শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ | ২৭ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩

স্নানের শব্দ

অফিসে ঢোকার মুখেই, লিফট থেকে নেমে, ওসমান গণির সঙ্গে দেখা, ওসমান গণির চেহারা অনেকটা গোলগাল চাইনিজদের মতো, ছোট ছোট চোখ, মাথায় সোজা পাতলা চুল, মুখে ফ্রেঞ্চ কাট দাড়ি, লম্বায় মাঝারি, মোটাসোটা শরীর, একটা আকাশি রঙের সার্টের সঙ্গে গলায় নেভি ব্লু রঙের টাই ঝুলিয়েছে গণি, শবনমকে দেখে হাসি মুখে বলল, ‘গুড মর্ণিং শবনম আপা, ইউ আর লুকিং গ্রেট!’

কর্পোরেটের চলতি নিয়মমাফিক মুখে হাল্কা হাসি ঝুলিয়ে গণিকে পাল্টা সম্ভাষণ জানাল শবনম। যদিও শবনম খুব ভাল করেই জানে গণি হারামজাদা হয়ত মনে মনে বলছে, ‘বুড়ির ঢং কত! এই বয়সেও কি সাজুগুজু কইরা অফিসে আসছে !’

এই মুহূর্তে অফিসে শবনমের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ওসমান গণি, প্রকিউরমেন্ট ডিপার্টমেন্টের হেড, তবে ম্যানেজমেন্টের ব্যাপক তোষামোদি করে সব কিছুতেই ওর চেয়ে এক ধাপ সামনে এগিয়ে আছে সে। থাকুক এগিয়ে, উচ্চপদস্থদের চাটুকারিতা করা শবনমের পক্ষে আগেও সম্ভব হয়নি কোনদিন আর হবেও না, এই যোগ্যতাটি (!) না থাকার কারণে জীবনে মাশুলও গুনতে হয়েছে অনেক, চোখের সামনে হাত কচলানো পার্টি সুবিধা হাতিয়ে নিয়েছে, আর সে পড়ে রয়েছে বেকুবের মতো লাইনের পেছনে। শবনম জানে, ব্যক্তিত্বহীন বসরাই তোষামোদী পছন্দ করে, আর যারা কাজে ফাঁকি দেয়, অসৎ, যারা অনৈতিক সুবিধা পেতে চায়, তারাই হয়ত ঊর্ধ্বতনদের তোষামোদি করে নিজের মতলব হাসিল করে।

এই কোম্পানির সিইও যিনি, টপ ম্যানেজমেন্টের খুব পছন্দের লোক নির্ঝর চৌধুরী সুন্দর চেহারার স্মার্ট, পরিপাটি, হাসিখুশি দীর্ঘদেহী ভদ্রলোক, বহুদিন দেশের বাইরে ছিলেন, বড় বড় কোম্পানিতে কাজ করেছেন কিন্তু দিন শেষে তিনিও কি চাটুকারদেরই পছন্দ করেন না? শবনমের স্বাধীনচেতা দৃঢ় মনোভাব যে তার তেমন পছন্দ নয়, সেটা উৎকট ভাবে প্রকাশ না করলেও শবনম তার অপছন্দের ব্যাপারটা নিজের সিক্সথ সেন্স দিয়ে ধরতে পারে। ফলে, শবনমও তার সঙ্গে একটা প্রয়োজনীয় পেশাদারি দুরত্ব বজায় রেখে নিজের নির্ধারিত কাজ কর্মগুলো করে যায়।

নির্ঝর চৌধুরী সারাক্ষণই অফিস মিটিংগুলোতে বলতে থাকেন, কোম্পানিতে গণতান্ত্রিক চর্চা চালু করতে হবে, টপ টু বটম সবার মতামতের মূল্য আছে, আমি সব বিষয়ে সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিতে পছন্দ করি। কিন্তু মুখে যাই বলুক, শবনমের বুঝতে অসুবিধা হয় না যে তিনি আসলে চান সবাই তার সিদ্ধান্তকেই সমর্থন করুক। ওসমান গণিও এটা না বোঝার মতো বোকা নয় আর সে কারণেই সবসময় সে আগ বাড়িয়ে বলতে শুরু করে, ‘অসাধারণ প্রস্তাব স্যার। অতি উত্তম প্রস্তাব, আপনার মাথায় কিভাবে এত চমৎকার সব আইডিয়া আসে বুঝি না..’

নির্ঝর চৌধুরী মুচকি হেসে বলেন, ‘অভিজ্ঞতা, বুঝলে গণি, অভিজ্ঞতার মূল্য জ্ঞানের চেয়ে বেশি! কি বলেন শবনম?’ শবনমও মাথা নাড়ে। শুকনো গলায় বলে, ‘সে তো অবশ্যই!’

তার নিজের চাকরিজীবনও যে বাইশ বছর পেরুতে চলল সে কথা আর এই মজলিশে বলে কি হবে? এখানে টিকতে হলে নির্ঝর চৌধুরীর স্তাবকতা করতে হবে, মাথা দুলিয়ে বলতে হবে, ‘চমৎকার সে হতেই হবে, হুজুরের মতে অমতকার?’ অমত নেই। অমত হলে বা মতবিরোধ তৈরি হলেই তো সমস্যা। নিজের মত প্রতিষ্ঠা করতে গেলে বসের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটবে। শবনম নিজেকে বুঝিয়েছে, খামাকা বিরোধিতায় যাওয়ার দরকার নেই, এই মত যদি তোমার পছন্দ না হয় তাহলে স্রেফ চুপ করে থাক, আর যদি দেখ তোমার মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে তখন মত প্রকাশ কর।

এই অফিসগুলো তো অফিস নয় যেন ইঁদুর দৌড়ের মাঠ, এখানে সবাই দৌড়ায় উপরে উঠার জন্য আর কর্তৃপক্ষের সুনজরে পড়ার জন্য। শবনমের পুরনো কলিগ বিল্লাহ ভাইয়ের কথা মনে পড়ে, ‘বুঝলেন শবনম, বসদের সবসময় দেখাবেন আপনি খুবই ব্যস্ত, সারাক্ষণই তাদের সামনে ফাইলপত্র হাতে অযথাই ছোটাছুটি করবেন, উঠতে বসতে সালাম দেবেন, শুধু মাথা নিচু করে কাজ করলে হবে না, কাজ দেখাতে হবে, নইলে নেপোয় খাবে দই আর আপনি আফসোস করে মরবেন..’

শবনম ইন্টারকমে ফোন করে অ্যাকাউন্টসের নতুন ছেলেটাকে ডেকে পাঠায়, সেদিন খুব কড়া ডোজ দিয়ে ফেলেছে, আজকে একটু মলম লাগিয়ে দিতে হবে, যাতে ক্ষতটা স্থায়ী না হয়, সহকর্মীদের মনের অবস্থাটা খেয়াল রাখাও একজন ভাল বসের দায়িত্ব।

‘এসো মনিরুজ্জামান, বসো, এই অফিসে কতদিন হলো জয়েন করেছ? এটাই প্রথম চাকরি?’
‘নয় মাস ম্যাডাম। জি¦, এটাই প্রথম ফুল টাইম জব।’

শবনম তার সামনে বসে থাকা মনিরুজ্জামানকে ভাল করে লক্ষ্য করে। গায়ের রং উজ্জ্বল শ্যাম, মাথায় ঘন কালো কোকড়া চুল, ক্লিন শেভড চেহারায় এখনো গ্রামীণ তারুণ্য ও সারল্যের ছাপ পুরোপুরি মিলিয়ে যায়নি। শবনম ছেলেটির দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসল, তাকে চা অফার করল, তারপর জানতে চাইল, ‘তোমার জীবনে তুমি কতদূর যেতে চাও মনিরুজ্জামান?’

মনির কিছুক্ষণ ইতস্তত করে, তারপর বলে, ‘এইতো,সবাই যেমন শীর্ষে যেতে চায় ম্যাডাম তেমন ..’
‘ভেরি গুড। বড় স্বপ্ন দেখতে হবে, বড় আশা করতে হবে। আর পজেটিভ থিংকিং প্র্যাকটিস করবে। গ্লাস অর্ধেক ভর্তি দেখা শিখবে, অর্ধেক খালি দেখা না, ঠিক আছে? মনোছবি বুঝো? মনে মনে নিজেকে কোথায় দেখতে চাও তার একটা ছবি তৈরি করবে, প্রতিদিন, তারপর সেই অনুযায়ী কাজ করে যাবে। মানুষের মধ্যে ভালটা খুঁজে বের করে সেটার প্রশংসা করবে, প্রশংসা না করতে পারলে চুপ থাকবে, সেটাও ভাল। এগুলি প্র্যাকটিস। কয়েকদিন চর্চা করো, দেখবে অভ্যাস হয়ে যাবে। বেশিরভাগ সময় নেতিবাচক চিন্তা মানুষকে পিছিয়ে দেয়, এটা মনে রেখো.. ’
‘ম্যাডাম, আমি আপনাকে অনেক পছন্দ করি, আসলে সেদিন..’
মনিরুজ্জামান হড়বড় করে বলতে শুরু করলে শবনম ডান হাতটা সামান্য উঁচু করে তাকে থামিয়ে দেয়। এরচে বেশি বাড়তে দেওয়া যাবে না।
‘ঠিকাছে মনিরুজ্জামান। উইশ ইউ অল দ্য বেস্ট, মনোযোগ দিয়ে কাজ করো কেমন!’

মনিরুজ্জামানের চলে যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে নিজের তরুণ বয়সের কথা মনে পড়ে শবনমের, একেবারে সেলফ মেড মানুষ সে, বাবা-চাচা-মামার জোর ছাড়া যেমন হয় সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার, স্রেফ নিজের সাহস আর আত্মবিশ্বাসে ভর করে এগিয়ে যাওয়া তার, ইমতিয়াজের সঙ্গে জেদ করে নেদারল্যান্ডসে এক বছরের মাস্টার্স কোর্সটা না করলে অবশ্য এ জায়গায় আসা সম্ভব হতো কিনা কে জানে, বিদেশি ডিগ্রিটা চাকরি জীবনে তাকে অনেক পয়েন্টে এগিয়ে রেখেছে। সবাই জানতো, ইমতিয়াজ আর শবনম এক সঙ্গেই বাইরে পড়তে যাবে। ডিপার্টমেন্টে সবসময় ফার্স্ট ক্লাস ফাস্ট ইমতিয়াজ, শবনম কখনো সেকেন্ড, কখনো থার্ড। তাতে অবশ্য আফসোস ছিল না শবনমের, ইমতিয়াজ তো তারই, ফলে ইমতিয়াজের সাফল্য মনে হতো শবনমের নিজেরই সাফল্য। কিন্তু ইমতিয়াজ যখন ফুল স্কলারশিপে হার্র্ভার্ডে পড়ার চান্স পেয়ে গেল, তখন থেকেই কেমন যেন বদলে যেতে শুরু করল। এই বদলানোগুলো মুখে বলে ঠিক বোঝানো যায় না, কিন্তু কাছের মানুষরা ঠিকই তা অনুভব করতে পারে। তারা বোঝে কোথায়ও তাল কেটে গেছে, ছন্দ পতন হয়েছে, কি যেন আর আগের মতো মিলছে না। তারা কেউ কাউকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় বলেনি আবার নিজের একান্ত জীবনে স্বাগতমও জানায়নি। কিভাবে যেন, দুজনেই বুঝে গেছে দুজনের দুটি পথ এক হয়ে মিশে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ অবশিষ্ট নেই। অভিযোগ, অনুযোগ, অভিমানের চেয়ে শবনমের গায়ে বেশি লেগেছিল অপমানটুকু। পরাজয় আর প্রত্যাখ্যানের অপমান। নেদারল্যান্ডসের ঠাণ্ডা শীতল বরফ জমা সেই নিঃসঙ্গ নির্বান্ধব লেইডেন শহরে দীর্ঘ এগার মাস অপমানটা বুকের মধ্যে পুষে রেখে শক্ত পাথর বিছানো পথে রক্তাক্ত পায়ে আর মনে হেঁটে, দাঁতে দাঁত চেপে ডিগ্রিটা নিয়ে দেশে ফিরে অল্প কয়েকদিনের পরিচয়ে বড় ভাইয়ের বন্ধু তারেককে বিয়ে করে ফেলেছিল শবনম।

তারেকের তেমন বিদ্যা নেই, বিদ্যার অহংকারও নেই, অদ্ভুত এক সরল জীবনযাপনের স্বপ্ন দেখে দেখেই সে কাটিয়ে দিয়েছে শবনমের সঙ্গে এতগুলো বছর, যেন সঙ্গে থেকেও নেই, পাশে থেকেও দূরে কোথাও, নিজের মধ্যে নিমগ্ন, নির্লিপ্ত ধ্যানী বুদ্ধ। এতে একদিকে ভালই হয়েছে, নিজের পেশাগত জীবন নিজের ইচ্ছামতো গুছিয়ে নিতে পেরেছে শবনম। প্রেম ছিল, তবে সেটা শুধু নিজের কাজের সঙ্গে নিজের, কোথায়ও আর কোনোদিকে চোখ মেলে তাকায়নি সে, তাকাতে ইচ্ছাও করেনি। ওই দরজা লোহার সিলমোহর মেরে চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছে শবনম। অন্তত প্রেম নিয়ে আর কোনো পুরুষের কাছে গিয়ে কাঁদুনি গাওয়ার ইচ্ছা হয়নি তার। পুরুষ, অনেক সময়, নারীর কান্নার অর্থও ঠিকমতো বুঝতে পারে না। নিজেদের মনের মতো ভুল অর্থ করে সবজান্তার মতো নিজের বানানো পৃথিবীতে ভাব ধরে বসে থাকে।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১ 

আরএ/

Header Ad
Header Ad

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার

দিলশাদ আফরিন। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক কমিটির শৃঙ্খলা ও আদর্শ বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনটির নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা শাখার সদস্য দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এই বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়।

বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) গণমাধ্যমের সামনে আসে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বহিষ্কারাদেশে বলা হয়, ‘এই পত্রের মাধ্যমে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় নাগরিক কমিটি-এর নিয়ম ও নীতিমালা অনুযায়ী আপনার সাম্প্রতিক কর্মকান্ড আমাদের সংগঠনের শৃঙ্খলা এবং আদর্শের পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হয়েছে। সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এবং সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন এর অনুরোধক্রমে আপনাকে জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলার দায়িত্বে থাকা জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কারের বিষয়ে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল। জাতীয় নাগরিক কমিটি অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় গত ৮ এপ্রিল তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

আফরিন জাতীয় নাগরিক কমিটির শহীদ আহত কল্যাণ সেলের কোনো দায়িত্বে ছিলেন না। তারপরেও তিনি ব্যক্তিগতভাবে শহীদ ও আহত পরিবারের আর্থিক বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন। যা নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি অবগত ছিল না বলেও জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে বিএনপি ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। এ ছাড়া জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বাড়ানো যায়, তা নিয়েও দলটি কাজ করতে চায়।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫–এ অংশ নিয়ে বিএনপি এসব পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

‘১ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমি’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)/মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়েও কাজ করতে চায় বিএনপি।

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইকে জনপ্রিয় করতে বিএনপি ১১টি রেগুলেটরি পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। এর মধ্যে আটটি প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। এগুলো হলো বিডাকে কার্যকর করা, ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট বিধির আধুনিকীকরণ, বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৪x৭ (দিনে ২৪ ঘণ্টা ও সপ্তাহে ৭ দিন) সেবা চালু করা, স্বয়ংক্রিয় মুনাফা প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা, স্থানীয়ভাবে দক্ষ জনশক্তির ব্যবস্থা করা, বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধি।

সরকার গঠন করতে পারলে দেশের মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া, প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধির জন্য বিএনপি অতীতের চেয়েও ব্যাপক সফলতা অর্জন করতে চায় বলে জানান মির্জা ফখরুল। পোস্টে তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিনিয়োগ সম্মেলন উপলক্ষে এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনটি বিষয় বলেছেন। এগুলো হলো ঐক্যই ভবিষ্যৎ জাতীয় উন্নয়নের সোপান, এফডিআই আকৃষ্ট করতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকার আইন করেছিল এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সরকারগুলোর বিনিয়োগবান্ধব নীতি ছিল।

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১ টা থেকে ‍দুপুর ১২ টা ২০ মিনিট পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকা মেহেরপুর জেলার ইছাখালি সীমান্ত এলাকার মেইন পিলার ১২৪ এর নিকট শূন্য রেখা বরাবর ভারতীয় পার্শ্বে বিএসএফ নব চন্দ্রপুর ক্যাম্পে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এবং প্রতিপক্ষ ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সাথে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বিজিবি’র পক্ষে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হাসান স্টাফ অফিসারসহ মোট ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব প্রদান করেন।

অপরদিকে বিএসএফ এর পক্ষে ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট শ্রী বিনয় কুমার তাঁর স্টাফ অফিসারসহ ৮ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

বৈঠকের শুরুতে উভয় পক্ষ ঈদ-উল-ফিতর পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার সীমান্ত এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে চোরাচালান প্রতিরোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, যৌথ টহল তৎপরতা জোরদারকরণ এবং গোয়েন্দা নজরদারির বিষয়সমূহে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সীমান্তকে অধিক সুসংহত ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ একমত পোষণ করেন। এছাড়াও, সীমান্তে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা ও সীমান্ত সংক্রান্ত যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ সম্মত হন।

বৈঠক শেষে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার মেইন পিলার ১২৪ সহ তৎসংলগ্ন সীমান্ত পিলারসমূহ যৌথভাবে পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেন।
দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আন্তরিক ও সদ্ভাবপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক শেষ হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার
সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত
আবারও চেন্নাইয়ের অধিনায়ক হলেন ধোনি
‘ক্রিম আপা’ খ্যাত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শারমিন শিলা গ্রেফতার
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা, ভরি ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা
ভিন্ন ধর্মের ছেলের সঙ্গে প্রেম, বাবার হাতে প্রাণ গেল মেয়ের
পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হলেন সাবেক আইজিপি ময়নুল
জেনে নিন গ্রীষ্মে সুস্বাদু আর উপকারী কাঁচা আমের ১১টি বিস্ময়কর গুণ
এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে কিশোরী
সাধারণ মানুষ চায় এই সরকার আরো ৫ বছর থাকুক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মানববন্ধন (ভিডিও)
জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এমন অপকর্মের সাহস পেত না: মির্জা আব্বাস (ভিডিও)
নওগাঁয় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২
বাংলাদেশ রেলওয়ের দুই কর্মকর্তাকে পদায়ন ও বদলি
২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশে হাসপাতাল বানাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি
কাদের-কামালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে চিঠি
সিলেটে থানায় লালগালিচা দেখে ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দিল্লিতে লিঙ্গ পরিবর্তনের চিকিৎসা নিতে এসে গ্রেপ্তার ৫ বাংলাদেশি
রবিবার ৩ জেলায় সাধারণ ছুটি, সবমিলিয়ে টানা ৪ দিনের অবকাশ