মোহাম্মদ হোসাইন-এর
একগুচ্ছ কবিতা
বৈশাখী ঝড়ও পানপাতা জন্ম দেয়
অনেক মানুষের বোবা ধরে ঘুমের ঘোরে
অনেকের আবার ঘুমই হয় না
আর আমি প্রায়শ ঘুমের মাঝেই হেঁটে যাই... কতো কতো পথ, পথের ঠিকানায়...!
কে যে কখন নদী পার হয়ে চলে যায় দিকচিহ্নহীন!
কার কখন ডাক আসে কেউ জানেনা
তবুও, বৈঠা হাতে বসে থাকে মাঝি, অকুলপাথার
ঝড় আসে, কালের চাকা ঘষটে ঘষটে আসে কতো বিপন্ন বৈশাখ, আম কুড়ানি দিন, কৈশোরক হাওয়া
জরা আর ক্রোধ নিবারণে নিম বড়া, পাটশাক নিয়ে আসে আবহমান বাংলার জায়া ও জননীরা
কালের লাঠি ভর দিয়ে আসে পিতামহ, পিতামহীরা গ্রাম্যমেলা, ষাঁড়ের লড়াই, ভুজুংভাজুং নিয়ে আসে অচিন কারিগর
প্রচন্ড বিজলির চমকে ঘুম ভেঙে কেঁদে ওঠে ঘুমঘোর কচিমুখ কচিশিশু
জীবনানন্দ রূপসী বাংলা হাতে সাতটি তারার তিমির অতিক্রান্ত করেন বিনা বাধায়, অথচ, আল মাহমুদ পাশে বসে পানকৌড়ির রক্ত পান করেন বেশ আহ্লাদে, অঁলিয়স প্রাসেসে...
আমাদের জীবন চিরদিন ঘেটোশাক, মেটোশাক
তবু, সবকিছু ধুয়েমুছে হালখাতা, মিষ্টান্ন আর কালোজিরা মাখানো নিমকির ঘ্রাণ উতল করে মন
বৈশাখী ঝড়ে উলটে দেওয়া সংসার আবারও জোড়া লাগে, পানপাতা জন্ম দেয়...
১৩/০৪/২০২২.
হালখাতা
হালখাতা খোলেছে বৈশাখ
সংঘ দিয়েছে লকডাউন
প্রকৃতির লকডাউন নেই
লকডাউন নেই মেঘেদের, মাছেদেরও
পাখিদের কি আছে? বৃক্ষদের?
সভ্যতার স্মারক যারা, তারা বরাবর শৃঙ্খলাপরায়ণ। আর মানুষ?
ধানের গন্ধ আসছে,গন্ধ আসছে মুকুলেরও
রোদ ভেজে নিচ্ছে পাটশাক, নিমবড়া প্রাকৃতিক
সর্ষে ইলিশ চেটে নিচ্ছে শিশুতোষ প্রচ্ছদ
মুখোশে ঢাকা আমাদের মুখ, দূরত্ব তিনফুট। ঝড় যদি আসে এবেলা
লুকোবনা, নিয়ে যাক পৃথিবীর জঞ্জাল।
১৩/০৪/২০২০.
চাঁদ
নিরর্থ বুনে রেখেছি
সারি সারি নিরর্থ গাছ, নিরর্থ গান পাখিসম ঝুলে
পরার্থ, পরকীয়া রাত কেবল অব্যক্ত থেকে যায়
ও পানতোয়া চাঁদ, তুমি ফর্সা বলে, বড়ো গ্লুময় বলে
আমার প্রেমিকার ঠোঁট নিরর্থ দেখায়
প্রেমে পড়ে যাব এই ভয় সুচেতনার
আমি তাই অভিঘাত মানি
কোজাগরী চাঁদ, তুমি কি শ্রীময়ী গোপিনী
রাজেশ্বরী...!