আগরতলায় যাত্রা করল অন্যপ্রকাশ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দিতে। এরই অংশ হিসেবেই ৭ এপ্রিল ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় শুরু হলো অন্যপ্রকাশের বই বিপণনকেন্দ্র। এটিই প্রথম কোনো বাংলাদেশি প্রকাশনীর আগরতলায় বই বিপণনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা। আগরতলার প্রকাশনা ও বই বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ‘নীহারিকা’র সঙ্গে যৌথ এই যাত্রার শুভ উদ্বোধন করেন ত্রিপুরা হাইকোর্টের বিচারপতি শুভাশিস তলাপাত্র ও আগরতলাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মাদ। সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় তরুণ লেখক সাদাত হোসাইন, অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম ও নীহারিকার কর্ণধার তীর্থংকর দাস।
স্থানীয় প্রেসক্লাবে ‘আগরতলায় অন্যপ্রকাশের প্রবর্তনা’ শিরোনামের এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শুভাশিস তলাপাত্র বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। বাংলাদেশের সঙ্গে আগরতলার মানুষের যে সম্পর্ক, তা কেবল প্রতিবেশীরই নয় বরং অনেক বেশি আত্মার। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, বাংলা ভাষা ও দুদেশের মানুষের সম্পর্ক এর সঙ্গে যুক্ত। ফলে বিলম্বে হলেও অন্যপ্রকাশের আগরতলায় যে যাত্রা, তা নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।’
সহকারী হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মাদও একই ভাষায় এই নতুন যাত্রাকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে অকৃত্রিম বন্ধু আগরতলা ও এখানকার মানুষ । ফলে অন্যপ্রকাশের হাত ধরে যে যাত্রার সূচনা হলো তা যেন আরও বেগবান হয়। কেবল বাংলাদেশের বই আগরতলায় নয়, এই যাত্রায় যেন আগরতলার লেখক, শিল্প, সাহিত্য সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় ঘটে বাংলাদেশের মানুষের।’
কথাসাহিত্যিক সাদাত হোসাইন প্রথমবারের মতো আগরতলা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে সেখানকার পাঠকদের প্রতি তার মুগ্ধতা ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তিনি অন্যপ্রকাশের এই যাত্রাকে এক অন্তহীন যাত্রার সূচনা বলে উল্লেখ করেন।
মুক্তিযুদ্ধে আগরতলার মানুষের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন অন্যপ্রকাশ প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এই যাত্রা বিলম্বে হলেও অনিবার্যই ছিল। ভাবনা ও অনুভবে এই দুই বাংলার মানুষ এতটাই একাত্ম যে তাদের আলাদা রাখা কঠিন। আর এই যাত্রা সেই অনুভবকে আরও অন্তরঙ্গ করে তুলবে বলেই আমার বিশ্বাস।’
উল্লেখ্য, আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত এই প্রবর্তনা উৎসবে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরার শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্ট মানুষেরা। সেখানকার বইপ্রেমীরা এ উদ্যোগে আনন্দ প্রকাশ করেন। তারা ত্রিপুরা তথা আগরতলার মাটিতে অন্যপ্রকাশকে স্বাগত জানান।