সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে যত্ন নিন
ছবি সংগৃহিত
মানুষ সামাজিক জীব। গ্রীক দার্শনিক এরিস্টটলের এই উক্তি যেন প্রবাদ প্রতিম। আর সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আমরা নানা রকম সম্পর্কে জড়াই। পারিবারিক পরিমণ্ডলে মা-বাবা, ভাই-বোন থেকে শুরু করে বন্ধু-বান্ধব কিংবা আত্মীয় -অনাত্মীয় কত রকম সম্পর্কের বন্ধন। সমাজে বাস করতে গেলে, বিপদে-আপদে নানা রকম প্রয়োজনে এই সমস্ত সম্পর্ক অপরিহার্য হয়ে উঠে। বিশেষ করে এই করোনার সময়ে সম্পর্কের গুরুত্ব যেন আরও বেড়ে গেছে। তাই সম্পর্কের যত্ন নিতে করতে পারেন বেশ কিছু কাজ।
একটি সুসম্পর্ক যেকোনো মানুষের সুস্থতার মূল বলা যায়। সুসম্পর্ক ব্যাক্তির পারিবারিক জীবন ও দাম্পত্য জীবনে তাকে উজ্জীবিত ও জীবনমুখী করে তোলে। তার কর্মস্পৃহা বাড়িয়ে সফলকাম করতেও সাহায্য করে।
ব্যক্তির ভালোবাসার মধ্য দিয়ে সম্পর্ক মূলত যত্নে থাকে। ভালোবাসার সম্পর্ক সবসময়ই একে-অপরকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। আর একজন আত্মবিশ্বাসী মানুষ মানসিকভাবে তৃপ্ত থাকেন। যা তার শরীর-মনের সুস্থতার কারণ।
সম্পর্কে যত্নশীল হতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে নিন-
খোঁজ-খবর নেওয়া
মহামারির এই সময়ে একটা অস্থির সময় পার করছে সবাই। সেইসাথে মানসিক বিপর্যস্ততাও যেন সকলের নিত্য সঙ্গী। এই সময়ে প্রিয় মানুষের খোঁজ খবর রাখা দায়িত্বের অংশ। তাই পরিচিতজনদের নিয়মিত খোঁজ খবর রাখতে পারেন।
উপহার দেওয়া
এখন অনেকেই সামাজিক অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলছেন। সেইসাথে বাসা-বাড়িতে এখন আর স্বল্প পরিসরের আয়োজনও হচ্ছে না। ফলে সম্পর্ক রক্ষার বিষয়টি যেন অনেকটাই কঠিন হয়ে উঠছে। তাই প্রিজনদের বিশেষ দিনে উপহার পাঠিয়ে দিতে পারেন।
সঙ্গীকে বোঝার চেষ্টা
সঙ্গীকে বোঝার চেষ্টা করুন। সঙ্গীর কাছ থেকে যা আশা করেন, আপনার সঙ্গীকেও তাই দিন। আপনি কী চাচ্ছেন, সেটি তাকে অবশ্যই জানান। দুজন দুজনকে বোঝার চেষ্টা করুন। সম্পর্ক সুন্দর রাখতে দুজনকেই চেষ্টা করতে হবে।
খোলাখুলি কথা বলুন
রাগ, অভিমান, সংশয়, সন্দেহ— সঙ্গীকে নিয়ে মনের কোণে যে অনুভূতিই তৈরি হোক, তা সরাসরি বলে দিন। এমনকি ভালোবাসার কথাও। সম্পর্কটা দু’জনের। সেখানে গোপনীয়তার পর্দা টেনে রাখলে অযথা ভুল বোঝাবুঝি বাড়বে। সেই ঝুঁকি না নিয়ে বরং আলোচনা হোক খোলাখুলি।
অতিরিক্ত কৌতূহল না থাকাই ভালো
ভালোবাসা মানেই অপার রহস্য। সেই রহস্য ভেদ করে ফেললেই বরং একঘেয়ে লাগতে শুরু হতে পারে। তাই অতিরিক্ত কৌতূহল তৈরি না করাই ভালো। ভালো থাকার জন্য যতটুকু জানার এবং জানানোর, তাতেই সীমাবদ্ধ রাখুন নিজেকে।
নিয়মিত যোগাযোগ
বর্তমান সময়ে অনেকেই অভিযোগ করেন, প্রয়োজন না পড়লে কেউ খোঁজ নেয় না। কল দেয় না। সম্পর্ক মানেই যেন স্বার্থ। তাই এই রকম অভিযোগের হাত থেকে নিস্তার পেতে প্রিয়জনদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলুন।
আত্মকেন্দ্রিকতা
সম্পর্কের ক্ষেত্রে আত্মকেন্দ্রিকতা থেকে বেরিয়ে আসুন। যে কোন সম্পর্কের জন্যই আত্মকেন্দ্রিকতা খুব খারাপ বিষয়। তাই সবার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতে আত্মকেন্দ্রিকতা পরিহার করুন।
গোপন অভ্যাস
এমন অনেক কিছু থাকে, যা একান্ত প্রিয় মানুষটিকে বলতেও অস্বস্তি হয়। আপনার যদি মনে হয়, যে অভ্যাসটিতে আপনি স্বচ্ছন্দ। কিন্তু প্রকাশ্যে বলতে অস্বস্তি হচ্ছে, তাহলে না বলাই ভাল। জীবনসঙ্গী মানেই সব বলতে হবে, তার কোনও মানে নেই। কিছু কথা নিজের মনে চেপে রাখা দোষের নয়।
সম্পর্কে সম্মান থাকুক
প্রেমের সম্পর্কে ভালবাসা আর সম্মানের সহাবস্থান জরুরি। সম্মানহীন কোনও সম্পর্কের পথ কখনোই মসৃণ হয় না। পরস্পরের মতামতও সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখা জরুরি। সঙ্গী যদি কোনও বিষয়ে রাজি না থাকেন, কোনও কারণ জানতে না চেয়েই তার ইচ্ছাকে সম্মান জানানো উচিত।
খোলাখুলি কথা বলুন
রাগ, অভিমান, সংশয়, সন্দেহ— সঙ্গীকে নিয়ে মনের কোণে যে অনুভূতিই তৈরি হোক, তা সরাসরি বলে দিন। এমনকি ভালোবাসার কথাও। সম্পর্কটা দু’জনের। সেখানে গোপনীয়তার পর্দা টেনে রাখলে অযথা ভুল বোঝাবুঝি বাড়বে। সেই ঝুঁকি না নিয়ে বরং আলোচনা হোক খোলাখুলি।