বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৮

নেই দেশের নাগরিক

“এই আরাকানে বহু বছর ধরে নানান ভাষা, নানান ধর্মের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করে আসছেন। একসময় সৌভ্রাতৃত্ব আর সম্প্রীতির পীঠস্থান ছিল এই আরাকান। পদ্মাবতী মহাকাব্যে মহাকবি আলাওল বলেছেন, ‘নানা দেশি নানা লোক শুনিয়া রোসাং ভোগ আইসন্ত নৃপ ছায়াতলে। আরবি, মিশরি, সামি, তুর্কি, হাবসি ও রুমি, খোরসানি, উজবেগি সব। লাহোরি, মুলতানি, সিন্ধি, কাশ্মিরি, দক্ষিণী, হিন্দি, কামরূপী আর বঙ্গদেশি। বহু শেখ, সৈয়দজাদা, মোগল, পাঠান যুদ্ধা, রাজপুত হিন্দু নানাজাতি।‘ এটাই ছিল আরাকানের ভিত। আজ বর্বররা এসে এসব ধারণাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে!” গড়গড় করে এক নিশ্বাসে টানা ঠুটস্থ বলে আফসোসও করলেন ইয়াসিন মাস্টার। ইতিহাসের পাঠ যে তার গুলে খাওয়া আছে তার কিছুটা আঁচ পেল নুহু মতিরা।

“আমাদের দংখালী থেকে তো আগে কত রোহিঙ্গা মন্ত্রীটন্ত্রী হয়েছেন, তাহলে আজ কেন আমরা ব্রাত্য?” প্রশ্ন করল মতি।
“শুধু কী মন্ত্রী, মিয়ানমারের স্বাধীনতা আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল রোহিঙ্গাদের। বার্মার জাতির পিতা আং সানের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক সহযোগী ছিলেন আব্দুল রাজ্জাক। রাজ্জাক তখন বার্মা মুসলিম লিগের সভাপতি ছিলেন। জেনারেল আং সানের গঠিত বার্মার স্বাধীনতা পূর্ববর্তী অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রীসভার শিক্ষা ও পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলেন রাজ্জাক। ১৯৪৭ সালের ১৯ জুলাই জেনারেল আং সানের সঙ্গে যে ছয়জন মন্ত্রী খুন হয়েছিলেন, তাদের অন্যতম ছিলেন রাজ্জাক।“
“এই ১৯ জুলাই-ই তো শহীদ দিবস হিসেবে পালিত হয়?”

“হ্যাঁ।“ মাথা হেলালেন ইয়াসিন মাস্টার। তারপর আরও আবেগী হয়ে বললেন, “শুধু কী তাই? ব্রিটিশ অধীনতার সময় বার্মার জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রভূমি ছিল রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়। সে সময় রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করত অল বার্মা স্টুডেন্ট ইউনিয়ন আর রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রছাত্রী সংসদ যাকে সংক্ষেপে বলা হতো আর ইউ এস ইউ। আর ইউ এস ইউ প্রতিষ্ঠার বছরই সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এম এ রাশিদ। ওই সময় আং সানের প্রধান রাজনৈতিক সহযোদ্ধা হয়ে ওঠেন এম এ রাশিদ আর উ নু। রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ে রাশিদ, আং সান ও উ নু ছিলেন তিন প্রাণের বন্ধু। এম এ রাশিদকে আং সান বলতেন ‘রাশিদভাই’।“
“শুনেছি, তিনি নাকি দেশের আইন লিখেছিলেন?”
“হ্যাঁ, তিনি একজন বিচক্ষণ পণ্ডিত ছিলেন। ১৯৪৭ সালে বার্মার সংবিধানের অন্যতম খসড়াকারী ছিলেন এই রাশিদ। পরবর্তীকালে তিনি দেশের শ্রমমন্ত্রী হয়েছিলেন। আং সান, উ নু, রাজ্জাক, রাশিদ প্রমুখের বন্ধুত্ব স্বাধীনতার ঊষালগ্নে বার্মায় ‘বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য’র যে সম্ভাবনা তৈরি করেছিল, তার ভিত্তিতেই ১৯৪৭-এর ফেব্রুয়ারিতে শান স্টেইটের পাংলংয়ে ঐতিহাসিক জাতি সম্মেলন আহুত হয়েছিল এবং সেখানে আং সান বলেছিলেন, ‘বার্মা হবে সব জাতির একটি ইউনিয়ন, যেখানে বর্মণরা এক কায়েত পেলে অন্যরাও এক কায়েত পাবে।’“

“সেসব আজ কোথায় গেল!”
“এই ইতিহাসকে সেনার বুলডোজারে পিষে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে।“
“আরে আমরাই তো সেদিন ভোট দিয়ে এমপি বানালাম। আমাদের বাপ-দাদারা সেই স্বাধীনতার পর থেকে ভোট দিয়ে আসছে, সেটা কোন জাতিসত্তার পরিচয়ে? এসব কী করে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে দেবেন?”
“১৯৪৮ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত সুলতান মাহমুদ, আবুল বাশার, আব্দুল গাফফার, জোহরা বেগম প্রমুখ আরাকানের মুসলিম প্রধান এলাকাগুলো থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে দেশের পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করেছেন বছরের পর বছর, মন্ত্রীও হয়েছেন, সেটা কী করে সম্ভব হলো? এঁরা যদি বহিরাগতই হবেন, এঁরা যদি এদেশের নাগরিক নাই-ই হবেন, তাহলে মন্ত্রী-এমপি হলেন কীভাবে?”
“নব্বইয়ের ভোটও তো আমরা দিলাম।“
“হ্যাঁ, সে ভোট তো আমিও দিয়েছি। সারা দুনিয়া জানে, ১৯৯০ এ যখন সামরিক বাহিনীর অধীনেই বার্মায় বহুদিন পর প্রথমবারের মতো বহুদলীয় নির্বাচন হলো, যে নির্বাচনে আং সান সু কি-র দল নির্বাচিত হয়েও সরকার গঠন করতে পারেনি, তখন বুথিডং-১ আসন থেকে শামসুল আনোয়ার, বুথিডং-২ থেকে মোহম্মদ নুর আহমেদ, মংডু-১ থেকে ইব্রাহিম, মংডু-২ থেকে ফজল আহমেদ প্রমুখ রোহিঙ্গারা কীভাবে উত্তর আরাকান থেকে পার্লামেন্টে নির্বাচিত হতে পারলেন? কীভাবে তখন আরাকানের রোহিঙ্গারা আটটি আসনে নিজস্ব রাজনৈতিক দল ‘ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস পার্টি’ থেকেই প্রার্থী হতে অনুমতি পেয়েছিলেন? আইন অনুযায়ী এই নির্বাচনে ‘বিদেশি’ ছাড়া সবাইকেই ভোট দিতে দেওয়া হয়েছিল। তাহলে বুথিডং আর মংডুর এই রোহিঙ্গারা কাদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন? নিশ্চয় আমাদের ভোটে। তাহলে আমরা কী করে হুট করে ভিনদেশি হয়ে গেলাম?”

চোখমুখ লাল হয়ে উঠল ইয়াসিন মাস্টারের। তিনি এমন করে খুঁটিয়ে ইতিহাস বলছেন, যেন দেশের শেকড় থেকে শেকড়ে তাদের জাতিসত্তার যে জড় পোঁতা রয়েছে, সেকথা এই আকাশ এই বাতাস এই নদীকে চিৎকার করে শোনাচ্ছেন। যেন বুক চিরে দেখাতে চাইছেন, হে দেশ এই দ্যাখো, আমরা তোমারই সন্তান, তোমারই বীজ। তবু কেন আমাদের গলাধাক্কা দিচ্ছ? জোড়া নৌকাদুটো ধিকধিক করে এগিয়ে চলেছে। ক্রমশ পাতলা হচ্ছে রাত। পুব আকাশ তোড়জোড় করছে, আবারও একটা নতুন দিন প্রসব করার জন্য। সে ইঙ্গিত পেয়েই দিগন্ত আনন্দে রঙ মাখার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে রাতের পোশাক খুলছে উথাল নদী।

“আচ্ছা, বলতে পারেন, ‘আরাকান’ নাম হুট করে বদলে দিয়ে ‘রাখাইন’ রাখা হলো কেন? ‘আরাকান’ নামটা তো ভালোই ছিল?” জানতে চাইল নুহু। ইয়াসিন মাস্টার এবার কণ্ঠ ভারী করে বললেন, “এসবই তো সত্য ইতিহাসকে কবর দেওয়ার চেষ্টা। যেন সত্যিকারের ইতিহাসের নামগন্ধ না থাকে। ১৯৮১ সালে আমাদের দেশের সামরিক শাসনকর্তারা এই নাম বদল করেন। এর পেছনে তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল, এটা বৌদ্ধ রাখাইন সম্প্রদায়ের দেশ, রোহিঙ্গা মুসলমানদের নয়। ছিঃ কী জঘন্য চক্রান্ত!”

নদীতে এখন মৃদুমন্দ স্রোত। সেরকম কোনো উথালপাথাল নেই। যেন নদীর মুখ ভার। রাগে অভিমানে মুক ও বধির হয়ে গেছে। ভোরের ঝুঝকি একটু একটু করে কাটছে। যেন গেঁড়ে বসে থাকা ঝুঝকি নতুন দিন কে আস্তে আস্তে কোল ছেড়ে দিচ্ছে। নতুনকে স্বাগত জানানোর জন্যে পুরাতনের গর্ভে লীন হয়ে যাচ্ছে। ইয়াসিন মাস্টার খাড়া হয়ে দাঁড়ালেন। ভারী পা টিপে টিপে নৌকার মাথার দিকে এগিয়ে গেলেন। একেবারে কাণায় গিয়ে থির হয়ে দাঁড়ালেন। পরনের হাফ হাতা নীলচে পাঞ্জাবিটা বাতাসে ফিনফিন করে উড়ছে।
পাতলা পাঞ্জাবিটার ভেতরে মৃত্যভয়ে শুকিয়ে যাওয়া চামড়াটা শরীরটা নড়বড়ে সরু বাঁশের খুঁটির মতো ল্যাকপ্যাক করছে। ঝুঝকি ফুঁড়ে তাকালেন। ফেলে আসা দেশ দেখা যাচ্ছে না। অনেক চেষ্টা করলেন, জন্মভিটের এক চিলতে মুখ দেখার, কিন্তু নাহ, বহুদূর চলে গেছে সে ভিটেমাটি! দৃষ্টির নাগালের বাইরে। ভেতরটা ফুঁপিয়ে উঠল ইয়াসিন মাস্টারের, আমার সাধের জন্মভিটে এভাবেই পর হয়ে গেল! আর কী কোনোদিনও সেখানে আমাদের শিশুরা কিতকিত খেলবে না! আর কী কোনোদিনও ফাতাংজার হাটে লুইংভাইয়ের চায়ের দোকানে বসে সিগারেট ফুঁকব না! খ মিং আমাদের বাড়িতে পাটা খুঁটতে শীলখুঁটনি নিয়ে আসবে না! আমাদের ধানিজমিটা চুঁইয়ে উ খন দের ভুঁইয়ে নামবে না বাতালের জল! তবে কী পাঠ্যবইয়ে পড়া কথাটা আজ মিথ্যে, এক আকাশ হবে সব মানুষের ছাদ। মানুষমাত্রই পৃথিবীর সন্তান! হে পৃথিবী, বলো, আমাদের জন্যে কী তোমার এতটুকুও কোল ফাঁকা নেই? চোখ ভিজে আসে ইয়াসিন মাস্টারের।

“ও গো, এদিকে এসো, সাকিবের দাদো কেমন করছে!” ডুকরে উঠল আরিফা। বৈঠা রেখে খড়মড় করে বাঁশের মাঁচার ওপর দিয়ে ছুটে এল নুহু। মতিও ধড়ফড় করে দৌড়ে এল। পেছন থেকে ইয়াসিন মাস্টার জিজ্ঞেস করলেন, “কী হলো?”
“আমার আব্বা মরণাপন্ন! যায় যায় অবস্থা!” ভারী কণ্ঠে জানাল মতি। আরিফা আর হালেমা জাফর আলিকে ধরাধরি করে ছইয়ের ভেতর থেকে কিছুটা সরিয়ে এনে নৌকার কানার কাছে শুইয়ে, মাথায় জল ঢালছে। জ্ঞান নেই। মতি হাতের কব্জি ধরে হৃদস্পন্দন মাপল। নাকের কাছে আঙুল নিয়ে গিয়ে আঁচ করল শ্বাস-প্রশ্বাসের আনাগোনা।
“কী বুঝছ ভাই!” চোখ ছল ছল নুহুর।
“জ্ঞান কি আছে?” প্রশ্ন করলেন ইয়াসিন মাস্টার। তিনিও কথাটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে নৌকার খোল ডিঙিয়ে নুহুদের নৌকোয় চলে এসেছেন।
“ঠিক বুঝতে পারছি না। তবে ধুকধুক করছে মনে হচ্ছে!” মতির গলা খোনা হয়ে উঠল। “কই, দেখি, আমাকে দেখতে দিন”। পিঠ কুঁজো করে ঘাড় নিচু করলেন ইয়াসিন মাস্টার। ডান দিককার কানটা খাড়া করে জাফরের খোলা বুকে পেতে দিলেন। ইয়াসিন মাস্টারের চোখ ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠছে! কুঁচকে যাচ্ছে ভ্রূ! তার কায়দা দেখে, সকলে ‘থ’! কারও কোনো চোখের পাতা পড়ছে না। মুখে আঁচল পুরে, মিনমিন করে ফোঁপাচ্ছেন হালেমা। একটা মাছরাঙা ঝপাং করে একটা ছোট্ট মাছ ধরল। থির নদী আচমকা দুলে উঠল। “নাহ, জ্ঞান নেই। অজ্ঞান হয়ে গেছেন!” জাফরের বুকের সাদা চুলের ঝোপ থেকে কান তুলে আফসোস করলেন ইয়াসিন মাস্টার। “তবে জান এখনো যায়নি।” জিইয়ে রাখলেন ক্ষীণ আশা। তারপর ইয়াসিন মাস্টার শূন্য আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, “কী আর করা যাবে! আল্লাহকে ডাকুন। হেদায়েত দেওয়ার মালিক তো তিনিই।“
“তুমি আমাকে একলা ফেলে কেন চলে যাচ্ছ!” মুখের আঁচল আলগা হয়ে গেল হালেমার। হাউমাউ করে উঠলেন।
“মা, কেঁদে কী হবে, আল্লাহকে ডাক।“ বলেই মতি দুহাত তুলে মোনাজাত ধরল। তার দেখাদেখি বাকিরাও আল্লাহর কাছে হাত তুলল। শূন্য আকাশের নিচে এক চিলতে নৌকার ওপর দুহাত তুলে ঘরছাড়া কতকগুলি মানুষের কাতর আর্তি কি আরশের ওপর বসে থাকা আল্লাহ শুনতে পাচ্ছেন? বান্দার কাঁদনে তার কি হৃদয় কেঁদে উঠছে? তিনিও কি মানুষের এই কষ্টে দু ফোটা চোখের জল ফেলছেন? ডুকরে উঠল মতি, “হে আল্লাহ, তুমি আমাদের পানিতে আগুনে যেখানে ইচ্ছে মিশিয়ে দাও, কিন্তু আমাদের আব্বার জন্যে সাড়ে তিন হাত মাটি রেখ, আব্বার শেষ ইচ্ছে যেন আমরা পূরণ করতে পারি। যতক্ষণ না কোথাও কোনো মাটির খোঁজ পাচ্ছি, আমাদের আব্বাকে তুমি নিও না। তুমি রহম করো। এই ভিটেমাটিহীন নিঃস্ব বান্দাদের দোয়া তুমি কবুল কর।“
“আমিন।“ সমস্বরে বলে উঠলেন ইয়াসিন মাস্টার। হালেমা এবার গলা ছাড়লেন, “ও আল্লাহ গো!”
“হে আল্লাহ, আর কত জান নেবে? এত জান নিয়েও কি তোমার পেট ভরছে না?” ফুঁসে উঠল নুহু। চোখে এতটুকুও জল নেই। শক্ত কাঠ চোখজোড়াতে অভিমানের আস্ফালন। নুহু এই সাতচল্লিশ বছরের জীবনে ঢের মৃত্যু দেখেছে। চোখের সামনে দেখেছে, কীভাবে নরখাদক জল্লাদরা নেকড়ের মতো তার একমাত্র বেটাটাকে দলে পিষে মেরেছে! কীভাবে হিংস্র জানোয়ারের মতো তার বৌটাকে ধর্ষণ করে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেয়েছে! মৃত্যু নুহুর সয়ে গেছে। যন্ত্রণা ঘর বাঁধার জন্যে তার শরীরে আর এতটুকুও জায়গা ফাঁকা নেই। সব যেন বিষিয়ে বিষিয়ে ইট-কাঠ-পাথর হয়ে গেছে! রগ-রক্তহীন একটা খোল! এই খোলই এবার রাগে অভিমানে বেজে উঠল।
“তোমার আজরাইলের চোখ কি আর কাউকে দেখতে পায় না? ঘুরে ফিরে এই জাফর আলিকেই পায়? জাফরের জান কি এতই মিষ্টি? জাফরকে না নিলে কি তোমার জানে শকুন মিলছে না? নাও না, আমাকে নাও, বেটা, বৌ সবাইকেই তো নিয়ে নিয়েছ, আমাকে আর বাকি কেন?”
চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

এসএন 

 

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া