মতি। আরিফা খেঁকিয়ে উঠল, ‘তুমি তোমার কাজ করো তো, এদিকে কান দিও না।’ তারপর নাকে-মুখে আঁচল গুঁজে ফুঁপিয়ে উঠল। আর কত কাঁদবে আরিফা! কেঁদে কেঁদে তার চোখ লাল হয়ে গেছে। চোখের নিচে পড়েছে কালির দাগ। একসময়ের মোমের মতো নরম গালে আজ অশ্রুর দড়কচড়া! চোখের কোটরে জমা থাকা দুঃখের অশ্রু ছেকে বের করলে মনে হয় নাফ নদীকেও হারাবে। তার হয়ত স্বামী আছে, ছেলে আছে, শশুর আছেন, শাশুড়ি আছেন, কিন্তু এ কি আর সেই থাকা? এ তো থেকেও নেই। এর কি আর কোনো ভরসা আছে? এই আছে এই নেই দশা। কখন কামানের একটা গোলা এসে সবকটা জান ছিনিয়ে নিয়ে চলে যাবে! এ জীবন তো ঠুনকো। কচুর পাতার টলমলে জলের মতো। যে জীবন পাথরে ভাস্কর্য আঁকে, যে জীবন মনের দেওয়ালে আঁকে প্রেমের মূর্তি, এ জীবন তো সে জীবন নয়? এ জীবন সমুদ্রের উপকূলে আঁকা বালির আঁকিবুঁকি, একটা স্রোত এলেই ধুয়ে মুছে শেষ। না থাকবে তার পায়ের চিহ্ন, না থাকবে নিশ্বাসের গন্ধ।

নুহু দ্বিতীয় নৌকোটায় বৈঠা টানা লোকটাকে উদ্দেশ্য করে বলল, ‘আপনি বিড়ি খান? খেলে একটা দেবেন তো।’ নুহুকে বিড়ি চাইতে দেখে মতি চোখ কটমট করে তাকাল। ‘খাই, কিন্তু এখন! এই দুর্যোগে বিড়ি!’ লোকটি বিস্ময় ভরা চোখে তাকালো। ‘না, মনটা খুঁত খুঁত করছে, তাই আর কি।’ হাত কচলালো নুহু।

‘এই গাধা, এখন তোর বিড়ি ফুঁকতে মন খুঁত খুঁত করছে! পানিতে খোল ভরে গেল, দেখতে পাচ্ছিস ন্যা। ছেকে ফেলবি না ডুবে মরবি?’ তিড়বিড় করে উঠল মতি। যেন পারলে ছোট ভাইটাকে এক গাদন দেয়। নুহুর মুখে কোনো কথা নেই। বিস্ফোরিত চোখে জলে উপচে পড়া নৌকোর খোলের পানে তাকিয়ে রইল। মতি তাকে এভাবে মূর্তির মতো তাকিয়ে থাকতে দেখে কী সব বিড়বিড় করল, তারপর বাজখায় গলায় বলল, ‘তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবি না ছেকে ফেলবি?’ কোনো কথা বলল না নুহু। পাছাটাকে পায়ের ভরে ঠেলা দিয়ে খাড়া হয়ে উঠে দাঁড়াল। পাটাতনের ওপর উপুড় করা একটা লোহার তারের ঝুড়ি থেকে টিনের ছেকনিটা নিয়ে জল জমা খোলটার কাছে গেল। পিঠ কুঁজো করে ছুক ছুক করে জল ছেকে নদীতে ফেলতে লাগল। ছেকে ফেলা জলের গায়ে হলুদ রোদ পড়ে যেন মনে হচ্ছে গমের সোনালী শীষ। জলটা নদীর যেখানে ছলাৎ করে আছড়ে পড়ছে, সেই ঘূর্ণন জায়গাটাও টাটকা রোদ মেখে টোল পড়া গালের মতো লাগছে। জলের মিহি ঢেউ অতি ধীরে ধীরে সাদা ফ্যানার মধ্যে নিজেকে মিলিয়ে দিচ্ছে। ঢেউ-এর জল উপচে খোলে ঢুকে পড়েছে। আরিফা মুড়ির ডামটা বাক্সটার দিকে সরিয়ে রাখল। তাড়াহুড়োই সেরকম তো কিছুই আনতে পারেনি। মুড়ির ডামটা দাওয়ার তাকে রাখা ছিল। বেরোনোর সময় মতি বগলে পুরে ছুটে এসেছিল। দু-হাতের মতো লম্বা ডাম। সাদা রঙের ডামটায় কেজি তিনেক মুড়ি ধরে। কানা অবধি মুড়ি ভর্তি ছিল না। গলার নিচ অবধি পুরা ছিল। আমন ধানের চাড়ে ভাঁজা ঘড্ডি মুড়ি। যা ছিল সেখান থেকেই গত রাতে সবাই দু-একমুঠ করে মুখে দিয়ে জল খেয়েছিল। আপাতত মাথার চালা না লাগুক, গায়ের পোশাক না লাগুক, পেটের খোরাক তো লাগবে? আর সবাই কথা শুনলেও পেট কিন্তু কোনো কথাই শুনবে না। নুহু যতই হুঁশবুদ্ধি কম ওয়ালা লোক হোক, সে কিন্তু বুদ্ধি করে একটা কাজের কাজ করেছিল, হুটপাট করে বেরোনোর সময় বারান্দায় রাখা চালের বস্তাটা মাথায় করে থপথপ করে পালিয়ে এসেছিল।

ফুঁসতে থাকা নদীর ফনা থেকে ধীরে ধীরে বিষ নেমে যেতে লাগল। নদীর উন্মত্ত রূপ যেন কারো স্পর্শ পেয়ে হঠাৎ কোমল হতে লাগল। জোয়ার থেমে গেছে। যেন এতক্ষণ ধরে পোয়াতি নদী সন্তান প্রসব করল। ঝাঁকানি কুঁকানি দিয়ে অবশেষে পৃথিবী শুনল প্রসব হওয়া শিশুর প্রথম কান্না। প্রথম আর্তনাদ। তারপর শুধুই খুশি আর খুশি। নুহু দ্বিতীয় নৌকোর লোকটাকে আবার বলল, ‘কই, বিড়িটা দেন। একটান দিই।’ লোকটি আর অবাক চোখে তাকাল না। বিস্ময়ভরা চোখ দিয়ে আর জরিপও করল না নুহুকে। মনে মনে আর ভাবলও না, লোকটার ভড়ং দেখে তো আর পারি ন্যা, নৌকো ডুবতে বসেছে আর ও কিনা এখন বিড়ি ফুঁকবে! লোকটা লুঙ্গির গিঁট থেকে বিড়ির প্যাকেটটা বের করল। আসলে তারও এবার নেশাটা চেপে বসেছে। মনটা বিড়ি বিড়ি করছে। একটা বিড়ি নুহুকে দিয়ে আরেকটা নিজের মুখে পুরে বলল, ‘ধরান।’ নুহু তার লুঙ্গির ভাঁজ থেকে গ্যাসলাইটারটা বের করে ‘খচ’ করে জ্বালালো। ‘দপ’ করে আগুনের হলদে শীখাটা জ্বলে উঠল। নুহু বিড়িটার মুখে একটা জোরে ফুঁ দিয়ে আগুনের শীখায় ঠেকালো। আলতো করে আগুন লাগিয়েই মুখে পুরে দিল। জোরে মারল টান। বিড়ির মুখের আগুনটা কামারশালার হাপরের মতো গনগন করে উঠল। টান দিয়েই ছেড়ে দিল নুহু। একলাদা ধোঁয়া নাক মুখ দিয়ে হেচিয়ে পেঁচিয়ে বেরল। সাদা ধোঁয়ায় পিঠ ঠেকিয়ে নেচে উঠছে সুখ। বিড়ির পুকটিটা মুখে পুরেই মুখটা বাড়ালো লোকটার মুখে লাগানো বিড়িটার দিকে। আগুনের স্পর্শ পেয়ে পড়পড় করে ধরে গেল লোকটার মুখের বিড়িটা। লোকটা একবার সুখটান দিতেই বিড়ির মুখটা গনগনিয়ে উঠল। নুহু বলল, ‘বিড়িটা তো দারুন! বেশ ধক আছে।’
‘হ্যাঁ, ‘লুই তাং বিড়ি’। আমাদের ওখানকার নামকরা বিড়ি। ফাতংজার বাজারে একদামে বিক্কিরি হয়। বৌদ্ধপাড়ার লুই তাং কে তার বিড়ির জন্যেই সবাই একনামে চেনে। বিড়ির ব্যবসা করে পয়সা কামালেও লোকটা এখনো নিজের হাতে বিড়ি বাঁধে। ওটা নাকি তার জীবনের পয়া।’ দুজনেই সুখটান দেয়। রোদ মেখে সাদা ধোঁয়া আউড়িবাউড়ি পাকিয়ে উপরে উঠে যাচ্ছে। ধোঁয়ার মধ্যে মুখ লুকিয়ে উড়ে যাচ্ছে ক্লান্তি। অবসাদ। ধীরে ধীরে জোয়ার থিতু হল। উথলে ওঠা স্রোত মিহি হয়ে নদীর বুকে মুখ গুঁজল। নৌকোটা নয়াপাড়ার অনেকটা কাছে চলে এসেছে। সূর্য গড়ান গাছের আড়ালে। দিগন্ত ফুঁড়ে পুব আকাশে গড়ান গাছের মটকা ডালে কাঁসার থালার মতো ঝুলে আছে। যেন গাছে উঠলেই হাত দিয়ে ছোঁয়া যাবে। আর নীলাকাশের প্রলম্বিত ছায়া নদীর তলপেটে কোমর বেঁকিয়ে ডুবে আছে। নদীর মিহি স্রোতে পশমের তুলোর মতো আরও মিহি করে দুলছে। দিগন্তটাকে আজ হাতে খড়ির ধ্যাবড়ানো স্কেচ নয়, পিকাসোর আঁকা ক্যানভাস বলে মনে হচ্ছে। এই রঙিন দিগন্তেই একটু একটু করে মিশে যাচ্ছে একটা আসমান ছোঁয়া চিল। পৌষ মাঘ মাসের শীত না হলেও, একেবারে ঘোর সকালে বাতাসে ফিনফিনে কুয়াশা থাকে। সেই কুয়াশার চাদর কেটে চরাচর হলুদ হয়ে উঠছে। কিছুটা এগিয়ে গিয়েই মতিরা দেখে, নয়াপাড়ায় ঢোকার মুখে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে একঝাঁক নৌকো! নৌকোর পাল দেখে কোটরে ঢোকা চোখ বিস্ফোরিত হয় মতির। বলে, ‘কী ব্যাপার এখানে এত নৌকো নোঙর গেড়েছে!’
‘মনে হচ্ছে, ঘাটে ঢুকতে দিচ্ছে না।’ নুহুর চোখ ঝোড়ো আলোতে ঘোমটার মতো খুলে গেল। ইয়াসিন মাস্টার চোখমুখ পাংসে করে বলে উঠলেন, ‘ব্যাপার মনে হয় ভালো নয়! এখানে এসেও মনে হয় লাভ হল না। বি জি বি মনে হয় এখানেও পথ আগলে দাঁড়িয়ে আছে।’নুহু নৌকোর মাথায় গিয়ে খাড়া হয়ে হাঁক পারল, ‘কী হয়েছে গো? সবাই খুঁটি মেরে দাঁড়িয়ে আছ কেন?’ কেউ কোনো উত্তর না দেওয়াই, নুহু আরও জোরে গলা ছাড়ল, ‘কী হয়েছে গো? সমস্যা কী?’
‘পাড়ে উঠতে দিচ্ছে না!’ একজন মাঝবয়সের লোক হাঁড়া গলায় বলল। আরেকজন লোক বলল, ‘এখানেও ল্যাফড়া।’ নুহুদের নৌকোদুটো থ মেরে গেল। চর থেকে হতাশার দমকা বাতাস শত শত নৌকোর খোল দিয়ে হেঁটে আসছে। যেটুকু আশা-ভরসা জিইয়ে রেখে এতদূর এসে নোঙর গাড়ার কথা, সেসব গমের ভুষির মতো উড়ে যাচ্ছে। মতি নুহুদের কাছে নয়াপাড়া মানে তো বঙ্গোপসাগরের পলল জমে গড়ে ওঠা কয়েক বিঘে জমি নয়, বালিনুড়ির এক ছটাক উঁচু ঢিবিও নয়, নয়াপাড়া মানে একটা দেশ, একটা ঠিকানা, এই হাড়-মাংসের জীবনের একটা চালাহীন চুলোহীন দুদণ্ডের ঠাঁই। মতির কপালে ছোপ ছোপ ঘাম। নুহুর মুখ শুকিয়ে আমের চাঁচি। আরিফার আঁচলে ঢুকে পড়ছে ভেজা চোখ, কলিজা থেকে একটু একটু করে ছিঁড়েছুড়ে নৌকোর খোলে বেরিয়ে আসছে জান। ইয়াসিন মাস্টার দুহাত মাথায় দিয়ে ধপ করে নৌকোর পাটাতনে বসে পড়লেন। যেন আর সামনে যাওয়ার কোন ফুরসত নেই। মৃত্যুর সীমান্তে এসে আটকা পড়ে গেছেন। সম্মুখে হাঁ করে দাঁড়িয়ে গেছে মৃত্যুর কবর। জীবনের ফিতের দৈর্ঘ্য যেন এখানেই শেষ। বিজিবির সাফ কথা তারা আর বোঝা টানতে পারছেন না। বাংলাদেশ সরকার সাফ সাফ বলে দিয়েছে, এর তো একটা লিমিট আছে নাকি? রাতদিন গরু মহিষের পালের মতো হুড়হুড় করে লোক চলে আসছে! পুরো রাখাইনটাই যদি উঠে চলে আসে, সে ভার নেওয়ার ক্ষমতা কি আমাদের আছে? আমরাও তো একটা দরিদ্র দেশ। খাঁটি খাই কোনরকমে চলে যায়। এটা নিয়ে রাষ্ট্রসংঘকেই ভাবতে হবে। আন্তর্জাতিক মঞ্চ নাগ গলাক। তানাহলে তো আমাদের নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হয়ে যাচ্ছে! এ যে পরকে জায়গা দিতে গিয়ে নিজেদের গাঁ উজার হয়ে যাবে? একটা মানুষ মানে তো আর কয়েক পল নিশ্বাস-প্রশ্বাস নয়? একটা মানুষ মানে, কিছুটা মাটি, তিনবেলা না হোক দুবেলা পেটের খোরাক, মাথার ওপর একটা চালা, হাগামুতার জায়গা, পরনের কাপড়চোপড়। সেসব ফকেটিয়ে পাব কোথায়? গরু-ছাগল না হোক জবাই করে খাওয়া যায়, কিন্তু মানুষকে তো তার বাঁচার হায়াত দিতে হবে। বিজিবি-র কড়া হুঁশিয়ারি, আপনারা আপনাদের দেশে ফিরে যান, এখানে ঢোকার চেষ্টা করবেন না। লুকিয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে কিন্তু গুলি খেয়ে মরতে হবে। হাজার হাজার মানুষ হাউমাউ করে কাঁদছেন, ‘আল্লাহর দোহায়, আমাদেরকে একটু জায়গা দিন। আমাদের কিচ্ছু নেই। আমরা সব হারিয়ে নিঃস্ব। জমিজমা, বসতভিটে, পশুপাখি সব ফেলে এসেছি। সহায় সম্বলহীন আমাদের বাঁচার আর কোনো পথ নেই। আমাদের থাকা বলতে গেলে, আল্লাহর দেওয়া এই সাড়ে তিন হাত শরীরটুকুই কোনোরকমে বেঁচে আছে। সেটাও ফাড়ার সুতোয় ঝুলছে।‘

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৫
নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব ১৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৯

 

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

"শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, প্রগতি"—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ওপেন হাউস ডে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিরামপুর থানা চত্বরে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমতাজুল হক। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফত হুসাইন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনিম আওন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, ড. মুহাদ্দিস এনামুল হক, বিএনপির বিরামপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মিঞা শফিকুল ইসলাম মামুন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজু, উপজেলা আমির হাফিজুল ইসলাম, যুবদলের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শিরণ আলম, ইঞ্জিনিয়ার শাহিনুর ইসলামসহ বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য, স্থানীয় শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

পুলিশ সুপার মারুফত হুসাইন তার বক্তব্যে বলেন, “প্রথমে আমি আমার পুলিশকে ঠিক করেছি। এখন আমাদের সামনের দিনগুলো ভালো প্রত্যাশা চাই। আমরা আমাদের সমাজে আর কোনো অপরাধ করতে দেব না এবং এই জেলাকে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও মাদকমুক্ত করব ইনশাল্লাহ।”

তিনি আরও বলেন, পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা এবং সহযোগিতাই পারে সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূল করতে। তাই সবাইকে আরও সচেতন ও সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার, শঙ্কায় বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ স্বপ্ন

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শুরুতে দুর্বল প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে টানা তিন জয়ে শীর্ষে ছিল নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। তবে শক্ত প্রতিপক্ষের মুখে পড়ে একের পর এক হারে এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছে তাদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। প্রথমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩ উইকেটে হারের পর শনিবার (১৯ এপ্রিল) লাহোরে পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে বসেছে বাংলাদেশ।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। মাত্র ২১ রানের মধ্যেই ফিরেছেন তিন ব্যাটার—ফারজানা হক (০), দিলারা আক্তার (১৩) ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা (১)। এরপর শারমিন আক্তার ও রিতু মনির ৪৪ রানের জুটি এবং রিতু ও নাহিদা আক্তারের ৪৭ রানের জুটি কিছুটা স্থিতি আনলেও তা বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি। রিতু মনি করেন ৪৭ রান, আর ফাহিমা খাতুন অপরাজিত থাকেন ৪৪ রানে। ৫০ ওভারে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৭৮ রান। পাকিস্তানের সাদিয়া ইকবাল ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দেন।

 

ছবি: সংগৃহীত

জবাবে পাকিস্তানও শুরুতেই শাওয়াল জুলফিকারকে হারায়, যাকে এলবিডব্লিউ করেন মারুফা আক্তার। তবে এরপর সিদরা আমিন (৩৭), মুনিবা আলি (৬৯), আলিয়া রিয়াজ (৪৮*) এবং নাতালিয়া পারভেজ (১৩*) মিলে ৩৯.৪ ওভারে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান।

এই হারের ফলে বাংলাদেশের নেট রানরেট নেমে এসেছে +০.৬৪-এ। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নেট রানরেট এখন -০.২৮। ফলে এখন বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে থাইল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের দিকে। ক্যারিবিয়ানরা যদি বড় ব্যবধানে না জেতে, তবেই কেবল বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বাংলাদেশের।

শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ব্যর্থতা, ব্যাটিং দুর্বলতা এবং ধারাবাহিকতা না থাকায় কঠিন হয়ে উঠেছে টাইগ্রেসদের বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করা। এখন সব কিছু নির্ভর করছে অন্য দলের পারফরম্যান্সের ওপর, যা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ নারী দলের জন্য উদ্বেগের বিষয়।

Header Ad
Header Ad

ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ জানানো যাবে দুই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে

ছবি: সংগৃহীত

ঘুষ, দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার হলে এখন সরাসরি ই-মেইলে অভিযোগ জানানো যাবে স্থানীয় সরকার ও যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে। অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে এবং যথাযথ প্রমাণসহ অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি এবং ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে সরাসরি অভিযোগ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, দুই মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ যেকোনো সংস্থা বা দফতরে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়া, দুর্নীতি, অনিয়ম কিংবা সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হলে তা ই-মেইলে জানাতে পারবেন সেবা গ্রহীতারা।

অভিযোগ পাঠানোর ঠিকানা:
advisorasifofficial1@gmail.com

পোস্টে বলা হয়, অভিযোগের সঙ্গে যথাযথ তথ্য ও প্রমাণ সংযুক্ত করলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেকোনো অভিযোগ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে এবং অভিযোগকারীর পরিচয় সম্পূর্ণরূপে গোপন রাখা হবে।

"জনস্বার্থে এই উদ্যোগ। ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে সক্রিয় নাগরিক অংশগ্রহণ আমাদের সবচেয়ে বড় প্রেরণা।"

এ উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেকে। তারা মনে করছেন, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘব এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এটি একটি সাহসী পদক্ষেপ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত
পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার, শঙ্কায় বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ স্বপ্ন
ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ জানানো যাবে দুই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে
টঙ্গীতে দুই শিশুকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা, মায়ের স্বীকারোক্তি
টানা ৫ দিন দেশজুড়ে বৃষ্টি, তাপমাত্রা বাড়ার পূর্বাভাস
বাফুফের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সরফরাজের পদত্যাগ
ভর্তুকি মূল্যে পাটের তৈরি বাজারের ব্যাগ সরবরাহ করা হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা
রবিবার সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের
দেশের ইতিহাসে এবারের নির্বাচন সর্বোত্তম হবে: প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে ভারত: রিজভী
ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!
জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয় : নাহিদ ইসলাম
আ.লীগের মিছিল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ
হাসিনা-কাদেরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন
নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর সেই শিশু সেহেরিশের লাশ উদ্ধার
আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কাজ করছে সরকার
লাল কাপড়ে ঢাকা হবে দেশের সব পলিটেকনিকের ফটক
৬০ বছর বয়সে বিয়ে করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ