শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১১

নেই দেশের নাগরিক

“তোমরা শুনলে অবাক হবে, আল্লাহ মুজাহিদকে কত বড় সম্মান দিয়েছেন! মুজাহিদ মৃত্যুবরণ করার সাথে সাথেই জান্নাতের নেয়ামত ভোগ করতে থাকেন! সুরা বাকারা-আয়াত ১৫৩-তে উল্লেখ আছে, কোরআন বলছে, ‘আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বল না। বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝ না।‘ অন্য একটি আয়াত, সূরা নিসা, আয়াত-৭৪ এ লেখা রয়েছে, ‘যারা আল্লাহর রাহে লড়াই করে এবং অতঃপর মৃত্যুবরণ করে কিংবা বিজয় অর্জন করে, আমি তাদের মহাপুণ্য দান করব।‘ সুতরাং তোমরা আল্লাহকে শুকরিয়া আদায় কর যে, তোমরা মুজাহিদ হতে পেরেছ। জিহাদকে মনের মধ্যে আঁকড়ে নিয়েছ।“ গড়গড় করে বলে গেলেন গাফফার খাঁ।
তাঁর বলার ভঙ্গিমা আর সুর শুনে মনেই হচ্ছে, তিনি জালসা-মজলিসে ভালোই বক্তৃতা করেন। ফতোয়া দেন। হাদিস-কোরআনের মসলা ব্যাখা করেন। প্রায় পৌনে ছ-ফুট লম্বা গাফফার খাঁ আদতে বাংলাদেশের সিলেটের বাসিন্দা। প্রথম দিকে ‘হুজি’র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেখান থেকে পাঠ গুটিয়ে আইএস-এ ঢুকে পড়া। এখানে টাকাও বেশি, আবার কাজ করার ক্ষেত্রও বড়। মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে তাঁর নিবিড় যোগাযোগ। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার মধ্যপ্রাচ্য ঘুরে এসেছেন। স্বচক্ষে দেখেছেন, আই এস-এর কার্যকলাপ। আর একটু একটু করে নিজেকে আইএস-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করে নিয়েছেন। আইএস-এর স্বপ্নকে তার নিজের স্বপ্ন মনে হয়েছে। আফ্রিকা-এশিয়া-ইউরোপ জুড়ে স্বপ্নের ‘ইসলামিক স্টেট’ বানানো। শরিয়তি আইন প্রতিষ্ঠা করা। এসব ভাবলে, গর্বে তাঁর বুক ফুলে ওঠে।
আতিফ খেয়াল করল, গাফফার খাঁ যখন কোরআন-হাদিসের আয়াত সুর করে তেলাওয়াত করছেন, তখন তাঁর চোখমুখ আসমানি হয়ে উঠছে, ইহকালের কোনো কিছুর সঙ্গেই তাঁর সম্পর্ক নেই, যেন আসমান, নূর, ওহি, ফেরেশতা, জান্নাত তাঁর চোখে এসে ভর করছে! গাফফার খাঁ ধ্যানের মতো আউলিয়ে যাচ্ছেন। আতিফের মনে পড়ছে, তার মা হালেমাও যখন মাথায় ঘোমটা দিয়ে রেহেলে কোরআন রেখে, এভাবে তার চোখের সামনে সুর করে কোরআন তেলাওয়াত করতেন, তখন তিনিও কেমন একটা ঘোরে ডুবে যেতেন। মাকে জিজ্ঞেস করলে, মা বলতেন, একেই তো বলে, ফেরেশতা ভর করা। ঈমান শক্ত হলে, এমনটা হয়।‘
“একটা জিনিস মনে রেখো, আল্লাহর এবাদত করার জন্যেই আমাদের জন্ম হয়েছে। আল্লাহর দ্বীনকে মজবুত করে যাওয়ার জন্যেই, আমাদের এই পথে আসা। একটা আলাদা দেশ, যেখানে আল্লাহর শাসন কায়েম হবে, আল্লাহর কোরআন আর নবী রসুলের হাদিস অনুযায়ী শাসন পরিচালিত হবে, এ কী চাট্টেখানি নেকির কাজ! আলহামদুলিল্লাহ!” ভক্তিভরে আল্লাহর নাম নিলেন গাফফার খাঁ। জেহাদই হোক আর নিজে মুজাহিদই হই, ওসবের জন্যে তো আর আমি এপথে আসিনি। আমি এসেছি, আমার একটা নিজস্ব দেশ পাওয়ার জন্যে। আমার মতো ভিটেমাটি ছাড়া কোটি কোটি রোহিঙ্গাদের এই পৃথিবী নামক গ্রহে একটা দেশ পাওয়ার জন্যে। একটা মানুষের কোনো দেশ থাকবে না? সাড়ে তিন হাত মাটি থাকবে না? যে শিশু এক রোহিঙ্গা মায়ের পেটে বড় হচ্ছে, তার জন্যে একটা দেশ। যে মা তার সন্তানকে দশ মাস দশ দিন পেটে ধরে, এই পৃথিবীকে একটা মানুষ উপহার দিচ্ছেন, সে মায়ের জন্যে একটা দেশ। আমি সেই দেশ পাওয়ার জন্যেই লড়তে এসেছি। জীবনকে বাজি রেখেছি। জান্নাত-বেহেশত, হুরী, নেকি, নূর এসবের জন্যে আমি মুজাহিদ হইনি। আমি মুজাহিদ হয়েছি, সেই পিতার মৃতদেহ দাফনের সাড়ে তিন হাত মাটির জন্যে, যিনি আমাকে জন্ম দিয়েছেন। আমি শহীদ হতে চাই, সেই মায়ের জন্যে, যিনি বুক ফুলিয়ে বলতে পারবেন, আমি যেমন তোকে পেটে ধরেছি, তেমনি দেশও দিতে পেরেছি। মনকে মন দিয়ে খুঁটতে থাকে আতিফ। নিজের আকাশে নিজেই ওড়ায় ঘুড়ি। কাঁধ থেকে এ কে ফরটিসেভেন রাইফেলটা টেবিলের ওপর আলতো করে নামিয়ে রাখল। কাঁধটা অনেকটা হাল্কা হলো। বন্দুকের ভারে কাত হয়ে গেছিল। কোমর ভাঁজ করে পাশের কাঠের চেয়ারটায় ঠেসে বসল। মাথা থেকে জলপাই রঙের উর্দি টুপিটা খুলে রাখল লম্বা টুলটায়। কপালের ছোপ ঘামে লেপ্টে আছে সামনের চুলগুলো। ঘাড়ের কাছে সন সন করে বইছে ব্যাটারিচালিত টেবিল ফ্যান। ফ্যানের উড়ো হাওয়াতে তার চেপে বসে থাকা চুলগুলো ফিনফিন করে উড়তে লাগল। কাঠের দোতলা কুঠুরি ঘর। নিচের তলা ফাঁকা। কাঠের থাম-খুঁটি। তক্তার সিঁড়িটা সাপের মতো এঁকেবেঁকে ওপরে উঠে গেছে। দক্ষিণ দিকে হাট করে খোলা সেগুন কাঠের জানালা। জানালার তক্তাগুলো দুপাশে সমান করে গোটানো। ঝিরঝির করে ঢুকছে বরফ মাখা বাতাস। জানালার ভিউ দিয়ে দেখা যাচ্ছে, চট্টগ্রামের আকাশ। নীল মাখা আকাশের গায়ে ইতস্তত সাদা মেঘের উড়ুঝুড়ু। কে যেন একমুঠো শিমুল তুলো ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে। চায়ের ট্রেটা ‘ঠক’ করে চেয়ারের সামনের ডাইনিং টেবিলটায় রাখল নবী। লাল চা। গোলমুখো চিনামাটির দুটো সাদা আর একটা অ্যাশ কালারের কাপ। কাপগুলোর গায়ে একটা করে পদ্মকলি আঁকা। হাতলগুলো সরু করে প্যাঁচানো। কাপগুলোর মুখ থেকে গরম চায়ের সাদা ভাপ কুণ্ডলি পাকিয়ে উড়ছে। একটা প্লেটে গোটা ছয়েক ক্রিমকেকার বিস্কুট। নবী ট্রেটা রেখেই বলল, “হুজুর চা”।
“চিনি ছাড়া কোনটা?” জিজ্ঞেস করলেন গাফফার খাঁ।
“অ্যাশ কালারেরটা হুজুর।“ বলল নবী। কাপটা হাতে তুলে নিয়েই গাফফার খাঁ বললেন, “পরের সপ্তাহেই তোমাদের নেপাল যেতে হবে।“
“জি, হুজুর।“ ঘাড় নড়াল আতিফ।
“সেখানে আমাদের লোকজন থাকবে। তোমরা কাঠমান্ডু পৌঁছলেই, আমাদের লোকজন তোমাদের নিয়ে যাবে। কোনো অসুবিধা হবে না।“
“আমাদের কি আর সিরিয়া যাওয়ার দরকার আছে?” জানতে চায়ল আতিফ।
“নাহ, আপাতত নেই। তবে প্রয়োজন পড়লে যেতে হতেও পারে। এ সপ্তাহেই সিরিয়া থেকে একটা টিম এখানে আসবে।“ তারপর হুট করে গাফফার খাঁ বললেন, “কায়রাপরীর টংকীর কী খবর আতিফ?”
“আপনি যা ভেবেছিলেন তাই।“
“আমি তো আর এমনি এমনি ভাবিনি আতিফ, গোপন সূত্র থেকে খবরটা এসেছিল। ওখানেও আমাদের লোকজন লাগানো রয়েছে।“
“আমারও সন্দেহটা ছিল, এত বড় হত্যাযজ্ঞের পেছনে, নিশ্চয় বড় কোনো শক্তির হাত রয়েছে।“
“সবই ধর্ম, বুঝলে? জাতে জাতে টান।“
“আমি তো অবাক! পুরো ছড়িটাই ঘোরাচ্ছে ওরা!“
“শুধু কী তাই? অস্ত্র সরবরাহ, সেনাপ্রশিক্ষণ, টাকা জোগান সবই করছে ওরা।“
“ওদের আসল উদ্দেশ্যটা কী বলে আপনি মনে করেন।“
“দখল। উপনিবেশও বলতে পার। ছলে বলে কৌশলে পুরো দেশটাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া। দেখছ না, তিব্বতটা কীভাবে ক্যাপচার করে নিল।“
“এতে তো মায়ানমারের নিজস্ব সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যাবে! ওরা তো ওদের সংস্কৃতি জোর করে চাপিয়ে দেবে!”
“সে তো দেবেই। আলবাত দেবে। এভাবেই তো ওরা পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াটা নিজের অধীনে আনার চেষ্টা করছে।“
“আমার মনে হয়, ওদের আসল টার্গেট, ভারতকে তাবে রাখা।“
“একদম ঠিক। ওই জন্যেই ওরা ইন্ডিয়ার চারধারে সেনা ক্যাম্প গড়ে তুলছে। ইন্ডিয়ার শত্রু দেশগুলোর সঙ্গে দোস্তি বানাচ্ছে। ওইসব দেশগুলোকে নানাভাবে সহযোগিতা করছে। আর এই পরিকল্পনারই একটা পার্ট হলো, মায়ানমারকে কব্জায় রাখা। নিজেদের ইচ্ছের সরকার বসানো। যে তাদের বশে থাকবে। দেখো, ভৌগলিক কারণেই, ইন্ডিয়াকে তাবে রাখতে হলে, মায়ানমারকে চাই। মায়ানমার নিজেদের কব্জায় থাকলে, খুব সহজেই ইন্ডিয়াকে আক্রমণ করা যাবে। আক্রমণের বেসক্যাম্প বানানো যাবে। অস্ত্র এনে মজুদ করে রাখা যাবে।“
“আচ্ছা, ইন্ডিয়াকে চীনের অত হিংসা কেন? আমরা তো একসময় শুনেছি, ‘ইন্দো-চীনি ভাই ভাই’। তাহলে চীনের এই পুরো একশ আশি ডিগ্রি ঘুরে, ডিগবাজি মারা কেন?”
“দেখো, আতিফ, এ তো সহজ অঙ্ক। অর্থনীতি, বুঝলে অর্থনীতি। চীন জানে, বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে, ইন্ডিয়াকে বশে রাখতে হবে, কোনভাবেই ইন্ডিয়াকে উঠতে দেওয়া যাবে না। চতুর চীনারা জানে, ইন্ডিয়ার অর্থনীতি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে চীনকে টেক্কা দিতে পারে। সুতরাং এখন থেকেই চারধার ঘিরে ফোঁসফাঁস কর। আরে এখন তো আর জমির জন্যে বিশ্বযুদ্ধ হবে না, বিশ্বযুদ্ধ হবে অর্থনীতির জন্যে। যে যত অর্থনীতিতে বলিয়ান সে তত বিশ্বের দাদা। বিশ্বের নিয়ন্ত্রক।“
“আমার তো মনে হচ্ছে, মায়ানমারের জান্তা সরকার যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে মায়ানমার চীনের একটা অঙ্গরাজ্য না হয়ে যায়!” আশঙ্কা প্রকাশ করল নবী।
“সেদিকেই তো এগোচ্ছে। একদম ঠিক ধরেছ। তারা প্রথমে মায়ানমার সেনা দিয়ে দেশ থেকে সমস্ত মুসলমান মাযহাবকে বিতাড়িত করে একটা বুদ্ধিস্ট উপনিবেশ বানাবে, তারপর আরও কিছু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছোটখাট দেশকে গিলে, একটা পূর্ণাঙ্গ বৌদ্ধস্টেট। এককথায় ‘মহাচীন’ বানাবে।“ চায়ের শেষ চুমুকটা দিলেন গাফফার খাঁ। সুড়ুৎ করে টান মেরে বললেন, “চীনের গুপ্তচর সংস্থা এমএসএস অর্থাৎ মিনিস্ট্রি অব স্টেট সিকিউরিটি, যা চীনের নিজস্ব ভাষায় ‘গওজিয়া অ্যাংকেন বু’, দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা। এরা গুপ্তহত্যা আর কাউন্টার টেররিজম এ সিদ্ধ হস্ত। গোটা মায়ানমার জুড়ে এরা বহুত নিজস্ব লোক সংগ্রহ আর নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। এদের থেকে খুউব সাবধানে থাকতে হবে। এদের ভোল বোঝা খুবই মুশকিল। বিশেষ করে রাখাইনে এরা মাকড়সার মতো জাল বিছিয়ে রেখেছে। মায়ানমার সেনা এদের অঙ্গুলিহেলনেই উঠবস করছে।“
“এখন তো যুদ্ধের গতিপ্রকৃতির ব্যাপক বদল এসেছে। সম্মুখ সমরে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ কমই হয়। এখন শুধু বুদ্ধির যুদ্ধ। টেকনলেজির যুদ্ধ। মাউসের যুদ্ধ।“ কপালের কাছে ঝুলে থাকা চুলটা সরালো আতিফ।
“চাণক্যর একটা কথা আছে, ‘যা বল প্রয়োগে অর্জন সম্ভব নয় তা ধোঁকা দিয়ে সিদ্ধ করা যায়, বিষাক্ত গোখরো সাপও কাক আর সোনার হারের ফাঁদে পরাজিত হয়।’ সুতরাং যেখানে সোজা আঙ্গুলেই ঘি উঠে যাবে, সেখানে খামোখা আঙুল বাঁকাতে যাবে কেন? শুধু টোপ ফেলে রাখো, শিকার ঠিক আসবেই।“ চায়ের কাপটা টি-টেবিলে আলতো করে রাখলেন গাফফার খাঁ।
“হুজুর, একটা কথা ছিল।“ মাথা চুলকোয় আতিফ।
“কী কথা, আতিফ, বলে ফেলো, মাগরিবের সময় হয়ে এলো।“ দেওয়ালে টাঙ্গানো নকশাটানা ঢাউস ঘড়িটার দিকে চোখ ফেললেন গাফফার খাঁ।
“কায়রাপরীর টংকীর অপারেশনটা আমি নিজে হাতে করতে চাই।“ চোখ লাল করে উঠল আতিফ। তার বুকের সিনা ফুলে উঠল।
“অত উতলা হওয়ার এখনই কিছু হয়নি, আতিফ। এখনও ঢের সময় পড়ে। সামনে বহুত কাজ বাকি। তুমি আমাদের একটা অ্যাসেট। তুমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া ছেলে। টেকনলজিতে তোমার দক্ষ হাত। তোমাকে ব্রেনের যুদ্ধ করতে হবে আতিফ। ওই যে বলে না, যেখানে মাউসের ক্লিকেই কাজ ফিনিশ, সেখানে বারুদের কী প্রয়োজন। তোমার ব্রেন আমাদের এই জেহাদে একটা শক্তিশালী সম্বল। সেটা হেলাফেলায় এত দ্রুত আমরা হারাতে চাই না, আতিফ। একটা ক্ষুরধার ব্রেন হাজার বন্দুকের থেকেও শক্তিশালী। তুমি আমাদের ‘ব্রেনমিসাইল’, আতিফ।“

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

এসএন 

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা

ছবি: সংগৃহীত

অ্যন্টিগার পেস সহায়ক উইকেটে নতুন বলের বাড়তি সুবিধা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছিল বাংলাদেশ। দিনের প্রথম সেশনে দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সময় গড়াতেই বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় দুই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার মিকাইল লুইস ও আলিক অ্যাথানেজকে। জুটি গড়ে দুজনের ছুটতে থাকেন শতকের পথে। কিন্তু দুজনের কারও প্রত্যাশা পূরণ হতে দেয়নি বাংলাদেশ। দিনের শেষভাগে নার্ভাস নাইন্টিতে দুজনকে মাঠ ছাড়া করে প্রথম দিনের ইতি টানে বাংলাদেশ।

টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৫০ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিকে বৃষ্টি হানা দেয় ম্যাচে। বৃষ্টি থামার পর আলোক স্বল্পতায় ৮৪ ওভার হওয়ার পরই দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়াররা।

টস জিতে বোলিংয়ে নেমে মেডেন ওভারে শুরুটা ভালো করেন হাসান মাহমুদ। অন্যপ্রান্তে আরেক পেসার শরিফুল ইসলামও মেডেন ওভার নেন। উইকেটের দেখা না পেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার কার্লোস ব্রাথওয়েট ও লুইসকে বেশ কয়েকবার পরাস্ত করেন বাংলাদেশের দুই পেসার।

ইনিংসের অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আনা হয় তাসকিন আহমেদকে। এই পেসারই প্রথম ব্রেকথ্রু দেন দলকে। ১৪তম ওভারে তাসকিনের অফ স্টাম্পে পড়ে একটু ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ডিফেন্স করেছিলেন ব্রাথওয়েট। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানে পায়ে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেন। যদিও তৎক্ষণাৎ রিভিউ নেন ব্রাথওয়েট। তবে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়নি।

তিনে নেমে টিকতে পারেননি কেসি কার্টি। ডানহাতি ব্যাটারকেও ফিরিয়েছেন তাসকিন। উইকেটে আসার পর থেকেই তাড়াহুড়ো করছিলেন তিনি। তাসকিনের মিডল এবং লেগ স্টাম্পের লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করার চেষ্টায় লিডিং এজ হয়ে মিড অনে থাকা তাইজুল ইসলামকে ক্যাচ দিয়েছেন কার্টি।

২৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে পথ দেখান লুইস ও কেভম হজ। তবে হজ ২৫ রান করে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৫৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।

এরপর বাংলাদেশকে বেশ ভুগিয়েছে লুইস ও আথানজে জুটি। দুজনেই সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। তবে সম্ভাবনা জাগিয়েও কেউই মাইলফলক ছুঁতে পারেননি।

ইনিংসের ৭৫তম ওভারে মিরাজের বলে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে ভুল করেন লুইস। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় স্লিপে। ক্যাচ নিতে ভুল করেননি শাহাদাত হোসেন দিপু। নব্বইয়ের ঘরে ২৬ বল আটকে থেকে আউট হন লুইস। ফলে ভেঙে যায় ২২১ বলে ১৪০ রানের জুটি। ২১৮ বলে এক ছক্কা ও নয় চারে ৯৭ রান করেন এই ওপেনার।

এর কিছুক্ষণ পরই ফিরেছেন আথানজেও। তাইজুলের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি স্কুপের মতো খেলেছিলেন আথানজে। যদিও তেমন গতি না থাকায় তার ব্যাটে লেগে বল উপরে উঠে যায়। সহজ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক লিটন। দশটি চার ও একটি ছক্কায় ১৩০ বলে ৯০ রান আসে বাঁহাতি এই ব্যাটারের ব্যাটে। তিন রানের মধ্যে দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে লড়াইয়ে ফেরার সম্ভাবনা জাগায় বাংলাদেশ।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি