শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫ | ১৫ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১২

নেই দেশের নাগরিক

“আলবাত ঠিক বলেছেন, হুজুর। আমি ওকে অনেক করে বোঝাচ্ছি, ও বুঝতেই চায়ছে না। এই ক-দিন তো আমার সাথে ‘বালুখালী চৌকি’ অ্যাটাকে যাবে বলে বায়না ধরেছে। ঘ্যানর ঘ্যানর করেই যাচ্ছে। ওর নাকি ‘বালুখালী চৌকি’ মাটিতে মিশিয়ে দেওয়াটা এজন্মের অন্যতম ফরজ কাজ। ওর নাকি প্রেস্টিজ ব্যাপার। ওকে নাকি প্রতিশোধ নিতেই হবে। তা নাহলে ওর নাকি গায়ের জ্বালা মিটবে না। ‘বালুখালী চৌকি নাকি ওকে সবসময় সূচের মতো বিঁধে। কুটুস কুটুস করে কাটে। হুজুর, ওর কি বোঝা উচিৎ নয়, আবেগ আর বুদ্ধি এক জিনিস নয়? আবেগে কাজ করলে, সেই কাজ কখনই ফলপ্রসূ হয় না। আবেগ দিয়ে কখনও যুদ্ধ জয় করা যায় না। আরে যে আবেগ দিয়ে সামান্য একটা মেয়ের মনই জয় করা যায় না, তো একটা জাতির যুদ্ধ কীভাবে জয় করা যাবে! হুজুর, ওর বোঝা উচিৎ, আবেগ দিয়ে কবিতা হয়, গান হয়, কিন্তু বিপ্লব হয় না। তার জন্যে লাগে ব্রেন আর রক্ত।“ ফড়ফড় করে গেল নবী। চোখমুখ টগবগ করে উঠছে, যেন মনের মণিকোঠায় জমানো গাড়ি গাড়ি কথা ফড়ফড় করে বেরিয়ে আসতে চায়ছে। সে জানে, যে কথাগুলো বললে বন্ধু আতিফ একবারও শুনবে না, গা’ই করবে না, সেকথাগুলো খাঁ সাহেবের কানে তুলি, যাতে করে খাঁ সাহেব তাকে বোঝাতে পারেন। তার আবেগে বেড়ি পড়াতে পারেন। আরে মরতে তো হবেই। মুজাহিদ যখন হয়েছি, শহীদ তো হবই। তা বলে ইঁদুর বিড়ালের মতো মরে যাব? মরলে, শত্রুর গণ্ডা গণ্ডা ক্ষতি করেই মরব। এক ক্ষতিতেই যেন তাদের একটা ভিত ভেঙে পড়ে। পাছার কাপড় উদেম হয়ে যায়। বাপ বাপ করে রোহিঙ্গাদের পেছনে লাগা ছাড়ে। রোহিঙ্গাদের গায়ে একবার হাত দিতে যেন দুবার ভাবে। আমি তো অন্য পাঁচটা দশটা সাধারণ মানুষের মরা মরতে চাই না। আমি মরতে চাই, নাফরমানিদের ওপর আল্লাহর গজবের মতো করে। আমার মৃত্যু যেন কাফের মিয়ানমার সরকারের ওপর আল্লাহর গজব হয়ে নামে। মুনাফেক মিয়ানমার সেনাদের যেন কোনো চিহ্ন আর এই দুনিয়াই না টিকে থাকে।
“তুই থামবি?” ধমকাল আতিফ।
“থামব কেন? কেন থামব?” ফোঁস করে উঠল নবী।
“ও তো ঠিকই বলছে, আতিফ। আমাদের একটা মৃত্যু মানে, পোকামাকড়ের মৃত্যু নয়? আমাদের মৃত্যু হলো দ্বীনের জন্যে শহীদ। আল্লাহর হুকুমের গজবও বলতে পার। মৃত্যুটা যেন সেরকম হয়, যে মৃত্যু স্বপ্নকে বাস্তব করে যাবে। যাদের জন্যে মৃত্যুকে ফুলের মালার মতো বরণ করে নেওয়া, তাদের জন্যে পায়ের তলার নিজের মাটি দিয়ে যাবে, একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ দিয়ে যাবে। একটা নিজের দেশ, নিজের মাযহাব।“ উঠে দাঁড়ালেন গাফফার খাঁ। জোব্বার পকেট থেকে একটা জর্দার ডিব্বা বার করে, আঙুলের চাপে চিপে কিছুটা জর্দা মুখে পুরে দিলেন। ফালি হলদে দাঁতগুলো কড়মড় করে উঠল। জানালার বাইরে মুখ বাড়িয়ে, থু করে যেই মুখের থুথুটা ফেললেন, অমনি ‘গ’ করে বেজে উঠল আন্ড্রেয়েড মুঠোফোনটা। আজানের রিংটোন সুর করে বাজছে।
“আসলামু ওয়া আলাইকুম, ভাইজান। কবে? কোথায়?” হাসি মুখটা আচানক বদলে গেল। ভ্রূ খাড়া হয়ে উঠল গাফফার খাঁ’র। কপালে দুশ্চিন্তার চওড়া ভাঁজ।
“কিন্তু………।“ আটকে গেলেন। কথাটা বলতে গিয়ে ওপারের কথার চাপে থেমে গেলেন খাঁ সাহেব। মিনিট খানেক চোখ থির করে কান খাড়া করে কথা শুনতে লাগলেন। খাঁ সাহেবকে এমন ভাব করতে দেখে, আতিফ নবীরাও পলক ফেলা বন্ধ করে দিয়েছে। আতিফ নবীর দিকে তাকিয়ে থির চোখ নড়াল। নবী চোখে চোখেই বলল, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। দু একবার ‘হ্যাঁ’ ‘হু’ দিয়ে টানা দুমিনিট পর খাঁ সাহেব চোখ পাকিয়ে উঠলেন, “এর বদলা আমরা নেবই নেব ইনশাল্লাহ।“ কথার সুর শুনে আতিফরা ভাবল, নিশ্চয় কোনো বিপদ ঘটেছে। বড়সড় কোনো আঘাত। ভারী চোখে দুজন দুজনের দিকে তাকাল। চোখের মণি বেয়ে একটু একটু করে নেমে আসছে আতঙ্কের ছায়া। শিরদাঁড়া দিয়ে নেমে যাচ্ছে একটা অজানা ভয়ের কালহা স্রোত।
“এটা কি শয়তান লুন সানের বাহিনী ঘটিয়েছে?” খ্যাড়খেড়ে গলাটা আরও একটু তেজ দিয়ে উঠল।“ এ কাজ যে ওই খবিশটার, তা বুঝতেই পেরেছি। নৌকাটা এখন কোথায়? সেটাকেও কি, পানিতে পুঁতে দিয়েছে?” এবার কয়েক মুহূর্ত ফোনের ওপারের কথা শোনার পর তিড়িংবিড়িং করে উঠলেন গাফফার খাঁ, “ওর গদ্দান না কাটা পর্যন্ত আমার দোম নেই।“ কানের লতি লাল হয়ে উঠছে খাঁ সাহেবের। পিলপিল করে কাঁপছে ঠোঁট। নৌকা! নৌকার ওপর আক্রমণ! হাই আল্লাহ! আমাদের বাড়ির লোকজনও তো নৌকাতেই আছে! তবে কী তারাও… । মনের কথা মনের খাঁজে আটকে গেল আতিফের। মন ঠেলে উঠে আসতে লাগল কষ্টের দলা। দলায় দলায় টক্কর ঠোক্কর লেগে গলে যেতে লাগল চোখ। ছলছল করে উঠল মণি। মুখে কোনো কথা নেই। থির পাথুরে মূর্তি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আতিফ। যেন রক্ত-মাংসের শরীর নয়, কষ্টের একটা আস্ত দলা। এক টোকাতেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়বে।
“এরকম হলে তো এবার থেকে আমাদের নাফ নদীতেই আস্তানা গাড়তে হবে। এখন যে নাফ নদী আর নদী নেই, রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী দেশ হয়ে উঠেছে। তুমি, ওখানেই ওত পেতে থাকো, আমি একটা টিম পাঠাচ্ছি। এর পাল্টা জবাব দিতেই হবে।“ রাগে ফোঁস ফোঁস করছেন গাফফার খাঁ। চোখকে বারুদের গোলা করে বলে উঠলেন, “যে লিঙ্গ দিয়ে এই পাপ কাজ করেছে শয়তানগুলো, সেই লিঙ্গগুলো না ছেড়া পর্যন্ত আমার নাওয়া খাওয়া বন্ধ। ওকে, খোদাহাফেজ।“
“কী হয়েছে হুজুর?“ খাঁ সাহেব যেই ফোনটা রেখেছেন, অমনি হুমড়ি খেয়ে পড়ল আতিফ। চোখেমুখে আতঙ্কের আবেশ।
“খবিশ বার্মা সেনারা একটা জঘন্য কাজ করেছে। ছি ! আস্তাগফেরুল্লা ! ওদের নাম বলতেও মুখে থুথু উঠছে।“ চোখ ফেড়ে কান খাড়া করে দাঁড়িয়ে থাকে আতিফ। যেন সে গাফফার খাঁ’র কথা শুধু শুনছে না, গিলছে। খাঁ সাহেব রাগে গদগদ করে বলতে থাকেন, “নাফ নদীর মোহনায় শাহপরীর দ্বীপের কাছে একটা নৌকা ভাসছিল। তাতে একটা পরিবারের মোট ছ-জন ছিলেন।“
ছ-জন! ভাইরাও তো সব মিলে ছ-জন! আব্বা, মা, বড়ভাই………। মনে মনে বাড়ির লোক সংখ্যা গুণতে থাকে আতিফ। খাঁ সাহেব বলতে থাকেন, “সেখানে অতর্কিতে আক্রমণ করে মায়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। লুন সানের দলবল। নৌকাটিতে দুজন মহিলাও ছিলেন।“ দুজন মহিলা! মা আর আরিফা ভাবি! অঙ্ক মিলে যাচ্ছে আতিফের।
“একজন মাঝবয়সী আর ………।“ নিশ্চয় আরেকজন বৃদ্ধা! চোখ কোটর ছেড়ে বেরিয়ে আসার উপক্রম হলো আতিফের। খাঁ সাহেব বলেই গেলেন, “আরেকজন, ন-বছরের বালিকা। শয়তান বার্মা সেনা, পুরুষগুলোকে নৌকার খুটিতে বেঁধে রেখে, তাদের সামনেই ওই ভদ্রমহিলা আর তার ন-বছরের নাবালিকা মেয়েকে……… উঃ, নাউজবিল্লাহ! ও কুকথা আর মুখে আনতে পারছি না।“ ‘তওবা’ পড়ে একটা জোরে নিশ্বাস ফেললেন গাফফার সাহেব। ন-বছরের নাবালিকা বালিকার কথা শুনেই আতিফও একটা জোরে স্বস্তির শ্বাস ফেলল, নাহ, এটা আব্বাদের নৌকা নয়। আমাদের বাড়িতে তো ওই বয়সের কোনো মেয়ে নেই। এটা অন্য কোনো নৌকা হবে। দুশ্চিন্তার জট-মেঘ এতক্ষণে একটু একটু করে কাটতে শুরু করেছে তার মুখ থেকে। একেবারে জমাট কালো ঘুটঘুটে মেঘ ফেড়ে যেমন অতিব কষ্টের সঙ্গে আঁকিবুঁকি পাকিয়ে বিদ্যুৎলতা ছিটকে বের হয়ে আসে, ঠিক তেমনি, মনে মনে একটু একটু করে মিলাতে থাকা অঙ্কটা শেষ পর্যন্ত আর না মেলাই, একটা চোরা হাসি ঠোঁটে ধেই করে নেচে উঠল আতিফের। পিটপিট করে পড়ল চোখের পলক। মনে মনে ভাবল, জীবনে কত রকমের অঙ্কই না আছে। কোনো অঙ্ক না মিললে, ‘গোল্লা’, আবার কোনো অঙ্ক না মিললে ‘ফুলমার্কস’! জীবনের সিঁড়ি ভাঙা অঙ্কগুলো কখন যে সিঁড়ি ভাঙে আর কখন যে সিঁড়ি গড়ে, তা সময়ই জানে। জানে জীবনের ঘড়ি।
“হুজুর আমরা কি যাব শাহপরীর দ্বীপ? আপনি হুকুম করুন, নরকের কীটদের গুলি মেরে ঝাঁঝরা করে দিয়ে আসি।“ উত্তেজিত হয়ে ওঠে নবী। “নাহ, ওখানে তোমরা যাবে না। জাবেরকে বলে দিচ্ছি, সেন্ট মার্টিনস দ্বীপ থেকে তিনজনের একটা আত্মঘাতী টিম পাঠাবে। জাবের ওখানকার এরিয়া কমান্ডার। বাঘের মতো সাহস। গিরগিটির মতো রঙ বদলে যেকোনো মানুষের সাথে হুট করে মিশতে পারে। ওখান থেকে জায়গাটা কাছেও হবে। ওরা সরাসরি নদী পথে বার্মাসেনার টহলদার নৌকা লক্ষ্য করে হামলা চালাবে। ইটের জবাব পাটকেলে।“ গাফফার খাঁ হামলার নীল-নকশা বুনলেন।
“ইটের জবাব পাটকেলে না বলে বলুন, গালির জবাব থাপ্পড়ে।“ বলল আতিফ।
“থাপ্পড়ের জবাব লাথিতে।“ দাঁত চিবিয়ে বলে উঠল নবী।
“লাথির জবাব মৃত্যুতে।“ জোরে জিকির তোলার মতো বলে উঠলেন গাফফার খাঁ। তারপর পরনের জুব্বাটা ঝেড়েঝুড়ে বললেন, “আতিফ তুমি আপাতত কায়রাপরীর টংকীর আনাগোনাটা নজরে রাখ। ওখানে যাদের লাগিয়ে রেখেছ, তাদের বার্তা পাঠাও, খুব সতর্কতার সঙ্গে যেন কাজ করে, যেকোন সময় এমএসএস-এর গুপ্তচরদের নজরে পড়ে যেতে পারে।“
“জী হুজুর।“ ঘাড় হেলাল আতিফ।
“আর নবী, তুমি বালুখালী চৌকির প্ল্যানটা আরও একবার ঝালিয়ে নাও। কোনো ফাঁকফোকর থেকে গেল কি না, দেখে নাও।“
“জী হুজুর।“ মাথা ঝাঁকাল নবী।
“সামনের সপ্তাহে কাঠমান্ডু থেকে ফিরেই, ‘স্মাইলিং ইব্রাহিম’ অপারেশনটা নিয়ে বসতে হবে। তার আগে আমি আই এস আই এর ইস্টার্ন কমান্ডারের সঙ্গে একবার বসে নিই। সেরকম হলে, তোমাদের সরাসরি কাঠমান্ডু থেকেই উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে রেঙ্গুন। সমস্ত দিকের জন্যই প্রস্তুত থেকো।“
“জী হুজুর।“ একসঙ্গে বলে উঠল নবী আতিফ। দুজনের কণ্ঠই হাড় ইস্পাত হয়ে উঠল। ‘আমিন’ বলে উঠলেন গাফফার খাঁ। গডগড করে বেরিয়ে গেলেন। সিঁড়ির নিচ পর্যন্ত এগিয়ে দিল আতিফ। সিঁড়ির উপরে দাঁড়িয়ে থাকল নবী। গাফফার খাঁ বেরিয়ে গেলে, সিঁড়ি দিয়ে থপথপ করে উপরে উঠতে উঠতে আতিফ গুনগুন করে বলে উঠল একটা উর্দু শায়েরির বাংলা অনুবাদ, “হৃদয়ের কাছে বুদ্ধির বাস ভালো কথা। কিন্তু মাঝে মাঝে হৃদয়ের ওপর থেকে বুদ্ধির শাসন তুলে দিতে হয়, হৃদয়কে স্বাধীন করে দিতে হয়, মুক্ত করে দিতে হয়। স্বাধীন মুক্ত হৃদয়ের ধর্মকে সবসময় বুদ্ধি দিয়ে বিচার করতে নেই।“
“আমাকে ঠেস মেরে এসব বলছিস?” সিঁড়ির উপর থেকে কথা ছুড়ল নবী।
“তোকে আর কী ঠেস মেরে বলব, নবী, তোর তো আর হৃদয় বলেই কিছু নেই। ঠুকে ঠুকে পাথরের চাঁই বানিয়ে ফেলেছিস। সে পাথরে আর পানি বের হয় না, শুধু আগুন বের হয়, আগুন। হিংসার আগুন, প্রতিহিংসার আগুন, বদলার আগুন, বদলের আগুন। সে আগুনের ভাপে তাপে তোর হৃদয় পাষাণ হয়ে গেছে।“
“সেসব কী আর সাধে হয়েছি, হতে বাধ্য হতে হয়েছে। আমার চোখের সামনে আমার মা’কে ওরা উলঙ্গ করে কুকুরের মতো ছিঁড়ে খেল, আমার পঙ্গু বাপটার দুই পা ফাঁক করে ধরে ফড়ফড় করে ফেঁড়ে ফেলল, রক্তে ভেসে গেলাম আমি, এক কলেজ ফেরত বালক। আমার মুখে একের পর এক পড়ল বুটের লাথি। আমি অজ্ঞান হয়ে গেলাম। ভাগ্যিস আমি অজ্ঞান হয়ে গেছিলাম। ওরা ভেবেছিল, আমি মরে গেছি। আমার এক পা আর এক হাত ধরে টেনে নদীতে ফেলে দিয়েছিল। ভাগ্যিস একটা নৌকার খোলে গিয়ে পড়েছিলাম। পানিতে পড়লে এজন্মের ইতি ওখানেই হয়ে যেত। তারপর যখন কুতুপালং ক্যাম্পে আমার জ্ঞান ফিরল, তখন আমার শরীর থেকে চারপোয়ার মধ্যে তিনপোয়া রক্তই পড়ে গেছিল! যখন পেছনের রাতের সব ঘটনা মনে পড়ল, তখন হাউমাউ করে উঠলাম, আল্লাহকে বললাম, এই একপোয়া রক্ত আর কেনই বা শরীরে রেখেছ? তখন মনে হচ্ছিল, এই বাকি রক্তটুকু আমি নিজেই শুষে শুষে খেয়ে নিই। যে কুতুপালংগামী নৌকার লোকেরা আমাকে নৌকার খোল থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে বাঁচিয়ে ছিল, তাদের যাচ্ছেতাই গালমন্দ করেছিলাম, কেন আমাকে বাঁচিয়েছেন? আমার তো সবই শেষ হয়ে গেছে। বাপ গেছে, মা গেছে, দেশও গেছে, আর কী নিয়ে বাঁচব? ওরা কোনো উত্তর দিতে পারেনি, শুধু ডুকরে কেঁদেছিলেন। সেসময় কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে দেখেছিলাম, শুধু চোখের পানি আর চোখের পানি! কান্না ছাড়া যেন কোনো ভাষা নেই। যেন একটা কান্নার দ্বীপ। সেদিন বুঝেছিলাম, চোখের পানি এই চোখের পানির সমাধান নয়, কান্না এই কান্নার সমাধান নয়, এর সমাধান আগুন, এর সমাধান গোলা, এর সমাধান বারুদ। আমাকে আগুন হতে হবে। আমাকে গোলা হতে হবে। আমাকে হতে হবে বারুদ। গুলি আর ধ্বংসের ইবলিশ।“ চোখ ছলছল করে ওঠে নবীর। আতিফ, নবীর কপালের কাটা দাগটা খুঁটে দেখে, এই সেই দাগ, বার্মা সেনারা যখন তাকে ছুড়ে নৌকার খোলে ফেলে দিয়েছিল, তখন একটা কাঠের টুকরো এখানে ফুঁড়ে ঢুকে গেছিল! আতিফ জানে, এই দাগের কথা মনে পড়লেই, নবী ছ্যান করে ওঠে। তার গা হাত পা রাগে কটমট করে। এমন করে তিড়বিড় করে ওঠে, যেন তার হাতে ক্ষমতার রিমোট থাকলে, বোতামের এক টিপনেই ধুলিস্যাৎ করে দেবে সমস্ত বার্মা সেনাছাউনি।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

এসএন 

Header Ad
Header Ad

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, আগামীকাল সৌদিতে ঈদ

ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। এর ফলে দেশটিতে ১৪৪৬ হিজরি সনের রমজান মাস ২৯ দিনে সম্পন্ন হচ্ছে এবং আগামীকাল (রবিবার) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে।

সৌদিতে চাঁদ দেখার বিষয়টি ইনসাইট দ্য হারামাইন ফেসবুক পেজের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে। ইসলামিক বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী, রমজান নবম মাস এবং শাওয়াল দশম মাস। সাধারণত শাওয়াল মাসের প্রথম দিন মুসলিম উম্মাহ ঈদুল ফিতর উদযাপন করে।

এদিকে, বাংলাদেশেও আগামীকাল (রবিবার) শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা নিয়ে আলোচনা করতে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা আহ্বান করা হয়েছে। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর বায়তুল মোকাররম ইসলামিক ফাউন্ডেশন সভাকক্ষে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত থাকবেন।

বাংলাদেশে ঈদুল ফিতর কবে উদযাপিত হবে, তা জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সিদ্ধান্তের পর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে।

Header Ad
Header Ad

ভারত-পাকিস্তানে ঈদের তারিখ ঘোষণার পর বাংলাদেশের বিষয়ে যা জানা গেল

ছবি: সংগৃহীত

ভারত ও পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছে যে, দেশ দুটিতে আগামী ৩১ মার্চ (সোমবার) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। এর ফলে বাংলাদেশেও একই দিনে ঈদ উদযাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামীকাল (রোববার) খালি চোখে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে হিসেবে ভারতে এবারের রমজান ২৯ দিনে সম্পন্ন হবে এবং সোমবার ঈদ উদযাপন করা হবে। একইভাবে পাকিস্তানেও ২৯ রোজা পালনের পর সোমবার ঈদ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের চাঁদ দেখা কমিটি যথাসময়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানাবে। তবে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশ একই চাঁদ দেখার অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায়, বাংলাদেশের ঈদুল ফিতরও ৩১ মার্চ সোমবার উদযাপিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ব্রুনাইও ৩১ মার্চ সোমবার ঈদ উদযাপনের ঘোষণা দেয়। সবার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের তারিখ ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া, যেখানে একই দিনে ঈদ উদযাপিত হবে।

বাংলাদেশে রমজানের চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে ঈদের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করা হবে। চাঁদ দেখা গেলে সরকারিভাবে তা ঘোষণা করা হবে এবং তার পরই দেশব্যাপী ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত হবে।

Header Ad
Header Ad

দুপচাঁচিয়ায় শহীদ যুবদল নেতার পরিবারকে তারেক রহমানের ঈদ উপহার

ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় যুবদল নেতা আবু রায়হান রাহিমের পরিবারকে ঈদ উপহার প্রদান করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রাহিম গত বছরের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় ৪ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে শহীদ নেতার পরিবারের কাছে এই উপহার তুলে দেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও শহর বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট হামিদুল হক চৌধুরী হিরু। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির যুগ্ম পরিচালক ড. আব্দুল মজিদ, দুপচাঁচিয়া থানা বিএনপির সভাপতি একেএম মনিরুল ইসলাম খান স্বপন, কাহালু উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন আজাদ।

এছাড়া, দুপচাঁচিয়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান তুহিন, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন, কাহালু উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম উদ্দিন, পৌর বিএনপির সহসভাপতি এ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আফছার আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সবুর খন্দকার রাকিবসহ যুবদল ও বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

উপস্থিত নেতারা শহীদ আবু রায়হান রাহিমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার পরিবারের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন, বিএনপি তাদের কখনো ভুলবে না। ঈদ উপলক্ষে তারেক রহমানের এই উপহার শহীদ পরিবারের প্রতি দলের ভালোবাসা ও সংহতির বহিঃপ্রকাশ।

উল্লেখ্য, বিএনপির পক্ষ থেকে আন্দোলন-সংগ্রামে শহীদ ও আহত নেতাকর্মীদের পরিবারকে সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। দলীয় নেতারা জানান, ভবিষ্যতেও এই ধরনের সহায়তা ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, আগামীকাল সৌদিতে ঈদ
ভারত-পাকিস্তানে ঈদের তারিখ ঘোষণার পর বাংলাদেশের বিষয়ে যা জানা গেল
দুপচাঁচিয়ায় শহীদ যুবদল নেতার পরিবারকে তারেক রহমানের ঈদ উপহার
ভারত, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় ঈদের তারিখ ঘোষণা
সৌদি আরব ঈদের তারিখ ঘোষণা করবে রাত ৯টার পর
রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দিলেন মির্জা ফখরুল
কারাবন্দিদের জন্য ঈদের বিশেষ আয়োজনে থাকছে ভালো খাবার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
চীনের সঙ্গে চট্টগ্রামের সরাসরি ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ
পদ্মা সেতুতে এক দিনে সোয়া ৪ কোটি টাকা টোল আদায়
ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড দখল পরিকল্পনা নিয়ে পুতিনের সতর্কবার্তা
অস্ট্রেলিয়ায় ঈদ আগামী ৩১ মার্চ  
বাংলাদেশেও বড় ভূমিকম্পের শঙ্কা, ফায়ার সার্ভিসের বিশেষ সতর্কবার্তা
মেট্রোরেলে নেই চিরচেনা ভিড়, বন্ধ থাকবে ঈদের দিন
নাটোর ডিসি বাংলোর বাঁশবাগান থেকে শতাধিক সিলমারা ব্যালট উদ্ধার
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করবে: প্রধান উপদেষ্টা
ঈদে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে কাজ করছে পুলিশ-বিজিবি-আনসার : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
তাপপ্রবাহে পুড়ছে ৪০ জেলা
ঈদের তারিখ ঠিক করতে কাল সন্ধ্যায় বসছে চাঁদ দেখা কমিটি
ইংল্যান্ডে ফিরেই হামজা জাদু, শীর্ষে তুললেন শেফিল্ডকে
এবার ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদের নানি বললেন ‘আগে গোপনে মারতাম এখন ওপেনে মারব’