শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২৪ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব: ৪

অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব: ৪

পরদিন রাতে শাবিনকে বেশ ফুরফুরে মনে হলো। ঘর আটকে সে মেঝেতে আয়োজন করে বসেছে। তার সামনে ছোটো ব্যাগ। সেই ব্যাগ থেকে তিনটা ছোটো বোতল বের করল। আমি একজন মানুষ যে এ ঘরে আছি তা যেন ভুলে গেছে।
শাবিনের পাশে গিয়ে বসলাম। সে একটা বোতল খুলল। মুখ হা করে সেই বোতল থেকে ঢক করে অর্ধেকটা তরলকিছু খেয়ে ফেলল। ওষুধের হালকা গন্ধ আসছে। জিগ্যেস করলাম, ‘এটা কী?’
শাবিন বলল, ‘ডাইল।’
‘ডাইল কী?’
‘ফেন্সি।’
‘ফেনসিডিল?’
‘হু।’
‘খেলে কী হয়?’
‘নেশা হয়।’
‘নেশা করার জন্য তুমি ফেনসিডিল কেন খাবে, শাবিন! তুমি হুইস্কি খাবে, ভদকা খাবে, নহয় ওয়াইন খাবে। কিছু না পেলে ইন্ডিয়া থেকে প্রচুর রাম আসছে, রাম খাবে। ফেনসিডিল কেন খাচ্ছ?’
‘হুইস্কি খাওয়ার পয়সা জোগাড় করতে পারি না। মা টাকা দেয় না। বাপের কোনো খবর নেই দিনের পর দিন।’
‘এসব খাবে না। আমি তোমাকে হুইস্কি খাওয়াব। আমার সাথে খাবে।’
‘ফেনসিডিলেই আমার এখন নেশা ভালো হয়।’
বলে বোতলের বাকি ফেনসিডিল গলায় ঢেলে দিলো।
জানতে চাইলাম, ‘গতকাল কী খাচ্ছিলে?’
‘শাকসবজি।’
‘শাকসবজি?’
‘ঘাস।’
‘ঘাস কী?’
‘গাঁজা।’
‘তুমি রোজ খাও?’
‘হ্যাঁ।’
‘কেন খাও?’
‘তুমি খাবে? খেয়ে দেখো। মনে হবে আকাশে উড়ছ। মেঘের সঙ্গে তোমার প্রেম। তার হাত ধরে তুমি উড়বে।’
শাবিন আরেকটা বোতলের মুখ খুলল। এক ঢোক ফেনসিডিল খেলাম। আমার কিছু হলো না।
শাবিন সেই বোতলটাও শেষ করে আরেকটা বোতল খুলেছে। সে বলল, ‘তুমি খুব ভালো। তোমার হাতটা ধরি?’
হাত বাড়িয়ে দিলাম। শাবিন আমার হাত ধরে আলগোছে টান দিলো। তিন বোতল ফেনসিডিল খেয়ে তার নেশা হয়েছে মনে হচ্ছে। খানিকটা ঝুঁকে ওর কোলে শুয়ে পড়লাম।
শাবিন বলল, ‘তোমার কাঁধের কাছে লাল হয়ে আছে। কিসের দাগ?’
‘গতরাতে তুমি আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিলে। চড় মেরেছিলে।’
‘গাঁজা খেলে কিছু মনে থাকে না। আমার কিছু মনে নেই। তুমি সেই কথা বাড়ির অন্যদের বলোনি তো?’
‘না, বলিনি।’
‘কেন বলোনি?’
‘এটা তোমার আর আমার পারসোনাল ব্যাপার। অন্যদের কেন জানাব?’
‘তুমি সত্যি খুব ভালো মেয়ে। তোমাকে ঠিক ওরকম আরেকটা সোনার চেইন বানিয়ে দেব।’
‘আমার চেইন কী করেছ?’
‘বেচে দিয়েছি। তবে সব টাকা এখনো নিইনি। ওর কাছে কিছু রেখে দিয়েছি।’
‘কার কাছে?’
‘যার কাছে বেচেছি। টাকা নিয়ে ডাইল কিনেছি আর পুরিয়ার অর্ডার দিয়েছি।’
‘পুরিয়া কী?’
‘হেরোইন। চকলেটের খোঁজে আছি। সবুজ ম্যানেজ করবে বলেছে।’
‘সবুজ কে?’
‘আমার বন্ধু। সবুজ, হাবিব, এনায়েত। ওদের আজ সবাইকে তিন বোতল করে ডাইল গিফট করেছি। আমার বিয়ে উপলক্ষে বাদশাহী খাওয়া। অনেকদিন আমাদের হাতে টাকা ছিল না। এখন আমার টাকা হয়েছে। সেই টাকায় আমরা চকলেট খেতে পারব। সব হয়েছে তোমার জন্য। তুমি লাকী।‘
‘কী চকলেট?‘
‘হিটলার চকলেট। বাবা। শালা আমার বাবা। এতদিন চাকা খেয়েছি। এবার বাবা খাব।’
‘চাকা কী?’
‘নেশার ট্যাবলেট।’
‘বাবা কী?’
‘ইয়াবা। খামাখা দাম বেশি। তুমি দারুণ লাকী। তুমি আমাদের জন্য বাবা আনার ব্যবস্থা করে দিয়েছ। তোমাকে আজ ভীষণ আদর করতে ইচ্ছে হচ্ছে।’
উঠে বিছানায় এলাম। শাবিন এলো। অবসন্ন হাতে আমার পরনের কাপড় খুলতে থাকল। শাবিনকে সাহায্য করলাম। সে কী করবে যেন বুঝতে পারছে না। এলোমেলোভাবে আমাকে আদর করতে গেল। আমার ওপরে উঠল। আমাকে তারওপরে তুলে নিলো। কিছুতেই যেন নিজেকে প্রস্তুত করতে পারল না।
খাট থেকে নেমে পড়েছে শাবিন। ফ্লোরে বসে খাটে মাথা দিয়ে আছে। আমার অসহ্য লাগছে। শরীর অস্থির হয়ে গেছে। চুপচাপ চিত হয়ে শুয়ে আছি।
শাবিন কাঁদছে। সে খাট চেপে ধরে ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলল,‘ আই অ্যাম ফিনিশড। আমি শেষ হয়ে গেছি, তুরি। আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমার সব শেষ হয়ে গেছে।’

বাথরুমে গেলাম। ঠান্ডা পানিতে শাওয়ার নিলাম। ঘরে ফিরে এসে দেখি শাবিন ঘুমিয়ে গেছে। সে বিছানায় শুয়ে ঘুমাচ্ছে।
সুনসান ঘর। বাতাসে ফেনসিডিলের হালকা গন্ধ। শাবিনের ভারী শ্বাসের শব্দ। আমার ঘুম এলো না। জেগে থাকলাম।

আমার মাথায় নতুন ভাবনা এসেছে। এরপর কী? শাবিনকে আটকে দিয়েছে তুরি। বাড়ি থেকে বেরুতে দেয়নি। কী করছে তখন শাবিন?
ল্যাপটপে নতুন ফাইল ওপেন করলাম। ফাইলের নাম দিলাম ‘তুরির নোটবুক’। ওয়ার্ড ডকুমেন্টে গিয়ে লিখতে শুরু করলাম।

অনেক বেলা করে চাঁদের ঘুম ভাঙল। সে এলোমেলো হয়ে ঘুমিয়েছিল। ঘুমানোর সময় তার পরনে কাপড় ছিল না। তুরি তাকে বিছানায় গুছিয়ে শুইয়ে দিয়েছে। গায়ের ওপর চাদর দিয়েছে। তুরি আজ সেজেছে। তাকে অপূর্ব দেখাচ্ছে।
ঘুম ভেঙে শাবিন খেয়াল করল পরনে কিছু নেই। তার গতরাতের কথা মনে পড়েছে। সে ফ্যালফ্যাল করে ঘরের চারপাশে তাকাচ্ছে। তুরি সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তার হাতে শাবিনের ট্রাউজার আর টিশার্ট।
তুরি বলল, ‘দাঁত ব্রাশ করো। শেভ করবে। গোসল করে বেরুবে। এগুলো পরবে। পরিষ্কার কাপড়। ইস্তিরি করিয়ে এনেছি। তোমার কাপড়গুলো ময়লা হয়েছে। ওগুলো কাচতে হবে।’


শাবিনের পরনে থাকে জিনসের প্যান্ট। ওই এক জিনসের প্যান্ট যে শাবিন কতদিন পরে তার হিসেব বলতে পারবে না। তাতে ময়লা জমে। চিটচিটে হয়ে যায়। তাও পরে। ঘরে শার্ট, টিশার্ট যা পায় পরে নেই। সেসব শার্ট, টিশার্ট কোনোদিন কেচে কেউ পরিষ্কার করে বলে মনে হয় না।
শাবিন বাথরুমে গিয়ে দাঁত মাজছে। তার মনে হচ্ছে সে অনেকদিন পর দাঁত ব্রাশ করছে। রোজ সকালে উঠে দাঁত মাজার মতো ব্যাপারগুলোকে সে পাত্তা দেয় না। প্রতিদিন গোসল করতেই হবে এমন নিয়ম মানে না। সে আরও অনেককিছুকেই পাত্তা দেয় না। নিজের মতো থাকে।
আজ তার দিন ভালো। আজ সে সবকিছুকে পাত্তা দেবে। চুলে শ্যাম্পু দিয়ে, সাবান দিয়ে ডলে গোসল করবে। হিটলার চকলেট আনবে। আর পাউডার। আহ্ হোয়াইট পাউডার। আজ তারা রাজাধিরাজ।
শাবিন মাথা দুলিয়ে মনে মনে বলল, ‘লাভ ইউ, তুরি। তোমার জন্য এত সব আয়োজন হচ্ছে। তোমার সোনার চেইন আমাদের বাবা এনে দিয়েছে।’
শাবিনের নাস্তা ঘরে নিয়ে এসেছে তুরি। গুছিয়ে নাস্তা খেয়েছে শাবিন। সে চিনি বেশি দিয়ে চা খেতে চেয়েছিল। তাকে চিনি বেশি দিয়ে চা দেওয়া হয়েছে।
শাবিন আয়েশ করে চা খাচ্ছে। তুরি বসে আছে তার সামনে। ‘শাবিন বলল, তোমাকে কিছু গিফট দিতে ইচ্ছে হচ্ছে। কী গিফট দেওয়া যায় বলো দেখি?’
‘আজকের দিনটা তুমি আমাকে দাও। আমার কাছে থাকো। তোমার সঙ্গে আমার অনেক কথা আছে।’
মাথা ঝাঁকাচ্ছে শাবিন। সে বলল, ‘আজ ফেরার সময় তোমার জন্য অনেকগুলো টিপ নিয়ে আসব। টিপ পরলে তোমাকে আরও সুন্দর দেখবে। কী রঙের টিপ আনব, লাল, সবুজ?’
চায়ের কাপ, নাস্তার এঁটো প্লেট নিয়ে তুরি চলে গেল। শাবিন উঠে পড়েছে। সে আয়নায় নিজেকে আরেকবার দেখল। পরিপাটি চুল আবার আঁচড়াল। হলুদ পোলো গেঞ্জিতে বেশ মানিয়েছে। আজকে সান্গ্লাস কিনবে। তার নিজের সানগ্লাস থাকা দরকার।
দরজা খুলতে গিয়ে শাবিন খেয়াল করল দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। সে তুরিকে ডাকল। তুরি সাড়া দিলো না। শাবিন মাকে ডাকল। মা সাড়া দিলেন না। শাবিন চিৎকার করছে। কেউ আসছে না।
শাবিনের নেশা উঠে গেছে। সে হাত দিয়ে ঘনঘন নাক ঘষছে। নাক দিয়ে সর্দি ঝরছে। গা-হাত-পা থরথর করে কাঁপছে। মনে হচ্ছে হাতে পায়ে খিল ধরে আসছে। আড়ষ্ট হয়ে গেছে হাত-পা।
শাবিন জোরে জোরে সবাইকে ডাকতে থাকল। কেউ তার কথা শুনছে না। টেবিলের ওপর তুরির কাচের চুড়ি অগোছালো হয়ে আছে। শাবিন সেগুলো ছুড়ে ফেলল। ওয়ারড্রবের ওপর থেকে কাচের ফুলদানি নিয়ে মেঝেতে ছুড়ে মারল। ফুলদানি ভেঙে ঘরের চারপাশে কাচ ছড়িয়ে পড়েছে।
শাবিনের পেটে ব্যথা করছে। তার সমস্ত নাড়িভুঁড়ি ছিঁড়ে বের হয়ে আসতে চাইছে। সে পেট চেপে ধরে শরীর মুচড়াচ্ছে। তার হেঁচকি উঠতে শুরু করেছে। হেঁচকি এখন হিক্কা হয়ে গেছে। হিক্কা থামছে না। হিক্কা দিতে দিতে শাবিন ঘরের মেঝে ভাসিয়ে হড়হড় করে বমি করল। বমির টক গন্ধে ঘরের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
শাবিন দলা পাকিয়ে বমির ভেতর শুয়ে গড়াচ্ছে।
এ পর্যন্ত লিখে মনে হলো শাবিন আর তুরির প্রথম দেখা, তাদের মেলামেশা এগুলো লিখে আসা দরকার। তুরি লিখেছে শাবিন আর সে একসঙ্গে চাকরি করেছে। সেটা আনতে হবে কাহিনিতে।

আমার ভালো লাগছে। গল্পের লাইন পেয়ে গেছি। নতুন গল্প মানে অতি সুন্দর সময়।

(চলবে)

 

তৃতীয় পর্ব: অঘ্রানের অন্ধকারে

দ্বিতীয় পর্ব: অঘ্রানের অন্ধকারে

প্রথম পর্ব: অঘ্রানের অন্ধকারে

Header Ad
Header Ad

প্রেস সচিবের ক্ষমাপ্রার্থনা: বিবিসি বাংলার সংবাদের বিষয়ে বক্তব্য সংশোধন

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিবিসি বাংলাকে নিয়ে দেওয়া তার সাম্প্রতিক মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন এবং বক্তব্য সংশোধন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করেন।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “বিবিসি বাংলার সংবাদ নিয়ে আমার সাম্প্রতিক বক্তব্যের জন্য আমি দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। আমি আমার বক্তব্য সংশোধন করতে চাই।”

তিনি আরও ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমি মূলত দুটি বিষয় মাথায় রেখেই বিবিসি বাংলার বিষয়ে মন্তব্য করেছিলাম। প্রথমত, তারা বারবার বলেছে যে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছেন। দ্বিতীয়ত, আমি জানি শেখ হাসিনার সরকারের আমলে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছিল বিবিসি বাংলা। তবে, আমি যে মন্তব্য করেছিলাম, যেখানে বলেছিলাম বিবিসি বাংলা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করছে, সে বক্তব্যের জন্য আমি ক্ষমা চাইছি এবং সংশোধন করতে চাচ্ছি।”

শফিকুল আলম আরও বলেন, “নির্দিষ্ট কিছু প্রতিবেদনে হয়তো আমি বস্তুনিষ্ঠতার অভাব দেখেছি, তবে আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের ঘটনাবলীর সত্যতা তুলে ধরার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে বিবিসি বাংলা। শেখ হাসিনার সরকারের রেখে যাওয়া পরিস্থিতি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম সম্পর্কেও তারা যথাযথ ও স্বচ্ছ সংবাদ প্রচারের চেষ্টা করছে। দেশের সব সাংবাদিকেরই উচিত বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করা।”

 

এর আগে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বিবিসি বাংলার সংবাদ পরিবেশন নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন। তিনি লেখেন, “মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক এবং গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত হয়ে গেছে। তারা যখন শেখ হাসিনার বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করে, তখন ‘ভারতে পালিয়ে যাওয়ার’ পটভূমি বাদ দিয়ে উপস্থাপন করে। বাস্তবতা হলো, শেখ হাসিনা অসংখ্য শিশু হত্যা, নজিরবিহীন সহিংসতা, লুণ্ঠন, দুর্নীতি, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং তিন হাজারের বেশি মানুষকে গুম করে ভারতে পালিয়ে গেছেন।”

তবে কিছুক্ষণ পরেই ওই পোস্টটি তিনি তার প্রোফাইল থেকে সরিয়ে ফেলেন। পরে, ৭ ফেব্রুয়ারি, নতুন পোস্টের মাধ্যমে তিনি তার বক্তব্য সংশোধন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

Header Ad
Header Ad

পিরোজপুরে জামায়াতের তিন প্রার্থী, দুই আসনে সাঈদীর দুই ছেলে

পিরোজপুরের তিনটি আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থীরা। ছবি : সংগৃহীত

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পিরোজপুর জেলার তিনটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসাইন হেলাল প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া ইসলামী ফাউন্ডেশনের হলরুমে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা তালিমুল বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ও ভাণ্ডারিয়া উপজেলা আমির মাওলানা আমির হোসেন। এ সময় নাজিরপুর উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

পিরোজপুর জেলার তিনটি সংসদীয় আসনে জামায়াতের প্রার্থীরা হলেন:

পিরোজপুর-১ (পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানি ও নাজিরপুর): আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ছোট ছেলে আলহাজ মাসুদ সাঈদী।

পিরোজপুর-২ (নেছারাবাদ, কাউখালী ও ভাণ্ডারিয়া): আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর বড় ছেলে আলহাজ শামীম সাঈদী।

পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া): জামায়াতের মঠবাড়িয়া উপজেলা আমির অধ্যাপক শরীফ আব্দুল জলিল।

তিনটি আসনে জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা অভিনন্দন জানিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন। দলটির পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে, আসন্ন নির্বাচনে তাদের প্রার্থীরা শক্ত অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হবেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর দুই ছেলের মনোনয়ন জামায়াতের ভোটব্যাংকে প্রভাব ফেলতে পারে। তবে নির্বাচনী পরিবেশ এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অবস্থানও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

পুলিশ ও প্রশাসনের ৯০ শতাংশ আওয়ামী লীগের সমর্থক!

বেনজীর আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ সম্প্রতি একটি ভার্চুয়াল মিটিংয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন, যেখানে তিনি দাবি করেছেন যে, পুলিশের ও প্রশাসনের ৯০ শতাংশই আওয়ামী লীগের সমর্থক এবং তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহের পরিকল্পনা চলছে, যা দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার কৌশলের অংশ। তার মতে, আপাতত নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি বিদ্রোহ সম্ভব নয়, তবে সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা করা এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত করে অচলাবস্থা তৈরি করা হবে। এর মাধ্যমে ত্বরান্বিত নির্বাচন আয়োজন করে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

বেনজীর আহমেদ আরও দাবি করেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে তাদের বিরুদ্ধেও বিদ্রোহ করা হবে এবং পরবর্তী সময়ে তাদের হটানোর জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এক ব্যবহারকারী, আসিফ শুভ্র, ফেসবুকে বিষয়টি শেয়ার করে লিখেছেন, "আইসো বিদ্রোহ করতে," যা আরও বিতর্ক তৈরি করেছে এবং পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে তুলেছে।

সাবেক আইজিপির এই বক্তব্য ও পরবর্তী প্রতিক্রিয়াগুলো দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন কিংবা সরকারিভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের মন্তব্য প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

প্রেস সচিবের ক্ষমাপ্রার্থনা: বিবিসি বাংলার সংবাদের বিষয়ে বক্তব্য সংশোধন
পিরোজপুরে জামায়াতের তিন প্রার্থী, দুই আসনে সাঈদীর দুই ছেলে
পুলিশ ও প্রশাসনের ৯০ শতাংশ আওয়ামী লীগের সমর্থক!
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত আসছে: আসিফ মাহমুদ
সৌদি আরব নিজেদের মাটিতেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গড়তে পারে: নেতানিয়াহু
জিজ্ঞাসাবাদের পর শাওন ও সোহানা সাবাকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতীয়দের ‘হাত-পা বেঁধে’ ফেরত, তোপের মুখে মোদি সরকার
নিজের কেনা বুলডোজারেই গুঁড়িয়ে গেল সাদিক আবদুল্লাহর পারিবারিক বাড়ি
‘ছাগলের ঘর’ থেকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
নতুন রূপে সেজেছে মিরপুর, চিটাগংয়ের প্রথম নাকি বরিশালের দ্বিতীয়
চলতি বছরের শেষ দিকে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে: প্রধান উপদেষ্টা
টাঙ্গাইলে নসিমন কেড়ে নিল মাদ্রাসায় পড়ুয়া এক শিশুর প্রাণ
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ককে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচু্রের ঘটনায় ভারতের তীব্র নিন্দা
চুয়াডাঙ্গায় আবারও বাড়ছে শীত, তাপমাত্রা নামল ১০ ডিগ্রিতে
গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়
নারায়ণগঞ্জে দুর্বৃত্তদের গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নিহত
আ.লীগ কর্মীদের বিশেষ ট্রেনিং, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের ফোনালাপ ফাঁস!
দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে যা বলল বিএনপি
আন্তর্জাতিক আদালতের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলেন ট্রাম্প