শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ | ২৭ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৭

স্নানের শব্দ

মাত্র এক সপ্তাহের বিরতি, কিন্তু শবনমের মনে হচ্ছে যেন বহু বহু দিন পর অফিসে ঢুকেছে সে। সব কিছইু কেমন যেন অচেনা, নতুন। অথচ দৃশ্যত সব একরকমই আছে, সেই তেঁতুল বিচি রঙের সেন্টার টেবিল, টেবিলের কাঁচের নিচে চাপা দেওয়া তারেক আর শবনমের সঙ্গে পাঁচ বছর বয়সী শ্রাবণের হাস্যোজ্জল ছবি, কালো রেক্সিনের রিভলভিং চেয়ার, ডেক্সটপ কম্পিউটর, সাইড টেবিলে কয়েকটা ফাইল, সৌখিন টবে রাখা মিনি ক্যাকটাস। জানালারও ওই পাশে রুগ্ন নিম গাছ। অফিস সহকারী প্রতিদিনের মতো টেবিলে পানির গ্লাস আর মগ ভর্তি কফি রেখে গেছে।

সিইওর সঙ্গে একবার সৌজন্য সাক্ষাতের কথা ভাবে শবনম। এটা দাপ্তরিক ভদ্রতা, আমি যে আবার পুরোদমে কাজে যোগ দিয়েছি ঊর্ধ্বতনকে সেই ম্যাসেজটা পৌঁছে দেওয়া। পাশাপাশি এ কদিন কাজকর্মের কি অগ্রগতি হলো, ম্যানেজমেন্টের গতি প্রকৃতি কোনদিকে কথাচ্ছলে সেটাও আন্দাজ করে নেওয়া যাবে। শবনম সিইওর পারসোনাল সেক্রেটারি রেশমিকে ফোন দেয়, বস রুমে আছে কি না জানতে।
‘না ম্যাম, স্যার তো রুমে নাই।’
‘ও। কোনো মিটিংয়ে গেছে নাকি?’
‘না, ম্যাম। আপনি শোনেন নাই? স্যারের একটা ঝামেলা হয়েছে..’
‘কি ঝামেলা? আমি তো কয়েক দিন ছুটিতে ছিলাম, জানি না, কি হয়েছে, বলো তো? উনার ফ্যামিলির কিছু?’
এবার রেশমি আমতা আমতা শুরু করে।
‘না, ঠিক ফ্যামিলির না, ওসমান স্যার হয়ত আপনাকে পরে জানাবে ম্যাডাম। আমি আসলে তত বেশি কিছু জানি না।’
মেয়েটার কণ্ঠে স্পষ্ট অস্বস্তির ছাপ। শবনম আর জোরাজুরি না করে ফোন ছেড়ে দেয়। মাত্র এই কদিনে কি এমন ঝামেলা হতে পারে যা এমনকি মেয়েটা মুখ ফুটে বলতেও চাইছে না। শবনম আন্দাজ করার চেষ্টা করে মনে মনে। কোনো আর্থিক দুর্নীতি? ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে মতবিরোধ? কি হতে পারে? নিজে থেকে কেউ না জানালে এই পজিশনে অযাচিত কৌতুহল দেখানো তাকে মানায় না।
অফিসে কেমন একটা থম ধরা, রাখরাখ ঢাকঢাক পরিবেশ। শবনমের অস্বস্তি হয়, আর সেই অস্বস্তি নিয়েই নিচের ফ্লোরে অ্যাকাউন্টস চিফের কক্ষে উঁকি দেয় শবনম। চিফ অ্যাকাউন্টেন্ট আতিয়ার নোয়াখালীর মানুষ। আঞ্চলিক ভাষাতে কথা বলেন স্বাচ্ছন্দ্যেই। শবনমের শাশুড়ির মৃত্যুতে আন্তরিকভাবে সৌজন্যসূচক শোকপ্রকাশ শেষে তিনিই খবরটা দিলেন।
‘আঁই তো এই যুগের ব্যাপার-সেপার বিশেষ বুঝি ন’। কি এক মিটু বলে আইছে দ্যাশে, ওই একটা ট্রেইনি এক্সিকিউটিভ নাফিসা তানজিনা.. না কি জানি নাম, চিনিও না ঠিকমতো, কি এক মিটু লেইখছে... সিওরে লই.. উতাল পাথাল পড়ি গেছে এক্কেবারে ..এমডি হেতিরে কইছে কিছুদিন অফিসে না আইত বইলা ..’
ও, ঘটনা তাহলে এই?
এই ভবের অফিসে প্রতিদিন কত নতুন নতুন ছেলে মেয়েই তো সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো আসে যায়, সবার কথা মনে থাকে না কিন্তু নাফিসা তানজিনার কথা স্পষ্ট মনে আছে শবনমের।
প্রচলিত অর্থে হয়ত তাকে সেরকম আহামরি সুন্দরী বলা যাবে না, কিন্তু তার সমস্ত উপস্থিতির মধ্যে একটা সহজ সুন্দর সরল লাবণ্য হীরক খণ্ডের মত ঝিকমিকিয়ে উঠত। মাথাভর্তি জলপ্রপাতের মতো কোঁকড়ানো এলোমেলো চুল ছিল মেয়েটার, চেহারা চালচলন আর পোষাক-আশাকে মনে হতো বিদেশি, বাঙালি নয়। কথায় কথায় একদিন শবনম জেনেছিল, ওর জন্ম ওমানে, বাবা-মার সঙ্গে ছোটবেলাটা ওখানেই কেটেছে, কিশোরী বেলায় ছিল কাতারে পরে দেশ এসে প্রাইভেট কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে। কোম্পানির এইচ আর ডিপার্টমেন্টে ট্রেইনি এক্সকিউটিভ হিসেবে জয়েন করছিল নাফিসা। এই জুনিয়র এক্সিকিউটিভদের সঙ্গে সাধারণত যোগদানের প্রথম দিনের পরিচয়পর্বের পর শবনমের সঙ্গে আর খুব বেশি দেখা সাক্ষাতের সুযোগ নেই। কিন্তু নাফিসার সঙ্গে ঘন ঘন দেখা হওয়ার কারণ শবনমের কক্ষটি তখন ছিল এইচ আর ডিপার্টমেন্টের পাশেই।

সাদা শার্ট জিনস পড়া প্রাণ চাঞ্চল্যে ভরপুর মেয়েটি কখনো মাটিতে পা ফেলে হাঁটতো না, যেন উড়তো, দৌড়াতো। ওর উজ্জ্বল কালো চোখ দুটোতে সারাক্ষণই ঝিলিক দিত কৌতুহল আর আনন্দ।
তারপর কি হলো, হঠাৎ করেই অফিসে আসা বন্ধ করে দিয়েছিল মেয়েটা। কর্মক্ষেত্রে ব্যক্তিগত কৌতুহল বা অল্পপরিচিত কারো খোঁজ খবর করার সুযোগ যেমন কম তেমনি কর্পোরেট আদবকায়দায় সেটি হয়তো ঠিক শোভনও হয় না, তাই নানারাকম কাজের ভিড়ে শবনম ভুলেই গিয়েছিল নাফিসা তানজিনার কথা।
কি লিখেছে মেয়েটা?
আতিয়ার সাহেব ফটোকপি করা একটা কাগজ বাড়িয়ে দেয় শবনমের দিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইংরেজি ভাষায় লিখেছে নাফিসা। শবনম কাগজটাতে চোখ বুলায়।
‘সেদিন আমি তার কক্ষে গিয়েছিলাম একটা ফাইলে স্বাক্ষর করাতে। আমাকে বসিয়ে রেখে তিনি মনোযোগ দিয়ে ফাইলের কাগজপত্র দেখলেন, পড়লেন, তারপর সবটা দেখে আমার কাজের খুব প্রশংসা করলেন। এটা সেটা জানতে চাইলেন। তারপর প্রয়োজনীয় স্বাক্ষর শেষে ফাইল ফেরত দেওয়ার সময় আচমকা আমাকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। বুকে হাত দেন আর মুখ বাড়িয়ে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেন। আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম কয়েক মুহূর্তের জন্য। বুঝতে পারছিলাম না, কি হচ্ছে, কি করবো। তারপরই তাকে দুহাতে ঠেলে সরিয়ে প্রায় দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে আসি। লজ্জা, ঘৃণা, অপমান এবং একরাশ ভয় আমাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। ওই ঘটনায় আমি মূক ও বধির হয়ে গিয়েছিলাম। ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলাম ভেতরে ভেতরে। এর পর বহুদিন বাইরে যেতে, নতুন মানুষের সঙ্গে কথা বলতে ভয় পেতাম আমি। এই ট্রমা, ভয় আর নিদারুণ মানসিক যন্ত্রণা থেকে বেরিয়ে আসতে আমার বছরের পর বছর লেগেছে। তবু সম্পূর্ণভাবে সেই ক্ষত সেরে উঠেনি।

...কোম্পানির নাম স্পষ্ট করে লিখলেও নিপীড়কের পুরো নাম লেখেনি সে, সংক্ষেপে লিখেছে এনসি। ‘এনসি পুরুষ এবং ক্ষমতাবান। তার বিরুদ্ধে কার কাছে অভিযোগ করবো, সেই সময় তা বুঝিনি আমি। এখন আমি মুখ খুললাম এই ভেবে যে সবার সামনে তার মুখোশ উন্মোচিত হোক। নারীর জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরি হোক।’
কাগজটা পড়া শেষ করে শবনম স্থাণু হয়ে বসে থাকে। যেন বোবা হয়ে গেছে সে, পাথর হয়ে গেছে।
‘দেখছেননি? কি লেইখছে? এমুন একটু আধটু দুষ্টামি পুরুষ মানুষ তো করেই.. এত বছর পরে হেইগুন লই লিখি একটা বেড়াত্যাড়া লাগায় দিসে ..’
শবনমের জলন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে পুরো বাক্য শেষ করার আগেই থেমে যান আতিউর সাহেব।
‘এন সি কি বলছে?’ শবনম নিচু স্বরে জানতে চায়।
‘কি আর কইব? অভিযোগ অস্বীকার কইরছে, চাইর বছর আগের ঘটনা, হেতের বলে কিচ্ছু মনে নাই। কইছে বানোয়াট, মিথ্যা। পরে আবার আমাগো পারচেজের পল্লবিও, ওই যে দুইবছর আগে চাকরি ছাড়ি দি অষ্ট্রেলিয়া গেল গা, হুনছি হেও নাকি হ্যারাসমেন্টের লিখিত অভিযোগ দিছে ম্যানেজমেন্টের কাছে, হের পর আর কি, এমডি একটা তদন্ত কমিটি বানাইছে আর সিইওরে কইছে ছুটিতে যাইত বইলা..পত্রিকায় তো নিউজও আসি গেছে, খেয়াল করেন নাই? বাও রে বাও কি জমানা আইলো.. জীবনে এমন আজব জিনিস শুনি নাই!’

কোনোমতে ভারী পা টেনে টেনে নিজের ঘরে এসে বসে শবনম। না, চাকরিক্ষেত্রে এক ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও তার সঙ্গে কখনো অসৌজন্যতামূলক আচরণ করেনি নির্ঝর চৌধুরী, কোনোদিন কোনো খারাপ ইশারা-ইঙ্গিত করেছেন তেমনটাও মনে পড়ে না। তবে তার মানে এই না যে নাফিসা বা পল্লবির অভিযোগ অসত্য। কত বিবিধ বিচিত্র চেহারা আছে মানুষের! সময় সুযোগ মতো ক্ষণিকের অসচেতনতায় ভদ্র সুবেশের আড়াল সরিয়ে দাঁত নখসমেত সেই বিকট বীভৎস চেহারা সামনে বেরিয়ে আসে। এতদিন মনে করা হতো এসব বুঝি বিনোদন জগতেই বেশি ঘটে, হলিউডের অ্যাশলে, বলিউডের তনুশ্রীরাই কাস্টিং কাউচের শিকার হয়। কিন্তু মিলানোর হ্যাশট্যাগ আহ্বানের ঢেউ যে এভাবে বাংলাদেশে এসেও আছড়ে পড়বে, ঘূর্ণিঝড় বইয়ে দেবে, পুরুষের পালিশ করা চকচকে আবরণ ধুয়ে বেরিয়ে আসবে বিশ্রি কদাকার চেহারা তা কি শবনম ভেবেছিল কখনো?

বেশ কয়েক বছর আগে, শবনমের মনে পড়ে মৌসুমী বলেছিল, একজন স্বনামখ্যাত সাহিত্যিক, আবার নামী কাগজের সাহিত্য সম্পাদক তাকে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘আপনি এখনো বিয়ে করেন নাই, একা একা লাগে না..’
‘না, এটা আমার চয়েস, আমি স্বেচ্ছায় সিঙ্গেল থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ মৌসুমী সাবলীল ভাবেই জানিয়েছিল।
‘তাহলে শারীরিক চাহিদা কিভাবে মিটান? না, মানে জৈবিক চাহিদা তো অস্বীকার করার কিছু না.. সেটা নিশ্চয়ই আছে আপনার.. মানে এতে দোষের কিছু নেই, ...রাজি থাকলে আপনি আর আমি একদিন লং ড্রাইভে যেতেই পারি... আরও অনেক কিছুই হতে পারে...’
মৌসুমী রাগে দুঃখে অপমানে কাঁপতে কাঁপতে তার রুম থেকে বেরিয়ে এসেছিল। সাহস করে কাউকেই তখন কথাটা খুলে বলতে পারেনি, উল্টো মানুষজন তাকে নিয়েই হাসাহাসি করবে ভেবে।

শবনম হাত গুটিয়ে বসে থাকে। রাগ, ক্রোধ, দুঃখ ও অস্বস্তির ককটেলে মনটা একটা তিক্ত বিষাদে আচ্ছন্ন হয়ে থাকে তার।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-৬

স্নানের শব্দ: পর্ব-৫

স্নানের শব্দ: পর্ব-৪

স্নানের শব্দ: পর্ব-৩

স্নানের শব্দ: পর্ব-২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১ 

আরএ/

Header Ad
Header Ad

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার

দিলশাদ আফরিন। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক কমিটির শৃঙ্খলা ও আদর্শ বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনটির নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা শাখার সদস্য দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এই বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়।

বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) গণমাধ্যমের সামনে আসে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বহিষ্কারাদেশে বলা হয়, ‘এই পত্রের মাধ্যমে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় নাগরিক কমিটি-এর নিয়ম ও নীতিমালা অনুযায়ী আপনার সাম্প্রতিক কর্মকান্ড আমাদের সংগঠনের শৃঙ্খলা এবং আদর্শের পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হয়েছে। সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এবং সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন এর অনুরোধক্রমে আপনাকে জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলার দায়িত্বে থাকা জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কারের বিষয়ে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল। জাতীয় নাগরিক কমিটি অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় গত ৮ এপ্রিল তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

আফরিন জাতীয় নাগরিক কমিটির শহীদ আহত কল্যাণ সেলের কোনো দায়িত্বে ছিলেন না। তারপরেও তিনি ব্যক্তিগতভাবে শহীদ ও আহত পরিবারের আর্থিক বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন। যা নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি অবগত ছিল না বলেও জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে বিএনপি ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। এ ছাড়া জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বাড়ানো যায়, তা নিয়েও দলটি কাজ করতে চায়।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫–এ অংশ নিয়ে বিএনপি এসব পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

‘১ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমি’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)/মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়েও কাজ করতে চায় বিএনপি।

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইকে জনপ্রিয় করতে বিএনপি ১১টি রেগুলেটরি পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। এর মধ্যে আটটি প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। এগুলো হলো বিডাকে কার্যকর করা, ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট বিধির আধুনিকীকরণ, বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৪x৭ (দিনে ২৪ ঘণ্টা ও সপ্তাহে ৭ দিন) সেবা চালু করা, স্বয়ংক্রিয় মুনাফা প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা, স্থানীয়ভাবে দক্ষ জনশক্তির ব্যবস্থা করা, বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধি।

সরকার গঠন করতে পারলে দেশের মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া, প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধির জন্য বিএনপি অতীতের চেয়েও ব্যাপক সফলতা অর্জন করতে চায় বলে জানান মির্জা ফখরুল। পোস্টে তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিনিয়োগ সম্মেলন উপলক্ষে এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনটি বিষয় বলেছেন। এগুলো হলো ঐক্যই ভবিষ্যৎ জাতীয় উন্নয়নের সোপান, এফডিআই আকৃষ্ট করতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকার আইন করেছিল এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সরকারগুলোর বিনিয়োগবান্ধব নীতি ছিল।

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১ টা থেকে ‍দুপুর ১২ টা ২০ মিনিট পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকা মেহেরপুর জেলার ইছাখালি সীমান্ত এলাকার মেইন পিলার ১২৪ এর নিকট শূন্য রেখা বরাবর ভারতীয় পার্শ্বে বিএসএফ নব চন্দ্রপুর ক্যাম্পে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এবং প্রতিপক্ষ ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সাথে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বিজিবি’র পক্ষে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হাসান স্টাফ অফিসারসহ মোট ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব প্রদান করেন।

অপরদিকে বিএসএফ এর পক্ষে ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট শ্রী বিনয় কুমার তাঁর স্টাফ অফিসারসহ ৮ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

বৈঠকের শুরুতে উভয় পক্ষ ঈদ-উল-ফিতর পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার সীমান্ত এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে চোরাচালান প্রতিরোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, যৌথ টহল তৎপরতা জোরদারকরণ এবং গোয়েন্দা নজরদারির বিষয়সমূহে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সীমান্তকে অধিক সুসংহত ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ একমত পোষণ করেন। এছাড়াও, সীমান্তে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা ও সীমান্ত সংক্রান্ত যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ সম্মত হন।

বৈঠক শেষে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার মেইন পিলার ১২৪ সহ তৎসংলগ্ন সীমান্ত পিলারসমূহ যৌথভাবে পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেন।
দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আন্তরিক ও সদ্ভাবপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক শেষ হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার
সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত
আবারও চেন্নাইয়ের অধিনায়ক হলেন ধোনি
‘ক্রিম আপা’ খ্যাত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শারমিন শিলা গ্রেফতার
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা, ভরি ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা
ভিন্ন ধর্মের ছেলের সঙ্গে প্রেম, বাবার হাতে প্রাণ গেল মেয়ের
পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হলেন সাবেক আইজিপি ময়নুল
জেনে নিন গ্রীষ্মে সুস্বাদু আর উপকারী কাঁচা আমের ১১টি বিস্ময়কর গুণ
এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে কিশোরী
সাধারণ মানুষ চায় এই সরকার আরো ৫ বছর থাকুক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মানববন্ধন (ভিডিও)
জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এমন অপকর্মের সাহস পেত না: মির্জা আব্বাস (ভিডিও)
নওগাঁয় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২
বাংলাদেশ রেলওয়ের দুই কর্মকর্তাকে পদায়ন ও বদলি
২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশে হাসপাতাল বানাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি
কাদের-কামালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে চিঠি
সিলেটে থানায় লালগালিচা দেখে ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দিল্লিতে লিঙ্গ পরিবর্তনের চিকিৎসা নিতে এসে গ্রেপ্তার ৫ বাংলাদেশি
রবিবার ৩ জেলায় সাধারণ ছুটি, সবমিলিয়ে টানা ৪ দিনের অবকাশ