শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৫

নেই দেশের নাগরিক

সাকিব ঘুমিয়ে পড়লে, তার গা’টা আদরের আঁচল দিয়ে ঢেকে দেয়। আরিফা ভাবে, আঁচল দিয়ে আর কতদিন আগলে রাখব? মৃত্যু তো ছো পেতে আছে! যেকোনো সময় ছোবল মারতে পারে। আঁচল কি আর মৃত্যু রুখতে পারে? এ আঁচল কি আর মুসানবীর লাঠি, যে মৃত্যুকে রুখে দেবে? এ আঁচল বড়জোর মাছি তাড়াতে পারে, মশা তাড়াতে পারে, হাওয়া দিয়ে দিতে পারে নিশ্চিন্তির ঘুম।

চোখ মোছে আরিফা। মতি নামাজের শেষ রাকাতের সিজদায় যাওয়ার জন্যে, ঝুঁকে রুকু পড়ছে। নদী আড়মোড়া ভেঙে ঝেরে ফেলছে ঘুমের আবেশ। তার থির বুকে শুইয়ে থাকা অন্ধকার কফির কাপে চুমুক দিয়ে জায়গা ছেড়ে দিচ্ছে ভোরের আলোকে। দূরে দিগন্তে পোঁতা গাছগুলো মিলেমিশে আকাশের দিকে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। ভোর হলেও গাছের লতায়-পাতায় জড়ানো আছে ছোপ ছোপ আঁধার। পুব আকাশ থেকে মিহি মিহি আলো বয়ে নিয়ে আসছে পুবালি হাওয়া। সে আলো-হাওয়াই টাটিয়ে আসছে আরিফার চোখ। ছইয়ের চালায় গোঁজা সুখ একটু একটু করে উবে যাচ্ছে শূন্য থেকে মহাশূন্যে। অথচ কত সুখের সাক্ষী এই ঘাটবাড়ি কৌশা নৌকাটা। বিয়ের আগে কতদিন লুকিয়ে মতির সঙ্গে এই নৌকাটায় নদী বিহার করেছে আরিফা। ছইয়ের ভেতর খেলেছে খুনসুটি। বাঁশের বাতাগুলোকে সেসব কথা জিজ্ঞেস করলে, এখনো লজ্জায় মুখ ঢেকে নেবে। ফিসফিস করে বলবে, ‘শরম লাগে’। একবার তো আরিফা পোয়াতি পেটে আবদার করেই বসল, আমাকে নৌকায় চাপাতেই হবে। সাকিব তখন সাতমাসের ভ্রূণ। মতি কোনোমতেই রাজি হবে না, কিন্তু আরিফা নাছোড়। সে বলে, ‘আমরা হলেম কি জেলে মানুষ, বছরভর নদীতে মাছ ধরে খাই, তুমি হচ্ছ এই পেটে আসা ব্যাটা-বিটির জেলেবাপ, তো পেট থেকে বেরোলে তো সেও মাছ ধরবে নাকি, না থানার দারোগা হবে? জেলের ব্যাটা জেলেই হবে। তাই আগে থেকেই নদীর ঢেউ লাগিয়ে রাখি। যাতে বৈঠা টানতে ভুল না হয়।‘

সেবার হালেমার কাছে খুব বকা খেয়েছিল আরিফা। আচ্ছা ঝাড় খেয়েছিল মতিও। হালেমা তেড়েফুড়ে বলেছিলেন, ‘এ মেয়ের কালেজা তো কম নয়! ভরা পেটে নৌকার দোল খায়! ফুল যখন ঝরে যাবে তখন বুঝবে। নৌকায় পাট খাওয়া বেরোবে।‘ মতিকে একহাত নিয়ে বলেছিলেন, ‘ব্যাটাবিটির বাপ হতে চলেছ, শান হবে কবে? তোর তো দেখছি, চুল পাকলেও বুদ্ধি হবে না! যত বুড়ো হচ্ছিস তত খোকা হচ্ছিস!’ আরিফা বা মতি কেউই কোন রা করেনি। আরিফা দাওয়ার খুঁটিটার কাছে মাথায় ঘোমটা টেনে মুখ নিচু করে শুনছিল। তারপর হালেমা হেঁসেলে ঢুকে গেলে, আরিফা মুখের ঘোমটাটা আলতো করে টেনে মতির চোখে চোখ ফেলে ফিক করে হেসেছিল। মতি আশপাশ জরিপ করে, দূর থেকে একটা আদরের ঘুষি চুখিয়ে ছিল।

মতির নামাজ প্রায় শেষের দিকে। সালাম ফিরে হাতের আঙুলে তসবিহ গুনছে। ভোরের চিকন আলো উড়ে এসে বসছে তার ঘাড়ে। সালাম জানাচ্ছে নতুন দিন। ফেজ টুপির ওপরে মুক্ত নীলাকাশ। শূন্যের রাজপাট। অসীম অনন্ত শূন্যকে আঁকড়ে আছে আলো-আঁধারি। আসমান ছুঁয়ে নেমে আসছে আরও একটা সকাল। আরও একটা দিন। হালেমা নামাজ শেষ করেই, মেজবৌকে ডাকে, ‘আরিফা, এই আরিফা, কই গো রা করছ না যে, এই সাতসকালে আবার ঘুমিয়ে গেলে নাকি? এই দেখো, আলো ফুটে গেছে।’ শাশুড়ির হাঁকডাকে কাঁচা ঘুম ভেঙে গেল আরিফার। বাইরের আভা ভেতরে আসার জন্য ছইয়ের বাতায়, পলিথিনের গায়ে ছটফট করছে। ছইয়ের ফাঁক গলে আলো এসে পড়ল মুখে। আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসল বিছানায়। চোখে এখনও ঘুমজড়ানো। এ কি ঘুম নাকি ক্লান্তির উড়ো মেঘ? গহীন রাত হয়ে লেগে আছে চোখে। ফোলা চোখ দুটো ড্যাব ড্যাব করে দেখে, একেবারে মাঝনদীতে ভাসছে নৌকোটা! এক পাড়ে মায়ানমার আরেক পাড়ে বাংলাদেশ। দুপাড়ে দু দেশ। মন প্রশ্ন করে ওঠে, আমরা এখন কোন দেশে, মায়ানমারে না বাংলাদেশে? নাকি দেশহীন এক অনাথ নদীর কোলে ভেসে আছি? যে নদীর কোনো ধর্ম নেই, কোনো জাত নেই, কোনো সেনাব্যারাক নেই, আছে শুধু তারকাঁটাহীন এক মুক্ত নীলাকাশ।

আরিফা ছইয়ের বাইরে বের হয়ে এল। মতি তখন মোনাজাত ধরেছে। আল্লাহর কাছে দুহাত তুলে চায়ছে, ইহকাল-পরকালের সুখ, শান্তি। মিনমিন করে চাইছে, কবরের আযাব থেকে মুক্তি, পাতিক্ষুরের মতো ধারালো পুলসুরাতের দড়ি পার হওয়ার মাগফেরাত, কেয়ামতের দিন হাশরের ময়দানে শেষবিচার থেকে পরিত্রাণ, দোযখ থেকে মুক্তি। নাকি মতি অন্তর ডুকরে চায়ছে, জন্মভিটে ফিরে পাওয়ার বাসনা, একটা স্বাধীন দেশ, নিজের দেশ? বৌ-বাচ্চা নিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই? নাকি মতি ইহকালের সুখ আহ্লাদ ছেড়ে শুধু পরকালের সুখই চাইছে? যে বান্দা ইহকালের সুখ ব্যাতিরেখে পরকালের সুখ চায়, আল্লাহ যে সেই বান্দাকে বেশি ভালোবাসেন। আকাশ প্রায় পরিষ্কার হয়ে এসেছে। দু-চারটে তারা আবছা আবছা চোখে সুজছে। নুহু বৈঠাটা নৌকার উপর সাট করে ফেলে রেখে, খাড়া হয়ে দাঁড়াল, বলল, ‘দাঁড়াও ভাবি, পলিথিনটা এই কোণায় টাঙিয়ে দিই। তাহলে বেপর্দা হবে না।’ নুহু, কালো রঙের তেলতেলে পলিথিনটা ছইয়ের ছাদ থেকে পেড়ে নৌকোর উত্তরকোণাটায় তিনটে বাঁশের খুঁচ খট খট করে পুঁতে একটা বোরখা ঘর বানিয়ে দিল। তিন কোণার অস্থায়ী ঘেরা বাথরুম। বদনা হাতে প্রথমে ঢুকল আরিফা। ও নাকি বেগ পেলে আর থির থাকতে পারে না। পেট কুনকুন করে। উগলায়। গুরুম গুরুম করে মেঘডাকা ডাক ডাকে। তিনদিক হেচিয়ে পেঁচিয়ে ঘেরা থাকলেও বাথরুমটার ছাদ ফাঁকা। হলহল করে পুবালি হাওয়ায় দুলছে। ফাঁকফোকর দিয়ে উঁকি মারছে সকালের মিস্টি রোদ।
‘গোটা রাখাইনটা তো নদীতে উঠে এসেছে রে!’ নামাজ শেষ করে বিস্ময়ভরা চোখে বলল মতি। যেদিকে চোখ যায়, যতদূর চোখ যায়, শুধু নৌকা আর নৌকা! নৌকাতে গিজগিজ করছে নাফ নদী!

‘কী আর করবে, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড’ এর সেনারা যে আর বাংলাদেশে ঢুকতে দিচ্ছে না! অগত্যা নদীতেই পড়ে থাকতে হচ্ছে।’ বলল নুহু। আচমকা পরনের লুঙ্গিটা নেংটি মেরে হুট করে ছইয়ের ওপরে উঠতে গেল। ‘এ কী করছিস!’ তেড়ে উঠল মতি। ‘ছইটা ভেঙে দুমড়ে মুচড়ে যাবে যে!’

‘কিচ্ছু হবে না।’ বলে পা ফাঁক করে ছইয়ের ডাপ ধরে বানরের মতো হিড়িং বিড়িং করে উঠতে লাগল নুহু। ‘উপরে উঠে কী করবি?’ গলা খেঁকাল মতি। ‘দেখো না ক্যানে কী করছি।’ কুঁত পেরে বলল নুহু। মতির ভেতরটা ধড়াক করে উঠল, নুহু আবার ছইয়ের মাথা থেকে নদীতে লাফ মারবে না তো! যা দিনকাল যাচ্ছে, কিচ্ছু বিশ্বাস নেই। বৌ-বেটা মারা যাওয়ার পর থেকে নুহু কেমন খামখেয়ালি হয়ে গেছে! মাঝে মধ্যে মাথা বিগড়ে যায়। জ্বিনে ধরার মতো ভুল বকে। লোকে ঠিক কথায় বলে, বৌ মারা যাওয়ার আগে স্বামীর মারা যাওয়াই শ্রেয়। তানাহলে সে স্বামীর যাচ্ছেতাই ছড়াদ হয়। তারপর শুধু বৌ’ই একা নয়, জ্বলজ্যান্ত ব্যাটাটাকে মায়ের সামনে খুন করল। নুহুর খাঁ খাঁ বুক। জানে বল নেই, শুধু হাওয়াটুকু যাওয়া-আসা করে। শরীরের ভারে ছইটা একদিক আলতো কাত হয়ে গেল। কচকচ করে উঠল বাতার বাঁধন। বাঁশের ছাউনি। ছইটাকে কাত হতে দেখে, ভেতর থেকে খেঁকিয়ে উঠলেন হালেমা, ‘টাপাটাকে(ছই) ভাঙবি নাকি? ওরা তো ঘর ভেঙেছে, দেশ ভেঙেছে, এবার তোরা এই নৌকাটাও ভাঙ।’

‘দেখো, দেখো, কথা শুনছে!’ চোখ পাকালো মতি। আরিফা ভ্রূ নাচিয়ে বলল, ‘ওমা, দেওরজি, অ কী কাজ করছ গ, নামো নামো শিঘ্রি নামো। পড়ে পা ভেঙে যাবে!’

‘তোর কি ছেলেমানুষি কোনোদিন যাবে না?’ ধমকে উঠল মতি। দু-ধাপ এগিয়ে গিয়ে যেদিকে ছইটার চালা কাত হয়ে গেছে, সেদিকটা দুই হাত শক্ত করে ঠেলে ধরল। চোখ ঘুলিয়ে বলল, ‘তুই নামবি, না, পা ধরে টেনে নামাব?’
‘ওহঃ অত জ্বালাও ক্যানে! পা ছাড়ো তো। কিচ্ছু ভাঙবে না।’ বিরক্ত হয়ে নিচে বানরের লেজের মতো ঝুলতে থাকা পা’টা সড়াৎ করে টেনে উপরে তুলে নিল নুহু। মতি হাঁ করে দেখতে লাগল, ছোটভাইয়ের কিত্তিকলাপ। নুহু ছইয়ের একেবারে মটকায় উঠে, দুই হাতের তালু বড় করে মুখটা মাইকমুখ করে চিৎকার করে গলা হাঁকল, ‘দংখালীর কেউ আছো নাকি? সবুর, আলিম, মতিন, বাশার কেউ আছো? ওগো ওগো, আমার কথা তোমরা শুনতে পাচ্ছো? ও গো সব নৌকার লোক, দংখালীর কেউ আছো……?’
‘আরে এ তুই কী করছিস? স্বেচ্ছায় মরণ ডেকে আনবি নাকি? চুপ কর নুহু, দয়া করে চুপ কর, তোর গলা শত্রুর কানে পৌঁছে যাবে!’ নিচ থেকে কাঁইকুঁই করে মতি।
‘অত পাঁয়তারা করো না তো? থামো, দেখতে দাও, দংখালীর কেউ আছে কি না।’ চোখ গরম করে তাকায় নুহু। ফুটন্ত ভোরের সদ্যফোটা মিঠেরোদ তার হাড়জিরজিরে বাতাশরীরটায় এসে মোমের মতো মিশে যাচ্ছে। উসকোখুসকো ফেঁসো চুল ফিনফিনে বাতাসে ধাক্কা লেগে কাশফুলের মতো উড়ছে। নুহু যেন ইচ্ছে করেই নিচে নামতে দেরি করছে। নিচ থেকে মতি যতই হাম্বিতাম্বি করুক না কেন, ওসব এক্কেবারেই গা করছে না। নুহু দুইপায়ের গুল্লে দুটো ওপরে খাড়া করে তুলে আরও লম্বা হওয়ার চেষ্টা করল। সারস পাখির মতো গলা বাড়িয়ে আরও ওপর থেকে নদীটাকে দেখবে। পারলে আরও উঁচুতে উঠে দেখে। একেবারে আসমান থেকে। আসলে নুহু, একেবারে উপর থেকে দেখতে চাইল আল্লাহর সৃষ্ট দুনিয়াটাকে। দু পেয়ে মানুষের জগৎটাকে। নুহুর মাঝে মধ্যেই মনে হয়, আসমান থেকে দেখলে, নিশ্চয় সব মানুষকে পিঁপড়ের মতো পিলপিল করতে দেখা যাবে। কে মোটা, কে সরু, কে ধনী, কে গরীব, কিচ্ছু বোঝা যাবে না। দেশের কাঁটাতারগুলোকে মনে হবে দুনিয়ার হৃদয়ে কাঁটা আঁচড়ের দাগ। দেখতে একদম বেমানান লাগবে। মনে মনে গাল দেবে নুহু, এভাবে কেউ নিজের গায়ে আঁচড় টানে? সে দেখবে একটা হট্টিটি পাখি ‘হ টি টি ‘করতে করতে পেরিয়ে যাচ্ছে সীমান্ত। বিচ্ছেদের কাঁটাতার। একটা মেঠো ইঁদুর দাঁত দিয়ে গর্ত করতে করতে পেরিয়ে যাচ্ছে এক দেশ থেকে আর এক দেশ। এমনকি একটা শুঁয়োপোকাও বুক ঠেলে ঠেলে ঢুকে পড়ছে অন্য দেশে। শুধু আটকা পড়ে যাচ্ছে মানুষ! মানুষের পিঠে যে মারা আছে দেশ-এর ছাপ? ধর্মের স্ট্যাম্প। জাতের তকমা। নুহু ভাবে, আল্লাহ তাকে মাটির জীব না বানিয়ে আসমানের জন্তু বানালেই পারতেন? ফেরেশতা তো আর হওয়া হত না। সে না হোক, আসমানের চিল বা লাল-হলুদ মাছরাঙা হলেও হত। নুহু এবার তার হেড়ে গলায় একটা জোর হাঁক পাড়ল, ‘দংখালীর কেউ আছো গ? আমরা দংখালীর লোক।’ আর যায় কোথায়, মতি এবার লুঙ্গিটাকে ঘ্যাঁচ করে গিঁট মেরে, তড়াক করে লাফ মেরে নুহুর একটা পা ধরে নিচ সোজা মারল একটা হ্যাঁচকা টান। পড়পড় করে নিচের দিকে সড়পাতে লাগল নুহু।

‘আরে এ কী করছ বড়ভাই! ছাড়ো, ছাড়ো, পড়ে যাব তো।’ কুঁদরাতে লাগল নুহু। ‘তুই নাম, নাহলে এভাবেই নামাব।’ দাঁত খিঁচল মতি। ‘নামছি, নামছি।’ বলে নুহু ধড়াম করে ছইয়ের ওপর থেকে মারল নিচে লাফ।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন
নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব ১৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৯

 

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

"শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, প্রগতি"—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ওপেন হাউস ডে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিরামপুর থানা চত্বরে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমতাজুল হক। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফত হুসাইন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনিম আওন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, ড. মুহাদ্দিস এনামুল হক, বিএনপির বিরামপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মিঞা শফিকুল ইসলাম মামুন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজু, উপজেলা আমির হাফিজুল ইসলাম, যুবদলের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শিরণ আলম, ইঞ্জিনিয়ার শাহিনুর ইসলামসহ বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য, স্থানীয় শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

পুলিশ সুপার মারুফত হুসাইন তার বক্তব্যে বলেন, “প্রথমে আমি আমার পুলিশকে ঠিক করেছি। এখন আমাদের সামনের দিনগুলো ভালো প্রত্যাশা চাই। আমরা আমাদের সমাজে আর কোনো অপরাধ করতে দেব না এবং এই জেলাকে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও মাদকমুক্ত করব ইনশাল্লাহ।”

তিনি আরও বলেন, পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা এবং সহযোগিতাই পারে সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূল করতে। তাই সবাইকে আরও সচেতন ও সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার, শঙ্কায় বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ স্বপ্ন

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শুরুতে দুর্বল প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে টানা তিন জয়ে শীর্ষে ছিল নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। তবে শক্ত প্রতিপক্ষের মুখে পড়ে একের পর এক হারে এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছে তাদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। প্রথমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩ উইকেটে হারের পর শনিবার (১৯ এপ্রিল) লাহোরে পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে বসেছে বাংলাদেশ।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। মাত্র ২১ রানের মধ্যেই ফিরেছেন তিন ব্যাটার—ফারজানা হক (০), দিলারা আক্তার (১৩) ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা (১)। এরপর শারমিন আক্তার ও রিতু মনির ৪৪ রানের জুটি এবং রিতু ও নাহিদা আক্তারের ৪৭ রানের জুটি কিছুটা স্থিতি আনলেও তা বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি। রিতু মনি করেন ৪৭ রান, আর ফাহিমা খাতুন অপরাজিত থাকেন ৪৪ রানে। ৫০ ওভারে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৭৮ রান। পাকিস্তানের সাদিয়া ইকবাল ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দেন।

 

ছবি: সংগৃহীত

জবাবে পাকিস্তানও শুরুতেই শাওয়াল জুলফিকারকে হারায়, যাকে এলবিডব্লিউ করেন মারুফা আক্তার। তবে এরপর সিদরা আমিন (৩৭), মুনিবা আলি (৬৯), আলিয়া রিয়াজ (৪৮*) এবং নাতালিয়া পারভেজ (১৩*) মিলে ৩৯.৪ ওভারে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান।

এই হারের ফলে বাংলাদেশের নেট রানরেট নেমে এসেছে +০.৬৪-এ। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নেট রানরেট এখন -০.২৮। ফলে এখন বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে থাইল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের দিকে। ক্যারিবিয়ানরা যদি বড় ব্যবধানে না জেতে, তবেই কেবল বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বাংলাদেশের।

শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ব্যর্থতা, ব্যাটিং দুর্বলতা এবং ধারাবাহিকতা না থাকায় কঠিন হয়ে উঠেছে টাইগ্রেসদের বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করা। এখন সব কিছু নির্ভর করছে অন্য দলের পারফরম্যান্সের ওপর, যা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ নারী দলের জন্য উদ্বেগের বিষয়।

Header Ad
Header Ad

ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ জানানো যাবে দুই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে

ছবি: সংগৃহীত

ঘুষ, দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার হলে এখন সরাসরি ই-মেইলে অভিযোগ জানানো যাবে স্থানীয় সরকার ও যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে। অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে এবং যথাযথ প্রমাণসহ অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি এবং ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে সরাসরি অভিযোগ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, দুই মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ যেকোনো সংস্থা বা দফতরে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়া, দুর্নীতি, অনিয়ম কিংবা সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হলে তা ই-মেইলে জানাতে পারবেন সেবা গ্রহীতারা।

অভিযোগ পাঠানোর ঠিকানা:
advisorasifofficial1@gmail.com

পোস্টে বলা হয়, অভিযোগের সঙ্গে যথাযথ তথ্য ও প্রমাণ সংযুক্ত করলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেকোনো অভিযোগ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে এবং অভিযোগকারীর পরিচয় সম্পূর্ণরূপে গোপন রাখা হবে।

"জনস্বার্থে এই উদ্যোগ। ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে সক্রিয় নাগরিক অংশগ্রহণ আমাদের সবচেয়ে বড় প্রেরণা।"

এ উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেকে। তারা মনে করছেন, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘব এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এটি একটি সাহসী পদক্ষেপ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দিনাজপুরের বিরামপুর থানায় ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত
পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার, শঙ্কায় বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ স্বপ্ন
ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ জানানো যাবে দুই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে
টঙ্গীতে দুই শিশুকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা, মায়ের স্বীকারোক্তি
টানা ৫ দিন দেশজুড়ে বৃষ্টি, তাপমাত্রা বাড়ার পূর্বাভাস
বাফুফের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সরফরাজের পদত্যাগ
ভর্তুকি মূল্যে পাটের তৈরি বাজারের ব্যাগ সরবরাহ করা হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা
রবিবার সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের
দেশের ইতিহাসে এবারের নির্বাচন সর্বোত্তম হবে: প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে ভারত: রিজভী
ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!
জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয় : নাহিদ ইসলাম
আ.লীগের মিছিল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ
হাসিনা-কাদেরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন
নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর সেই শিশু সেহেরিশের লাশ উদ্ধার
আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কাজ করছে সরকার
লাল কাপড়ে ঢাকা হবে দেশের সব পলিটেকনিকের ফটক
৬০ বছর বয়সে বিয়ে করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ