শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৭

নেই দেশের নাগরিক

‘আর বাড়ি! দেশই নেই তো বাড়ি! আল্লাহ কি আমাদের কপালে কোনো বাড়ি লিখে পাঠিয়েছেন?’ কোঁকড়ানো চুলের লোকটির গলা মুষড়ে পড়ল। চোখের সোনালী ফ্রেমের চশমাটা খুলে চোখ মুছল। যেন এতক্ষণ ফদফদ করে বকার সময় কষ্টের যন্ত্রণার যেসব দলাগুলোকে পেটের মধ্যে জোর করে ঠেসে পুরে রেখেছিল, সেসব যেন এবার কণ্ঠে এসে ধাক্কা দিল। আর কতক্ষণ! মানুষ যে কষ্টকে বেশিক্ষণ চেপে রাখতে পারে না। একটা সময় ঠিকই মেঘভাঙার মতো দুদ্দাড় করে ভেঙে পড়ে। তখন মানুষটা যে পাথরের নয়, কাদামাটির, তা বোঝা যায়।

লোকটিকে দেখে মনে হচ্ছে শিক্ষিত লোক। পরনের বেশভুষা আর কথাবার্তার ধরণ দেখে সেটাই বলছে। লোকটি চোখে আবার চশমাটা এঁটে ভেজা গলায় বলতে লাগল, ‘মংডুর ফাতাংজায় আমাদের বাড়ি ছিল। পাকা দালানের দোতলা বাড়ি। চারপাশে দশ ইঞ্চি ইটের পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। ফাতাংজার ডিহি মাঠে আমাদের এক দাগে চোদ্দ বিঘে আবাদে জমি। ভুঁইগুলো খুবই উর্বর। বছরে তিন তিনটে ফসল হয়। তবুও মাটি বুড়ো হয় না। একের পর এক ফসল বিহিয়েই যায়। আমরা তিনভাই। এত ঠুকুরমুকুর হলেও কোনোদিন ভিনো হইনি। গোটা গায়ে একমাত্র আমাদেরই যৌথপরিবার। উঠোনের উত্তর কোণে দুটো ধানের গোলা রয়েছে। বছরে যা ধান পেতাম তাতেই আমাদের সংসার স্বচ্ছলভাবে চলে যেত। বাড়িতে এক গোহাল ছাগল-গরু। সব ছেড়ে ছুড়ে চলে আসতে হল জানের বেগাত্তায়!’ হাউমাউ করে উঠল লোকটা। লোকটার কথা শুনতে শুনতে মতির মনও ফুড়ুৎ করে উড়ে গেল তাদের দংখালীর বাড়িটায়। আটচালার মাটির ঘর। দক্ষিণ দুয়ারি লম্বা শিতেনের বারান্দা। পাশেই নীমগাছটাকে আড়াল করে দুচালার টালির ঘর তুলছিল নুহু। দুটো ঘরে সবার ঘেঁষাঘেঁষি হচ্ছিল। নুহু কেবলই ইটের দেওয়াল তুলে মাথায় বাঁশের ফ্রেম বসাচ্ছিল। জাবের চাচা ভালো ঘরামী। তার হাতেই পুরোনো আটচালা ঘরটা বছর ঘুরতেই নতুন করে ঝাড়া হয়। পাকা বাঁশের খাঁচা, চাছা বাতা, নারকেলের ছোবড়ার দড়ি, পেরেক আর নতুন খড় দিয়ে ছাওয়া হয় চালা, ডাপ, কোঠা। মতি মাথায় টালি দেব, টালি দেব করলেও বাপ আলি জাফর দিতে দেননি। তিনি বলেন, খড়ের ঘরের মতন কি আর মজা আছে রে। চৈত্রের রৌদ্রেও ঘর কেমন কালহা থাকে, দেখতে পাস নে? আমি মরে গেলে ওসব টালিফালি লাগাস। এখন খড়ই থাক। বড় বাড়িটার খড়ের চালাটা এখনো আকাশের দিকে মুখ তুলে আছে, না জল্লাদরা এসে সব আগুন ধরিয়ে দিয়েছে? মনে পাক দিয়ে উঠল মতির। এই বাড়িটা তাদের বাপ-দাদোর আমলের। দাওয়ায় এক গড়া দিলে, এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে যেতে যেতে মা’র দুটো রুটি স্যাকা হয়ে যেত। দাওয়াটা এতই বড়! এতক্ষণে নিশ্চয় এই দাওয়ায় খড়ের ছাইগুলো ঝরে ঝরে পড়েছে? হুড়মুড় করে খসে পড়েছে বাঁশের পোড়া বাতা। ডাপে গোঁজা রফিকের কাজললতাটাও নিশ্চয় আগুনে পুড়ে লাল হয়ে গেছে। মা’র পানের বাটাটাও ছাইয়ের মধ্যে পড়ে হয়ত এতক্ষণে ছাই! যাঁতিটায় কতদিন সুপারি কেটে দিয়েছি মাকে। মা গোটা পানপাতাটায় গোল করে চুন ডলত। তাতে সুপারি কুচি, জর্দার গুড়ো আর একটা এলাচ দিয়ে কচমচ করে মুখে এক খিলি পান পুরে দিত। গালটা বেলুনের মতো ফুলে উঠত। মা যখন মুখে পান পুরে দিত, তখন যেন মনে হত মা’র থেকে সুখি মনে হয় এই পৃথিবীতে আর কেউ নেই। মা তখন আশমোড়া দিয়ে বসে পুরোনো দিনের কথা বলত। দেশের কথা, দশের কথা, ধম্মের কথা, জাতিতে জাতিতে মিলমিশের কথা। কত্ত গালগল্প। সে কথায় যে দরদপনা থাকত, তা আর কোত্থাও পাওয়া যাবে না।
‘আপনাদের ফাতাংজা কি একেবারে সুনসান? না এখনও কেউ কেউ আছেন?’ বৈঠাটাকে জল থেকে নৌকাতে তুলতে তুলতে জিজ্ঞেস করল নুহু। জলে মিহি করে একটা ছলাৎ শব্দ হল।
‘না, আর মনে হয় সেরকম কেউ বাকি নেই। যারা ছিল, তাদেরকে মনে হয় হত্যা করে বাড়িঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে! আমরাই তো আর কটাদিন দেখি দেখি করে লেট করে ফেলেছিলাম। গত পরশু রাতে না পালিয়ে আসতে পারলেই আর রেহাই থাকত না! ওদের হাতে জবেহ হয়ে যেতাম। আমরা যেই ঘাটে নৌকা ভিড়িয়েছি অমনি একটা বিশাল সংখ্যক সেনার দল গ্রামে হুড়মুড় করে ঢুকে পড়েছিল। মিনিট দশেকের ফারাকে কোনোক্রমে জানে বেঁচে গেছি।’
‘সবই আল্লাহর কুদরত।’ লোকটা এবার কাঁপছে। আতঙ্ক তার শরীরকে হালিয়ে দিচ্ছে। ভ্যাদভ্যাদে গরমে লোকটা শীতের মতো হালছে! আসলে মানুষের মনেরও যে শীত-গ্রীষ্ম থাকে। আর সে সব বাইরের রোদ ঝড় বৃষ্টিতে ঠাণ্ডা বা গরম হয় না। সেসব ঘামে বা হালে জীবনের ঘটনা দুর্ঘটনার উপর। আপদ-বিপদের ছোবলে কামড়ে। সে মনে যেমন মোষের মতো মেঘ ওঠে, ফণী হয়ে তেড়ে আসে মারণঝড়, ঝেঁপে নামে বৃষ্টি, ঠিক তেমনি খিলখিল করে ওঠে সোনালি রোদ।
‘কার সাথে অত কথা বলছিস নুহু? আমাদের গাঁয়ের কি কারও দেখাটেখা পেলি নাকি?’ ছইয়ের ভেতর থেকে জানতে চাইলেন হালেমা।
‘না, মা, আমাদের দংখালীর না। এদের বাড়ি ফাতাংজা।’ গলা নামিয়ে বলল নুহু। তারপর গলাটা কিছুটা তুলে কোঁকড়ানো চুলের লোকটাকে জিজ্ঞেস করল, ‘দুটো নৌকা কি একসাথে জুড়ে দেব?’
‘তা করলে তো ভালোয় হয়।’ লোকটি বলল।
‘তুমি কী বলছ, মতিভাই। নৌকাদুটো কি একসাথে জুড়ে দেব?’ মতির দিকে ঘাড় ঘোরালো নুহু। মতি তখনও বুঁদ হয়ে আছে তাদের ফেলে আসা দংখালীতে। ঘোরে মুদে আছে। নুহু একটু গলা চড়াল, ‘মতিভাই, এই মতিভাই?’ নুহুর উচ্চ ডাকে ঘোর ভাঙল মতির, ‘হু, কী বলছিস?’
‘বলছি, দুটো নৌকা কি একসাথে জুড়ে দেব? ওদের আপত্তি নেই। ওরাও চায়ছেন, একসাথে যেতে।’
‘সে তো ভালো কথা। দল ভারী হবে। তা ছাড়া জোড়নৌকা পানির তোড়ও ঠেকাতে পারবে।’ ঘাড়ের গামছাটা দিয়ে মুখ মুছল মতি। নুহু নারকেলের ছোবড়ার দড়িগুলোকে বগলে পাজা করে ধরে খাড়া হয়ে দাঁড়াল। অপর নৌকাটা থেকে একজন বেঁটেখাট গাট্টাগোট্টা লোক একটা ফোলা টিউবে কোমর ঢুকিয়ে ঝপাং করে জলে লাফ মারল। নদীর নীল জল জ্যান্ত মানুষের ছোঁয়া পেয়ে মিহি করে কোমর দুলিয়ে উঠল। ‘উরি বাব্বা, কি ঠাণ্ডা গো!’ জলের উপর মুখ তুলে নুহুকে বলল, ‘আপনি রশি ফেলুন, আমি তলার আংটার সাথে বেঁধে দিচ্ছি।’ ঝপাং করে রশির বান্ডিলটা বগল থেকে ছিটকে জলে ফেলল নুহু। জলে থাকা লোকটি মিহি স্বরে বলল, ‘লোহার আংটাটা দেন, রশিটাকে টাইট দিতে হবে।’ মতি হাত বাড়িয়ে লোহার আংটাটা লোকটাকে দিল। নুহু একবার এ নৌকা একবার ও নৌকা করে করে রশির বাঁধন দিল। এভাবে তল থেকে মাথা পর্যন্ত দুটো নৌকা রশির বাঁধনে পড়ে একটা বড় নৌকায় পরিণত হয়ে গেল। বাঁধা সম্পূর্ণ হয়ে গেলে নৌকার কাণা ধরে বেঁটে লোকটা উপরে উঠে এল। নুহু যেই বৈঠার একটা ঠেলা মারল, অমনি কচমচ করে গড়তে শুরু করল জোড় বাঁধা দুটো নৌকা। যেন দুটো নৌকা নয়, দুটো বাড়ি, দুটো পাশাপাশি গাঁ, দুটো জোড় বাঁধা দেশ। আরিফা কুপিটা আবার ধরাল। দুটো নৌকায় জ্বলছে দুটো কুপি। অন্ধকারে কুপি দুটোর শিখাকে দেখে মনে হচ্ছে, যেন নদী জ্বলছে! নদীর মুখ দিয়ে বের হচ্ছে আগুনের লেলিহান শিখা। তার অন্তর পুড়ে যেন যন্ত্রণার জিভ ললকাচ্ছে!

টিমটিম করে এগোতে থাকল নৌকা। নুহু পা ছড়িয়ে টান মারল বৈঠা। রাত মধ্যগগন থেকে তার লম্বা ছায়া ফেলতে শুরু করেছে। দূর থেকে দেখা যাচ্ছে বিজিবির সীমান্ত চৌকির টিমটিমে আলো। পাড় লাগোয়া বসতির এলেবেলে আলোর বিন্দু। পুবে আকিয়াবের উপকূল সেভাবে চোখে পড়ছে না। অন্ধকারের চাদরে মুড়ে আছে চরাচর। এভাবেই সীমান্তের অন্ধকার, নেইদেশের অন্ধকার মতি নুহুদেরকে জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। মনের মধ্যে বেড়ে উঠছে অন্ধকারের ভয়। ফণা তুলে বসে থাকা অন্ধকার যেকোনো সময় ছোবল মারতে পারে। খুবলে তুলে নিতে পারে চোখ।

‘যেখানে যুগযুগ ধরে বাপ-দাদো চৌদ্দ পুরুষ বাস করে আসছে, আর শয়তান সেনারা বলছে কি না যে আমরা নাকি ভিনদেশের লোক!’ নৌকার খোলে পা ঝুলিয়ে বসে কোঁকড়ানো চুলের লোকটি বিড়বিড় করে উঠল।
‘ডাহা মিথ্যে কথা।’ গামছাটাকে মাথায় ফেট্টি বাঁধতে বাঁধতে ফুঁসে উঠল মতি। তারপর চোখ টেরিয়ে বলল, ‘যদি তাইই হবে, তবে এতদিন আমাদেরকে ওরা থাকতেই বা দিল কেন?’
‘অথচ ইতিহাস কিন্তু অন্য কথা বলছে। এই রাখাইন অর্থাৎ পূর্বের আরাকান একসময় পূর্ব ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। আমরা একসময় সবাই হিন্দু ছিলাম।’

‘এই বার্মিজরাও নাকি বাইরে থেকে এখানে এসেছিল?’ মনের খটকাটা প্রকাশ করল মতি। মতিও কিছু কিছু ইতিহাস জানে। সে অত হাদাভোদা মূর্খ নয়। বোর্ডের পরীক্ষা না দিলেও, আটক্লাস পর্যন্ত পড়েছে। তা ছাড়া সে অনেক চেপে রাখা ইতিহাসও নাড়াঘাটা করেছে। সে জানে, সত্যিকারের ইতিহাস তাদের স্কুলের সিলেবাসে ছিল না। সেখানেই অনেক কিছুই বিকৃত করে উপস্থাপন করা হয়েছে। শাসকের অঙ্গুলি হিলনে সাতকে পাঁচ পাঁচকে সাত করা হয়েছে।
‘হ্যাঁ, সেটা দশম শতক। মঙ্গোলীয় ও তিব্বতি বার্মিজরা এখানে আসে।’
‘ইসলাম ধর্মের বিস্তার কবে হয়?’
‘বারশ তিন সালে মুসলমান শাসক ও বণিকদের সংস্পর্শে এই অঞ্চলে ইসলামের বিস্তার ঘটে। চতুর্দশ ও পঞ্চদশ শতকে আরাকান স্বাধীন মুসলিম রাজ্য ছিল। তবে সেসময় মুসলমান ও বৌদ্ধদের মধ্যে ব্যাপক সম্প্রীতি ছিল।’ কথাটা বলেই লোকটি ছড়ানো পাদুটো জড়ো করে, চশমাটা খুলে পাশে রেখে, হাঁটুর ওপর মাথা রেখে বললেন, ‘১৭৮৪ সালে বার্মিজ রাজা বোদাওপায়া এই এলাকা দখল করেন। এবং বার্মার অধীনে করদ রাজ্যে পরিণত করেন। শুনলে অবাক হবেন, আরাকান রাজ্যের রাজা বৌদ্ধ হলেও তিনি মুসলমান উপাধি গ্রহণ করতেন। এবং আরও তাজ্জব ব্যাপার, তার মুদ্রাতে ফারসি ভাষায় লেখা থাকত কালেমা। একপাশে থাকত বার্মি বর্ণ অন্য পাশে ফার্সি বর্ণ।’
‘একেই বলে সম্প্রীতির মেলবন্ধন। ধর্মে ধর্মে মিল-মহব্বত। কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে বাস করা। মুসলমান বৌদ্ধ ভাই ভাই।’
‘রোহিঙ্গা’ নামটি এসেছে আরাকানের রাজধানীর নাম ‘ম্রোহং’ থেকে। ‘ম্রোহংরোহাংরোয়াইঙ্গিয়ারোহিঙ্গা’। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে আরাকানকে ডাকা হত ‘রোসাং’ বলে।’
‘তাহলে এটা তো ঠিক, আমরা বানের পানিতে ভেসে আসিনি?’
‘একদমই না। বরং আমরাই আদি।’ দাঁত এঁটে বললেন ভদ্রলোক। মতির চোখে উৎফুল্লতার দ্যুতি। গামছা দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে মতি বলল, ‘আচ্ছা, আপনি এত ইতিহাস জানেন, আপনি কি ইতিহাসের লোক?’
‘হ্যাঁ ভাই, আমার নাম ইয়াসিন আলি, এলাকায় সবাই ‘ইয়াসিন মাস্টার’ বলে ডাকে। আমি ফাতাংজা হাইস্কুলের ইতিহাসের শিক্ষক। তা ছাড়া ইতিহাস নিয়ে টুকটাক গবেষণাধর্মী কাজও করি। ওটা আমার নেশা বলতে পারেন।’ লোকটির ঠোঁটে আলতো হাসি। দুশ্চিন্তার কালো মেঘ জমে থাকা মুখে এইটুকু হাসি যেন জান কবজের ফিরিস্তা আজরাইলকেও হাসিয়ে দিল। মতিও যেন হাসিটার কিছুটা ধার করে নিয়ে নিজের মুখে মেখে নিল।

‘আচ্ছা ভাবুন তো, শত শত বছর আগে কে কোথা থেকে এসেছে, এই ভেবে যদি মানুষকে বহিরাগত চিহ্নিত করা হয়, তাহলে তো দেখতে গেলে দুনিয়ার সবাইই বহিরাগত? কোনো মসজিদের তলায় মন্দির ছিল, কোন মন্দিরের নিচে মঠ ছিল, এসব খুঁড়তে গেলে তো পৃথিবীর কোথাও কোনো মানবসভ্যতায়ই থাকবে না! না থাকবে দেশ, না থাকবে ধর্ম। এসব মুর্খামি নয়?’
‘আসলে এরা নিজের পায়ে নিজেই কুড়ুল মারছে।’ গলার কাশিটাকে আলুথালু করে ঝেড়ে বলল নুহু।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

আরএ

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার, শঙ্কায় বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ স্বপ্ন

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শুরুতে দুর্বল প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে টানা তিন জয়ে শীর্ষে ছিল নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। তবে শক্ত প্রতিপক্ষের মুখে পড়ে একের পর এক হারে এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছে তাদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। প্রথমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩ উইকেটে হারের পর শনিবার (১৯ এপ্রিল) লাহোরে পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে বসেছে বাংলাদেশ।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। মাত্র ২১ রানের মধ্যেই ফিরেছেন তিন ব্যাটার—ফারজানা হক (০), দিলারা আক্তার (১৩) ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা (১)। এরপর শারমিন আক্তার ও রিতু মনির ৪৪ রানের জুটি এবং রিতু ও নাহিদা আক্তারের ৪৭ রানের জুটি কিছুটা স্থিতি আনলেও তা বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি। রিতু মনি করেন ৪৭ রান, আর ফাহিমা খাতুন অপরাজিত থাকেন ৪৪ রানে। ৫০ ওভারে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৭৮ রান। পাকিস্তানের সাদিয়া ইকবাল ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দেন।

 

ছবি: সংগৃহীত

জবাবে পাকিস্তানও শুরুতেই শাওয়াল জুলফিকারকে হারায়, যাকে এলবিডব্লিউ করেন মারুফা আক্তার। তবে এরপর সিদরা আমিন (৩৭), মুনিবা আলি (৬৯), আলিয়া রিয়াজ (৪৮*) এবং নাতালিয়া পারভেজ (১৩*) মিলে ৩৯.৪ ওভারে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান।

এই হারের ফলে বাংলাদেশের নেট রানরেট নেমে এসেছে +০.৬৪-এ। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নেট রানরেট এখন -০.২৮। ফলে এখন বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে থাইল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের দিকে। ক্যারিবিয়ানরা যদি বড় ব্যবধানে না জেতে, তবেই কেবল বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বাংলাদেশের।

শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ব্যর্থতা, ব্যাটিং দুর্বলতা এবং ধারাবাহিকতা না থাকায় কঠিন হয়ে উঠেছে টাইগ্রেসদের বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করা। এখন সব কিছু নির্ভর করছে অন্য দলের পারফরম্যান্সের ওপর, যা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ নারী দলের জন্য উদ্বেগের বিষয়।

Header Ad
Header Ad

ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ জানানো যাবে দুই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে

ছবি: সংগৃহীত

ঘুষ, দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার হলে এখন সরাসরি ই-মেইলে অভিযোগ জানানো যাবে স্থানীয় সরকার ও যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে। অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে এবং যথাযথ প্রমাণসহ অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি এবং ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে সরাসরি অভিযোগ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, দুই মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ যেকোনো সংস্থা বা দফতরে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়া, দুর্নীতি, অনিয়ম কিংবা সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হলে তা ই-মেইলে জানাতে পারবেন সেবা গ্রহীতারা।

অভিযোগ পাঠানোর ঠিকানা:
advisorasifofficial1@gmail.com

পোস্টে বলা হয়, অভিযোগের সঙ্গে যথাযথ তথ্য ও প্রমাণ সংযুক্ত করলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেকোনো অভিযোগ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে এবং অভিযোগকারীর পরিচয় সম্পূর্ণরূপে গোপন রাখা হবে।

"জনস্বার্থে এই উদ্যোগ। ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে সক্রিয় নাগরিক অংশগ্রহণ আমাদের সবচেয়ে বড় প্রেরণা।"

এ উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেকে। তারা মনে করছেন, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘব এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এটি একটি সাহসী পদক্ষেপ।

Header Ad
Header Ad

টঙ্গীতে দুই শিশুকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা, মায়ের স্বীকারোক্তি

টঙ্গীতে দুই শিশুকে কুপিয়ে হত্যার শিকার করেছে মা। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের টঙ্গীর আরিচপুর এলাকায় দুই শিশু সন্তানকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন তাদের মা সালেহা বেগম। নিহতরা হলেন মালিহা আক্তার (৬) ও আবদুল্লাহ বিন ওমর (৪)। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম জানান, আরিচপুরের জামাইবাজার রুপবানের টেক এলাকার সেতু ভিলা ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘর থেকে রক্তমাখা একটি বঁটি জব্দ করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় ঘরে ছিলেন শুধু সালেহা বেগম। সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা গেছে, বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে অন্য কেউ ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেনি। ঘটনার পর সালেহা নিজেই তার দুই দেবরকে ডেকে আনেন এবং তার কথাবার্তা অসংলগ্ন ছিল।

পরে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হলে মধ্যরাতে সালেহা স্বীকার করেন, তিনিই বঁটি দিয়ে দুই সন্তানকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। তবে তিনি কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, তা এখনো অস্পষ্ট।

নিহত শিশুদের বাবা আবদুল বাতেন মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তাতুয়াকান্দি এলাকার বাসিন্দা। পরিবার নিয়ে তিনি ওই ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন।

সালেহার মা শিল্পি বেগম জানান, সালেহা দীর্ঘদিন ধরে মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগছেন। তবে কখনও অস্বাভাবিক আচরণ করেননি। পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং সালেহার মানসিক অবস্থা যাচাই করতে চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে।

এদিকে দুই শিশুর মরদেহ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ বলছে, ঘটনাটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং বিস্তারিত তদন্ত শেষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় হার, শঙ্কায় বাংলাদেশের নারী বিশ্বকাপ স্বপ্ন
ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ জানানো যাবে দুই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে
টঙ্গীতে দুই শিশুকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা, মায়ের স্বীকারোক্তি
টানা ৫ দিন দেশজুড়ে বৃষ্টি, তাপমাত্রা বাড়ার পূর্বাভাস
বাফুফের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সরফরাজের পদত্যাগ
ভর্তুকি মূল্যে পাটের তৈরি বাজারের ব্যাগ সরবরাহ করা হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা
রবিবার সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের
দেশের ইতিহাসে এবারের নির্বাচন সর্বোত্তম হবে: প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে ভারত: রিজভী
ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!
জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয় : নাহিদ ইসলাম
আ.লীগের মিছিল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ
হাসিনা-কাদেরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন
নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর সেই শিশু সেহেরিশের লাশ উদ্ধার
আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কাজ করছে সরকার
লাল কাপড়ে ঢাকা হবে দেশের সব পলিটেকনিকের ফটক
৬০ বছর বয়সে বিয়ে করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে ১২ কেজি রূপার গয়না জব্দ