শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

সায়েন্স ফিকশন 

প্রাণী 

বিউন তার চশমাটা খুলে টেবিলের উপর রাখল। তারপর চেয়ারে হেলান দিয়ে ডুবে গেল গভীর চিন্তায়। এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে সে। আদৌ বিশেষ প্রাণীগুলো সে বিক্রি করবে, কি করবে না। আর বিক্রি করলে মূল্য কেমন চাইবে তা এখনো ঠিক করতে পারেনি। অত্যন্ত মূল্যবান আর প্রায় বিলুপ্ত প্রজাতীর এই প্রাণী মহাবিশ্বে একমাত্র পৃথিবীর কেন্দ্রীয় প্রাণী সংরক্ষণাগারে সংরক্ষিত রয়েছে। তবে সবগুলোই ক্লোন, আর একারণে সবগুলোর চেহারা একই রকম। মহাবিশ্বের সকল গ্রহবাসী যেন অতি বুদ্ধিমান এই প্রাণীদের কখনো ভুলে না যায় সেজন্যই ক্লোনের মাধ্যমে এদেরকে সংরক্ষণ করা হয়েছে। প্রাকৃতিক উপায়ে এদের সংরক্ষণের কোন উপায় নেই, কারণ এই প্রাণীর মেয়ে প্রজাতি অনেক আগেই পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় প্রাণী সংরক্ষণাগারে এই প্রাণীদেরকে এক নজর দেখার জন্য বিভিন্ন গ্রহ থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার গ্রহবাসীরা ভীড় করে। কমপক্ষে ছয় মাস পূর্বে ওয়েবসাইটে টিকিট কাটতে হয়। কেন্দ্রীয় প্রাণী সংরক্ষণাগারের নিরাপত্তা কর্মীদের দর্শনার্থীদের ভীড় সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। টিকিটের মূল্য তিনগুন করেও কোন লাভ হয়নি। বরং দিনে দিনে দর্শনার্থীদের সংখ্যা বেড়েই চলছে। মহাবিশ্বে মৃত্যুর আগে সবাই অন্ত একবার এই অতি বুদ্ধিমান প্রাণীর দর্শন পেতে চায়, তা না হলে তাদের জীবন অপূর্ণ থেকে যাবে।

বিউন পেশায় একজন জীববিজ্ঞানী। পৃথিবী থেকে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের নিয়ে সে গবেষণা করে। এ জন্য তার বিশাল একটা প্রাণী গবেষণাগার আছে। এই প্রাণী গাবেষণাগারেই গোপন চেম্বারে সে গত এক বছর ধরে এই বিশেষ প্রাণীগুলোকে পর্যবেক্ষণ করছে। সে কখনো প্রাণীগুলোকে বিক্রি করতে চায়নি। সম্প্রতি মারাত্মক আর্থিক কষ্টে পড়ার কারণে তার বিকল্প কোন উপায় নেই। অবশ্য সে চারটি প্রাণীর মধ্যে দুটিকে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে কাজটা তাকে অত্যন্ত গোপনে করতে হচ্ছে। সে জানে এই প্রাণীদের কথা বাইরে প্রকাশ হলে কি হতে পারে। নিশ্চিত তার মৃত্যু হবে। তারপর এই প্রাণীগুলোকে প্রেরণ করা হবে কেন্দ্রীয় প্রাণী গবেষণাগারে যেখানে এদের দেহের উপর হাজারো নিষ্ঠুর আর নির্মম জৈবিক পরীক্ষা চালানো হবে। আর এ ঘটনা পৃথিবীর গত এক হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বিস্ময়কর সংবাদ হবে, কারণ এখন থেকে এক হাজার বছর পূর্বে এ ধরনের প্রাণীর সর্বশেষ অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল। সেই প্রাণীর ক্লোনই এখন কেন্দ্রীয় প্রাণী সংরক্ষণাগারে সংরক্ষিত আছে।


বিউন আগেই ঠিক করেছে গোপনীয়তা রক্ষার জন্য পৃথিবীতে কিংবা পৃথিবীর নিকটবর্তী কোন গ্রহে এই প্রাণীদের বিক্রি করবে না। তাইতো সে পৃথিবী থেকে অনেক দূরে অবস্থিত 'মিকিউ' গ্রহের ক্রেতা 'নিনন' এর কাছে প্রাণী দুটি বিক্রিতে সম্মত হয়েছে। নিনন কিছুক্ষণের মধ্যেই এখানে এসে পৌঁছাবে। নিরাপত্তার কারণে নিননের সাথে তার বিস্তারিত কথা হয়নি। এখানেই সকল কথা হবে। নিনন অবশ্য মিকিউ গ্রহের প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি। মূলত মিকিউ গ্রহের প্রাণীরা তাদের প্রাণী সংরক্ষণাগারকে আরো সমৃদ্ধ করার জন্য এই প্রাণী দুটিকে ক্রয়ের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিউন অবশ্য আশাবাদী সে খুব ভালো মূল্য পাবে। কারণ সে যে প্রাণী মিকিউ গ্রহের নিনন এর কাছে বিক্রি করতে যাচ্ছে তা মহাবিশ্বে এক কথায় অমূল্য।


বিউনের চিন্তায় ছেদ পড়ল নিননের আগমনে। বিউন সামনের চেয়ারে নিননকে বসতে ইশারা করল। তারপর বলল, আমি আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি নিনন।

ধন্যবাদ বিউন। আমার হাতে সময় খুব কম। তাছাড়া নিরাপত্তার বিষয়টা তো বুঝতেই পারছেন। তাই আমি চাচ্ছি অতি দ্রুত মিশন সম্পন্ন করতে।

আমিও তাই চাই। তবে আমি আপনাকে অনুরোধ করব নিরাপত্তার কারণে প্রাণীদের প্রজাতির নাম উচ্চারণ না করার জন্য। আমরা আমাদের আলোচনায় এই প্রাণীকে 'প্রাণী' বলেই সম্বোধন করব।

তাই হবে বিউন। এ

খন বলুন আপনার কাছে কি সত্যি এই প্রাণী আছে?

হ্যাঁ আছে। চারটি, দুটি মাঝ বয়সী এবং অন্য দুটি ওদের বাচ্চা। অর্থাৎ আপনার কাছে মেয়ে প্রাণীও আছে?

সন্দেহের চোখে বলল নিনন। হ্যাঁ আছে। একটি বড় মেয়ে, আর অন্যটি ছোট মেয়ে। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। পৃথিবীতে এই প্রাণীর যত ক্লোন রয়েছে সবই তো ছেলে। কোন মেয়ে তো নেই। হ্যাঁ তাই, কিন্তু আমার কাছে আছে। আপনি ওদেরকে পেলেন কিভাবে?আমি গবেষণার কাজে বনাঞ্চলে গিয়েছিলাম। সেখানেই মাটির নীচে আমি এদের ছোট্ট একটা এলাকার সন্ধান পাই। এক হাজার বছর ধরে বংশানুক্রমিকভাবে এরা এই এলাকায় বসবাস করে আসছিল। বনের মধ্যে হওয়ায় পৃথিবীর কেউ এই এলাকাটা খুঁজে পায়নি। এমনকি আমাদের নিরাপত্তা সংস্থার সদস্যরাও না। ঘটনাক্রমে এই এলাকাটি আমার নজরে পড়ে। সেখানেই এদের চারজনকে একটি ছোট্ট ঝোপের মধ্যে থেকে আটক করি।  তাহলে তো এরকম আরো প্রাণী থাকতে পারে। থাকতে পারে। তবে আমি পাইনি। অবিশ্বাস্য ব্যাপার! ওরা কি প্রতিহত করতে চেষ্টা করেনি?করেছিল। কিন্তু আমাদের সাথে পেরে উঠেনি। বুদ্ধির বিবেচনায় ওরা অতি উন্নত হলেও শক্তির বিবেচনায় আমাদের থেকে অনেক নিচে। যাইহোক, সেই থেকে প্রাণীগুলো আমার কাছে আছে। আমি অবশ্য সম্পূর্ণ গোপনীয়তা রক্ষা করে অতি যত্মে ওদের লালন পালন করছি। আপনি এই প্রাণীগুলোর শরীরে গবেষণার উদ্দেশ্যে কোন কৃত্রিম ওষুধ প্রবেশ করিয়েছেন কি?


না নিনন। প্রথমে আমি এদেরকে নিয়ে গবেষণাই করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেন যেন পারলাম না। প্রাণীগুলো এতো ভাল যে আপনাকে বোঝাতে পারব না। দেখলেই মায়া হয়। আর ওদের বাচ্চা দুটো কী ফুটফুটে! সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো ওদের অভ্যন্তরের ভালবাসা। ওরা নিজেরা একে অন্যকে খুব ভালবাসে। আমাদের মতো ওদের দুঃখ-কষ্ট, যন্ত্রণা, আনন্দ-বেদনা, সুখ-শান্তির অনুভূতি রয়েছে। আপনি দেখলে অবাক হবেন যে, ওরা আমাদের মতোই কাঁদতে পারে, কাঁদলে ওদের চোখ দিয়ে অশ্রু বের হয়।
আপনার সকল বক্তব্যই এই প্রাণীগুলোর মূল বৈশিষ্ট্যের সাথে মিলে যাচ্ছে। ওরা কি নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলে?ওদের আচরণে মনে হয় ওরা আমাদের মতোই কথা বলে। আমি তো আর ওদের ভাষা বুঝি না। একবার ভেবেছিলাম ওদের শব্দগুলো রেকর্ড করে বাইরে নিয়ে পরীক্ষা করে দেখব, আদৌ ঐ শব্দগুলো ওদের ভাষা কিনা? কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাহস পাইনি এই ভয়ে যে সকলে ওদের কথা জেনে যেতে পারে।


হ্যাঁ, বিউন আপনি ভালোই করেছেন। আর ওদের বুদ্ধিমত্তা কেমন?


চমৎকার, অসাধারণ। খুব দ্রুত ওরা সবকিছু শিখে নিতে পারে। এখানে নিয়ে আসার পর আমাকে খুব বেশি কষ্ট করতে হয়নি, অল্পতেই সব কিছু শিখে নেয়। ওরা নিজেরাই নিজেদের যত্ম নেয়, নিজেদের প্রতি খেয়াল রাখে। ইতিমধ্যে আমার সাথেও চমৎকার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আমি ওদেরকে কি বলতে চাই সহজেই ওরা বুঝতে পারে। তাছাড়া প্রাণীগুলো বেশ পরিচ্ছন্ন, অন্যান্য প্রাণীর মতো নোংরা নয়। আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, মহাবিশ্বের সকল প্রাণীর ওদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।
বিউন আপনি ঠিকই বলেছেন। আপনাকে বুঝতে হবে এরা প্রকৃতিরই অংশ, এবং প্রকৃতি থেকেই আমরা সবচেয়ে বেশি শিক্ষা গ্রহণ করি। কাজেই এই প্রাণী থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার থাকতে পারে। যাইহোক, বিউন আমি আপনার বর্ণনায় সন্তুষ্ট। আমার মনে হচ্ছে আমরা যে প্রাণী খুঁজছি আপনার সংরক্ষিত প্রাণী সেই প্রাণীই হবে। তবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমি আপনার প্রাণীগুলো দেখতে চাই।


অবশ্যই দেখবেন। তার পূর্বে আমাদের মূল্য নির্ধারণের ব্যাপারটা চূড়ান্ত করতে হবে। প্রাণীগুলো দেখার পর করলে হয় না?


না হয় না। আমরা প্রথমে মূল্য ঠিক করব। যদি আপনার মূল্য আমার পছন্দ হয় তাহলেই আপনি প্রাণীগুলোকে দেখতে পাবেন। প্রাণী পছন্দ হলে আপনি ইলেকট্রনিক ট্রান্সফারের মাধ্যমে আমার একাউন্টে মূল্য পরিশোধ করবেন। একমাত্র তখনই আপনি প্রাণীগুলোকে নিয়ে যেতে পারবেন। তার আগে নয়।


আর যদি প্রাণীগুলোকে আমার পছন্দ না হয়?তাহলে আপনাকে মূল্য পরিশোধ করতে হবে না। আপনি সরাসরি আপনার গ্রহে চলে যাবেন। আমি চাই না প্রাণীগুলো দেখার পর প্রাণীর মূল্য নিয়ে আমাদের মধ্যে মত-পার্থক্যের সৃষ্টি হোক। আমি সবকিছু আগেই চূড়ান্ত করে নিতে চাই। বেশ গম্ভীরভাবে বলল বিউন। ঠিক আছে তাই হবে। এখন বলুন, বাচ্চা প্রাণী দুটির জন্য আপনাকে কত মূল্য দিতে হবে? আপনিই বলুন। বলল বিউন। না আপনি বলুন। প্রাণী আপনার, আপনিই এই প্রাণীগুলোর সঠিক মূল্য নির্ধারণ করতে পারবেন। বিউন একটু সময় নিল। তারপর বলল, পৃথিবীর মুদ্রা পিনির হিসাবে দশ ট্রিলিয়ন পিনি।


নিননের চোখ দুটো যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসতে চাইল। সে বিস্মিত হয়ে বলল, এ আপনি কি বলছেন! এতো অসম্ভব! পৃথিবীর অনেক ব্যাংকেরওতো এতো পিনির সম্পত্তি নেই। এই পরিমাণ পিনি পেলে আপনি পৃথিবীর অন্যতম ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হবেন। আমি তো আপনাকে কিছুতেই এত মূল্য প্রদান করতে পারব না।


তাহলে আমি দুঃখিত। আমার কথা একটাই। আপনি আমাকে মূল্য বলতে বলেছেন, আমি বলেছি। আমি এর থেকে এক পিনি কমেও আপনার কাছে এই বিশেষ প্রাণী বিক্রি করব না। বিউন স্পষ্টভাবে কথাগুলো বলল।

আপনি একটু বুঝতে চেষ্টা করুন।


বিউন তার চশমা খুলে আবার চোখে পরল। তারপর টেনেে টনে বলল, এতে বুঝার কিছু নেই। আপনি মিকিউ গ্রহের প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি। দশ ট্রিলিয়ন পিনি আপনার জন্য খুব কঠিন কোন ব্যাপার নয়। তাছাড়া আপনাকে প্রাণীগুলোর গুরুত্ব বুঝতে হবে। মাত্র বিশ বছরে এই প্রাণী প্রদর্শন করে আপনার দশ ট্রিলিয়ন পিনি উপার্জন করতে পারবেন। তাছাড়া আপনাদের কাছে মেয়ে প্রাণীও থাকবে যা মহাবিশ্বের অন্য কোন গ্রহে নেই। কাজেই দর্শনার্থীদের ভীড় আপনারা সামলে উঠতে পারবেন কিনা আমার সন্দেহ আছে। উপরন্তু আপনারা যদি ক্লোনের মাধ্যমে এই প্রাণী সৃষ্টি করে অন্যান্য গ্রহে বিক্রি বা রপ্তানী করেন তাহলে দশ ট্রিলিয়ন পিনি তুলে আনতে দুই বছরও লাগবে না। এখন বলুন আপনি রাজি কিনা?


নিনন একটু সময় নিল।

তারপর বলল, রাজি। তাহলে চলুন, আপনাকে প্রাণীগুলো দেখিয়ে নিয়ে আসি।


বিউন নিননকে আন্ডার গ্রাউন্ডে বিশেষ একটা কক্ষে নিয়ে এলো। সেই কক্ষের মাঝে মাঝারি আকৃতির একটি খাঁচার মধ্যে চারটি প্রাণী রাখা। এখানে আসার আগে নিনন এই প্রাণী সম্পর্কে প্রচুর পড়াশুনা করলেও আগে কখনো এই প্রাণীদের দেখেনি। শুধু ছবিতে দেখেছে। এই প্রথম বাস্তবে দেখছে। চারটি প্রাণীই তার দিকে অবাকভাবে তাকিয়ে আছে। বাচ্চা প্রাণী দুটি বোধহয় কিছুটা ভয় পেয়েছে। দুটিই এক কোণায় গুটিশুটি মেরে আছে। মাঝে মাঝে চোখ পিট্ পিট্ করে তাকাচ্ছে। 


প্রাণীগুলোকে দেখে নিননের মুখে এক রকম তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠল। সে অস্পষ্ট উচ্চারণে বলল, প্রাণীগুলো উচ্চতায় আমাদের থেকে অনেক ছোট, সবচেয়ে বড় প্রাণীটা আমার দেহের তিন ভাগের এক ভাগ হবে। প্রাণীগুলোর দেহের আকারও ছোট। আমি বুঝতে পারছি না এত ছোট প্রাণী কিভাবে এত বুদ্ধিমান হয়? যাইহোক প্রাণীগুলোকে আমার পছন্দ হয়েছে। ২দু’দিন পর। মহাশূন্যে ছুটে চলছে স্পেসশীপ 'হিডিন'। 'হিডিন' মিকিউ গ্রহের স্পেসশীপ। গোপন এক মিশনে হিডিন পৃথিবীতে এসেছিল। সেই মিশন শেষে হিডিন এখন আবার মিকিউ গ্রহে ফিরে যাচ্ছে। এই গোপন মিশনটি ছিল বিশেষ এক প্রজাতির প্রাণী ক্রয় করা। হিডিনের ক্যাপ্টেন নিনন সেই প্রাণীগুলোকে কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই ক্রয় করতে পেরেছে। প্রাণীগুলোকে হিডিনে গোপন একটি কক্ষে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রাখা হয়েছে। এই অতিরিক্ত নিরাপত্তার বিশেষ যুক্তিও আছে। মহাবিশ্বে দুর্লভ এই প্রাণীর মেয়ে প্রজাতি শুধু তার কাছেই আছে। বিউনের প্রাণী গবেষণাগার ত্যাগ করার সময় কৌশলে সে সেখানে ছোট্ট একটা টাইম বোমা রেখে এসেছিল। বিউন প্রাণী বিজ্ঞানী হওয়ায় কিছুই টের পায়নি। বোমা স্থাপনের চব্বিশ ঘণ্টা পর অর্থাৎ গতকাল বিস্ফোরণ ঘটেছে বোমাটির। সাথে সাথে ধ্বংস হয়ে গেছে বিউনের প্রাণী গবেষণাগার। একই সাথে মৃত্যু হয়েছে বিউন এবং তার ওখানে অবশিষ্ট দুই দুর্লভ প্রাণীর।


নিনন ধীরে পায়ে গোপন কক্ষে প্রবেশ করল। প্রাণীগুলোকে গত দু’দিন ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। আজ ওদেরকে জাগান হয়েছে। তাও খুব সামান্য সময়ের জন্য। আবার ওদেরকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হবে। মিকিউ গ্রহে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত যত ঘুমাতে পারে ততই ওদের জন্য মঙ্গল। কারণ মিকিউ গ্রহে ওদের দিনগুলো হবে খুবই ভয়ঙ্কর। তখন ওরা আর ঘুমানোর সময় পাবে না। ওদের শরীরে হাজারো জৈবিক পরীক্ষা চালান হবে। দিন রাত, মাস-বছর যন্ত্রণায় ছটফট করলেও তখন মুক্তির আর কোন উপায় থাকবে না। ঘুমতো দূরের কথা, হয়তো সামান্য চোখ বুজারও সময় পাবে না ওরা। 


ছোট্ট একটা খাঁচার মধ্যে প্রাণী দুটিকে রাখা হয়েছে। দুটি প্রাণীই জেগে আছে। চোখে ভয় আর আতঙ্ক। প্রাণীগুলোর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে পড়াশুনা করার সময় এই প্রাণীগুলোর ভাষাও কিছুটা রপ্ত করেছিল নিনন। তাই তার ইচ্ছে এই ভাষা ব্যবহার করে এদের সাথে দু’একটা কথা বলা যায় কিনা তা চেষ্টা করে দেখা।


নিনন খাঁচার দরজায় মুখ রেখে হিস্ হিস্ করে উঠল। আর তাতে মেয়ে প্রাণীটা ভয় পেয়ে ছেলেটার আরো কাছে গিয়ে বসল। নিনন বেশ মজা পেল। সে আবারও মুখ দিয়ে হিস্ হিস্ শব্দ করল।

       প্রাণী  ভয় পেয়ে একে অন্যের আরো কাছে এলো।

      নিনন এবার মিষ্টি স্বরে বলল, এই প্রাণীরা, তোমরা ভয় পাচ্ছ কেন?

সাথে সাথে ফুঁসে উঠল ছেলে প্রাণীটা। মাথা উচু করে জোর গলায় ধমকে উঠে বলল, আমাদেরকে প্রাণী বলছ কেন? আমাদেরকে সম্মান করে কথা বলো। আমরা পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে বুদ্ধিমান জীব 'মানুষ'।

 

 (রচনাকাল,  ইংল্যান্ড-লেস্টার, ২২/০৭/২০০৬)

Header Ad

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মৃত তিন শিক্ষার্থী হলেন- মোজাম্মেল হোসেন নাঈম (২৪), মোস্তাকিম রহমান মাহিন (২২) ও জোবায়ের আলম সাকিব (২২)।

জানা গেছে, শনিবার সকালে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ৬টি ডাবল ডেকার বাস ও ৩টি মাইক্রোবাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়ক ধরে রিসোর্টের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় উত্তর পেলাইদ গ্রামের উদয়খালী বাজারে পৌঁছালে বিআরটিসির ডাবল ডেকার একটি বাস পল্লী বিদ্যুতের তারের স্পর্শে আসে। এ সময় বাসটি বিদ্যুতায়িত হলে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাকিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তিনজনকেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। আহত সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা জরুরি বিভাগে যাচ্ছি।

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ