শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৬

নেই দেশের নাগরিক

“আপনি এ কী পাগলামো করছিলেন ভাই!” বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন ইয়াসিন মাস্টার। দুইধাপ এগিয়ে এলেন, “কাজটা একদম ঠিক করলেন না। এমনিতেই বিপদ ওঁত পেতে আছে। তার উপর এভাবে হাঁকডাক করলে তো আর রেহাই নেই! সেনাছাউনি থেকে বার্মা সেনাদের নেমে আসতে আর কতটুকু লাগবে? থুথনি তুলে গলার নলিতে একটা রাইফেলের গুলি মেরে বলবে, চিল্লা, এবার চিল্লা, যত পারিস চিল্লা। তখন বুঝবেন, কত ধানে কত চাল! তা ছাড়া এখান থেকে বাংলাদেশের বর্ডারও তো বেশি দূরে নয়। গলার চিল্লানি শুনে, বিজিবি-র সীমান্ত রক্ষীবাহিনীরাও তো রাইফেল তাক করে গুলি ছুড়তে পারে! ওদের তো কোনো জবাবদিহি করতে হবে না। বলবে, চুরি করে গোপনে সীমান্তে ঢুকছিল। কথা না শোনায়, গুলি করতে বাধ্য হয়েছি। তখন আর কী করার থাকবে? সবকিছু বুঝে ওঠার আগেই, সব অংক শেষ হয়ে যাবে!”
“ঠাপান ঠাপান, আচ্ছা করে ঠাপান, বুড়ো ধেড়ে হয়ে যাচ্ছে তবু শান হচ্ছে না!” রাগে কটমট করল মতি।
“দেখুন, আমাদের খুব সাবধানে থাকতে হবে। আমরা তো আর নৌকায় আনন্দ বিহারে আসিনি? চড়ুইভাতি করতেও আসিনি? নৌকাবাইচের পাল্লাতেও আসিনি? আমরা এসেছি জান বাঁচাতে জানের বেগাত্তায়। জান হাতে করে নদীতে লুকিয়ে বেড়াচ্ছি। একটু ফুরসত পেলে, বাংলাদেশে ঢুকে পড়তে হবে। এই মুহূর্তে ত্রিপলের একটা শেড পাওয়াই বিশাল ভাগ্যের ব্যাপার। একটা তাপ্তিতাপ্তা মারা কাপড়-ত্রিপলের ঘরই আমাদের বেহেশত। আমাদের দেশ। তাতেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলবে এই সাড়ে তিন হাত শরীরের ভেতরের রুহুটা।“ গলা ভিজে এল ইয়াসিন মাস্টারের।
“এই শরীরটায় কি আর রুহু টুহু আছে? অ কবেই উড়ে চলে গেছে। এখন শুধু হাড়গোড়গুলো পড়ে রয়েছে, শেষযাত্রার খোল-করতাল বাজানোর জন্য। যে তো আড়াই দিনের জীবন তার আবার অত লুকোছাপা কী?“ ঠেস মারল নুহু।
“তুই থামবি?” তেড়ে উঠল মতি। নৌকো নয়াপাড়ার দিকে এগিয়ে চলেছে। দক্ষিণে গ গ করে ডাকছে বঙ্গোপসাগর। এখানে সেরকম জলোচ্ছ্বাস নেই। নদীর জল মিহি সুরে গান করছে। এ যে মিলনক্ষেত্র। একজনের আর একজনের দেহে মিলিয়ে যাওয়ার পুণ্যস্থান। প্রকৃতিও কীভাবে একে অপরের মধ্যে লীন হয়ে যায়, তা বোঝার জন্যেই হয়ত ঈশ্বর মোহনার সৃষ্টি করেছেন। ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে জলের রঙ। মিহি করে ফুলে উঠছে নদী। যেন কেউ ফুঁ দিয়ে ফোলাচ্ছে। জোয়ারের সময় আসন্ন। নৌকোটা আরও একটু পশ্চিমে বাঁক নিতেই একটা চিকন ঢেউ পাটাতনে আছড়ে পড়ল। মতি ভ্রূ ফেঁড়ে বলে উঠল, “জোয়ার!” লুঙ্গির পাড়টাকে পাকিয়ে দুই জাঙের মধ্য পুরে পেছনের কোমরের খাঁজে গুঁজে নেংটিটাকে শক্ত করে এঁটে বলল, “নুহু, শক্ত করে বৈঠা ধর।“ হালেমা আরিফাদের লক্ষ্য করে বলল, “তোমরা টাপার ভেতর ঢুকে যাও, নৌকো যতই দুলুক, খুঁটি আঁকড়ে ধরে থাকবে।“
“আরে অত হুটোপুটি করছেন কেন? এ তো জোয়ারের পানি! জোয়ারের পরেই তো ভাটা আসে। তারপরে এটা গৌণ জোয়ার। অত মুরোদ নেই। দুই নৌকো হাতে হাত ধরে আছে, ঠেলে উল্টে দেওয়ার ক্ষমতা এই জোয়ারের নেই।“ বললেন ইয়াসিন মাস্টার।
“কে বলল নেই? নদী কখন কেমন ভাবে ফোঁস করে ফুঁসে উঠবে, কেউ বলতে পারে না। কখনও পুঁটির মতো ছলাৎ করেও উঠতে পারে, আবার কখনও হাঙরের মতো হালুম করেও উঠতে পারে। নদী কী আর নিজের ঠেলায় চলে, ঠেলা দেয়। আর সে ঠেলা যদি হয় সমুদ্রের, তাহলে তো কোনো কথাই নাই! সমুদ্রের রাক্ষুসে মুখ তখন নদীর বুক ফেড়ে হুহু করে ঢুকে পড়ে। তচনচ করে দেয় দুই পাড়। ফেনার মধ্যে লুকিয়ে থাকে ধ্বংসের বীজ। ঢেউ তখন পানির ঝুঁটি নয়, ঢেউ তখন হাড়গোস্ত শরীরের আজরাইল। মালেকুল মওত।“ নবী বৈঠাটায় নারকেলের ছোবড়ার দড়ি বাঁধতে বাঁধতে ফদফদ করে উঠল। সে আরও বলল, “জানেন তো মাস্টার, ঢেউ কিন্তু সবার মধ্যেই আছে। তফাৎ শুধু জোরের। যার ঢেউ যত জোরে আছড়ে পড়ে, সে তত ক্ষমতাবান। সে তত শক্তিশালী। তবে অহংকারী ঢেউ কেউ পছন্দ করে না। কুমিরের মতো হাঁ করে ওঠা ঢেউ সবাইকেই ভয় ধরায়। মিহি ঢেউ বরাবরই মানুষকে আনন্দ দেয়। মনের ভেতরের গুলবাগিচার রঙিন ফুলটাকে নাড়ায়। মিহি ঢেউ তো আর পানির ঠোঁট নয়, মিহি ঢেউ গোলাপের ঠোঁট। সে ঠোঁটের সবাইই স্পর্শ পেতে চায়। সে মানুষ হোক আর জন্তু হোক।“
“এই শুরু হলো!” বিড়বিড় করে উঠল মতি।
“এই শুরু হলো মানে!” ভ্রূ কুঁচকালেন ইয়াসিন মাস্টার।
“আর বলেন না, আমার এই ভাইটা ক-দিন বাউলের পাল্লায় পড়েছিল। মাস তিনেক বাউলের আখড়ায় নাড়া বেঁধেও ছিল। সে ভূত এখনও মাথা থেকে যায়নি। একটু কিছু ছুতো পেলেই হলো, ব্যস, কী সব খেয়ালি খেয়ালি কথা গাহায়।“ নুহুর দিকে বাঁকা চোখে তাকিয়ে বলল মতি।
“কথাবার্তা শুনে ওরকমই মনে হচ্ছে। যাক, ওসব কথা এখন থাক, এখন জোয়ারের সময়, নৌকো বাঁচাতে হবে।“ কথাটা থড়বড় করে বলেই ইয়াসিন মাস্টার তাদের নৌকোর দিকে তাকিয়ে হাঁক পাড়লেন, “আবুল, দড়িগুলো ঠিক করে রাখ। হাওয়া ভরা টিউবগুলোও হাতের নাগালের মধ্যে রাখিস।“ নুহুর যেন কোনো হেলদোল নেই। সে বৈঠাটাকে ঠেলা দিতে দিতে গলা ছেড়ে গেয়ে উঠল,
“কোন সাহসে বাঁধলি এসে ঘর
এ যে জরিপছাড়া সদ্য পড়া—
ভাঙন নদীর নূতন চর
সাড়ে তিন হাত জমির পরে,
নিয়েছিস নিশানা করে
কে বা দখল স্বত্ব দিল তোরে—
জমির মালিক তালাস কর।“
“কে রে অমন করে গান করছে, নুহু নাকি?” ছইয়ের ভেতর থেকে চিকন স্বরটা ভেসে এল। মতি ঠেস মেরে বলল, “হ্যাঁ মা, তোমার লাদলা নুহু।“
“গলাটা ওরকমই মনে হচ্ছে।“ কেমন খেয়ালি হয়ে উঠলেন হালেমাও। তারপর পোঁটলাপুঁটলি গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। মা আর কিচ্ছু বললেন না দেখে অবাক হলো মতি। অন্যসময় হলে একেবারে রগ টাটিয়ে উঠতেন। নুহুর মুখে বাউল গান গুনগুন করতে দেখলেই তার গা-পিত্তি জ্বলে যায়। বলেন, ‘ওসব শেরেকি গান বন্ধ কর। পাপে গা ভরে যাবে। জানিস ন্যা আল্লাহর কোরআনে এসব শেরেকি? গান গাওয়া হারাম। যে মুখে গান করছিস, সে মুখে আল্লাহ দোযখের আগুনের ছ্যাঁকা দেবেন। তুই আমার পেটে জন্মে বাউল হবি, অ আমি জান থাকতেও হতে দেব না। তোর জন্যে আমি জাহান্নামে যাব না।‘
সময় মানুষকে বদলে দেয়। সময়ের অমোঘ নিয়মেই পাল্টে যায় মানুষের বিচারধারা, বিশ্বাস অ-বিশ্বাস। মানুষ কখন কী ভোল নেবে, কোন নদীতে মারবে ডুব, তা একমাত্র জানে দেওয়ালের ক্যালেন্ডার আর টিক টিক করে চলতে থাকা সময়-ঘড়ি। জীবনপুর কোন ঘাটে কখন নাড়া বাঁধবে, জীবনের কোন ঘাট কোন দিকে বাঁক নেবে, তা ওরাই জানে। প্রেম আর ঠাপ, দুটোই মানুষের জীবনের প্রভাবি শক্তি। প্রেমে পড়লে যেমন মানুষ আর তেল-নুনের হিসাব কষা রক্ত-মাংসের মানুষ থাকে না, ঠিক তেমনি ঠাপে পড়লে মানুষ প্যাঁচ ছেড়ে যাওয়া নাটবোল্টের মতো হ্যালাব্যালা হয়ে যায়। তখন আর তার বুদ্ধির ঘেলু জীবনের ফরদো মেলানোর ফুরসত পায় না। বলের মতো যেদিক ইচ্ছে সেদিক গড়ে যায়। অত বোতাম মাপার সময় থাকে না। হালেমারও এখন এই দশা। যে গান শুনলে এতদিন তাঁর গা-পিত্তি জ্বালা করত, সেই গানই যেন আজ তাঁর কাছে ঈশ্বরের বুলি মনে হচ্ছে! গানের কথাগুলোর সঙ্গে কোথাও কি নিজেকে সম্পৃক্ত করে নিচ্ছেন হালেমা? কোথাও কী তাঁর মনে হচ্ছে, এ যে আমাদেরই কথা, আমাদেরই জীবন ছেঁচে সুর বাঁধা? জীবন যে কখন কী সুর বাঁধে, কোন ঘাটে বাঁধে নাড়া কে বা জানে। হয়ত সেটাই মনে হচ্ছে হালেমার। নুহুর গানের কথাগুলো তাঁর হাড়জিরজিরে জড়ানো শরীরে আষ্টেপিষ্টে লেগে যাচ্ছে। হৃদয়ের দেওয়ালে ঠোকর মারছে অহরহ।
একটা জোরালো স্রোত ফোঁস করে বঙ্গোপসাগরের দিক থেকে গোখরো সাপের মতো ফনা তুলে নৌকোর খোলে ধেয়ে এল। এতক্ষণ দাঁড়িপাল্লার মতো দুলতে থাকা নৌকোটা এবার কাগজের নৌকোর মতো হিলহিল করে দুলছে। মতি চিৎকার করে উঠল, “তুই গান থামাবি না ভালো করে হাল ধরবি?” চোখ লাল হয়ে উঠছে মতির। কানের লতি রাগে টনটন করছে। মনের ভেতর ঝাপ্টাচ্ছে, গালি, খিস্তি-খেউর; অকর্মা কুকর্মার ঢেঁকি, আবোড়, কখন কী কাজ করতে হয় তাইই আজ পর্যন্ত জানল না, ঠ্যাঙনার বাড়ি দিয়ে বাউলের বিছন ছেঁচে দেব। তখন গান আর সুর বাপ বাপ করে পালাবে। গোখরোর পর এবার কুমিরের হাঁ-এর মতো ভয়ংকর ঢেউ নৌকো দুটোকে পাকসাপটা মেরে ঘুরিয়ে দিল। আর কালাপানির ঢেউয়ের ধাক্কায় নুহুর গলা ছেড়ে গাওয়াটা বন্ধ হয়ে গেল। কিন্তু গান বন্ধ হলো না। শক্ত করে বৈঠা টেনে মনে মনে গুনগুন করতে লাগল। মতিকে উদ্দেশ্য করে বলল, “নোঙরের ফলাটা হক্ত করে বেঁধে রাখো।“
“বাঁধা আছে।“ গজগজ করল মতি। তার হৃদস্পন্দন চড়াম চড়াম করে বাজছে। একে ভাইয়ের গানের খিটকেল তারপরে আচমকা সমুদ্র ফুঁসে ওঠা, জানে খিজিবিজি লেগে গেছে মতির। নৌকোটা একটু একটু করে উথলে উঠছে। নদীর জল তলা দিয়ে দিচ্ছে জোর ঠেলা। হুহু করে বাড়ছে জল। গ গ করে ঢুকছে জোয়ার। আধপেটা নদী এবার ভরপেটা হয়ে উঠছে। নদীর পাড় উপচে পড়ছে স্রোত। সকালের রোদ স্রোতের ঝুঁটি ধরে ঝালঝুপ্পা খেলছে। সে রোদে হাওয়া মিশে মুক্তোর মতো ঝকমক করছে। দূরের ঢেউ খেলানো জলে ছিটকে পড়া লাল-হলুদ রোদে নদীটা চুবড়িয়ে স্নান করছে। স্রোতের পিঠে ঝলক মারা রোদ যেন বালিকার কানের দুল। দুমড়ে পড়া স্রোত যেন তন্বী রমণীর বুক ধড়কানো কোমর। জোয়ার যেন নদীর জীবনে আসা একমাত্র প্রেম। প্রিয়তম সখা। জোয়ারই তো আনে নদীর গর্ভে সন্তান? যেমন গর্ভে সন্তান এলে সন্তানসম্ভবা নারীর ঠোঁটে মিশে থাকে জান্নাতি-লাবণ্য, বেহেশতি-হুরীর রহস্যময়তা, ঠিক তেমনি নদীর গর্ভে জোয়ারের জল ঢুকলে সে নদীও পোয়াতি মেয়ের মতো হেসে ওঠে। তার ছলছল বুকে কিতকিত খেলে কখনও রোদ কখনও জ্যোৎস্না। বাঁশি বাজায় কুলকুল স্রোত। আর ভরা পেটে ঢুকে পড়ে হাজার হাজার মাছ, জলের পোকা, শ্যাওলা-ছত্রাক। পেটের ভেতর এসব না থাকলে তাকে কী আর নদী বলা যায়? এসব নিয়েই তো নদী হয় মা। শুধু জল আর লবণ থাকলে তো তাকে আর জীবনদায়িনী নদী বলা চলে না? সে তখন শুধু জল ভরে রাখা খোল। মাটির খোল। মতিকে আঁতকে উঠতে দেখে, নুহু খিচখিচ করল, “অত ভয়ের কী আছে? এর আগে কোনদিন জোয়ারের স্রোত খাওনি নাকি, যে অত ভয়ে হালছ?”
“এ নদীর স্রোত নয়, নদীর ছোবল। ছোবলটা যখন ঘাড়ে পড়বে, তখন বুঝবি ঠ্যালা।“ দাঁতে দাঁত কামড়াল মতি। তার সাদা থির চোখ দুটো নদীর ভয়ংকর রূপের দিকে তাকিয়ে কী যেন এক অজানা ভয়ের আগমনী অনুভব করছে। বুড়ো মা তার হড়বড়ে ব্যাটাকে উদ্দেশ করে বললেন, “সাবধানের মাইর নেই, নুহু। তুই আর কবে বুঝবি?”
ছলাৎ ছলাৎ করে জল ঠেলতে লাগল নুহু। পুব আকাশে তাকিয়ে দেখল, দিগন্ত ফুটে বের হচ্ছে একটা নতুন দিন। সদ্য প্রসব হওয়া সূর্যের বিকিরণের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জোয়ারের জল। এক ছটাক দুধের সরের মতো পুব দিগন্তে লেগে আছে এক চিলতে মেঘ। যেন রঙিন সিঁথির নিচে কপালে লাগানো একটা ত্রিকোণ টিপ। আকাশের গা-গতরে তুলি দিয়ে রাঙানো রঙ ওড়নার মতো ভাসছে। সেখান থেকে একটু একটু করে সে রঙ ছড়িয়ে পড়ছে চরাচরে। সে রঙ কাঁধে বয়ে নিয়ে আসছে প্রথম বিনুনি খোলা রোদ্র। পায়ে পায়ে হেঁটে আসছে বেলা। এ এক মনোরম সকাল। পেটে ভাত আর মাথায় চালা থাকলে এ সকাল নিশ্চয় বেহেশতের বাগানে ফুলের ওপর শুইয়ে থাকা সকাল হতো? পেটে ভাত আর মাথায় চালা নেই বলে, মতিদের কাছে এ স্বর্গসকালও যেন নরকের রাত।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৫
নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব ১৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৯

 

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

এসএন 

Header Ad
Header Ad

পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  

ব্যবসায়ী আবুল বাসার ওরফে মিন্টু। ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী নগরীর পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো একটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে নগরীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চ সংলগ্ন এলাকার কাশবন থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, হত্যা করে কাশবনে ফেলে দেওয়া হয়েছে লাশটি।

নিহত ব্যক্তির নাম আবুল বাসার ওরফে মিন্টু (৩৫)। পেশায় ব্যবসায়ী মিন্টু নগরীর মির্জাপুর পূর্বপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। বিনোদপুর বাজারে তার ইলেকট্রিক ব্যবসার দোকান আছে।

নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম জানান, কাশবনে ঘুরতে আসা কয়েকজন লাশটি দেখে পুলিশে খবর দেয়। ঘুরতে আসা অনেকে লাশের ছবিটি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে শেয়ার করে। জানাজানির পর নিহতের পরিবার ঘটনাস্থলে এসে লাশটি শনাক্ত করে।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে মিন্টুর খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। কাশবনে তার মুখ পলিথিন দিয়ে ঢাকা ছিল। পলিথিনের ওপর স্কচটেপ প্যাঁচানো ছিল।

ওসি আরও বলেন, ‘আলামত দেখে মনে হয়েছে এটি হত্যাকাণ্ড। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে হত্যা মামলা হবে।’

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী

ছবিঃ সংগৃহীত

যানজটে আটকে থাকা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের গাড়ি বহরকে সাইড করে দিতে গিয়ে বাস চাপায় নিহত হয়েছেন জসিম উদ্দিন (৫৩) নামে জামায়াতের একজন কর্মী।

নিহত জসিম উদ্দিন উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত আলী আশ্রাফ মোল্লার ছেলে। তার স্ত্রী ও শিশুসহ তিন ছেলে সন্তান রয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমাই উপজেলার সৈয়দপুর এলাকার ওয়ালটন শো-রুমের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা মারুপ সিরাজী বলেন, লক্ষীপুর যাওয়ার পথে জামায়াত আমিরের বহরের ৪টি গাড়ি বাগমারা উত্তরবাজারে যানজটে আটকা পড়লে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ তিশা পরিবহনের ঢাকামুখী একটি দ্রুতগতির বাস ধাক্কা দিলে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দীনের মাথা থেতলে যায়। রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম মুন্না বলেন, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হলেও বাগমারা বাজার অংশে অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে দুই লেন করা হয়েছে।সে কারণে ২৪ ঘণ্টাই সড়কের এই অংশে যানজট লেগে থাকে। যানজট নিরসনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করলে আজ হয়তো এমন মৃত্যু হতো না।

লালমাই উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসেন বলেন, আমিরে জামায়াত লক্ষীপুর যাওয়ার পথে বাগমারা উত্তর বাজার বালুর মাঠে পথসভা করেন। পথসভাস্থলে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে তাঁর গাড়ি বহর যানজটে আটকা পড়ে।

তখন আমিসহ সংগঠনের ১৫/২০ জন কর্মী ট্রাফিকের দায়িত্ব শুরু করি। আমরা আমিরে জামায়াতকে নিয়ে পথসভায় চলে যাওয়ার পর জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দিন বাস চাপায় মারা যান।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, বাগমারা উত্তরবাজারে বাস চাপায় জসিম উদ্দিন নামের একজন মারা গেছেন। মরদেহ নিহতের বাড়িতে রয়েছে। খবর পেয়েই নিহতের বাড়িতে গিয়েছি।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  
সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম
ইসরায়েলের তেল আবিবে তিনটি বাসে বিস্ফোরণ