শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক ভ্রমণ, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা

পিরামিডের শহর বলতে কায়রো আর পিরামিডের দেশ বলতেই মিশরের যে ছবি চোখে ভেসে আসে সেখানে মরুভূমিতে তিনটি বিশাল আকৃতির পাথুরে ত্রিভূজের পটভূমিতে দাঁড়িয়ে থাকা গোটা কয়েক খেজুর গাছ আর চলমান উটের কাফেলা। অবশ্য মানসচক্ষুর আর দোষ কী! সেই দূর শৈশব থেকে বইয়ের পাতায় দেয়ালে ঝোলানো ক্যালেন্ডারে, এমন কি সিনেমার দৃশ্যপটেও দেখেছি সেই একই দৃশ্য। সারা দেশে বর্তমানে টিকে আছে একশ আঠারোটি পিরামিড, এর মধ্যে গিজার প্রাচীনতম ‘গ্রেট পিরামিড’, স্ফিংস এবং সাক্কারার অসমাপ্ত পিরামিডসহ পাঁচ সাতটা পিরামিডে ঘুরে নিজের চোখে দেখে ফেলতে পারলে পর্যটকের কায়রো ভ্রমণ অনেকটাই সম্পন্ন হয়ে যায়। বাকি শতাধিক পিরামিড খুঁজে বের করা গবেষকের কাজ। কিন্তু এই একশ আঠারোর বাইরে সুদানে যে নুবিয়ান সাম্রাজ্যের দুইশর বেশি পিরামিড আছে তা অনেকেরই জানা নেই। সেই কারণে গিজায় প্রতি বছর কোটি খানেক মানুষ পিরামিড দেখতে এলেও সুদানের পিরামিডগুলোতে বছরে পাঁচ লাখ পর্যটক আসে কিনা সন্দেহ!

দূরে থেকে পিরামিড। ছবি: লেখক

পরিকল্পনা ছিল ‘অবশ্য দর্শনীয় আকর্ষণ’ হিসাবে পরদিন সকালে প্রথমে সাক্কারা এবং পরে গিজায় পিরামিড দেখে বিকেলের মধ্যে কায়রো ফিরে আসবো। সকাল আটটায় আমাদের বেরিয়ে যাবার কথা। সময় সচেতন চালক তার বাহন নিয়ে নির্ধারিত সময়ের মিনিট পনের আগেই এসে হাজির। দেশের বাইরে কোথাও গেলে আমরা সাধারণত পূর্ব নির্ধারিত সময়-সূচি মেনে চলি। নিজের ঘরে শুয়ে বসে আলসেমি করে সময় কাটানো যায়, কিন্তু ডলার পাউন্ড ইওরো দিয়ে কেনা সময় অকারণে বয়ে যেতে দেয়ার কোনো মানে হয় না। বিভিন্ন সময়ে অনেক দেশেই ঝিরঝির করে ঝরে পড়া তুষারের তীব্র শীতে, ঠা ঠা রোদের দুপুরে কিংবা তুমুল বৃষ্টির দিনে যথা সময়ে বেরিয়ে যাবার রেকর্ড আমাদের আছে। কাজেই আগের দিন প্রায় মাঝ রাত পর্যন্ত আড্ডা দিয়ে পরদিন সকাল সাতটায় উঠে পড়াটা তেমন কঠিন কিছু নয়।

সৌরভ আগেই বলে রেখেছিল, প্রথম দিন সন্ধ্যায় দেশি বিদেশি মিলিয়ে কয়েকজন অতিথি আসবেন। আয়োজন ঘরে হলেও ঘুম ভাঙার পরে আমরা লিভিংরুমে এসে বসার আগেই চলে এসেছেন আন্তর্জাতিক রেডক্রস কর্মকর্তা সৈয়দ আজিজ এবং তার স্ত্রী মান্নি সৈয়দ। জাতিসংঘের স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তা কামরুল হাসানসহ আরও দুই একজন। প্রাথমিক আলাপ পরিচয়ের পরে দেখা গেল আগে কখনো দেখা সাক্ষাৎ না হলেও আমরা আসলে পরস্পরের অনেক কাছের মানুষ। সৈয়দ আজিজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন আবৃত্তি চর্চায় যুক্ত ছিলেন। কণ্ঠশীলন এবং সংস্কৃতি সংসদ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক জগতের অনেকের সাথেই তার ঘনিষ্ট যোগাযোগ এখনো থেকে গেছে। যখন যে দেশে থাকেন সেখানে থেকেই বাংলা ভাষার কবিতা ও নাটকের চর্চা এবং উৎকর্ষের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। মান্নি সৈয়দ আমাদের সিনেমা জাগতের খ্যাতিমান পরিচালক চাষী নজরুল ইসলামের কন্যা। ঢাকার সাম্প্রতিক চলচ্চিত্র, নাটক এবং টেলিভিশন নিয়ে কথার ফাঁকে অনিবার্যভাবেই ঢুকে পড়েছে রাজনীতি ও অর্থনীতি। সান্ধ্যকালীন আড্ডায় পর্যায়ক্রমে যোগ দিযেছেন বৈমানিক রাজিউল ইসলাম এবং তার সুইস স্ত্রী ভ্যালেরি। রাজি বাংলাদেশের সেনাবাহিনি থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন আর ভ্যালেরি কায়রোতে সুইস দূতাবাসের কর্মকর্তা। সার্বক্ষণিক তথ্য উপাত্ত যোগান দিয়ে আড্ডা জমিয়ে রেখেছেন রানা ভাই আর খাদ্য পানীয়ের ব্যবস্থাপনা তো গৃহকর্তার উপরেই বর্তায়।

পথ নির্শের সামনে সিলভিয়া ও হেনা। ছবি: লেখক

আজকাল বাসায় বন্ধু বান্ধব নিয়ে পার্টির আয়োজন করলে আমাদের দেশেই স্ত্রী, কন্যা, বোন বা ভাবিদের গলদঘর্ম হয়ে রোস্ট-রেজালা, বিরিয়ানি-পোলাও কিংবা ফিরনি-ফালুদা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়তে হয় না। ছোটখাটো ক্যাটারিং সার্ভিস ছাড়াও পান্ডা ষণ্ডা নামের হোম ডেলিভারিওয়ালারা মুখরোচক খাবার বাড়ির দোরগোড়ায় পৌছে দেবার জন্যে একপায়ে দাঁড়িয়ে। বিদেশে তো এ সব চালু হয়ে গেছে আরও বহু বছর আগেই। কাজেই খাদ্য যোগান দেয়া স্থানীয় পাণ্ডারা আমার জানা অজানা নানা রকম খাবার দিয়ে গেছে এবং সে সব রান্নাঘর হয়ে টেবিলেও চলে এসেছে। স্বাস্থ্যবান মিশরিয় মুরগির গ্রিল বাদ দিলে বাদবাকি খাবার সম্পর্কে কিছু ধারণা নেয়া যেতে পারে। ভাতের পরে রুটিই যেহেতু ভেতো বাঙালির প্রাধান খাবার, সেক্ষেত্রে প্রথম প্রসঙ্গ রুটি নিয়ে। মিশরের ‘আইশ বালাদি’ আমাদের তন্দুর রুটি এবং হাতে বানানো রুটির মাঝামাঝি একটা জিনিস। নির্ভেজাল আটার তৈরি । সেই ফারাওদের আমল থেকেই নাকি ধনী গরিব সকল মিশরিয় এই রুটি খেয়েই জীবন ধারণ করে আসছে। আইশ মানে জীবন অর্থাৎ আমাদের যেমন পানির অপর নাম জীবন, মিশরিয়দের রুটির আপর নাম জীবন। প্রবহমান নীল নদ বাদ দিলে মরুভূমিতে পানির বড় অভাব, সম্ভবত সেই কারণেই পানি নয়, রুটিই এখানে জীবন।

পরিচিত খাবারের মধ্যে ফালাফেলের সঙ্গে পরিচয় অনেক আগের। এবারে কাতার এয়ারওয়েজের খাদ্য তালিকাতেও ছিল এই বড়া জাতীয় জিনিস। তবে একে বড়া না বলে পাকোড়াও বলা যেতে পারে। সেই ছোলার ডাল, মটরশুটি, পেঁয়াজ কাঁচা মরিচ ধনেপাতা এবং প্রয়োজনীয় মশলা ব্যবহার করে তেলে ভাজা। উপকরণ প্রায় এক হলেও আমাদের কাছে মিশরিয়দের চেয়ে ভারতীয়দের পাকোড়া অনেক বেশি সুস্বাদু! এই কারণে ফালাফেলের চেয়ে কোশারি আমার বেশি পছন্দের খাবার।

আইশ বালাদি। ছবি: লেখক।

মিশরের জাতীয় খাবার কোশারি আসলে এক ধরনের খিচুড়ি বললে ভুল বলা যাবে না। বাঙালির খিচুড়ির মূল উপাদান চাল আর ডালের সাথে ইতালির ম্যকারুনি মিশিয়ে দেবার বুদ্ধিটা মিশরিয়রা কোথায় পেয়েছিল জানি না, কিন্তু কোশারি এতেই এক ধরনের নতুন রূপ লাভ করেছে। এতে মশলা হিসাবে সাধারণত পেঁয়াজ ধনিয়া জিরা রশুন এবং টমেটো ব্যবহার করা হলেও ইচ্ছে মতো হটসস বা ভিনিগার দেয়া যেতে পারে। কোশারিতে ডালের বদলে ছোলা কিংবা ম্যাকারুনির পরিবর্তে স্প্যাগাটি দিলে হয়তো চেহারা খানিকটা বদলায় কিন্তু তাতে কোশারির চরিত্র বদলায় না। স্ট্রিট ফুড হিসাবে এর জনপ্রিয়তা থেকে পরবর্তী সময়ে অভিজাত রেস্তোরাতেও নিজের জায়গা করে নিয়েছে মিশরিয় খিচুড়ি! পানাহার শেষ করে অতিথিদের বিদায় দিয়ে ঘুমাতে রাত সাড়ে বারোটা বাজলেও নির্ধারিত সময়ের মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই আমরা গাড়িতে উঠে পড়েছি। তরুণ চালক বাসাম মাআদি এলাকারই একটা দোকানের সামনে গাড়ি থামিয়ে আমাদের পথপ্রদর্শক সিলভিয়াকে তুলে নিয়েছে। কায়রোর হেলওয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ট্যুরিজম এ্যান্ড হোটেল ম্যানেজমেন্টে গ্রাজুয়েশন করেছে সিলভিয়া নাবিল। গাড়িতে উঠে পরিচয় দেবার পরপরই সে তার জবরদস্ত একখানা সচিত্র কিতাব বের করে খ্রিস্টপূর্ব ছয় হাজার অব্দের ইতিহাস বর্ণণা শুরু করেছিল। রানাভাই তাকে একরকম থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘আসলে বিস্তারিত ইতিহাসের ব্যাপারে আমরা খুব বেশি আগ্রহী নই। তুমি বরং ফারাও রাজত্বকাল বা পিরামিড সম্পর্কে যে সব কথা ইতিহাসে নেই, তেমন কোনো গল্প থাকলে শোনাতে পারো।’

পিরামিডের সামনে উট। ছবি: লেখক।

মেয়েটি বোধহয় রানাভাইয়ের কথায় একটু অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিল। বই পুস্তক গুটিয়ে একেবারে চুপচাপ হয়ে যাবার পরে রানা ভাই আবার বললেন, ‘ইতিহাস আমরা জানতে চাই না তা নয়। তবে তা চোখের দেখার সাথে মিলিয়ে জানতে পারলেই ভালো। পিরামিড দেখা শেষ হলে কোথাও চা কফি খেতে খেতে তোমার বিবরণ শোনা যাবে।’ যদিও কথা ছিল প্রথমে সাক্কারা এবং পরে গিজায় যাওয়া হবে, কিন্তু সিলভিয়ার পরামর্শ অনুসারে গিজা হয়ে সাক্কারা যাওয়াই স্থির হলো। আমরা যখন গিজার পথে কায়রো শহর পাড়ি দিচ্ছি, তখন রাস্তার দুপাশে আবার সেই ধূলি ধুসর অসমাপ্ত অর্ধসমাপ্ত ভবনের সারি। বসবাস উপযোগি ভবনগুলোর দেয়ালেও দীর্ঘ দিন তেল পানি বা রং বার্নিশ পড়েছে বলে মনে হয় না। সিলভিয়াকে প্রশ্ন করে এর কোনো যুৎসই উত্তর পাওয়া গেল না। রানাভাই বললেন, বৃষ্টিহীন শুকনো আবহাওয়ার কারণে এখানে কোনো রংই স্থায়ীত্ব পায় না, সেই কারণে দেয়ালে যে সব রং ব্যবহার করা হয়, সেই রংও এ রকম ধূসর। আমরা এই ধূসর শহর পেরিয়ে গিজার দিকে এগিয়ে যাবার পথে অনেক দূর থেকে হঠাৎ করেই দেখা হয়ে গেল প্রাচীন বিশ্বের সাতটি বিস্ময়ের অন্যতম মিশরের পিরামিড! এরপর যানবাহন এবং গাছপালার ফাঁকে মাঝে মাঝেই উঁকি দিয়ে যাচ্ছিল পৃথিবীতে টিকে থাকা সবচেয়ে উঁচু দুটি পিরামিডের চূড়া।

আমাদের চোখে দেখা পিরামিডগুলোর মধ্যে ফারাও সম্রাট খুফুর তৈরি পিরামিডের উচ্চতা সবচেয়ে বেশি, এটি তৈরিও হয়েছিল সবচেয়ে আগে। গবেষকেরা গবেষণা করে বের করেছেন খুফুর পিরামিডের নির্মাণকাল খ্রিস্টপূর্ব ৪৭০০ অব্দ। তার অর্থ হলো এখন থেকে ছয়হাজার সাতশ বছরেরও আগে। মহামহিম ফারাও সম্রাটেরা সে সময়ের যাবতীয় খাদ্য পানীয়, সুখ সাচ্ছ্যন্দ এবং আরাম আয়েশ উপভোগের পরেও মৃত্যুটা মেনে নিতে পারেননি। মৃত্যু পরবর্তী জীবনে কিংবা পুনরুত্থানকালে নতুন করে বিলাসবহুল জীবনের প্রত্যাশায় দেহকে মমি করে রাখা এবং তা অনড় অজর কোনো প্রকোষ্ঠে সংরক্ষণের ধারাবাহিকতায় বিপুল বিত্ত বৈভব ও জনশক্তি কাজে লাগিয়ে তৈরি হয়েছিল পিরামিডের মতো স্থাপনা। নিশ্চয়ই সে সময়ের ধাপ্পাবাজ পুরোহিত যাজক বা ধর্মগুরুদের কেউ এই অমরত্বের ধারণা দিয়েছিল এবং ক্ষমতাবান সম্রাটেরা তা বিশ্বাস করে কাজে লাগাতেও কার্পণ্য করেনি।

পরবর্তী কয়েক মিনিটের মধ্যে বাসাম তার বাহন নিয়ে এসে দাঁড়ালো গিজার পিরামিডের প্রবেশ পথের পার্কিং-এ। এখানে টিকেট ঘর এবং প্রক্ষালন কক্ষ ছাড়াও রয়েছে বিস্তৃত পিরামিড চত্বরের পথ নির্দেশিকা। প্রক্ষালন কক্ষ ব্যবহারের জন্যে দশ ইজিপশিয়ান পাউন্ড অর্থাৎ ষাট টাকা আমার কাছে খুব বেশি মনে হয়নি। ইওরোপের যে কোনো জায়গায় দিতে হতো এক ইওরো, যা একশ টাকার সমান। সবগুলো পিরামিড ঘুরে দেখতে দুশ ইজিপশিয়ান পাউন্ড আর পিরামিডের ভেতরে ঢুকতে চাইলে গিজার ‘গ্রেট পিরামিডে’ চারশ এবং ছোট দুটি পিরামিড খাফরা ও সেনকাওরায় একশ পাউন্ড করে অতিরিক্ত টিকেট কিনতে হবে। গত শতকের পঞ্চাশের দশকেই সৈয়দ মুজতবা আলীর দুই সফর সঙ্গী পিরামিডের ভেতরে প্রবেশ করলেও তিনি নিজে ভেতরে যেতে উৎসাহ বোধ করেননি। কারণ, তিনি জানতেন সেখানে আসলে কিছু নেই। ‘জলে ডাঙায়’ যারা পড়েছেন তারা কায়রো ভ্রমণে গেলে নিশ্চয়ই পিরামিডের ভেতরে ঢুকতে চাইবেন না, আর আমার নিজের ক্ষেত্রে চরণযুগলের অসহযোগিতার কারণে পিরামিডের গায়ে খাড়া পাথুরে পথ বেয়ে ওঠা এবং অপরিসর সুড়ঙ্গ পথে নাম দুটোই অসসম্ভব। অতএব পিরামিডে প্রবেশের চারশ পাউন্ড বাঁচিয়ে আমরা সিলভিয়াকে অনুসরণ করে এগিয়ে চললাম খুফুর পিরামিডের পথে।

পিরামিডের সামনে থেকে। ছবি: লেখক।

আমরা যখন পায়ে হেঁটে সামনে এগোচ্ছি বাসাম তখন তার লাল গাড়িটা নিয়ে মূল পার্কিংলটে চলে গেছে। সেখানে অসংখ্য বাস, মিনিবাস, ট্যুরিস্ট ভ্যান এবং ছোট ছোট গাড়ির ভিড়ে নিজেদের বাহন খুঁজে বের করাই কঠিন। যন্ত্রযানের পাশাপাশি এখানে ঘোড়ায় টানা টাঙ্গা এবং মরুর জাহাজ উটের আনাগোনা দেখে বোঝা যায় মিশরের পর্যটন ব্যবস্থা তাদের অতীত ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছে। তবে ঘোড়ার গাড়ি পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা হলেও এই এলাকায় উটের পিঠে চড়ে মরুভূমি পাড়ি দেয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। নেহায়েতই সৌখিন পর্যটক উটের পিঠে হেলেদুলে এক আধ কিলোমিটার ঘুরে এসে উটের কাফেলায় সামিল হবার অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফিরে যায়।

কাঠের পাটাতনে পায়ে চলার পথ ধরে পিরামিডের চড়াইতে উঠবার জন্যে যেখানে পাথরের খাঁজে খানিকটা পথ তৈরি করা হয়েছে আমরা যখন সেখানে এসে দাঁড়ালাম তখন অসংখ্য দর্শনার্থী বিশাল আকৃতির পাথর খণ্ডে পা রেখে উর্ধ্বলোকে যাত্রা করেছেন। আমার দুই সফর সঙ্গী উপরের দিকে উঠতে শুরু করলে পিরামিডের ছায়ায় আমাকে একা পেয়ে দাঁড়িয়ে সিলভিয়া আবার তার ইতিহাসের ঝাঁপি খুলে বসেছিল। এবারে অবশ্য বই পুস্তক থেকে নয়, তার আত্মস্থ করা বিবরণী থেকে জানা গেল খ্রিস্টপূর্ব ৪৬০০ অব্দে নির্মিত গিজার দ্বিতীয় পিরামিড খাফরার উচ্চতা চারশ একাত্তর ফুট আর ৪৫৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের সেনকাওয়ার উচ্চতা ২১০ ফুট। এক লক্ষ শ্রমিক কুড়ি বছর ধরে একটার উপরে আরেকটা পাথরের চাঁই সাজিয়ে নির্মাণ করেছে এই ‘গ্রেট পিরামিড অফ গিজা’!

ঘরোয়া আড্ডা  কায়রো। ছবি: লেখক।

আমি ভাবছিলাম অন্য কথা। এতোদিন দূরে থেকে যা ভেবেছিলাম পিরামিড আসলে তেমন সুক্ষ্ণ শিল্পকর্ম নয়। এখানে জ্যামিতি, ত্রিকোণোমিতি বা অংকের হিসাব নিকাশ আছে, দূর দূরান্ত থেকে পাথর বহন করে আনার ব্যয় ও ব্যবস্থাপনা আছে, রক্ত জল করা পরিশ্রমে নিয়োজিত লক্ষ লক্ষ শ্রমদাসের জীবন ধারণের বিপুল বিনিয়োগ আছে, সবচেয়ে বড় কথা সমকালীন সকল ক্ষমতার উৎস সম্রাটদের বিশ্বাস ও উচ্চাকাক্সক্ষার প্রতিফলন আছে, কিন্তু এখানে উঁচুমানের শিল্পের কোনো সুক্ষ্ণ কারুকাজ নেই। সিলভিয়ার কথা শুনতে শুনতে এবড়ো থেবড়ো পাথরের শরীর থেকে আমার দৃষ্টি চলে যায় পিরামিডের শীর্ষে।

(চলবে)

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad

জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি

ছবি: সংগৃহীত

ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর সাথে এবার জুটি বাধলেন বাংলাদেশের তারকা অভিনেত্রী আফসানা মিমি। বিপ্লবী দীনেশ গুপ্তর জীবনকাহিনি নিয়ে এই সিনেমা নির্মাণ করতে যাচ্ছেন ভারতের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা মানসমুকুল পাল।

জানা গেছে, হুমায়ূন আহমেদের একটি উপন্যাসকে কেন্দ্র করে সিনেমা বানাবেন নির্মাতা মানসমুকুল পাল। আগামীতে সেই সিনেমাতেই দেখা যাবে মিঠুনকে। শোনা যাচ্ছে, অভিনেতার বিপরীতে দেখা যেতে পারে বাংলাদেশি অভিনেত্রী আফসানা মিমিকে। যদিও নিশ্চিত করে কিছু জানাননি নির্মাতা। তবে ভারতের জাতীয় পুরস্কারজয়ী এই পরিচালক চিত্রনাট্য লেখার আগে বাংলাদেশ ভ্রমণ করবেন।

মূলত সিনেমার চিত্রনাট্য লেখার আগে হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসে থাকা জায়গাগুলো নিজে ঘুরে দেখতে চান মানসমুকুল। ভারতীয় গণমাধ্যমে এ প্রসঙ্গে নির্মাতা বলেন, হুমায়ূন আহমেদের যে উপন্যাস অবলম্বনে চিত্রনাট্য লেখা শুরু করছি তাতে বাংলাদেশের একাধিক জায়গার উল্লেখ রয়েছে।

তাই ঢাকা, কিশোরগঞ্জসহ অন্যান্য জায়গায় যাওয়ার কথা আছে। সেই জায়গাগুলো নিজে দেখলে উপলব্ধি থাকবে, আর তাতে চিত্রনাট্য লেখার কাজও সহজ হবে।

শুধু জায়গা পরিদর্শন নয়, বাংলাদেশে এসে অভিনেত্রী আফসানা মিমির সঙ্গেও দেখা করবেন মানসমুকুল। তিনি এ-ও জানান, সিনেমার অধিকাংশ শুটিং বাংলাদেশে হবে। কিন্তু এখনই নয়। বর্তমানে মানসমুকুলের হাতে ৩টি সিনেমার কাজ রয়েছে। সেসব চলচ্চিত্র শেষ করে তবেই তিনি এই সিনেমার কাজ শুরু করবেন।

Header Ad

দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তারেক রহমান বলেন, সব রাজনৈতিক দল মিলে আমরা এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। দেশের মানুষের হাতে ক্ষমতা ফিরে যেতে নির্বাচন প্রয়োজন।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য আরও ২ বছর আগে সংস্কারের প্রস্তাব ৩১ দফা দিয়েছি আমরা। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। একজন শুরু করবে, আরেকজন টেনে নিয়ে যাবে। অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ও সত্যিকারের নির্বাচন আয়োজন করতে পারলে, জনগণ তবেই জনপ্রতিনিধি বাছাই করতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।

নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, অনেকের মনে প্রশ্ন আমরা কেন বারবার নির্বাচনের কথা বলছি। আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্বর্তী সরকার একটি নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে। এর ফলে সংসদের যারা জনপ্রতিনিধি বাছাই হয়ে আসবে, তারা সংসদে বসে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, কীভাবে দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরের সমস্যা সমাধান করা যায়। সকল সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব প্রকৃত ও সত্যিকারের একটি নির্বাচনের মাধ্যমে।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দায়িত্ব নিতে হলে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে আশপাশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। যদি এই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারা যায়, তবেই মানুষ আপনাদের দায়িত্ব দিবে, অন্যথায় দ্বিতীয়বার ভাববে।

এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপি খুলনা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. শরীফুজ্জামান শরীফ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল প্রমুখ।

Header Ad

২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা

ফাইল ছবি

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে

রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া আগামী পাঁচদিনে আবহাওয়া পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান