বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৬

নেই দেশের নাগরিক

“আপনি এ কী পাগলামো করছিলেন ভাই!” বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন ইয়াসিন মাস্টার। দুইধাপ এগিয়ে এলেন, “কাজটা একদম ঠিক করলেন না। এমনিতেই বিপদ ওঁত পেতে আছে। তার উপর এভাবে হাঁকডাক করলে তো আর রেহাই নেই! সেনাছাউনি থেকে বার্মা সেনাদের নেমে আসতে আর কতটুকু লাগবে? থুথনি তুলে গলার নলিতে একটা রাইফেলের গুলি মেরে বলবে, চিল্লা, এবার চিল্লা, যত পারিস চিল্লা। তখন বুঝবেন, কত ধানে কত চাল! তা ছাড়া এখান থেকে বাংলাদেশের বর্ডারও তো বেশি দূরে নয়। গলার চিল্লানি শুনে, বিজিবি-র সীমান্ত রক্ষীবাহিনীরাও তো রাইফেল তাক করে গুলি ছুড়তে পারে! ওদের তো কোনো জবাবদিহি করতে হবে না। বলবে, চুরি করে গোপনে সীমান্তে ঢুকছিল। কথা না শোনায়, গুলি করতে বাধ্য হয়েছি। তখন আর কী করার থাকবে? সবকিছু বুঝে ওঠার আগেই, সব অংক শেষ হয়ে যাবে!”
“ঠাপান ঠাপান, আচ্ছা করে ঠাপান, বুড়ো ধেড়ে হয়ে যাচ্ছে তবু শান হচ্ছে না!” রাগে কটমট করল মতি।
“দেখুন, আমাদের খুব সাবধানে থাকতে হবে। আমরা তো আর নৌকায় আনন্দ বিহারে আসিনি? চড়ুইভাতি করতেও আসিনি? নৌকাবাইচের পাল্লাতেও আসিনি? আমরা এসেছি জান বাঁচাতে জানের বেগাত্তায়। জান হাতে করে নদীতে লুকিয়ে বেড়াচ্ছি। একটু ফুরসত পেলে, বাংলাদেশে ঢুকে পড়তে হবে। এই মুহূর্তে ত্রিপলের একটা শেড পাওয়াই বিশাল ভাগ্যের ব্যাপার। একটা তাপ্তিতাপ্তা মারা কাপড়-ত্রিপলের ঘরই আমাদের বেহেশত। আমাদের দেশ। তাতেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলবে এই সাড়ে তিন হাত শরীরের ভেতরের রুহুটা।“ গলা ভিজে এল ইয়াসিন মাস্টারের।
“এই শরীরটায় কি আর রুহু টুহু আছে? অ কবেই উড়ে চলে গেছে। এখন শুধু হাড়গোড়গুলো পড়ে রয়েছে, শেষযাত্রার খোল-করতাল বাজানোর জন্য। যে তো আড়াই দিনের জীবন তার আবার অত লুকোছাপা কী?“ ঠেস মারল নুহু।
“তুই থামবি?” তেড়ে উঠল মতি। নৌকো নয়াপাড়ার দিকে এগিয়ে চলেছে। দক্ষিণে গ গ করে ডাকছে বঙ্গোপসাগর। এখানে সেরকম জলোচ্ছ্বাস নেই। নদীর জল মিহি সুরে গান করছে। এ যে মিলনক্ষেত্র। একজনের আর একজনের দেহে মিলিয়ে যাওয়ার পুণ্যস্থান। প্রকৃতিও কীভাবে একে অপরের মধ্যে লীন হয়ে যায়, তা বোঝার জন্যেই হয়ত ঈশ্বর মোহনার সৃষ্টি করেছেন। ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে জলের রঙ। মিহি করে ফুলে উঠছে নদী। যেন কেউ ফুঁ দিয়ে ফোলাচ্ছে। জোয়ারের সময় আসন্ন। নৌকোটা আরও একটু পশ্চিমে বাঁক নিতেই একটা চিকন ঢেউ পাটাতনে আছড়ে পড়ল। মতি ভ্রূ ফেঁড়ে বলে উঠল, “জোয়ার!” লুঙ্গির পাড়টাকে পাকিয়ে দুই জাঙের মধ্য পুরে পেছনের কোমরের খাঁজে গুঁজে নেংটিটাকে শক্ত করে এঁটে বলল, “নুহু, শক্ত করে বৈঠা ধর।“ হালেমা আরিফাদের লক্ষ্য করে বলল, “তোমরা টাপার ভেতর ঢুকে যাও, নৌকো যতই দুলুক, খুঁটি আঁকড়ে ধরে থাকবে।“
“আরে অত হুটোপুটি করছেন কেন? এ তো জোয়ারের পানি! জোয়ারের পরেই তো ভাটা আসে। তারপরে এটা গৌণ জোয়ার। অত মুরোদ নেই। দুই নৌকো হাতে হাত ধরে আছে, ঠেলে উল্টে দেওয়ার ক্ষমতা এই জোয়ারের নেই।“ বললেন ইয়াসিন মাস্টার।
“কে বলল নেই? নদী কখন কেমন ভাবে ফোঁস করে ফুঁসে উঠবে, কেউ বলতে পারে না। কখনও পুঁটির মতো ছলাৎ করেও উঠতে পারে, আবার কখনও হাঙরের মতো হালুম করেও উঠতে পারে। নদী কী আর নিজের ঠেলায় চলে, ঠেলা দেয়। আর সে ঠেলা যদি হয় সমুদ্রের, তাহলে তো কোনো কথাই নাই! সমুদ্রের রাক্ষুসে মুখ তখন নদীর বুক ফেড়ে হুহু করে ঢুকে পড়ে। তচনচ করে দেয় দুই পাড়। ফেনার মধ্যে লুকিয়ে থাকে ধ্বংসের বীজ। ঢেউ তখন পানির ঝুঁটি নয়, ঢেউ তখন হাড়গোস্ত শরীরের আজরাইল। মালেকুল মওত।“ নবী বৈঠাটায় নারকেলের ছোবড়ার দড়ি বাঁধতে বাঁধতে ফদফদ করে উঠল। সে আরও বলল, “জানেন তো মাস্টার, ঢেউ কিন্তু সবার মধ্যেই আছে। তফাৎ শুধু জোরের। যার ঢেউ যত জোরে আছড়ে পড়ে, সে তত ক্ষমতাবান। সে তত শক্তিশালী। তবে অহংকারী ঢেউ কেউ পছন্দ করে না। কুমিরের মতো হাঁ করে ওঠা ঢেউ সবাইকেই ভয় ধরায়। মিহি ঢেউ বরাবরই মানুষকে আনন্দ দেয়। মনের ভেতরের গুলবাগিচার রঙিন ফুলটাকে নাড়ায়। মিহি ঢেউ তো আর পানির ঠোঁট নয়, মিহি ঢেউ গোলাপের ঠোঁট। সে ঠোঁটের সবাইই স্পর্শ পেতে চায়। সে মানুষ হোক আর জন্তু হোক।“
“এই শুরু হলো!” বিড়বিড় করে উঠল মতি।
“এই শুরু হলো মানে!” ভ্রূ কুঁচকালেন ইয়াসিন মাস্টার।
“আর বলেন না, আমার এই ভাইটা ক-দিন বাউলের পাল্লায় পড়েছিল। মাস তিনেক বাউলের আখড়ায় নাড়া বেঁধেও ছিল। সে ভূত এখনও মাথা থেকে যায়নি। একটু কিছু ছুতো পেলেই হলো, ব্যস, কী সব খেয়ালি খেয়ালি কথা গাহায়।“ নুহুর দিকে বাঁকা চোখে তাকিয়ে বলল মতি।
“কথাবার্তা শুনে ওরকমই মনে হচ্ছে। যাক, ওসব কথা এখন থাক, এখন জোয়ারের সময়, নৌকো বাঁচাতে হবে।“ কথাটা থড়বড় করে বলেই ইয়াসিন মাস্টার তাদের নৌকোর দিকে তাকিয়ে হাঁক পাড়লেন, “আবুল, দড়িগুলো ঠিক করে রাখ। হাওয়া ভরা টিউবগুলোও হাতের নাগালের মধ্যে রাখিস।“ নুহুর যেন কোনো হেলদোল নেই। সে বৈঠাটাকে ঠেলা দিতে দিতে গলা ছেড়ে গেয়ে উঠল,
“কোন সাহসে বাঁধলি এসে ঘর
এ যে জরিপছাড়া সদ্য পড়া—
ভাঙন নদীর নূতন চর
সাড়ে তিন হাত জমির পরে,
নিয়েছিস নিশানা করে
কে বা দখল স্বত্ব দিল তোরে—
জমির মালিক তালাস কর।“
“কে রে অমন করে গান করছে, নুহু নাকি?” ছইয়ের ভেতর থেকে চিকন স্বরটা ভেসে এল। মতি ঠেস মেরে বলল, “হ্যাঁ মা, তোমার লাদলা নুহু।“
“গলাটা ওরকমই মনে হচ্ছে।“ কেমন খেয়ালি হয়ে উঠলেন হালেমাও। তারপর পোঁটলাপুঁটলি গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। মা আর কিচ্ছু বললেন না দেখে অবাক হলো মতি। অন্যসময় হলে একেবারে রগ টাটিয়ে উঠতেন। নুহুর মুখে বাউল গান গুনগুন করতে দেখলেই তার গা-পিত্তি জ্বলে যায়। বলেন, ‘ওসব শেরেকি গান বন্ধ কর। পাপে গা ভরে যাবে। জানিস ন্যা আল্লাহর কোরআনে এসব শেরেকি? গান গাওয়া হারাম। যে মুখে গান করছিস, সে মুখে আল্লাহ দোযখের আগুনের ছ্যাঁকা দেবেন। তুই আমার পেটে জন্মে বাউল হবি, অ আমি জান থাকতেও হতে দেব না। তোর জন্যে আমি জাহান্নামে যাব না।‘
সময় মানুষকে বদলে দেয়। সময়ের অমোঘ নিয়মেই পাল্টে যায় মানুষের বিচারধারা, বিশ্বাস অ-বিশ্বাস। মানুষ কখন কী ভোল নেবে, কোন নদীতে মারবে ডুব, তা একমাত্র জানে দেওয়ালের ক্যালেন্ডার আর টিক টিক করে চলতে থাকা সময়-ঘড়ি। জীবনপুর কোন ঘাটে কখন নাড়া বাঁধবে, জীবনের কোন ঘাট কোন দিকে বাঁক নেবে, তা ওরাই জানে। প্রেম আর ঠাপ, দুটোই মানুষের জীবনের প্রভাবি শক্তি। প্রেমে পড়লে যেমন মানুষ আর তেল-নুনের হিসাব কষা রক্ত-মাংসের মানুষ থাকে না, ঠিক তেমনি ঠাপে পড়লে মানুষ প্যাঁচ ছেড়ে যাওয়া নাটবোল্টের মতো হ্যালাব্যালা হয়ে যায়। তখন আর তার বুদ্ধির ঘেলু জীবনের ফরদো মেলানোর ফুরসত পায় না। বলের মতো যেদিক ইচ্ছে সেদিক গড়ে যায়। অত বোতাম মাপার সময় থাকে না। হালেমারও এখন এই দশা। যে গান শুনলে এতদিন তাঁর গা-পিত্তি জ্বালা করত, সেই গানই যেন আজ তাঁর কাছে ঈশ্বরের বুলি মনে হচ্ছে! গানের কথাগুলোর সঙ্গে কোথাও কি নিজেকে সম্পৃক্ত করে নিচ্ছেন হালেমা? কোথাও কী তাঁর মনে হচ্ছে, এ যে আমাদেরই কথা, আমাদেরই জীবন ছেঁচে সুর বাঁধা? জীবন যে কখন কী সুর বাঁধে, কোন ঘাটে বাঁধে নাড়া কে বা জানে। হয়ত সেটাই মনে হচ্ছে হালেমার। নুহুর গানের কথাগুলো তাঁর হাড়জিরজিরে জড়ানো শরীরে আষ্টেপিষ্টে লেগে যাচ্ছে। হৃদয়ের দেওয়ালে ঠোকর মারছে অহরহ।
একটা জোরালো স্রোত ফোঁস করে বঙ্গোপসাগরের দিক থেকে গোখরো সাপের মতো ফনা তুলে নৌকোর খোলে ধেয়ে এল। এতক্ষণ দাঁড়িপাল্লার মতো দুলতে থাকা নৌকোটা এবার কাগজের নৌকোর মতো হিলহিল করে দুলছে। মতি চিৎকার করে উঠল, “তুই গান থামাবি না ভালো করে হাল ধরবি?” চোখ লাল হয়ে উঠছে মতির। কানের লতি রাগে টনটন করছে। মনের ভেতর ঝাপ্টাচ্ছে, গালি, খিস্তি-খেউর; অকর্মা কুকর্মার ঢেঁকি, আবোড়, কখন কী কাজ করতে হয় তাইই আজ পর্যন্ত জানল না, ঠ্যাঙনার বাড়ি দিয়ে বাউলের বিছন ছেঁচে দেব। তখন গান আর সুর বাপ বাপ করে পালাবে। গোখরোর পর এবার কুমিরের হাঁ-এর মতো ভয়ংকর ঢেউ নৌকো দুটোকে পাকসাপটা মেরে ঘুরিয়ে দিল। আর কালাপানির ঢেউয়ের ধাক্কায় নুহুর গলা ছেড়ে গাওয়াটা বন্ধ হয়ে গেল। কিন্তু গান বন্ধ হলো না। শক্ত করে বৈঠা টেনে মনে মনে গুনগুন করতে লাগল। মতিকে উদ্দেশ্য করে বলল, “নোঙরের ফলাটা হক্ত করে বেঁধে রাখো।“
“বাঁধা আছে।“ গজগজ করল মতি। তার হৃদস্পন্দন চড়াম চড়াম করে বাজছে। একে ভাইয়ের গানের খিটকেল তারপরে আচমকা সমুদ্র ফুঁসে ওঠা, জানে খিজিবিজি লেগে গেছে মতির। নৌকোটা একটু একটু করে উথলে উঠছে। নদীর জল তলা দিয়ে দিচ্ছে জোর ঠেলা। হুহু করে বাড়ছে জল। গ গ করে ঢুকছে জোয়ার। আধপেটা নদী এবার ভরপেটা হয়ে উঠছে। নদীর পাড় উপচে পড়ছে স্রোত। সকালের রোদ স্রোতের ঝুঁটি ধরে ঝালঝুপ্পা খেলছে। সে রোদে হাওয়া মিশে মুক্তোর মতো ঝকমক করছে। দূরের ঢেউ খেলানো জলে ছিটকে পড়া লাল-হলুদ রোদে নদীটা চুবড়িয়ে স্নান করছে। স্রোতের পিঠে ঝলক মারা রোদ যেন বালিকার কানের দুল। দুমড়ে পড়া স্রোত যেন তন্বী রমণীর বুক ধড়কানো কোমর। জোয়ার যেন নদীর জীবনে আসা একমাত্র প্রেম। প্রিয়তম সখা। জোয়ারই তো আনে নদীর গর্ভে সন্তান? যেমন গর্ভে সন্তান এলে সন্তানসম্ভবা নারীর ঠোঁটে মিশে থাকে জান্নাতি-লাবণ্য, বেহেশতি-হুরীর রহস্যময়তা, ঠিক তেমনি নদীর গর্ভে জোয়ারের জল ঢুকলে সে নদীও পোয়াতি মেয়ের মতো হেসে ওঠে। তার ছলছল বুকে কিতকিত খেলে কখনও রোদ কখনও জ্যোৎস্না। বাঁশি বাজায় কুলকুল স্রোত। আর ভরা পেটে ঢুকে পড়ে হাজার হাজার মাছ, জলের পোকা, শ্যাওলা-ছত্রাক। পেটের ভেতর এসব না থাকলে তাকে কী আর নদী বলা যায়? এসব নিয়েই তো নদী হয় মা। শুধু জল আর লবণ থাকলে তো তাকে আর জীবনদায়িনী নদী বলা চলে না? সে তখন শুধু জল ভরে রাখা খোল। মাটির খোল। মতিকে আঁতকে উঠতে দেখে, নুহু খিচখিচ করল, “অত ভয়ের কী আছে? এর আগে কোনদিন জোয়ারের স্রোত খাওনি নাকি, যে অত ভয়ে হালছ?”
“এ নদীর স্রোত নয়, নদীর ছোবল। ছোবলটা যখন ঘাড়ে পড়বে, তখন বুঝবি ঠ্যালা।“ দাঁতে দাঁত কামড়াল মতি। তার সাদা থির চোখ দুটো নদীর ভয়ংকর রূপের দিকে তাকিয়ে কী যেন এক অজানা ভয়ের আগমনী অনুভব করছে। বুড়ো মা তার হড়বড়ে ব্যাটাকে উদ্দেশ করে বললেন, “সাবধানের মাইর নেই, নুহু। তুই আর কবে বুঝবি?”
ছলাৎ ছলাৎ করে জল ঠেলতে লাগল নুহু। পুব আকাশে তাকিয়ে দেখল, দিগন্ত ফুটে বের হচ্ছে একটা নতুন দিন। সদ্য প্রসব হওয়া সূর্যের বিকিরণের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জোয়ারের জল। এক ছটাক দুধের সরের মতো পুব দিগন্তে লেগে আছে এক চিলতে মেঘ। যেন রঙিন সিঁথির নিচে কপালে লাগানো একটা ত্রিকোণ টিপ। আকাশের গা-গতরে তুলি দিয়ে রাঙানো রঙ ওড়নার মতো ভাসছে। সেখান থেকে একটু একটু করে সে রঙ ছড়িয়ে পড়ছে চরাচরে। সে রঙ কাঁধে বয়ে নিয়ে আসছে প্রথম বিনুনি খোলা রোদ্র। পায়ে পায়ে হেঁটে আসছে বেলা। এ এক মনোরম সকাল। পেটে ভাত আর মাথায় চালা থাকলে এ সকাল নিশ্চয় বেহেশতের বাগানে ফুলের ওপর শুইয়ে থাকা সকাল হতো? পেটে ভাত আর মাথায় চালা নেই বলে, মতিদের কাছে এ স্বর্গসকালও যেন নরকের রাত।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৫
নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব ১৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৯

 

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

এসএন 

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া